আটঘরিয়ায় জমি বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও বাড়ি ভাঙচুর: পাল্টাপাল্টি মামলা, হেনস্তার অভিযোগ

এম এস রহমান
এম এস রহমান
স্টাফ রিপোর্টার, পাবনা
সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৬ ১৫:১৪:২৩
আটঘরিয়ায় জমি বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও বাড়ি ভাঙচুর: পাল্টাপাল্টি মামলা, হেনস্তার অভিযোগ

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার হাপানিয়া মসজিদপাড়া গ্রামে জমির সীমানা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, মারধর ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার জেরে উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে। তবে অভিযোগ উঠেছে, সংঘর্ষের সময় উপস্থিত না থাকা নিরীহ ব্যক্তিদের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে প্রতিপক্ষ হয়রানি করছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৪ জুন কামাল জোয়ার্দ্দার ও তোফাজ্জাল প্রামানিকের মধ্যে জমির সীমানা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। তোফাজ্জালের আত্মীয় আব্দুর রাজ্জাক, আমিজাল ও সোহেলসহ কয়েকজন মিলে কামালের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী, ছেলে ও ভাতিজাসহ পরিবারের সদস্যদের মারধর করে। পরে কামালের ভাই আবদুল হাই উভয় পক্ষকে নিয়ে বিরোধ মীমাংসা করেন।

কিন্তু পরবর্তীতে, ১০ জুন আমিজাল-রাজ্জাক গং পুনরায় সংঘর্ষে জড়ায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। বাড়ি ও সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।

১৩ জুন কামালের ভাই আব্দুল হাই বাদী হয়ে আমিজাল, রাজ্জাক, সোহেলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এর বিপরীতে ১৪ জুন রাজ্জাকের ভাই মোজ্জেম আলী খান বাদী হয়ে কামাল, হাই, ওয়াহাব ও হুজ্জাতুল্লাহসহ ১১ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন।

আহত কামাল জোয়ার্দ্দার বলেন, “আমার ভাই জমি মেপে আপোষ মিমাংসা করে দিয়েছিল। তারপরও ওরা দলবল নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা করে, বাড়ি ভাঙে, আমাকে ও আমার পরিবারকে মারে। আমার দুই হাত ভেঙে দিয়েছে।”

কামালের স্ত্রী সালমা খাতুন বলেন, “ওরাই আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে এখন উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়েছে। অথচ আমার স্বামী, সন্তানসহ সবাই আহত।”

অন্যদিকে প্রতিপক্ষের আহত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “আমার চাচাতো ভাই আমিজালকে কামালদের বাড়ির সামনে পিটিয়ে আহত করে। আমি গেলে তারাও আমাকে কোপায়। প্রথমে আমি শান্তি চেয়েছিলাম, পরে নিজেরাই আহত হলাম।”

তবে রাজ্জাকের ছেলে সোহাগ হোসেন দাবি করেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নই। অথচ আমাদের আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে।”

এলাকাবাসীর অনেকে ঘটনার নিরপেক্ষ সাক্ষ্য দিয়েছেন। প্রবীণ কৃষক গোলাম মোস্তফা জানান, “কামাল, হুজ্জাতুল্লাহ ও হাই খুব ভদ্র মানুষ। ওদের কখনও ঝগড়া করতে দেখিনি।” স্থানীয় নারী খাদিজা খাতুন বলেন, “আমিজাল-সোহেল গং সব সময় গ্রামের মানুষকে জ্বালায়। এর আগেও মেম্বারকে মেরেছিল।”

চাঁদভা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য আব্দুল হান্নান বলেন, “ওয়াহাব, হুজ্জাতুল্লাহ ঘটনার সময় সেখানে ছিলেন না। তারা কোনো দিন মারামারির সাথে জড়িত ছিলেন না। আসল সমস্যাটা জমির নয়, বরং তৃতীয় পক্ষের দখল ও প্রভাব বিস্তারের লড়াই।”

এ বিষয়ে আটঘরিয়া থানার ওসি মো. শফিকুজ্জামান বলেন, “উভয়পক্ষই মামলা করেছে। পুলিশ তদন্ত করছে। তবে আসামিরা আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন বলে জানা গেছে।”

পাঠকের মতামত:

ট্যাগ: পাবনা

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত