পাঠ্যবইয়ে ভুল খুঁজতে শিক্ষক সমাজের ডাক

শিক্ষা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৬ ১৫:২৬:৪৩
পাঠ্যবইয়ে ভুল খুঁজতে শিক্ষক সমাজের ডাক

২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে বিদ্যমান ভুল, অসংগতি ও আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তা চিহ্নিত করতে শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সুপারিশ আহ্বান করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পাঠ্যবইগুলো আরও যথাযথ, নির্ভুল ও সময়োপযোগী করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষকরা নির্ধারিত ছক অনুসারে সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ পর্যালোচনা করে ৭ জুলাইয়ের মধ্যে হার্ডকপি ও সফট কপিতে (ফন্ট: NikoshBan, সাইজ: ১২) তাদের মতামত ও সুপারিশ জমা দিতে পারবেন। সফট কপি পাঠাতে হবে [email protected] ঠিকানায়।

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দারের সই করা অফিস আদেশে বলা হয়েছে, বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ইসলাম শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম, কৃষিশিক্ষা, গার্হস্থ্যবিজ্ঞান এবং শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য এই ১১টি বিষয়ের প্রচলিত পাঠ্যপুস্তক পর্যালোচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংশোধনের প্রস্তাবে অবশ্যই অধ্যায়, পৃষ্ঠা, লাইন নম্বর উল্লেখ করে বর্তমান লেখার পাশাপাশি কীভাবে তা পরিবর্তন করা উচিত এবং কেন পরিবর্তন প্রয়োজন, সেই ব্যাখ্যাও যুক্ত করতে হবে।

পরিমার্জনের ক্ষেত্রে ২০১২ সালের জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিখনফলভিত্তিক সুপারিশ দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের খসড়া পাঠ্যপুস্তক পর্যালোচনার বিষয়েও মতামত চাওয়া হয়েছে। বৈষম্যমূলক শব্দ, বাক্য, তথ্য বা চিত্র যেমন জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা কিংবা পেশাজীবীদের নিয়ে যেকোনো বিভেদমূলক উপাদান চিহ্নিত করে সুস্পষ্টভাবে সংশোধনের প্রস্তাব দিতে হবে। সেই সঙ্গে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, দেশপ্রেম ও জাতীয় মূল্যবোধবিরোধী কোনো উপাদান থাকলে সেগুলো সংশোধনের জন্যও সুপারিশ করতে বলা হয়েছে।

পাঠ্যবইয়ের তথ্য হালনাগাদ করতে নির্ভরযোগ্য ও যাচাইযোগ্য সূত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং বানান সংশোধনের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমি প্রণীত বাংলা বানান অভিধান অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। তবে পাঠ্যবইয়ের মূল কাঠামো অপরিবর্তিত রেখে কেবল ভুল ও অসংগতি সংশোধনের দিকেই প্রাধান্য দিতে হবে। সুপারিশের বাইরেও যদি কারও কোনো মতামত বা প্রাসঙ্গিক পরামর্শ থাকে, তা আলাদা কাগজে নিজের নাম ও স্বাক্ষরসহ সফট কপিতে জমা দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।

শিক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগ পাঠ্যবইকে আরও সময়োপযোগী ও শিক্ষার্থীবান্ধব করার পাশাপাশি শিক্ষকদের পাঠ্যবস্তু উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষা সংস্কারে অংশগ্রহণমূলক একটি মডেল প্রতিষ্ঠার পথ খুলে দিচ্ছে। এটি শুধু পাঠ্যবই সংশোধনের উদ্যোগ নয়, বরং একটি দীর্ঘমেয়াদি সচেতনতা ও মানোন্নয়নের অংশ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ