পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল আর নয়: পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি মোদির

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৫ ১০:৩০:৫০
পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল আর নয়: পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি মোদির
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানী নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লা প্রাঙ্গণ থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে জানানো হয়েছে, এই ভাষণে তিনি সরাসরি পাকিস্তানকে উদ্দেশ করে কঠোর সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন, বিশেষত পারমাণবিক অস্ত্রকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের ‘ব্ল্যাকমেল’ আর বরদাস্ত করা হবে না বলে স্পষ্ট জানান।

প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, বহু বছর ধরে ভারতের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি ব্যবহার করে এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। কিন্তু ভারত এখন সেই কৌশলকে চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি শত্রুরা এমন আচরণ অব্যাহত রাখে, তবে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী তাদের নিজের শর্ত অনুযায়ী, নিজের সময় বেছে, নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে জবাব দেবে। “আমরা উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত”—এ কথার মাধ্যমে তিনি দৃঢ়তার বার্তা দেন।

মোদির এই মন্তব্যের প্রেক্ষাপট হিসেবে রয়েছে সম্প্রতি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের বিতর্কিত বক্তব্য। যুক্তরাষ্ট্র সফরে মুনির বলেছিলেন, যদি ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে পাকিস্তান অস্তিত্বের সংকটে পড়ে, তবে তারা “অর্ধেক বিশ্বকে সঙ্গে নিয়ে ধ্বংস হবে”। মোদির কড়া প্রতিক্রিয়া মূলত এই ঘোষণারই জবাব হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুরের’ সাফল্যের জন্য ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করেন। তিনি জানান, এই অভিযানে ভারত পাকিস্তানের ভূখণ্ডের গভীরে প্রবেশ করে শত্রুপক্ষকে এমন একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে যা কল্পনার অতীত। “আমাদের সাহসী সেনাদের বীরত্বকে আমি স্যালুট জানাই। অপারেশন সিঁদুরে আমাদের সেনারা শত্রুদের এমনভাবে জবাব দিয়েছেন যা তারা কখনো কল্পনাও করতে পারেনি”—বলেন মোদি।

তিনি মনে করিয়ে দেন, গত ২২ এপ্রিল সীমান্ত পেরিয়ে আসা সন্ত্রাসীরা নিরীহ সাধারণ মানুষকে ধর্ম জিজ্ঞাসা করে টার্গেট করে হত্যা করেছিল। এ ঘটনা গোটা ভারতজুড়ে ক্ষোভের সঞ্চার করে। তার পরপরই সরকার সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়, যাতে তারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক জবাব দিতে পারে।

মোদি আরও দাবি করেন, পাকিস্তানে এই অভিযানের ধ্বংসযজ্ঞ এতই ব্যাপক ছিল যে প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে, যা ভারতের সামরিক সক্ষমতার স্পষ্ট প্রমাণ।

শুধু সামরিক সতর্কবার্তাই নয়, পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সিন্ধু নদের পানি বণ্টন চুক্তি নিয়েও কড়া অবস্থান নেন মোদি। তিনি বলেন, “ভারত সিদ্ধান্ত নিয়েছে রক্ত এবং পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।” এই মন্তব্য পাকিস্তানের প্রতি একটি কৌশলগত জলনীতি হুঁশিয়ারি হিসেবেই দেখা হচ্ছে, যা দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ গতিপথে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

-শরিফুল


গাজায় শান্তির নকশা না নতুন জটিলতা? ট্রাম্প–নেতানিয়াহুর ২০ দফা পরিকল্পনা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ০৯:৩৭:৪২
গাজায় শান্তির নকশা না নতুন জটিলতা? ট্রাম্প–নেতানিয়াহুর ২০ দফা পরিকল্পনা

হোয়াইট হাউস গাজা যুদ্ধ থামানোর জন্য একটি ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, ইসরায়েল ও হামাস যদি পরিকল্পনায় সম্মত হয় তবে যুদ্ধ তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হবে। গাজায় আটক সব ইসরায়েলি জিম্মি (জীবিত ও নিহতদের মরদেহ) ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত দিতে হবে এবং বিনিময়ে শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। গাজার প্রশাসন হামাসের হাতে থাকবে না, বরং অস্থায়ীভাবে একটি টেকনোক্র্যাট কমিটির হাতে যাবে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইতোমধ্যে পরিকল্পনায় সম্মতি জানালেও হামাসের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একে ‘‘শান্তির ঐতিহাসিক দিন’’ আখ্যা দিয়েছেন।

পরিকল্পনার ২০ দফা

১. যুদ্ধবিরতি: উভয় পক্ষ সম্মত হলে যুদ্ধ তাৎক্ষণিকভাবে শেষ হবে। ইসরায়েলি বাহিনী নির্দিষ্ট লাইনে সরে যাবে এবং সামরিক অভিযান স্থগিত থাকবে।

২. ৭২ ঘণ্টার শর্ত: ইসরায়েল প্রকাশ্যে সম্মতি দেওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব জীবিত জিম্মি ও মরদেহ ফেরত দিতে হবে।

৩. বন্দি বিনিময়: সব জিম্মি ফেরত এলে ইসরায়েল ২৫০ জন যাবজ্জীবন বন্দি ও ১,৭০০ জন গাজাবাসীকে মুক্তি দেবে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও থাকবে। প্রতিটি ইসরায়েলি মরদেহের বিনিময়ে ১৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে।

৪. হামাস সদস্যদের শর্ত: যারা অস্ত্র সমর্পণ করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান মেনে নেবে তাদের ক্ষমা করা হবে। কেউ গাজা ছেড়ে যেতে চাইলে নিরাপদ পথ দেওয়া হবে।

৫. মানবিক সাহায্য: পরিকল্পনা গৃহীত হলে সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণ সহায়তা প্রবাহ শুরু হবে। পানি, বিদ্যুৎ, স্যুয়ারেজ, হাসপাতাল ও রাস্তা সংস্কারে সহায়তা আসবে।

৬. জাতিসংঘ তত্ত্বাবধান: সহায়তা প্রবাহ জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্ট ও নিরপেক্ষ সংস্থার মাধ্যমে হবে। রাফাহ সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে।

৭. অস্থায়ী প্রশাসন: গাজা একটি টেকনোক্র্যাট কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হবে, যেখানে ফিলিস্তিনি বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি থাকবেন।

৮. বোর্ড অব পিস: এই কমিটির ওপর নজরদারি করবে ‘‘বোর্ড অব পিস’’ নামে নতুন আন্তর্জাতিক সংস্থা, যার নেতৃত্ব দেবেন ট্রাম্প। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারও থাকবেন।

৯. তহবিল ও কাঠামো: গাজা পুনর্গঠনের জন্য তহবিল পরিচালনা করবে ‘‘বোর্ড অব পিস’’। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সংস্কার সম্পন্ন করার পর দায়িত্ব নেবে।

১০. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা: গাজা পুনর্গঠনে মধ্যপ্রাচ্যের সফল নগর পরিকল্পনাকারী বিশেষজ্ঞরা যুক্ত হবেন। কর্মসংস্থান ও উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করা হবে।

১১. বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল: গাজায় একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করা হবে, যেখানে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে বিশেষ শুল্ক সুবিধা দেওয়া হবে।

১২. বাসিন্দাদের স্বাধীনতা: কাউকে গাজা ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হবে না। চাইলে থাকতে পারবে, আবার চাইলে বের হয়ে পুনরায় ফিরতেও পারবে।

১৩. হামাসের নিষেধাজ্ঞা: হামাস বা অন্য কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর কোনোভাবেই গাজা শাসনে ভূমিকা থাকবে না।

১৪. সশস্ত্র অবকাঠামো ধ্বংস: সব টানেল, অস্ত্র কারখানা ও সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করতে হবে এবং পুনর্নির্মাণ করা যাবে না।

১৫. নিরস্ত্রীকরণ: গাজা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণে নিরস্ত্রীকরণ হবে। অস্ত্র ধ্বংস ও কিনে নেওয়ার মাধ্যমে তা নিশ্চিত করা হবে।

১৬. শান্তিপূর্ণ অর্থনীতি: ‘‘নিউ গাজা’’ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে। আঞ্চলিক অংশীদাররা গ্যারান্টি দেবে।

১৭. আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী (ISF): যুক্তরাষ্ট্র, আরব ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহায়তায় গাজায় একটি নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন হবে। তারা ফিলিস্তিনি পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেবে।

১৮. সীমান্ত সুরক্ষা: ISF, ইসরায়েল ও মিশর একসাথে সীমান্ত সুরক্ষা ও অস্ত্র প্রবাহ বন্ধে কাজ করবে। দ্রুত পণ্য প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে।

১৯. ইসরায়েলের প্রত্যাহার: ইসরায়েল গাজা দখল বা সংযুক্ত করবে না। নির্দিষ্ট শর্ত ও সময়সীমা অনুযায়ী সেনা প্রত্যাহার করবে। নিরাপত্তা বেষ্টনী কেবল অস্থায়ী থাকবে।

২০. ধর্মীয় সহাবস্থান ও রাষ্ট্রগঠন: সহাবস্থান ও সহনশীলতার ভিত্তিতে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ হবে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সংস্কার সম্পন্ন করলে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও রাষ্ট্রগঠনের পথ খুলবে। যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দিগন্ত তৈরি করবে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে বিশ্লেষকদের মতে, হামাসকে প্রশাসন থেকে পুরোপুরি বাদ দেওয়ায় বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে।

৬৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং গাজা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প–নেতানিয়াহুর শান্তি পরিকল্পনা নতুন আলোচনার দ্বার খুলেছে। তবে চূড়ান্ত শান্তি নির্ভর করছে হামাসের প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক চাপের ওপর।


ফাঁস হলো ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা: চুক্তি হলে হামাস নেতাদের নিরাপদ প্রস্থান!

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৯ ২০:৫০:২৯
ফাঁস হলো ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা: চুক্তি হলে হামাস নেতাদের নিরাপদ প্রস্থান!
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান গণহত্যার মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আতিথ্য দেবেন। আলোচনায় গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে একটি নতুন শান্তি পরিকল্পনার ওপর জোর দেবেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প সম্প্রতি সাংবাদিকদের কাছে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন। তবে নেতানিয়াহু গতকাল রোববার বলেন, এটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। অন্যদিকে হামাস জানিয়েছে, তাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পের প্রস্তাবটি পাঠানো হয়নি।

ফাঁস হওয়া চুক্তির বিবরণ

মার্কিন ও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত পরিকল্পনার ফাঁস হওয়া তথ্য অনুসারে, চুক্তি নিশ্চিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামাসের হাতে আটক সকল বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বন্দিদের ফেরত পাঠানোর পর ইসরায়েল যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শত শত ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে।

ফাঁস হওয়া তথ্যে আরও ইঙ্গিত দেওয়া হয় যে:

হামাসের দায়মুক্তি: শান্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হামাস সদস্যদের ‘দায়মুক্তি এবং গাজা থেকে নিরাপদে বেরিয়ে আসার সুযোগ’ দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে তাদের কোনো ভূমিকা থাকবে না।

সেনা প্রত্যাহার: দখলদার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ধীরে ধীরে গাজা ত্যাগ করবে।

অন্তর্বর্তী সরকার: গাজায় একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হবে।

নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনাটি আংশিকভাবে নিশ্চিত করে বলেন, “যদি হামাস নেতারা যুদ্ধ শেষ করে এবং সমস্ত জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলে আমরা তাদের ছেড়ে দেব। আমি মনে করি, এই সবকিছুই পরিকল্পনার অংশ।”

মানবিক পরিস্থিতি ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ

এই পরিকল্পনাটি নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প প্রশাসনের আগের অবস্থানের একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।

চলতি বছরের শুরুতে ইসরায়েল জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোকে এড়িয়ে একটি পৃথক সাহায্য বিতরণ উদ্যোগ শুরু করার পর অঞ্চলটিতে দুর্ভিক্ষ আরও প্রকট হয়ে ওঠে। খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালিয়ে শত শত মানুষকে হত্যা করছে। গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য নেতানিয়াহু ও তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।


স্থায়ী বসবাসের নিয়মে কঠোরতা আনছে যুক্তরাজ্য, থাকতে হবে কঠোর শর্ত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৯ ১৪:৩৭:৩০
স্থায়ী বসবাসের নিয়মে কঠোরতা আনছে যুক্তরাজ্য, থাকতে হবে কঠোর শর্ত
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যে স্থায়ী বসবাস বা পার্মানেন্ট রেসিডেন্সির নিয়মে কঠোরতা আনার পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার। এখন থেকে আবেদনকারীদের অবশ্যই সমাজ ও অর্থনীতিতে তাদের অবদান প্রমাণ করতে হবে। সোমবার লেবার পার্টির সম্মেলনে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ এই প্রস্তাব তুলে ধরবেন।

নতুন নিয়মে কী কী থাকছে?

বর্তমানে বেশিরভাগ অভিবাসী পাঁচ বছর ব্রিটেনে থাকার পর স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি বা ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন (আইএলআর)-এর জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে নতুন নিয়মে নিম্নলিখিত শর্তগুলো যুক্ত হতে পারে:

অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবদান: আবেদনকারীকে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে অবদান রাখার প্রমাণ দিতে হবে।

সততা ও স্বচ্ছতা: কোনো ফৌজদারি অপরাধে জড়িত না থাকা এবং সরকারি সুবিধা দাবি না করার শর্ত যুক্ত হবে।

ভাষা ও দক্ষতা: আবেদনকারীদের উচ্চমানের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা থাকতে হবে।

স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ: স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের রেকর্ড দেখাতে হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ জানিয়েছেন, এই প্রস্তাবগুলো নিয়ে চলতি বছরের শেষ নাগাদ একটি পরামর্শ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

রাজনৈতিক চাপ

বিশ্লেষকরা বলছেন, কট্টর অভিবাসনবিরোধী দল রিফর্ম ইউকের জনপ্রিয়তা মোকাবিলায় লেবার পার্টি এই উদ্যোগ নিয়েছে। রিফর্ম ইউকের নেতা নাইজেল ফারাজ সম্প্রতি প্রস্তাব করেছিলেন, স্থায়ী বসবাসের সুযোগ বাতিল করে পাঁচ বছরের নবায়নযোগ্য কাজের ভিসা চালু করা উচিত।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার রোববার রিফর্ম ইউকের গণ-নির্বাসন নীতিকে ‘বর্ণবাদী’ এবং দেশকে বিভক্তকারী বলে মন্তব্য করেছেন।

তথ্যসূত্র : রয়টার্স


বিশ্বের কাছে আবেদন জানানো ছেড়ে দিয়েছি: গাজাবাসীি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৯ ১৪:৩০:১৫
বিশ্বের কাছে আবেদন জানানো ছেড়ে দিয়েছি: গাজাবাসীি
ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের লাগাতার বোমাবর্ষণের মধ্যে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের দুর্ভোগ নিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। ইসরায়েলি হামলায় গাজাবাসী আবু মোহাম্মদ সামুর প্রশ্ন তুলেছেন, “এটা কে অনুমতি দিল? কেমন মৃত্যু, কেমন অন্যায্য এই দুনিয়া? আমরা আর বিশ্বের কাছে আবেদন করি না। আমরা হাল ছেড়ে দিয়েছি।”

আবু আম্মার খুদিয়ার নামে আরেক ব্যক্তি বলেছেন, ইসরায়েলি হামলায় শিশু, বৃদ্ধ ও নারী—সবাই লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। কোনো জায়গাই এখন আর নিরাপদ নয়।

নিরাপদ এলাকাতেও হামলা

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েল ৭৯ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং ৩৭৯ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মোট সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৬৬ হাজার ছাড়িয়েছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, গাজা সিটিতে ইসরায়েলি স্থল অভিযানে যত সংখ্যক মানুষ মারা গেছে, তার অর্ধেকই হয়েছে ইসরায়েল ঘোষিত নিরাপদ অঞ্চল বা ‘বাফার জোনে’। গত শনিবার গাজা উপত্যকাজুড়ে তাদের অব্যাহত হামলায় কমপক্ষে ৯২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই মারা গেছেন কমপক্ষে ৪৫ জন।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করে বলেছে, ইসরায়েল গাজা সিটি থেকে মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চলে সরিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়ে এসব জায়গাগুলোকে ‘নিরাপদ মানবিক অঞ্চল’ হিসেবে প্রচার করলেও বাস্তবে সেই এলাকাগুলোকেই তারা হামলার লক্ষ্যবস্তু করছে।

ইসরায়েলি হামলা তীব্র হওয়ার কারণে গাজা সিটির অনেক হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। হাসপাতালগুলো দীর্ঘদিন ধরেই অব্যাহত হামলার কারণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের লাগাতার বোমাবর্ষণের মধ্যে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের দুর্ভোগ নিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন। ইসরায়েলি হামলায় গাজাবাসী আবু মোহাম্মদ সামুর প্রশ্ন তুলেছেন, “এটা কে অনুমতি দিল? কেমন মৃত্যু, কেমন অন্যায্য এই দুনিয়া? আমরা আর বিশ্বের কাছে আবেদন করি না। আমরা হাল ছেড়ে দিয়েছি।”

আবু আম্মার খুদিয়ার নামে আরেক ব্যক্তি বলেছেন, ইসরায়েলি হামলায় শিশু, বৃদ্ধ ও নারী—সবাই লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। কোনো জায়গাই এখন আর নিরাপদ নয়।

নিরাপদ এলাকাতেও হামলা

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েল ৭৯ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং ৩৭৯ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মোট সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৬৬ হাজার ছাড়িয়েছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, গাজা সিটিতে ইসরায়েলি স্থল অভিযানে যত সংখ্যক মানুষ মারা গেছে, তার অর্ধেকই হয়েছে ইসরায়েল ঘোষিত নিরাপদ অঞ্চল বা ‘বাফার জোনে’। গত শনিবার গাজা উপত্যকাজুড়ে তাদের অব্যাহত হামলায় কমপক্ষে ৯২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই মারা গেছেন কমপক্ষে ৪৫ জন।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করে বলেছে, ইসরায়েল গাজা সিটি থেকে মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চলে সরিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়ে এসব জায়গাগুলোকে ‘নিরাপদ মানবিক অঞ্চল’ হিসেবে প্রচার করলেও বাস্তবে সেই এলাকাগুলোকেই তারা হামলার লক্ষ্যবস্তু করছে।

ইসরায়েলি হামলা তীব্র হওয়ার কারণে গাজা সিটির অনেক হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। হাসপাতালগুলো দীর্ঘদিন ধরেই অব্যাহত হামলার কারণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

সূত্র : আলজাজিরা


নেতানিয়াহুর টার্গেট এবার ইরাক

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৯ ১৪:১০:৩২
নেতানিয়াহুর টার্গেট এবার ইরাক
ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার ভাষণের শুরুতেই ইরান ও আঞ্চলিক প্রতিরোধ আন্দোলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। একইসঙ্গে তিনি ইরাকি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে সরাসরি হামলার হুমকি দেন এবং প্রকাশ্যে তাদের লক্ষ্যবস্তু করার ঘোষণা করেন।

এই হুমকিকে ইরাকের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে বাগদাদ। ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুয়াদ হুসেইন সতর্ক করে বলেছেন, “ইরাকের যে কোনো নাগরিকের ওপর হামলা গোটা জাতির ওপর আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হবে।”

ইসরায়েলের সুদূরপ্রসারী ও ‘ডেভিড করিডোর’ পরিকল্পনা

বিশ্লেষক মোহাম্মদ বাঘের হেইদারি জানান, নেতানিয়াহুর এই বক্তব্য নতুন নয়। ইসরায়েলের ইরাক সংক্রান্ত নীতির দুটি দিক রয়েছে—আঞ্চলিক এবং অভ্যন্তরীণ।

আঞ্চলিক লক্ষ্য: ইসরায়েল গোটা অঞ্চলজুড়ে প্রভাব বিস্তার করতে ‘গ্রেটার মিডল ইস্ট’ প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং কথিত ‘ডেভিড করিডোর’ গঠনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এই করিডোর সিরিয়ার একটি বড় অংশ থেকে শুরু করে ইরাকের এরবিল ও সুলাইমানিয়া হয়ে পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত।

সামরিক ফ্রন্ট: হেইদারি ব্যাখ্যা করেন, ইসরায়েল আগেই ঘোষণা করেছিল যে তারা সাতটি ফ্রন্টে সামরিকভাবে সক্রিয় হবে। এর মধ্যে গাজা, পশ্চিম তীর, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইরানসহ ছয়টিতে ইতোমধ্যেই অভিযান চালিয়েছে। একমাত্র বাকি ছিল ইরাক, যেটিতে ঢোকার ঘোষণা তারা আগেই দিয়েছিল।

ইরাকের স্থিতিশীলতা নষ্টের চেষ্টা

বিশ্লেষকদের মতে, নেতানিয়াহুর এই হুমকি ইরাকের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে বিঘ্নিত করার কৌশল হিসেবেও আসতে পারে। কারণ, সমন্বয় ফ্রেমওয়ার্ক জোট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, যা ইসরায়েলের জন্য অস্বস্তিকর। যদি নির্বাচন ব্যাহত হয়, বর্তমান সরকার সীমিত ক্ষমতাসম্পন্ন অন্তর্বর্তী সরকারে পরিণত হবে, যা দেশে নতুন অস্থিতিশীলতার জন্ম দেবে।

এক বছর আগে ইরাকি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির একটি সমঝোতা হয়েছিল। গাজায় ইসরায়েলি হামলার সময় এই গোষ্ঠীগুলো ‘ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স অব ইরাক’ নামে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ড্রোন ও মিসাইল দিয়ে ইসরায়েলকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল। বিশ্লেষকদের মতে, এই হুমকিতে ইরাকি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে, এমন সম্ভাবনা কম।


মার্কিন মাটিতে সহিংসতার মহামারী: ট্রাম্পের তীব্র নিন্দা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৯ ১০:৫৩:৪০
মার্কিন মাটিতে সহিংসতার মহামারী: ট্রাম্পের তীব্র নিন্দা
ছবিঃ সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলার ভয়াবহতা আবারও নতুন করে শোকস্তব্ধ করে দিল দেশটিকে। রবিবার মিশিগানের গ্র্যান্ড ব্লাঙ্কে মরমনদের একটি গির্জায় বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত চারজন নিহত এবং আটজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্র্যান্ড ব্লাঙ্ক পুলিশের প্রধান উইলিয়াম রেনিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, হামলাকারী প্রথমে নিজের ট্রাক দিয়ে গির্জার দেয়ালে ধাক্কা মারে, এরপর স্বয়ংক্রিয় রাইফেল থেকে গুলি চালায় এবং পরে ভবনে আগুন লাগিয়ে দেয়। পুলিশকে খবর দেওয়ার মাত্র আট মিনিটের মধ্যে গির্জার পার্কিং লটে পুলিশের গুলিতে হামলাকারী নিহত হয়।

এ পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপ থেকে চারটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং নিখোঁজদের খোঁজে তল্লাশি অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন রেনিয়ে। হামলার সময় শত শত মানুষ গির্জায় উপস্থিত ছিলেন, ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে—তার নাম থমাস জ্যাকব স্যানফোর্ড (৪০)। তিনি স্থানীয়ভাবে বড় হয়েছেন এবং সাবেক সেনা সদস্য ছিলেন বলে মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে। হামলার পরপরই এফবিআই তদন্তের দায়িত্ব নেয় এবং এটিকে “পরিকল্পিত টার্গেটেড সহিংসতা” হিসেবে বর্ণনা করে।

হামলার পর তোলা ছবিতে দেখা গেছে, যীশুখ্রিষ্টের পরবর্তী যুগের সাধুগণদের গির্জাটি সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ট্রাকটির পেছনে দুইটি মার্কিন পতাকা লাগানো ছিল, যা দিয়ে গির্জায় আঘাত করা হয়েছিল বলে ধারণা করছে তদন্তকারীরা।

এই গির্জার নেতা আগের রাতেই ১০১ বছর বয়সে মারা যান। গির্জা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে ঘটনাটিকে “দুর্ভাগ্যজনক সহিংসতা” বলে উল্লেখ করে লিখেছে, “উপাসনালয় শান্তি, প্রার্থনা ও সংযোগের স্থান। আমরা শান্তি ও আরোগ্যের জন্য প্রার্থনা করছি।”

মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে “ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড” হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, “এটি যুক্তরাষ্ট্রে খ্রিস্টানদের ওপর আরেকটি টার্গেটেড হামলা।” তিনি তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ লিখেছেন, “আমাদের দেশে এই সহিংসতার মহামারী এখনই বন্ধ করতে হবে!”

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি ধারাবাহিক বন্দুক হামলা ও সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে উটাহতে ডানপন্থী কর্মী চার্লি কার্ককে হত্যার পাশাপাশি টেক্সাসে অভিবাসন দপ্তরে ভয়াবহ গুলি চালানো হয়। গত মাসে মিনেসোটা রাজ্যে একটি ক্যাথলিক গির্জা ও স্কুলে বন্দুক হামলায় দুই শিশু নিহত হয়। এই ধারাবাহিক সহিংসতা মার্কিন সমাজে বিভাজন আরও ঘনীভূত করছে এবং রাজনৈতিক বিতর্ককে তীব্র করছে।

-আলমগীর হোসেন


চীন-উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশলগত চিন্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৯ ১০:২৪:৩৮
চীন-উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশলগত চিন্তা
ছবিঃ সংগৃহীত

চীন ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার পাশাপাশি আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে যৌথভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। রবিবার বেইজিংয়ে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো সন-হুইয়ের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই বার্তা দেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্য মূলত যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করেই করা হয়েছে।

বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সাম্প্রতিক বেইজিং সফরের কয়েক সপ্তাহ পর। ওই সফরে কিম দুই দেশের সম্পর্ক আরও উন্নয়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। বৈঠকে ওয়াং ই বলেন, “চীন-উত্তর কোরিয়া সম্পর্ক বজায় রাখা, সুসংহত করা ও উন্নয়ন করা চীনা সরকারের এক অটল কৌশলগত নীতি।” তিনি আরও যোগ করেন, “চীন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়াতে প্রস্তুত। আমরা সব ধরনের আধিপত্যবাদের বিরোধিতা করব এবং দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থ ও আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার রক্ষা করব।”

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, বৈঠকে উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে গভীর আলোচনা করেছেন এবং পূর্ণ ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োনহাপ সংবাদ সংস্থা জানায়, বৈঠকে দুই দেশ যৌথ সহযোগিতা, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করার ব্যাপারে একমত হয়েছে।

যদিও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অতীতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল, বেইজিং ও পিয়ংইয়ংয়ের সম্পর্ক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘনিষ্ঠ হয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে বেইজিংয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে কিম জং উন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে কূটনৈতিক ঐক্য প্রদর্শন করেন।

বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন পিয়ংইয়ংয়ের জন্য চীন কেবল কূটনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমর্থনেরও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎস। দুই দেশই যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখে। কিম জং উন সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি পিয়ংইয়ংকে তার পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগের চাপ দেওয়া বন্ধ করে, তবে তিনি ওয়াশিংটনের সঙ্গে পুনরায় সংলাপে ফিরতে প্রস্তুত।

উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের হুমকি মোকাবিলার জন্যই প্রয়োজনীয়। এই প্রেক্ষাপটে চীন-উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হওয়া যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য কৌশলগত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

-আলমগীর হোসেন


আমার স্ত্রী ঠিক করেন কখন হামলা হবে : নেতানিয়াহু

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৮ ১৯:৪৩:৪৯
আমার স্ত্রী ঠিক করেন কখন হামলা হবে : নেতানিয়াহু
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় এসেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ইসরায়েলি কনস্যুলেটে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি স্ত্রী সারা নেতানিয়াহুকে ঘিরে সমালোচনার জবাবে কটাক্ষ করেন এবং আরবদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য রাখেন।

স্ত্রীকে নিয়ে রসিকতা ও যুদ্ধের ঘোষণা

নেতানিয়াহু হালকা রসিকতার সুরে বলেন, “আমার স্ত্রীই আসলে বক্তৃতা লেখেন এবং ঠিক করেন কখন হামলা চালানো হবে।” তিনি দাবি করেন, সারা নেতানিয়াহু ইসরায়েলের ‘পুনর্জাগরণে’ তার একজন অংশীদার।

তিনি অভিযোগ করেন, ইহুদিরা ইতিহাসজুড়ে অপবাদ ও নির্যাতনের শিকার হলেও আজ তারা অস্ত্র হাতে প্রতিরোধ করতে সক্ষম। নেতানিয়াহু বলেন, “আজ পার্থক্য হলো—আমাদের হাতে তরবারি আছে।” একই সঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, গাজায় চলমান যুদ্ধ ‘শেষের পথে’।

আরবদের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক অভিযোগ

আরবদের উদ্দেশে তার অভিযোগ আরও তীব্র ছিল। নেতানিয়াহু দাবি করেন, আরবরাই নাকি ইসরায়েলের ভূমি আক্রমণ করে ইহুদিদের সংখ্যালঘুতে পরিণত করেছিল। তিনি বলেন, “প্রথম মিথ্যা হলো—ইহুদিরা আরবদের নিজস্ব ভূমি থেকে বিতাড়িত করেছে। সত্য হলো, আরবরাই ইহুদিদের তাদের ভূমি থেকে সরিয়ে দিয়েছিল।”

সূত্র : ইয়াফা নিউজ নেটওয়ার্ক


থালাপতি বিজয়ের সমাবেশে প্রাণহানির ঘটনায় পুলিশের মামলা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৮ ১৯:৩৫:৩৫
থালাপতি বিজয়ের সমাবেশে প্রাণহানির ঘটনায় পুলিশের মামলা
ছবি: সংগৃহীত

তামিলনাড়ুতে অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া থালাপতি বিজয়ের রাজনৈতিক জনসমাবেশে পদদলিত হয়ে প্রাণহানির ঘটনায় মামলা করেছে ভারতীয় পুলিশ। বিজয়ের রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেত্রি কাজাগামের (টিভিকে) দুই শীর্ষস্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এই মামলায়।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় তামিলনাড়ুর কারুর জেলায় থালাপতি বিজয়ের সমাবেশে বিপুল লোকসমাগম হয়। একপর্যায়ে অতিরিক্ত গরম ও হুড়োহুড়িতে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলায় পদদলিত হয়ে ১৬ নারী ও ৬ শিশুসহ ৩৯ জন মারা যান এবং প্রায় ১০০ জন আহত হন। এই ঘটনায় টিভিকের সাধারণ সম্পাদক এন আনন্দ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সি টি নির্মল কুমারসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগ

এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আসামিদের বিরুদ্ধে মানুষের জীবনঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে—এমন উদাসীন কাজ ও সরকারি কর্মকর্তাদের আদেশ অমান্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে তামিলনাড়ু পাবলিক প্রপার্টি (ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধ) আইনেও অভিযোগ আনা হয়েছে।

টিভিকের একজন আইনজীবী জোর দিয়ে বলেছেন, সমাবেশে দলটি পুলিশের সব নির্দেশনা মেনে চলেছে। তিনি বলেন, মর্মান্তিক এ ঘটনা বিজয়কে গভীরভাবে শোকাহত করেছে।

ক্ষতিপূরণ ও তদন্ত

তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন গতকাল রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আহতদের দেওয়া হবে ১ লাখ রুপি করে। এ ছাড়া, হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অরুণা জগদেশনের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।

থালাপতি বিজয়ও মৃত ব্যক্তিদের প্রত্যেকের পরিবারকে দলের পক্ষ থেকে ২০ লাখ রুপি এবং আহত প্রায় ১০০ জনের প্রত্যেককে ২ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি শোক প্রকাশ করে লিখেছেন, “আমার হৃদয়ে যে ব্যথা অনুভূত হচ্ছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।” ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কার্যালয় থেকে জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকেও মৃত ব্যক্তিদের পরিবারপ্রতি ২ লাখ রুপি ও আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়ার ঘোষণা এসেছে।

পাঠকের মতামত: