‘আমরা রাজা নই, আমরা জনগণ’: যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল জনতা

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যজুড়ে শনিবার লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর ও বিতর্কিত নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। “নো কিংস” বা ‘রাজা নয়, গণতন্ত্র’ শীর্ষক এই প্রতিবাদ সমাবেশ দেশজুড়ে গণতন্ত্র রক্ষার আহ্বানে পরিণত হয়, যা রিপাবলিকানরা ব্যঙ্গ করে “হেইট আমেরিকা র্যালি” বলে অভিহিত করেছে।
আয়োজকেরা আশা করেছিলেন, নিউইয়র্ক থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস পর্যন্ত দেশজুড়ে অনুষ্ঠিত এসব সমাবেশে লাখো মানুষ যোগ দেবেন। ছোট শহরগুলোতেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, এমনকি ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের দ্বিতীয় বাসভবনের কাছেও মানুষ জড়ো হয়।
ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস ভবনের সামনে হাজারো মানুষ স্লোগান দেন, “এটাই গণতন্ত্রের রূপ!” এবং “হে হে, হো হো, ট্রাম্পকে এখনই যেতে হবে!” অনেকের হাতে ছিল আমেরিকার পতাকা, যার একটি উল্টোভাবে ওড়ানো হয়—বিপদের সংকেত হিসেবে।
বিক্ষোভকারীদের হাতে থাকা রঙিন ও ব্যঙ্গাত্মক প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল “গণতন্ত্র রক্ষা করো,” “আইস বাতিল করো,” এবং “আমরা রাজা নই—আমরা জনগণ।” ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসনবিরোধী নীতি, সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলা, ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি কটাক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
নিউইয়র্কের ব্রডওয়েতে হাঁটতে হাঁটতে ৬৯ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কলিন হফম্যান বলেন, “আমি কখনও ভাবিনি আমার জীবদ্দশায় দেখব, আমেরিকা তার গণতন্ত্র হারাচ্ছে। এটা এক গভীর সংকট—এই সরকারের নিষ্ঠুরতা ও কর্তৃত্ববাদ আমাকে ঘরে বসে থাকতে দিচ্ছে না।”
লস অ্যাঞ্জেলেসে প্রতিবাদকারীরা ট্রাম্পের ডায়াপার পরা বিশাল এক বেলুন উড়ান, যা পুরো শহরের মনোযোগ কাড়ে।
‘আমি রাজা নই’
শনিবারের বিক্ষোভে ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া ছিল তুলনামূলক নীরব। তবে তার প্রচার দল সামাজিক মাধ্যমে একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) দ্বারা তৈরি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে ট্রাম্পকে রাজকীয় পোশাক ও মুকুট পরিহিত অবস্থায় দেখানো হয়। পরে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “ওরা আমাকে রাজা বলছে, কিন্তু আমি রাজা নই।”
তবে রিপাবলিকান নেতৃত্ব বিক্ষোভকারীদের কড়া সমালোচনা করে। স্পিকার মাইক জনসন মন্তব্য করেন, “এই সমাবেশ আসলে মার্কসবাদী, সমাজতান্ত্রিক, অ্যানার্কিস্ট আর হামাসপন্থীদের জোট—যারা আমেরিকার ঐক্যের বিরুদ্ধে।”
ওয়াশিংটনে অংশ নেওয়া ৬৩ বছর বয়সী পাওলো এই মন্তব্যকে তীব্র কৌতুকে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, “চারপাশে তাকান—যদি এটা ঘৃণা হয়, তবে ওদের আবার স্কুলে ফিরে যাওয়া উচিত!”
অনেকেই বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিভাজন এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যা আমেরিকার ইতিহাসে নজিরবিহীন। ৩৪ বছর বয়সী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার টনি বলেন, “ডানপন্থীরা যা-ই বলুক, আমাদের তাতে কিছু যায় আসে না। তারা আমাদের ঘৃণা করে, কিন্তু আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।”
গণতন্ত্র বনাম কর্তৃত্ববাদ
শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে কানাডা, স্পেনের মালাগা ও সুইডেনের মালমোতেও। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের (ACLU) পরিচালক ডিয়ার্ড্রে শিফেলিং বলেন, “আমরা এই বার্তাই দিতে চাই—আমরা একটি সমঅধিকারভিত্তিক দেশ, যেখানে আইন সবার জন্য সমান। আমরা নীরব থাকব না।”
ইনডিভিজিবল প্রজেক্টের সহপ্রতিষ্ঠাতা লিয়া গ্রিনবার্গ ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করে বলেন, “এটা এক ক্লাসিক কর্তৃত্ববাদী কৌশল—হুমকি, অপবাদ, মিথ্যাচার, আর ভয় দেখিয়ে জনগণকে চুপ করিয়ে রাখা।”
ওয়াশিংটনের এক বিক্ষোভকারী পাওলো বলেন, “আমি ব্রাজিলে সামরিক একনায়কত্বের সময় বড় হয়েছি। এখন আমেরিকায় সেই সময়েরই প্রতিচ্ছবি দেখছি—ব্যক্তিপূজা, দমননীতি আর স্বাধীনতার ওপর আঘাত।”
বিক্ষোভে যোগ দিয়ে প্রগতিশীল সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স সতর্ক করে বলেন, “আমাদের সামনে এমন এক প্রেসিডেন্ট আছেন যিনি নিজের হাতে আরও বেশি ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করতে চান, ধনকুবের বন্ধুদের সঙ্গে মিলে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছেন।” তার বক্তব্যে ‘অলিগার্ক’ শব্দটি উচ্চারিত হতেই জনতা তীব্র শ্লোগানে প্রতিক্রিয়া জানায়।
১৬ বছর বয়সী আইজাক হার্ডার বলেন, “তারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমন করছে, সেনাবাহিনী পাঠাচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে গ্রেপ্তার করছে। এটা এক ফ্যাসিবাদী পথের সূচনা—আমরা তা থামাতে চাই।”
“নো কিংস” আন্দোলন আজ যুক্তরাষ্ট্রে শুধু ট্রাম্পবিরোধী প্রতিবাদ নয়, বরং গণতন্ত্রের অস্তিত্ব রক্ষার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
-হাসানুজ্জামান
রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতি: দোহায় পাকিস্তান-আফগান সমঝোতা
দোহায় আলোচনার পর পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে চলমান সংঘাত থামাতে ‘তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’ চুক্তিতে পৌঁছেছে—রবিবার ভোরে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। সম্প্রতি পাকিস্তানের বিমান হামলায় অন্তত ১০ আফগান নাগরিক নিহত হওয়ার পর এই চুক্তি উভয় দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা প্রশমনের আশার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এর আগে, কাবুল ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে। ওই অস্থায়ী বিরতি এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা সীমান্ত সংঘর্ষ সাময়িকভাবে থামিয়েছিল, যেখানে উভয় দেশের সেনা ও বেসামরিক নাগরিকসহ ডজনখানেক মানুষ নিহত হয়।
ইসলামাবাদের নিরাপত্তা সূত্র জানায়, পাকিস্তানের বিমান হামলার লক্ষ্য ছিল আফগান সীমান্ত অঞ্চলে সক্রিয় এক সশস্ত্র গোষ্ঠী—যা পাকিস্তান তালেবান (টিটিপি)-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দাবি করা হয়। পাকিস্তানি আধাসামরিক বাহিনীর ওপর হামলার প্রতিশোধ হিসেবেই এই অভিযান চালানো হয়।
শনিবার কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দোহায় অনুষ্ঠিত আলোচনায় দুই পক্ষ উত্তেজনা নিরসনের পদক্ষেপ নিয়ে একমত হয়। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “উভয় দেশ তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতের জন্য যৌথ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে রাজি হয়েছে।”
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিশ্চিত ও বাস্তবায়ন যাচাইয়ের লক্ষ্যে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই উভয় পক্ষের মধ্যে পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ দোহা বৈঠকে অংশ নিয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পরবর্তী বৈঠক আগামী ২৫ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হবে। সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে তিনি বলেন, “আফগান ভূখণ্ড থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ হবে। উভয় প্রতিবেশী দেশ একে অপরের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে।”
ইসলামাবাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, দোহা বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল “আফগান ভূখণ্ড থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরিচালিত সীমান্ত সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করা এবং পাক-আফগান সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।”
এই আলোচনায় পাকিস্তান প্রতিনিধি দলে ছিলেন গোয়েন্দা প্রধান জেনারেল আসিম মালিক, আর আফগানিস্তানের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন প্রতিরক্ষা প্রধান মোহাম্মদ ইয়াকুব।
দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তা ইস্যুই মূল সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু। পাকিস্তান দাবি করে, আফগানিস্তান তার ভূখণ্ডে পাকিস্তানবিরোধী জঙ্গিগোষ্ঠী—বিশেষ করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)—কে আশ্রয় দিচ্ছে। তবে কাবুল এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সীমান্ত উত্তেজনা শুরু হয় ১১ অক্টোবর, যখন আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির মুতাকির ভারতের ঐতিহাসিক সফরের কয়েকদিন পর কাবুলে পরপর বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর তালেবান দক্ষিণ সীমান্তে পাকিস্তানবিরোধী অভিযান শুরু করে, যার জবাবে ইসলামাবাদ কঠোর প্রতিক্রিয়ার ঘোষণা দেয়।
দোহা আলোচনার আগে এক জ্যেষ্ঠ তালেবান কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানান, পাকিস্তান শুক্রবার রাতে আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে তিনটি স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেয় কাবুল।
পাকতিকা প্রদেশের এক হাসপাতাল কর্মকর্তা জানান, ওই হামলায় ১০ বেসামরিক নাগরিক—যার মধ্যে দুই শিশু ও তিনজন ক্রিকেট খেলোয়াড়—নিহত হন, আহত হন আরও ১২ জন।
তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, তাদের বাহিনীকে “আলোচনাকারী দলের মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে” যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় স্পিন বোলদাকের এক মন্ত্রী সাদুল্লাহ তোরজান বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের দিকে ফিরছে। তবে যুদ্ধের ভয় এখনো রয়ে গেছে, মানুষ আতঙ্কে আছে।”
দোহা চুক্তি সীমান্তে সংঘর্ষের তাৎক্ষণিক অবসান ঘটালেও, দুই দেশের মধ্যে অবিশ্বাস ও নিরাপত্তা হুমকি যে এখনো গভীরভাবে প্রোথিত—তা পরিষ্কার। তবু এই যুদ্ধবিরতি দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে শান্তির আশায় এক ক্ষীণ আলো জ্বালিয়েছে।
-আলমগীর হোসেন
ভারতের বিরুদ্ধে নতুন সামরিক হুমকি দিলেন পাক সেনাপ্রধান
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনির ভারতের বিরুদ্ধে নতুন করে সামরিক হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের কার্যকর জবাব ভারতের ‘ভৌগোলিক যুদ্ধক্ষেত্রের ভুল ধারণা’ ভেঙে ফেলতে পারে। পারমাণবিক অস্ত্রের উল্লেখ এবং ইসলামাবাদের সামরিক ক্ষমতা নিয়ে করা তার মন্তব্যে কূটনৈতিক মহলে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
অসীম মুনিরের হুঁশিয়ারি
কাকুলে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে (পিএমএ) ভাষণে অসীম মুনির পারমাণবিক পরিবেশে যুদ্ধের কোনো স্থান নেই দাবি করলেও, পরের বাক্যেই সতর্ক করে দেন। তিনি বলেন:
“যদি নতুন করে শত্রুতার ঢেউ শুরু হয়, তাহলে পাকিস্তান উদ্যোগীদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি প্রতিক্রিয়া জানাবে। আমাদের যুদ্ধের সক্ষমতা বেড়েছে। আমাদের অস্ত্র ব্যবস্থার নাগাল এবং প্রাণঘাতীতা ভারতের ভৌগোলিক বিশালতার ভুল ধারণাকে ভেঙে ফেলবে।”
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, পরবর্তী উত্তেজনা বৃদ্ধির দায়ভার সরাসরি ভারতের ওপর বর্তাবে, যা শেষ পর্যন্ত সমগ্র অঞ্চল এবং তার বাইরেও বিপর্যয়কর পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
পাল্টাপাল্টি হুমকির প্রেক্ষাপট
সম্প্রতি ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছিলেন, সীমান্তে কোনো রকম দুঃসাহস দেখালে তার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের ইতিহাস ও ভূগোল বদলে যেতে পারে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই দেশটির সেনাবাহিনীর চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, পাকিস্তানের যে কোনো ধরনের পদক্ষেপের জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনী আর সংযম দেখাবে না।
এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে একের পর এক হুমকি আসতে থাকে। অক্টোবরের শুরুতে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছিলেন, এবার ভারতকে তাদের যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষের নিচেই কবর দেওয়া হবে। পাল্টাপাল্টি এমন হুমকিতে আঞ্চলিক উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে।
যুদ্ধবিরতির ভয়াবহ লঙ্ঘন: গাজায় এক ফিলিস্তিনি পরিবারের ১১ সদস্য নিহত
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী একটি ফিলিস্তিনি পরিবারের ১১ জন সদস্যকে হত্যা করেছে। আট দিন আগে কার্যকর হওয়া ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির এটি সবচেয়ে ভয়াবহ লঙ্ঘন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
হামলার বিবরণ ও হতাহত
গাজার নাগরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের মতে, শুক্রবার সন্ধ্যায় গাজা শহরের জেইতুন এলাকায় আবু শাবান পরিবারকে বহনকারী একটি বেসামরিক গাড়িতে হামলা হয়। ইসরায়েলি বাহিনী ট্যাংক থেকে শেল ছুড়ে এই হামলা চালায়।
নিহত: বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, নিহতদের মধ্যে সাত শিশু এবং তিনজন নারী ছিলেন। পরিবারটি যখন তাদের বাড়ি পরিদর্শনের জন্য পৌঁছানোর চেষ্টা করছিল, তখন ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গুলি চালালে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বাসালের মন্তব্য: বাসাল বলেন, “তাদের সতর্ক করা যেতে পারত অথবা ভিন্নভাবে মোকাবিলা করা যেত। যা ঘটেছে তা নিশ্চিত করে যে দখলদাররা এখনো রক্তপিপাসু এবং নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ করার ওপর জোর দেয়।”
হামাসের দাবি: হামাস এই ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে এবং নিন্দা জানিয়ে বলেছে, পরিবারটিকে কোনো যুক্তি ছাড়াই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। গোষ্ঠীটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মধ্যস্থতাকারীদের কাছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলার জন্য ইসরায়েলকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
নোবেল বিজয়ীর প্রশংসা
অন্যদিকে, শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী ভেনেজুয়েলার মারিয়া কোরিনা মাচাদো ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, মাচাদো গাজা যুদ্ধে নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব ও ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। তিনি ফিলিস্তিনি যোদ্ধা দল হামাসকে ‘নিপীড়ক বাহিনী’ উল্লেখ করেন এবং ইরানের শাসনকর্তাদের সমালোচনা করেন। গাজায় জিম্মি মুক্তির ঘটনায় তিনি অভিনন্দনও জানান।
‘এখনই অস্ত্র ত্যাগ নয়’: গাজা পুনর্গঠন ও নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণে অনড় হামাস
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এখনই অস্ত্র ত্যাগ করতে রাজি নয় বলে জানিয়েছেন গোষ্ঠীটির রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য মোহাম্মদ নাজ্জাল। দোহায় বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে তাদের মূল লক্ষ্য হলো গাজা পুনর্গঠন করা এবং তারা অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে চায়।
নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন
নাজ্জাল জানান, হামাস বন্দি বিনিময়, যুদ্ধবিরতি এবং গাজায় ত্রাণ প্রবেশে সম্মতি দিয়েছে, কিন্তু অস্ত্র হস্তান্তর সংক্রান্ত ধারা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং এটি আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারিত হবে।
নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে নাজ্জাল পাল্টা প্রশ্ন করেন:
“এই যে আপনি নিরস্ত্রীকরণের কথা বলছেন, তার মানে কী? অস্ত্রগুলো কাকে, কেন হস্তান্তর করা হবে? ইসরায়েল কি তার পারমাণবিক অস্ত্রগুলো জমা দেবে? কেন ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংসের কথা বলা হয়, অথচ ইসরায়েলকে তা বলা হয় না।”
পুনর্গঠন ও প্রশাসনিক অবস্থান
হামাস নেতা নাজ্জাল বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা পুনর্গঠনের জন্য তারা পাঁচ বছরের জন্য দীর্ঘমেয়াদে যুদ্ধবিরতিতে রাজি। তবে এরপর কী হবে, সে বিষয়ে নিশ্চয়তা নির্ভর করছে ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ‘আশা ও দিগন্ত’ দেখানোর ওপর। তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সময়ে গাজায় প্রযুক্তিনির্ভর বেসামরিক প্রশাসন থাকলেও, নিরাপত্তার জন্য হামাস মাঠে উপস্থিত থাকবে।
মৃত্যুদণ্ড প্রসঙ্গে: সম্প্রতি গাজায় প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়ে নাজ্জাল বলেন, এগুলো যুদ্ধকালীন ‘ব্যতিক্রমী ঘটনা’ এবং নিহতরা হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত ছিলেন।
ফিলিস্তিনের পুনর্গঠন পরিকল্পনা
এদিকে, ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফা যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি পুনর্গঠন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, যার আনুমানিক ব্যয় ৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই প্রকল্পে ১৮টি খাতের ৫৬টি উপ-প্রোগ্রাম অন্তর্ভুক্ত থাকবে। মুস্তাফা জানান, এই পুনর্গঠন কার্যক্রম তিন ধাপে চলবে।
অন্যদিকে, হামাসের দেরিতে মরদেহ হস্তান্তরের কারণে স্থগিত হওয়া রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং আগামী রোববার নাগাদ খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল।
সূত্র: রয়টার্স
যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় গোলাবর্ষণ
‘ফিলিস্তিনের ম্যান্ডেলা’খ্যাত মারওয়ান বারগুতিকে ইসরায়েলের কারাগারে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। এমনকি কারারক্ষীরা তার ওপর হামলা চালিয়েছে, যার ফলে তিনি কারাগারের মধ্যেই অচেতন হয়ে পড়েন বলে বারগুতির পরিবার অভিযোগ করেছে। তবে ইসরায়েলের প্রিজন সার্ভিস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কারাগারে নির্যাতনের অভিযোগ
বারগুতির ছেলে বিবিসিকে জানিয়েছেন, তারা মুক্তি পাওয়া পাঁচ পৃথক বন্দির কাছ থেকে বারগুতিকে নির্যাতনের কথা জানতে পেরেছেন। বারগুতিকে প্রহরীরা হাতকড়া পরিয়ে নির্যাতন করে।
শারীরিক আঘাত: তাকে মেঝেতে ফেলে দিয়ে লাথি মেরে আহত করা হয়। বারগুতির মাথা ও বুকে আঘাত করা হয়েছে এবং পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে গেছে।
পরিণতি: নির্যাতনে তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা অচেতন ছিলেন এবং তার শরীর থেকে রক্তপাত হয়েছে।
বারগুতিকে ইসরায়েল পাঁচবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে এবং বর্তমানে তিনি কারাগারে দীর্ঘদিন ধরে বন্দী আছেন।
বারগুতির রাজনৈতিক গুরুত্ব
১৯৫৯ সালে রামাল্লাহর কাছে কোবার গ্রামে জন্মগ্রহণকারী বারগুতি কিশোর বয়সে ফাতাহ আন্দোলনে যোগ দেন এবং ২০০০ সালের গোড়ার দিকে তিনি দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতাদের একজন ছিলেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বারগুতির প্রভাব ফাতাহ আন্দোলন ছাড়িয়ে সমগ্র ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপৃত। জনমত জরিপেও তিনি ফিলিস্তিনের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হওয়ার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রার্থী। এ কারণেই তাঁকে মুক্তি দিতে ভয় পায় ইসরায়েল।
গাজা ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি
যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ: আল জাজিরা জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখনও উত্তর গাজার শুজাইয়ার পূর্বাঞ্চলে গোলাবর্ষণ করছে। গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে প্রায় দুই ডজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ত্রাণ সংকট: জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানায়, যুদ্ধবিরতির এক সপ্তাহ পরও গাজার বাসিন্দাদের মধ্যে খাদ্যাভাব ও হাহাকার রয়েই গেছে। এক কেজি টমেটোর দাম এখন ১৫ ডলার।
আন্তর্জাতিক বাহিনী: রয়টার্স জানিয়েছে, ফ্রান্স ও ব্রিটেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে আগামী দিনে গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছে।
পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপ: ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানে হাঙ্গেরিতে বৈঠকের সিদ্ধান্ত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার ফোনালাপে 'অসাধারণ অগ্রগতি' হয়েছে। ইউক্রেন ইস্যুতে তারা হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে মুখোমুখি আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছেন। গত আগস্টে আলাস্কায় বৈঠকের পর এই প্রথম ফোনে কথা বললেন তারা।
আলোচনার সারসংক্ষেপ ও পরবর্তী পদক্ষেপ
ট্রাম্প দাবি করেছেন, পুতিনের সঙ্গে এই ফোনালাপটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। ক্রেমলিনও বলেছে, অত্যন্ত স্পষ্ট এবং বিশ্বাসযোগ্য ফোনালাপের পরে অবিলম্বে শীর্ষ সম্মেলনের কাজ শুরু হবে।
বৈঠক: ট্রাম্প জানান, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠক হতে পারে। ওয়াশিংটন ও মস্কোর প্রতিনিধিরা আগামী সপ্তাহে একটি অনির্দিষ্ট স্থানে দেখা করবেন। মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
জেলেনস্কিকে অবহিতকরণ: ট্রাম্প বলেন, আজ শুক্রবার তিনি পুতিনের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে অবহিত করবেন। শুক্রবার জেলেনস্কি হোয়াইট হাউসে সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ট্রাম্পের বিশ্বাস: ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, “আমি বিশ্বাস করি, আজকের ফোনালাপে বড় অগ্রগতি হয়েছে,” এবং ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হলে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা হবে।
টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ও ইউক্রেনের প্রতিক্রিয়া
জেলেনস্কি এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন এবং বলেছেন, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের কথা শুনেই মস্কো দ্রুত সংলাপে ফিরতে চায়। তবে পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, “আমরা আমাদের টমাহকের মজুদ শেষ করতে পারি না... তাই আমি জানি না, আমরা কী করতে পারি।”
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওলগা স্টেফানিশিনা বলেন, পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপের ঘণ্টাখানেক আগেই রাশিয়া ইউক্রেনে রাতভর হামলা চালিয়েছে, যা "প্রকৃত শান্তির প্রতি মস্কোর মনোভাবকে উন্মোচিত করে"। তিনি বলেন, এই হামলার একমাত্র কার্যকর জবাব হলো চাপ—কঠোর নিষেধাজ্ঞা এবং শক্তিশালী বিমান সরবরাহ।
আঞ্চলিক সমর্থন ও কূটনৈতিক টানাপোড়েন
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান এক্স-এ (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, বুদাপেস্টে পরিকল্পিত বৈঠক শান্তিপ্রিয় মানুষের জন্য দারুণ খবর। তিনি ইউরোপকে অহংকার ও যুদ্ধের আগুনে ঘি ঢালার পরিবর্তে রাশিয়ার সঙ্গে সংলাপে যাওয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে, বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্রাম্পের একটি দাবিকে ঘিরে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। ট্রাম্প আগের দিন বলেছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করার আশ্বাস দিয়েছেন, যা ভারত নাকচ করে দিয়েছে।
রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ? ট্রাম্পের দাবির পর দিল্লি নীরবতা ভাঙল
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে যাচ্ছে বলে যে দাবি করেছিলেন, ভারত তা নাকচ করে দিয়েছে। ট্রাম্পের মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর আজ বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে।
ফোনালাপ ও ট্রাম্পের দাবি
সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল স্পষ্ট করে বলেন:
“আমার জানা মতে, গতকাল (বুধবার) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে কোনো ফোনালাপ হয়নি।”
হোয়াইট হাউসে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল না কেনার ব্যাপারে নরেন্দ্র মোদি তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন এবং তেল কেনার প্রক্রিয়াটি শিগগিরই শেষ করবে ভারত।
জ্বালানি নীতিতে ভারতের অবস্থান
ট্রাম্পের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এর আগে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে জ্বালানি খাতে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, জ্বালানি খাতে অস্থিরতা চলায় ভারত নিজেদের ভোক্তার স্বার্থ অগ্রাধিকার দেবে এবং আমদানি নীতিও এই লক্ষ্য ধরে পরিচালিত হবে।
উল্লেখ্য, ভারত রাশিয়ার তেলের বড় ক্রেতা। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনের ব্যয় এই তেল বিক্রির অর্থ থেকে আসে। তাই ভারতকে তেল কেনায় নিরুৎসাহিত করে রাশিয়ার অর্থনীতিতে চাপ তৈরি করতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন। বুধবারের ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প চীন ও জাপানকেও রাশিয়ার থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি বন্ধ করতে চাপ দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি: গাজায় ফের অভিযান চালাতে পারে ইসরায়েল
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস যদি যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত মানতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ইসরায়েলকে নতুন করে গাজায় সামরিক অভিযান চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বার্তাসংস্থা আনাদোলু এই তথ্য জানিয়েছে।
নিজেকেই শান্তি-রচয়িতা হিসেবে দাবি ট্রাম্পের
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “হামাস নিয়ে যা ঘটছে, তা খুব দ্রুতই ঠিক হয়ে যাবে।”
নিঃশর্ত সমর্থন: যদি হামাস নিরস্ত্র হতে অস্বীকার করে, এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি বললেই ইসরায়েল আবার রাস্তায় ফিরে যাবে। ইসরায়েল যদি চায়, তারা ওদের একেবারে গুঁড়িয়ে দিতে পারে।” তিনি আরও দাবি করেন, “আমি-ই ওদের (ইসরায়েল) এখন পর্যন্ত থামিয়ে রেখেছি।”
জিম্মি মুক্তি: ট্রাম্প জানান, জীবিত ২০ জন ইসরায়েলি বন্দির মুক্তিই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে হামাসকে অবশ্যই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নিহত অন্যদের মরদেহ ফেরত দিতে হবে এবং অস্ত্র জমা দিতে হবে।
হামাসের ব্যাখ্যা
এদিকে হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডস এক বিবৃতিতে জানায়, তারা চুক্তি অনুযায়ী সব জীবিত বন্দিকে হস্তান্তর করেছে, পাশাপাশি যেসব মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, সেগুলোও দিয়েছে। হামাস জানায়, বাকি মরদেহগুলো উদ্ধার করতে ‘বিশেষ সরঞ্জাম ও দীর্ঘ প্রচেষ্টা প্রয়োজন’ এবং তারা এই কাজ সম্পন্ন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার থেকে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়েছে। এতে হামাস ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি ও ৮ জনের মরদেহ হস্তান্তর করে, বিনিময়ে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পায়।
পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি
দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী মুসলিম দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তান বুধবার একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ। এর আগে সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও বিমান হামলায় এক ডজনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটাই দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।
আকাশপথে হামলা ও ধ্বংসের দাবি
সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও উত্তেজনার মধ্যেই আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল ও কান্দাহার প্রদেশে বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন পিটিভি নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী আফগানিস্তানের ভেতরে ‘নির্ভুল হামলা’ চালিয়েছে, যা আফগান তালেবানের হামলার পাল্টা জবাব হিসেবে করা হয়েছে।
সামরিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, এই হামলায় আফগান তালেবানের ‘বাটালিয়ন নম্বর ৪’ ও ‘বর্ডার ব্রিগেড নম্বর ৬’ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং ডজনখানেক আফগান ও বিদেশি যোদ্ধা নিহত হয়েছে। পরবর্তীতে একটি আপডেটে পিটিভি নিরাপত্তা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, কাবুলেও হামলা চালানো হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি ও পাল্টাপাল্টি দাবি
যুদ্ধবিরতি: পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুই দেশ ৪৮ ঘণ্টার একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে, যা বুধবার গ্রিনিচ মান সময় (জিএমটি) দুপুর ১টা থেকে কার্যকর হয়েছে।
দাবির ভিন্নতা: ইসলামাবাদ জানায়, আফগান তালেবান সরকারের অনুরোধে এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এসেছে। তবে তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে বলেন, পাকিস্তানের অনুরোধ ও জোরাজুরির ফলে যুদ্ধবিরতি এসেছে।
পাকিস্তানের ক্ষয়ক্ষতি: ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্স (আইএসপিআর) জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী বালুচিস্তান সীমান্তে আফগান তালেবানের একটি হামলা প্রতিহত করেছে। আই এস পি আরের দাবি, আফগান বাহিনীর হামলায় পাকিস্তানি বাহিনীর ২৩ সেনা নিহত ও ২৯ জন আহত হয়েছেন। বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০০-এর বেশি তালেবান ও সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলেও জানানো হয়।
হামলার কারণ: আফগানিস্তান দাবি করেছে যে তারা প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলেছে, তারা যেকোনো বহিরাগত আগ্রাসনের জবাব দেওয়ার সম্পূর্ণ সক্ষমতা ও প্রস্তুতি রাখে।
পাঠকের মতামত:
- ‘আমরা রাজা নই, আমরা জনগণ’: যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল জনতা
- রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতি: দোহায় পাকিস্তান-আফগান সমঝোতা
- শাহজালালে আগুনে ছাই ব্যবসায়িক আশা: বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির আশঙ্কা
- ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- কার্গো ভিলেজে আগুন: ক্ষতির আশঙ্কা বিলিয়ন ডলার
- ভারতের বিরুদ্ধে নতুন সামরিক হুমকি দিলেন পাক সেনাপ্রধান
- সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডগুলো জননিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি: তারেক রহমান
- পায়ে সামান্য ব্যথা বা ঘা: নীরব ঘাতক ‘রক্তনালির ব্লকের’ সংকেত নয়তো?
- রাতে ফ্লাইট চালুর চেষ্টা চলছে: কার্গো ভিলেজের আগুন পরিদর্শনে উপদেষ্টা
- রিশাদ ম্যাজিক স্পিনে উড়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
- ঢাকার বিমানবন্দর অচল: ভয়াবহ আগুনে পুড়ছে কার্গো ভিলেজ, ৫ ঘণ্টায়ও নেভেনি
- ৪০-৪৫ দিনের রেণুবিন্দু: বিজ্ঞান বনাম কোরআন, গর্ভের শিশুর নিয়তি কখন লেখা হয়?
- চিকিৎসা বিজ্ঞানে বড় সাফল্য,রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখবে কৃত্রিম কিডনি
- সিইসি: ‘বিগত দিনের মতো নির্বাচন হবে না, হবে সম্পূর্ণ আলাদা’
- বিলাসবহুল জীবন থেকে জনকল্যাণ: দুবাইয়ের রাজকন্যা শেখ মাহরার যত কীর্তি
- সিন্ধু সভ্যতা থেকে পরমাণু পাকিস্তান: প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ভূরাজনীতি, ধর্ম ও টিকে থাকার পূর্ণাঙ্গ আখ্যান
- রক্ত দেওয়ার সময় আমরা, ক্ষমতার সময় অন্যেরা: হাসনাত আবদুল্লাহ
- শখের পোশাক বারবার ধোয়ার পরেও উজ্জ্বল থাকবে যে ৮ উপায়ে
- টেলিগ্রাম নিয়ে ভয়াবহ তথ্য! আপনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কি ঝুঁকিতে?
- জুলাই সনদ সইয়ের মতো অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগোই: মির্জা ফখরুল
- অভিভাবকতন্ত্রের প্রলোভন: জেনারেল ভূঁইয়ার বয়ান ও গণতন্ত্রের ঘড়ি থামানোর বিপদ
- আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা: বাড়ছে আগুনের তীব্রতা,সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিমান
- যুদ্ধবিরতির ভয়াবহ লঙ্ঘন: গাজায় এক ফিলিস্তিনি পরিবারের ১১ সদস্য নিহত
- বদহজম ও গ্যাসের সমস্যা? মুক্তি দেবে এই ৮টি ঘরোয়া টোটকা
- মাইগ্রেনের সমস্যা: যে ৬টি অভ্যাস আজই আপনাকে পরিবর্তন করতে হবে
- বয়স বাড়ার ছাপ: ৫টি অভ্যাস যা আপনার ত্বক ও চুলকে রাখবে তরতাজা
- ৪ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামছেন ফেল করা শিক্ষার্থীরা
- শাহজালাল বিমানবন্দরে কার্গো ভিলেজে আগুন
- ছবিতে ব্যাঙ না ঘোড়া? আপনি কেমন মানুষ—এই ছবিই দেবে উত্তর!
- আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ৭ জেলায় বজ্রসহ ঝড়ের পূর্বাভাস
- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বিক্ষোভ: ৩ দফা দাবিতে হাইকোর্টের সামনে সড়ক অবরোধ
- ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে শুরুতেই ধাক্কা,ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ
- ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বলার তীব্র নিন্দা এনসিপি’র
- হতাশা কাটিয়ে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি বাংলাদেশ
- ‘এখনই অস্ত্র ত্যাগ নয়’: গাজা পুনর্গঠন ও নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণে অনড় হামাস
- এনসিপি’র স্বাক্ষর না করা বিচক্ষণতার অভাব: ফখরুল
- যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় গোলাবর্ষণ
- কঠিন পরিণতির মুখোমুখি শেখ হাসিনা
- জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর: নতুন বাংলাদেশের অঙ্গীকার নাকি রাজনৈতিক ভারসাম্যের পরীক্ষা?
- ইইউ রাষ্ট্রদূতের প্রশংসা: রাজনৈতিক ঐকমত্যে বাংলাদেশের অগ্রগতি
- শীতকাল আসছে: সুস্থ থাকতে এখনই বর্জন করুন এই ৫টি অভ্যাস
- হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক: যে ৪টি মূল কারণে প্রায় ৯৯% ঝুঁকি বাড়ে
- খালি পেটে এলাচের পানি: যে ৫টি রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
- রাকসুতে নতুন নেতৃত্ব:নবনির্বাচিত জিএস ফিলিস্তিনের নির্যাতিতদের প্রতি উৎসর্গ করলেন বিজয়
- পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপ: ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানে হাঙ্গেরিতে বৈঠকের সিদ্ধান্ত
- ‘জুলাই সনদ’-এর ৫ নম্বর দফা সংশোধনের প্রস্তাব দিলেন সালাহউদ্দিন আহমদ
- জুলাই সনদ স্বাক্ষর জাতীয় ঐক্য নয়, জাতির সঙ্গে প্রতারণা: নাহিদ ইসলাম
- জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তীব্র উত্তেজনা
- ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- বন্ধুরূপী শত্রু: যে ৫টি লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনার বন্ধুত্বের বন্ধন বিপদজনক
- হিটলার কেন ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করেছিলেন? নেপথ্যের কারণ কী?
- বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ভর করে চাঙ্গা রাজধানীর শেয়ারবাজার
- পূর্বাচল প্লট অনিয়ম মামলা: শেখ হাসিনা ও পরিবারের বিরুদ্ধে পাঁচজনের সাক্ষ্য
- ১৩ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- জায়ান-শমিতকে নিয়েই একাদশ, বেঞ্চে বসলেন দলের অন্যতম তারকা
- সাবধান! আপনার হোয়াটসঅ্যাপ কি অন্য কেউ ব্যবহার করছে? বুঝবেন যেভাবে
- শি জিনপিং: সমাজে প্রকৃত সমতা চাইলে নারীর নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে
- খাবার খেয়েই বসে আছেন? এটি হতে পারে ধূমপানের মতোই মারাত্মক অভ্যাস
- মাইগ্রেন কি শুধু মাথাব্যথা? জেনে নিন এর ৫টি ভিন্ন ধরন
- ৪ বার সংশোধন হলো ট্রাইব্যুনাল আইন, যুক্ত হলো ‘নির্বাচনী অযোগ্যতা’ ধারা
- হামাস-ইসরায়েল চুক্তি কার্যকর: ধ্বংসস্তূপের মাঝে ফিরছে ফিলিস্তিনিরা
- আজ বাংলাদেশের বাঁচা-মরার লড়াই, টিভিতে নয় ২৫ টাকায় দেখুন অনলাইনে
- ১৪ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- পরমাণু ইস্যুতে কঠোর ইরান: আইএইএ-এর সঙ্গে চুক্তি স্থগিত, কারণ কী?
- শিক্ষক আন্দোলনের মোড়বদল: ‘লংমার্চ টু যমুনা’ স্থগিত, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা