ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করতে বললেন আদালত, না হলে ব্যবস্থা

বর্তমান যুগে কম্পিউটার ও কী-বোর্ড ব্যবহার করে লেখালেখির প্রচলন বাড়লেও, হাতের লেখার গুরুত্ব কমেনি—বিশেষ করে যদি লেখক একজন চিকিৎসক হন। ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট সম্প্রতি এক আদেশে বলেছেন, পাঠযোগ্য মেডিকেল প্রেসক্রিপশন একটি মৌলিক অধিকার। আদালতের মতে, অস্পষ্ট লেখার কারণে রোগী ভুল ওষুধ সেবন করতে পারেন, যা জীবন-মৃত্যুর পার্থক্য তৈরি করতে পারে।
অস্পষ্ট হাতের লেখা ও মামলার প্রেক্ষাপট
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও অনেক চিকিৎসকের হাতের লেখা অস্পষ্ট, যা প্রায়শই ফার্মাসিস্টদেরও বুঝতে অসুবিধা তৈরি করে। তবে এই সমস্যাটি শুধু হাস্যরসের বিষয় নয়, বরং রোগীর সুরক্ষার জন্য তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতের আদালত এই আদেশটি দেন ধর্ষণ, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগসংক্রান্ত একটি মামলার প্রেক্ষিতে। বিচারকরা বাদী নারীর চিকিৎসাসংক্রান্ত প্রতিবেদন দেখেন, যার অনেক অংশই অস্পষ্ট হাতের লেখার কারণে বোঝা যাচ্ছিল না। আদালতের নথিতে বলা হয়েছে, “একটি শব্দ বা অক্ষরও স্পষ্টভাবে পড়া যায়নি।”
হাইকোর্ট নির্দেশ দেন:
পাঠ্যক্রমে হাতের লেখা: এখন থেকে মেডিকেল কলেজের পাঠ্যক্রমে হাতের লেখা উন্নত করার পাঠ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন: দুই বছরের মধ্যে ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন চালু করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বড় হাতের অক্ষর: ওই সময় পর্যন্ত সকল চিকিৎসককে বড় হাতের অক্ষরে স্পষ্টভাবে প্রেসক্রিপশন লিখতে হবে।
ভারতীয় মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) সভাপতি দিলীপ ভানুশালী জানিয়েছেন, শহর ও বড় শহরগুলোতে অনেক চিকিৎসক ইতোমধ্যেই ডিজিটাল প্রেসক্রিপশনে চলে গেছেন। তিনি বলেন, “তবে আমরা আমাদের সদস্যদের পরামর্শ দিয়েছি, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বড় অক্ষরে প্রেসক্রিপশন লেখা উচিত, যাতে রোগী ও কেমিস্ট উভয়ই পড়তে পারেন।”
সূত্র: বিবিসি
আজ একটি যুদ্ধ থামালাম, কাদের উদ্দেশে এই মন্তব্য ট্রাম্পের?
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে আবারও সীমান্ত সংঘাত শুরু হয়েছে। এই উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশ দুটির নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) এই ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উভয় নেতাকে শান্তিচুক্তিকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
সম্প্রতি থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ দেখা গিয়েছিল। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় মালয়েশিয়াতে দেশ দুটি একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়। কিন্তু সেই চুক্তিটি গত সপ্তাহে থাই সরকার স্থগিত করে দেয়। থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে সীমান্তে একটি স্থলমাইন বিস্ফোরণের অভিযোগ তোলার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
যুদ্ধবিরতি স্থগিত হওয়ার পর বুধবার (১২ নভেম্বর) উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে নতুন করে সংঘর্ষে জড়ানোর অভিযোগ আনে। কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, থাইল্যান্ডের গুলিবর্ষণে তাদের একজন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।
শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমান 'এয়ার ফোর্স ওয়ানে' ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন যে, তিনি থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
একজন সাংবাদিক এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ট্রাম্প জবাবে বলেন, "শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে, আজই আমি একটি যুদ্ধ থামিয়ে দিলাম।" তিনি আরও যোগ করেন, "ওরা দারুণ করছে। আমার মনে হয় ওরা ঠিক হয়ে যাবে।"
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে এই বিরোধটি শতাব্দী প্রাচীন। মূলত ফ্রান্সের উপনিবেশিক শাসনামলে তৈরি করা মানচিত্রের ওপর ভিত্তি করে এই সীমান্ত নির্ধারিত হয়েছিল। কিন্তু উভয় দেশই সীমান্তের কিছু অংশের মালিকানা দাবি করায় দীর্ঘদিন ধরে এই উত্তেজনা চলে আসছে।
প্রকাশ হলো ২০২৬ সালের ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ
এমিরেটস অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি জানিয়েছে যে, ২০২৬ সালের ঈদুল ফিতর আগামী ২০ মার্চ (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত হতে পারে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান বলেছেন, জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাব অনুযায়ী, ১৪৪৭ হিজরির রমজান মাসের চাঁদ ২০২৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, সেদিন খালি চোখে চাঁদ দেখা কঠিন হতে পারে।
এই হিসাব অনুযায়ী, ২০২৬ সালের রমজান মাস ১৯ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) থেকে শুরু হতে পারে। এমিরেটস অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি আরও পূর্বাভাস দিয়েছে যে, এ বছর রমজান মাস ৩০ দিন পূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি তা-ই হয়, তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী ঈদের ছুটি একদিন বাড়তে পারে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রমজান ৩০ দিন পূর্ণ হলে ১৯ মার্চ (বৃহস্পতিবার) থেকে ২২ মার্চ (রোববার) পর্যন্ত টানা চার দিনের ঈদ ছুটি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। সেক্ষেত্রে, ২৩ মার্চ (সোমবার) থেকে দেশটিতে স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে।
যদিও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই পূর্বাভাস দিয়েছেন, তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঈদের আনুষ্ঠানিক তারিখ সেদেশের 'মুন-সাইটিং কমিটি' বা চাঁদ দেখা কমিটিই চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত করবে। তা সত্ত্বেও, হিসাব অনুযায়ী ২০ মার্চ তারিখেই শাওয়াল মাসের প্রথম দিন বা ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঈদুল ফিতর মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এর সঙ্গে যেহেতু ধর্মীয় অনুভূতি গভীরভাবে জড়িত, তাই চাঁদ দেখার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রীয়ভাবে ঈদের তারিখ নির্ধারণ করবে না।
২০ হাজার সেনা প্রস্তুত: গাজা নিয়ে জর্ডানের সাথে তথ্য বিনিময়ে ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে, দেশটি গাজার জন্য ২০ হাজার সৈন্য প্রস্তুত করছে। তবে আন্তর্জাতিক অনুমোদন পাওয়ার পরেই এই বাহিনীকে উপত্যকায় মোতায়েন করা হবে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) টিআরটি ওয়ার্ল্ডের একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্যাফরি স্যামসুদ্দিন জানিয়েছেন, এই সেনা মোতায়েনের জন্য ইন্দোনেশিয়া দুটি সম্ভাব্য পথ নিয়ে অনুসন্ধান করছে। প্রথমটি হলো জাতিসংঘের অধীনে এবং দ্বিতীয়টি হলো এমন একটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার অধীনে, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের উদ্যোগে গঠিত হতে পারে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, দ্বিতীয় বিকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হলে রাষ্ট্রপ্রধান পর্যায়ে উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক সমন্বয়ের প্রয়োজন হবে।
তিনি বলেন, আরব দেশগুলো—বিশেষ করে সৌদি আরব, জর্ডান, মিসর, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত—যদি এই পদক্ষেপে সবুজ সংকেত দেয়, তবে ইন্দোনেশিয়া তাতে আনন্দের সঙ্গে অংশ নেবে। এর পাশাপাশি, এই সেনা মোতায়েনের জন্য ইসরায়েলের অনুমতিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পুরো পরিকল্পনাটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য প্রস্তাবিত ২০ দফা উদ্যোগের প্রথম ধাপের অংশ। এই উদ্যোগের আওতায় গত ১০ অক্টোবর থেকে গাজায় ধাপে ধাপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।
সম্প্রতি জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ জাকার্তা সফর করেছেন। এই সফরে তিনি গাজা পরিস্থিতি নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর সঙ্গে আলোচনা করেন। ওই বৈঠকে দুই দেশ গাজা নিয়ে নিজেদের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।
জর্ডানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ইউসুফ আহমেদ আল-হুনাইতির সঙ্গে বৈঠকের পর ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, "আমরা যৌথভাবে একটি কমিটি গঠন করব, যা গোয়েন্দা তথ্য ও হালনাগাদ পরিস্থিতি বিনিময় করবে।" তিনি আরও বলেন, গাজা সীমান্তের খুব কাছের দেশ হওয়ায় জর্ডানের তথ্য ইন্দোনেশিয়ার জন্য কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি জানান, ভবিষ্যতে শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই ইন্দোনেশিয়ার এই গোয়েন্দা তথ্যের প্রয়োজন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতার অংশ হিসেবে এই দুই দেশ ড্রোন প্রযুক্তি উন্নয়নেও একসঙ্গে কাজ করবে। ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত অস্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান পিটিআই পিন্দাদ এবং জর্ডানের প্রতিষ্ঠান ডিপ এলিমেন্ট যৌথভাবে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
ক্ষমতার চূড়ান্ত কেন্দ্রীকরণ: পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী কি সর্বশক্তিমান?
পাকিস্তানের ২৭তম সাংবিধানিক সংশোধনী নিঃসন্দেহে দেশটির রাজনৈতিক যাত্রাপথে একটি নতুন ও অত্যন্ত বিতর্কিত অধ্যায়। বৃহস্পতিবার আইনে স্বাক্ষর হওয়ার পর থেকেই সংশোধনীটি পাকিস্তানি রাজনীতিকে গভীর আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। কারণ এটি শুধু সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে আজীবন অ-গ্রেফতারযোগ্য ও অ-অভিযোগযোগ্য করে তুলছে না, বরং তাকে তিন বাহিনীর কার্যত সর্বোচ্চ নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত করছে। পাশাপাশি দেশের বিচারব্যবস্থায় এমন কাঠামোগত পরিবর্তন আনছে যা সমালোচকদের মতে পাকিস্তানকে আরও গভীরভাবে সেনা-প্রধানতন্ত্র বা স্বৈরাচারী শাসনের দিকে ঠেলে দেবে।
এই সংশোধনীটি একদিকে সেনাবাহিনীর জন্য নতুন প্রশাসনিক কাঠামোর যুক্তি তৈরি করেছে, অন্যদিকে আদালতগুলোর স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। ফলে পাকিস্তান আবারও সেই পুরনো বিতর্কে ফিরে গেছে, যেখানে বেসামরিক ও সামরিক ক্ষমতার দ্বন্দ্ব রাষ্ট্রশাসনের প্রকৃত চরিত্র নির্ধারণ করে।
সামরিক আধিপত্যের নতুন স্থাপত্য
পাকিস্তানের ইতিহাসে সামরিক বাহিনী সবসময়ই একটি সর্বগ্রাসী প্রভাবশালী শক্তি। কখনো প্রকাশ্যে ক্ষমতা দখল, কখনো নেপথ্য নিয়ন্ত্রণ, আর কখনো ‘হাইব্রিড সিস্টেম’ নামের আংশিক গণতান্ত্রিক কাঠামোর ভেতর দিয়ে সেনাবাহিনী ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছে।কিন্তু ২৭তম সংশোধনী নিয়ে বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যানের মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলছেন, পাকিস্তান এখন আর হাইব্রিড নয়, বরং “পোস্ট–হাইব্রিড” বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। তার ভাষায়, “এখন বেসামরিক–সামরিক ভারসাম্য যতটা অসম হতে পারে, ঠিক ততটাই অসম অবস্থায় পৌঁছে গেছে।”
এই সংশোধনী অনুসারে আসিম মুনির শুধু সেনাবাহিনী নয়, নৌ ও বিমানবাহিনীও তত্ত্বাবধান করবেন। তার ফিল্ড মার্শাল উপাধি আজীবন বহাল থাকবে। এমনকি অবসর নিলেও রাষ্ট্রপতির পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী তার নতুন দায়িত্ব নির্ধারণ করবেন। অর্থাৎ পাকিস্তানের জনজীবনে তিনি আজীবন একটি কেন্দ্রীয় ও প্রভাবশালী চরিত্র হিসেবে অবস্থান করবেন।
সমর্থকদের মতে, এটি সামরিক কমান্ড কাঠামোকে আধুনিক ও স্পষ্ট করেছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, এটি “আধুনিক যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী প্রতিরক্ষাকে পুনর্গঠন” করার অংশ।কিন্তু বিরোধীরা বলছেন, এটি স্পষ্টতই সামরিক কর্তৃত্বকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে, যেখানে বেসামরিক সমাজ ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরও দুর্বল হবে। মানবাধিকার কমিশনের সহ-সভাপতি মুনিজায়ে জাহাঙ্গীর সোজাসাপটা বলেছেন, “এটি সামরিক ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করেছে এমন এক সময়ে, যখন তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি ছিল।”
বিচারব্যবস্থায় অস্থিরতা: স্বাধীনতার অবসান?
সংশোধনীর দ্বিতীয় ও সবচেয়ে বিতর্কিত দিক হলো বিচারব্যবস্থায় রদবদল। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সাংবিধানিক প্রশ্নের সর্বোচ্চ বিচারক ছিল। কিন্তু নতুন আইন অনুযায়ী গঠিত হচ্ছে একটি নতুন আদালত, ফেডারেল কনস্টিটিউশনাল কোর্ট (FCC), যার বিচারপতি ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি। সমালোচকদের মতে, এটি আদালতের স্বাধীনতাকে কার্যত নির্বাসিত করেছে।
জাহাঙ্গীরের ভাষায়,
“রাষ্ট্র যখন বিচারপতি ও সাংবিধানিক বেঞ্চ নির্ধারণ করবে, তখন একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি কোন ন্যায়বিচারের আশা করবো?”
অন্যদিকে বিশ্লেষক আরিফা নূর বলছেন, পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থা এখন “কার্যত নির্বাহী শাখার অধীনস্থ।” এর ফলে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক কর্তৃত্ব সংকুচিত হয়ে পড়েছে, আর বিচারকদের স্বাধীনতা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সুস্পষ্ট প্রতিক্রিয়া এসেছে বিচারপতিদের দিক থেকেও। আইন স্বাক্ষর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুজন সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন। জাস্টিস আথার মিনাল্লাহ তার পদত্যাগপত্রে লিখেছেন,
“যে সংবিধান রক্ষা ও প্রতিরক্ষার শপথ নিয়েছিলাম, সেটি আর বিদ্যমান নেই।”
অন্যদিকে জাস্টিস মানসুর আলী শাহ বলেছেন, ২৭তম সংশোধনী “সুপ্রিম কোর্টকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে”।
নতুন আইনে বিচারকদের জোরপূর্বক বদলি করা যাবে, আর যদি তারা বদলিতে রাজি না হন, তাহলে তাদের অবসরে পাঠানো হতে পারে। এটি বিচারকদের ওপর চাপ বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করেন অনেক আইনজীবী।
কারাচির আইনজীবী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলছেন,
“এটি বিচারকদের শাসকের ইচ্ছানুযায়ী পরিচালিত হওয়ার দিকে ঠেলে দেবে। এবং এটি পাকিস্তানের ক্ষমতার ভারসাম্যকে আরও নাজুক করে তুলবে।”
সামাজিক অস্থিরতার ঝুঁকি
বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সংশোধনী শুধু সামরিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাই বাড়ায়নি, বরং সাধারণ মানুষের অসন্তোষ, অবিশ্বাস ও বঞ্চনার অনুভূতিও বাড়িয়ে তুলতে পারে। কুগেলম্যান সতর্ক করে বলেছেন, “অবরুদ্ধ ক্ষোভ সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।”
এদিকে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি—ইমরান খানের সঙ্গে সেনাবাহিনীর টানাপোড়েন, আদালতের উপর ক্রমবর্ধমান চাপ, এবং ক্ষমতার নতুন পুনর্বিন্যাস—সবই মিলিয়ে একটি অস্থিরতার ছবি তৈরি করছে।
পাকিস্তান কোথায় যাচ্ছে?
২৬তম সংশোধনীতে সংসদকে প্রধান বিচারপতি নির্বাচনের ক্ষমতা দেওয়ার পর এবার ২৭তম সংশোধনী কার্যত নির্বাহী–সামরিক ক্ষমতার পূর্ণ সমন্বয় ঘটিয়েছে। ইতোমধ্যে ২৮তম সংশোধনী নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
এ থেকে স্পষ্ট—বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী গণতন্ত্রগুলো যখন বেসামরিক শাসনের উন্নয়নের পথে হাঁটছে, পাকিস্তান তখন উল্টো দিকে হাঁটছে, আরও শক্তভাবে ‘এস্টাবলিশমেন্ট’-কেন্দ্রিক শাসনের দিকে।
প্রশ্ন হলো, সাধারণ মানুষ, বিচারব্যবস্থা, রাজনৈতিক দল এবং বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম—এই নতুন বাস্তবতার সঙ্গে কিভাবে খাপ খাইয়ে নেবে? ইতিহাস বলছে, পাকিস্তানে ক্ষমতার একচ্ছত্রতা কখনো স্থায়ী স্থিতিশীলতা আনতে পারেনি। বরং অস্থিরতা, অবিশ্বাস এবং রাজনৈতিক সংহতির ভাঙ্গনই সৃষ্টি করেছে।
আজকের পাকিস্তান কি সেই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি দেখতে যাচ্ছে?আগামী মাসগুলোই এর উত্তরের ইঙ্গিত দেবে।
তথ্য সূত্র: বিবিসি।
ট্রাম্পের জরুরি ফোনালাপ: থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া উত্তেজনা প্রশমনে মার্কিন হস্তক্ষেপ
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুটি প্রতিবেশী দেশ—থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া—এর মধ্যে নতুন উত্তেজনা দেখা দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্তিচুক্তির স্থায়িত্ব রক্ষায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন। শুক্রবার ট্রাম্প জানান, তিনি দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন এবং তাদেরকে শান্তিচুক্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত ২৬ অক্টোবর এশিয়া সফরকালে ট্রাম্প দুই দেশের মধ্যে কো-সাইন করেন একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি, যেটিকে তিনি তাঁর বৈশ্বিক শান্তি প্রচেষ্টার অন্যতম সাফল্য হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। সেই সময় তিনি দাবি করেছিলেন, সারা বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাত মীমাংসায় তাঁর ভূমিকা তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের দাবিদার করে তুলেছে।
তবে চুক্তি সইয়ের মাত্র কয়েকদিন পর পরিস্থিতি আবারও অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। সোমবার থাইল্যান্ড চুক্তি স্থগিত করে, অভিযোগ করে যে সীমান্ত এলাকায় একটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে তাদের সেনারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপর বুধবার দুই দেশের মধ্যে নতুন সংঘর্ষের অভিযোগ উঠে, যেখানে কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে গোলাগুলিতে এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
ফ্লোরিডাগামী এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, দুই দেশের নেতাদের তিনি ইতোমধ্যে ফোনে কথা বলেছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, “আমি আজই একটি যুদ্ধ থামিয়েছি—শুল্ক ও শুল্কের হুমকি ব্যবহার করে।” তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল, বিষয়টি তিনি সরাসরি নিজের কূটনৈতিক দক্ষতা ও চাপ প্রয়োগের কৌশলের সফল উদাহরণ হিসেবে দেখাতে চান।
হোয়াইট হাউস জানায়, মালয়েশিয়ার সঙ্গেও ট্রাম্প যোগাযোগ করেছেন, যারা থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সংঘাত নিরসনে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় ছিল। কুয়ালালামপুরেই চুক্তিটি যৌথভাবে সই করা হয়েছিল।
এই উত্তেজনার পটভূমি বহু পুরনো। ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক আমলে তৈরি সীমান্ত মানচিত্র নিয়ে শতবর্ষের বিরোধ নতুন করে উসকে দেয় দুই দেশের মধ্যে অবিশ্বাস। সীমান্তবর্তী কয়েকটি মন্দিরকে কেন্দ্র করে মালিকানা বিতর্কই সংঘাতের মূল কেন্দ্রবিন্দু। গত গ্রীষ্মে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে ৪৩ জন নিহত হয় এবং প্রায় তিন লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়—যা পরিস্থিতির ভয়াবহতার এক কঠিন স্মারক হয়ে আছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাময়িক যুদ্ধবিরতির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দুই দেশের ইতিহাস, সীমান্তব্যবস্থা ও রাজনৈতিক অবস্থানের দীর্ঘমেয়াদি সমাধান। নতুবা যে কোনো সময় ছোট একটি ঘটনার সূত্র ধরে বড় সংঘাতে রূপ নিতে পারে পরিস্থিতি। এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের ফোনালাপ ও মধ্যস্থতা পরিস্থিতি শান্ত করতে সহায়তা করতে পারে, তবে প্রকৃত সমাধান নির্ভর করছে সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির বাস্তব অগ্রগতির ওপর।
-নাজমুল হাসান
নিরাপত্তা পরিষদে সোমবার ভোট: ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনা ঘিরে উত্তেজনা
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজা প্রশ্নে আগামী সোমবার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কূটনীতিকদের মতে, এই ভোটের লক্ষ্য হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা শান্তি পরিকল্পনাকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন দেওয়া এবং দুই বছরের সংঘাত–পরবর্তী শান্তি প্রক্রিয়ায় একটি নতুন ধাপ স্থাপন করা।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের সঙ্গে টানা আলোচনার মাধ্যমে এমন একটি প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করে, যা যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা, গাজার নিরাপত্তা কাঠামো পুনর্গঠন এবং মানবিক সহায়তা নির্বিঘ্নে পৌঁছানোর জন্য একটি সমন্বিত নীতি প্রণয়ন করে। খসড়ায় গাজার পুনর্গঠন, জরুরি সেবা ব্যবস্থাপনা, এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার মতো বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রস্তাবের অন্যতম দিক হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক স্থায়ী নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার ধারণা, যা গাজার অভ্যন্তরে অস্ত্রবিরতি তদারকি করবে এবং মানবিক সহায়তার পথ খুলে দেবে। একই সঙ্গে, ভবিষ্যৎ প্রশাসনিক কাঠামো ও পুনর্গঠন কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের ভূমিকা সুসংহত করার কথাও এতে রয়েছে।
এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে দ্রুত ভোট আয়োজনের পক্ষে রয়েছে একাধিক আরব ও মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ — বিশেষ করে মিশর, সৌদি আরব ও তুরস্ক। তাদের মতে, যুদ্ধবিরতির পর গাজায় স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা এখন অপরিহার্য।
তবে নিরাপত্তা পরিষদের সব সদস্য দেশ সমানভাবে এই প্রস্তাবে সন্তুষ্ট নয়। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, পরিকল্পনাটি এখনও পুরোপুরি ভারসাম্যপূর্ণ নয় এবং গাজার রাজনৈতিক বাস্তবতা ও জনমতের বিষয়টি যথেষ্ট প্রতিফলিত হয়নি। তাই ভোটের আগে পরিষদের অভ্যন্তরে মতানৈক্য দূর করার জন্য চলছে নিবিড় কূটনৈতিক তৎপরতা।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ভোট গাজার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পথনির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। প্রস্তাবটি গৃহীত হলে তা কেবল যুদ্ধবিরতিকে দীর্ঘস্থায়ী করতেই নয়, বরং গাজায় নতুন প্রশাসনিক কাঠামো ও মানবিক পুনর্গঠনের ভিত্তি স্থাপন করতেও ভূমিকা রাখতে পারে। তবে ব্যর্থ হলে তা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক কূটনীতির জন্য আরেকটি হারানো সুযোগ হিসেবে চিহ্নিত হবে।
-নাজমুল হাসান
জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরের থানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরের শ্রীনগরে একটি থানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে নয়জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২৯ জন।
শনিবার ১৫ নভেম্বর মধ্যরাতে নোগাম থানায় জব্দ করা বিস্ফোরকের নমুনা পরীক্ষা করার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
নিহতদের বেশিরভাগই পুলিশ সদস্য এবং ফরেনসিক টিমের সদস্য। বিস্ফোরণে গুরুতর আহত পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। নিহতদের মধ্যে শ্রীনগর প্রশাসনের দুজন কর্মকর্তাও রয়েছেন।
বিস্ফোরণে আহতদের দ্রুত সেনাবাহিনীর ৯২ বেস হাসপাতাল ও শের-ই-কাশ্মির ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পরই পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নোগাম থানায় ছুটে যান এবং পুরো এলাকা ঘিরে ফেলা হয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নোগাম থানায় জব্দ করা বিস্ফোরকের নমুনা পরীক্ষা করার সময় এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে এই পরীক্ষা চলছিল।
ভূমধ্যসাগর আবারও মৃত্যুকূপ-এক বছরে এক হাজার প্রাণহানি
ভূমধ্যসাগর আবারও অভিবাসীদের জন্য ভয়ংকর মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। বিপজ্জনক এই রুট পাড়ি দিতে গিয়ে চলতি বছর মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, প্রতিটি নতুন দুর্ঘটনার সঙ্গে মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে, আর এই রুটের ঝুঁকি আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
সর্বশেষ বড় ট্র্যাজেডিটি ঘটে ৮ নভেম্বর লিবিয়ার উপকূলে। আল-বুরি তেলক্ষেত্রের কাছে ৪৯ জন অভিবাসী ও শরণার্থী নিয়ে ডুবে যায় একটি রাবারের নৌকা। আইওএম জানায়, নৌকাটিতে ছিল ৪৭ জন পুরুষ ও দুই নারী। ৩ নভেম্বর লিবিয়ার জুয়ারা শহর থেকে যাত্রা শুরু হলেও যাত্রার ছয় ঘণ্টা পরই প্রচণ্ড ঢেউয়ের কারণে ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। এরপর ছয় দিন ধরে খোলা সমুদ্রে ভেসে থাকার পর মাত্র সাতজন সুদানের চারজন, নাইজেরিয়ার দুইজন এবং ক্যামেরুনের একজন জীবিত উদ্ধার হন। বাকি ৪২ জন এখনো নিখোঁজ, যাদের সবাইকে মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আইওএম জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের জরুরি চিকিৎসা, খাবার এবং পানি সরবরাহ করা হয়েছে। সংস্থাটি আরও বলেছে, সুরমান ও ল্যাম্পেডুসার কাছে সাম্প্রতিক কয়েকটি মর্মান্তিক ঘটনার পরবর্তী এই ট্র্যাজেডি আবারও প্রমাণ করছে, মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুট বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী অভিবাসন পথগুলোর একটি।
আইওএম আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার, নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসন পথ তৈরি এবং শক্তিশালী উদ্ধার অভিযান বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে, যাতে এই মর্মান্তিক প্রাণহানি রোধ করা যায়।
অন্যদিকে ইউনিসেফের ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক রেজিনা ডি ডোমিনিসিস জানিয়েছেন, ২০২৪ সালেই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ২ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। যা এই রুটের মানবিক সংকটকে আরও গভীর করে তুলছে।
-রাফসান
১৩ ঘণ্টার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা শুরু
দক্ষিণ কোরিয়ায় আবারও শুরু হলো বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ, কঠোর ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে চ্যালেঞ্জিং বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা সুনুং বা সিসেট। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকেই সারাদেশজুড়ে নেমে এসেছে এক বিশেষ নীরবতা। প্রায় ১৩ ঘণ্টাব্যাপী এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে গোটা দেশ যেন একদিনের জন্য থমকে দাঁড়ায়। শিক্ষার্থীদের মনোযোগে ন্যূনতম ব্যাঘাত না ঘটানোর জন্য পরীক্ষা শুরুর আগে থেকেই রাস্তাঘাটে যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে, অনেক এলাকায় সাময়িকভাবে ফ্লাইট ওঠানামাও নিয়ন্ত্রিত হয়। দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং নির্মাণকাজ পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয় দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রচলিত এ ‘পরীক্ষা দিবস’-এ।
এ বছর সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী সুনুং পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। তাদের এক বছরের প্রস্তুতির চূড়ান্ত মূল্যায়ন হয় এই পরীক্ষায়, যার ওপর নির্ভর করে তাদের ভবিষ্যৎ উচ্চশিক্ষার পথ, চাকরির সুযোগ এবং সামাজিক মর্যাদার অবস্থান। দক্ষিণ কোরিয়ার সমাজে এই পরীক্ষার তাৎপর্য এতটাই গভীর যে, অভিভাবকরা সন্তানদের সফলতার জন্য মন্দিরে প্রার্থনা করেন, শিক্ষকরা স্কুলে বিশেষ কাউন্সেলিং সেশন নেন এবং সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় নীরবতার এক অলিখিত সামাজিক চুক্তি পালন করেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এই দিনটিকে বিশেষ নিরাপত্তা দিবস হিসেবে বিবেচনা করে। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়, প্রতিটি সেন্টারের ভেতরে শব্দ নিয়ন্ত্রণ ও জরুরি সেবা প্রস্তুত রাখা হয়, এবং শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদে ও সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছতে পারে, সেজন্য চলাচল-মূলক সহায়তা প্রদান করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় জীবনে এই পরীক্ষার অবস্থান কেবল একটি শিক্ষাব্যবস্থার অংশ নয়, বরং এটি এক প্রজন্মের স্বপ্ন, সংগ্রাম ও সামাজিক আকাঙ্ক্ষার প্রতীক।
পাঠকের মতামত:
- আজ একটি যুদ্ধ থামালাম, কাদের উদ্দেশে এই মন্তব্য ট্রাম্পের?
- ধূমপান ছাড়ার পর শরীর যেভাবে নিজেকে 'মেরামত' করে, জানুন বিস্তারিত
- সন্ধ্যার আতঙ্ক: মাত্র দুই ঘণ্টায় ঢাকার তিন এলাকায় ৪টি বিস্ফোরণ
- অ্যাকশন, রিভেঞ্জ আর সিক্রেট মিশন: দেখুন সেরা ১০ কোরিয়ান অ্যাকশন সিরিজ!
- রাজনৈতিক দলগুলো ফ্যাসিবাদের ভাষায় কথা বলছে: ডাকসু ভিপি
- বরিশালে হুলস্থুল কাণ্ড: পুলিশের হাতে কামড় দিয়ে ছাত্রদল নেতার পলায়ন
- "বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা হবে"
- রেকর্ড ভাঙল সরকারের ঋণ, অর্থ বিভাগের পরিসংখ্যানে নতুন তথ্য
- প্রকাশ হলো ২০২৬ সালের ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ
- মতিঝিলে শরিফ ওসমান হাদির প্রচারে বাধা, গায়ে ময়লা পানি নিক্ষেপ
- ২০ হাজার সেনা প্রস্তুত: গাজা নিয়ে জর্ডানের সাথে তথ্য বিনিময়ে ইন্দোনেশিয়া
- টাকার ফাঁদ নাকি ত্রিভুজ প্রেম? আশরাফুল হত্যায় দুই আসামি দিলেন দুই ভাষ্য, বাড়ছে রহস্য
- পুলিশের মনোবল ও দক্ষতা বেড়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
- এ মাসেই আত্মপ্রকাশ ঘটছে বামপন্থিদের নতুন বৃহত্তর জোটের
- 'ভারতের দাদাগিরি' নিয়ে ফখরুলের মন্তব্য, ক্ষমতায় এলে কী করবে বিএনপি?
- আগের মতো নির্বাচন হলে দুর্ভোগ নামবে: খুলনায় জামায়াত নেতার হুঁশিয়ারি
- ১৫ মাস পর মুখ খুললেন হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে হঠাৎ ভিন্ন সুর
- ক্ষমতার চূড়ান্ত কেন্দ্রীকরণ: পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনী কি সর্বশক্তিমান?
- ত্রৈমাসিক আর্থিক প্রতিবেদনে ICB–এর যেমন পারফরম্যান্স
- নষ্ট ছবি ঠিক করতে আর অ্যাপ লাগবে না, গুগল ফটোসেই নতুন 'জাদু'
- প্রবাসীরাও এবার ভোট দেবেন, জেনে নিন সহজ নিয়ম
- ভোটের মাঠে নতুন দল এনসিপি, কারা লড়ছেন কোন আসন থেকে?
- সংঘাতের ছায়ায় দম্পতির শোচনীয় পরিণতি: কোনাবাড়িতে স্ত্রী নিহত, স্বামী গুরুতর আহত
- ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার সোহেল তাজ
- শীতে ঠান্ডা পানিতে গোসল? শুনলেই ভয়, কিন্তু এর উপকার জানলে অবাক হবেন
- বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের জন্য দেশে প্রথমবার পূর্ণাঙ্গ রোবোটিক্স ডিগ্রি
- ব্যবসায়ীদের সতর্কবার্তা: রাজনৈতিক স্বচ্ছতা না এলে বিনিয়োগ ফিরবে না
- 'ভাড়াটে টোকাই' দিয়ে চলে দল? আওয়ামী লীগ নিয়ে প্রেস সচিবের ফেসবুক পোস্ট
- এক লাল কার্ডে জটিল সমীকরণ: রোনালদোর বিশ্বকাপ স্বপ্ন কি ভাঙবে?
- গলায় সাদা দানা? এটি খাবারের টুকরো নয়, হতে পারে টনসিল স্টোন
- সন্তানদের প্রতি ইনসাফ: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুপম শিক্ষা
- হানিয়া আমিরের সঙ্গে কাজ নিয়ে মুখ খুললেন শাকিব, জল্পনা কি সত্যি হচ্ছে?
- একাই টানছেন দেশ ও ক্লাব: হালান্ড কি মেসি-রোনালদোর আসল উত্তরসূরি? পরিসংখ্যান কী বলছে?
- ট্রাম্পের জরুরি ফোনালাপ: থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া উত্তেজনা প্রশমনে মার্কিন হস্তক্ষেপ
- তেঁতুলিয়া–চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন ১৪ ডিগ্রি, শীতের ছোঁয়া সারাদেশে
- অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে ঢাকা আবারও শীর্ষের কাতারে
- ঢাকার আজকের নামাজের সময়সূচি প্রকাশ
- নিরাপত্তা পরিষদে সোমবার ভোট: ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনা ঘিরে উত্তেজনা
- শীতের সবজি এলেও স্বস্তি নেই, বাজারে গিয়ে ক্রেতাদের মাথায় হাত
- রাজধানীতে আজ চারটি গুরুত্বপূর্ণ সভা ও আলোচনা
- ৭ বছরের মধ্যে ইন্টারনেট স্বাধীনতায় সেরা অবস্থানে বাংলাদেশ
- ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাসে আগুন
- জরুরি সংস্কার: আজ ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকবে যেসব এলাকা
- বন্ধুকে হত্যা করে ২৬ টুকরো, আশরাফুল হত্যায় মিলছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য
- জলবায়ু সম্মেলন তেল গ্যাস কোম্পানির দখলে আলোচনা এখন দূষণকারীদের হাতে
- জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরের থানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ
- নির্বাচনী ট্রেন্ড শুরু ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন নিয়ে সব সংশয় কাটল
- শীতের তীব্রতা বাড়লেও উষ্ণ হলো মন পর্যটন আর অতিথি পাখির ভিড়ে মুখর এখন বাংলাদেশ
- গণভোটে ‘না’–এর ডাক: নোয়াখালীতে বিএনপি নেতা জয়নুল ফারুকের কঠোর অবস্থান ও নির্বাচনী সমীকরণের নতুন বার্তা
- কাদিয়ানী ইস্যু ও পাকিস্তানি সংযোগ: বাংলাদেশের ধর্মীয় রাজনীতিতে বিপজ্জনক অস্থিরতার ইঙ্গিত
- সিলেট টেস্টে আয়ারল্যান্ড অলআউট ২৮৬ রানে, দুর্দান্ত সূচনায় বাংলাদেশ
- গোলের রাজা কে, মেসি না রোনালদো? সংখ্যার হিসাবে কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে!
- কোরিয়ান ড্রামায় মুগ্ধ বিশ্ব: মিস্ট্রি থ্রিলার থেকে টাইম ট্রাভেল, দেখুন সেরা ১০ সিরিজ!
- সাদমানের পর মুমিনুলকে নিয়ে জয়ী রথ বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে রেকর্ড জুটি
- মামলার রেশ না কাটতেই তিশার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের অভিযোগ
- বাংলাদেশ নেপাল ম্যাচের আগে জেনে নিন হেড টু হেড পরিসংখ্যানে কারা চালকের আসনে
- নেপালের বিপক্ষে দুর্দান্ত হামজা জোড়া গোলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিল বাংলাদেশ
- ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে
- আজ বিশ্ব ব্যাচেলর দিবস: একাকীত্ব নয়, স্বাধীনতার উৎসব
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বড় ধরনের পতন: ৩৮৪ কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১৫টি বেড়েছে
- আজকের খেলাধুলা সূচি
- আজ রাজধানীতে রাজনৈতিক যেসব কর্মসূচি, কোথায় কী হচ্ছে জেনে নিন
- লকডাউনের দিনেও দোকান-শপিংমল খোলা থাকবে: মালিক সমিতি
- বাংলাদেশ–ভারত ফুটবল ম্যাচের টিকিটের দাম প্রকাশ
- রবিবার ঢাকায় বন্ধ থাকবে যেসব মার্কেট ও এলাকা








