সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশনায় আটকে আছে ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব: বিটিআরসি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২৮ ১২:৪৮:১২
সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশনায় আটকে আছে ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব: বিটিআরসি
ছবিঃ সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রশাসনিক নির্দেশনা এখনো বহাল থাকায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) আন্তর্জাতিক এসএমএস খাত থেকে বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের পর সরকার পতনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে বিটিআরসি জয়ের সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি।

২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) চালু হলেও আন্তর্জাতিক এসএমএস সেবা এর আওতার বাইরে রেখে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের (এমএনও) হাতে তুলে দেওয়া হয়। অথচ লাইসেন্সিং গাইডলাইনস এবং আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সেবা নীতিমালা (আইএলডিটিএস) অনুযায়ী ইন্টারনেট ছাড়া সব আন্তর্জাতিক সেবা আইজিডব্লিউর মাধ্যমে পরিচালনা করার কথা। অভিযোগ রয়েছে, বিদেশি মোবাইল কোম্পানিগুলোর চাপের কারণে বিটিআরসি তার নিজের প্রণীত নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

২০১৭ সালে বিটিআরসি আন্তর্জাতিক এসএমএস সেবা আইএলডিটিএস নীতিমালার অধীনে আনার জন্য উদ্যোগ নেয় এবং একটি খসড়া পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়। কিন্তু ২০২০ সালের অক্টোবরে বিটিআরসি যখন আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের অনুমোদন চায়, তখন তিনি এই প্রস্তাব নাকচ করে দেন। তিনি নতুন নীতিমালা আসবে—এই অজুহাত দেখিয়ে আন্তর্জাতিক এসএমএস সেবা মোবাইল অপারেটরদের হাতেই রেখে দেওয়ার পক্ষে মত দেন। তার সেই মতামতই এখন পর্যন্ত প্রশাসনিক আদেশ হিসেবে বহাল আছে।

বর্তমানে প্রতি মাসে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে গড়ে ৩ কোটির বেশি আন্তর্জাতিক ইনকামিং এটুপি এসএমএস (অ্যাপ্লিকেশন টু পারসন) বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী, মাসে এর আয় ২৪ লাখ ডলার। তবে মোবাইল অপারেটরদের থেকে বিটিআরসি সর্বোচ্চ মাত্র ১ লাখ ৫৬ হাজার ডলার আয় করতে পারে।

নীতিমালা অনুযায়ী যদি আন্তর্জাতিক এসএমএস সেবা আইজিডব্লিউর মাধ্যমে পরিচালিত হতো, তবে বিটিআরসি শুধু আইজিডব্লিউ থেকেই ৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার আয় করতে পারত। মোবাইল অপারেটর এবং আইসিএক্স থেকেও আসত আরও ২ লাখ ৪৫ হাজার ডলার। সব মিলিয়ে বিটিআরসির মাসিক আয় দাঁড়াত কমপক্ষে ১২ লাখ ৫ হাজার ডলার, যা বর্তমান আয়ের চেয়ে প্রায় ৮ গুণ বেশি। এই হিসাবে সরকার বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।

বর্তমানে প্রতিটি বিদেশি মোবাইল অপারেটর তাদের বিদেশে অবস্থিত সহপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে আন্তর্জাতিক এটুপি এসএমএস পরিচালনা করছে। এটি একদিকে যেমন আইএলডিটিএস নীতিমালার গুরুতর লঙ্ঘন, অন্যদিকে তা বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশের বাইরে পাচারের সুযোগ করে দিয়েছে। এছাড়াও, এ ব্যবস্থা জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া ও মানি লন্ডারিংয়ের ঝুঁকিও তৈরি করেছে।

আইজিডব্লিউ অপারেটরদের সংগঠনের (আইওএফ) প্রেসিডেন্ট আসিফ সিরাজ রব্বানী বলেন, “নীতিমালা অনুযায়ী আমরা আন্তর্জাতিক ভয়েস কলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক এসএমএস ব্যবসায় প্রবেশাধিকার পাব ধরে নিয়েই ব্যাপক বিনিয়োগ করেছিলাম। কিন্তু অনুমোদন না পাওয়ায় আমরা বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি।” তিনি বলেন, বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে এই খাতে সুযোগ না দিয়ে দেশীয় বিনিয়োগকারীদের সক্ষমতাকে কাজে লাগানো উচিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ইকবাল আহমেদ বলেন, “আমরা পুরো সেক্টরটাই সংস্কার করার চেষ্টা করছি। আন্তর্জাতিক এসএমএস নিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়ের একটা নির্দেশনা ছিল। আমরা সেটি নিয়ে কাজ করছি। এ মাসের শুরুর দিকেও আমি স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে বৈঠক করেছি। সবার প্রস্তাব পাওয়ার পর, যেটা ভালো হয় ও সরকারের রাজস্ব বাড়ে—সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” তবে তিনি বছরে ২০০ কোটি টাকা রাজস্ববঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন।


ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সরকারের নতি স্বীকার, বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ২০:৪৫:৪৯
ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সরকারের নতি স্বীকার, বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম
ছবি : সংগৃহীত

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ বৈঠকের পর অবশেষে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৬ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে যা সোমবার ৮ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। রবিবার ৭ ডিসেম্বর বৈঠকের পর বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন এই মূল্য ঘোষণা করে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হবে ১৯৫ টাকায় যা আগে সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৮৯ টাকা ছিল। পাশাপাশি প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৭৬ টাকায় যা আগে ১৭০ টাকা ছিল। এছাড়া প্রতি লিটার পাম তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৬ টাকা এবং পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৫৫ টাকা।

এর আগে গত ১০ নভেম্বর লিটারে ৯ টাকা বাড়ানোর অনুমতি চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল সংগঠনটি। অনুমতি না পেয়েই ব্যবসায়ীরা এক প্রকার বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাজারে প্রতি লিটারে ৯ টাকা বাড়িয়ে খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকায় বিক্রি শুরু করেছিলেন। মোড়কে নতুন দাম সংবলিত করে বাজারে তেল ছাড়ায় ক্রেতাদের বাড়তি দামেই তেল কিনতে হচ্ছিল।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন দাবি করেছিলেন সরকারকে না জানিয়েই আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীদের শোকজও করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের পর লিটারে ৯ টাকার বদলে ৬ টাকা বাড়ানোর বিষয়ে সমঝোতা হয়।


নির্বাচনে আপনারা চালকের আসনে আছেন বলে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ১৮:৫৪:৫১
নির্বাচনে আপনারা চালকের আসনে আছেন বলে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন জাতির জন্য প্রতীক্ষিত এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন বা ইসি চালকের আসনে আছে। তিনি মন্তব্য করেন যে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতেই হবে। রবিবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের ৪ কমিশনার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে সরকার। তিনি আরও বলেন জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতিকে ইতিহাসের সেরা নির্বাচন উপহার দেওয়ার প্রত্যয়ে সরকার এগিয়ে চলছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন আগামী সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ তাহমিদা আহমদ মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডক্টর খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়াও বৈঠকে অংশ নেন।

সিইসি নাসির উদ্দিন জানান নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে সব ধরনের প্রস্তুতি সঠিক ও সুন্দরভাবে এগোচ্ছে এবং ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন ও একই দিনে গণভোট আয়োজনের জন্য কমিশন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। প্রস্তুতিকালে ইসিকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা। এছাড়া নির্বাচনের প্রস্তুতিকালে সর্বাত্মক সহযোগিতা করায় সিইসি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে ধন্যবাদ জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে ইতোমধ্যে নাগরিকরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছেন যা দেশে নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি করেছে।


নির্বাচনী যাত্রা শুরু: তফসিল নিয়ে ইসির চূড়ান্ত ঘোষণা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ১৮:৩২:০৩
নির্বাচনী যাত্রা শুরু: তফসিল নিয়ে ইসির চূড়ান্ত ঘোষণা
ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল চলতি সপ্তাহেই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার বা ইসি আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। রবিবার ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানান। একই সঙ্গে তিনি ভোটের সময়সীমা ও আচরণবিধি প্রতিপালন নিয়ে কমিশনের নতুন সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরেন।

ইসি সানাউল্লাহ বলেন চলতি সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনের আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালনে তফসিল ঘোষণার দিন থেকেই প্রতিটি উপজেলায় দুজন করে ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। এরপর ভোটের পাঁচ দিন আগে ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীদের পোস্টার ও ব্যানার সরাতে ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হবে এবং না সরালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সময় আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান নির্বাচনে ভোটের সময় এক ঘণ্টা বাড়িয়েছে ইসি। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী ভোটগ্রহণ শুরু হবে সকাল সাড়ে ৭টায় এবং শেষ হবে বিকেল সাড়ে ৪টায়। সাধারণত সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয় কিন্তু এবার সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে গণভোট একই দিনে হওয়ায় সময় বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান সোমবার ৮ ডিসেম্বর থেকে প্রবাসী ভোটারদের জন্য ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ শুরু হবে।

নির্বাচনের দিন সাধারণ ছুটি থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন ইসি কমিশনার। তবে ইসির প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাংক ও পোস্ট অফিস খোলা রাখা হবে। অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে যে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।

ইসি সূত্র জানায় শুরু থেকে ইসির প্রস্তুতি ছিল শুধু সংসদ নির্বাচনের এবং সে হিসেবে ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র এবং ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি ভোটকক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এখন সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট যুক্ত হওয়ায় একজন ভোটারকে দুটি করে ভোট দিতে হবে যাতে সময় বেশি লাগবে। এই চাপ সামলাতে ভোটকেন্দ্র না বাড়িয়ে প্রতিটি ভোটকক্ষে একটির জায়গায় দুটি করে গোপন কক্ষ স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন যা মক ভোটিংয়ের তথ্যের ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে।


আজ থেকে জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ০৯:১০:২৪
আজ থেকে জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু
ছবি : সংগৃহীত

জুলাই আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আজ রোববার ৭ ডিসেম্বর। শহীদদের ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড বা ডিএনএ নমুনা সংগ্রহে আজ থেকেই কাজ শুরু করবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি।

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার লুইস ফন্ডেব্রিডার এবং সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই স্পর্শকাতর কার্যক্রম শুরু হবে। এর আগে গত ২ ডিসেম্বর রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে অজ্ঞাত শহীদদের কবর পরিদর্শন করেছিলেন সিআইডির কর্মকর্তারা এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেন।

সিআইডির ফরেনসিক ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জুলাই আন্দোলনে নিহত অজ্ঞাত শহীদদের মরদেহ উদ্ধারে কবরস্থান এলাকায় বিশেষ তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। সেখানেই কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করার পর প্রক্রিয়াগত সব কাজ সম্পন্ন করা হবে। এই অস্থায়ী তাঁবুতেই ময়নাতদন্ত করা হবে এবং নমুনা সংগ্রহের পর মরদেহ আবার যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাফন করা হবে।

আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ৪ আগস্ট ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদনটি করেছিলেন মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম। আবেদনে উল্লেখ করা হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে জন্ম নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ জীবন দেন যাদের অনেকের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাই ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


নির্বাচন নিয়ে বাইরে পজিটিভ দেখালেও ভেতরে ভেতরে চলছে নেগেটিভ তৎপরতা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ০৮:৪৭:২৮
নির্বাচন নিয়ে বাইরে পজিটিভ দেখালেও ভেতরে ভেতরে চলছে নেগেটিভ তৎপরতা
ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচনের তফসিল নির্ধারণে আজ রোববার ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্ভবত আজকেই নির্বাচনের তফসিল চূড়ান্ত হবে এবং নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করাসহ সার্বিক বিষয় অবহিত করা ও সম্মতির জন্য ইসি আগামী ১০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। রাজনৈতিক দলগুলোও পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারপরও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সংশয় কাটছে না। গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সূত্র মনে করছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বাইরে সবাইকে পজিটিভ দেখালেও ভেতরে ভেতরে নেগেটিভ করার জন্য একটি মহল অত্যন্ত সক্রিয় রয়েছে।

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির এক ডেডলাইনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুটি নির্বাচন। এক জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং দুই রাষ্ট্র সংস্কার ইস্যু নিয়ে গণভোট। সরকারের তরফ থেকে বারবার নিশ্চিত করা হচ্ছে ফেব্রুয়ারিতেই দুই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এ ঘোষণা আসছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী প্রায় সব প্রতিনিধির কাছ থেকেই। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে নির্বাচনের বিষয়ে প্রবল আগ্রহ থাকলেও পরামর্শক অনেকের মধ্যে রয়েছে অনাগ্রহ। প্রথমবারের মতো ক্ষমতার স্বাদ পাওয়া সরকারে থাকা কেউ কেউ ঘুঁটি উল্টাতে চান বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁরা রাষ্ট্র সংস্কার ইস্যুকে সামনে রেখে ক্ষমতার মেয়াদ দীর্ঘায়িত করতে চান। আবার নিজেদের মুখোশের আড়ালে রেখে তারাই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে উঁচু গলায় কথা বলছেন। যত দিন যাবে এই গ্রুপ তত বেশি সক্রিয় হবে বলে জানা গেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কারে আনা হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ। ৩০টি রাজনৈতিক দল ও তাদের জোটের মতামত নিয়ে তৈরি হয়েছে এই সনদ। এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিতর্ক রয়েছে আবার কিছু বিষয়ে ঐকমত্যও তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো গণভোট। উত্তর সহজ প্রশ্ন কঠিন এমন আদলে তৈরি গণভোট কাঠামোয় রায় দিতে হবে জনগণকে। বিষয়টিকে সহজভাবে নিচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁদের বক্তব্য তৃণমূল পর্যায়ের জনসাধারণের কাছ থেকে কঠিন প্রশ্নে সহজ উত্তর পাওয়াটা বাস্তবসম্মত নয়। তাঁদের মতে সরকারের ভেতরে থাকা একটা অংশ মুখে নির্বাচনের ফেনা তুললেও ভেতরে রয়েছে অন্য তৎপরতা। নির্বাচন বানচাল বা নির্বাচন পেছানো তাদের লক্ষ্য এবং এজন্য ব্যবহার হতে পারে গণভোট ইস্যু। মাত্র দুই মাসের মধ্যে গণভোটে দেওয়া চার প্রশ্ন সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করা সম্ভব নয় এমন দাবি রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্টদেরও।

এ অবস্থায় রাজনীতির অন্যরকম মোড়ে অবস্থান করছে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুরুতর অসুস্থতা রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত। শিগগিরই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে লন্ডন নেওয়া হতে পারে। এ পরিস্থিতিকে মূল্যায়ন করে নতুন একটি দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন পেছানোর দাবি জানানো হয়েছে। আবার একই দিনে নির্বাচন পেছাতে আদালতের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় বিএনপি ৩৬টি আসনে তাদের মনোনয়ন ঘোষণা করেছে যা বিএনপির সমমনা দলগুলো ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। তাঁদের মতে আগামী কয়েক দিন দেশের রাজনীতি ও নির্বাচনের ভূত ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে বাংলাদেশে প্রতিটি নির্বাচনের আগে নানা ধরনের ঘোলাটে পরিস্থিতি হতে দেখা যায়। এর সঙ্গে জড়িত থাকে দেশি ও বিদেশি শক্তি। তাঁদের মতে বর্তমান সরকারের মধ্যে একাধিক পাসপোর্টধারী অনেক নাগরিক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো নির্বাচনটা হতে দিতে চান না। এজন্য সব ধরনের তৎপরতার সঙ্গে তারা জড়িত। সর্বশেষ ১৩ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই সংবিধান সংস্কার নিয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা যদি তাঁর সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারেন তাহলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


প্রস্তুতি থাকলেও তফসিল ঘোষণার তারিখ নিয়ে এখনো অন্ধকারে কমিশন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৬ ২০:৩৮:২৪
প্রস্তুতি থাকলেও তফসিল ঘোষণার তারিখ নিয়ে এখনো অন্ধকারে কমিশন
ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি পুরো মাত্রায় থাকলেও তফসিল কবে ঘোষণা হবে সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি নির্বাচন কমিশন বা ইসি। শনিবার ৬ ডিসেম্বর বিকেলে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক কর্মশালায় ইসি সচিব আখতার আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেই পরিকল্পনার আলোকে ডিসেম্বরের প্রথম দিকে তফসিল ঘোষণা করার প্রস্তুতি নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন এর আগে জানিয়েছিলেন যে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা হতে পারে। তবে শনিবার ইসি সচিব আখতার আহমেদ তফসিল ঘোষণার প্রসঙ্গে বলেন নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত তফসিল ঘোষণার দিন সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করতে পারেনি।

এবারের ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একই সময়ে গণভোটও অনুষ্ঠিত হবে যা নির্বাচনী ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আজ আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে জাতীয় বৈঠক করেছে কমিশন। এতে জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদও উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান সকাল সাড়ে ১১টা থেকে তাঁরা নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে আয়োজিত গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে ছিলেন।

তবে দিনক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও নির্বাচন আয়োজনে ইসি পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে বলে দাবি করেন সচিব। নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন আমি সবাইকে অনুরোধ করি সঠিক তথ্যটা দেন কারণ নিশ্চয়ই নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের জোর প্রস্তুতি চলছে।

ইউএনডিপি ও রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি বা আরএফইডি আয়োজিত এই কর্মশালায় সাংবাদিকদের নিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ ও নির্বাচন কর্মকর্তা আইন ১৯৯১ এর পরিচিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

এর আগে সকালে কর্মশালার পৃথক একটি অধিবেশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে যুক্ত হন নির্বাচন কমিশনার ইসি আব্দুল রহমানেল মাছউদ। তিনি সংবিধান ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন। এছাড়া নির্বাচনী অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট আইন যেমন সিআরপিসি সিপিসি ও অ্যাভিডেন্স অ্যাক্ট সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা এবং জাতীয় সংসদের নির্বাচনসংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তির বিষয়েও তিনি আলোকপাত করেন।


প্রবৃদ্ধির সুফল গরিবের ঘরে পৌঁছাচ্ছে না বরং ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৬ ১১:৫১:৫৪
প্রবৃদ্ধির সুফল গরিবের ঘরে পৌঁছাচ্ছে না বরং ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির গল্প যতটা শোনা যায় দারিদ্র্য হ্রাসের চিত্র ততটা আশাবাদী নয়। একসময় ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা দারিদ্র্যের হার এখন অনেক ধীরগতিতে নেমে আসছে এবং গত চার বছর ধরে উল্টো বাড়ছে দারিদ্র্যের হার। বলা হচ্ছে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও তার সুফল সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের ঘরে পৌঁছাচ্ছে খুব কম। বরং বৈষম্য আরও গভীর হচ্ছে এবং জীবিকা অনিশ্চয়তার বেড়াজালে আটকে যাচ্ছে লাখো পরিবার।

সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায় ২০১০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশের দারিদ্র্য হ্রাসের অগ্রগতি ছিল শক্তিশালী এবং সেই সময়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভোগব্যয়ও বাড়ছিল দ্রুত। কিন্তু ২০১৬ সালের পর প্রবৃদ্ধির কাঠামো বদলে যায়। উচ্চআয়ের পরিবারগুলো বেশি লাভবান হয় এবং নিম্নআয়ের পরিবারগুলোর আয় থমকে পড়ে। ফল হিসেবে ২০১৬ থেকে ২০২২ সময়ে দারিদ্র্য হ্রাসের হার স্পষ্টভাবে কমে গেছে। বর্তমানে দেশে ৩ কোটি মানুষের বেশি দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে। এ ছাড়া ৬ কোটি মানুষ অর্থাৎ জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ যেকোনো বড় বিপর্যয় অসুস্থতা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অর্থনৈতিক আঘাতে আবারও দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পরিসংখ্যান বলছে দেশের প্রতি ১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি দারিদ্র্য কমাচ্ছে মাত্র শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার গড় ১ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধির গতি থাকলেও তা আর দারিদ্র্য মোকাবিলার শক্তিশালী ইঞ্জিন হয়ে কাজ করছে না। রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট বা র‍্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যাপনা বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর মো. আবু ইউসুফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন দারিদ্র্য কমার গতি যা ছিল এখন আর তা নেই। তিনি সতর্ক করে বলেন প্রবৃদ্ধিকে কাগজে দ্রুত দেখানো সহজ কিন্তু তার সুফল দরিদ্র মানুষের আয়ব্যয়ের বাস্তবতায় পৌঁছানোই মূল। বৈষম্য বাড়লে দারিদ্র্য স্থায়ী হয় এবং উন্নয়ন ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। তিনি পরামর্শ দেন যে এখন নীতির লক্ষ্য হতে হবে আয় বাড়ানো কর্মসংস্থান বিস্তৃত করা এবং সামাজিক সুরক্ষায় সঠিক মানুষকে শনাক্ত করা।

প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে যে দারিদ্র্য বৃদ্ধির পেছনে বড় কারণ হলো যথেষ্ট কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়া এবং চাকরি হারানো। ২০২৩ ও ২৪ সালের মধ্যে ২০ লাখ কর্মসংস্থান কম হয়েছে এবং ২০২৫ সালে আরও ৮ লাখ কর্মসংস্থান কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ সময়ে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিসহ সরকারি সহায়তা বিস্তৃত হলেও সুবিধাভোগী শনাক্তকরণের দুর্বলতায় প্রকৃত দরিদ্র পরিবারগুলোর একটি বড় অংশ কাঙ্ক্ষিত সহায়তা পাচ্ছে না।

প্রতিবেদনের হিসাবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি বাংলাদেশের দারিদ্র্য ও আঞ্চলিক বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্য হুমকির মুখে ফেলতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন ২০৫০ সাল নাগাদ ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে এবং কৃষি খাতে জিডিপির প্রায় এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তা নিম্ন আয়ের পরিবারে সরাসরি চাপ সৃষ্টি করছে।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।


নূর হোসেন ও ডা. মিলনের আত্মত্যাগের পর যেভাবে এসেছিল ৯০ এর বিজয়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৬ ১১:৩৪:৩০
নূর হোসেন ও ডা. মিলনের আত্মত্যাগের পর যেভাবে এসেছিল ৯০ এর বিজয়
স্বৈরাচার পতন দিবস আজ

আজ ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৯০ সালের এই দিনে গণঅভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদ পদত্যাগ করে অস্থায়ী সরকারের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তর করেন। আর এর মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে দীর্ঘ ৯ বছরের স্বৈরশাসনের এবং আবারও গণতন্ত্রের পথে হাঁটা শুরু করে দেশ।

এইচ এম এরশাদ এর আগে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সামরিক আইন জারি করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে চলা তার শাসনের বিরুদ্ধে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন বামপন্থী দলের টানা আন্দোলন গড়ে ওঠে। এ আন্দোলনে ডা. শামসুল আলম খান মিলন ও নূর হোসেনসহ অসংখ্য মানুষ জীবন উৎসর্গ করেন।

১৯৯০ সালের ২১ নভেম্বর এরশাদবিরোধী আন্দোলন যখন তীব্র আকার ধারণ করে সে সময় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫ দল এবং বিএনপির নেতৃত্বে সাত দল ও ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাসদের নেতৃত্বে পাঁচটি বামপন্থী দল যৌথভাবে একটি রাজনৈতিক রূপরেখা ঘোষণা করে। যদিও জামায়াতে ইসলামী ওই তিন জোটের বাইরে ছিল তবুও তারা এরশাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়।

স্বৈরশাসকের পতন ঘটলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে তিন জোটের ঘোষিত সেই রূপরেখার পূর্ণ বাস্তবায়ন আর হয়নি। কার্যকর সংসদ ও আইনের শাসন এবং নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও টেকসই গণতন্ত্র এই বিষয়গুলো এখনো অনেকাংশে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন।

এই দিবসটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ভিন্ন ভিন্ন নামে পালন করে থাকে। বিএনপি দিনটিকে স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস নামে পালন করে থাকে। দিবসটি উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেন গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ নয় বছর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে আপসহীন নেত্রী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি গড়ে তোলেন এক দুর্বার গণআন্দোলন। এরই ধারাবাহিকতায় ৯০ এর ৬ ডিসেম্বর এই দিনে ছাত্র জনতার মিলিত শক্তিতে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে মুক্ত হয়েছিল গণতন্ত্র।


ক্যাম্পের বন্দি জীবন থেকে মুক্তি পেতে সাগরে ভাসছে রোহিঙ্গাদের স্বপ্ন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৬ ০৮:৪১:০৬
ক্যাম্পের বন্দি জীবন থেকে মুক্তি পেতে সাগরে ভাসছে রোহিঙ্গাদের স্বপ্ন
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘায়িত হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প জীবন এবং সব বয়সী রোহিঙ্গারা ক্যাম্পের বন্দি ও অমানবিক জীবনে প্রত্যাবাসনের অনিশ্চয়তার চরম হতাশায় ভুগছে। নিজভূমে তো বটেই সেটি যদি সম্ভব না হয় তাহলে উন্নত দেশে পুনর্বাসনের আশায় যেতে চায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা। নিজভূমি থেকে পালিয়ে আসার পর নিরাপদ প্রত্যাবাসন এখনো অমীমাংসিত তাই নিরুপায় হয়ে এই বেঁচে থাকা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে। কবে তারা নিজভূমে ফিরে যেতে পারবে এ প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারছে না।

ক্যাম্পে নিজ ভাষায় পড়াশোনা অথবা জীবন জীবিকার নানা আয়োজন আছে তবুও সেটা বন্দি জীবনের মতোই। নিজভূমে ফেরা যখন অনিশ্চিত তখন অন্যের দানে চলা জীবন নিজভূমে না হোক তারা যেতে চায় পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে। এমন চাওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অনেকের মাঝেই দেখা যায়। বৈধ বা অবৈধ যে পথেই হোক তারা যেতে চান উন্নত বিশ্বের যে কোনো দেশে। এ কারণে মাঝে মধ্যে সাগরপথে তারা পাড়ি জমায় মালয়েশিয়া অথবা ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশ্যে। পাচারকারী সিন্ডিকেটের খপ্পড়ে পড়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় উত্তাল সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে জীবন হারাতে হচ্ছে অনেককে।

কানাডা ও নিউজিল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি উন্নত দেশে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৮৯৭ জন রোহিঙ্গা পুনর্বাসিত হয়েছে। তবে রাখাইনে নিরাপদ প্রত্যাবাসন শুরু হলে এদের অনেকেই ফিরতে চান নিজ বাসভূমি মিয়ানমারে। কানাডায় পুনর্বাসিত রোহিঙ্গা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন এখন যদি শান্তিপূর্ণভাবে আরাকানে চলে যেতে পারে তবে সবাই চলে যাবে এবং আমরাও চলে যাব আরাকানে। বছরে ১ ভাগও পুনর্বাসনের সুযোগ পায়নি এমন অনেকে এখনো ক্যাম্পে দিন কাটাচ্ছে।

কক্সবাজারের উখিয়ার ১৮ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ হারেজ প্রাণ বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট ৪ সন্তান নিয়ে আশ্রয় নেন বাংলাদেশে। ক্যাম্পে মানবেতর দিন কাটালেও মিয়ানমারে তিনি ছিলেন রাজার হালে। জমি জমা তো বটেই ছিল গোয়াল ভরা গরু মহিষ ও ছাগলও। হারেজ এখন ফিরতে চান হারিয়ে আসা সেই জীবনে এবং চান নিজ ভিটায় ফিরতে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন বাচ্চারা খেলবে এরকম একটা মাঠ নেই এবং ভালো একটা রাস্তা পর্যন্ত নেই কোথাও। ক্যাম্পের জীবন আমাদের একটুও ভালো লাগে না। নিজ দেশে আমাদের বড় বড় জায়গা ছিল ও ঘরবাড়ি ছিল আর ছোট একটা ঝুপড়ি ঘরে আমাদের থাকতে হচ্ছে এখানে। গ্রীষ্মকালে গরমের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে যাই আবার বর্ষাকালে ঘরের ভেতর পানি ঢুকে যায়। তিনি আরও বলেন আমরা আমাদের দেশে ফিরে যেতে চাই কারণ শরণার্থী হয়ে এই বাংলাদেশে আমরা আর থাকতে চাই না। এই দেশে অন্য কোথাও গিয়ে কাজ করে আয় করার সুযোগও আমাদের নেই এবং সরকারি সহায়তা নিয়ে আমাদের জীবন যাপন করতে হচ্ছে।

কক্সবাজারের উখিয়ার ২০ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক মেম্বার মোহাম্মদ জোহার বলেন আমাদের যদি শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের ভূমিতে পুনর্বাসন করে তবে আমরা চলে যাব। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় বলছে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে শরণার্থীরা তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসিত হয়েছে তবে সে সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান বলেন আমাদের ১২ মিলিয়ন বা ১২ লাখ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। তাদেরকে আগে তাদের নিজভূম আরাকানে ফেরত নিতে হবে এবং এটাই আমরা চেষ্টা করছি। তবে উন্নত জীবনের আশায় বৈধ বা অবৈধ পথে কিছু রোহিঙ্গা বিভিন্ন দেশে চলে গেছে। তিনি মন্তব্য করেন যে এটা করা হলে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনকে নিরুৎসাহিত করা হবে। আমরা চাই ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের নিজভূমে পুনর্বাসিত করা হোক। উল্লেখ্য প্রায় ১৪ লাখের মতো রোহিঙ্গা বসবাস করছে কক্সবাজারের ৩৩টি ক্যাম্পে এবং প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন অনিশ্চয়তায় মাঝে মাঝেই অবৈধ পথে পালানোর সময় সলিল সমাধি হয়ে খবরে শিরোনাম হন রোহিঙ্গারা।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত