টিপস

পুরোনো স্মার্টফোনকে নতুন ফোনের মতো দ্রুত করুন ৫টি সহজ উপায়ে

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৫ ১৯:২৩:৪৯
পুরোনো স্মার্টফোনকে নতুন ফোনের মতো দ্রুত করুন ৫টি সহজ উপায়ে
ছবিঃ সংগৃহীত

স্মার্টফোন বর্তমানে আমাদের জীবনের এক অপরিহার্য যন্ত্র। কল বা বার্তা পাঠানো ছাড়াও প্রাত্যহিক কাজ, বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এর ব্যবহার অপরিহার্য। কিন্তু প্রতিদিনের ব্যবহারে স্মার্টফোনে অসংখ্য তথ্য জমা হওয়ায় এবং একাধিক অ্যাপ চালু থাকার ফলে ফোন ধীরগতির হয়ে পড়ে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে অনেকে নতুন ফোন কেনার কথা ভাবেন। তবে সামান্য কিছু পরিবর্তন ও সচেতন ব্যবহারে পুরোনো ফোনটিই আগের মতো গতিশীল করে তোলা সম্ভব।

স্মার্টফোনের গতি বাড়ানোর ৫টি কার্যকর উপায়

১. ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু অ্যাপগুলো নিয়ন্ত্রণ: অনেক অ্যাপ ব্যবহার না করলেও ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে। এই অ্যাপগুলো প্রসেসরে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে, ফলে ফোন ধীরগতির হয় এবং ব্যাটারি দ্রুত ফুরিয়ে যায়। ফোনের সেটিংসে গিয়ে কোন অ্যাপগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে চলবে, তা নির্ধারণ করে দিলে এই চাপ অনেকটাই কমানো সম্ভব।

২. ক্যাশে মেমোরি মুছে ফেলা: অ্যাপ ব্যবহারের সময় সাময়িক ডেটা ক্যাশে মেমোরি হিসেবে ফোনে জমা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই জমা ডেটা বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। ফোনের সেটিংসে বা সিস্টেম লেভেল ক্লিয়ার ক্যাশের সুবিধা ব্যবহার করে ক্যাশে মুছে ফেললে ফোন হালকা হয়ে ওঠে, অ্যাপ চালু ও ব্যবহারে গতি ফেরে।

৩. অব্যবহৃত অ্যাপ সরিয়ে ফেলা: প্রায় সবার ক্ষেত্রেই ঘটে যে প্রয়োজনে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করার পর আর ব্যবহার করা হয় না। এই ধরনের অব্যবহৃত অ্যাপগুলো স্টোরেজ দখল করে রাখে এবং ফোনের গতি কমিয়ে দেয়। ফোনের ফিচারে অব্যবহৃত অ্যাপ শনাক্ত করে সেগুলো মুছে ফেললে স্টোরেজ খালি হয় এবং ফোন দ্রুত হয়।

৪. নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট করা: ফোন নির্মাতারা নিয়মিত অপারেটিং সিস্টেমের আপডেট দেন। এসব হালনাগাদে পারফরম্যান্স উন্নয়ন ও নিরাপত্তাজনিত পরিবর্তন যুক্ত করা হয়। অনেকে ডেটা খরচের কথা ভেবে আপডেট এড়িয়ে যান, যা ফোনের গতি ও স্থিতিশীলতার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই সময়মতো আপডেট ইনস্টল করে নেওয়া জরুরি।

৫. ব্যাটারির ব্যবস্থাপনা: ব্যাটারির সঠিক ব্যবস্থাপনা ফোনের গতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফোনের স্ক্রিন ব্রাইটনেস খুব বেশি থাকলে বা ‘অলওয়েজ অন ডিসপ্লে’র মতো ফিচার চালু থাকলে প্রসেসরের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। ব্যাটারি সেভার মোড চালু রাখা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী উজ্জ্বলতা নিয়ন্ত্রণ করলে প্রসেসরের ওপর চাপ কমে এবং ফোন স্থিতিশীলভাবে কাজ করতে পারে।

নিউজ১৮


২০২৫ সালের জন্য গুগলের ফ্রি অনলাইন কোর্স, ক্যারিয়ার গড়ার হাতছানি

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৬ ২১:৩৫:২২
২০২৫ সালের জন্য গুগলের ফ্রি অনলাইন কোর্স, ক্যারিয়ার গড়ার হাতছানি
ছবি : সংগৃহীত

প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল ২০২৫ ও ২৬ সালের জন্য নতুন ফ্রি অনলাইন কোর্স ঘোষণা করেছে যা বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের জন্য এক বিশাল সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই কোর্সগুলোতে অংশগ্রহণ করার জন্য কোনো ভর্তি বা রেজিস্ট্রেশন ফি প্রয়োজন নেই বলে নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিনা খরচে আইটি ও এআই শেখার সুযোগ

গুগলের মাধ্যমে ১০০ শতাংশ ফ্রি এই অনলাইন কোর্সগুলোতে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আইটি সাপোর্ট ডেটা অ্যানালিটিক্স ডিজিটাল মার্কেটিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়। প্রযুক্তিনির্ভর বর্তমান বিশ্বে নিজেদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে এই কোর্সগুলো অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সেলফ পেসড লার্নিং বা নিজের গতিতে শেখা

এই কোর্সগুলোর অন্যতম বড় সুবিধা হলো সেলফ পেসড শেখার ব্যবস্থা। অর্থাৎ নির্দিষ্ট কোনো ধরাবাঁধা সময় নেই। বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের সুবিধামতো সময়ে এই কোর্সগুলো সম্পন্ন করতে পারবেন। ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই যে কেউ এই বিশ্বমানের প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারবেন।

কারা করতে পারবেন

এই কোর্স গুগল জানিয়েছে এই কোর্সগুলো শুরুয়াতি শিক্ষার্থী এবং পেশাজীবী উভয়ের জন্যই উপযুক্ত। যারা একদম নতুন করে কোনো দক্ষতা অর্জন করতে চান অথবা যারা নিজেদের ক্যারিয়ারকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে চান তাদের সবার জন্যই এই কোর্সগুলো উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এতে কোনো রেজিস্ট্রেশন ফি নেই ফলে আর্থিক চিন্তা ছাড়াই শেখার সুযোগ মিলছে।

সার্টিফিকেট ও ক্যারিয়ার উন্নয়ন

কোর্স সম্পন্ন করলে গুগল থেকে সার্টিফিকেট পাওয়ার সুযোগও রয়েছে তবে এ ক্ষেত্রে প্ল্যাটফর্মের নির্দিষ্ট শর্তাবলী প্রযোজ্য হবে। এই সার্টিফিকেশন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যা সিভি বা রিজিউমে যুক্ত করলে চাকরির বাজারে প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে সহায়তা করবে। গুগলের এই কোর্সের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তের শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীরা নতুন দক্ষতা অর্জন করে নিজেদের ক্যারিয়ারকে আরও সুদৃঢ় করতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

আবেদনের লিঙ্ক:Apply Here


ডিএনএ আসলে কীভাবে কাজ করে, সহজ ব্যাখ্যা জানুন

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৬ ১৩:১১:১৯
ডিএনএ আসলে কীভাবে কাজ করে, সহজ ব্যাখ্যা জানুন
ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবীতে জীবন ধারণের অন্যতম মৌলিক উপাদান হল ডিএনএ বা ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড। এটি প্রতিটি জীবের কোষে পাওয়া জিনগত তথ্যের ভাণ্ডার, যা জীবনের গঠন, বৃদ্ধি, প্রজনন ও বংশগতির নীলনকশা হিসেবে কাজ করে। নতুন গবেষণা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ফলে বিজ্ঞানীরা এখন ডিএনএ সম্পর্কে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় আরও গভীর জ্ঞান অর্জন করেছেন।

ডিএনএ মূলত নিউক্লিওটাইড দিয়ে গঠিত। প্রতিটি নিউক্লিওটাইডে থাকে একটি সুগার অণু (ডিঅক্সিরাইবোজ), একটি ফসফেট গ্রুপ এবং চার ধরনের নাইট্রোজেনসমৃদ্ধ বেস— অ্যাডেনিন (A), থাইমিন (T), গুয়ানিন (G) এবং সাইটোসিন (C)। এই বেসগুলোর নির্দিষ্ট বিন্যাসই গড়ে তোলে জিনগত নির্দেশনা। মানব জিনোমে রয়েছে প্রায় ৩ বিলিয়ন বেজ পেয়ার, যা আমাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন জৈব-প্রক্রিয়া পর্যন্ত সবকিছুর নির্দেশক।

ডিএনএ কোষে প্রোটিন তৈরির নকশা সরবরাহ করে। প্রজননের মাধ্যমে অভিভাবক থেকে সন্তান পর্যন্ত জিনগত বৈশিষ্ট্য সংক্রমিত হওয়ার মূল মাধ্যমও হল এই ডিএনএ। তাই জিনবিজ্ঞানের যেকোনো গবেষণার প্রধান লক্ষ্য থাকে জিনকে শনাক্ত করা, বিশ্লেষণ করা এবং প্রয়োজনে তা পরিবর্তন বা নিয়ন্ত্রণ করা।

ডিএনএর ডাবল–হেলিক্স গঠন আবিষ্কার করেন জেমস ওয়াটসন ও ফ্রান্সিস ক্রিক, যার স্বীকৃতিস্বরূপ তারা ১৯৬২ সালে নোবেল পুরস্কার পান। তবে Rosalind Franklin-এর অসাধারণ এক্স-রে ছবি ছাড়া এই আবিষ্কার অসম্ভব ছিল বলে অনেক গবেষক মনে করেন।

বর্তমানে ডিএনএ সম্পাদনার সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি হল CRISPR। ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে অনুপ্রাণিত এই পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট অংশ কেটে বাদ দেওয়া বা পরিবর্তন করা যায়, যা কৃষি, চিকিৎসা ও জেনেটিক রোগ নিরাময়ে নতুন সম্ভাবনা খুলে দিয়েছে।

এ ছাড়া রিকম্বিন্যান্ট ডিএনএ প্রযুক্তি বিভিন্ন প্রজাতির ডিএনএ যুক্ত করে নতুন জিনগত বৈশিষ্ট্য তৈরি করার সুযোগ দেয়। ক্লোনিং ও সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা জিন আলাদা করে বিশ্লেষণ করতে পারেন এবং তা ভবিষ্যৎ গবেষণায় কাজে লাগাতে পারেন।

ডিএনএ শুধু নিউক্লিয়াসেই সীমাবদ্ধ নয়। মাইটোকন্ড্রিয়া ও ক্লোরোপ্লাস্টেও রয়েছে ছোট বৃত্তাকার "এক্সট্রানিউক্লিয়ার ডিএনএ"। ধারণা করা হয়, এগুলো একসময় স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকা ব্যাকটেরিয়া ছিল, যা বিবর্তনের মাধ্যমে কোষের ভেতরে স্থায়ীভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

জীববিজ্ঞান, চিকিৎসা, কৃষি, এমনকি মহাকাশ গবেষণাতেও ডিএনএ বিশ্লেষণ আজ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। বিজ্ঞানীদের মতে, জিন প্রকৌশলের অগ্রগতি আগামী দশকগুলোতে মানবজীবনের নানা ক্ষেত্রে রূপান্তরমূলক পরিবর্তন আনবে।

সূত্র: ব্রিটানিকা


ব্ল্যাক হোলের ভেতরে আসলে কী ঘটে 

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৩ ১৪:৪৮:১৬
ব্ল্যাক হোলের ভেতরে আসলে কী ঘটে 
ছবি: সংগৃহীত

আধুনিক সাইন্স ফিকশন বহুদিন ধরেই ব্ল্যাক হোলকে সময় ভ্রমণ বা সমান্তরাল মহাবিশ্বে যাওয়ার রহস্যময় দরজা হিসেবে উপস্থাপন করে এসেছে। কিন্তু কাল্পনিক কাহিনি বাদ দিলে প্রকৃত বিজ্ঞান কী বলে? ব্ল্যাক হোল আসলে কী এবং এর ভেতরে কী ঘটে, তা এখনো আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে জটিল প্রশ্নগুলোর একটি।

বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেন, একটি বিশাল তারার মৃত্যু যখন ঘটে, তখন তার কেন্দ্রটি অবিশ্বাস্য গতিতে ভেতরের দিকে ধসে পড়ে। এই ধসের পর তারাটি সুপারনোভা বিস্ফোরণে উড়ে যায়। তবে কেন্দ্রীয় অংশটি ধসে ধসে এমন এক অবস্থায় পৌঁছায়, যা শূন্য আয়তন ও অসীম ঘনত্ব ধারণ করে এটিকেই বলা হয় singularity বা এককত্ব। এই অসম্ভব ঘনত্বই তৈরি করে ব্ল্যাক হোলের ভয়াবহ আকর্ষণ শক্তি।

এই singularity এতটাই শক্তিশালী যে এটি চার-মাত্রার space-time বা স্থান-কালের বুননকেই টেনে বিকৃত করে দেয়। সহজভাবে কল্পনা করলে, একটি সমতল প্লাস্টিক বোর্ডের ওপর ভারী বস্তুর মতো singularity পুরো space-time কাঠামোকে নিচের দিকে টেনে নেয়। ফলে সময় নিজেই ধীর হয়ে যায়। পৃথিবীতে সময় যেমন প্রবাহিত হয়, ব্ল্যাক হোলের কাছে গিয়ে তা সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে চলতে থাকে।

ইভেন্ট হরাইজন যা ব্ল্যাক হোলের প্রান্ত অতিক্রম করার মুহূর্ত থেকে সময় বিপুলভাবে মন্থর হয়ে যায়। ভেতরের দিকে যত এগোনো যায়, সময়ের গতিও তত বিকৃত হতে থাকে। কিছু তত্ত্ব বলছে, কেউ যদি অলৌকিকভাবে এই অংশে টিকে থাকতে পারে, তাহলে সে একই মুহূর্তে অতীত ও ভবিষ্যতের দৃশ্য দেখতে পারে যা বহু জনপ্রিয় সাই-ফাই ধারণার ভিত্তি। যদিও বিজ্ঞান এখনো এই ধারণা পরীক্ষা করার কোনো বাস্তব উপায় খুঁজে পায়নি।

তবে যেটি নিশ্চিত ব্ল্যাক হোলে প্রবেশ করলে কোনো প্রাণী বাঁচতে পারে না। singularity-এর অসম আকর্ষণশক্তি যেকোনো বস্তুকে বিভিন্ন দিকে অসম টানে, ফলে দেহ লম্বা সুতোয় পরিণত হয়, যাকে বিজ্ঞানীরা Spaghettification বলে থাকেন।

ব্ল্যাক হোল শনাক্ত করাই কঠিন, ভেতরে কী ঘটে তা জানা আরও কঠিন। তবু গবেষকেরা মনে করেন, singularity এবং Big Bang তত্ত্বের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মিল রয়েছে যা বোঝায় যে মহাবিশ্বের জন্মও এমন এক singularity থেকেই ঘটতে পারে।


অন্ধেরা কীভাবে শোনায় দক্ষ? উত্তরে ক্রস-মডাল প্লাস্টিসিটি

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৩ ১২:০০:২৯
অন্ধেরা কীভাবে শোনায় দক্ষ? উত্তরে ক্রস-মডাল প্লাস্টিসিটি
ছবি: সংগৃহীত

মানুষের মস্তিষ্কের অসাধারণ অভিযোজন-ক্ষমতাকে ‘ক্রস-মডাল প্লাস্টিসিটি’ বলা হয়। এই প্রক্রিয়ায় এক ইন্দ্রিয়ের ঘাটতি পূরণে মস্তিষ্কের অন্য অঞ্চলগুলো নিজেদের পুনর্গঠন করে নতুনভাবে কাজের দায়িত্ব নেয়। অর্থাৎ যে অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত বা নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে, সেই স্থানটি দখল করে নেয় স্বাস্থ্যবান অন্য কোনো সংবেদনশীল অঞ্চল। বিজ্ঞানীরা এটিকে মানব মস্তিষ্কের অন্যতম বিস্ময়কর অভিযোজন বলে মনে করেন।

দৃষ্টিহীন বা শ্রবণপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এর সবচেয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত উদাহরণ পাওয়া যায়। শ্রবণশক্তি হারালে অনেকের পার্শ্বদৃষ্টি অস্বাভাবিকভাবে তীক্ষ্ণ হয়ে ওঠে, আবার অন্ধ ব্যক্তিদের স্পর্শ ও শ্রবণ শক্তি অসাধারণভাবে উন্নত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, বধির ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের শ্রবণ কর্টেক্স দৃশ্যমান ও স্পর্শ-সংক্রান্ত তথ্য প্রক্রিয়াজাত করতে শুরু করে। অপরদিকে অন্ধ ব্যক্তিদের ভিজ্যুয়াল কর্টেক্স স্পর্শবোধ ও শব্দ প্রক্রিয়াকরণে সক্রিয় থাকে।

এই পুনর্গঠনের মাত্রা পরবর্তীকালের চিকিত্সা যেমন কক্লিয়ার বা রেটিনাল ইমপ্ল্যান্ট কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনাকে সরাসরি প্রভাবিত করে। কারণ, যাদের দৃষ্টিশক্তিহীনতার পর ভিজ্যুয়াল কর্টেক্স পুরোপুরি অন্য ইন্দ্রিয়ের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে, তাদের ক্ষেত্রে রেটিনাল ইমপ্ল্যান্ট প্রায় অকেজো হয়ে পড়ে।

ক্রস-মডাল প্লাস্টিসিটির প্রকৃতি ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হয়। এতে বয়স, ইন্দ্রিয় অভিজ্ঞতা এবং কোন সংবেদন ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়: যারা দীর্ঘদিন গন্ধ বা স্বাদ অনুভব করতে অক্ষম, তাদের ক্ষেত্রে অন্য ইন্দ্রিয়েও কখনো কখনো সংবেদনশীলতা কমে যায়। আবার দৃষ্টিশক্তিহীন শিশুদের খুব অল্প বয়সে প্রয়োজনীয় স্পর্শ-শিক্ষা না দেওয়া হলে তাদের মস্তিষ্ক দ্রুত অভিযোজনের সুযোগ হারিয়ে ফেলে।

অভিজ্ঞতার ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ব্রেইল পড়া অন্ধ ব্যক্তিদের স্পর্শবোধকে অসাধারণভাবে তীক্ষ্ণ করে তোলে। একইভাবে, বহু বছর সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহারকারী বধির ব্যক্তিদের দৃশ্য-সংক্রান্ত তথ্য শনাক্ত করার ক্ষমতা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী হয়। মস্তিষ্কের যে অঞ্চল যেসব ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন অনুশীলনের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে, সেই অঞ্চলগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত স্থান দখল করে নিতে পারে।

ঐতিহাসিকভাবে বিজ্ঞানীরা একসময় মনে করতেন যে প্রতিটি ইন্দ্রিয়ের জন্য নির্দিষ্ট মস্তিষ্ক অঞ্চল ‘হার্ডওয়্যার’-এর মতো স্থায়ীভাবে নির্ধারিত। কিন্তু ২০শ শতকের শেষভাগে নিউরোসায়েন্স প্রমাণ করে যে মানুষের মস্তিষ্ক বহুমাত্রিক সংবেদন তথ্য পরস্পর সংযুক্তভাবে প্রক্রিয়া করে এবং প্রয়োজনমতো গঠন পাল্টাতে সক্ষম।

এই ধারণাকে বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতি দেন মার্কিন নিউরোসায়েন্টিস্ট পল বাখ-ই-রিটা, যাঁর ১৯৬০-এর দশকের গবেষণা নিউরোপ্লাস্টিসিটির আলোয় নতুন অধ্যায় সূচনা করে। তাঁর নিজের বাবার স্ট্রোক-পরবর্তী আশ্চর্যজনক সুস্থতা তাঁকে আরও গবেষণায় অনুপ্রাণিত করে। তিনি ‘ট্যাকটাইল ভিশন সাবস্টিটিউশন সিস্টেম’ (TVSS) তৈরি করেন, যাতে জন্মান্ধ ব্যক্তিরা পিঠে কম্পনের মাধ্যমে ক্যামেরা-তোলা মানুষের মুখ বা বস্তুর আকৃতি চিনতে সক্ষম হন। এই পরীক্ষা প্রমাণ করে যে স্পর্শ-তথ্যও ভিজ্যুয়াল কর্টেক্সে পৌঁছে ‘চোখের’ কাজ করতে পারে। পরবর্তীতে প্রযুক্তির উন্নতিতে এমন যন্ত্রও তৈরি হয়, যা জিভের ভেতর দিয়ে বৈদ্যুতিক উদ্দীপনা পাঠিয়ে বধির ব্যক্তিদের ‘শোনা’র অনুভূতি দিতে সক্ষম।

এই আবিষ্কারগুলো দেখায় মানুষের মস্তিষ্ক একটি স্থির কাঠামো নয়, বরং এটি প্রয়োজন অনুযায়ী নিজেকে বদলে নিতে পারে এবং যেকোনো ক্ষতি পুষিয়ে নতুনভাবে কাজ শিখতে পারে। আজও এই গবেষণা পুনর্বাসন চিকিৎসা, শিশু বিকাশ, দৃষ্টিহীনতা ও শ্রবণ প্রতিবন্ধিতা–সম্পর্কিত প্রযুক্তি উন্নয়নে গভীরভাবে প্রভাব রাখছে।

সূত্র: ব্রিটানিকা


আপনি ডান–মস্তিষ্ক নাকি বাঁ? গবেষণা বলছে অন্য কথা

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৩ ১১:৫৩:০৯
আপনি ডান–মস্তিষ্ক নাকি বাঁ? গবেষণা বলছে অন্য কথা
ছবি: সংগৃহীত

মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে দুই দলে ভাগ করা হয়েছে। কেউ নাকি অত্যন্ত যুক্তিবাদী এবং বিশ্লেষণধর্মী, আবার কেউ সৃজনশীল ও কল্পনাপ্রবণ। জনপ্রিয় মনোবিজ্ঞানে প্রচলিত ধারণা হলো, প্রথম দলটি বাঁ মস্তিষ্কপ্রধান এবং দ্বিতীয় দলটি ডান মস্তিষ্কপ্রধান। এই ধারণাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বই, থেরাপি, ব্যক্তিত্ব বিশ্লেষণ পরীক্ষা থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণ কোর্স পর্যন্ত একটি ছোট শিল্প।

তবে আধুনিক স্নায়ুবিজ্ঞান বলছে, মানুষের ব্যক্তিত্ব নির্ধারণে মস্তিষ্কের এক পাশের কোনো বিশেষ আধিপত্য নেই। মস্তিষ্কের ডান ও বাঁ উভয় গোলার্ধই একসঙ্গে কাজ করে এবং মানুষের চিন্তা, অনুভূতি ও সৃজনশীলতার পেছনে দুই পাশের সমন্বিত ভূমিকা রয়েছে। ব্রেন ইমেজিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে করা সাম্প্রতিক গবেষণায়ও ডান বা বাঁ দিকের কোনো বিশেষ আধিপত্যের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

জনপ্রিয় মিথটির একটি বড় ত্রুটি হলো, সৃজনশীলতা ও যুক্তিবোধের মতো বিষয়গুলোকে অত্যন্ত সরলীকৃতভাবে ব্যাখ্যা করা। উদাহরণ হিসেবে গণিতকে সাধারণত যুক্তিভিত্তিক বিষয় বলা হয়, তাই এটিকে বাঁ মস্তিষ্কের কাজ হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু গণিত একই সঙ্গে গভীর সৃজনশীলতা ও কল্পনাশক্তিরও প্রকাশ। আবার শিল্পসৃষ্টিতেও শুধু আবেগ নয়, থাকে কাঠামো, নির্ভুলতা এবং সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ। তাই কাউকে কেবল ডান বা বাঁ মস্তিষ্কপ্রধান হিসেবে ভাগ করা বাস্তবতার সাথে মেলে না।

গবেষণালব্ধ প্রমাণের শিকড় রয়েছে কয়েক দশক আগের "স্প্লিট ব্রেন" পর্যবেক্ষণে। মৃগীরোগ নিয়ন্ত্রণে ১৯৪০-এর দশকে করপাস ক্যালোসাম ছেদন নামে একটি অস্ত্রোপচার চালু হয়, যেখানে মস্তিষ্কের দুই গোলার্ধের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হতো। এসব রোগীর আচরণ বিশ্লেষণে দেখা যায়, উভয় দিকের মধ্যে কিছু দায়িত্ব ভাগাভাগি থাকলেও তারা স্বাভাবিকভাবে বুদ্ধি ও আবেগ প্রকাশ করতে পারে। এই ফলাফলের ভিত্তিতে কিছু ভুল ব্যাখ্যা থেকেই ডান–বাঁ মস্তিষ্কপ্রধান মিথটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

তাহলে কেন মানুষ এই ধারণায় বিশ্বাসী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষ নিজেকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করতে ভালোবাসে এবং নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক বর্ণনা সহজেই গ্রহণ করে। এটিকে বলা হয় বারনাম ইফেক্ট। সাধারণ, সবার জন্য প্রযোজ্য বর্ণনাকেও মানুষ নিজের জন্য সঠিক বলে মনে করে। ডান মস্তিষ্ক বা বাঁ মস্তিষ্ক ব্যক্তিত্ব বিভাজনও ঠিক এই ধরনেরই একটি জনপ্রিয়, কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে দুর্বল ধারণা।

স্নায়ুবিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের সৃজনশীলতা, বুদ্ধিমত্তা, যুক্তিবোধ বা আবেগ কোনো কিছুই মস্তিষ্কের এক পাশের ওপর নির্ভর করে না। বরং পুরো মস্তিষ্ক একসঙ্গে কাজ করে, এবং দুটি গোলার্ধের সমন্বয়ই মানুষের অনন্য চিন্তা, ব্যক্তিত্ব ও প্রতিভা গড়ে তোলে।

সূত্র: ব্রিটানিকা


সুগার বিট: পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহৎ চিনির উৎস

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০২ ০৮:৩৬:১৭
সুগার বিট: পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহৎ চিনির উৎস
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের চিনি উৎপাদনে আখের পরেই যে ফসলটি সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে, তা হলো সুগার বিট বা বিটা ভালগারিস। আধুনিক কৃষি, খাদ্যশিল্প ও বায়োটেকনোলজির অগ্রগতির কারণে এই ফসল এখন ইউরোপসহ পৃথিবীর বহু অঞ্চলের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। উচ্চমাত্রার সুক্রোজসমৃদ্ধ রসের জন্য সুগার বিটকে আজ চিনি শিল্পের প্রধান শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

সুগার বিট মূলত অ্যামারান্থেসি পরিবারের উদ্ভিদ এবং বহু শতাব্দী ধরে এটি পুষ্টিকর সবজি ও পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ১৭৪৭ সালে জার্মান রসায়নবিদ আন্দ্রেয়াস মার্গগ্রাফ প্রথমবারের মতো বিট থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চিনি উৎপাদন করেন। তবে শিল্পকারখানায় বিট থেকে চিনি তৈরির যাত্রা শুরু হয় ১৮০২ সালে সিলেশিয়ায় প্রথম বিট সুগার ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।

ন্যাপোলিয়ন ১৮১১ সালে এ শিল্পের প্রসারের প্রতি বিশেষ আগ্রহ দেখান। ব্রিটিশ অবরোধে যখন ফরাসি সাম্রাজ্যের আখের চিনি আমদানি বন্ধ হয়ে যায়, তখন তিনি বিকল্প হিসেবে বিট সুগার উৎপাদনকে রাষ্ট্রীয় অগ্রাধিকার দেন এবং চারোনদিকে দ্রুত কারখানা স্থাপন শুরু হয়। যদিও ন্যাপোলিয়নের পতনের পর শিল্পটি সাময়িকভাবে ম্লান হয়েছিল, তবে ১৮৪০-এর দশক থেকে ইউরোপজুড়ে এর বিস্তার দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। ১৮৮০ সালের মধ্যেই ইউরোপে বিটের উৎপাদন আখকে ছাড়িয়ে যায়। বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় শতভাগ চিনি উৎপাদন বিট থেকে হয়।

চাষাবাদ ও উৎপাদন চক্র

সুগার বিট সাধারণত শীতল নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে গ্রীষ্মকালীন ফসল হিসেবে চাষ হয়; তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের উষ্ণ অঞ্চলে এটি শীতকালীন ফসল হিসেবেও ব্যাপক প্রচলিত হয়েছে। সাধারণত ১৭০ থেকে ২০০ দিনের ফসলচক্রে এটি পূর্ণবয়স্ক হয়।

বীজ বপন থেকে শেকড় পরিপক্ব হওয়া পর্যন্ত আবহাওয়া তুলনামূলক ঠান্ডা হলে ফলন বাড়ে এবং সুক্রোজের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। উপযুক্ত অবস্থায় প্রতিটি বিটের ওজন ১ থেকে ২ কেজি পর্যন্ত হতে পারে এবং এতে ৮ থেকে ২২ শতাংশ পর্যন্ত সুক্রোজ পাওয়া যায়।

সুগার বিটের জন্য আদর্শ মাটি হচ্ছে হিউমাসসমৃদ্ধ লোম; তবে বালুকামাটি থেকে শুরু করে ভারী মাটি পর্যন্ত বিভিন্ন মাটিতেই এটি চাষ করা যায়। শিল্পোন্নত কৃষি খামারে গভীর চাষ, যথাযথ সারের ব্যবহার, প্রিসিশন ড্রিলিং, কীটনাশক ও হার্বিসাইড ব্যবহারের মাধ্যমে উচ্চমানের ফসল উৎপাদন করা হয়।

রোগবালাই ও কীটপতঙ্গের হুমকি

কালো রুট রট, সারকোসপোরা লিফ স্পটসহ নানান ছত্রাকঘটিত রোগ সুগার বিটের শেকড়ের ওজন ও সুক্রোজ মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। এছাড়া নিমাটোড, পোকামাকড় ও বিভিন্ন ধরনের গুবরেপোকার আক্রমণ ফসলের বড় অংশ নষ্ট করে দিতে সক্ষম। এজন্য নিয়মিত ফসল ঘুরিয়ে চাষ এবং রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করা হয়।

জেনেটিক উন্নয়ন ও ব্রিডিং

উচ্চ সুক্রোজমাত্রা, রোগপ্রতিরোধ এবং ভারী শেকড় নিশ্চিত করার জন্য বহু দেশে উন্নত হাইব্রিড ও পলিপ্লয়েড জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে গ্লাইফোসেট-সহনশীল জিএম (জেনেটিকালি মডিফাইড) সুগার বিট এখন বাণিজ্যিকভাবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত।

ফলন, রোগপ্রতিরোধ, অভিযোজনশক্তি এবং চিনি আহরণশীলতা—এই চারটি বৈশিষ্ট্য বাড়াতে বিশ্বব্যাপী গবেষণা অব্যাহত রয়েছে।


ব্রাউজিং হবে আরও সহজ কারণ গুগল ক্রোমে যুক্ত হলো দারুণ এক নতুন ফিচার

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ৩০ ১৭:১৮:১০
ব্রাউজিং হবে আরও সহজ কারণ গুগল ক্রোমে যুক্ত হলো দারুণ এক নতুন ফিচার
ছবিঃ সংগৃহীত

গুগল ক্রোম ব্যবহার করেন অথচ ব্রাউজিং অভিজ্ঞতাকে আরও সহজ করে দেবে এমন একটি দারুণ ফিচার হয়তো এখনো আপনার চোখে পড়েনি। সম্প্রতি ক্রোমে যুক্ত হওয়া স্প্লিট ভিউ নামের এই নতুন সুবিধা ইতোমধ্যেই অনেক ব্যবহারকারীর জন্য চালু হয়েছে কিন্তু অধিকাংশেরই এ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে অনেক দিন ধরে পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর পর ফিচারটিকে সম্প্রতি কিছুটা উন্মুক্ত করা হয়েছে। তাদের দাবি যারা কাজের প্রয়োজনে একসঙ্গে একাধিক ওয়েবসাইট খুলে রাখেন তাদের জন্য এটি সত্যিই গেমচেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে। আগে কোনো ওয়েব লিংক নতুন ট্যাবে ওপেন করতে হতো যার ফলে ট্যাবের সংখ্যা বেড়ে ব্রাউজার ভারী হয়ে যেত। কিন্তু এখন চাইলে কোনো লিংক সরাসরি স্প্লিট ভিউ মোডে খুলে নেওয়া যায়। এতে আলাদা ট্যাব না বাড়িয়ে পর্দার দুই পাশে পাশাপাশি দুটি ট্যাব ওপেন হয়ে যায়।

ফিচারটি ব্যবহার করা খুবই সহজ এবং কোনো লিংকের ওপর মাউস দিয়ে রাইট ক্লিক করলেই দেখা যাবে ওপেন নিউ ট্যাবের নিচে নতুন স্প্লিট ভিউ অপশনটি। সেখানে ক্লিক করলেই দুটি ব্রাউজিং উইন্ডো সাইড বাই সাইড দেখা যাবে। এর আগে গুগল ক্রোমে এমন সুবিধা পেতে তৃতীয় পক্ষের কোনো অ্যাপও ছিল না। প্রয়োজনে আলাদা দুটি ব্রাউজার উইন্ডো খুলে হাতে হাতে পাশাপাশি সাজাতে হতো। এখন আর সেই ঝামেলা নেই বরং কয়েকটা ক্লিকেই দুটি ট্যাব পাশাপাশি দেখা যাবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী একটিকে বড় বা ছোট করা যাবে আর চাইলে দুই উইন্ডোর অবস্থান একে অন্যের সঙ্গে বদলে নেওয়াও সম্ভব।

স্প্লিট ভিউ বন্ধ করতে চাইলেও তা খুব সহজ। যে ট্যাবে কাজ করছেন সেখানে রাইট ক্লিক করে স্প্লিট ভিউতে গিয়ে ডান বা বাম দিকের ভিউটি বন্ধ করে দিলেই হবে। গুগলের মতে একদিকের ট্যাবে যদি কোনো ডকুমেন্ট খোলা থাকে এবং অন্যদিকে ভিডিও কলে অংশ নিচ্ছেন এমন পরিস্থিতিতে স্প্লিট ভিউ দারুণ কাজে দেবে। পর্দা বদলিয়েও নোট নেওয়া বা তথ্য যাচাই করা এর মাধ্যমে আরও সহজ হয়ে যাবে।

সূত্র : জিও নিউজ


এক ডোজেই কার্যকর নতুন ডেঙ্গু টিকা অনুমোদন

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৭ ১৬:০১:২৯
এক ডোজেই কার্যকর নতুন ডেঙ্গু টিকা অনুমোদন
ছবি: সংগৃহীত

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে যখন মশাবাহিত রোগের বিস্তার রেকর্ড গতিতে বাড়ছে, ঠিক সেই সময় ব্রাজিল ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সাফল্য অর্জন করেছে। দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা আনভিসা গত বুধবার ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে এক ডোজে কার্যকর নতুন টিকা ‘বুটানটান-ডিভি’ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অগ্রগতি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সাও পাওলোর বিখ্যাত বুটানটান ইনস্টিটিউট এই টিকাটি তৈরি করেছে এবং ১২ থেকে ৫৯ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর জন্য এর ব্যবহার অনুমোদিত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-র তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাজারে থাকা একমাত্র ডেঙ্গু টিকা TAK-003 দুই ডোজে প্রয়োগ করতে হয়। কিন্তু নতুন ‘বুটানটান-ডিভি’ টিকা মাত্র একবার নিলেই কার্যকর সুরক্ষা দেবে। ফলে ডেঙ্গু টিকাদান কর্মসূচির ব্যয়, সময় এবং লজিস্টিক জটিলতা তিনটিই উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।

বুটানটান ইনস্টিটিউটের পরিচালক এসপার কাল্লাস সাও পাওলোতে সাংবাদিকদের বলেন,“ব্রাজিলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ডেঙ্গুর মতো দীর্ঘস্থায়ী মহামারিকে মোকাবিলায় এখন আমাদের হাতে অত্যন্ত শক্তিশালী অস্ত্র রয়েছে।”

টিকাটির নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে ব্রাজিলজুড়ে দীর্ঘ আট বছর ধরে ১৬ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবীর ওপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালিত হয়েছে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, টিকাটি গুরুতর ডেঙ্গু প্রতিরোধে ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকারিতা প্রদর্শন করেছে যা বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত অনেক ভ্যাকসিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত।

ডেঙ্গুর বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটও ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা পৌঁছায় ১ কোটি ৪৬ লাখের ওপর, মৃত্যু হয় প্রায় ১২ হাজার মানুষের। এর অর্ধেক মৃত্যুই ঘটেছে ব্রাজিলে। যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক ডেঙ্গু সংক্রমণের ১৯ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য দায়ী শুধুমাত্র জলবায়ু পরিবর্তন। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এডিস মশার জন্মহার, বিস্তার এলাকা এবং সংক্রমণ ক্ষমতা সবকিছুই বেড়েছে বহুগুণে।

টিকার ব্যাপক উৎপাদন নিশ্চিত করতে ব্রাজিল চীনের বিখ্যাত জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি উশি বায়োলজিক্স-এর সঙ্গে চুক্তি করেছে। চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৬ সালের দ্বিতীয়ার্ধে কমপক্ষে ৩ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদন ও সরবরাহ করা হবে।

ব্রাজিল সরকার আশা করছে, নতুন টিকা দেশটির প্রাণঘাতী ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি গেম-চেঞ্জার হিসেবে কাজ করবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকির বিরুদ্ধে ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি আরও শক্তিশালী করবে।

-শরিফুল


চ্যাটজিপিটিতে এবার বন্ধুদের সঙ্গে গ্রুপ চ্যাট করার সুযোগ চালু করল ওপেনএআই

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৬ ২০:২৮:২৫
চ্যাটজিপিটিতে এবার বন্ধুদের সঙ্গে গ্রুপ চ্যাট করার সুযোগ চালু করল ওপেনএআই
ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী আলোচিত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই তাদের জনপ্রিয় চ্যাটবট চ্যাটজিপিটিতে এবার আরও একটি নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে এখন থেকে ব্যবহারকারীরা চ্যাটজিপিটিতে গ্রুপ চ্যাট করার সুযোগ পাবেন। নতুন এই ফিচারের মাধ্যমে বন্ধু পরিবার বা সহকর্মীদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করা আরও সহজ হবে।

ওপেনএআইর তথ্য অনুযায়ী রাতের খাবারের পরিকল্পনা করা থেকে শুরু করে ভ্রমণ পরিকল্পনা তৈরি কিংবা কোনো খসড়া প্রস্তুত করার মতো সব কাজেই একাধিক ব্যবহারকারী একই চ্যাটে যুক্ত হয়ে চ্যাটজিপিটির সাহায্য নিতে পারবেন। একটি গ্রুপ চ্যাটে সর্বোচ্চ ২০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো যাবে অর্থাৎ ২০ জন পর্যন্ত সদস্য একটি গ্রুপ চ্যাটে কথোপকথনে অংশ নিতে পারবেন। এটি বৈশ্বিকভাবে সব লগইন করা ব্যবহারকারীর জন্য এখন উন্মুক্ত করা হয়েছে।

গ্রুপ চ্যাট কীভাবে কাজ করবে সে বিষয়েও বিস্তারিত জানানো হয়েছে। চ্যাটজিপিটি অ্যাপের ওপরের ডান কোণে থাকা পিপল আইকনে চাপ দিলে নতুন গ্রুপ চ্যাট তৈরির অপশন আসবে। তখন বর্তমান চ্যাটটি কপি হয়ে একটি নতুন গ্রুপ চ্যাটে যুক্ত হবে। এরপর একটি লিংক শেয়ার করে অন্যদের গ্রুপে আমন্ত্রণ জানানো যাবে এবং আমন্ত্রিত ব্যবহারকারীরাও সেই লিংক অন্যদের পাঠাতে পারবেন। প্রথমবার গ্রুপ চ্যাট তৈরি বা যোগ দিতে চাইলে ব্যবহারকারীকে নাম ইউজারনেম ও প্রোফাইল ছবি ঠিক করে নিতে বলা হবে যাতে বুঝতে সুবিধা হয় কে কী বলছেন।

সবচেয়ে কৌতূহলের বিষয় হলো গ্রুপে চ্যাটজিপিটি কখন কথা বলবে। ওপেনএআই বলছে চ্যাটজিপিটি গ্রুপে কথোপকথনের প্রবাহ বুঝে তবেই অংশ নেবে অর্থাৎ কখন উত্তর দেবে আর কখন চুপ থাকবে তা সে নিজেই নির্ধারণ করবে। আবার চাইলে সরাসরি চ্যাটজিপিটি মেনশন করলে বট সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দেবে। গ্রুপ চ্যাটে ইমোজি রিয়্যাকশন এবং প্রোফাইল ছবি ব্যবহার করে ব্যক্তিগতকৃত ছবি তৈরির সুবিধাও থাকবে।

স্ক্রিনের ওপরের ডান কোণে থাকা গ্রুপ চ্যাট আইকনে চাপ দিলে সদস্য যোগ বা বিয়োগ করা নোটিফিকেশন মিউট করা এবং চ্যাটজিপিটির জন্য কাস্টম নির্দেশনা সেট করার অপশন পাওয়া যাবে। ওপেনএআই আরও নিশ্চিত করেছে যে ব্যক্তিগত চ্যাটে থাকা মেমোরি বা স্মৃতি গ্রুপ চ্যাটে প্রযোজ্য হবে না। আবার গ্রুপ চ্যাটের কথোপকথন থেকেও কোনো নতুন স্মৃতি তৈরি করবে না চ্যাটজিপিটি যা ব্যবহারকারীদের প্রাইভেসির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

প্রযুক্তিগত দিক থেকে গ্রুপ চ্যাটে চ্যাটজিপিটি জিপিটি ৫ দশমিক ১ অটো মডেল ব্যবহার করবে যা ব্যবহারকারীর প্রম্পট ও তার জন্য উপলব্ধ মডেলের ভিত্তিতে সর্বোত্তম রেসপন্স নির্বাচন করে। উল্লেখ্য রেট লিমিট কেবল তখনই প্রযোজ্য হবে যখন চ্যাটজিপিটি নিজে চ্যাটে কোনো বার্তা পাঠাবে।

সূত্র : দ্য ভার্জ

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত