গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন: প্রতিবাদে আজ ইতালিতে দেশব্যাপী ধর্মঘট

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০২ ২১:৩০:৪৩
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন: প্রতিবাদে আজ ইতালিতে দেশব্যাপী ধর্মঘট
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজাগামী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইতালিতে দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক ও নাগরিক সংগঠন। আজ শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সারা দেশে এই ধর্মঘট পালিত হবে।

টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত রাতে ইসরায়েলি বাহিনী ত্রাণবহরের জাহাজগুলো আটক করে। সেখানে যোগ দেওয়া অধিকারকর্মীদের মধ্যে ২০ জনেরও বেশি ইতালির নাগরিক রয়েছেন। এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বেশ কয়েকটি ইতালীয় শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

বিক্ষোভ ও রেল অবরোধ

দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নেপলসে বিক্ষোভকারীরা প্রধান রেলস্টেশনে প্রবেশ করে এবং ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। রাজধানী রোমের আরেকটি স্টেশনে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হলে পুলিশ সেটিকে ঘিরে ফেলে। এছাড়া ইতালির বিভিন্ন শহরে বড় বড় মিছিল দেখা গেছে।

ইতালির বৃহত্তম শ্রমিক ইউনিয়ন সিজিআইএল (CGIL) জানিয়েছে, “আমাদের নাগরিকদের বহনকারী বেসামরিক জাহাজের বিরুদ্ধে আগ্রাসন একটি অত্যন্ত গুরুতর বিষয়।” ধর্মঘটে অন্যান্য ছোট ইউনিয়নগুলোও যোগ দেবে।

উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর জেনোয়াতে ইউএসবি ইউনিয়ন ঘোষণা করেছে, তারা ধর্মঘটে যোগ দেবে এবং বন্দর অবরোধ করার চেষ্টা করবে। সেই সঙ্গে সমস্ত বিক্ষোভকারীদের রাত ১০টায় শহরের প্রধান প্রবেশপথে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রভাব

টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানিয়েছে, গত দুই সপ্তাহ ধরে ইতালির শ্রমিকরা ইসরায়েলে বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন জাহাজকে ডকিং (নোঙর) এবং লোড করা থেকে বিরত রয়েছে। গত সপ্তাহেও গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদ এবং অস্ত্র রপ্তানি বন্ধের দাবি জানিয়ে ইতালির একটি শহরে ধর্মঘট হয়েছিল। তবে এবার তা দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে।


হাসিনার রায় ঘিরে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সতর্ক বার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১২:২৫:১৪
হাসিনার রায় ঘিরে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সতর্ক বার্তা
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস মোরিয়ার্টি মনে করেন, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ যে রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে, সেটি দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য গভীর তাৎপর্য বহন করবে। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

মোরিয়ার্টি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে যেভাবে পরপর ক্ষমতায় থেকেছে, তা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। স্বাধীনতার পর এত দীর্ঘ সময় একটি দলের একাধিপত্য বজায় রাখার উদাহরণ নেই। তাঁর মতে, এই দীর্ঘ ক্ষমতাকাল বাংলাদেশে রাজনৈতিক ভারসাম্য, রাষ্ট্রযন্ত্রের গঠন ও আইনের শাসন–সংক্রান্ত কাঠামোতে বেশ বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছিল।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার সরকার সাংবিধানিক পরিবর্তন, নির্বাচনব্যবস্থার রূপান্তর, প্রশাসন পুনর্গঠন এবং বিভিন্ন আইন সংশোধনের মাধ্যমে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করেছিল, যা একদলীয় শাসনের পথকে শক্তিশালী করেছিল। তাঁর দৃষ্টিতে, এই পরিবর্তনগুলো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ক্ষমতার ভারসাম্যকে দুর্বল করেছে।

মোরিয়ার্টি মনে করেন, এখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। বাংলাদেশ ভবিষ্যতে কোন পথে যাবে তা নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্ক শুরু হয়েছে।” এই পরিবর্তনের মাঝেই আজকের রায় যে বড় ধরনের গুরুত্ব বহন করে, তা তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

রায়ের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়েও তিনি সতর্ক মন্তব্য করেন। তাঁর ভাষায়, “যদি শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, কিছু সহিংসতা হতে পারে, তবে তা খুব বেশি বৃদ্ধি পাবে বলে আমার মনে হয় না।” তাঁর মতে, পরিস্থিতি জটিল হলেও ব্যাপক সহিংসতা গণঅভ্যুত্থানের সময়ের মতো হবে না।

অন্যদিকে, যদি শেখ হাসিনা খালাস পান তবে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে বলে মোরিয়ার্টি মনে করেন। তিনি বলেন, “হাসিনা খালাস পেলে বড় ধরনের বিক্ষোভ হবে। কারণ এখন দেশের মধ্যে স্পষ্টভাবে প্রতিশোধ বা প্রতিহিংসার আবহ দেখা যাচ্ছে।”

আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে মোরিয়ার্টি বলেন, দলটি এখন এক সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি উল্লেখ করেন, “নিজেদের ভবিষ্যৎ ভূমিকা ঠিক করা এখন তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে আগামী দিনের রাজনীতিতে তারা কীভাবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে বা অবস্থান নেবে এটা এখন তাদের নির্ধারণ করতে হবে।”

-শরিফুল


 শেখ হাসিনার রায়কে ঘিরে সজীব ওয়াজেদের বিস্ফোরক মন্তব্য

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১০:২৯:২৫
 শেখ হাসিনার রায়কে ঘিরে সজীব ওয়াজেদের বিস্ফোরক মন্তব্য
ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ ঘোষণা হচ্ছে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বহুল আলোচিত মামলার রায়। রায় ঘোষণার ঘণ্টাখানেক আগে শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে তার মায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হতে পারে। একই সঙ্গে তিনি স্বস্তিও প্রকাশ করেছেন যে শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে নিরাপদে অবস্থান করছেন এবং দেশটি তাকে নিরাপত্তা দিচ্ছে।

আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধসহ পাঁচটি মামলার রায় ঘোষণা করবে। ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলন দমন করতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতাকে পরিচালনা, উৎসাহ ও অনুমোদনে শেখ হাসিনার সরাসরি ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। জাতিসংঘের একটি তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে দেশে প্রায় এক হাজার চারশ মানুষ নিহত হয়। হাজারো মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। রেকর্ড অনুযায়ী পুলিশের গুলিতেই অধিকাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটে। স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সবচেয়ে ভয়াবহ রাজনৈতিক সহিংসতা বলে এটিকে অভিহিত করেছে প্রতিবেদনটি।

গণঅভ্যুত্থানের পর ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যান। এরপর থেকে তিনি দিল্লিতে অবস্থান করছেন এবং ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর পাহারায় আছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। সজীব ওয়াজেদও আজ তা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন যে ভারত তার মাকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তায় রেখেছে।

রায় ঘোষণার আগমুহূর্তে জয় বলেন যে তারা আগেই বুঝে গেছেন রায়ে কী হবে। তার ভাষায়, তারা পুরো প্রক্রিয়াটি টেলিভিশনে প্রচার করছে এবং সমস্ত চিত্রই স্পষ্ট যে আদালত শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করবে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন এটি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে।

তবে আশঙ্কার পাশাপাশি তিনি স্বস্তিও প্রকাশ করেন। তার দাবি, শেখ হাসিনা ভারতে নিরাপদ আছেন এবং তাই রায় যাই হোক না কেন তার কোন ক্ষতি হবে না। তিনি বলেন, আমার মা বর্তমানে দিল্লিতে নিরাপদে আছেন এবং ভারত তাকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দিচ্ছে।

-রাফসান


ইসরায়েলের গোপন ফাঁদেই উল্টো ধরা, ইরানের যে কৌশলে বোকা বনেছিল ইসরায়েল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৯:০৬:৪৮
ইসরায়েলের গোপন ফাঁদেই উল্টো ধরা, ইরানের যে কৌশলে বোকা বনেছিল ইসরায়েল
ছবিঃ সংগৃহীত

ইসরায়েল বহু বছর ধরেই ইরানের পারমাণবিক এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে একটি গোপন জাল বিস্তার করে আসছিল। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল ইরানের ভেতরে ড্রোন ঘাঁটি তৈরি করা, গোপনে অস্ত্রশস্ত্র পাঠানো এবং কমান্ডো পাচার করা। সব মিলিয়ে, ইসরায়েল একটি বড় ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে প্রস্তুত ছিল।

কিন্তু গত জুন মাসে ইরানের ওপর চালানো অতর্কিত হামলার কড়া জবাব দিয়ে আয়াতুল্লাহ খামেনির দেশ এটিও প্রমাণ করে দেয় যে, তারাও পাল্টা আঘাত হানার জন্য প্রস্তুত ছিল।

ইসরায়েলের 'লোহার দুর্গ' হিসেবে পরিচিত আয়রন ডোম প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে ইরানের আক্রমণে একটি ইসরায়েলি সদর দপ্তর ধ্বংস হয়ে যায়। ইসরায়েল যে ফাঁদ পেতেছিল, উল্টো তারাই ইরানের এক ধরনের 'পটকা' ফাঁদে আটকা পড়ে।

সামরিক পরিভাষায় এই কৌশলকে 'ডিকয় ক্ষেপণাস্ত্র' বা ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে প্রতারণা বলা হয়। এই কৌশলের মাধ্যমে ইসরায়েলের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে মুহূর্তের মধ্যে দুর্বল করে ফেলা সম্ভব হয়েছিল। খোদ মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালও এই তথ্য প্রকাশ করেছিল।

এই ডিকয় বা ভুয়া ক্ষেপণাস্ত্রটি দেখতে হুবহু আসল ক্ষেপণাস্ত্রের মতোই এবং এটি একই রকম আচরণ করে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো শত্রুপক্ষের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করা।

এই কৌশলটি যেভাবে কাজ করে তা হলো—আসল ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার সময়ই তার সঙ্গে ধাতব 'পটকা' বা ডিকয় নিক্ষেপ করা হয়, যা থেকে তীব্র আগুন বের হতে থাকে। ইসরায়েলের আয়রন ডোমের মতো স্বয়ংক্রিয় প্রতিরাব্যবস্থাগুলো এই ধাতব বস্তুকে শনাক্ত করে এবং সেটিকে আসল ক্ষেপণাস্ত্র বলে মনে করে।

যখনই সেটিকে আসল ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সেটিকে ধ্বংস করার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে মারে। এভাবে যখন প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ওই ধাতব পটকার দিকে ছুটে যায় বা সেটিকে ধ্বংস করে, ঠিক সেই মুহূর্তে আয়রন ডোমের অস্ত্রভাণ্ডার খালি হতে শুরু করে। এই সুযোগেই আসল ক্ষেপণাস্ত্রটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে তার নির্ধারিত লক্ষ্যে আঘাত হানে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ইসরায়েলের আয়রন ডোম থেকে একবার প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়ে গেলে, সেটি পুনরায় লোড করতে প্রায় ১০ থেকে ১১ মিনিট সময় প্রয়োজন। কিন্তু ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আয়রন ডোমে শনাক্ত হওয়ার মাত্র ৭ মিনিটের মধ্যেই ইসরায়েলের মাটিতে আঘাত হানতে সক্ষম। এই সময়ের ব্যবধানের কারণেই ইসরায়েল সেই হামলায় ধরাশায়ী হয়।

ইসরায়েলকে সেই ঘটনায় পরাজিত করতে পারলেও, ইরান এখন আরও বেশি সতর্ক এবং নিজেদের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। দেশটি সম্প্রতি সব আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে ঘোষণা দিয়েছে যে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির অগ্রগতি যেকোনো মূল্যে অব্যাহত থাকবে এবং এর পাল্লা কোনোভাবেই সীমিত করা হবে না।


জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল আরেক দেশ, প্রেসিডেন্টের বাসভবনে হামলার চেষ্টা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৮:০০:৪৭
জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল আরেক দেশ, প্রেসিডেন্টের বাসভবনে হামলার চেষ্টা
ছবিঃ সংগৃহীত

জেন-জি বা তরুণ প্রজন্মের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে মেক্সিকো। একজন মেয়রের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউমের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যা এখন দেশটির একাধিক শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিক্ষোভে অন্তত দেড় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। রোববার (১৬ নভেম্বর) বিবিসি একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, শুধু রাজধানী মেক্সিকো সিটিতেই জেন-জির ডাকা প্রতিবাদে অন্তত ১৫০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১০০ জনই পুলিশ কর্মকর্তা। শনিবার হাজার হাজার মানুষ রাজধানীর রাস্তায় নেমে আসেন এবং দেশে ক্রমবর্ধমান সহিংস অপরাধ ও প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউমের সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। ধীরে ধীরে এই বিক্ষোভ অন্যান্য শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। প্রেসিডেন্ট শেইনবাউম দাবি করেছেন, তার সরকারের বিরোধিতা করছেন এমন ডানপন্থি রাজনীতিবিদরা এই বিক্ষোভে অর্থায়ন করছেন এবং তারাই এটি সংগঠিত করেছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, এই বিক্ষোভের নেতৃত্বে রয়েছে জেন-জির তরুণদের বিভিন্ন সংগঠন। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আলোচিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, বিশেষ করে উরুয়াপানের মেয়র কার্লোস মানজোর হত্যার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আরও তীব্র হয়। মেয়র মানজো প্রকাশ্যে মাদক কার্টেল এবং সশস্ত্র পাচারকারী চক্রগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলতেন এবং তাদের দমনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাতেন। গত ১ নভেম্বর 'ডে অব দ্য ডেড' (মৃতদের দিবস) উৎসবে অংশ নেওয়ার সময় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

বিক্ষোভকারীরা 'আমরা সবাই কার্লোস মানজো' লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। অনেকে নিহত মেয়রের প্রতি সম্মান জানিয়ে কাউবয় হ্যাট পরেও বিক্ষোভে অংশ নেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা রাজধানীর ন্যাশনাল প্যালেসকে রক্ষা করার জন্য স্থাপন করা ব্যারিকেডের একাংশ ভেঙে ফেলেন। ন্যাশনাল প্যালেস প্রেসিডেন্ট শেইনবাউমের সরকারি বাসভবন হওয়ায় এলাকাটি বিশেষ নিরাপত্তায় সুরক্ষিত ছিল। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে।

মেক্সিকো সিটির নিরাপত্তা প্রধান পাবলো ভাসকেজ জানিয়েছেন, লুটপাট, হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভের আগে প্রেসিডেন্ট শেইনবাউম দাবি করেছিলেন যে, অনলাইন বট ব্যবহার করে এসব বিক্ষোভের প্রচারণা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, "যুবকদের দাবি থাকতেই পারে। কিন্তু প্রশ্ন হলো— এই আন্দোলন কে সংগঠিত করছে? জনগণের জানা জরুরি যেন তারা ব্যবহৃত না হয়।"

বিবিসি জানিয়েছে, ক্ষমতায় আসার প্রথম বছরেই শেইনবাউমের প্রতি ৭০ শতাংশের বেশি মানুষের সমর্থন রয়েছে। বিশেষ করে ফেন্টানিল পাচারের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও প্রশংসা পেয়েছে। তবে, দেশব্যাপী সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে তিনি সমালোচিতও হচ্ছেন। একই সময়ে প্রতিবেশী দেশ পেরুর সঙ্গেও মেক্সিকোর কূটনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। চলতি মাসের শুরুতে পেরুর কংগ্রেস শেইনবাউমকে 'পারসোনা নন গ্রাটা' বা অবাঞ্ছিত ব্যক্তি ঘোষণা করে। এর আগে মেক্সিকো অভিযুক্ত একজন সাবেক পেরুভিয়ান প্রধানমন্ত্রীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল।


বিদেশি কর্মী নিয়োগে 'ইউ-টার্ন' সৌদির,কমছে বেতন ও সুবিধা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৭:১৫:৩১
বিদেশি কর্মী নিয়োগে 'ইউ-টার্ন' সৌদির,কমছে বেতন ও সুবিধা

সৌদি আরব বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের পুরোনো নীতি থেকে সরে আসছে। একটা সময় দেশটি উচ্চ বেতনের আকর্ষণীয় প্রস্তাব বা 'স্যালারি প্রিমিয়াম' দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চ দক্ষ কর্মীদের আকৃষ্ট করত। কিন্তু এখন সেই বাস্তবতার পরিবর্তন হচ্ছে। রোববার (১৬ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

রয়টার্স চারজন নিয়োগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছে, সৌদি আরব এখন খরচ কমানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছে এবং তাদের অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারগুলো নতুন করে সাজাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন খাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে আগের মতো উদার প্রস্তাব আর দেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে নির্মাণ, উৎপাদন এবং দেশটির বড় বড় মেগা প্রকল্পগুলোতে এই পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।

বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক এই দেশটি তাদের 'ভিশন ২০৩০' নামের একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো তেলের ওপর থেকে দেশের নির্ভরতা কমিয়ে আনা। একইসঙ্গে পর্যটন, রিয়েল এস্টেট, খনন ও আর্থিক খাতের মতো নতুন নতুন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান তৈরি করা। এই লক্ষ্য পূরণে দেশটি এরই মধ্যে শত শত বিলিয়ন ডলারের মেগা প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করেছে। তবে, রয়টার্সের মতে, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ায় আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি, যা এখনকার এই ব্যয় সংকোচনের একটি কারণ হতে পারে।

নিয়োগ খাতের প্রতিনিধিরা বলছেন, আগে এমন একটা সময় ছিল যখন কেউ সৌদিতে চাকরি নিয়ে গেলে তার বর্তমান বেতনের চেয়ে ৪০ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ পর্যন্ত বেশি বেতন পাওয়াটা খুবই সাধারণ ব্যাপার ছিল। কিন্তু এখনকার প্রস্তাবগুলো অনেক বেশি সংযত।

বয়ডেন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ম্যাগদি আল জায়েন বলেন, এর পেছনে দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, সৌদি অর্থনীতি এখন খরচ কমাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, প্রচুর সংখ্যক আন্তর্জাতিক প্রার্থী সৌদিতে কাজ করতে আগ্রহী। এই সুযোগে কোম্পানিগুলো তাদের বেতন কাঠামো নিয়ে নতুন করে ভাবার সুযোগ পাচ্ছে।

দুবাইভিত্তিক টাস্কান মিডল ইস্টের সিইও হাসান বাবাত একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি আরও পরিষ্কার করেন। তিনি বলেন, আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যিনি ৬০ হাজার ডলার বেতনে ম্যানেজারের চাকরি করতেন, তিনিই সৌদিতে অনায়াসে ১ লাখ ডলারের চাকরির প্রস্তাব পেতেন। কিন্তু এখন সেই সুযোগ আর নেই।

তবে, বেতন কমানোর এই প্রবণতার মধ্যেও মধ্যপ্রাচ্যের বাইরের দেশগুলো থেকে আসা প্রার্থীদের জন্য সৌদি আরব এখনও একটি আকর্ষণীয় বাজার। দেশটির অর্থনীতি ২০২৫ সালে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

একইসঙ্গে, সরকার দেশের নাগরিকদের জন্য কর্মসংস্থান বাড়ানোর দিকেও ব্যাপক মনোযোগ দিয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে ২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত বেসরকারি খাতে সৌদি নাগরিকদের অংশগ্রহণ ৩১ শতাংশ বেড়েছে এবং দেশটিতে বেকারত্বের হার ঐতিহাসিকভাবে কমে এসেছে।

ম্যাচেস ট্যালেন্টের সিইও লুইস নুটসন এই পরিবর্তনকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, এখনকার বেতন প্যাকেজগুলো বাস্তব বাজার দর, কর্মীর পারফরম্যান্স এবং তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ঠিক করা হচ্ছে। বাইরে থেকে এটাকে 'সংকোচন' মনে হলেও, এটি আসলে সৌদি আরবের বাজার 'পরিপক্ক' হয়ে ওঠার লক্ষণ।

তিনি আরও বলেন, এখন সৌদিতে সেরা প্রতিভাদের আকর্ষণ করতে হলে কোম্পানিগুলোকে শুধু বেশি বেতনের প্রস্তাব দিলেই হবে না, বরং পারিবারিক জীবনযাপনের ভারসাম্য, জীবনযাত্রার খরচ মেটানোর সুবিধা এবং প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দিতে হবে।


সাগর যেখানে সমাধিক্ষেত্র: ভূমধ্যসাগরে আবারও ডুবল স্বপ্নের নৌকা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৫:৫০:৪৬
সাগর যেখানে সমাধিক্ষেত্র: ভূমধ্যসাগরে আবারও ডুবল স্বপ্নের নৌকা
ছবিঃ সংগৃহীত

পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর আশা এবং উন্নত এক ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষা অনেক মানুষকে ইউরোপে যাওয়ার ঝুঁকিপূর্ণ পথে ঠেলে দেয়। এই স্বপ্ন পূরণের চেষ্টায় তারা ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার মতো চরম বিপজ্জনক সিদ্ধান্ত নেন।

চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে জীবন বাজি রেখে অনেকেই এই কঠিন পথ বেছে নেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো সৌভাগ্যক্রমে গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হন, কিন্তু বেশিরভাগেরই জীবনযাত্রা সাগরের মাঝপথেই থেমে যায়।

সম্প্রতি এই ভয়াবহ বাস্তব চিত্রটি আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আল-খুমস উপকূল থেকে প্রায় ১০০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে বহনকারী দুটি নৌকা ইউরোপের পথে সাগরে যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু মাঝপথেই একটি নৌকার স্বপ্নযাত্রা থেমে যায়। চোখের পলকে ভূমধ্যসাগরের উত্তাল ঢেউয়ে নৌকাটি উল্টে গেলে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় কমপক্ষে চারজন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।

জানা গেছে, প্রথম নৌকাটিতে ২৬ জন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। দুর্ঘটনার পর তাদের মধ্যে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তবে তাদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। ওই নৌকায় থাকা বাকিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

ত্রিপোলির উপকূলীয় এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই ইউরোপে যাওয়ার অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য একটি প্রধান ট্রানজিট রুট হিসেবে পরিচিত। একারণে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে নিয়মিতই এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটছে, যা ইউরোপীয় দেশগুলোরও গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে প্রশ্ন হলো, লিবিয়া কেন এমন একটি ট্রানজিট রুটে পরিণত হলো?

অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার একটি পরিচিত ও জনপ্রিয় রুট হিসেবে লিবিয়াকে ব্যবহার করা হয়। ২০১১ সালে লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই দেশটি ইউরোপগামী অভিবাসীদের প্রধান ট্রানজিট রুটে পরিণত হয়।

একসময় গাদ্দাফির শাসনামলে তেলসমৃদ্ধ লিবিয়ায় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা সহজে কাজের সুযোগ পেত। কিন্তু তার পতনের পর দেশটি প্রতিদ্বন্দ্বী বিভিন্ন মিলিশিয়া বাহিনীর সংঘাতে জর্জরিত হয়ে পড়ে। বর্তমানে প্রায় সাড়ে আট লাখেরও বেশি অভিবাসী লিবিয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিভিন্ন অধিকার সংগঠন এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলো জানিয়েছে, লিবিয়ায় আশ্রয় নেওয়া এই শরণার্থী ও অভিবাসীরা স্থানীয় মিলিশিয়াদের হাতে নিয়মিতভাবে চরম নির্যাতন, ধর্ষণ এবং চাঁদাবাজির শিকার হন।

অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন লিবিয়ার কোস্টগার্ডকে বিভিন্ন সরঞ্জাম ও অর্থসহায়তা দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, অভিযোগ উঠেছে যে এই কোস্টগার্ড বাহিনীর সঙ্গেই নির্যাতন ও অপরাধে জড়িত মিলিশিয়াদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লিবিয়া উপকূলে একের পর এক নৌডুবিতে বহু অভিবাসীর প্রাণহানি ঘটায়, জাতিসংঘের সভায় বেশ কয়েকটি দেশ লিবিয়ার অভিবাসী আটককেন্দ্রগুলো বন্ধ করার জন্য জোরালো আহ্বান জানিয়েছে।


গাজা–ইরান ইস্যুতে রহস্যময় ফোনালাপ নেতানিয়াহুর সঙ্গে পুতিনের

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১২:৩৮:৪৬
গাজা–ইরান ইস্যুতে রহস্যময় ফোনালাপ নেতানিয়াহুর সঙ্গে পুতিনের
ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যের অস্থির পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত এই সংলাপকে দুই দেশের নীতিমালা ও আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান পুনর্বিন্যাসের একটি তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। খবর সামাটিভির।

ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ফোনালাপে মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তৃত নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিশেষ করে গাজা উপত্যাকার বর্তমান বাস্তবতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। দুই নেতা হামাস–ইসরাইল নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির অগ্রগতি, বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের ভূমিকা বিষয়ে মতবিনিময় করেন। পাশাপাশি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বহুপাক্ষিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও কথা বলেন তারা।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানায়, পুতিনের উদ্যোগেই শনিবার সন্ধ্যায় ফোনালাপটি অনুষ্ঠিত হয়। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে একাধিক বার যোগাযোগ হলেও এই আলাপটি মধ্যপ্রাচ্য–ভিত্তিক জটিল নিরাপত্তা পরিবেশে ইসরাইল–রাশিয়া সমন্বয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আলাপের সময় নেতানিয়াহু গাজার নিরাপত্তা পরিস্থিতি, ইসরাইলের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা কাঠামো এবং যুদ্ধবিরতির কার্যক্রম নিয়ে পুতিনকে অবহিত করেন।

উল্লেখ্য, পুতিন ও নেতানিয়াহুর সর্বশেষ ফোনালাপ হয়েছিল ২০২৩ সালের ৬ অক্টোবর, হামাসের আকস্মিক আক্রমণের ঠিক পরদিন। সেসময় পুতিন আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ফিলিস্তিন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে রাশিয়ার অবস্থান স্পষ্ট করেন এবং দুই-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনে গাজায় প্রাণহানি ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছায়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার হিসাবে, এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। জনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকা, হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্রে ধারাবাহিক বোমাবর্ষণের কারণে গাজার মানবিক পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে।

পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ২০২৫ সালের ১০ অক্টোবর হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। চুক্তির প্রথম ধাপে পারস্পরিক বন্দি বিনিময় চলছে, যার মাধ্যমে ইসরাইলের কাছে আটক ফিলিস্তিনি বেসামরিক ব্যক্তিদের মুক্ত করা হচ্ছে এবং হামাস আটক ইসরাইলি বন্দিদের ফেরত দিচ্ছে।

চুক্তির অন্যান্য ধাপের মধ্যে রয়েছে গাজার পুনর্গঠন কার্যক্রম, অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণে হামাসবিহীন নতুন শাসন কাঠামো প্রতিষ্ঠা। এসব বিষয়ে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

-রাফসান


১,৪৪৪ টন সোনার সবচেয়ে বড় স্বর্ণভান্ডার আবিষ্কার

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১০:৩০:৪৯
১,৪৪৪ টন সোনার সবচেয়ে বড় স্বর্ণভান্ডার আবিষ্কার
ছবি: সংগৃহীত

চীন তার আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় স্বর্ণ ভান্ডারের সন্ধান পেয়েছে। লিয়াওনিং প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে আবিষ্কৃত এই বিশাল স্বর্ণমজুতকে ১৯৪৯ সালের পর দেশের বৃহত্তম আবিষ্কার হিসেবে ঘোষণা করেছে চীনের প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভান্ডার শুধু পরিমাণে নয়, ভবিষ্যত অর্থনৈতিক গুরুত্বের দিক থেকেও চীনের জন্য একটি নতুন কৌশলগত অধ্যায়ের সূচনা করবে।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দাদংগোউ নামে পরিচিত এলাকায় পাওয়া এই খনিতে মোট ২৫.৮৬ লাখ টন আকরিক রয়েছে, যেখানে প্রতি টনে গড়ে ০.৫৬ গ্রাম স্বর্ণ পাওয়া যাবে। সব মিলিয়ে স্বর্ণের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ১,৪৪৪ টন, যা বিশ্বের অনেক দেশের জাতীয় রিজার্ভের সঙ্গে তুলনীয়। বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারদরে এই স্বর্ণের মূল্য ১৬৬ বিলিয়ন ইউরোর বেশি, যা চীনের স্বর্ণ কৌশলে একটি বড় সংযোজন।

লিয়াওনিং জিওলজিক্যাল অ্যান্ড মাইনিং গ্রুপের অধীনে প্রায় এক হাজার প্রযুক্তিবিদ ও কর্মী মাত্র ১৫ মাসে অনুসন্ধান কাজ সম্পন্ন করেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত অল্প সময়ে এত বড় ভান্ডার শনাক্ত করা অত্যন্ত বিরল ঘটনা, যা চীনের আধুনিক খনিজ অনুসন্ধান প্রযুক্তি ও শ্রমশক্তির দক্ষতার প্রমাণ।

তবে আকরিকের মান তুলনামূলকভাবে কম হলেও এর অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা ‘উচ্চ’ এমনটাই জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। খনন–উত্তোলন প্রকল্পটি ভবিষ্যতে চীনের শিল্প উৎপাদন, বৈদেশিক রিজার্ভ বৈচিত্র্য এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তায় বড় ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে সাইটটির নির্দিষ্ট অবস্থান প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ।

এই আবিষ্কার এসেছে এমন সময়ে যখন বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্বল মার্কিন ডলার, মুদ্রাস্ফীতি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ কেনার প্রবণতা বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু চলতি বছরেই স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। উদীয়মান অর্থনীতিগুলো নিজেদের রিজার্ভ সুরক্ষিত করতে স্বর্ণ কেনায় আরও আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

চীন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্বর্ণ অনুসন্ধান উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০২৪ সালে দেশটি হুনান প্রদেশে ১,০০০ টনের বেশি মজুতের একটি স্বর্ণভান্ডার আবিষ্কার করে। একই বছরের অক্টোবরে গানসু প্রদেশে পাওয়া যায় আরও একটি ৪০ টনের ভান্ডার। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালে চীন ৩৭৭.২৪ টন স্বর্ণ উৎপাদন করে, যা আগের বছরের তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি। তবে অভ্যন্তরীণ চাহিদা ছিল প্রায় এক হাজার টন, যার ফলে আমদানি ও মজুদ গঠন চীনের অর্থনৈতিক কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

বার ও কয়েনের চাহিদা বছরে ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে রয়েছে চীনের মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে সম্পদ সুরক্ষার তীব্র আগ্রহ। বৈশ্বিক অর্থনীতি অনিশ্চয়তায় ডুবে থাকায়, নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণ এখন চীনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

-শরিফুল


আজ একটি যুদ্ধ থামালাম, কাদের উদ্দেশে এই মন্তব্য ট্রাম্পের?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ২১:৫১:২৮
আজ একটি যুদ্ধ থামালাম, কাদের উদ্দেশে এই মন্তব্য ট্রাম্পের?

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে আবারও সীমান্ত সংঘাত শুরু হয়েছে। এই উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশ দুটির নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) এই ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উভয় নেতাকে শান্তিচুক্তিকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

সম্প্রতি থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ দেখা গিয়েছিল। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় মালয়েশিয়াতে দেশ দুটি একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়। কিন্তু সেই চুক্তিটি গত সপ্তাহে থাই সরকার স্থগিত করে দেয়। থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে সীমান্তে একটি স্থলমাইন বিস্ফোরণের অভিযোগ তোলার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

যুদ্ধবিরতি স্থগিত হওয়ার পর বুধবার (১২ নভেম্বর) উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে নতুন করে সংঘর্ষে জড়ানোর অভিযোগ আনে। কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, থাইল্যান্ডের গুলিবর্ষণে তাদের একজন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমান 'এয়ার ফোর্স ওয়ানে' ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন যে, তিনি থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

একজন সাংবাদিক এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ট্রাম্প জবাবে বলেন, "শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে, আজই আমি একটি যুদ্ধ থামিয়ে দিলাম।" তিনি আরও যোগ করেন, "ওরা দারুণ করছে। আমার মনে হয় ওরা ঠিক হয়ে যাবে।"

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে এই বিরোধটি শতাব্দী প্রাচীন। মূলত ফ্রান্সের উপনিবেশিক শাসনামলে তৈরি করা মানচিত্রের ওপর ভিত্তি করে এই সীমান্ত নির্ধারিত হয়েছিল। কিন্তু উভয় দেশই সীমান্তের কিছু অংশের মালিকানা দাবি করায় দীর্ঘদিন ধরে এই উত্তেজনা চলে আসছে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত

মনোস্পুলের ইপিএসে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি

মনোস্পুলের ইপিএসে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি

তালিকাভুক্ত কোম্পানি মনোস্পুল প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২০২৫ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ের প্রতিবেদনে দেখা যায়, কোম্পানির... বিস্তারিত