হামাসের আপত্তি সত্ত্বেও গাজা পুনর্গঠনে জাতিসংঘে বড় সিদ্ধান্ত

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রণীত এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন জানিয়ে যে প্রস্তাবটি পাস করেছে, সেটিকে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থির পরিস্থিতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই প্রস্তাবে গাজায় একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী—ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স (আইএসএফ)—গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অনুযায়ী বেশ কিছু দেশ ইতোমধ্যেই অংশগ্রহণে আগ্রহ জানিয়েছে।
১৩টি দেশ—যাদের মধ্যে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও সোমালিয়া উল্লেখযোগ্য—এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়, যদিও রাশিয়া ও চীন ভোটদানে বিরত থাকে। কোনো দেশই প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে যায়নি। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র জানান, এই প্রস্তাব গাজায় কার্যকর যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি দৃঢ় করার পথে “গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ” হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে হামাস প্রস্তাবটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, কারণ তাদের দাবি অনুযায়ী এটি ফিলিস্তিনিদের মৌলিক অধিকার ও রাজনৈতিক দাবি পূরণ করে না।
টেলিগ্রামে দেওয়া বিবৃতিতে হামাস অভিযোগ করে, প্রস্তাবটি গাজায় “আন্তর্জাতিক অভিভাবকত্ব” চাপিয়ে দেয়, যা গাজার জনগণ ও তাদের বিভিন্ন গোষ্ঠীর জন্য অগ্রহণযোগ্য। তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক বাহিনীর ভূমিকাকে গাজার ভেতরে প্রসারিত করে প্রতিরোধ শক্তিকে নিরস্ত্র করার পরিকল্পনা আইএসএফ-কে নিরপেক্ষতার বাইরে নিয়ে যাবে এবং সংঘাতে ইসরায়েলের পক্ষে কার্যকর পক্ষ হিসেবে দাঁড় করাবে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, আইএসএফ ইসরায়েল ও মিসরের পাশাপাশি নতুন করে প্রশিক্ষিত ও যাচাইকৃত একটি ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং হামাসসহ সকল অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর স্থায়ী নিরস্ত্রীকরণে ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে গাজায় কার্যরত পুলিশ বাহিনী হামাসের অধীনেই পরিচালিত হয়।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়াল্টজ জানান, আইএসএফ গাজায় নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাসী কাঠামো ভাঙন, অস্ত্র অপসারণ এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি গাজায় একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনিক কাঠামো—বোর্ড অব পিস (বিওপি)—গঠনেরও অনুমোদন দেওয়া হয়। এই বোর্ড একটি প্রযুক্তিনির্ভর, অরাজনৈতিক ফিলিস্তিনি কমিটির তত্ত্বাবধান করবে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার পুনর্গঠন, শাসনব্যবস্থা এবং মানবিক সহায়তার সামগ্রিক তদারকি করবে।
দুই বছরের যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির পর গাজা পুনর্গঠনের অর্থায়ন বিশ্বব্যাংকের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ ফান্ডের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। আইএসএফ ও বিওপি দু’টিই ফিলিস্তিনি কমিটি ও নতুন পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।
প্রস্তাব পাসের পর ট্রাম্প একে “ঐতিহাসিক” আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, এই সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। তিনি বলেন, বোর্ড অব পিসের চূড়ান্ত সদস্যদের নাম শিগগিরই ঘোষণা করা হবে এবং তিনি নিজেই এর নেতৃত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
নতুন খসড়া প্রস্তাবে প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একটি “বিশ্বাসযোগ্য পথরেখা” উল্লেখ করা হয়েছে—যা নিরাপত্তা পরিষদের বেশ কয়েকটি সদস্য দেশের জোরালো দাবির প্রতিফলন। তবে ইসরায়েল প্রকাশ্যেই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করে আসছে, যা ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বাস্তব প্রয়োগে বড় বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ আরব রাষ্ট্রগুলোও প্রস্তাবে আত্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়টি স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে চাপ প্রয়োগ করেছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র আবারও জোর দিয়ে বলেন, প্রস্তাবটির ভাষা কাগজে সীমাবদ্ধ না রেখে দ্রুত বাস্তবে রূপান্তর জরুরি, যাতে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে একটি কার্যকর রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) এবং মিসর, সৌদি আরব ও তুরকিসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ প্রস্তাবটির দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে। পিএ এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রস্তাবের ধারাগুলো “অবিলম্বে ও জরুরি ভিত্তিতে” কার্যকর করতে হবে।
রাশিয়া ও চীন ভেটো ব্যবহার না করলেও প্রস্তাবের অস্পষ্ট কাঠামো, জাতিসংঘের প্রতিফলনের সীমাবদ্ধতা এবং দুই রাষ্ট্র সমাধানের বিষয়ে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি না থাকার কারণে তারা ভোটদানে বিরত থাকে। তাদের মতে, প্রস্তাবের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো এখনও অস্পষ্ট এবং বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট নিশ্চয়তা নেই।
এর আগে প্রস্তাবের প্রথম ধাপ—ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং আটক ব্যক্তিদের বিনিময়—চলতি বছরের ১০ অক্টোবর কার্যকর হয়। ওয়াল্টজ এটিকে “অত্যন্ত ভঙ্গুর প্রথম ধাপ” হিসেবে উল্লেখ করেন। ট্রাম্পের পরিকল্পনা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস-নেতৃত্বাধীন হামলার পর শুরু হওয়া ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে এক ধরনের সাময়িক বিরতি সৃষ্টি করে। ওই হামলায় ১,২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মা হন। এর পরবর্তী ইসরায়েলি অভিযানগুলোতে এখন পর্যন্ত ৬৯,৪৮৩-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে।
-নাজমুল হাসান
ফেসবুকে মোদীর আবেগঘন পোস্ট ভাইরাল
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সৌদি আরবে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২ ভারতীয় ওমরাহযাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। সোমবার ১৭ নভেম্বর রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসে তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
মোদি জানান, রিয়াদে ভারতীয় দূতাবাস এবং জেদ্দায় কনস্যুলেট ঘটনাটি নজরদারিতে রেখে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করছে। সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রেখে আহতদের চিকিৎসা, নিহতদের পরিচয় শনাক্তকরণ এবং পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নে কাজ চলছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মদিনা ও বাদরের মধ্যবর্তী মুফরাহথ এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস এবং ট্যাংকার লরির সংঘর্ষে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। বাসটিতে থাকা সব যাত্রীই হায়দরাবাদের বাসিন্দা। সংঘর্ষের সময় অধিকাংশ যাত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন, ফলে অনেকে বের হওয়ার সুযোগ পাননি। সংঘর্ষের পরপরই বাসটিতে আগুন ধরে যায় এবং অল্প সময়ের মধ্যে আগুন পুরো বাসটিকে গ্রাস করে। এতে হতাহতের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায়।
নিহতদের মধ্যে ২০ নারী ও ১১ শিশু রয়েছেন বলে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। দুর্ঘটনায় মাত্র একজন গুরুতর আহত অবস্থায় বেঁচে গেছেন। তাঁকে মদিনার হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করও এক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, রিয়াদের রাষ্ট্রদূতাবাস এবং জেদ্দার কনস্যুলেট নিহতদের পরিবার ও আহতদের সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করতে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করেন।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেদ্দার কনস্যুলেটে ২৪ ঘণ্টা একটানা পরিচালিত একটি কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে বলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানায়। এই কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে পরিবারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা, তথ্য আদান-প্রদান এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
এদিকে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট ওমরাহ অপারেটরদের সঙ্গে সমন্বয় করে ভারতীয় কনস্যুলেট কর্মীরা দুর্ঘটনাস্থল এবং হাসপাতালে অবস্থান করছেন। কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবীরাও উদ্ধার কার্যক্রম এবং শনাক্তকরণে সহযোগিতা করছেন।
-শরিফুল
"শেখ হাসিনার রায় কার্যকর হবে না"
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ডের রায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পলাতক সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া এই রায় শুধু বাংলাদেশের ভেতরেই নয়, উপমহাদেশজুড়ে কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ভারতের রাজনৈতিক মঞ্চে এই রায়কে কেন্দ্র করে ভিন্ন সুর শোনা গেছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী রায়টি সম্পর্কে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, রায়টি মূলত পাকিস্তানের নির্দেশে দেওয়া হয়েছে। সোমবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, ‘এটা পাকিস্তানের নির্দেশেই করা হয়েছে। এটা কার্যকর হবে না।’ তাঁর এই মন্তব্য পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত করেছে।
শুভেন্দু আরো বলেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হলেও শেখ হাসিনা বাঙালি সংস্কৃতি ও প্রগতিশীল চেতনাবোধের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর ভাষায়, ‘শেখ হাসিনা একজন প্রগতিশীল মুসলমান। তিনি কখনো চরমপন্থীদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।’ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির প্রতি তাঁর এই অবস্থান বিজেপির কেন্দ্রীয় অবস্থানের সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ, তা নিয়ে ভারতের রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশে চলমান বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে নজর রাখছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত সব সময় বাংলাদেশের মানুষের শান্তি, গণতন্ত্র, অংশগ্রহণ ও স্থিতিশীলতার পক্ষে থাকে। ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বা দ্বন্দ্বপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করে দেশটি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় আমরা লক্ষ্য করেছি। বাংলাদেশের শান্তি, গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করতে প্রস্তুত।’
-রফিক
হাসিনার রায় নিয়ে 'সতর্ক' প্রতিক্রিয়া ভারতের, জানাল নিজেদের অবস্থান
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর ভারত এই বিষয়ে তাদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) নয়াদিল্লিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "ভারত বাংলাদেশের ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’ কর্তৃক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঘিরে ঘোষিত রায়টি সম্পর্কে অবগত আছে।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, "নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে সেই দেশের শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতা অন্তর্ভুক্ত।"
ভারত জানিয়েছে, "আমরা এ লক্ষ্যে সর্বদা সব অংশীদারের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।"
এর আগে আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসির আদেশ দেন। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে মামলার দুই নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক নম্বর অভিযোগে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, এই মামলার আরেক আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালেরও ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার অপর আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়ে সত্য উন্মোচনে সহায়তা করায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সাময়িক আশ্রয় কি স্থায়ী হচ্ছে? হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের নতুন ভাবনা
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করলেও, যে দেশটিতে তিনি আশ্রয় নিয়ে আছেন, সেই ভারত সরকার এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
তবে, ভারতের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা বিবিসিকে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এই রায়ের ফলেও শেখ হাসিনাকে নিয়ে দিল্লির অবস্থানে কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসছে না। তাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো প্রশ্ন উঠছে না বলেও তারা জানিয়েছেন।
মূলত, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পৌঁছানোর পর থেকে আজ পর্যন্ত তাকে আতিথেয়তা দেওয়া নিয়ে ভারতের ঘোষিত অবস্থান একই আছে। ভারত তখন জানিয়েছিল, একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তাকে 'সাময়িকভাবে' (ফর দ্য টাইম বিয়িং) আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। আজকের রায়ের পরও ভারতের সেই অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এর অর্থ হলো, শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভারত পুনর্বিবেচনা করতে পারে, এমন কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
তবে এখন এই প্রশ্ন উঠছে যে, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের যে দাবি জানিয়েছিল, সেটির এখন কী হবে?
এর সহজ উত্তর হলো, গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি কূটনৈতিক পত্র বা 'নোট ভার্বাল' পাঠিয়ে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হয়েছিল। ভারত সেই চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও, ওই অনুরোধের বিষয়ে তারা কী ভাবছে বা কী অবস্থান নিচ্ছে, তা নিয়ে নয়াদিল্লি আজ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে একটি কথাও বলেনি। এতদিন চুপচাপ থাকলেও, রায় ঘোষণার পর এখন এ বিষয়ে মুখ খোলার জন্য ভারতের ওপর চাপ বাড়বে।
অতীতে, একান্ত আলোচনায় ভারতের পররাষ্ট্র বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা প্রায়শই বলেছেন যে, প্রত্যর্পণ চুক্তিতে এমন অনেক 'ফাঁকফোকর' রয়েছে যা ব্যবহার করে এই হস্তান্তরের অনুরোধ নাকচ করা বা দিনের পর দিন ঝুলিয়ে রাখা সম্ভব।
পরিস্থিতি এখন কতটা পাল্টেছে?
গত বছরের ডিসেম্বরে যখন প্রথমবার এই অনুরোধ জানানো হয়, তখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার মামলা সবেমাত্র শুরু হয়েছিল। এমনকি আনুষ্ঠানিক অভিযোগও গঠন করা হয়নি। সেসময় ভারতে বিভিন্ন ঘটনা, যেমন আদালত প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেত্রী দীপু মণিকে হেনস্থা করা বা আনিসুল হকদের ওপর হামলার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে ভারতীয় কর্মকর্তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে বলতেন, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হলে তিনি 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসার' শিকার হতে পারেন এবং 'ন্যায়বিচার' পাবেন কি না, তা নিয়েও সন্দেহ আছে।
কিন্তু সোমবারের রায়ের পর পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা, কারণ শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশের আদালতে গণহত্যার অভিযোগে দণ্ডিত একজন অপরাধী। এমন একজন পলাতক ও দণ্ডিত অপরাধীকে ভারত কেন আশ্রয় দিয়ে রেখেছে, সেই কৈফিয়ত দেওয়ার জন্য দিল্লির ওপর এখন স্বাভাবিকভাবেই চাপ বাড়বে।
ধারণা করা হচ্ছে, শিগগিরই ভারতকে এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হতে পারে। তবে সেই ব্যাখ্যায় ভারতের মৌলিক অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসবে না, অর্থাৎ শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত প্রত্যর্পণ চুক্তিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা রয়েছে যে, যদি কোনো অভিযোগ 'রাজনৈতিক প্রকৃতির' হয়, তবে হস্তান্তরের অনুরোধ খারিজ করা যাবে। যদিও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগকে এই ধারায় ফেলা কঠিন।
এমনকি ২০১৬ সালে যখন চুক্তিটি সংশোধন করা হয়, তখন হস্তান্তর প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, অভিযোগের পক্ষে সাক্ষ্যপ্রমাণ না দিলেও, শুধু আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিলেই চলবে।
কিন্তু এরপরেও চুক্তিতে এমন কিছু ধারা আছে যা ব্যবহার করে ভারত এই অনুরোধ নাকচ করার অধিকার রাখে। যেমন, একটি ধারায় বলা আছে, যদি অনুরোধ গ্রহণকারী দেশের (ভারত) মনে হয় যে 'অভিযোগগুলো শুধুমাত্র ন্যায় বিচারের স্বার্থে বা সরল বিশ্বাসে আনা হয়নি', তবে তারা সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারবে।
দিল্লির অনেক পর্যবেক্ষকই মনে করছেন, ভারত এই বিশেষ ধারাটি ব্যবহার করেই শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ না করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারে। ভারত বলতে পারে যে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সঠিক ও সুষ্ঠু বিচার পেয়েছেন বলে তারা মনে করছে না, এবং এই কারণেই তাকে হস্তান্তর করা সম্ভব নয়।
চাউশেস্কু থেকে সাদ্দাম: ইতিহাসে যে শাসকদের পতন হয়েছিল মৃত্যুদণ্ডে
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিভিন্ন নেতার পতন অনেক সময়ই সহিংস রূপ নিয়েছে। তবে রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে বিরল এবং নাটকীয় ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি হলো কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের আনুষ্ঠানিক বিচারিক মৃত্যুদণ্ড। সাধারণত বড় ধরনের বিপ্লব, সামরিক অভ্যুত্থান, গৃহযুদ্ধ অথবা গণ-অপরাধের বিচারের পর এই ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। ইতিহাসে এমন অনেক রাজা, একনায়ক এবং নির্বাচিত নেতা আছেন যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বা মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়েছিল। অনেক ক্ষেত্রে, কয়েক দশক পর আদালত সেই রায় পুনরায় পর্যালোচনাও করেছে।
নিকোলায় চাউশেস্কু
নিকোলায় চাউশেস্কু ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত টানা ২৪ বছর রুমানিয়ার শাসক ছিলেন। ১৯৮৯ সালে রুমানিয়ার কমিউনিস্ট শাসনের পতনের সময় চাউশেস্কু এবং তার স্ত্রীকে একটি দ্রুতগতির সামরিক ট্রাইব্যুনালে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। গণহত্যা এবং দেশের অর্থনৈতিক ধ্বংসযজ্ঞের অভিযোগে তারা দোষী সাব্যস্ত হন। ওই বছরের বড়দিনের দিনেই তাদের মৃত্যুদণ্ড (ফায়ারিং স্কোয়াডে) কার্যকর করা হয়। আধুনিক রুমানিয়ার ইতিহাসে এটিই ছিল শেষ মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা।
জুলফিকার আলী ভুট্টো
জুলফিকার আলী ভুট্টো ১৯৭১ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এবং এরপর ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পাকিস্তানের এই ক্যারিশমাটিক নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এক বিতর্কিত হত্যা মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং ১৯৭৯ সালের এপ্রিলে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তবে, এই ঘটনার কয়েক দশক পর, ২০২৪ সালে, পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সেই বিচারকে 'মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ' বলে ঘোষণা দেয়, যা ছিল তার জন্য এক যুগান্তকারী মরণোত্তর সম্মান।
সাদ্দাম হোসেন
সাদ্দাম হোসেন ১৯৭৯ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ইরাকের ক্ষমতায় আসীন ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন বাহিনীর আগ্রাসনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে দুজাইল গণহত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে একটি ইরাকি ট্রাইব্যুনালে বিচার হয়। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এটি আধুনিক সময়ে কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের মৃত্যুদণ্ডের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
মুয়াম্মার গাদ্দাফি
লিবিয়ার ৪২ বছরের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি ২০১১ সালে গণ-আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হন। যদিও তার কোনো আনুষ্ঠানিক আদালতের রায় ছিল না, কিন্তু আটকের পর তাকে তাৎক্ষণিকভাবে হত্যা করা হয়, যা বিশ্বজুড়ে বিতর্কের সৃষ্টি করে। এই পতনের মধ্য দিয়েই দেশটিতে ৪২ বছরের একনায়কতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং লিবিয়া গভীর বিভক্তির মধ্যে পড়ে।
মেংগিস্তু হাইলি মারিয়াম
ইথিওপিয়ার মার্ক্সবাদী 'দার্গ' শাসনব্যবস্থার সাবেক নেতা ছিলেন মেংগিস্তু। 'রেড টেরর' বা লালআতঙ্ক নামে পরিচিত সময়ের গণহত্যা ও নৃশংসতার অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। তার অনুপস্থিতিতেই তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি জিম্বাবুয়েতে নির্বাসনে বসবাস করছেন এবং তাকে বিচারের জন্য কখনো ফেরত পাঠানো হয়নি।
চুন দু-হোয়ান
দক্ষিণ কোরিয়ায় গণতন্ত্র ফিরে আসার পর দেশটির সাবেক সামরিক শাসকদের বিচারের আওতায় আনা হয়। প্রেসিডেন্ট চুন দু-হোয়ান দেশটিকে আট বছর শাসন করেছিলেন। ১৯৭৯ সালে তার করা সামরিক অভ্যুত্থান এবং গওয়াংজু শহরে চালানো দমন-পীড়নের দায়ে চুনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছিল। তবে, পরবর্তীতে তার সেই দণ্ড মওকুফ করা হয় এবং শেষ পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রপতির ক্ষমা লাভ করেন।
জোসেফ কাবিলা
জোসেফ কাবিলা ২০০১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ডিআর কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০২৫ সালে দেশটির একটি সামরিক আদালত কাবিলাকে রাষ্ট্রদ্রোহ, বিদ্রোহ এবং পূর্ব কঙ্গোর সংঘর্ষ সংক্রান্ত বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তার অনুপস্থিতিতেই মৃত্যুদণ্ড দেয়। এটি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক ঘটনাগুলোর একটি। যদিও জোসেফ কাবিলা এখনো গ্রেপ্তার হননি এবং তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
রাজনৈতিক অস্থিরতার পর রাষ্ট্রপ্রধানদের মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার ঘটনা ইতিহাসে নতুন নয়। ফরাসি বিপ্লব থেকে শুরু করে ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধ, ইরাক ও রুমানিয়ার শাসনব্যবস্থার পতন কিংবা ঘানার অভ্যুত্থান—বিশ্ববাসী বিভিন্ন সময়েই এ ধরনের ঘটনার সাক্ষী হয়েছে।
তবে এসব বিচারের ধরণ একেক দেশে একেক রকম ছিল। কোথাও কাবিলার মতো দীর্ঘ ও বিস্তৃত বিচার হয়েছে, আবার কোথাও ভুট্টো বা চাউশেস্কুর মতো দ্রুত এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচার ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। তবে এটিকে বিচার, প্রতিশোধ বা ট্র্যাজেডি—যেভাবেই দেখা হোক না কেন, রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতিটি মৃত্যুদণ্ডই একটি যুগের অবসান এবং নতুন আরেকটি অধ্যায়ের সূচনার ইঙ্গিত দেয়।
আল জাজিরা থেকে এনডিটিভি, বিশ্বজুড়ে যেভাবে প্রচার হলো হাসিনার রায়
জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার এই রায় ঘোষণার পরপরই তা বিশ্বজুড়ে প্রধান সংবাদ শিরোনামে পরিণত হয়। বিবিসি, রয়টার্স, আল জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি এবং আনন্দবাজার পত্রিকাসহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এই খবর অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা 'মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বাংলাদেশের হাসিনার মৃত্যুদণ্ড' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, গত বছর ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনে মারাত্মক দমনপীড়নের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করে এই মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।
অন্যদিকে, বার্তাসংস্থা রয়টার্স শিরোনাম করেছে 'ছাত্রদের ওপর দমনপীড়নের মামলায় বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হাসিনা দোষী সাব্যস্ত'। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার বাংলাদেশের একটি আদালত শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে। এই রায়ের মাধ্যমে দীর্ঘ একটি বিচারের সমাপ্তি ঘটল এবং এটি ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে এলো।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি 'বিক্ষোভ দমনে নৃশংসতার দায়ে বাংলাদেশের সাবেক নেত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড' শিরোনামে খবর দিয়েছে। বিবিসি উল্লেখ করেছে, গত বছরের বিক্ষোভে 'ভয়াবহ দমনপীড়নের' জন্য বাংলাদেশের একটি ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হাসিনার অনুপস্থিতিতেই এই বিচার করা হয়েছে।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি একটি ব্রেকিং নিউজে জানিয়েছে, ঢাকার আদালত শেখ হাসিনা এবং তার সহযোগীর সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি 'মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বাংলাদেশে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড' শিরোনামে জানায়, আদালত শেখ হাসিনাকে তিনটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তিনি গত বছর ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে মারাত্মক দমনপীড়নের নির্দেশ দিয়েছিলেন, যার ফলে তার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটেছিল।
অপর ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা শিরোনাম করেছে, 'শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডই দিল বাংলাদেশের ট্রাইবুনাল! রায় ঘোষণা হতেই হাততালিতে ফেটে পড়ল আদালতকক্ষ'। আনন্দবাজার আরও উল্লেখ করে, বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর ট্রাইব্যুনালের এই রায় সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, একই অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল হাসিনার দুই সহযোগী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধেও রায় ঘোষণা করেছে। আদালত বলেছেন, অভিযুক্ত তিনজন একে অপরের সাথে যোগসাজশ করে দেশজুড়ে বিক্ষোভকারীদের হত্যা করার জন্য নৃশংসতা চালিয়েছিলেন।
হাসিনার রায় ঘিরে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সতর্ক বার্তা
বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস মোরিয়ার্টি মনে করেন, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ যে রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে, সেটি দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য গভীর তাৎপর্য বহন করবে। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
মোরিয়ার্টি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে যেভাবে পরপর ক্ষমতায় থেকেছে, তা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। স্বাধীনতার পর এত দীর্ঘ সময় একটি দলের একাধিপত্য বজায় রাখার উদাহরণ নেই। তাঁর মতে, এই দীর্ঘ ক্ষমতাকাল বাংলাদেশে রাজনৈতিক ভারসাম্য, রাষ্ট্রযন্ত্রের গঠন ও আইনের শাসন–সংক্রান্ত কাঠামোতে বেশ বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছিল।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার সরকার সাংবিধানিক পরিবর্তন, নির্বাচনব্যবস্থার রূপান্তর, প্রশাসন পুনর্গঠন এবং বিভিন্ন আইন সংশোধনের মাধ্যমে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করেছিল, যা একদলীয় শাসনের পথকে শক্তিশালী করেছিল। তাঁর দৃষ্টিতে, এই পরিবর্তনগুলো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ক্ষমতার ভারসাম্যকে দুর্বল করেছে।
মোরিয়ার্টি মনে করেন, এখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। বাংলাদেশ ভবিষ্যতে কোন পথে যাবে তা নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্ক শুরু হয়েছে।” এই পরিবর্তনের মাঝেই আজকের রায় যে বড় ধরনের গুরুত্ব বহন করে, তা তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
রায়ের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়েও তিনি সতর্ক মন্তব্য করেন। তাঁর ভাষায়, “যদি শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, কিছু সহিংসতা হতে পারে, তবে তা খুব বেশি বৃদ্ধি পাবে বলে আমার মনে হয় না।” তাঁর মতে, পরিস্থিতি জটিল হলেও ব্যাপক সহিংসতা গণঅভ্যুত্থানের সময়ের মতো হবে না।
অন্যদিকে, যদি শেখ হাসিনা খালাস পান তবে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে বলে মোরিয়ার্টি মনে করেন। তিনি বলেন, “হাসিনা খালাস পেলে বড় ধরনের বিক্ষোভ হবে। কারণ এখন দেশের মধ্যে স্পষ্টভাবে প্রতিশোধ বা প্রতিহিংসার আবহ দেখা যাচ্ছে।”
আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে মোরিয়ার্টি বলেন, দলটি এখন এক সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি উল্লেখ করেন, “নিজেদের ভবিষ্যৎ ভূমিকা ঠিক করা এখন তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে আগামী দিনের রাজনীতিতে তারা কীভাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে বা অবস্থান নেবে এটা এখন তাদের নির্ধারণ করতে হবে।”
-শরিফুল
শেখ হাসিনার রায়কে ঘিরে সজীব ওয়াজেদের বিস্ফোরক মন্তব্য
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ ঘোষণা হচ্ছে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বহুল আলোচিত মামলার রায়। রায় ঘোষণার ঘণ্টাখানেক আগে শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে তার মায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হতে পারে। একই সঙ্গে তিনি স্বস্তিও প্রকাশ করেছেন যে শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে নিরাপদে অবস্থান করছেন এবং দেশটি তাকে নিরাপত্তা দিচ্ছে।
আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধসহ পাঁচটি মামলার রায় ঘোষণা করবে। ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলন দমন করতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতাকে পরিচালনা, উৎসাহ ও অনুমোদনে শেখ হাসিনার সরাসরি ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। জাতিসংঘের একটি তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে দেশে প্রায় এক হাজার চারশ মানুষ নিহত হয়। হাজারো মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। রেকর্ড অনুযায়ী পুলিশের গুলিতেই অধিকাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটে। স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সবচেয়ে ভয়াবহ রাজনৈতিক সহিংসতা বলে এটিকে অভিহিত করেছে প্রতিবেদনটি।
গণঅভ্যুত্থানের পর ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি দিল্লিতে অবস্থান করছেন এবং ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর পাহারায় আছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। সজীব ওয়াজেদও আজ তা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন যে ভারত তার মাকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তায় রেখেছে।
রায় ঘোষণার আগমুহূর্তে জয় বলেন যে তারা আগেই বুঝে গেছেন রায়ে কী হবে। তার ভাষায়, তারা পুরো প্রক্রিয়াটি টেলিভিশনে প্রচার করছে এবং সমস্ত চিত্রই স্পষ্ট যে আদালত শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করবে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন এটি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে।
তবে আশঙ্কার পাশাপাশি তিনি স্বস্তিও প্রকাশ করেন। তার দাবি, শেখ হাসিনা ভারতে নিরাপদ আছেন এবং তাই রায় যাই হোক না কেন তার কোন ক্ষতি হবে না। তিনি বলেন, আমার মা বর্তমানে দিল্লিতে নিরাপদে আছেন এবং ভারত তাকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দিচ্ছে।
-রাফসান
ইসরায়েলের গোপন ফাঁদেই উল্টো ধরা, ইরানের যে কৌশলে বোকা বনেছিল ইসরায়েল
ইসরায়েল বহু বছর ধরেই ইরানের পারমাণবিক এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে একটি গোপন জাল বিস্তার করে আসছিল। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল ইরানের ভেতরে ড্রোন ঘাঁটি তৈরি করা, গোপনে অস্ত্রশস্ত্র পাঠানো এবং কমান্ডো পাচার করা। সব মিলিয়ে, ইসরায়েল একটি বড় ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে প্রস্তুত ছিল।
কিন্তু গত জুন মাসে ইরানের ওপর চালানো অতর্কিত হামলার কড়া জবাব দিয়ে আয়াতুল্লাহ খামেনির দেশ এটিও প্রমাণ করে দেয় যে, তারাও পাল্টা আঘাত হানার জন্য প্রস্তুত ছিল।
ইসরায়েলের 'লোহার দুর্গ' হিসেবে পরিচিত আয়রন ডোম প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে ইরানের আক্রমণে একটি ইসরায়েলি সদর দপ্তর ধ্বংস হয়ে যায়। ইসরায়েল যে ফাঁদ পেতেছিল, উল্টো তারাই ইরানের এক ধরনের 'পটকা' ফাঁদে আটকা পড়ে।
সামরিক পরিভাষায় এই কৌশলকে 'ডিকয় ক্ষেপণাস্ত্র' বা ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে প্রতারণা বলা হয়। এই কৌশলের মাধ্যমে ইসরায়েলের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে মুহূর্তের মধ্যে দুর্বল করে ফেলা সম্ভব হয়েছিল। খোদ মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালও এই তথ্য প্রকাশ করেছিল।
এই ডিকয় বা ভুয়া ক্ষেপণাস্ত্রটি দেখতে হুবহু আসল ক্ষেপণাস্ত্রের মতোই এবং এটি একই রকম আচরণ করে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো শত্রুপক্ষের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করা।
এই কৌশলটি যেভাবে কাজ করে তা হলো—আসল ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার সময়ই তার সঙ্গে ধাতব 'পটকা' বা ডিকয় নিক্ষেপ করা হয়, যা থেকে তীব্র আগুন বের হতে থাকে। ইসরায়েলের আয়রন ডোমের মতো স্বয়ংক্রিয় প্রতিরাব্যবস্থাগুলো এই ধাতব বস্তুকে শনাক্ত করে এবং সেটিকে আসল ক্ষেপণাস্ত্র বলে মনে করে।
যখনই সেটিকে আসল ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সেটিকে ধ্বংস করার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে মারে। এভাবে যখন প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ওই ধাতব পটকার দিকে ছুটে যায় বা সেটিকে ধ্বংস করে, ঠিক সেই মুহূর্তে আয়রন ডোমের অস্ত্রভাণ্ডার খালি হতে শুরু করে। এই সুযোগেই আসল ক্ষেপণাস্ত্রটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে তার নির্ধারিত লক্ষ্যে আঘাত হানে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ইসরায়েলের আয়রন ডোম থেকে একবার প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়ে গেলে, সেটি পুনরায় লোড করতে প্রায় ১০ থেকে ১১ মিনিট সময় প্রয়োজন। কিন্তু ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আয়রন ডোমে শনাক্ত হওয়ার মাত্র ৭ মিনিটের মধ্যেই ইসরায়েলের মাটিতে আঘাত হানতে সক্ষম। এই সময়ের ব্যবধানের কারণেই ইসরায়েল সেই হামলায় ধরাশায়ী হয়।
ইসরায়েলকে সেই ঘটনায় পরাজিত করতে পারলেও, ইরান এখন আরও বেশি সতর্ক এবং নিজেদের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। দেশটি সম্প্রতি সব আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে ঘোষণা দিয়েছে যে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির অগ্রগতি যেকোনো মূল্যে অব্যাহত থাকবে এবং এর পাল্লা কোনোভাবেই সীমিত করা হবে না।
পাঠকের মতামত:
- হামাসের আপত্তি সত্ত্বেও গাজা পুনর্গঠনে জাতিসংঘে বড় সিদ্ধান্ত
- প্রকাশ্যে যুবদল নেতাকে হত্যা নিয়ে বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
- নানা কর্মসূচির ঝড়ে আজ রাজধানীতে বাড়তি ব্যস্ততা
- মঙ্গলবার ঢাকার কোন মার্কেট বন্ধ জেনে নিন
- পপুলার ওয়ান মিউচুয়াল ফান্ডের নতুন এনএভি প্রকাশ
- ফেসবুকে মোদীর আবেগঘন পোস্ট ভাইরাল
- বড় ধাক্কা স্বর্ণবাজারে: ভরিতে কমল ৫,৫১৯ টাকা
- আইকিউএয়ার তালিকায় ঢাকার হতাশার খবর
- ডিএসএইচ গার্মেন্টসের আর্থিক ফল প্রকাশ
- বাংলাদেশ–ভারত লড়াইয়ে উত্তাপ সর্বোচ্চে
- "শেখ হাসিনার রায় কার্যকর হবে না"
- সাতক্ষীরা–৩ এ কাজী আলাউদ্দিনের ধানের শীষে ভোটের আহ্বান
- মতিঝিল-পল্টনের আসনে হেভিওয়েট বনাম নবাগত: আলোচনায় ঢাকা-৮
- ধানমন্ডিতে পুলিশের সামনেই জোড়া বিস্ফোরণ!
- ২৮ নেতার বহিষ্কারাদেশ তুলে নিল বিএনপি, রিজভীর বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণা
- নন-এমপিও শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি নিয়ে 'সুখবর' দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা
- হাসিনার মৃত্যুদণ্ড: আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী?
- পেট ফাঁপা ও গ্যাসে ভুগছেন? মাত্র ১১ দিনেই স্বস্তি মেলার উপায়
- IELTS ছাড়াই অস্ট্রিয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ, সাথে সম্পূর্ণ ফ্রি স্কলারশিপ
- তারকাদের বাদ দিয়েই বাংলাদেশের মুখোমুখি ভারত, কোচের কড়া সিদ্ধান্তে তোলপাড়
- হাসিনার রায় নিয়ে 'সতর্ক' প্রতিক্রিয়া ভারতের, জানাল নিজেদের অবস্থান
- অদ্ভুত ধাতব বস্তু, রহস্যময় সংকেত: মারিয়ানার অন্ধকার গহ্বরে চীনের 'ফেন্টোজে' কী দেখল?
- সাময়িক আশ্রয় কি স্থায়ী হচ্ছে? হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের নতুন ভাবনা
- চাউশেস্কু থেকে সাদ্দাম: ইতিহাসে যে শাসকদের পতন হয়েছিল মৃত্যুদণ্ডে
- শুধু ব্যক্তি নয়, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার চাই: নাহিদ ইসলাম
- শাহজালাল বিমানবন্দরে হঠাৎ ধোঁয়া, বহির্গমন টার্মিনালে আতঙ্ক
- আমরা রায়ে খুশি, তবে...হাসিনাদের দণ্ড নিয়ে যা বলল সাঈদের বাবা
- মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি হাসিনা-কামালের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
- হাসিনাকে ফেরত দিন, প্রতিবেশীর 'প্রথম দায়িত্ব' নিয়ে যা বলল জামায়াত
- বিবাহবার্ষিকীর দিনেই মৃত্যুদণ্ডের রায় পেলেন শেখ হাসিনা
- পাশের দেশ অশান্তি পাকাচ্ছে, রায় পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
- আল জাজিরা থেকে এনডিটিভি, বিশ্বজুড়ে যেভাবে প্রচার হলো হাসিনার রায়
- ১৭ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১৭ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১৭ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- যে যে মামলায় ফাঁসির রায় হলো হাসিনা-কামালের
- হাসিনার পর আসাদুজ্জামান খান কামালেরও মৃত্যুদণ্ডের আদেশ
- দোষ স্বীকারেও এড়াতে পারলেন না সাজা: সাবেক আইজিপির ৫ বছর কারাদণ্ড
- পতন থেকে মৃত্যুদণ্ড: ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক রায়
- শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে 'মানবতাবিরোধী অপরাধের' সত্যতা মিলেছে: ট্রাইব্যুনাল
- ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই, এটি দেশ রক্ষার নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা
- রেড জুলাই নামে ৩২ নম্বরে বুলডোজার, শাওন বললেন 'রাজাকার বাহিনী'
- খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই': রায় ঘোষণাকে ঘিরে টিএসসিতে শিক্ষার্থীদের ভিড়
- ৮ হাজার পৃষ্ঠার প্রমাণ, হাজারো নিহত–আহত: শেখ হাসিনাদের বিরুদ্ধে রায়ে কী ঘটতে যাচ্ছে? সরাসরি দেখুন!
- হাসিনার রায় ঘিরে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সতর্ক বার্তা
- ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে বুলডোজার মিছিল-ঘটছে কী?
- জুলকারনাইন: দুই শিং–ওয়ালা বাদশার রহস্য
- এবি ব্যাংকের পারপেচুয়াল বন্ডের রেটিং ঘোষণা
- মাগুরাপ্লেক্সের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন
- মনোস্পুলের ইপিএসে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি
- সিলেট টেস্টে আয়ারল্যান্ড অলআউট ২৮৬ রানে, দুর্দান্ত সূচনায় বাংলাদেশ
- সাদমানের পর মুমিনুলকে নিয়ে জয়ী রথ বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে রেকর্ড জুটি
- মামলার রেশ না কাটতেই তিশার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের অভিযোগ
- নেপালের বিপক্ষে দুর্দান্ত হামজা জোড়া গোলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিল বাংলাদেশ
- বাংলাদেশ নেপাল ম্যাচের আগে জেনে নিন হেড টু হেড পরিসংখ্যানে কারা চালকের আসনে
- অ্যাকশন, রিভেঞ্জ আর সিক্রেট মিশন: দেখুন সেরা ১০ কোরিয়ান অ্যাকশন সিরিজ!
- আজকের খেলাধুলা সূচি
- জুলাই অভ্যুত্থান মামলা শেখ হাসিনাসহ ৩ আসামির রায়ের তারিখ ঘোষণা
- আজ বিশ্ব ব্যাচেলর দিবস: একাকীত্ব নয়, স্বাধীনতার উৎসব
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বড় ধরনের পতন: ৩৮৪ কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১৫টি বেড়েছে
- আজ রাজধানীতে রাজনৈতিক যেসব কর্মসূচি, কোথায় কী হচ্ছে জেনে নিন
- লকডাউনের দিনেও দোকান-শপিংমল খোলা থাকবে: মালিক সমিতি
- রোনালদোর শেষ খেলার পরিকল্পনা নিয়ে বড় ঘোষণা
- কাদিয়ানী ইস্যু ও পাকিস্তানি সংযোগ: বাংলাদেশের ধর্মীয় রাজনীতিতে বিপজ্জনক অস্থিরতার ইঙ্গিত
- শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘিরে ঢাকা জুড়ে সতর্কতা








