গাজায় মানবিক সংকট: ত্রাণ বিতরণে বাধা, দুর্ভিক্ষে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল-সৃষ্ট দুর্ভিক্ষে গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টি ও অনাহারে আরও সাত ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। রোববার (১৭ আগস্ট) স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানা গেছে, মৃত ৭ জনের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বুরশ জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দুর্ভিক্ষজনিত মৃত্যুর সংখ্যা ২৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ১১০ জনই শিশু।
যুদ্ধবিরতির আন্তর্জাতিক আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল ২০২৩ সাল থেকে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ গাজার সমস্ত সীমান্ত ক্রসিং সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়, যার ফলে ২৪ লাখ মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ৬২ হাজারে পৌঁছেছে এবং আহত হয়েছে দেড় লাখের বেশি মানুষ।
চলতি বছরের শুরুতে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর ইসরায়েল জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোকে এড়িয়ে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন-এর মাধ্যমে একটি পৃথক সাহায্য বিতরণ উদ্যোগ শুরু করে, যা যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দেয়। এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী ত্রাণ সম্প্রদায় প্রত্যাখ্যান করেছে। এদিকে, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধের জন্য নেতানিয়াহু ও তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে।
হাসিনার রায় নিয়ে 'সতর্ক' প্রতিক্রিয়া ভারতের, জানাল নিজেদের অবস্থান
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর ভারত এই বিষয়ে তাদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) নয়াদিল্লিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "ভারত বাংলাদেশের ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’ কর্তৃক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঘিরে ঘোষিত রায়টি সম্পর্কে অবগত আছে।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, "নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে সেই দেশের শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতা অন্তর্ভুক্ত।"
ভারত জানিয়েছে, "আমরা এ লক্ষ্যে সর্বদা সব অংশীদারের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।"
এর আগে আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসির আদেশ দেন। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে মামলার দুই নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক নম্বর অভিযোগে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, এই মামলার আরেক আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালেরও ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার অপর আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়ে সত্য উন্মোচনে সহায়তা করায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সাময়িক আশ্রয় কি স্থায়ী হচ্ছে? হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের নতুন ভাবনা
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করলেও, যে দেশটিতে তিনি আশ্রয় নিয়ে আছেন, সেই ভারত সরকার এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
তবে, ভারতের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা বিবিসিকে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এই রায়ের ফলেও শেখ হাসিনাকে নিয়ে দিল্লির অবস্থানে কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসছে না। তাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো প্রশ্ন উঠছে না বলেও তারা জানিয়েছেন।
মূলত, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পৌঁছানোর পর থেকে আজ পর্যন্ত তাকে আতিথেয়তা দেওয়া নিয়ে ভারতের ঘোষিত অবস্থান একই আছে। ভারত তখন জানিয়েছিল, একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তাকে 'সাময়িকভাবে' (ফর দ্য টাইম বিয়িং) আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। আজকের রায়ের পরও ভারতের সেই অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এর অর্থ হলো, শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভারত পুনর্বিবেচনা করতে পারে, এমন কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
তবে এখন এই প্রশ্ন উঠছে যে, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের যে দাবি জানিয়েছিল, সেটির এখন কী হবে?
এর সহজ উত্তর হলো, গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি কূটনৈতিক পত্র বা 'নোট ভার্বাল' পাঠিয়ে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হয়েছিল। ভারত সেই চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও, ওই অনুরোধের বিষয়ে তারা কী ভাবছে বা কী অবস্থান নিচ্ছে, তা নিয়ে নয়াদিল্লি আজ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে একটি কথাও বলেনি। এতদিন চুপচাপ থাকলেও, রায় ঘোষণার পর এখন এ বিষয়ে মুখ খোলার জন্য ভারতের ওপর চাপ বাড়বে।
অতীতে, একান্ত আলোচনায় ভারতের পররাষ্ট্র বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা প্রায়শই বলেছেন যে, প্রত্যর্পণ চুক্তিতে এমন অনেক 'ফাঁকফোকর' রয়েছে যা ব্যবহার করে এই হস্তান্তরের অনুরোধ নাকচ করা বা দিনের পর দিন ঝুলিয়ে রাখা সম্ভব।
পরিস্থিতি এখন কতটা পাল্টেছে?
গত বছরের ডিসেম্বরে যখন প্রথমবার এই অনুরোধ জানানো হয়, তখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার মামলা সবেমাত্র শুরু হয়েছিল। এমনকি আনুষ্ঠানিক অভিযোগও গঠন করা হয়নি। সেসময় ভারতে বিভিন্ন ঘটনা, যেমন আদালত প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেত্রী দীপু মণিকে হেনস্থা করা বা আনিসুল হকদের ওপর হামলার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে ভারতীয় কর্মকর্তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে বলতেন, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হলে তিনি 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসার' শিকার হতে পারেন এবং 'ন্যায়বিচার' পাবেন কি না, তা নিয়েও সন্দেহ আছে।
কিন্তু সোমবারের রায়ের পর পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা, কারণ শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের আদালতে গণহত্যার অভিযোগে দণ্ডিত একজন অপরাধী। এমন একজন পলাতক ও দণ্ডিত অপরাধীকে ভারত কেন আশ্রয় দিয়ে রেখেছে, সেই কৈফিয়ত দেওয়ার জন্য দিল্লির ওপর এখন স্বাভাবিকভাবেই চাপ বাড়বে।
ধারণা করা হচ্ছে, শিগগিরই ভারতকে এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হতে পারে। তবে সেই ব্যাখ্যায় ভারতের মৌলিক অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসবে না, অর্থাৎ শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত প্রত্যর্পণ চুক্তিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা রয়েছে যে, যদি কোনো অভিযোগ 'রাজনৈতিক প্রকৃতির' হয়, তবে হস্তান্তরের অনুরোধ খারিজ করা যাবে। যদিও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগকে এই ধারায় ফেলা কঠিন।
এমনকি ২০১৬ সালে যখন চুক্তিটি সংশোধন করা হয়, তখন হস্তান্তর প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, অভিযোগের পক্ষে সাক্ষ্যপ্রমাণ না দিলেও, শুধু আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিলেই চলবে।
কিন্তু এরপরেও চুক্তিতে এমন কিছু ধারা আছে যা ব্যবহার করে ভারত এই অনুরোধ নাকচ করার অধিকার রাখে। যেমন, একটি ধারায় বলা আছে, যদি অনুরোধ গ্রহণকারী দেশের (ভারত) মনে হয় যে 'অভিযোগগুলো শুধুমাত্র ন্যায় বিচারের স্বার্থে বা সরল বিশ্বাসে আনা হয়নি', তবে তারা সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারবে।
দিল্লির অনেক পর্যবেক্ষকই মনে করছেন, ভারত এই বিশেষ ধারাটি ব্যবহার করেই শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ না করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারে। ভারত বলতে পারে যে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সঠিক ও সুষ্ঠু বিচার পেয়েছেন বলে তারা মনে করছে না, এবং এই কারণেই তাকে হস্তান্তর করা সম্ভব নয়।
চাউশেস্কু থেকে সাদ্দাম: ইতিহাসে যে শাসকদের পতন হয়েছিল মৃত্যুদণ্ডে
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিভিন্ন নেতার পতন অনেক সময়ই সহিংস রূপ নিয়েছে। তবে রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে বিরল এবং নাটকীয় ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি হলো কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের আনুষ্ঠানিক বিচারিক মৃত্যুদণ্ড। সাধারণত বড় ধরনের বিপ্লব, সামরিক অভ্যুত্থান, গৃহযুদ্ধ অথবা গণ-অপরাধের বিচারের পর এই ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। ইতিহাসে এমন অনেক রাজা, একনায়ক এবং নির্বাচিত নেতা আছেন যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বা মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়েছিল। অনেক ক্ষেত্রে, কয়েক দশক পর আদালত সেই রায় পুনরায় পর্যালোচনাও করেছে।
নিকোলায় চাউশেস্কু
নিকোলায় চাউশেস্কু ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত টানা ২৪ বছর রুমানিয়ার শাসক ছিলেন। ১৯৮৯ সালে রুমানিয়ার কমিউনিস্ট শাসনের পতনের সময় চাউশেস্কু এবং তার স্ত্রীকে একটি দ্রুতগতির সামরিক ট্রাইব্যুনালে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। গণহত্যা এবং দেশের অর্থনৈতিক ধ্বংসযজ্ঞের অভিযোগে তারা দোষী সাব্যস্ত হন। ওই বছরের বড়দিনের দিনেই তাদের মৃত্যুদণ্ড (ফায়ারিং স্কোয়াডে) কার্যকর করা হয়। আধুনিক রুমানিয়ার ইতিহাসে এটিই ছিল শেষ মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা।
জুলফিকার আলী ভুট্টো
জুলফিকার আলী ভুট্টো ১৯৭১ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এবং এরপর ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পাকিস্তানের এই ক্যারিশমাটিক নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এক বিতর্কিত হত্যা মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং ১৯৭৯ সালের এপ্রিলে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তবে, এই ঘটনার কয়েক দশক পর, ২০২৪ সালে, পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সেই বিচারকে 'মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ' বলে ঘোষণা দেয়, যা ছিল তার জন্য এক যুগান্তকারী মরণোত্তর সম্মান।
সাদ্দাম হোসেন
সাদ্দাম হোসেন ১৯৭৯ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ইরাকের ক্ষমতায় আসীন ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন বাহিনীর আগ্রাসনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে দুজাইল গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে একটি ইরাকি ট্রাইব্যুনালে বিচার হয়। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এটি আধুনিক সময়ে কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের মৃত্যুদণ্ডের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
মুয়াম্মার গাদ্দাফি
লিবিয়ার ৪২ বছরের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি ২০১১ সালে গণ-আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হন। যদিও তার কোনো আনুষ্ঠানিক আদালতের রায় ছিল না, কিন্তু আটকের পর তাকে তাৎক্ষণিকভাবে হত্যা করা হয়, যা বিশ্বজুড়ে বিতর্কের সৃষ্টি করে। এই পতনের মধ্য দিয়েই দেশটিতে ৪২ বছরের একনায়কতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং লিবিয়া গভীর বিভক্তির মধ্যে পড়ে।
মেংগিস্তু হাইলি মারিয়াম
ইথিওপিয়ার মার্ক্সবাদী 'দার্গ' শাসনব্যবস্থার সাবেক নেতা ছিলেন মেংগিস্তু। 'রেড টেরর' বা লালআতঙ্ক নামে পরিচিত সময়ের গণহত্যা ও নৃশংসতার অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। তার অনুপস্থিতিতেই তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি জিম্বাবুয়েতে নির্বাসনে বসবাস করছেন এবং তাকে বিচারের জন্য কখনো ফেরত পাঠানো হয়নি।
চুন দু-হোয়ান
দক্ষিণ কোরিয়ায় গণতন্ত্র ফিরে আসার পর দেশটির সাবেক সামরিক শাসকদের বিচারের আওতায় আনা হয়। প্রেসিডেন্ট চুন দু-হোয়ান দেশটিকে আট বছর শাসন করেছিলেন। ১৯৭৯ সালে তার করা সামরিক অভ্যুত্থান এবং গওয়াংজু শহরে চালানো দমন-পীড়নের দায়ে চুনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছিল। তবে, পরবর্তীতে তার সেই দণ্ড মওকুফ করা হয় এবং শেষ পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রপতির ক্ষমা লাভ করেন।
জোসেফ কাবিলা
জোসেফ কাবিলা ২০০১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ডিআর কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০২৫ সালে দেশটির একটি সামরিক আদালত কাবিলাকে রাষ্ট্রদ্রোহ, বিদ্রোহ এবং পূর্ব কঙ্গোর সংঘর্ষ সংক্রান্ত বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তার অনুপস্থিতিতেই মৃত্যুদণ্ড দেয়। এটি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক ঘটনাগুলোর একটি। যদিও জোসেফ কাবিলা এখনো গ্রেপ্তার হননি এবং তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
রাজনৈতিক অস্থিরতার পর রাষ্ট্রপ্রধানদের মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার ঘটনা ইতিহাসে নতুন নয়। ফরাসি বিপ্লব থেকে শুরু করে ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধ, ইরাক ও রুমানিয়ার শাসনব্যবস্থার পতন কিংবা ঘানার অভ্যুত্থান—বিশ্ববাসী বিভিন্ন সময়েই এ ধরনের ঘটনার সাক্ষী হয়েছে।
তবে এসব বিচারের ধরণ একেক দেশে একেক রকম ছিল। কোথাও কাবিলার মতো দীর্ঘ ও বিস্তৃত বিচার হয়েছে, আবার কোথাও ভুট্টো বা চাউশেস্কুর মতো দ্রুত এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচার ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। তবে এটিকে বিচার, প্রতিশোধ বা ট্র্যাজেডি—যেভাবেই দেখা হোক না কেন, রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতিটি মৃত্যুদণ্ডই একটি যুগের অবসান এবং নতুন আরেকটি অধ্যায়ের সূচনার ইঙ্গিত দেয়।
আল জাজিরা থেকে এনডিটিভি, বিশ্বজুড়ে যেভাবে প্রচার হলো হাসিনার রায়
জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার এই রায় ঘোষণার পরপরই তা বিশ্বজুড়ে প্রধান সংবাদ শিরোনামে পরিণত হয়। বিবিসি, রয়টার্স, আল জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি এবং আনন্দবাজার পত্রিকাসহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এই খবর অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা 'মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বাংলাদেশের হাসিনার মৃত্যুদণ্ড' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, গত বছর ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনে মারাত্মক দমনপীড়নের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করে এই মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।
অন্যদিকে, বার্তাসংস্থা রয়টার্স শিরোনাম করেছে 'ছাত্রদের ওপর দমনপীড়নের মামলায় বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হাসিনা দোষী সাব্যস্ত'। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার বাংলাদেশের একটি আদালত শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে। এই রায়ের মাধ্যমে দীর্ঘ একটি বিচারের সমাপ্তি ঘটল এবং এটি ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে এলো।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি 'বিক্ষোভ দমনে নৃশংসতার দায়ে বাংলাদেশের সাবেক নেত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড' শিরোনামে খবর দিয়েছে। বিবিসি উল্লেখ করেছে, গত বছরের বিক্ষোভে 'ভয়াবহ দমনপীড়নের' জন্য বাংলাদেশের একটি ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হাসিনার অনুপস্থিতিতেই এই বিচার করা হয়েছে।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি একটি ব্রেকিং নিউজে জানিয়েছে, ঢাকার আদালত শেখ হাসিনা এবং তার সহযোগীর সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি 'মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বাংলাদেশে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড' শিরোনামে জানায়, আদালত শেখ হাসিনাকে তিনটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তিনি গত বছর ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে মারাত্মক দমনপীড়নের নির্দেশ দিয়েছিলেন, যার ফলে তার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটেছিল।
অপর ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা শিরোনাম করেছে, 'শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডই দিল বাংলাদেশের ট্রাইবুনাল! রায় ঘোষণা হতেই হাততালিতে ফেটে পড়ল আদালতকক্ষ'। আনন্দবাজার আরও উল্লেখ করে, বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর ট্রাইব্যুনালের এই রায় সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, একই অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল হাসিনার দুই সহযোগী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধেও রায় ঘোষণা করেছে। আদালত বলেছেন, অভিযুক্ত তিনজন একে অপরের সাথে যোগসাজশ করে দেশজুড়ে বিক্ষোভকারীদের হত্যা করার জন্য নৃশংসতা চালিয়েছিলেন।
হাসিনার রায় ঘিরে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সতর্ক বার্তা
বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস মোরিয়ার্টি মনে করেন, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ যে রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে, সেটি দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য গভীর তাৎপর্য বহন করবে। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
মোরিয়ার্টি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে যেভাবে পরপর ক্ষমতায় থেকেছে, তা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। স্বাধীনতার পর এত দীর্ঘ সময় একটি দলের একাধিপত্য বজায় রাখার উদাহরণ নেই। তাঁর মতে, এই দীর্ঘ ক্ষমতাকাল বাংলাদেশে রাজনৈতিক ভারসাম্য, রাষ্ট্রযন্ত্রের গঠন ও আইনের শাসন–সংক্রান্ত কাঠামোতে বেশ বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছিল।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার সরকার সাংবিধানিক পরিবর্তন, নির্বাচনব্যবস্থার রূপান্তর, প্রশাসন পুনর্গঠন এবং বিভিন্ন আইন সংশোধনের মাধ্যমে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করেছিল, যা একদলীয় শাসনের পথকে শক্তিশালী করেছিল। তাঁর দৃষ্টিতে, এই পরিবর্তনগুলো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ক্ষমতার ভারসাম্যকে দুর্বল করেছে।
মোরিয়ার্টি মনে করেন, এখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। বাংলাদেশ ভবিষ্যতে কোন পথে যাবে তা নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্ক শুরু হয়েছে।” এই পরিবর্তনের মাঝেই আজকের রায় যে বড় ধরনের গুরুত্ব বহন করে, তা তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
রায়ের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়েও তিনি সতর্ক মন্তব্য করেন। তাঁর ভাষায়, “যদি শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, কিছু সহিংসতা হতে পারে, তবে তা খুব বেশি বৃদ্ধি পাবে বলে আমার মনে হয় না।” তাঁর মতে, পরিস্থিতি জটিল হলেও ব্যাপক সহিংসতা গণঅভ্যুত্থানের সময়ের মতো হবে না।
অন্যদিকে, যদি শেখ হাসিনা খালাস পান তবে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে বলে মোরিয়ার্টি মনে করেন। তিনি বলেন, “হাসিনা খালাস পেলে বড় ধরনের বিক্ষোভ হবে। কারণ এখন দেশের মধ্যে স্পষ্টভাবে প্রতিশোধ বা প্রতিহিংসার আবহ দেখা যাচ্ছে।”
আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে মোরিয়ার্টি বলেন, দলটি এখন এক সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি উল্লেখ করেন, “নিজেদের ভবিষ্যৎ ভূমিকা ঠিক করা এখন তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে আগামী দিনের রাজনীতিতে তারা কীভাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে বা অবস্থান নেবে এটা এখন তাদের নির্ধারণ করতে হবে।”
-শরিফুল
শেখ হাসিনার রায়কে ঘিরে সজীব ওয়াজেদের বিস্ফোরক মন্তব্য
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ ঘোষণা হচ্ছে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বহুল আলোচিত মামলার রায়। রায় ঘোষণার ঘণ্টাখানেক আগে শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে তার মায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হতে পারে। একই সঙ্গে তিনি স্বস্তিও প্রকাশ করেছেন যে শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে নিরাপদে অবস্থান করছেন এবং দেশটি তাকে নিরাপত্তা দিচ্ছে।
আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধসহ পাঁচটি মামলার রায় ঘোষণা করবে। ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলন দমন করতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতাকে পরিচালনা, উৎসাহ ও অনুমোদনে শেখ হাসিনার সরাসরি ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। জাতিসংঘের একটি তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে দেশে প্রায় এক হাজার চারশ মানুষ নিহত হয়। হাজারো মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। রেকর্ড অনুযায়ী পুলিশের গুলিতেই অধিকাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটে। স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সবচেয়ে ভয়াবহ রাজনৈতিক সহিংসতা বলে এটিকে অভিহিত করেছে প্রতিবেদনটি।
গণঅভ্যুত্থানের পর ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি দিল্লিতে অবস্থান করছেন এবং ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর পাহারায় আছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। সজীব ওয়াজেদও আজ তা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন যে ভারত তার মাকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তায় রেখেছে।
রায় ঘোষণার আগমুহূর্তে জয় বলেন যে তারা আগেই বুঝে গেছেন রায়ে কী হবে। তার ভাষায়, তারা পুরো প্রক্রিয়াটি টেলিভিশনে প্রচার করছে এবং সমস্ত চিত্রই স্পষ্ট যে আদালত শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করবে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন এটি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে।
তবে আশঙ্কার পাশাপাশি তিনি স্বস্তিও প্রকাশ করেন। তার দাবি, শেখ হাসিনা ভারতে নিরাপদ আছেন এবং তাই রায় যাই হোক না কেন তার কোন ক্ষতি হবে না। তিনি বলেন, আমার মা বর্তমানে দিল্লিতে নিরাপদে আছেন এবং ভারত তাকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দিচ্ছে।
-রাফসান
ইসরায়েলের গোপন ফাঁদেই উল্টো ধরা, ইরানের যে কৌশলে বোকা বনেছিল ইসরায়েল
ইসরায়েল বহু বছর ধরেই ইরানের পারমাণবিক এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে একটি গোপন জাল বিস্তার করে আসছিল। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল ইরানের ভেতরে ড্রোন ঘাঁটি তৈরি করা, গোপনে অস্ত্রশস্ত্র পাঠানো এবং কমান্ডো পাচার করা। সব মিলিয়ে, ইসরায়েল একটি বড় ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে প্রস্তুত ছিল।
কিন্তু গত জুন মাসে ইরানের ওপর চালানো অতর্কিত হামলার কড়া জবাব দিয়ে আয়াতুল্লাহ খামেনির দেশ এটিও প্রমাণ করে দেয় যে, তারাও পাল্টা আঘাত হানার জন্য প্রস্তুত ছিল।
ইসরায়েলের 'লোহার দুর্গ' হিসেবে পরিচিত আয়রন ডোম প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে ইরানের আক্রমণে একটি ইসরায়েলি সদর দপ্তর ধ্বংস হয়ে যায়। ইসরায়েল যে ফাঁদ পেতেছিল, উল্টো তারাই ইরানের এক ধরনের 'পটকা' ফাঁদে আটকা পড়ে।
সামরিক পরিভাষায় এই কৌশলকে 'ডিকয় ক্ষেপণাস্ত্র' বা ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে প্রতারণা বলা হয়। এই কৌশলের মাধ্যমে ইসরায়েলের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে মুহূর্তের মধ্যে দুর্বল করে ফেলা সম্ভব হয়েছিল। খোদ মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালও এই তথ্য প্রকাশ করেছিল।
এই ডিকয় বা ভুয়া ক্ষেপণাস্ত্রটি দেখতে হুবহু আসল ক্ষেপণাস্ত্রের মতোই এবং এটি একই রকম আচরণ করে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো শত্রুপক্ষের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করা।
এই কৌশলটি যেভাবে কাজ করে তা হলো—আসল ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার সময়ই তার সঙ্গে ধাতব 'পটকা' বা ডিকয় নিক্ষেপ করা হয়, যা থেকে তীব্র আগুন বের হতে থাকে। ইসরায়েলের আয়রন ডোমের মতো স্বয়ংক্রিয় প্রতিরাব্যবস্থাগুলো এই ধাতব বস্তুকে শনাক্ত করে এবং সেটিকে আসল ক্ষেপণাস্ত্র বলে মনে করে।
যখনই সেটিকে আসল ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সেটিকে ধ্বংস করার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে মারে। এভাবে যখন প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ওই ধাতব পটকার দিকে ছুটে যায় বা সেটিকে ধ্বংস করে, ঠিক সেই মুহূর্তে আয়রন ডোমের অস্ত্রভাণ্ডার খালি হতে শুরু করে। এই সুযোগেই আসল ক্ষেপণাস্ত্রটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে তার নির্ধারিত লক্ষ্যে আঘাত হানে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ইসরায়েলের আয়রন ডোম থেকে একবার প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়ে গেলে, সেটি পুনরায় লোড করতে প্রায় ১০ থেকে ১১ মিনিট সময় প্রয়োজন। কিন্তু ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আয়রন ডোমে শনাক্ত হওয়ার মাত্র ৭ মিনিটের মধ্যেই ইসরায়েলের মাটিতে আঘাত হানতে সক্ষম। এই সময়ের ব্যবধানের কারণেই ইসরায়েল সেই হামলায় ধরাশায়ী হয়।
ইসরায়েলকে সেই ঘটনায় পরাজিত করতে পারলেও, ইরান এখন আরও বেশি সতর্ক এবং নিজেদের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। দেশটি সম্প্রতি সব আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে ঘোষণা দিয়েছে যে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির অগ্রগতি যেকোনো মূল্যে অব্যাহত থাকবে এবং এর পাল্লা কোনোভাবেই সীমিত করা হবে না।
জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল আরেক দেশ, প্রেসিডেন্টের বাসভবনে হামলার চেষ্টা
জেন-জি বা তরুণ প্রজন্মের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে মেক্সিকো। একজন মেয়রের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউমের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যা এখন দেশটির একাধিক শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিক্ষোভে অন্তত দেড় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। রোববার (১৬ নভেম্বর) বিবিসি একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, শুধু রাজধানী মেক্সিকো সিটিতেই জেন-জির ডাকা প্রতিবাদে অন্তত ১৫০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১০০ জনই পুলিশ কর্মকর্তা। শনিবার হাজার হাজার মানুষ রাজধানীর রাস্তায় নেমে আসেন এবং দেশে ক্রমবর্ধমান সহিংস অপরাধ ও প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউমের সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। ধীরে ধীরে এই বিক্ষোভ অন্যান্য শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। প্রেসিডেন্ট শেইনবাউম দাবি করেছেন, তার সরকারের বিরোধিতা করছেন এমন ডানপন্থি রাজনীতিবিদরা এই বিক্ষোভে অর্থায়ন করছেন এবং তারাই এটি সংগঠিত করেছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, এই বিক্ষোভের নেতৃত্বে রয়েছে জেন-জির তরুণদের বিভিন্ন সংগঠন। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আলোচিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, বিশেষ করে উরুয়াপানের মেয়র কার্লোস মানজোর হত্যার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়। মেয়র মানজো প্রকাশ্যে মাদক কার্টেল এবং সশস্ত্র পাচারকারী চক্রগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলতেন এবং তাদের দমনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাতেন। গত ১ নভেম্বর 'ডে অব দ্য ডেড' (মৃতদের দিবস) উৎসবে অংশ নেওয়ার সময় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
বিক্ষোভকারীরা 'আমরা সবাই কার্লোস মানজো' লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। অনেকে নিহত মেয়রের প্রতি সম্মান জানিয়ে কাউবয় হ্যাট পরেও বিক্ষোভে অংশ নেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা রাজধানীর ন্যাশনাল প্যালেসকে রক্ষা করার জন্য স্থাপন করা ব্যারিকেডের একাংশ ভেঙে ফেলেন। ন্যাশনাল প্যালেস প্রেসিডেন্ট শেইনবাউমের সরকারি বাসভবন হওয়ায় এলাকাটি বিশেষ নিরাপত্তায় সুরক্ষিত ছিল। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে।
মেক্সিকো সিটির নিরাপত্তা প্রধান পাবলো ভাসকেজ জানিয়েছেন, লুটপাট, হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভের আগে প্রেসিডেন্ট শেইনবাউম দাবি করেছিলেন যে, অনলাইন বট ব্যবহার করে এসব বিক্ষোভের প্রচারণা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, "যুবকদের দাবি থাকতেই পারে। কিন্তু প্রশ্ন হলো— এই আন্দোলন কে সংগঠিত করছে? জনগণের জানা জরুরি যেন তারা ব্যবহৃত না হয়।"
বিবিসি জানিয়েছে, ক্ষমতায় আসার প্রথম বছরেই শেইনবাউমের প্রতি ৭০ শতাংশের বেশি মানুষের সমর্থন রয়েছে। বিশেষ করে ফেন্টানিল পাচারের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও প্রশংসা পেয়েছে। তবে, দেশব্যাপী সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে তিনি সমালোচিতও হচ্ছেন। একই সময়ে প্রতিবেশী দেশ পেরুর সঙ্গেও মেক্সিকোর কূটনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। চলতি মাসের শুরুতে পেরুর কংগ্রেস শেইনবাউমকে 'পারসোনা নন গ্রাটা' বা অবাঞ্ছিত ব্যক্তি ঘোষণা করে। এর আগে মেক্সিকো অভিযুক্ত একজন সাবেক পেরুভিয়ান প্রধানমন্ত্রীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল।
বিদেশি কর্মী নিয়োগে 'ইউ-টার্ন' সৌদির,কমছে বেতন ও সুবিধা
সৌদি আরব বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের পুরোনো নীতি থেকে সরে আসছে। একটা সময় দেশটি উচ্চ বেতনের আকর্ষণীয় প্রস্তাব বা 'স্যালারি প্রিমিয়াম' দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চ দক্ষ কর্মীদের আকৃষ্ট করত। কিন্তু এখন সেই বাস্তবতার পরিবর্তন হচ্ছে। রোববার (১৬ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
রয়টার্স চারজন নিয়োগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছে, সৌদি আরব এখন খরচ কমানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছে এবং তাদের অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারগুলো নতুন করে সাজাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে আগের মতো উদার প্রস্তাব আর দেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে নির্মাণ, উৎপাদন এবং দেশটির বড় বড় মেগা প্রকল্পগুলোতে এই পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।
বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক এই দেশটি তাদের 'ভিশন ২০৩০' নামের একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো তেলের ওপর থেকে দেশের নির্ভরতা কমিয়ে আনা। একইসঙ্গে পর্যটন, রিয়েল এস্টেট, খনন ও আর্থিক খাতের মতো নতুন নতুন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান তৈরি করা। এই লক্ষ্য পূরণে দেশটি এরই মধ্যে শত শত বিলিয়ন ডলারের মেগা প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করেছে। তবে, রয়টার্সের মতে, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ায় আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি, যা এখনকার এই ব্যয় সংকোচনের একটি কারণ হতে পারে।
নিয়োগ খাতের প্রতিনিধিরা বলছেন, আগে এমন একটা সময় ছিল যখন কেউ সৌদিতে চাকরি নিয়ে গেলে তার বর্তমান বেতনের চেয়ে ৪০ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ পর্যন্ত বেশি বেতন পাওয়াটা খুবই সাধারণ ব্যাপার ছিল। কিন্তু এখনকার প্রস্তাবগুলো অনেক বেশি সংযত।
বয়ডেন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ম্যাগদি আল জায়েন বলেন, এর পেছনে দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, সৌদি অর্থনীতি এখন খরচ কমাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, প্রচুর সংখ্যক আন্তর্জাতিক প্রার্থী সৌদিতে কাজ করতে আগ্রহী। এই সুযোগে কোম্পানিগুলো তাদের বেতন কাঠামো নিয়ে নতুন করে ভাবার সুযোগ পাচ্ছে।
দুবাইভিত্তিক টাস্কান মিডল ইস্টের সিইও হাসান বাবাত একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি আরও পরিষ্কার করেন। তিনি বলেন, আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যিনি ৬০ হাজার ডলার বেতনে ম্যানেজারের চাকরি করতেন, তিনিই সৌদিতে অনায়াসে ১ লাখ ডলারের চাকরির প্রস্তাব পেতেন। কিন্তু এখন সেই সুযোগ আর নেই।
তবে, বেতন কমানোর এই প্রবণতার মধ্যেও মধ্যপ্রাচ্যের বাইরের দেশগুলো থেকে আসা প্রার্থীদের জন্য সৌদি আরব এখনও একটি আকর্ষণীয় বাজার। দেশটির অর্থনীতি ২০২৫ সালে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
একইসঙ্গে, সরকার দেশের নাগরিকদের জন্য কর্মসংস্থান বাড়ানোর দিকেও ব্যাপক মনোযোগ দিয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে ২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত বেসরকারি খাতে সৌদি নাগরিকদের অংশগ্রহণ ৩১ শতাংশ বেড়েছে এবং দেশটিতে বেকারত্বের হার ঐতিহাসিকভাবে কমে এসেছে।
ম্যাচেস ট্যালেন্টের সিইও লুইস নুটসন এই পরিবর্তনকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, এখনকার বেতন প্যাকেজগুলো বাস্তব বাজার দর, কর্মীর পারফরম্যান্স এবং তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ঠিক করা হচ্ছে। বাইরে থেকে এটাকে 'সংকোচন' মনে হলেও, এটি আসলে সৌদি আরবের বাজার 'পরিপক্ক' হয়ে ওঠার লক্ষণ।
তিনি আরও বলেন, এখন সৌদিতে সেরা প্রতিভাদের আকর্ষণ করতে হলে কোম্পানিগুলোকে শুধু বেশি বেতনের প্রস্তাব দিলেই হবে না, বরং পারিবারিক জীবনযাপনের ভারসাম্য, জীবনযাত্রার খরচ মেটানোর সুবিধা এবং প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দিতে হবে।
পাঠকের মতামত:
- হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী?
- পেট ফাঁপা ও গ্যাসে ভুগছেন? মাত্র ১১ দিনেই স্বস্তি মেলার উপায়
- IELTS ছাড়াই অস্ট্রিয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ, সাথে সম্পূর্ণ ফ্রি স্কলারশিপ
- তারকাদের বাদ দিয়েই বাংলাদেশের মুখোমুখি ভারত, কোচের কড়া সিদ্ধান্তে তোলপাড়
- হাসিনার রায় নিয়ে 'সতর্ক' প্রতিক্রিয়া ভারতের, জানাল নিজেদের অবস্থান
- অদ্ভুত ধাতব বস্তু, রহস্যময় সংকেত: মারিয়ানার অন্ধকার গহ্বরে চীনের 'ফেন্টোজে' কী দেখল?
- সাময়িক আশ্রয় কি স্থায়ী হচ্ছে? হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের নতুন ভাবনা
- চাউশেস্কু থেকে সাদ্দাম: ইতিহাসে যে শাসকদের পতন হয়েছিল মৃত্যুদণ্ডে
- শুধু ব্যক্তি নয়, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার চাই: নাহিদ ইসলাম
- শাহজালাল বিমানবন্দরে হঠাৎ ধোঁয়া, বহির্গমন টার্মিনালে আতঙ্ক
- আমরা রায়ে খুশি, তবে...হাসিনাদের দণ্ড নিয়ে যা বলল সাঈদের বাবা
- মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি হাসিনা-কামালের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
- হাসিনাকে ফেরত দিন, প্রতিবেশীর 'প্রথম দায়িত্ব' নিয়ে যা বলল জামায়াত
- বিবাহবার্ষিকীর দিনেই মৃত্যুদণ্ডের রায় পেলেন শেখ হাসিনা
- পাশের দেশ অশান্তি পাকাচ্ছে, রায় পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
- আল জাজিরা থেকে এনডিটিভি, বিশ্বজুড়ে যেভাবে প্রচার হলো হাসিনার রায়
- ১৭ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১৭ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১৭ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- যে যে মামলায় ফাঁসির রায় হলো হাসিনা-কামালের
- হাসিনার পর আসাদুজ্জামান খান কামালেরও মৃত্যুদণ্ডের আদেশ
- দোষ স্বীকারেও এড়াতে পারলেন না সাজা: সাবেক আইজিপির ৫ বছর কারাদণ্ড
- পতন থেকে মৃত্যুদণ্ড: ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক রায়
- শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে 'মানবতাবিরোধী অপরাধের' সত্যতা মিলেছে: ট্রাইব্যুনাল
- ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই, এটি দেশ রক্ষার নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা
- রেড জুলাই নামে ৩২ নম্বরে বুলডোজার, শাওন বললেন 'রাজাকার বাহিনী'
- খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই': রায় ঘোষণাকে ঘিরে টিএসসিতে শিক্ষার্থীদের ভিড়
- ৮ হাজার পৃষ্ঠার প্রমাণ, হাজারো নিহত–আহত: শেখ হাসিনাদের বিরুদ্ধে রায়ে কী ঘটতে যাচ্ছে? সরাসরি দেখুন!
- হাসিনার রায় ঘিরে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সতর্ক বার্তা
- ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে বুলডোজার মিছিল-ঘটছে কী?
- জুলকারনাইন: দুই শিং–ওয়ালা বাদশার রহস্য
- এবি ব্যাংকের পারপেচুয়াল বন্ডের রেটিং ঘোষণা
- মাগুরাপ্লেক্সের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন
- মনোস্পুলের ইপিএসে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি
- পাঁচ পরিষেবা স্থায়ীভাবে বন্ধ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- হাসিনার আইনজীবীর বিস্ময়কর স্বীকারোক্তি
- শেখ হাসিনার রায়কে ঘিরে সজীব ওয়াজেদের বিস্ফোরক মন্তব্য
- সোমবার রাজধানীর বাজার বন্ধের পূর্ণ তালিকা
- ঢাকার আবহাওয়া আজ স্বস্তিদায়ক
- বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় আবারও ঢাকা
- আজ রাজধানীজুড়ে কর্মসূচির ছড়াছড়ি, জানুন বিস্তারিত
- মোট যতটি মামলার মুখোমুখি শেখ হাসিনা
- ‘কোথায় আওয়ামী লীগ? শাটডাউন শুধু ঘোষণাতেই’
- এনসিপির মনোনয়ন নিলেন সারজিস,একই আসনে বিএনপি-এনসিপি দুই হেভিওয়েট প্রার্থী
- সোমবার সকাল ১১টায় হাসিনার রায়: দেশজুড়ে কড়া নিরাপত্তা
- ইতিহাসের কুচক্রী নারী: ঘষেটি বেগম, যার উচ্চাকাঙ্ক্ষা ডেকে এনেছিল বাংলার পতন
- জামায়াতে ইসলামী: অতীতের ছায়া ছাপিয়ে কি নতুন শুরু সম্ভব?
- ককটেল বিস্ফোরণে কাঁপল কারওয়ান বাজার
- রাজনীতিকে বিদায় জানালেন শমসের মবিন চৌধুরী
- সাভারে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি বাসে আগুন
- সিলেট টেস্টে আয়ারল্যান্ড অলআউট ২৮৬ রানে, দুর্দান্ত সূচনায় বাংলাদেশ
- সাদমানের পর মুমিনুলকে নিয়ে জয়ী রথ বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে রেকর্ড জুটি
- মামলার রেশ না কাটতেই তিশার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের অভিযোগ
- নেপালের বিপক্ষে দুর্দান্ত হামজা জোড়া গোলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিল বাংলাদেশ
- বাংলাদেশ নেপাল ম্যাচের আগে জেনে নিন হেড টু হেড পরিসংখ্যানে কারা চালকের আসনে
- অ্যাকশন, রিভেঞ্জ আর সিক্রেট মিশন: দেখুন সেরা ১০ কোরিয়ান অ্যাকশন সিরিজ!
- আজকের খেলাধুলা সূচি
- জুলাই অভ্যুত্থান মামলা শেখ হাসিনাসহ ৩ আসামির রায়ের তারিখ ঘোষণা
- আজ বিশ্ব ব্যাচেলর দিবস: একাকীত্ব নয়, স্বাধীনতার উৎসব
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বড় ধরনের পতন: ৩৮৪ কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১৫টি বেড়েছে
- আজ রাজধানীতে রাজনৈতিক যেসব কর্মসূচি, কোথায় কী হচ্ছে জেনে নিন
- লকডাউনের দিনেও দোকান-শপিংমল খোলা থাকবে: মালিক সমিতি
- রোনালদোর শেষ খেলার পরিকল্পনা নিয়ে বড় ঘোষণা
- কাদিয়ানী ইস্যু ও পাকিস্তানি সংযোগ: বাংলাদেশের ধর্মীয় রাজনীতিতে বিপজ্জনক অস্থিরতার ইঙ্গিত
- শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘিরে ঢাকা জুড়ে সতর্কতা








