পাকিস্তানের প্রশংসায় ট্রাম্প, কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৭ ১৪:০৮:৪৫
পাকিস্তানের প্রশংসায় ট্রাম্প, কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে?

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তান সম্পর্কে তার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও দেশটির সঙ্গে ভবিষ্যৎ বাণিজ্য সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দিয়েছেন। সম্প্রতি ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “পাকিস্তানি জনগণ অত্যন্ত মেধাবী। তারা অসাধারণ সব পণ্য তৈরি করে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক অত্যন্ত সীমিত।”

এই মন্তব্য শুধু তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার প্রতিফলনই নয়, বরং পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার নতুন দ্বারও উন্মোচন করছে।‘অবিশ্বাস্য সম্পর্ক’ ও বন্ধুত্বের বার্তাট্রাম্প বলেন, “আমি পাকিস্তানে অনেকের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রেখে এসেছি— যা আপনারা বিশ্বাসই করবেন না। তারা সত্যিই ব্রিলিয়ান্ট। তাদের মধ্যে অভাবনীয় সম্ভাবনা রয়েছে।”

এই বক্তব্যে তিনি পাকিস্তানকে শুধুমাত্র একটি কৌশলগত অংশীদার নয়, বরং এক সম্ভাবনাময় শিল্প ও মানবসম্পদসম্পন্ন দেশ হিসেবেও চিহ্নিত করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির আওতায় দক্ষিণ এশিয়ায় একটি নতুন ভারসাম্য গড়ার সম্ভাব্য প্রচেষ্টার প্রতিফলন।ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিরসনে ট্রাম্পের দাবিবিশ্ব রাজনীতিতে উত্তেজনার মুহূর্তে একাধিকবার মধ্যস্থতা করতে চাওয়া ট্রাম্প দাবি করেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যখন যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল, তখন তার উদ্যোগেই সেই সম্ভাব্য ‘পারমাণবিক সংঘর্ষ’ ঠেকানো সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, “আমি যুদ্ধ থামিয়েছি, যা পারমাণবিক যুদ্ধ পর্যন্ত গড়াতে পারত। তারা খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। এখন সবাই খুশি।”

এই বক্তব্যে ট্রাম্প নিজের মধ্যস্থতাকে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ‘কৌশলগত সাফল্য’ হিসেবে তুলে ধরেন।

বাণিজ্য সম্প্রসারণের নির্দেশট্রাম্প বলেন, তিনি ইতিমধ্যেই তার টিমকে পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে নির্দেশ দিয়েছেন। তার ভাষায়, “আমি আমার টিমকে বলেছি, পাকিস্তানের সঙ্গে দ্রুত বাণিজ্য শুরু করো। ওদের দারুণ পণ্য আছে।”

এই বক্তব্য নতুন করে আলোচনায় এনেছে ওয়াশিংটন-ইসলামাবাদ বাণিজ্য সম্পর্কের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক তুলনামূলকভাবে সীমিত হলেও, এই ধরনের উচ্চ পর্যায়ের মন্তব্য ভবিষ্যতের নীতিগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বিশ্লেষণ:

কূটনৈতিক ভারসাম্যের বার্তাট্রাম্পের এই মন্তব্য দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। তিনি ভারত ও পাকিস্তান—দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী অবস্থান জানান। তবে পাকিস্তানের প্রতি তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও সমর্থনের যে বার্তা, তা ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. সামিরা হোসেন বলেন, “ট্রাম্প পাকিস্তানকে শুধু নিরাপত্তা নয়, অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও মূল্যায়ন করছেন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা, বিশেষ করে বাণিজ্য ও প্রযুক্তি বিনিয়োগের সম্ভাব্য প্রসঙ্গে।”

নতুন কূটনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা?

ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য শুধুমাত্র একজন সাবেক প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত উপলব্ধি নয়; বরং যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া নীতিতে একটি সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবেও দেখা হচ্ছে। পাকিস্তানকে ‘মেধাবী ও পণ্যসমৃদ্ধ’ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করে ট্রাম্প যে বাণিজ্য সম্প্রসারণের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, তা যদি ভবিষ্যতে বাস্তবায়িত হয়, তবে ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের মধ্যে নতুন এক কৌশলগত সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে উঠতে পারে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত