মা নিজেই কাটলেন নাড়ি, নিজেই পরিষ্কার করলেন সন্তান—যশোরে অভূতপূর্ব ঘটনা!

খুলনা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২০ ২১:৪৯:৩৯
মা নিজেই কাটলেন নাড়ি, নিজেই পরিষ্কার করলেন সন্তান—যশোরে অভূতপূর্ব ঘটনা!

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ঘটে গেছে এক চাঞ্চল্যকর ও রহস্যঘেরা ঘটনা। টয়লেটেই সন্তান প্রসব করেছেন এক অন্তঃসত্ত্বা নারী—এবং তা একেবারে চিকিৎসা সহায়তা ছাড়াই। ঘটনাটি যেমন মানবিক বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে, তেমনই তৈরি করেছে একাধিক প্রশ্ন।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) মধ্যরাতে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের টয়লেটে রত্না বিশ্বাস (৩৬) নামের এক নারী একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন। গর্ভাবস্থার তথ্য গোপন করে ভর্তি হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাকে গাইনী ওয়ার্ডে না পাঠিয়ে মেডিসিন বিভাগে রাখেন, এবং সেখানে মেঝেতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ প্রসব বেদনা উঠলে ওয়ার্ডের টয়লেটে যান রত্না, এবং সেখানেই নিজেই সন্তান প্রসব করেন।

প্রসবের পর নিজের শরীর থেকে শিশুটিকে আলাদা করে, ওয়াশরুমে থাকা বদনার পানি দিয়ে নবজাতকের শরীর পরিষ্কার করছিলেন তিনি। এসময় শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনে নার্স ও অন্যান্য রোগীর স্বজনেরা ছুটে যান, উদ্ধার করেন মা ও নবজাতককে। নবজাতকটিকে নেওয়া হয় শিশু বিভাগে, এবং প্রসূতি রত্নাকে গাইনী লেবার ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়।

হাসপাতালের শিশু বিভাগ জানায়, নবজাতক ছেলে শিশুটির ওজন আড়াই কেজি এবং সে পুরোপুরি সুস্থ। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং সবসময় একজন দায়িত্বে রয়েছেন। যদিও প্রসূতি রত্না এখনও সন্তানকে দেখতে যাননি, শিশুটিকে ঘিরে নার্স ও অন্যদের মধ্যে দত্তক নেওয়ার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

এদিকে গোটা ঘটনার পেছনে তথ্য গোপন, প্রসূতির মানসিক অবস্থা, এবং নবজাতকের সম্ভাব্য হত্যা চেষ্টার গুঞ্জন নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

প্রসূতি রত্না বলেন, “আমি গর্ভবতী ছিলাম এটা সবাই জানতো। কীভাবে সন্তান প্রসব হলো, বুঝতেই পারিনি। নিজ সন্তানকে কেন মারতে যাবো?”

তার স্বামী, পেশায় মাছ বিক্রেতা রমেশ বিশ্বাস, জানান, “রত্না দীর্ঘদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছে। চিকিৎসার চেষ্টা চলছিল পরিবার থেকে।”

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়েত বলেন, “এই ঘটনাটি বহু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। শনিবার আমরা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিয়ে বসে পুরো বিষয়টি পর্যালোচনা করব।”

একদিকে এটি মাতৃত্বের এক নিঃসঙ্গ যুদ্ধের করুণ প্রতিচ্ছবি, অন্যদিকে চিকিৎসা ব্যবস্থার নজরদারির ঘাটতির চিহ্ন। তবে শঙ্কার মধ্যেও আশার কথা—মা ও নবজাতক উভয়েই এখন শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছেন।

—আশিক নিউজ ডেস্ক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আমেরযত কাহিনি

আমেরযত কাহিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ‘আম’ শুধু একটি ফল নয়, বরং এটি ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এক... বিস্তারিত