‘শত্রুদের অনুতপ্ত করবে’: ইরানের শীর্ষ জেনারেলের কড়া হুঁশিয়ারি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ২১:৪৭:১১
‘শত্রুদের অনুতপ্ত করবে’: ইরানের শীর্ষ জেনারেলের কড়া হুঁশিয়ারি
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মুসাভি। ছবি: সংগৃহীত

ইরানের শীর্ষ জেনারেল শত্রুদের যে কোনো হুমকির ‘সময়োপযোগী এবং সিদ্ধান্তমূলক’ জবাব দেওয়ার জন্য ইরানের পূর্ণ প্রস্তুতি নিশ্চিত করেছেন। আইআরএনএ নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইরানের প্রতিরক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে এক বার্তায় সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মুসাভি জোর দিয়ে বলেন, “সশস্ত্র বাহিনী তাদের ক্ষমতা এবং কৌশলগত উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে, সময়োপযোগী ও সিদ্ধান্তমূলক প্রতিক্রিয়া প্রদানের জন্য প্রস্তুত, যা শত্রুদের তাদের কর্মের জন্য অনুতপ্ত করবে।”

ইরান-ইরাক যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ও আত্মনির্ভরশীলতা

তিনি দীর্ঘ আট বছরের ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময়টিকে ‘বিশ্বব্যাপী অহংকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং স্থিতিস্থাপকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়’ হিসাবে বর্ণনা করেন। মুসাভি উল্লেখ করেন, এই অভিজ্ঞতা ইরানের জন্য একটি অমূল্য সম্পদ হয়ে উঠেছে, যা বিশ্বাস, আত্মনির্ভরতা ও জাতীয় ঐক্যের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। এটি ইসলামী প্রজাতন্ত্রকে প্রতিরক্ষামূলক স্বয়ংসম্পূর্ণতা এবং উন্নত প্রযুক্তির দিকে এগিয়ে নিয়েছে।

ইসরায়েলের সংঘাত ও হাইব্রিড যুদ্ধ মোকাবেলার প্রস্তুতি

তিনি সাম্প্রতিক সংঘাত, বিশেষ করে ইসরায়েলি সরকারের আরোপিত ১২ দিনের যুদ্ধকে ‘জাতীয় শক্তি প্রদর্শনের জন্য হুমকিকে সুযোগে রূপান্তরিত করার ইরানের ক্ষমতার আরও প্রমাণ’ বলে বর্ণনা করেন। শীর্ষ কমান্ডার ব্যাপক প্রতিরক্ষা, উন্নত প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং হাইব্রিড যুদ্ধ, বিশেষ করে ‘জ্ঞানীয় যুদ্ধ’ মোকাবেলার প্রস্তুতির গুরুত্বের ওপর জোর দেন।

কমান্ডারের মতে, ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতার নেতৃত্বে ইরানের সামরিক বাহিনী প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে অঞ্চল ও বাইরেও বর্ধিত নিরাপত্তার সুযোগে রূপান্তর করতে প্রস্তুত।


অমানবিক! পাকিস্তানে নিজেদের গ্রামেই বিমানবাহিনীর হামলা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ২১:২৬:৪৮
অমানবিক! পাকিস্তানে নিজেদের গ্রামেই বিমানবাহিনীর হামলা
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ২টার দিকে খাইবার জেলার তিরাহ উপত্যকার মাতরে দারা গ্রামে হামলা চালায় পাকিস্তান বিমানবাহিনী/ ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য খাইবার পাখতুনখোয়ার একটি গ্রামে বিমানবাহিনীর অভিযানে নারী-শিশুসহ অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে পাকিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে।

টিটিপি আস্তানায় হামলা, নিহত বেসামরিক

জানা গেছে, পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানগুলো নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) আস্তানা লক্ষ্য করে খাইবার জেলার তিরাহ উপত্যকার মাতরে দারা গ্রামে আটটি এলএস-৬ বোমা নিক্ষেপ করে। এতে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়। নিহতদের সবাই বেসামরিক নাগরিক।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, হামলায় বহু মানুষ আহত হয়েছে, তবে তাদের অবস্থা সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ঘটনাস্থলের ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, শিশুদের মরদেহসহ আরও অনেক মরদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মরদেহ থাকার আশঙ্কায় উদ্ধারকর্মীরা তল্লাশি চালাচ্ছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে।

অতীতেও বেসামরিক নিহতের ঘটনা ও মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগ

খাইবার পাখতুনখাওয়ায় অতীতেও বহু সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালানো হয়েছে ও সেখানে বহু বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। চলতি বছরের জুনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল, খাইবার পাখতুনখাওয়ায় বারবার ড্রোন হামলা পাকিস্তানে বেসামরিক জীবনকে ভয়াবহভাবে অবজ্ঞা করার ইঙ্গিত দেয়।

খাইবার পাখতুনখাওয়া পুলিশের বরাত দিয়ে ডন জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সেখানে ৬০৫টি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটেছে। এতে অন্তত ১৩৮ জন বেসামরিক ও ৭৯ জন পাকিস্তানি পুলিশ নিহত হয়েছেন। শুধু আগস্ট মাসেই এমন ১২৯টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ছয়জন পাকিস্তানি সেনা ও আধা সামরিক ফেডারেল কনস্টাবুলারি সদস্যের হত্যাকাণ্ডও অন্তর্ভুক্ত।

এ ঘটনার পর পাকিস্তান মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) আজ সোমবার এক বিবৃতিতে জানায়, খাইবার পাখতুনখাওয়ার তিরাহ এলাকায় ‘আকাশপথে বোমা হামলায়’ বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর খবরে তারা গভীরভাবে মর্মাহত। এইচআরসিপি এ বিষয়ে দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

তবে এখন পর্যন্ত সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করেনি।


মধ্যপ্রাচ্যে নতুন মেরুকরণ: ‘মুসলিম ন্যাটো’ গঠনের পথে মুসলিম বিশ্ব?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ২০:৪৮:১৪
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন মেরুকরণ: ‘মুসলিম ন্যাটো’ গঠনের পথে মুসলিম বিশ্ব?
মানচিত্র। ছবি : সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রে একের পর এক অস্থিরতা, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসন এবং কাতারের রাজধানী দোহায় সরাসরি হামলার ঘটনায় মুসলিম দেশগুলো এখন নিজেদের ঐক্যবদ্ধ সামরিক জোট গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে। ফলে বহু বছর ধরে আলোচিত ‘মুসলিম ন্যাটো’ বা ‘আরব ন্যাটো’র ধারণা এখন নতুন করে বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে বলে আভাস মিলছে।

কাতারে হামলা এবং আরব বিশ্বের ক্ষোভ

৯ সেপ্টেম্বর দোহায় হামাস নেতাদের বৈঠকের সময় ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আবাসিক ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। প্রাণ হারান হামাসের শীর্ষ নেতা খলিল আল-হায়ার ছেলে, আরও কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী এবং কাতারের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা। যদিও সংগঠনটির রাজনৈতিক শাখার শীর্ষ নেতারা অল্পের জন্য বেঁচে যান, তবে এই হামলা উপসাগরীয় দেশগুলোর কাছে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—ইসরায়েল এখন আর আঞ্চলিক সীমারেখাকে মানছে না।

সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল, ইসরায়েল নাকি এই হামলার পরিকল্পনার কথা আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানিয়েছিল। এমন তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর উপসাগরীয় নেতারা পশ্চিমা প্রভাব থেকে সরে এসে নিজেদের জন্য বিকল্প পথ খোঁজার বিষয়ে আরও সিরিয়াস হয়ে উঠেছেন।

জরুরি বৈঠক ও প্রতিরক্ষার ঘোষণা

কাতারের ক্ষোভ প্রকাশের পর ১৫ সেপ্টেম্বর দোহায় ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) জরুরি বৈঠক ডাকে। সেখানে প্রায় ৬০টি মুসলিম দেশ প্রতিনিধিত্ব করে। অধিকাংশ নেতা একমত হন যে, ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত সামরিক ব্যবস্থা ছাড়া বিকল্প নেই।

১৯ সেপ্টেম্বর দোহায় জিসিসির যৌথ প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের বৈঠকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসে। যেকোনো ধরনের বিদেশি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক যৌথ ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার করে জোটটি। এর ফলে দীর্ঘদিনের ‘আরব ন্যাটো’ গঠনের ভাবনা নতুন মাত্রা পায়।

সৌদি-পাকিস্তান চুক্তি: জোটের দিকে বড় পদক্ষেপ

এ প্রেক্ষাপটে ১৭ সেপ্টেম্বর সৌদি আরব ও পাকিস্তান একটি ‘কৌশলগত যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি’ সই করে। এ চুক্তি শুধু দুই দেশের নয়, বরং পুরো মুসলিম বিশ্বের সম্ভাব্য সামরিক জোটের ভিত্তি বলে আখ্যায়িত হচ্ছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন—সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রতিরক্ষা চুক্তিতে যোগ দিতে পারে।

‘আরব ন্যাটো’ ধারণার ইতিহাস ও বর্তমান প্রেক্ষাপট

‘আরব ন্যাটো’ কোনো নতুন ধারণা নয়। ২০১৫ সালে মিসরের শার্ম আল-শেখ সম্মেলনে প্রথমবার ন্যাটোর ধাঁচে একটি ঐক্যবদ্ধ বাহিনী গঠনের প্রস্তাব আসে। এরপর ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ সালে ইরানের প্রভাব ঠেকাতে গোপনে একটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোট গঠনের চেষ্টা চালায়।

বিশ্লেষকদের মতে, মুসলিম ন্যাটোর তাগিদ বেড়েছে কয়েকটি কারণে—

ইসরায়েলের আগ্রাসন: গাজায় নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ ও দোহায় হামলা উপসাগরীয় দেশগুলোকে সতর্ক করেছে।

গ্রেটার ইসরায়েল পরিকল্পনা: ইসরায়েলের ডানপন্থি রাজনীতিকেরা ফিলিস্তিন, লেবানন, সিরিয়া ও জর্ডান দখলের পরিকল্পনা প্রকাশ্যে বলছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা: ওয়াশিংটন ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়ালেও আরব দেশগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

জনগণের ক্ষোভ: আরব বিশ্বের জনগণ গাজার গণহত্যা ও পশ্চিমা নীরবতায় ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমেছে।

সম্ভাব্য প্রতিবন্ধকতা ও ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা

তবে এই পথে কিছু প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। আরব দেশগুলোর ভেতরেই রয়েছে বিভাজন, যেমন—২০১৭ সালে সৌদি আরব, মিসর, ইউএই ও বাহরাইন কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে অবরোধ আরোপ করেছিল। নেতৃত্ব কে নেবে, সদর দপ্তর কোথায় হবে—এ নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। তুরস্কের ভূমিকা নিয়েও মতবিরোধ রয়েছে।

তবুও সৌদি-পাকিস্তান চুক্তি এবং দোহায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো স্পষ্ট করেছে, মুসলিম দেশগুলো আর আগের মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে চাইছে না। আন্তর্জাতিক আদালতের সাম্প্রতিক রায়, যেখানে ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে অবৈধ বলা হয়েছে, তাও মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পক্ষে একটি অনুঘটক হয়ে উঠেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, মুসলিম ন্যাটো বা আরব ন্যাটো এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও এর রাজনৈতিক তাৎপর্য বিরাট। যদি এটি বাস্তবে রূপ নেয়, তবে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতির মানচিত্র আমূল বদলে যাবে এবং ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া-চীনকেও নতুন করে কৌশল আঁকতে বাধ্য করবে।


আজই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে আরও ৫ দেশ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১৯:১৩:৩৩
আজই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে আরও ৫ দেশ
ছবি: সংগৃহীত

নিউইয়র্কে বিশ্বনেতাদের বার্ষিক সমাবেশের আগে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এক সম্মেলনের মাধ্যমে আজই বেশ কয়েকটি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। দীর্ঘমেয়াদী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ফ্রান্স ও সৌদি আরবের নেতৃত্বে এই সম্মেলন আয়োজন করা হবে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে যৌথভাবে এতে সভাপতিত্ব করবেন।

কোন কোন দেশ স্বীকৃতি দিচ্ছে

সম্মেলনে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা এবং সম্ভবত নিউজিল্যান্ড ও লিশটেনস্টাইন ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে। এর আগে, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং পর্তুগাল গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষের মাঝে আন্তর্জাতিক ক্ষোভ সত্ত্বেও গাজায় আক্রমণ দ্বিগুণ করার পর ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে গতকাল রোববার ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়।

ম্যাক্রোঁর ভূমিকা ও ‘গাজা পরিকল্পনা’

গত জুলাই মাসে ইউরোপজুড়ে এই প্রচারণার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পশ্চিমা দেশগুলোকে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

এর আগে, ১২ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদ ‘গাজা পরিকল্পনা’ বা ‘নিউ ইয়র্ক ঘোষণাপত্র’ ব্যাপক ভোটে গৃহীত হয়। জুলাই মাসে ফ্রান্স এবং সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সম্মেলনে এটি প্রস্তাবিত হয়েছিল। ঘোষণাপত্রে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নের ওপর ভিত্তি করে ‘ন্যায়সঙ্গত এবং স্থায়ী শান্তি’ প্রতিষ্ঠার রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের অবস্থান

যদিও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল জুলাইয়ের ওই সম্মেলন বয়কট করে এবং এই মাসের শুরুতে ঘোষণার বিরুদ্ধেও ভোট দেয়।

এদিকে, জাতিসংঘ আশা প্রকাশ করেছে, এই শীর্ষ সম্মেলন ‘দুটি রাষ্ট্রের দিকে জাতিসংঘের রোডম্যাপ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় নতুন গতি সঞ্চার করতে পারে।’


আল আকসা মসজিদে ইসরায়েলিদের গান-নৃত্য ও উত্তেজনা বৃদ্ধি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১৮:৩৩:২০
আল আকসা মসজিদে ইসরায়েলিদের গান-নৃত্য ও উত্তেজনা বৃদ্ধি
আল আকসা মসজিদে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হামলা (২০২০ সালের ছবি)। ছবি : সংগৃহীত

অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত ইসলামের অন্যতম পবিত্র স্থান আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে আবারও অবৈধ ইসরায়েলি বসতকারীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) শতাধিক অবৈধ বসতকারী দলে দলে মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। সেখানে তারা নিহত মার্কিন ডানপন্থি কর্মী চার্লি কার্কের জন্য বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠানও আয়োজন করে। খবর আনাদোলুর।

প্রার্থনা অনুষ্ঠান ও উসকানি

হিব্রু ভাষার সংবাদমাধ্যম স্রুগিম জানিয়েছে, এই প্রার্থনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কট্টর-ডানপন্থি এবং ইসরায়েলি পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য ইয়েহুদা গ্লিক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আল আকসায় ইহুদিদের প্রবেশাধিকারের পক্ষে সক্রিয় প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। চার্লি কার্ক যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর উটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি নিহত হন।

ইহুদি আচার পালন ও বাড়তি সেনা মোতায়েন

ফিলিস্তিনি সরকারি সংবাদমাধ্যম ওয়াফা জানিয়েছে, বসতকারীরা আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশের পর সেখানে ইহুদি আচার পালন করে, গান গায় ও নৃত্য করে। আসন্ন ইহুদি নববর্ষকে কেন্দ্র করে এই ধরনের তৎপরতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে তারা। ওয়াফার মতে, কট্টর-ডানপন্থি বসতকারীরা বড় আকারে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। শনিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীও জানিয়েছিল, ইহুদি ধর্মীয় উৎসব সামনে রেখে অধিকৃত পশ্চিম তীরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হবে।

‘ইহুদিকরণ’ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন

জেরুজালেমের ইসলামিক এনডাওমেন্টস ডিরেক্টরেট বলছে, ২০২২ সালের শেষ দিকে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী হিসেবে কট্টর ডানপন্থি নেতা ইতামার বেন-গভির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আল-আকসায় উসকানিমূলক কর্মসূচি ও হামলা মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে।

আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের কাছে মক্কা ও মদিনার পর বিশ্বের তৃতীয় পবিত্র স্থান। তবে ইহুদিরা একে ‘টেম্পল মাউন্ট’ বলে দাবি করে, যেখানে তাদের দুটি প্রাচীন মন্দির ছিল বলে তারা বিশ্বাস করে।

ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, বসতকারীদের এ ধরনের হামলা পূর্ব জেরুজালেমকে ‘ইহুদিকরণ’ করার বৃহত্তর পরিকল্পনারই অংশ, যার মাধ্যমে শহরের আরব ও ইসলামী পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। ফিলিস্তিনিরা স্পষ্ট জানিয়ে আসছে, আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমই ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হবে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ বসতকারীদের হাতে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে অন্তত ১ হাজার ৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন সাত হাজারেরও বেশি মানুষ।

গত জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) রায় দিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব সম্পূর্ণ অবৈধ এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে সব ধরনের বসতি সরিয়ে নেওয়া উচিত।

সূত্র : মিডলইস্ট মনিটর


১৯৬৭ সালের পর প্রথম: সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট শারার জাতিসংঘে আগমন

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১৭:৩৭:০৮
১৯৬৭ সালের পর প্রথম: সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট শারার জাতিসংঘে আগমন
ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা ১৯৬৭ সালের পর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিতে নিউইয়র্ক পৌঁছেছেন। ১৯৬৭ সালে সর্বশেষ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট নুরেদ্দিন আল আতাশি জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছিলেন। এই সফরের মধ্য দিয়ে শারার কূটনৈতিক সাফল্যের এক নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হচ্ছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

আল কায়েদা নেতা থেকে প্রেসিডেন্ট

আহমেদ আল শারা এক সময় মধ্যপ্রাচ্যের কট্টর জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়েদার একজন নেতা ছিলেন। তাকে হত্যার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এক কোটি ডলারের পুরস্কারও ঘোষণা করেছিল। তবে গত বছর বাশার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে দামেস্কের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নেন শারা। চলতি বছরে সৌদি আরবের রিয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ কূটনৈতিকভাবে একটি বড় সাফল্য হিসেবে ধরা হয়।

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও মার্কিন সমর্থন

এই সফলতার পর যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর থেকে বেশিরভাগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে এবং শারার বিরুদ্ধে ঘোষণা করা হত্যার পুরস্কারও তুলে নিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন নিয়মিতভাবে শারার দেশের স্থিতিশীলতা ও ঐক্যের প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানাচ্ছে।

জাতিসংঘের ভাষণ ও সম্ভাব্য চুক্তি

শারা এই সপ্তাহে জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। অধিবেশনের মাঝেই সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে ‘নিরাপত্তা চুক্তি’ হতে পারে বলে আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে।

প্রায় ১৪ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধ শেষে গত ডিসেম্বরে কট্টর মুসলিম গোষ্ঠীগুলোর জোট বাশার আল আসাদকে উৎখাত করার পর শারা ক্ষমতায় আসেন। তাকে পশ্চিমা দেশসহ সৌদি আরব, তুরস্ক ও অন্যান্য সুন্নি প্রধান দেশগুলো সমর্থন করছে।

উল্লেখ্য, এ বছরের এপ্রিলে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল শাইবানি জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছিলেন এবং নিউইয়র্কে সিরিয়ার নতুন পতাকাও উত্তোলন করেন।


পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুর্গাপূজা উপহার: ভারতে গেল সুগন্ধি চাল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১৬:২১:১১
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুর্গাপূজা উপহার: ভারতে গেল সুগন্ধি চাল
ছবি: সংগৃহীত

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে উপহার হিসেবে বিতরণের জন্য ৫০০ কেজি সুগন্ধি চিনিগুড়া চাল পাঠিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে চালভর্তি একটি পিকআপ ভ্যান ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা স্থলবন্দরে প্রবেশ করে।

দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে বিতরণ

‘চাষী’ ব্র্যান্ডের এসব চাল ভারতের দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে বিতরণ করা হবে। বন্দর থেকে চালের কাস্টমস ক্লিয়ারিংয়ের দায়িত্বে থাকা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সুয়েব ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী রাজীব ভূইয়া জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনের জন্য ৫০০ কেজি সুগন্ধি চিনিগুড়া চাল পাঠানো হয়েছে। চালগুলো বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের উপহার হিসেবে দেওয়া হবে।


যুক্তরাজ্য সরকারের মানচিত্রে যুক্ত হলো ‘স্টেট অব প্যালেস্টাইন’

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১৫:৩৪:১৬
যুক্তরাজ্য সরকারের মানচিত্রে যুক্ত হলো ‘স্টেট অব প্যালেস্টাইন’
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্য প্রথমবারের মতো তাদের সরকারি মানচিত্রে ‘স্টেট অব প্যালেস্টাইন’ বা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের নাম যুক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির ঘোষণার পরই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এরইমধ্যেই এটি হালনাগাদ করা হয়েছে এবং ভ্রমণ নির্দেশিকা, দূতাবাসের তালিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্রে এখন ‘স্টেট অব প্যালেস্টাইন’ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হচ্ছে।

‘শান্তি ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনা’

প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যের চলমান দুঃসহ পরিস্থিতির মাঝে আমরা শান্তি ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে টিকিয়ে রাখতে এ পদক্ষেপ নিচ্ছি।”

অন্যান্য দেশের স্বীকৃতি ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান

এর আগে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে চলতি বছরের শুরুতেই একই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কূটনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরও কয়েকটি দেশ শিগগিরই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো এ স্বীকৃতির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ওয়াশিংটনের মতে, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমেই হওয়া উচিত।

জাতিসংঘের অধিবেশন ও বেলজিয়ামের প্রস্তুতি

এদিকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের প্রাক্কালে সৌদি আরব ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে একটি সম্মেলন হতে যাচ্ছে। সেখানে আরও কিছু দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিতে পারে বলে জানা গেছে। বেলজিয়ামও একই পথে হাঁটার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাক্সিম প্রেভো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।


মার্কিন নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের হামলা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১২:০৫:৫২
মার্কিন নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের হামলা
লেবাননে ইসরায়েলি হামলা। পুরোনো ছবি

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিনত জবেইলে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় শিশুসহ অন্তত চার মার্কিন নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এই দাবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।

লেবাননের দাবি ও নিহতদের পরিচয়

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় এক পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সেলিন, হাদি এবং আসিল নামের তিনজনই শিশু। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য। সরকারি সংবাদ সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, রোববারের ওই হামলাটি একটি মোটরসাইকেল ও একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে চালানো হয়। হামলায় আরও দুজন আহত হয়েছেন।

লেবাননের সংসদের স্পিকার নাবিহ বেরি দাবি করেছেন, নিহত শিশু ও তাদের পিতা মার্কিন নাগরিক ছিলেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মন্তব্য

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, পরিস্থিতি এখনো অস্পষ্ট। তবে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে নিহতরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন না। তবে একজনের পূর্বে একটি অভিবাসন ভিসার আবেদন ছিল।

ইসরায়েলের দাবি ও হামলা

ইসরায়েল দাবি করেছে, এই হামলায় হিজবুল্লাহর একজন সদস্য নিহত হয়েছে, তবে তারা স্বীকার করেছে যে, এতে বেসামরিক নাগরিকও মারা গেছেন।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালাচ্ছে। তারা দাবি করছে, ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ যেন নতুন করে সামরিক শক্তি গড়ে তুলতে না পারে, সে উদ্দেশ্যেই এই অভিযান চালানো হচ্ছে। গত বছরের নভেম্বরে ইসরায়েল ও লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে প্রতিনিয়ত চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে আসছে ইসরায়েল।


কিম জং উনের হুঁশিয়ারি: ‘নিরস্ত্রীকরণ নয়, চাই সহাবস্থান’

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১২:০৬:২৭
কিম জং উনের হুঁশিয়ারি: ‘নিরস্ত্রীকরণ নয়, চাই সহাবস্থান’
ছবিঃ সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন—তবে শর্ত থাকছে নিজের পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডার অক্ষুণ্ন রাখার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্মরণ করে কিম বলেন, “আমি এখনো তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের মধুর স্মৃতি ধারণ করে আছি।”

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে কিম ও ট্রাম্পের মধ্যে তিন দফা উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। তবে ২০১৯ সালে হ্যানয়ের আলোচনায় চুক্তি ভেস্তে যায়। মূল বিতর্ক ছিল—উত্তর কোরিয়া কতটুকু ছাড় দেবে তার পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে এবং যুক্তরাষ্ট্র কতটুকু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।

কিম জং উন তাঁর দেশের rubber-stamp সংসদে দেওয়া ভাষণে বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্র ভ্রান্ত ‘পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ’ আসক্তি ত্যাগ করে বাস্তবতা মেনে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আন্তরিক ইচ্ছা প্রকাশ করে, তবে আমাদের আবার বসতে কোনো বাধা নেই।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “বিশ্ব জানে, যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশের পারমাণবিক অস্ত্র সরিয়ে নেওয়ার পর কী করে থাকে। তাই আমরা কখনো পারমাণবিক অস্ত্র ছেড়ে দেব না।”

উত্তর কোরিয়া ২০২২ সালে নিজেদের “অপরিবর্তনীয় পারমাণবিক রাষ্ট্র” হিসেবে ঘোষণা করে। কিমের মতে, জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উত্তর কোরিয়াকে দুর্বল না করে বরং আরও শক্তিশালী করেছে, “যা কোনো চাপেই ভাঙবে না।”

দক্ষিণ কোরিয়া প্রসঙ্গে কিম সোজাসাপ্টা বলেন, “তাদের সঙ্গে বসার কোনো কারণ নেই। আমরা স্পষ্ট করছি—কোনো ধরনের আলোচনায় যাব না।” গত কয়েক বছরে উত্তর কোরিয়া দক্ষিণকে প্রধান শত্রু ঘোষণা করেছে, রেলপথ ও সড়ক সংযোগ ধ্বংস করেছে।

রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া ঘনিষ্ঠতা

বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধ কিমকে আরও সাহসী করে তুলেছে। রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা ক্রমশ বাড়ছে। মস্কোকে সমর্থন জানাতে উত্তর কোরিয়া হাজার হাজার সৈন্য ও অস্ত্র পাঠিয়েছে। গত বছর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পিয়ংইয়ং সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়।

সিউল বারবার সতর্ক করেছে—রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে উন্নত সামরিক প্রযুক্তি হস্তান্তরের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, যা অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে।

ট্রাম্পের সফরের আগে কৌশলগত বার্তা

ট্রাম্প আগামী মাসে দক্ষিণ কোরিয়া সফর করবেন, যখন দেশটি এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন (APEC) সম্মেলনের আয়োজন করবে। দক্ষিণ কোরিয়ার ক্যুংনাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লিম উল-চুল বলেন, “ট্রাম্পের সফরের আগে কিমের এই মন্তব্য সময়োপযোগী। এটি একদিকে আকস্মিক শীর্ষ বৈঠকের ইঙ্গিত দেয়, অন্যদিকে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা—যেমন নোবেল শান্তি পুরস্কারের বাসনা—কেও স্পর্শ করে।”

বিশ্লেষক ইয়াং মুজিনের মতে, কিমের ভাষণ ছিল একই সঙ্গে আত্মবিশ্বাসী ও সতর্কতামূলক—যা যেমন আন্তর্জাতিক মহলকে বার্তা দিয়েছে, তেমনি অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতাও নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে।

-এ এফ পি

পাঠকের মতামত: