তারেক-ইউনুস উত্তপ্ত ফোনালাপ: যা জানা গেল

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের মধ্যকার সাম্প্রতিক অপ্রকাশিত ফোনালাপ ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোড়ন তৈরি হয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে সরকার কিংবা বিএনপির পক্ষথেকে কোন আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায় নি। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ১ জুন ভোরে লন্ডন থেকে স্থানীয় সময় ৫:০৪ মিনিটে তারেক রহমান জাপানে অবস্থানরত ড. ইউনুসকে ফোন করেন। প্রায় ২০ মিনিটব্যাপী অনুষ্ঠিত এই কনফারেন্স কলে বিএনপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং জামায়াতে ইসলামীর দুই প্রতিনিধি অংশ নেন, যাদের মধ্যে একজন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে যুক্ত ছিলেন। ফোনালাপটি ছিল উত্তপ্ত, স্পষ্ট এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
মতপার্থক্যের কেন্দ্রে নির্বাচন ও দ্বৈত বার্তা
কথোপকথনের শুরুতেই তারেক রহমান একাধিক প্রশ্ন ও অভিযোগ তুলেন। তার বক্তব্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে অভিযোগটি উঠে আসে তা হলো—ড. ইউনুস দেশে অবস্থানকালে বিএনপির ব্যাপারে একটি নিরপেক্ষ ও সহযোগিতাপূর্ণ বার্তা দিলেও বিদেশে গিয়ে বিএনপিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো বক্তব্য রাখেন। তারেক রহমান এ ধরনের বক্তব্যকে দলকে ‘দুর্বল করা’ এবং ‘ভবিষ্যৎ সমঝোতার পরিবেশ নষ্ট করা’র শামিল বলে মনে করেন।
তারেক দাবি করেন, ডিসেম্বরের মধ্যে একটি নির্বাচনের দাবি বিএনপি কোনো অযৌক্তিক আবদার হিসেবে তোলে না, বরং এটিই একটি গণতান্ত্রিক অনিবার্যতা। প্রশ্ন ওঠে—এই আবদারকে বিতর্কিত করার চেষ্টা কেন?
ড. ইউনুস এই অভিযোগের জবাবে পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, বিএনপি কেন এতটা তড়িঘড়ি করছে—যখন বিগত ৯–১০ মাসে দলটির কার্যক্রমে রাজনৈতিক দায়িত্বশীলতার ঘাটতি ছিল এবং সাধারণ মানুষের মাঝে প্রত্যাশিত গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক আন্দোলনে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের দৃশ্যমান অংশগ্রহণ বিএনপির চেয়ে বেশি ছিল, অথচ বিএনপি এখন এককভাবে নেতৃত্ব দাবি করছে। এমন মনোভাব রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে অন্তরায় বলেই মন্তব্য করেন তিনি।
বৈঠকের প্রতিশ্রুতি, কিন্তু আস্থাহীনতার ছায়া
এই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর উভয় পক্ষ একটি ব্যাপারে একমত হন—ড. ইউনুস বাংলাদেশে ফেরার পর (২ জুন) বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসবেন। এই সিদ্ধান্তকে কিছু পর্যবেক্ষক ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে দেখলেও বিএনপির অভ্যন্তরে তেমন আস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
দলের একজন শীর্ষ নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় খোলামেলা বলেন, “আমরা হয়তো ইউনুস সাহেবকে চিনতে ভুল করেছি।” আরেক নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ এই বৈঠক সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, “ইউনুস আবার মুলা ঝুলাচ্ছেন”—অর্থাৎ, তিনি আশ্বাস দেন কিন্তু বাস্তবায়ন করেন না।
বিশ্লেষকদের মতে, ড. ইউনুসও এখন দলগুলোর আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছেন । ‘অন্তর্বর্তী সরকারে তাঁর নিরপেক্ষতা কতটা বজায় থাকবে’—এই প্রশ্ন ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। ফোনালাপটি শুধু মাত্র একটি রাজনৈতিক বিরোধের বহিঃপ্রকাশ নয়; বরং এটি বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতির জটিলতা, অবিশ্বাস ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের প্রতিফলন। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে এ ফোনালাপ এবং আসন্ন বৈঠক যদি অন্তঃসারশূন্য প্রক্রিয়ায় রূপ নেয়, তাহলে শুধু বিএনপি নয়, গোটা রাজনৈতিক ব্যবস্থাই আরও একধাপ অনিশ্চয়তার দিকে এগিয়ে যাবে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে চার্জ দাখিল, বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার
- বাহরাইনেরমানামায় বিএনপির সাংগঠনিক পুনর্গঠন, নেতৃত্বে আক্তার হোসেন
- চীন না ভারত? উন্নয়ন না আনুগত্য? বুলেট ট্রেন বলছে স্পষ্ট জবাব
- বাহরাইনে জাতীয়তাবাদী শক্তির পুনর্জাগরণ: গ্যালালী শাখায় নতুন নেতৃত্ব
- অবশেষে বিসিবি সভাপতি ফারুককে নিয়ে মুখ খুললেন আসিফ
- বিশ্বশক্তির নজর এখন বাংলাদেশে: খনিজ ভাণ্ডারের নতুন মানচিত্র
- তারেক-ইউনুস উত্তপ্ত ফোনালাপ: যা জানা গেল
- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি
- নতুন বিসিবি সভাপতিবুলবুলের কাছে আশরাফুলের চাওয়া
- হালদা নদীতে ডিম ছাড়ল রুই জাতীয় মা মাছ, সংগ্রহ প্রায় ১৪ হাজার কেজি নিষিক্ত ডিম
- ঈদের দিন বৃষ্টি হবে কি?
- চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন ভোর: দক্ষিণ এশিয়ার তেলের ‘রাজসিংহাসন’ দখলের পথে বাংলাদেশ?
- ভারতের গর্ব এস-৪০০ ধ্বংস: বাস্তবতা নাকি প্রচারযুদ্ধ?
- ধ্বংস থেকে নেতৃত্ব: ৫ আগস্ট থেকে যেভাবে শুরু হলো অর্থনীতির পুনর্জাগরণ
- জবি’র সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার বেগম হত্যাচেষ্টা মামলায় সুত্রাপুরে আটক