আজ সন্ধ্যায় বিএনপি-ইউনূস বৈঠক: কী আছে আলোচনার টেবিলে?

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে বিএনপি ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বসবে এই বৈঠক, যেখানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং নিশ্চিত করেছে যে, বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয় হবে জাতীয় নির্বাচন, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এবং বিরোধী দলগুলোর ভূমিকা।
এটি হবে বিএনপি ও ড. ইউনূসের মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠক—এর আগে ৩১ আগস্টও তারা মুখোমুখি হয়েছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এবারের বৈঠকটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা, কারণ জুলাই জাতীয় সনদে বিএনপির সক্রিয় অংশগ্রহণের পর এটি হতে যাচ্ছে প্রথম আনুষ্ঠানিক সংলাপ।
রাজনৈতিক মহলে জল্পনা—বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য কী? কেবল আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা, নাকি নতুন একটি রাজনৈতিক ঐকমত্য গঠনের প্রচেষ্টা? সূত্রমতে, বিএনপি এবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতের রোডম্যাপ চাইতে পারে। অন্যদিকে ড. ইউনূসের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে পারস্পরিক সংলাপ ও আস্থার পরিবেশ তৈরির ওপর জোর দেওয়া হতে পারে।
একজন জ্যেষ্ঠ বিএনপি নেতা বলেন, “এটি কেবল আনুষ্ঠানিক বৈঠক নয়; বরং এটি ভবিষ্যতের পথচিত্র নির্ধারণ করবে।” রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যদি বৈঠকে মৌলিক ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়, তবে এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পুনরুত্থানের নতুন ভিত্তি হতে পারে।
সম্প্রতি স্বাক্ষরিত জুলাই জাতীয় সনদ—যেখানে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দল স্বাক্ষর করেছে—রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে। বৈঠকের সময়সূচি ঘোষণার পর অনেকেই মনে করছেন, এই আলোচনায় সনদের বাস্তবায়নই মুখ্য বিষয় হবে। বিএনপি নেতারা মনে করছেন, সনদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন ছাড়া দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সম্ভব নয়।
মির্জা ফখরুল ইতোমধ্যে একাধিকবার বলেছেন, “জুলাই সনদ কেবল কাগজ নয়; এটি গণআকাঙ্ক্ষার দলিল।” তাই বৈঠকে তিনি সরকারের কাছ থেকে এই সনদের সময়সূচি ও বাস্তবায়ন কাঠামো সম্পর্কে পরিষ্কার আশ্বাস চাইতে পারেন।
বিএনপি এবার সংলাপে অংশ নিচ্ছে তুলনামূলকভাবে কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রেখে। একদিকে তারা প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আস্থা রাখছে, অন্যদিকে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের চাপও অনুভব করছে। দলটির নীতি নির্ধারকরা বলছেন, “আমরা সংলাপে যাচ্ছি, কিন্তু জনগণের রায়ের বাইরে কোনো সমাধান গ্রহণ করবো না।”
বিশ্লেষকদের মতে, এই কৌশল ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, বিএনপি এবার সরাসরি মুখোমুখি সংঘাতের পথে নয় বরং নীতি ও আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে চায়।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্য এই বৈঠকও সমান গুরুত্বপূর্ণ। জুলাই সনদে তার ভূমিকা যেমন প্রশংসিত হয়েছে, তেমনি এর বাস্তবায়নে বিলম্ব ও রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগও উঠেছে। বিএনপির সঙ্গে এই বৈঠক তার জন্য এক ধরনের “টেস্ট কেস”—যেখানে তাকে প্রমাণ করতে হবে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সত্যিই নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক।
সরকারি সূত্র বলছে, ইউনূসের লক্ষ্য হলো আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে সর্বসম্মত ও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা। তিনি চান রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনার টেবিলে ফিরুক, যাতে “নতুন বাংলাদেশ”-এর স্বপ্ন বাস্তব রূপ পায়।
প্রবৃদ্ধির সুফল গরিবের ঘরে পৌঁছাচ্ছে না বরং ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির গল্প যতটা শোনা যায় দারিদ্র্য হ্রাসের চিত্র ততটা আশাবাদী নয়। একসময় ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা দারিদ্র্যের হার এখন অনেক ধীরগতিতে নেমে আসছে এবং গত চার বছর ধরে উল্টো বাড়ছে দারিদ্র্যের হার। বলা হচ্ছে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও তার সুফল সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের ঘরে পৌঁছাচ্ছে খুব কম। বরং বৈষম্য আরও গভীর হচ্ছে এবং জীবিকা অনিশ্চয়তার বেড়াজালে আটকে যাচ্ছে লাখো পরিবার।
সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায় ২০১০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশের দারিদ্র্য হ্রাসের অগ্রগতি ছিল শক্তিশালী এবং সেই সময়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভোগব্যয়ও বাড়ছিল দ্রুত। কিন্তু ২০১৬ সালের পর প্রবৃদ্ধির কাঠামো বদলে যায়। উচ্চআয়ের পরিবারগুলো বেশি লাভবান হয় এবং নিম্নআয়ের পরিবারগুলোর আয় থমকে পড়ে। ফল হিসেবে ২০১৬ থেকে ২০২২ সময়ে দারিদ্র্য হ্রাসের হার স্পষ্টভাবে কমে গেছে। বর্তমানে দেশে ৩ কোটি মানুষের বেশি দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে। এ ছাড়া ৬ কোটি মানুষ অর্থাৎ জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ যেকোনো বড় বিপর্যয় অসুস্থতা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অর্থনৈতিক আঘাতে আবারও দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পরিসংখ্যান বলছে দেশের প্রতি ১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি দারিদ্র্য কমাচ্ছে মাত্র শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার গড় ১ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধির গতি থাকলেও তা আর দারিদ্র্য মোকাবিলার শক্তিশালী ইঞ্জিন হয়ে কাজ করছে না। রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট বা র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যাপনা বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর মো. আবু ইউসুফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন দারিদ্র্য কমার গতি যা ছিল এখন আর তা নেই। তিনি সতর্ক করে বলেন প্রবৃদ্ধিকে কাগজে দ্রুত দেখানো সহজ কিন্তু তার সুফল দরিদ্র মানুষের আয়ব্যয়ের বাস্তবতায় পৌঁছানোই মূল। বৈষম্য বাড়লে দারিদ্র্য স্থায়ী হয় এবং উন্নয়ন ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। তিনি পরামর্শ দেন যে এখন নীতির লক্ষ্য হতে হবে আয় বাড়ানো কর্মসংস্থান বিস্তৃত করা এবং সামাজিক সুরক্ষায় সঠিক মানুষকে শনাক্ত করা।
প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে যে দারিদ্র্য বৃদ্ধির পেছনে বড় কারণ হলো যথেষ্ট কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়া এবং চাকরি হারানো। ২০২৩ ও ২৪ সালের মধ্যে ২০ লাখ কর্মসংস্থান কম হয়েছে এবং ২০২৫ সালে আরও ৮ লাখ কর্মসংস্থান কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ সময়ে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিসহ সরকারি সহায়তা বিস্তৃত হলেও সুবিধাভোগী শনাক্তকরণের দুর্বলতায় প্রকৃত দরিদ্র পরিবারগুলোর একটি বড় অংশ কাঙ্ক্ষিত সহায়তা পাচ্ছে না।
প্রতিবেদনের হিসাবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি বাংলাদেশের দারিদ্র্য ও আঞ্চলিক বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্য হুমকির মুখে ফেলতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন ২০৫০ সাল নাগাদ ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে এবং কৃষি খাতে জিডিপির প্রায় এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তা নিম্ন আয়ের পরিবারে সরাসরি চাপ সৃষ্টি করছে।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।
নূর হোসেন ও ডা. মিলনের আত্মত্যাগের পর যেভাবে এসেছিল ৯০ এর বিজয়
আজ ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৯০ সালের এই দিনে গণঅভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদ পদত্যাগ করে অস্থায়ী সরকারের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তর করেন। আর এর মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে দীর্ঘ ৯ বছরের স্বৈরশাসনের এবং আবারও গণতন্ত্রের পথে হাঁটা শুরু করে দেশ।
এইচ এম এরশাদ এর আগে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সামরিক আইন জারি করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে চলা তার শাসনের বিরুদ্ধে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন বামপন্থী দলের টানা আন্দোলন গড়ে ওঠে। এ আন্দোলনে ডা. শামসুল আলম খান মিলন ও নূর হোসেনসহ অসংখ্য মানুষ জীবন উৎসর্গ করেন।
১৯৯০ সালের ২১ নভেম্বর এরশাদবিরোধী আন্দোলন যখন তীব্র আকার ধারণ করে সে সময় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫ দল এবং বিএনপির নেতৃত্বে সাত দল ও ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাসদের নেতৃত্বে পাঁচটি বামপন্থী দল যৌথভাবে একটি রাজনৈতিক রূপরেখা ঘোষণা করে। যদিও জামায়াতে ইসলামী ওই তিন জোটের বাইরে ছিল তবুও তারা এরশাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়।
স্বৈরশাসকের পতন ঘটলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে তিন জোটের ঘোষিত সেই রূপরেখার পূর্ণ বাস্তবায়ন আর হয়নি। কার্যকর সংসদ ও আইনের শাসন এবং নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও টেকসই গণতন্ত্র এই বিষয়গুলো এখনো অনেকাংশে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন।
এই দিবসটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ভিন্ন ভিন্ন নামে পালন করে থাকে। বিএনপি দিনটিকে স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস নামে পালন করে থাকে। দিবসটি উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেন গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ নয় বছর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে আপসহীন নেত্রী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি গড়ে তোলেন এক দুর্বার গণআন্দোলন। এরই ধারাবাহিকতায় ৯০ এর ৬ ডিসেম্বর এই দিনে ছাত্র জনতার মিলিত শক্তিতে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে মুক্ত হয়েছিল গণতন্ত্র।
ক্যাম্পের বন্দি জীবন থেকে মুক্তি পেতে সাগরে ভাসছে রোহিঙ্গাদের স্বপ্ন
দীর্ঘায়িত হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প জীবন এবং সব বয়সী রোহিঙ্গারা ক্যাম্পের বন্দি ও অমানবিক জীবনে প্রত্যাবাসনের অনিশ্চয়তার চরম হতাশায় ভুগছে। নিজভূমে তো বটেই সেটি যদি সম্ভব না হয় তাহলে উন্নত দেশে পুনর্বাসনের আশায় যেতে চায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা। নিজভূমি থেকে পালিয়ে আসার পর নিরাপদ প্রত্যাবাসন এখনো অমীমাংসিত তাই নিরুপায় হয়ে এই বেঁচে থাকা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে। কবে তারা নিজভূমে ফিরে যেতে পারবে এ প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারছে না।
ক্যাম্পে নিজ ভাষায় পড়াশোনা অথবা জীবন জীবিকার নানা আয়োজন আছে তবুও সেটা বন্দি জীবনের মতোই। নিজভূমে ফেরা যখন অনিশ্চিত তখন অন্যের দানে চলা জীবন নিজভূমে না হোক তারা যেতে চায় পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে। এমন চাওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অনেকের মাঝেই দেখা যায়। বৈধ বা অবৈধ যে পথেই হোক তারা যেতে চান উন্নত বিশ্বের যে কোনো দেশে। এ কারণে মাঝে মধ্যে সাগরপথে তারা পাড়ি জমায় মালয়েশিয়া অথবা ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশ্যে। পাচারকারী সিন্ডিকেটের খপ্পড়ে পড়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় উত্তাল সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে জীবন হারাতে হচ্ছে অনেককে।
কানাডা ও নিউজিল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি উন্নত দেশে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৮৯৭ জন রোহিঙ্গা পুনর্বাসিত হয়েছে। তবে রাখাইনে নিরাপদ প্রত্যাবাসন শুরু হলে এদের অনেকেই ফিরতে চান নিজ বাসভূমি মিয়ানমারে। কানাডায় পুনর্বাসিত রোহিঙ্গা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন এখন যদি শান্তিপূর্ণভাবে আরাকানে চলে যেতে পারে তবে সবাই চলে যাবে এবং আমরাও চলে যাব আরাকানে। বছরে ১ ভাগও পুনর্বাসনের সুযোগ পায়নি এমন অনেকে এখনো ক্যাম্পে দিন কাটাচ্ছে।
কক্সবাজারের উখিয়ার ১৮ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ হারেজ প্রাণ বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট ৪ সন্তান নিয়ে আশ্রয় নেন বাংলাদেশে। ক্যাম্পে মানবেতর দিন কাটালেও মিয়ানমারে তিনি ছিলেন রাজার হালে। জমি জমা তো বটেই ছিল গোয়াল ভরা গরু মহিষ ও ছাগলও। হারেজ এখন ফিরতে চান হারিয়ে আসা সেই জীবনে এবং চান নিজ ভিটায় ফিরতে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন বাচ্চারা খেলবে এরকম একটা মাঠ নেই এবং ভালো একটা রাস্তা পর্যন্ত নেই কোথাও। ক্যাম্পের জীবন আমাদের একটুও ভালো লাগে না। নিজ দেশে আমাদের বড় বড় জায়গা ছিল ও ঘরবাড়ি ছিল আর ছোট একটা ঝুপড়ি ঘরে আমাদের থাকতে হচ্ছে এখানে। গ্রীষ্মকালে গরমের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে যাই আবার বর্ষাকালে ঘরের ভেতর পানি ঢুকে যায়। তিনি আরও বলেন আমরা আমাদের দেশে ফিরে যেতে চাই কারণ শরণার্থী হয়ে এই বাংলাদেশে আমরা আর থাকতে চাই না। এই দেশে অন্য কোথাও গিয়ে কাজ করে আয় করার সুযোগও আমাদের নেই এবং সরকারি সহায়তা নিয়ে আমাদের জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
কক্সবাজারের উখিয়ার ২০ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক মেম্বার মোহাম্মদ জোহার বলেন আমাদের যদি শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের ভূমিতে পুনর্বাসন করে তবে আমরা চলে যাব। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় বলছে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে শরণার্থীরা তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসিত হয়েছে তবে সে সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান বলেন আমাদের ১২ মিলিয়ন বা ১২ লাখ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। তাদেরকে আগে তাদের নিজভূম আরাকানে ফেরত নিতে হবে এবং এটাই আমরা চেষ্টা করছি। তবে উন্নত জীবনের আশায় বৈধ বা অবৈধ পথে কিছু রোহিঙ্গা বিভিন্ন দেশে চলে গেছে। তিনি মন্তব্য করেন যে এটা করা হলে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনকে নিরুৎসাহিত করা হবে। আমরা চাই ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের নিজভূমে পুনর্বাসিত করা হোক। উল্লেখ্য প্রায় ১৪ লাখের মতো রোহিঙ্গা বসবাস করছে কক্সবাজারের ৩৩টি ক্যাম্পে এবং প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন অনিশ্চয়তায় মাঝে মাঝেই অবৈধ পথে পালানোর সময় সলিল সমাধি হয়ে খবরে শিরোনাম হন রোহিঙ্গারা।
মানবিক সংকটে স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকাই জাতিকে এগিয়ে নেয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী অব. বলেছেন দেশের দুর্যোগ মোকাবিলা দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও মানবিক সংকটসমূহে স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকাই জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচলের ফায়ার সার্ভিস মাল্টিপারপাস ট্রেনিং গ্রাউন্ডে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তরুণ প্রজন্মকে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে আরও বেশি উৎসাহিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন তরুণদের এই মহান কাজে সম্পৃক্ত করতে হলে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। তিনি মনে করেন স্বেচ্ছাসেবকদের নিঃস্বার্থ শ্রম ও ত্যাগই বিপদের সময় মানুষের সবচেয়ে বড় ভরসা হয়ে ওঠে।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মাঠ পর্যায়ে তাদের কার্যক্রম প্রদর্শন করে এবং প্রশিক্ষণভিত্তিক চমৎকার মহড়া উপস্থাপন করে যা উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক অংশগ্রহণ করেন। আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবার মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানবিক কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
সব সংস্কার সম্ভব নয় তাই নির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা দিয়েই বিদায় নিতে চায় সরকার
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে ভারত এখন পর্যন্ত ইতিবাচক সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর সকালে রংপুর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন আমরা তাকে চেয়েছি যেহেতু তিনি কনভিক্টেড এবং সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাকে শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ইতিবাচক কোনো সাড়া আমরা পাইনি। তিনি মন্তব্য করেন এটা নিয়ে অনুমান বা স্পেকুলেট না করাই ভালো বরং দেখা যাক কী হয়। তিনি আরও জানান এ ধরনের ঘটনায় ঝট করে এক দিনে বা সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না তাই আমরা অপেক্ষা করব এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষ থেকে কী প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় তা দেখব।
তারেক রহমানের দেশে আসার বিষয়ে তিনি বলেন তারেক সাহেব কখন আসবেন সে সম্পর্কে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই তবে উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন। খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রা প্রসঙ্গে তিনি জানান এয়ারক্রাফট নিয়ে একটু টেকনিক্যাল সমস্যা দেখা দেওয়ায় বেগম জিয়াকে আজ নেওয়া হচ্ছে না এবং সেক্ষেত্রে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে।
রংপুর সফরের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন আমার আসার উদ্দেশ্যের সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতির কোনো সম্পর্ক নেই বরং আমরা চেষ্টা করেছি বিশেষ করে উত্তরবঙ্গকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়। তিনি জানান চাইনিজ সহায়তায় নীলফামারী জেলায় ১ হাজার বেডের হাসপাতাল হবে। এমনভাবে প্ল্যান করা হয়েছে যে শুধু নীলফামারী না এমনও চিন্তা করা হচ্ছে যে ক্ষেত্রবিশেষে আশপাশের দেশগুলো বিশেষ করে ভারত ও ভুটান থেকেও যেন মানুষ চিকিৎসা নিতে আসতে পারে। এছাড়া ব্যবসা বাণিজ্য বাড়ানো এবং যুবকদের কর্মসংস্থান নিয়ে সবচেয়ে বেশি চেষ্টা চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ ও সংস্কার প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন অনেকে আশা করছিলেন যে আমরা সব রিফর্ম বা সংস্কার করে দিয়ে যাব কিন্তু সেটা আসলে সম্ভব নয়। আমরা শুরু করে দিয়ে যাব এবং বাকিটা নির্বাচিতরা জনগণের কাছে আসবে ও ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাবে। আমরা চেষ্টা করছি খুব সঠিকভাবে নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিতদের হাতে দেশের ভার দিয়ে দায়িত্ব থেকে অবসর নিতে।
আরাকান আর্মি কর্তৃক বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন এ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্ভব নয় কারণ তারা নন স্টেট বা রাষ্ট্রহীন শক্তি। মিয়ানমারের সঙ্গে যেমন আলোচনা করতে পারি তাদের সঙ্গে তেমন করতে পারি না। তবে যেহেতু আমাদের স্বার্থ আছে সেহেতু আমাদের বিষয়টি দেখতে হবে এবং এই ঘটনা যাতে কমে বা না ঘটে এর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
চার দিনের সফরে রংপুরে এসে শুক্রবার তিনি রংপুর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করছেন। শনিবার সকালে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং বিকেলে রংপুর ক্যাডেট কলেজ পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। পরদিন রবিবার দুপুরে তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন এবং বিকেলে সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
জনবান্ধব পুলিশ গড়তে উপদেষ্টা পরিষদের বড় সিদ্ধান্ত
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই গুরুত্বপূর্ণ অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এদিন বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
রিজওয়ানা হাসান জানান পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি পুলিশ কমিশন গঠন করার অধ্যাদেশটি পাস করা হয়েছে। এই কমিশনের প্রধান থাকবেন বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক। সদস্যদের যোগ্যতার বিষয়ে তিনি জানান জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজ করেছেন এমন গ্রেড ওয়ানের নিচে নন এমন কোনো সরকারি কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক গ্রেড ওয়ানের নিচে নন এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমিশনের সদস্য হবেন। এছাড়া কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক যিনি কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে কাজ করেছেন এমন অন্তত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি এই কমিশনের সদস্য হিসেবে থাকবেন।
এই পুলিশ কমিশন গঠনের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন পুলিশকে জনবান্ধব ও জনমুখী করাই এর লক্ষ্য। এই কমিশন সরকারের সঙ্গে মিলে কাজ করবে এবং পুলিশ যেন প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারে সেই ব্যাপারে কী কী করণীয় সে বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ প্রদান করবে। পুলিশ যাতে মানবাধিকার সংবেদনশীল হয় এবং পুলিশের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার বা কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার সেগুলো তারা চিহ্নিত করবে।
কমিশনের কার্যপরিধি সম্পর্কে তিনি আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের কথা উল্লেখ করেন। প্রথমত নাগরিকদের যে অভিযোগগুলো থাকবে পুলিশের ব্যাপারে সেগুলোর তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা। দ্বিতীয়ত পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে সেগুলোরও নিষ্পত্তি করা হবে। রিজওয়ানা হাসান বলেন এটাই হচ্ছে পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের মূল ফিচার। কমিশনের নির্ধারিত কাজের মধ্যে আরও রয়েছে পুলিশ কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনয়ন এবং শৃঙ্খলা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা। এছাড়া পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি তথ্য প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ ও কল্যাণমূলক ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে সরকারকে সুপারিশ দেওয়া এবং পুলিশ সংক্রান্ত আইন গবেষণা করাও এই কমিশনের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদনে বর্তমান পুলিশ প্রধানের নাম
বিডিআর বিদ্রোহের নামে সংঘটিত বর্বরতম হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে দায়ী ব্যক্তিদের তালিকায় নাম আসায় বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক বা আইজিপি বাহারুল আলমকে অপসারণ করতে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব স্বরাষ্ট্র সচিব জনপ্রশাসন সচিব ও আইন সচিবকে এই নোটিশ পাঠিয়েছেন।
নোটিশে বলা হয়েছে নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আইজিপি বাহারুল আলমকে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো আইনজীবীরা হলেন অ্যাডভোকেট মো. আব্দুস সামাদ অ্যাডভোকেট শাহিন হোসেন ও অ্যাডভোকেট মো. আতিকুর রহমান।
উল্লেখ্য বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার জন্য বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলমসহ পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার নাম এসেছে। স্পর্শকাতর ওই প্রতিবেদনে আইজিপির নাম আসার পর থেকেই প্রশাসনের ভেতরে নানা আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে।
প্রতিবেদনে আইজিপির বিরুদ্ধে বেশ কিছু নেতিবাচক তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। বিশেষ করে পুলিশের বিশেষ শাখায় বা এসবিতে দায়িত্ব পালনকালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখা এবং বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সক্রিয় থাকার অভিযোগ উঠে এসেছে বাহারুল আলমের বিরুদ্ধে। এই অবস্থায় তাঁর ভাগ্যে কী হতে পারে তা নিয়ে প্রশাসনের ভেতরে ও বাইরে এখন চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।
অ্যাপের মাধ্যমে সাড়া মিলছে ব্যাপক, প্রবাসীদের ভোটের পরিসংখ্যানে পুরুষের আধিপত্য
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে এখন পর্যন্ত এক লাখ ৬৮ হাজারেরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটার নিবন্ধন করেছেন। নির্বাচন কমিশনের বা ইসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত মোট এক লাখ ৬৮ হাজার ৩৩ জন প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। নিবন্ধনকারীদের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এদের মধ্যে এক লাখ ৪৯ হাজার ৮৮৪ জন পুরুষ ভোটার এবং ১৮ হাজার ১৪৯ জন নারী ভোটার রয়েছেন।
প্রবাসীদের আগ্রহ বিবেচনায় আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধনের সময় বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর আগে গত ১৮ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার আনুষ্ঠানিকভাবে এই অ্যাপ উদ্বোধন করেছিলেন।
পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটদানের জন্য প্রবাসী ভোটারকে অবশ্যই যেখান থেকে ভোট দেবেন সেই দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে। নিবন্ধনের জন্য প্রথমে গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপ ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে হবে। ব্যবহারকারী বাংলা বা ইংরেজি ভাষা নির্বাচন করে অ্যাপে নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নির্দেশনা দেখতে পারবেন। বিদেশে ব্যালট প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য সঠিক ঠিকানা প্রদান করা অপরিহার্য বলে জানিয়েছে কমিশন।
সকালে আবারও কাঁপল ঢাকা
রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর সকাল ৬টা ১৪ মিনিটে এ কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে ভূমিকম্পটি হালকা মাত্রার ছিল এবং সকাল ৬টা ১৪ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডে এটি অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর শিবপুরে।
রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল ৩৮ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে। ভূমিকম্পের তথ্য প্রদানকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার বা ইএমএসসি তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে এই ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩০ কিলোমিটার এবং এর উৎপত্তিস্থল ছিল গাজীপুরের টঙ্গী থেকে ৩৩ কিলোমিটার পূর্ব উত্তরপূর্ব দিকে এবং নরসিংদীর ৩ কিলোমিটার উত্তরে।
এর আগে সোমবার মধ্যরাত ১২টা ৫৫ মিনিটে ৪ দশমিক ৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয় যার কেন্দ্রস্থল ছিল মিয়ানমারের মিনজিনে এবং চট্টগ্রামসহ দেশের কিছু অংশে তা অনুভূত হয়। তার আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলেও ঢাকায় ৩ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল যার উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে। এছাড়া ২১ নভেম্বর এবং ২২ নভেম্বর প্রায় ৩১ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা ও এর আশপাশে চারবার ভূমিকম্প হয়। এর মধ্যে ২১ নভেম্বরের ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশে ১০ জন নিহত এবং ছয় শতাধিক মানুষ আহত হন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন সাম্প্রতিক সময়ে বেশিরভাগ ভূমিকম্পেরই উৎপত্তিস্থল হচ্ছে নরসিংদী। এই এলাকা হলো বার্মা প্লেট এবং পশ্চিমের ইন্ডিয়ান প্লেটের সংযোগস্থল বা সাবডাকশন জোন। প্লেটের এই সংযোগস্থলে ফাটল বা নড়াচড়ার কারণেই ঘন ঘন এমন কম্পন অনুভূত হচ্ছে বলে ভূতত্ত্ববিদরা ধারণা করছেন।
পাঠকের মতামত:
- ডিএনএ আসলে কীভাবে কাজ করে, সহজ ব্যাখ্যা জানুন
- মূল বোর্ডে জমজমাট লেনদেন, বিনিয়োগকারীর আগ্রহ বৃদ্ধি
- দামি উপহার নয় বরং ছোট ছোট যত্নই যেভাবে গভীর করে ভালোবাসার সম্পর্ক
- ২১০০ সালের মধ্যে ২০ কোটি মানুষ ঘরহারা হতে পারে, জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ চিত্র
- প্রবৃদ্ধির সুফল গরিবের ঘরে পৌঁছাচ্ছে না বরং ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে
- ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ওপেনিংয়ে ধুরন্ধর নিয়ে রণবীর সিংয়ের নতুন রেকর্ড
- বাগদানের তিন মাস পর ঘরোয়া আয়োজনে সম্পন্ন হলো হান্নান ও জেদনীর বিয়ে
- নূর হোসেন ও ডা. মিলনের আত্মত্যাগের পর যেভাবে এসেছিল ৯০ এর বিজয়
- চিকিৎসার হাল ধরতে এভারকেয়ারে ডা. জোবাইদা
- আজকের নামাজের সময়সূচি ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার
- আজ স্বর্ণ কিনতে হলে ভরিপ্রতি খরচ কত হবে জানাল বাজুস
- আজকের রাশিফল: ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ জেনে নিন আপনার দিনটি কেমন কাটবে
- শনিবার সকালে বের হওয়ার আগে জেনে নিন ঢাকার আজকের কর্মসূচি ও ট্রাফিক আপডেট
- স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই থেকে মাইনাস টু ফর্মুলা ভেস্তে দেওয়া এক অদম্য নেত্রীর গল্প
- শান্তি আলোচনা বিফলের পরই পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে তুমুল গোলাগুলির খবর
- মাইনর অপারেশনের পরেও ঝুঁকিমুক্ত নন বিএনপি চেয়ারপারসন
- তীব্র শীতে কাঁপছে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা, হাসপাতালে রোগীর ভিড়
- ক্রিকেট ও ফুটবলের ঠাসা সূচি নিয়ে আজকের টিভি গাইড
- দক্ষিণ পূর্বের বাতাসে কেমন থাকবে ঢাকার আবহাওয়া জানাল অধিদপ্তর
- ক্যাম্পের বন্দি জীবন থেকে মুক্তি পেতে সাগরে ভাসছে রোহিঙ্গাদের স্বপ্ন
- আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার আগেই জানা গেল বিপিএলের ৬ দলের অধিনায়কের নাম
- মানবিক সংকটে স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকাই জাতিকে এগিয়ে নেয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- শনিবার টানা ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- কর্মবিরতি নিয়ে ফার্মাসিস্ট টেকনোলজিস্টদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিল সরকার
- গাজার মানবিক সংকট লাঘবে চীনের বিশাল অনুদান
- সব সংস্কার সম্ভব নয় তাই নির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা দিয়েই বিদায় নিতে চায় সরকার
- কুড়িগ্রামে হাড়কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত
- লন্ডন থেকে দেশে ফিরেই বিমানবন্দর থেকে সোজা এভারকেয়ারে ডা. জুবাইদা রহমান
- টাকার মান ও ভিনদেশি মুদ্রার লেনদেন নিয়ে শুক্রবারের বাজার দর
- আজ পবিত্র জুমাবার: ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি
- আজকের রাশিফল: ৫ ডিসেম্বর ২০২৫ জেনে নিন আপনার দিনটি কেমন কাটবে
- টিভিতে আজকের খেলা এবং বিশ্বকাপ ড্র দেখার উপায়
- এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় পেছাল বিএনপি চেয়ারপারসনের বিদেশ যাত্রা
- সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের সময়সূচিসহ শুক্রবারের আবহাওয়ার সর্বশেষ আপডেট
- শুক্রবার সকালে বের হওয়ার আগে জেনে নিন রাজধানীর ট্রাফিক আপডেট ও কর্মসূচি
- আজ স্বর্ণ কিনতে হলে ভরিপ্রতি খরচ কত হবে জানাল বাজুস
- ঐক্যের আলোচনার মাঝেই এনসিপি নেতাদের আসনে প্রার্থী দিয়ে বিএনপির চমক
- শাশুড়িকে নিতে লন্ডন থেকে ঢাকায় আসছেন ডা. জোবাইদা রহমান
- মার্কিন চাপের মধ্যেই দিল্লিতে রুশ প্রেসিডেন্ট
- বিএসএফের গুলিতে প্রাণ গেল বাংলাদেশি যুবকের
- ডায়াবেটিস থেকে পাইলস নিরাময়ে জাদুকরী লজ্জাবতী গাছের ব্যবহার
- অজান্তেই স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে আপনার পছন্দের যে ৩টি পানীয়
- মেথিকে গুণের ভান্ডার বলা হলেও এটি পানের ক্ষেত্রে যাদের সতর্ক থাকা জরুরি
- সব প্রস্তুতি সম্পন্ন, রাতেই ঢাকায় পৌঁছাচ্ছে কাতারের বিশেষ উদ্ধারকারী বিমান
- যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে: ফরাসি প্রেসিডেন্ট
- অনিবার্য কারণ ছাড়া নির্বাচন এক মুহূর্তও বিলম্বিত হোক তা চায় না বিএনপি
- উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের আগ্রহের আসনে প্রার্থী দিয়ে বড় চমক দেখাল বিএনপি
- জনবান্ধব পুলিশ গড়তে উপদেষ্টা পরিষদের বড় সিদ্ধান্ত
- যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প শোনাবেন ডাকসু ভিপি ও এনসিপি নেতা
- পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদনে বর্তমান পুলিশ প্রধানের নাম
- ফিউচার স্টার বনাম ব্রাজিল–আর্জেন্টিনা, দেখুন সূচি
- ওষুধ ছাড়াই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখার ৫টি সহজ সকালের অভ্যাস
- সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে খালেদা জিয়া, দেশজুড়ে সুস্থতা কামনায় দোয়া
- ভূমিকম্পে ঢাকার কোন এলাকাগুলো তুলনামূলক নিরাপদ তা জানালেন বিশেষজ্ঞরা
- তারেক রহমান নির্বাচন করতে পারবেন কি না জানালেন ইসি সচিব
- বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সংকটাপন্ন অবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করল বিশ্ব গণমাধ্যম
- এবার টাকার ঝনঝনানি আর কৌশলের লড়াইয়ে বিপিএল নিলাম
- আজকের রাশিফল: ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ জেনে নিন আপনার দিনটি কেমন কাটবে
- আজকের রাশিফল: ২৯ নভেম্বর ২০২৫ জেনে নিন আপনার দিনটি কেমন কাটবে
- এসএসএফ নিরাপত্তা পেলেন খালেদা জিয়া: কী সুবিধা থাকছে
- খালেদা জিয়া চিকিৎসা নিতে পারছেন যা ভালো লক্ষণ: ডা. জাহিদ
- চট্টগ্রামে দাপুটে জয়ে আয়ারল্যান্ড বধ
- আজকের নামাজের সময়সূচি: ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
- পরীক্ষা সময়মতোই: অনিয়মে কঠোর ব্যবস্থা দেবে মাউশি
- একদিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দামে বড় পতন








