গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা, চার শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ১২:০১:১২
গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা, চার শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নতুন করে চালানো বিমান হামলায় অন্তত ২৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চার শিশু ও দুই নারী রয়েছেন। শনিবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছে স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ১৩ জন নিহত হন, বলে জানায় আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল। একই এলাকার একটি জ্বালানি স্টেশনের কাছে হামলায় আরও চারজন প্রাণ হারান। এদিকে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে নাসের হাসপাতাল জানিয়েছে, তারা ১৫ জনের মরদেহ গ্রহণ করেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, গত ৪৮ ঘণ্টায় তারা গাজা জুড়ে প্রায় ২৫০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে হামাসের যোদ্ধা অবস্থান, অস্ত্রের গুদাম, সুড়ঙ্গপথ ও বিস্ফোরক বস্তু রাখা ভবন অন্তর্ভুক্ত। তবে নিহতদের বেসামরিক নাগরিক কিনা, সে বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেনি, যদিও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (AP) এ বিষয়ে তাদের কাছে প্রতিক্রিয়া চেয়েছিল।

এই সংঘাতের সূচনা হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১,২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। বর্তমানে তাদের হাতে ৫০ জনের মতো জিম্মি রয়েছে, যাদের অর্ধেকেরও কম জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর জবাবে ইসরায়েল শুরু করে সর্বাত্মক সামরিক অভিযান। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ৫৭,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। যদিও এই পরিসংখ্যানে যোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের আলাদা হিসাব নেই, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এই তথ্যকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হিসেবে গণ্য করে।

এদিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, সংঘর্ষবিরতি ও জিম্মি মুক্তির বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে সম্প্রতি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি, অর্থাৎ তাৎপর্যপূর্ণ কোনো অগ্রগতি হয়নি।

-হাসানুজ্জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক


ভারতে শেখ হাসিনা কতদিন থাকবেন তা তাঁকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে: জয়শঙ্কর

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৬ ১৮:২৭:১২
ভারতে শেখ হাসিনা কতদিন থাকবেন তা তাঁকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে: জয়শঙ্কর
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটিতে যতদিন ইচ্ছা থাকতে পারবেন কি না তা নিয়ে মুখ খুলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। একটি লিডারশিপ সামিটে এনডিটিভির সিইও এবং এডিটর ইন চিফ রাহুল কানওয়ালের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কথা বলেন।

যতদিন চান হাসিনা ভারতে থাকতে পারবেন কি না জানতে চাইলে জয়শঙ্কর বলেন এটি ভিন্ন বিষয় এবং তিনি এখানে একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এসেছিলেন। তিনি মনে করেন সেই পরিস্থিতি স্পষ্টতই তাঁর সাথে যা ঘটে তার একটি কারণ। তবে তিনি পুনরায় উল্লেখ করেন যে এটি এমন একটি বিষয় যেখানে তাঁকেই নিজের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে জয়শঙ্কর জোর দিয়ে বলেন ভারত তার প্রতিবেশী দেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দেখতে চায়। তিনি বলেন বাংলাদেশে যারা এখন ক্ষমতায় আছেন তারা অতীতের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। তাই যদি সমস্যা নির্বাচন হয় তবে প্রথম কাজ হবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা।

জয়শঙ্কর আরও বলেন ভারত বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদী এবং দুই দেশের সম্পর্ক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতেই সবচেয়ে ভালো অবস্থায় পৌঁছাতে পারে। তিনি মন্তব্য করেন যে তাঁরা বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করেন। একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত চায় জনগণের ইচ্ছা একটি স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিফলিত হোক।


শান্তি আলোচনা বিফলের পরই পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে তুমুল গোলাগুলির খবর

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৬ ০৯:১৯:৪৬
শান্তি আলোচনা বিফলের পরই পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তে তুমুল গোলাগুলির খবর
ছবি: আল জাজিরা

সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর দুই দেশের সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে দুপক্ষের মধ্যে ভারী গোলাগুলি হয় বলে উভয় দেশের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। এই সংঘর্ষ এমন এক সময়ে ঘটল যখন মাত্র দুই দিন আগেই সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত নতুন একটি শান্তি আলোচনা কোনো অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হয়েছে।

আফগানিস্তানের তালেবানের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ অভিযোগ করেছেন যে পাক সেনারা কান্দাহারের স্পিন বোলদাক জেলায় হামলা চালিয়েছে। তবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের একজন মুখপাত্র মোশাররফ জাইদি এক বিবৃতিতে পাল্টা অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন আফগান বাহিনী চামান সীমান্তে বিনা উসকানিতে হামলা চালিয়েছে। মোশাররফ জাইদি আরও বলেন আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাকিস্তান সম্পূর্ণ সতর্ক অবস্থায় আছে।

সীমান্তে এই সংঘর্ষের প্রেক্ষাপট বেশ জটিল। সৌদি আরবের আলোচনায় কোনো ফল না এলেও দুপক্ষই ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কিন্তু শুক্রবারের ঘটনায় তা কার্যত ভেঙে পড়ল। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পাকিস্তান বারবার তালেবান কর্তৃপক্ষকে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ করেছে। অন্যদিকে কাবুল ইসলামাবাদকে তার আকাশসীমা লঙ্ঘন এবং অযথা চাপ প্রয়োগের অভিযোগ করেছে।

দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা ভেঙে পড়ায় একে অপরকে দোষারোপ করার ঘটনাও ঘটেছে। অক্টোবরের গোড়ার দিকে সীমান্ত সংঘর্ষে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর সংলাপ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল এবং ওই সংঘর্ষের পর তুরস্ক এবং কাতার মধ্যস্থতা করার জন্য এগিয়ে এসেছিল। তবে শুক্রবারের এই নতুন সংঘাত দুই দেশের সম্পর্ককে আরও তলানিতে নিয়ে গেল।

সূত্র: রয়টার্স


গাজার মানবিক সংকট লাঘবে চীনের বিশাল অনুদান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৫ ১৪:৩৮:১৩
গাজার মানবিক সংকট লাঘবে চীনের বিশাল অনুদান
ছবি : সংগৃহীত

গাজা পুনর্গঠন ও চলমান মানবিক সংকট লাঘবের জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে ১০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে চীন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে ফিলিস্তিন অথরিটি বা পিএ বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এই বিশাল মানবিক সহায়তার জন্য চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে চিঠি পাঠিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে চিঠিতে ফিলিস্তিনের ন্যায্য অধিকার সমর্থন এবং পশ্চিম তীর ও গাজায় ইসরায়েলি দখলদারিত্ব কমাতে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেছেন মাহমুদ আব্বাস। বেইজিংয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই অনুদানের ঘোষণা দেন শি জিনপিং।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানায় ফিলিস্তিনি ইস্যুর একটি সর্বসম্মত ন্যায়সংগত ও টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে ফ্রান্সের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের মধ্যেও দুই দেশের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি পারস্পরিক সহায়তা ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের রাজনৈতিক ভিত্তি অটুট রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে খবরে বলা হয় গত সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে সহ সভাপতিত্ব করেছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। দ্বিরাষ্ট্র সমাধান এবং একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোরদার করার লক্ষ্যেই সেই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। চীনের এই আর্থিক সহায়তা এবং ফ্রান্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে নতুন গতির সঞ্চার করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

সূত্র: রয়টার্স


মার্কিন চাপের মধ্যেই দিল্লিতে রুশ প্রেসিডেন্ট

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৪ ২১:৩৯:৩৮
মার্কিন চাপের মধ্যেই দিল্লিতে রুশ প্রেসিডেন্ট
ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের সরকারি সফরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পৌঁছেছেন। পালাম বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ রাতেই দুই নেতা নৈশভোজে মিলিত হবেন আর শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে তাঁদের দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠক। শীর্ষ বৈঠকের আগে রাষ্ট্রপতি ভবনে পুতিনকে দেওয়া হবে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা। পরে তিনি দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন এবং সেখানেই অবস্থান করবেন।

২০২১ সালের পর প্রথমবারের মতো ভারতে সফরে এলেন পুতিন। গত বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মস্কোয় গিয়ে বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। বর্তমান সময়টি দুই দেশের জন্যই বেশ চ্যালেঞ্জের। পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন চাপের মুখে আছেন অন্যদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ও রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে নানা নিষেধাজ্ঞা সব মিলিয়ে ভারতের জন্যও বছরটি কঠিন যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করতে পুতিন দিল্লি সফরে এসেছেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

এনডিটিভি ও দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয় শুক্রবার সকালে পুতিন মহাত্মা গান্ধীর সমাধি ও স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে রাজঘাটে যাবেন। দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে আরও রয়েছে নয়াদিল্লিতে রাশিয়ার গণমাধ্যম আরটি ইন্ডিয়ার উদ্বোধন এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আয়োজিত রাষ্ট্রীয় ভোজে অংশগ্রহণ। শুক্রবার প্রায় রাত ৯টার দিকে পুতিনের ভারত ত্যাগ করার কথা রয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এটাই পুতিনের প্রথম ভারত সফর। স্বাস্থ্য ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দুই দেশের মধ্যে। বিশ্লেষকরা বলছেন দুই দেশই বিকল্প পেমেন্ট সিস্টেম তৈরি ও বাণিজ্য বাড়ানোর উপায় খুঁজছে। ক্ষুদ্র মডুলার নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরও সম্ভাব্য ক্ষেত্র হিসেবে আলোচনায় রয়েছে। পুতিনের সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আবারও নতুন গতি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিক্রিয়া সামলেই ভারতকে এই সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে।


যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে: ফরাসি প্রেসিডেন্ট

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৪ ২০:২৬:৩৫
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে: ফরাসি প্রেসিডেন্ট
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (বামে) ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে বলে ইউরোপীয় নেতাদের সতর্ক করে দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন নিরাপত্তার গ্যারান্টি সম্পর্কে অবস্থান স্পষ্ট না করেই আমেরিকা ইউক্রেনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে। জার্মান ম্যাগাজিন ডের স্পিগেল ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে সাম্প্রতিক একটি ফাঁস হওয়া গ্রুপ ফোনালাপের বরাত দিয়ে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি জানায় তারা কলটির সারসংক্ষেপসহ একটি ইংরেজি নোট পেয়েছে যা ইউরোপীয় রাজনীতির অন্দরমহলের উদ্বেগ সামনে এনেছে।

স্পিগেল জানিয়েছে ফোনালাপে ম্যাক্রোঁ আলোচনার উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তটিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির জন্য একটি বড় বিপদ বলে উল্লেখ করেছেন। ফোনের অপরপ্রান্তে থাকা জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস প্রতিউত্তরে বলেছেন ইউক্রেনীয় নেতাকে খুব সতর্ক থাকতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সমালোচনা করে মের্ৎস মন্তব্য করেন তারা আপনার এবং আমাদের সবার সাথেই খেলা খেলছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে অন্যান্য ইউরোপীয় নেতারাও এই আলাপে তাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ফিনল্যান্ডের আলেকজান্ডার স্টাব বলেন আমাদের ইউক্রেন এবং ভলোদিমিরকে এই লোকদের সাথে একা ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। এমনকি ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট যিনি জনসমক্ষে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসা করেন তিনিও বলেছেন আলেকজান্ডারের সাথে তিনি একমত যে আমাদের ভলোদিমিরকে রক্ষা করতে হবে।

এই ফাঁস হওয়া তথ্যের বিষয়ে জেলেনস্কির একজন মুখপাত্র মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এছাড়া জার্মান চ্যান্সেলর মের্ৎসের অফিস এবং ফ্রান্সের এলিসি প্যালেস ম্যাক্রোঁর উদ্ধৃতিগুলোর বিরোধিতা করেছে। কিন্তু ডের স্পিগেল তাদের প্রতিবেদনে অনড় থেকে জানিয়েছে তারা ফোনকলের বেশ কয়েকজন অংশগ্রহণকারীর সাথে কথা বলেছে এবং তারা ফোনকলের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, পলিটিকো, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউকে


ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্ক উদারভাবে দেখতে হবে: রিয়াজ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৪ ১৫:২১:৫০
ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্ক উদারভাবে দেখতে হবে: রিয়াজ
ছবি: সংগৃহীত

ভারত–বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও উদার ও বাস্তবমুখী দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ। তাঁর মতে, দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তিতে রয়েছে আত্মিক বন্ধন, পারস্পরিক বিশ্বাস এবং পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা। ভবিষ্যতে ভারত ও বাংলাদেশ একটি যৌথ সমৃদ্ধির পথনকশায় অগ্রসর হতে পারে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বুধবার কলকাতার অন্যতম প্রাচীন ব্যবসায়ী সংগঠন মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (MCCI) আয়োজিত এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ। সভায় উপস্থিত ছিলেন কলকাতার বিভিন্ন শীর্ষ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। বক্তব্যে তিনি বলেন, ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরও উদার দৃষ্টিভঙ্গিতে মূল্যায়ন করতে হবে এবং স্পর্শকাতর কিছু ইস্যু থাকলেও সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খোঁজা সম্ভব। দুই দেশের মধ্যে যে বাস্তবিক সহযোগিতা চলছে, তা আগামী দিনের যৌথ ভবিষ্যৎ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

হাইকমিশনার জানান, চিকিৎসা, শিক্ষা, ব্যবসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত–বাংলাদেশের আর্থিক লেনদেন বর্তমানে ২৫ থেকে ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এটি দুই দেশের অর্থনৈতিক ঘনিষ্ঠতা ও পারস্পরিক নির্ভরশীলতার প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলা চলচ্চিত্র নির্মাণে দুই দেশের সরকারি সহযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রিয়াজ হামিদুল্লাহ জানান, আগামী বছর দিল্লিতে বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। তাঁর মতে, সরকারি পর্যায়ে সহযোগিতা বাড়লে শিল্পীরা আরও সহজে ও স্বাচ্ছন্দ্যে যৌথভাবে কাজ করতে পারবেন, যা দুই বাংলার সাংস্কৃতিক বিনিময়কে আরও জোরদার করবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে উত্তরীয় পরিয়ে হাইকমিশনারকে স্বাগত জানানো হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র সহসভাপতি মনীষ ঝানজরিয়া। পুরো অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা, যারা ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় করেন।

-রফিক


পুতিনের হঠাৎ ভারত সফরের কারণ বেরিয়ে এল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৪ ১৪:৫৫:০১
পুতিনের হঠাৎ ভারত সফরের কারণ বেরিয়ে এল
ছবি: সংগৃহীত

ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার টানাপোড়েন যখন আরও বাড়ছে, ঠিক সেই সময়ই দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে পৌঁছেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মূলত ভারতের বিশাল জ্বালানি বাজার, সামরিক সহযোগিতা এবং নতুন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রি পুতিনের এই সফরের কেন্দ্রবিন্দু।

পুতিন দিল্লিতে পা রাখার আগেই মস্কোর পার্লামেন্ট ভারত–রাশিয়া প্রতিরক্ষা সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে অনুমোদন দিয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনী একে অপরের ভূখণ্ডে সামরিক লজিস্টিক সুবিধা, ঘাঁটি ও পরিকাঠামো ব্যবহার করতে পারবে। এটি দুই শক্তির প্রতিরক্ষা সম্পর্ককে আরও গভীর করার ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ভূরাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পুতিনের এই সফর শুধুই কূটনৈতিক সৌজন্য নয়। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় গণতন্ত্র ভারতের ১.৪ বিলিয়নেরও বেশি মানুষের বাজার, আঞ্চলিক অবস্থান এবং সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক অস্থিরতা রাশিয়ার জন্য নতুন কৌশলগত সম্ভাবনা তৈরি করেছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার চাপের মাঝে মস্কোর জন্য ভারত এখন জ্বালানি ও অস্ত্র বাণিজ্যের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বাজার।

দুই দেশের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে পুতিন ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একাধিক বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা নিয়ে নতুন চুক্তি সই করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র গত কয়েক মাস ধরেই মস্কো থেকে ভারতের তেল আমদানি কমানোর দাবি জানিয়ে আসছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে ভারতের মাত্র ২.৫ শতাংশ তেল আসত রাশিয়া থেকে। নিষেধাজ্ঞার সুযোগে ছাড়মূল্যে তেল পেয়ে ভারতের আমদানি বেড়ে গিয়ে ৩৫ শতাংশে পৌঁছায়। এতে ভারত অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হলেও ওয়াশিংটন প্রকাশ্যেই অসন্তোষ দেখায়।

অক্টোবর মাসে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করলে দুই দেশের বাণিজ্যিক উত্তেজনা প্রকট হয়। ফলে ভারতের রুশ তেল ক্রয় কমে আসে। বিশ্লেষকদের মতে, পুতিন সফরে তেল রপ্তানি বাড়ানোই মস্কোর অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার।

শীতল যুদ্ধ–পরবর্তী যুগ থেকেই ভারত রাশিয়ার বড় অস্ত্র ক্রেতা। এবারও পুতিনের সফর ঘিরে ভারতীয় গণমাধ্যমে খবর এসেছে যে দিল্লি নতুন প্রজন্মের যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংগ্রহে আগ্রহী।

এ ছাড়া, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধজনিত শ্রম সংকটে ভুগছে। মস্কোর দৃষ্টি এখন ভারতীয় দক্ষ শ্রমিক ও প্রযুক্তিগত কর্মীদের দিকে। দুই দেশের মধ্যে শ্রম সহযোগিতার আলোচনা এই সফরে আরও জোরদার হতে পারে।

ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক প্রায় ছিন্নপ্রায় অবস্থায়। পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করতে চাইছে; আর রাশিয়া চাইছে এশিয়ার মাধ্যমে তার কৌশলগত ও অর্থনৈতিক অবস্থান পুনর্গঠন করতে। পুতিনের দিল্লি সফর সেই কৌশলগত পুনর্গঠনেরই ইঙ্গিত বলে বিবিসির বিশ্লেষণ।

কয়েক মাস আগে পুতিন চীনে গিয়ে শি জিনপিং ও নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যৌথ ছবি তুলেছিলেন। বিশেষজ্ঞ আন্দ্রি কোলেসনিকভ মনে করেন, ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক হারানো রাশিয়ার বড় ক্ষতি হলেও এশিয়ার দুই শক্তি চীন ও ভারত রাশিয়ার নতুন কূটনৈতিক ভরসা হয়ে উঠছে।

এই সফরে দুই দেশের নেতারা তেল, প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি, বাণিজ্য ও মানবসম্পদ খাতে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার চেষ্টা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

-রফিক


গাজায় যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও চলছে ইসরায়েলি হামলা, ঝরছে রক্ত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৪ ০৯:২১:১১
গাজায় যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও চলছে ইসরায়েলি হামলা, ঝরছে রক্ত
ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মার্কিন মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি বজায় থাকার কথা থাকলেও তা লঙ্ঘন করে আবারও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বুধবার ৩ ডিসেম্বর চালানো এসব হামলায় দুই শিশুসহ অন্তত সাত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার আল মাওয়াসি ক্যাম্পে বোমা হামলায় আগুন লেগে বেশ কয়েকটি তাঁবু পুড়ে যায় এবং সেখানেই পাঁচজন নিহত হন। চিকিৎসকরা জানান নিহত শিশুদের বয়স আট ও দশ বছর। এছাড়া উত্তর গাজার জেইতুন এলাকায় ইসরায়েলি বন্দুকধারীদের গুলিতে আরও দুই ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি দক্ষিণ রাফায় হামাস তাদের যোদ্ধাদের ওপর হামলা চালিয়ে চার সেনাকে আহত করার পরই এই পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগেই কড়া জবাবের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। হামাস আল মাওয়াসিতে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে একে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং মধ্যস্থতাকারী মিশর কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর লাগাম টানার দাবি জানিয়েছে।

এদিকে রাফাহ সীমান্ত খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল তবে সেখানে জুড়ে দেওয়া হয়েছে কঠিন শর্ত। তেল আবিব জানিয়েছে এই ক্রসিং দিয়ে কেবল গাজার বাসিন্দারা উপত্যকা ত্যাগ করতে পারবেন কিন্তু কোনো ত্রাণ বা সহায়তা প্রবেশ করতে পারবে না। তবে মিশর এই সিদ্ধান্তকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের শান্তি পরিকল্পনার পরিপন্থী ও একতরফা আখ্যা দিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে। মার্কিন পরিকল্পনায় ছিল রাফাহ সীমান্ত উভয় দিকের চলাচলের জন্যই উন্মুক্ত থাকবে।

এর মধ্যেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী আরও এক ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে হামাস। স্থানীয় সময় বুধবার বেইত লাহিয়ায় সংগঠনটির সদস্যরা রেডক্রসের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে যা পরে ইসরায়েলে পৌঁছে দেওয়া হয়। গাজার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী কমপক্ষে ৫৯১ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে যার ফলে কমপক্ষে ৩৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৯২২ জন আহত হয়েছেন।


রাষ্ট্রীয় মদদে যেভাবে সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে ভারত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৩ ২০:৫২:১১
রাষ্ট্রীয় মদদে যেভাবে সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে ভারত
ছবি : সংগৃহীত

ভারতে মুসলিম খ্রিস্টান এবং কাশ্মীরিরা বর্তমানে ক্রমবর্ধমান রাষ্ট্র সমর্থিত লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তারা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক গোঁড়ামির শিকার হচ্ছেন যার ফলে দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ ভিত্তিও পুরোদস্তুর হুমকির মুখে পড়েছে। বিজেপির হিন্দু জাতীয়তাবাদী বাগ্মিতা ভারতের ২২ কোটিরও বেশি মুসলিম জনসংখ্যার জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাজস্থানের বিকার শহরে প্রায় ২০০ জনের একটি উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী গির্জার প্রার্থনাসভায় হামলা চালায় এবং লোহার রড দিয়ে উপাসনাকারীদের মারধর করে। বর্তমানে ভারতে মুসলমান খ্রিস্টান এবং কাশ্মীরিদের জন্য ভয় নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। মুসলিম মহল্লাগুলিতে উচ্ছেদ পুলিশি অভিযান আটক এবং হয়রানির ঘটনাও বাড়ছে। একইভাবে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ও চার্চে হামলা এবং প্রার্থনা সভার সময় হুমকি পাওয়ার অভিযোগ করছে।

ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়া হেট ল্যাবের বা আইএইচএলের তথ্য অনুসারে ২০২৪ সালে ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের ঘটনা ৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সংস্থাটি বলছে এই উদ্বেগজনক বৃদ্ধি ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি এবং বৃহত্তর হিন্দু জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের আদর্শগত আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। সর্বশেষ ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ভারতের ১৪০ কোটি জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ হিন্দু হলেও মুসলমানরা বৃহত্তম সংখ্যালঘু যাদের সংখ্যা ১৪ শতাংশ এবং খ্রিস্টানরা ২ শতাংশের সামান্য বেশি।

নয়াদিল্লি ভিত্তিক খ্রিস্টান অধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ইউনাইটেড ক্রিশ্চিয়ান ফোরাম বা ইউসিএফ জানিয়েছে ভারতে প্রতিদিন গড়ে দুইজনেরও বেশি খ্রিস্টান আক্রান্ত হচ্ছেন। গত এক দশকে এই হামলা বহুগুণ বেড়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা যায় ২০২৪ সালে ৮৩৪টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছিল যেখানে ২০১৪ সালে সংখ্যাটি ছিল মাত্র ১২৭। ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ধর্মান্তর বিরোধী আইন প্রণয়ন করা হয়েছে এবং খ্রিস্টানরা দাবি করছেন হিন্দু উগ্রপন্থি গোষ্ঠীগুলি তাদের আক্রমণ করার জন্য এই আইন ব্যবহার করছে।

অন্যদিকে সাউথ এশিয়া জাস্টিস ক্যাম্পেইনের ২০২৫ সালের একটি পর্যালোচনা অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বেশ কিছু রাজ্য কর্তৃপক্ষ প্রধানত মুসলিম এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে যাকে প্রায়শই বুলডোজার ন্যায়বিচার বলা হয়। শুধু ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে সারা ভারতে ৭ হাজার ৪০০টিরও বেশি বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে যার ফলে ৪১ হাজারেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। এই ধ্বংসের শিকার হওয়াদের প্রায় ৩৭ শতাংশই মুসলিম।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অজয় গুদাবর্থী মনে করেন হিন্দু জাতীয়তাবাদ এখন কাঠামোগত রূপ নিয়েছে। অধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন আরও উল্লেখ করেছে হিন্দু জনতা কর্তৃক মুসলিমদের লক্ষ্য করে নজরদারিমূলক সহিংসতা বেড়েছে যেমন গবাদি পশুর পরিবহন বা গো মাংস খাওয়ার সন্দেহে হামলা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন রাষ্ট্রীয় নীতি যখন হিন্দুত্বের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে তখন ভারতের সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।

সূত্র: টিআরটি

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত