সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই বুক ধড়ফড়ায়? সমস্যা বাড়ার আগে যা করণীয়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ২১:৩২:১৭
সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই বুক ধড়ফড়ায়? সমস্যা বাড়ার আগে যা করণীয়
ছবি: সংগৃহীত

অফিস কিংবা কাজের জায়গায় লিফট ব্যবহার করা এখন অনেকেরই স্বাভাবিক অভ্যাস। সিঁড়ি বেয়ে হেঁটে উঠা কিংবা নামার চর্চা কমে গেছে। কিন্তু যদি অল্প সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় হাঁপিয়ে যাচ্ছেন, বুক ধড়ফড় করছে, তাহলে সেটি অবহেলা করার মতো নয়। বিশেষ করে ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে এমন সমস্যা দেখা দিলে তা হৃদরোগের সম্ভাবনার সংকেত হতে পারে।

আগে ধারণা ছিল, হার্টের রোগ বেশি হয় বয়সের সঙ্গে। কিন্তু এখনকার তথ্য বলছে, হৃদরোগ যে কোনো বয়সেই আসতে পারে এবং এর প্রবণতা কম বয়সির মধ্যেও বাড়ছে। এর পেছনে প্রধান কারণ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত শরীরচর্চার অভাব।

হার্ট বিশেষজ্ঞ দিলীপ কুমার জানান, যদি সিঁড়ি বেয়ে কয়েক ধাপ ওঠার সময় বুক ধড়ফড় করে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তবে দ্রুত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি। এই লক্ষণগুলো হার্টের পেশির পুরু হওয়া বা ‘কার্ডিয়াক হাইপারট্রফি’র ইঙ্গিত দিতে পারে।

কার্ডিয়াক হাইপারট্রফি হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে হার্টের পেশি অতিরিক্ত শক্ত ও পুরু হয়ে যায়, বিশেষ করে বাম পেশির দেয়াল। এর ফলে হার্টের রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা কমে যায় এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দন দেখা দেয়। এর প্রভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি যেমন বাড়ে, তেমনই আচমকা হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বৃদ্ধি, পরিবারের ইতিহাসে হৃদরোগ থাকা এবং অতিরিক্ত ওজন থাকা কার্ডিয়াক হাইপারট্রফির ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া হৃদযন্ত্রের ধমনী যদি সরু হয়, তখন রক্ত সঠিকভাবে চলতে পারে না, যা রক্তজমাট বাঁধার কারণ হতে পারে।

এই সমস্যাগুলো এড়াতে জীবনযাত্রার ধরন পরিবর্তন করা জরুরি। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকা হলে হার্ট সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।

/আশিক


মাসিক আয় থেকে সঞ্চয় করার সহজ ছয়টি উপায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ১২:৩১:০১
মাসিক আয় থেকে সঞ্চয় করার সহজ ছয়টি উপায়
ছবি: সংগৃহীত

আপনার মাসিক আয়ের থেকে সঞ্চয় করতে চান, কিন্তু সেটি কঠিন মনে হচ্ছে? বেতন থাকলেও খরচের অনিয়ন্ত্রণে মাস শেষে হাত খালি হয়ে যায়? ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় না থাকায় জরুরি মুহূর্তে অর্থসংকট দেখা দিতে পারে। তাই চাকরির আয়ের একটি অংশ অবশ্যই সঞ্চয়ের জন্য আলাদা রাখা জরুরি। পরিকল্পনা করে খরচ করলে সঞ্চয় সহজ হয়। সবচেয়ে জনপ্রিয় ৫০/৩০/২০ নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন, যেখানে আয়ের ৫০% দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় খরচে, ৩০% ইচ্ছামতো খরচে এবং ২০% সঞ্চয় ও বিনিয়োগে রাখবেন।

সঞ্চয়ের উদ্দেশ্য স্পষ্ট করা প্রয়োজন—স্বল্পমেয়াদী বা দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য অনুযায়ী সঞ্চয়ের পরিমাণ ঠিক করুন। প্রথম মাসে মাসিক খরচ হিসেব করলে পরের মাস থেকে সঞ্চয় শুরু করা সহজ হবে। অপ্রত্যাশিত ব্যয় যেমন চিকিৎসা বা উৎসবের জন্য আলাদা অর্থ জমিয়ে রাখাটাও জরুরি।

মাসিক বেতনের থেকে সঞ্চয় নিশ্চিত করতে এই ছয়টি উপায় অনুসরণ করুন—

১. মাসিক বাজেট তৈরি করুন: আপনার আয়ের সব উৎস ও মাসিক খরচ লিখে রাখুন। এতে খরচের অপ্রয়োজনীয় অংশ চিহ্নিত করে কমানো সম্ভব হবে।

২. নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সঞ্চয় শুরু করুন: প্রথম মাস থেকে যেটুকু জমাতে পারেন সেটাই নিয়মিত করুন। বছর শেষে বড় অঙ্ক জমবে।

৩. প্রতিদিনের খরচ লিখে রাখুন: কোন খাতে কত টাকা খরচ হচ্ছে নজর রাখলে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো যাবে।

৪. বিল কমান: গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, ইন্টারনেট, মোবাইল বিল কমানোর চেষ্টা করুন। শক্তি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করুন।

৫. ঘরেই রান্না করুন: বাইরের খাবারের চেয়ে ঘরোয়া খাবার সাশ্রয়ী ও স্বাস্থ্যকর। সপ্তাহের খাবারের পরিকল্পনা করে রান্না করলে খরচ কমে।

৬. গণপরিবহণ ব্যবহার করুন: ব্যক্তিগত বা অ্যাপভিত্তিক পরিবহণের চেয়ে গণপরিবহণে যাতায়াত অনেক সাশ্রয়ী হয়। সময় বুঝে বাস কিংবা ট্রেন ব্যবহার করুন।

এই নিয়মগুলো মেনে চললে সঞ্চয় হবে সহজ ও নিয়মিত। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সঠিক পরিকল্পনা ও সচেতনতা অপরিহার্য।

/আশিক


ছবিতে প্রথমে যা দেখলেন, সেটাই বলে দেবে আপনার চরিত্র

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ১০:১৩:২৩
ছবিতে প্রথমে যা দেখলেন, সেটাই বলে দেবে আপনার চরিত্র

অপটিক্যাল ইলিউশন: চোখের ধাঁধা ও মনের ছায়া

আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় দৃষ্টিভ্রম বা অপটিক্যাল ইলিউশনের ছবি এবং ভিডিও খুবই জনপ্রিয়। অপটিক্যাল ইলিউশন হল এমন এক ধরণের ছবি যা দেখতে এক রকম হলেও, প্রত্যেক ব্যক্তির চোখে তার ভিন্ন ভিন্ন অর্থ ফুটে ওঠে। এটি মূলত চোখ ও মস্তিষ্কের মধ্যে সমন্বয়ের অসঙ্গতির কারণে সৃষ্টি হয়। অনেক সময় এই ছবি শুধুমাত্র দৃষ্টিভ্রমই তৈরি করে না, বরং মানুষের মনোভাব ও ব্যক্তিত্বের আভাসও দেয়।

এক জনপ্রিয় অপটিক্যাল ইলিউশন হলো ‘রুবিন ভেস’ (Rubin Vase)। এই ছবিতে দুইটি ভিন্ন ছবি দেখা যায়—একদিকে একটি ফুলদানি, অন্যদিকে দুইজন মুখো মুখে বসে আছে। আপনি প্রথমে যা দেখেন, তা আপনার চিন্তার ধরন ও ব্যক্তিত্বের একটি সংকেত হতে পারে।

যদি প্রথমে আপনি ফুলদানি দেখেন, তাহলে এর মানে আপনি সাধারণত বিষয়ভিত্তিক এবং বিস্তারিতভাবে চিন্তা করেন। আপনি সমস্যা বা বিষয়কে সরল এবং স্পষ্টভাবে বুঝতে পছন্দ করেন। অন্যদিকে, যদি আপনি প্রথমে দুইটি মুখ দেখতে পান, তাহলে আপনি সামাজিক ও পারস্পরিক সম্পর্কের প্রতি বেশি মনোযোগী। আপনি পটভূমি বা পরিবেশ বুঝতে চান এবং মানুষের অনুভূতি ও সম্পর্ককে গুরুত্ব দেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন অপটিক্যাল ইলিউশনভিত্তিক কুইজের জনপ্রিয়তার পেছনে মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এগুলো কেবল বিনোদন নয়, নিজের অবচেতন মনের প্রবণতা বুঝতে সাহায্য করে। যখন আমাদের মস্তিষ্ক অস্পষ্ট বা দ্ব্যর্থবোধক কোনো ছবি দেখে, তখন প্রথম যে উপাদানটি চিনতে পারে, তা আমাদের মানসিক অগ্রাধিকার সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়।

ছবি দেখে আপনি প্রথমে কী দেখলেন—মহিলা না মোরগ? মজা মনে হলেও, এটির মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে আপনার ব্যক্তিত্ব ও পছন্দের নানা দিক। এটি বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে শেয়ার করেও জানতে পারেন তারা কোন দলে পড়েন।

নিজেকে চিনতে এবং মজার ছলে বন্ধুদের সঙ্গে ভাব বিনিময় করার জন্য এখনই সময়।

/আশিক


কিশমিশের পানির বহুমুখী উপকারিতা: স্বাদের সঙ্গে স্বাস্থ্যের সঙ্গী

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৮ ১৭:১৬:২১
কিশমিশের পানির বহুমুখী উপকারিতা: স্বাদের সঙ্গে স্বাস্থ্যের সঙ্গী
ছবি: সংগৃহীত

শুকনো ফলের তালিকায় কিশমিশ এক অনন্য উপাদান, যা ডেজার্টের স্বাদ ও সৌন্দর্য বাড়াতে অপরিহার্য। কিন্তু এর গুণ শুধু স্বাদে সীমাবদ্ধ নয়, স্বাস্থ্য রক্ষায়ও এর রয়েছে অসাধারণ ভূমিকা। বিশেষত, কিশমিশের তৈরি পানি শরীরের জন্য একটি প্রাকৃতিক টনিকের মতো কাজ করে, যা নানা অসুখ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তবে এর সর্বোচ্চ উপকার পেতে জানতে হবে সঠিক প্রস্তুত প্রণালি ও নিয়মিত সেবনের পদ্ধতি।

কিশমিশের পানি তৈরির প্রণালি

কিশমিশের পানি তৈরি খুব সহজ, তবে নিয়ম মেনে করতে হবে। প্রথমে পরিষ্কার কিশমিশ নিয়ে পরিমাণমতো পানিতে দিন এবং ২০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। ফুটানো শেষ হলে পানি ঠান্ডা করে সারারাত ঢেকে রেখে দিন। পরদিন সকালে খালি পেটে এই পানি পান করাই সবচেয়ে উপকারী। এতে কিশমিশের ভেতরে থাকা প্রাকৃতিক চিনি, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রয়োজনীয় খনিজ দ্রবীভূত হয়ে পানির সঙ্গে মিশে যায়, যা শরীরে দ্রুত শোষিত হয়।

কিশমিশের পানি নিয়মিত সেবনের বিস্তারিত উপকারিতা

১. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর ও পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি

কিশমিশে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার অন্ত্রের গতিশীলতা বাড়ায়, ফলে দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিরা উপকৃত হন। সকালে খালি পেটে এটি পান করলে হজমের প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়, অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের সমস্যা কমে, এবং খাবার হজমের পর ক্লান্তি বা ভারীভাবও দূর হয়।

২. কোলেস্টেরল ও হৃদ্‌স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ

কিশমিশের পানিতে থাকা প্রাকৃতিক যৌগ শরীরের ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল (LDL) এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। এর ফলে ধমনিতে চর্বি জমে রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায় এবং হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

৩. ত্বকের তারুণ্য ও সৌন্দর্য রক্ষা

কিশমিশ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, বিশেষত ফ্ল্যাভোনয়েড, যা ত্বকের কোষের ক্ষয়রোধ করে এবং বলিরেখা গঠনের গতি ধীর করে। নিয়মিত কিশমিশের পানি পান করলে ত্বক হয় উজ্জ্বল, কোমল এবং টানটান, যা প্রাকৃতিকভাবে বয়সের ছাপ লুকাতে সহায়তা করে।

৪. লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি

কিশমিশের পানি লিভার ডিটক্সিফিকেশনে সহায়তা করে। এটি শরীরে জমে থাকা টক্সিন দূর করে লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল রাখে। একইসঙ্গে মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণে রাখায় শরীরের শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়া সুষম হয়।

৫. শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং বি-ভিটামিন থাকায় শরীরের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়। এর পানীয় রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে এবং শরীরকে সারাদিন সতেজ রাখে।

সতর্কতা

যাদের ডায়াবেটিস বা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা রয়েছে, তাদের কিশমিশের পানি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ এতে প্রাকৃতিক চিনি থাকলেও তা রক্তে শর্করার মাত্রা কিছুটা বাড়াতে পারে।

পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিন সকালে কিশমিশের পানি সেবন একটি সহজ কিন্তু কার্যকর স্বাস্থ্যচর্চা, যা ওষুধ ছাড়াই শরীরের নানা সমস্যা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে।


যানবাহন পানিতে পড়লে বাঁচার উপায়: বিশেষজ্ঞের জরুরি পরামর্শ

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৮ ১৬:২৯:২৬
যানবাহন পানিতে পড়লে বাঁচার উপায়: বিশেষজ্ঞের জরুরি পরামর্শ
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশে প্রতিদিনই কমবেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে বহু ঘটনায় প্রাণহানি ঘটে। বিশেষ করে বাস, মাইক্রোবাস বা অন্যান্য যানবাহন সড়ক থেকে ছিটকে পানিতে পড়ে গেলে যাত্রীদের মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ মানুষ ভয় ও বিভ্রান্তিতে পড়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হন।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক আরমানা সাবিহা হক জানান, গাড়ি পানিতে পড়ে গেলে যাত্রীর হাতে থাকে মাত্র ৩০ থেকে ১২০ সেকেন্ড। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়ে। তিনি সাতটি করণীয় নির্দেশনা দিয়েছেন, যা মেনে চললে প্রাণরক্ষার সুযোগ বাড়বে।

১. শান্ত থাকুন

আতঙ্কিত হলে সঠিকভাবে চিন্তা ও পদক্ষেপ নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তাই পরিস্থিতি যতোই ভয়াবহ হোক না কেন, মন শান্ত রাখুন।

২. সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করুন

এই পরিস্থিতিতে সময় নষ্ট করা যাবে না। উদ্ধার পাওয়ার জন্য ফোন করা বা অপেক্ষা না করে দ্রুত বের হওয়ার চেষ্টা করুন।

৩. সিটবেল্ট ও জানালা

যদি সিটবেল্ট বাঁধা থাকে, সঙ্গে সঙ্গে খুলুন। সিটবেল্ট না থাকলে জানালা খুলে ফেলুন, যাতে বের হওয়ার পথ তৈরি হয়।

৪. দরজা বা জানালা দিয়ে বের হন

গাড়ি পানিতে পড়লে অনেক সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক হয়ে যায়। দরজা খোলার চেষ্টা করুন, না হলে জানালা ব্যবহার করুন।

৫. কাচ ভাঙুন

গাড়ির জানালার কাচ ভাঙতে বিশেষ যন্ত্র যেমন গ্লাস-ব্রেকিং হ্যামার বা হেডরেস্টের ইস্পাত রড ব্যবহার করুন। এসব না পেলে যেকোনো শক্ত বস্তু বা লাথির আঘাতে চেষ্টা করুন।

৬. পানি ঢোকা রোধ করুন

দম আটকে রেখে নাক-মুখে পানি ঢোকা বন্ধ করুন। সঙ্গে শিশু থাকলে আগে তাদের বের করে দিন।

৭. সাঁতরে ওপরে উঠুন

বের হওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব সাঁতরে ওপরে উঠুন। পানির বুদবুদ লক্ষ্য করুন, যা আপনাকে উপরের দিক চিনতে সাহায্য করবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নিয়মগুলো জানা ও প্রয়োগের প্রস্তুতি থাকলে এমন দুর্ঘটনায় মৃত্যুঝুঁকি অনেকটা কমানো সম্ভব। মূল বিষয় হলো আতঙ্ক এড়িয়ে দ্রুত ও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা


সকালে গরম না ঠান্ডা পানি? জানুন কোনটা বেশি উপকারী

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৭ ০৯:২৭:৫৯
সকালে গরম না ঠান্ডা পানি? জানুন কোনটা বেশি উপকারী

সকালে ঘুম ভেঙেই অনেকের অভ্যাস এক গ্লাস পানি পান করার। কেউ ঠান্ডা পানি খান, কেউ আবার কুসুম গরম। কিন্তু কোনটা শরীরের জন্য বেশি ভালো?

গরম পানির উপকারিতা

হালকা গরম পানি সকালে পান করলে শরীরের বিপাকক্রিয়া বাড়ে। ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরের অভ্যন্তরীণ কার্যপ্রক্রিয়াকে সক্রিয় করতে গরম পানি বেশ উপকারী।

হজমে সহায়ক: পাকস্থলীতে জমে থাকা খাবার দ্রুত গলাতে সাহায্য করে, হজমশক্তি বাড়ায়।

ডিটক্সে সহায়ক: রাতের বেলায় শরীরে জমে থাকা টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।

যন্ত্রণা উপশমে কার্যকর: শীতকালে কব্জি ও জয়েন্টে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে গরম পানি।

২০১৯ সালে Journal of Neurogastroenterology and Motility-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, গরম পানি পাকস্থলীর কার্যক্রম সক্রিয় করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়তা করে।

ঠান্ডা পানির দিক

সকালে ঠান্ডা পানি পান করাও একেবারে খারাপ নয়, তবে এটি নির্ভর করে শরীরের অবস্থা ও আবহাওয়ার ওপর।

মন সতেজ রাখে: ঠান্ডা পানি ব্রেইনকে জাগিয়ে তোলে, বিশেষ করে ঘুমচোখে দিনের শুরুতে কাজে নামলে এটি কাজে আসে।

ব্যায়ামের পর উপকারী: যারা সকালে ব্যায়াম করেন, তারা কিছুটা গরম হয়ে যান। তখন ঠান্ডা পানি শরীরকে স্বস্তি দেয়।

তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেন, একেবারে ফ্রিজ থেকে বের করে ঠান্ডা পানি খাওয়া উচিত নয়। খালি পেটে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

কী করা উচিত?

বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানি পান করাই সবচেয়ে নিরাপদ এবং উপকারী। তবে যদি শরীর খুব গরম বা অ্যাসিডিটির প্রবণতা থাকে, তাহলে কক্ষতাপমাত্রার ঠান্ডা পানি গ্রহণ করা যেতে পারে। খুব গরম বা খুব ঠান্ডা পানি—দুটোই এড়িয়ে চলাই ভালো।


সন্তানকে বুদ্ধিমান করতে পিতামাতার ১০টি কার্যকর কৌশল

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৭ ০৮:৫৪:২৫
সন্তানকে বুদ্ধিমান করতে পিতামাতার ১০টি কার্যকর কৌশল
ছবি: সংগৃহীত

শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে পিতামাতার ভূমিকা অপরিসীম। সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশ সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারলে তার সামগ্রিক প্রতিভা ও মননশক্তি দৃঢ় হয়। শিশুদের বুদ্ধিমান ও সৃজনশীল করে তোলার জন্য পিতামাতাদের সচেতনতা ও সঠিক দিকনির্দেশনা অত্যন্ত জরুরি। এই প্রেক্ষিতে ১০টি কার্যকর কৌশল তুলে ধরা হলো, যা পিতামাতাদের সন্তানের মননশীলতা ও জ্ঞান বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে:

১. বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন

বিভিন্ন বয়সের জন্য উপযোগী গল্প, বিজ্ঞানভিত্তিক ও নৈতিক শিক্ষা সমৃদ্ধ বই পড়ানো শিশুর শব্দভাণ্ডার বাড়ায়, কল্পনাশক্তি বিকাশে সহায়ক হয় এবং চিন্তার গভীরতা বৃদ্ধি করে।

২. সন্তানের প্রশ্ন করতে উৎসাহ দিন

যখন সন্তান কোনো বিষয় জানতে চায়, তখন ধৈর্য সহকারে তার প্রশ্নের উত্তর দিন। এতে তার কৌতূহল ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যা মেধা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ।

৩. শেখার জন্য উপযোগী পরিবেশ তৈরি করুন

বাসায় পড়াশোনা ও সৃজনশীল কাজের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ, নিরিবিলি পরিবেশ নিশ্চিত করুন। প্রযুক্তির ব্যবহার সীমিত রেখে বাস্তব জীবন থেকে শেখার সুযোগ সৃষ্টি করুন।

৪. খেলনা ও গেমের মাধ্যমে শেখানো

শিক্ষামূলক খেলনা যেমন পাজল, লেগো, রুবিক্স কিউব ও মেমোরি গেম শিশুর যুক্তি বিকাশ, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা এবং মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।

৫. নিয়মিত গল্প বলা ও আলোচনা

রাতের বেলায় ছোট ছোট নৈতিক গল্প শোনানো ও পরে তাদের বিষয়ে আলাপচারিতা করার মাধ্যমে ভাষার দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং চিন্তাশীল হওয়ার প্রবণতা বাড়ে।

৬. নিজে সদৃশ ভূমিকা পালন করুন

পিতামাতার আচরণ সন্তানদের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। শৃঙ্খলা, মনোযোগ ও জিজ্ঞাসু মনোভাব নিজেদের মধ্যে গড়ে তুললে সন্তানও তা অনুসরণ করে।

৭. সঙ্গী নির্বাচন ও সময় ব্যবস্থাপনায় নজর দিন

সন্তান কার সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে, তা লক্ষ্য রাখা জরুরি। সুস্থ ও উন্নত মানসিক বিকাশের জন্য ভালো পরিবেশ ও সঙ্গীর প্রয়োজন।

৮. শারীরিক ও মানসিক খেলাধুলার গুরুত্ব দিন

দৌড়, দাবা, ক্যারাম এবং অন্যান্য বুদ্ধিবৃত্তিক খেলা মন ও শরীরকে সক্রিয় রাখে, যা মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে।

৯. সঙ্গতিপূর্ণ প্রশংসা দিয়ে উৎসাহ দিন

অতিরিক্ত বা অবাস্তব প্রশংসার পরিবর্তে সন্তানের প্রচেষ্টার প্রশংসা করুন। এতে আত্মবিশ্বাস ও মনোযোগ বাড়ে, যা শিখতে উৎসাহিত করে।

১০. পারিবারিক আলোচনা ও মতামত প্রদানের সুযোগ দিন

পরিবারে নিয়মিত আলোচনায় সন্তানকে মতামত দিতে উৎসাহিত করলে সে দায়িত্বশীলতা ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা অর্জন করে, যা তার বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সহায়ক।

সন্তানের মেধা বিকাশে এসব কৌশল প্রয়োগ করলে সে কেবল পড়াশোনায় সফল হবে না, বরং জীবনের নানা ক্ষেত্রে সৃজনশীল ও যুক্তিবদ্ধ চিন্তা করতে সক্ষম হবে। এজন্য পিতামাতাদের সচেতন হওয়া ও ধারাবাহিকভাবে শিশুর মানসিক বিকাশের প্রতি মনোযোগ দেয়া অত্যাবশ্যক।


রাতে গরম দুধ খেলে ঘুম ভালো হয়—এ বিশ্বাসের পেছনে কী আছে? জানুন পুষ্টিবিদদের মতামত

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৬ ১৮:১৪:১০
রাতে গরম দুধ খেলে ঘুম ভালো হয়—এ বিশ্বাসের পেছনে কী আছে? জানুন পুষ্টিবিদদের মতামত

ঘুমানোর আগে গরম দুধ পান অনেকের অভ্যাস। বিশেষ করে আমাদের উপমহাদেশে এ অভ্যাস বহু পুরোনো। বলা হয়ে থাকে, রাতে গরম বা হালকা গরম দুধ খেলে ঘুম ভালো হয়, মানসিক চাপ কমে এবং শরীর-মন উভয়ই স্বস্তি পায়। কিন্তু এই দাবির পেছনে আসলেই কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কি না, সেটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুধে এমন কিছু উপাদান থাকে—যেমন ট্রিপটোফ্যান, অ্যামিনো অ্যাসিড, সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন—যা স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করতে সাহায্য করে এবং ঘুম আনার জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এই উপাদানগুলো শরীরে সঠিকভাবে কাজ করলে মস্তিষ্কে ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি হয়। তাই রাতে ঘুমানোর আগে দুধ খেলে অনেকেই ভালো ঘুম পান।

শুধু ঘুম নয়, দুধকে বলা হয় একটি 'সুপারফুড'। এতে রয়েছে ভিটামিন বি১২, ভিটামিন ডি, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, মিনারেল ও পটাশিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান, যা হাড় মজবুত করে এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায়। প্রতিদিন সঠিক পরিমাণে দুধ খেলে পুষ্টির ঘাটতি কমে এবং শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় থাকে।

পুষ্টিবিদদের মতে, গরম দুধে এক চিমটি কেশর কিংবা এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে এর উপকারিতা আরও বাড়ে। তবে দুধের সব উপকার পেতে হলে তা পরিমিত ও নিয়মিত খেতে হবে। অতিরিক্ত দুধ খাওয়ার ফলে শরীরে কিছু বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তাই পরিমাণ জানা অত্যন্ত জরুরি।

যাদের দুধ খাওয়ার পর অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া উচিত। সাধারণভাবে প্রতিদিন এক থেকে দুই গ্লাস দুধ খাওয়া নিরাপদ ধরা হয়। তবে বয়স, শারীরিক অবস্থা ও পুষ্টির চাহিদা অনুযায়ী এই পরিমাণ কম-বেশি হতে পারে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, গরম দুধ ঘুমের সহায়ক হতে পারে, তবে এটি কোনো ম্যাজিক্যাল সমাধান নয়। যারা দুধ খেতে পারেন, তাদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি পুষ্টিকর খাবার এবং রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ শারীরিক ও মানসিক স্বস্তি এনে দিতে পারে।

সূত্র : নিউজ ১৮


প্রতিদিন কর্মদক্ষতা বাড়ানোর ৭ সহজ টিপস

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৪ ১৩:৩৩:২৬
প্রতিদিন কর্মদক্ষতা বাড়ানোর ৭ সহজ টিপস
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রতিদিন আরও উৎপাদনশীল হতে চান? তাহলে কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর উপায় মেনে চলাই যথেষ্ট। আধুনিক জীবনযাত্রার ব্যস্ততায় কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় সময় ব্যবস্থাপনা যেমন জরুরি, তেমনি শক্তি ব্যবস্থাপনাও অনস্বীকার্য। সম্প্রতি প্রকাশিত বিভিন্ন মনোবিজ্ঞান ও কর্মদক্ষতা গবেষণায় উঠে এসেছে, কিভাবে দৈনন্দিন জীবনে কিছু সুনির্দিষ্ট অভ্যাস অনুসরণ করলে আপনি আপনার কাজের গতি ও মান দুইই উন্নত করতে পারবেন।

প্রথমত, সময় নয়, আপনার শক্তি নিয়ন্ত্রণ করুন। সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যার বিভিন্ন সময়ে আপনার শারীরিক ও মানসিক শক্তি কতটা থাকে তা খেয়াল করুন। উদাহরণস্বরূপ, সকালের সময় বেশিরভাগ মানুষের মস্তিষ্ক সতেজ থাকে, তাই সৃজনশীল কাজ বা জটিল চিন্তা-ভাবনার কাজ সেই সময়ে করা সবচেয়ে উপযোগী। অপরদিকে, দুপুরের পর মানসিক শক্তি কিছুটা কমে যেতে পারে, তখন তুলনামূলক সহজ বা রুটিন কাজ করার পরিকল্পনা করুন।

দ্বিতীয়ত, প্রতিদিনের কাজের তালিকা আগের রাতেই তৈরি করুন। রাতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় নিয়ে পরের দিনের অগ্রাধিকার বিষয়গুলো নির্ধারণ করুন। এটি আপনার মনকে প্রস্তুত করে রাখবে এবং সকাল থেকে কাজের গতি বাড়াতে সাহায্য করবে। যেমন একটি গবেষণায় দেখা গেছে, রাতের প্রস্তুতি পরবর্তী দিনের সময় সাশ্রয়ে ব্যাপক ভূমিকা রাখে, যেখানে মাত্র ১০ মিনিটের প্রস্তুতি কয়েক ঘণ্টার মূল্যবান সময় বাঁচায়।

তৃতীয়ত, সকাল বেলা ইমেইল চেক করার অভ্যাস ত্যাগ করুন। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সকালবেলা প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার সময়, ইমেইল বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দেখে সময় নষ্ট করলে কাজের উৎপাদনশীলতা কমে যায়। সত্যিকারের জরুরি মেসেজ যেমন পারিবারিক দুর্ঘটনা, সেগুলো দুপোর পরেও আসতে পারে। তাই দিনের প্রথম কয়েক ঘণ্টা শুধু গুরুত্বপূর্ণ কাজেই মনোযোগ দিন।

চতুর্থত, মোবাইল ফোন বন্ধ করে দূরে রেখে দিন। অনেক সময় মোবাইল ফোন আমাদের মনোযোগ ছিনিয়ে নেয়, যা একাধিক কাজ করার সময় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। ফোনের থেকে দূরে থাকলে আপনি পুরোপুরি কাজের প্রতি মনোযোগী হতে পারবেন এবং অর্ধেক কাজের ফাঁকি দেওয়া থেকে বাঁচতে পারবেন।

পঞ্চমত, কাজের পরিবেশ ঠান্ডা রাখুন। গরম পরিবেশে শরীর ও মন দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যায় এবং ঘুমিয়ে পড়ার মতো অনুভূতি হতে পারে। শীতল পরিবেশে মস্তিষ্ক সতেজ থাকে এবং মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। তাই সম্ভব হলে অফিস বা কর্মক্ষেত্রে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন বা শীতল স্থানে কাজ করুন।

ষষ্ঠত, কাজ করার সময় সোজা বসুন বা দাঁড়িয়ে কাজ করুন। বোঁটো বসার ফলে বুক সঙ্কুচিত হয় এবং ফুসফুসে পর্যাপ্ত অক্সিজেন প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ঠিক করে বসলে বা দাঁড়িয়ে কাজ করলে শ্বাস-প্রশ্বাস ভালো হয়, ফলে মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ হয় এবং মনোযোগ বাড়ে।

সপ্তমত, প্রতিদিন একটি ‘প্রি-গেম রুটিন’ তৈরি করুন। যেমন কেউ সকালে ঠাণ্ডা পানি পান দিয়ে দিন শুরু করেন, কেউ বা ধ্যান অনুশীলন করেন। এই ছোট ছোট রুটিন মস্তিষ্ককে সংকেত দেয় কাজের জন্য প্রস্তুত হতে। এর ফলে অনুপ্রেরণার অভাব থাকা সত্ত্বেও কাজ শুরু করা সহজ হয়।

এই সাতটি সহজ কিন্তু কার্যকরী ধাপ মেনে চললে দৈনন্দিন জীবনে আপনার কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি আরও উৎপাদনশীল হয়ে উঠবেন। গুরুত্বপূর্ণ হলো একসাথে সব কিছু করার চেষ্টা না করে একটি একটি করে অভ্যাস গড়ে তোলা এবং তা টেকসই করা। এই পথেই রয়েছে স্থায়ী সাফল্যের চাবিকাঠি।


অভ্যাস গঠনে সাফল্যের চাবিকাঠি: ‘কখন, কোথায়, কীভাবে’ পরিকল্পনা করুন

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৪ ১৩:১৬:৪২
অভ্যাস গঠনে সাফল্যের চাবিকাঠি: ‘কখন, কোথায়, কীভাবে’ পরিকল্পনা করুন
ছবি: সংগৃহীত

জীবনে একসাথে একাধিক পরিবর্তন আনা অনেকেরই আকাঙ্ক্ষা। কেউ লেখালেখিতে সফলতা বাড়াতে চান, কেউ শরীরচর্চায় উন্নতি করতে, আবার কেউ নিয়মিত মননশীলতা অনুশীলন করতে আগ্রহী। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সৎ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বেশিরভাগ মানুষ পুরনো অভ্যাসে ফিরে যান। স্থায়ী জীবনযাত্রার পরিবর্তন করা অত্যন্ত কঠিন।

সম্প্রতি মনস্তাত্ত্বিক গবেষণায় কিছু নতুন তথ্য সামনে এসেছে, যা হয়তো এই কঠিন কাজটিকে সহজ করতে পারে। গবেষণাগুলো থেকে বোঝা যায়, বহু ক্ষেত্রেই সফলতা পেতে যে পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়, তা কিছুটা বিপরীতমুখী হতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন অভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পরিকল্পনা করা। যখন, কোথায় এবং কীভাবে আপনি একটি অভ্যাস করবেন সেই বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে পরিকল্পনা করলে সফল হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বাড়ে। উদাহরণস্বরূপ, “আগামী সপ্তাহে আমি সোমবার সকাল ৭টায় পার্কে ২০ মিনিট দৌড়াব” এইরকম স্পষ্ট পরিকল্পনা থাকলে অভ্যাস গড়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সফলতা পাওয়া যায়। মনস্তাত্ত্বিকরা এই পরিকল্পনাকে ‘ইমপ্লিমেন্টেশন ইন্টেনশন’ বা ‘বাস্তবায়ন অভিপ্রায়’ বলে ডাকে।

কিন্তু এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার আছে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, একসাথে একাধিক অভ্যাস গড়ার চেষ্টা করলে পরিকল্পনার এই সুফল মিলবে না। বরং একসঙ্গে অনেক লক্ষ্য নির্ধারণ করলে কম মানুষই সেগুলো সফলভাবে অনুসরণ করতে পারে। তাই একসঙ্গে একাধিক পরিবর্তনের চেয়ে একবারে একটি অভ্যাসের ওপর মনোযোগ দেওয়া উচিত।

নতুন অভ্যাস শুরু করার সময় তা মনে রাখা খুবই কঠিন হয়, কারণ আমাদের মস্তিষ্ক সেই নতুন কাজটিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রহণ করেনি। অনেক অনুশীলনের পর ধীরে ধীরে সেই অভ্যাস স্বাভাবিক হয়ে ওঠে, মস্তিষ্কের জন্য অচেতন বা স্বয়ংক্রিয় কাজ হিসেবে গড়ে উঠে। এই প্রক্রিয়াকে মনোবিজ্ঞানীরা ‘অটোমেটিসিটি’ বলে।

গবেষণা অনুযায়ী, কোনো একটি অভ্যাসকে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় করতে গড়ে ৬৬ দিন সময় লাগে। তবে এটা একটি গড় সংখ্যা, কারণ সময়কাল নির্ভর করে অভ্যাসের ধরণ, পরিবেশ, ব্যক্তিগত প্রবণতা ইত্যাদির ওপর। মূল কথা হলো, অভ্যাস গড়তে ধৈর্য এবং পুনরাবৃত্তি অপরিহার্য।

যখন আপনি একটি অভ্যাসে পুরোপুরি পারদর্শী হয়ে উঠবেন, সেটি মস্তিষ্কের একটি স্বয়ংক্রিয় অংশে পরিণত হবে এবং সেই অভ্যাসের জন্য অতিরিক্ত চিন্তা বা মনোযোগ দিতে হবে না। তখন আপনি আপনার জীবনযাত্রার অন্য ক্ষেত্রেও নতুন অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য শক্তি ও মনোযোগ দিতে পারবেন।

অর্থাৎ, জীবন বদলাতে চাইলে একসঙ্গে সবকিছু পরিবর্তনের চেষ্টা না করে, বরং একটি অভ্যাসকে সঠিকভাবে গড়ে তোলা এবং সেটিকে স্বয়ংক্রিয় করে তোলাই শ্রেয়। এরপর ধীরে ধীরে পরবর্তী অভ্যাসে মনোযোগ দিন। এই পদ্ধতিই দীর্ঘমেয়াদে টেকসই পরিবর্তনের পথপ্রদর্শক।

সারসংক্ষেপে বলা যায়, আপনার জীবনের একাধিক ক্ষেত্র উন্নত করার জন্য প্রথম ধাপ হলো – একটি নির্দিষ্ট অভ্যাসের জন্য পরিকল্পনা করা এবং সেটিকে অন্তত দুই থেকে তিন মাস সময় দিয়ে পুরোপুরি অভ্যাসে পরিণত করা। এর পরেই অন্য অভ্যাস নিয়ে কাজ শুরু করা। এই ভাবেই আপনি দীর্ঘমেয়াদে আপনার জীবনকে সামগ্রিকভাবে বদলাতে পারবেন।

পাঠকের মতামত: