ইরান ইসরাইলের যুদ্ধ

"ইরানের আকাশ এখন ট্রাম্পের দখলে? চাঞ্চল্যকর দাবি মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্টের"

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৭ ২২:৫৪:৩১
"ইরানের আকাশ এখন ট্রাম্পের দখলে? চাঞ্চল্যকর দাবি মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্টের"

মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের আকাশসীমা নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ স্যোশাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “আমরা এখন ইরানের আকাশসীমা পূর্ণাঙ্গ ও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি।” তবে 'আমরা' বলতে তিনি ঠিক কাদের বোঝাচ্ছেন—তা পরিষ্কার করেননি।

ট্রাম্প তাঁর পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, “ইরানের ভালো মানের স্কাই ট্র্যাকার ও অন্যান্য প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম ছিল এবং তা ছিল প্রচুর পরিমাণে। কিন্তু সেগুলো আমেরিকায় তৈরি, পরিকল্পিত ও প্রস্তুতকৃত সরঞ্জামের সঙ্গে তুলনাই চলে না। যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এটা কেউই ভালোভাবে করতে পারে না।”

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র বহু বছর ধরেই ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল কর্তৃক ইরানের উপর চালানো একাধিক বিমান হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত নয় বলে দাবি করছে ওয়াশিংটন।

ট্রাম্প-গ্যাবার্ড বিরোধ: পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে দ্বিমতইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়েও তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য একেবারেই বিপরীত।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’-এ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “তিনি (গ্যাবার্ড) কী বলেছেন আমি তার ধার ধারি না। আমার মনে হয় তারা (ইরান) একেবারে কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে।”

অন্যদিকে, গত ২৫ মার্চ সিনেটের গোয়েন্দা কমিটিতে দেওয়া বিবৃতিতে তুলসী গ্যাবার্ড বলেন, “আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা এখনো বিশ্বাস করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না। সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি ২০০৩ সালে এই কর্মসূচি স্থগিত করেন এবং এখনো সেটি চালুর অনুমোদন দেননি।”

তবে গ্যাবার্ড সতর্ক করেন, “ইরান বর্তমানে অস্ত্র-উপযোগী ইউরেনিয়ামের সর্বোচ্চ মজুদধারী অ-পারমাণবিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, যা উদ্বেগজনক। যদিও এখনো সরাসরি কোনো অস্ত্রায়নের আলামত মেলেনি।”

যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকায় প্রশ্নট্রাম্পের এই বক্তব্য এমন এক সময় এসেছে যখন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্র বারবার বলছে তারা এ সংঘাতে জড়িত নয়, কিন্তু ইরান ও চীন উভয়েই দাবি করছে, ওয়াশিংটন পরোক্ষভাবে সংঘাতকে উসকে দিচ্ছে।

এদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মঙ্গলবার ইরানের ওপর ইসরায়েলের সামরিক হামলা দেখে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ‘আগুনে ঘি ঢালার’ জন্য দায়ী করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য কেবল আঞ্চলিক উত্তেজনাই নয়, বরং আন্তর্জাতিক কূটনীতিক সম্পর্কেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।


দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের শীতলতা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের ও ভারতের পদক্ষেপ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১০ ০৯:৫৩:৩০
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের শীতলতা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের ও ভারতের পদক্ষেপ
ছবিঃ সংগৃহীত

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের পর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তেমন অগ্রগতি করতে পারেনি। প্রায় এক বছর পার হলেও দুই দেশের সম্পর্ক প্রত্যাশামতো স্থিতিশীল ও উন্নত হয়নি। তবে কূটনৈতিক মহলে এবং দিল্লির বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিশ্বাস আছে, যে এই সম্পর্ক আবারও পুনরুজ্জীবিত হতে পারে যদি দুই দেশ নিজেদের বিশেষ প্রয়োজনগুলোকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে একে অপরের অবস্থান বুঝতে পারে।

ভারতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, আর বাংলাদেশের জন্য তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য ভাগাভাগি অন্যতম স্পর্শকাতর ইস্যু। এই দুই বিষয় যদি আন্তরিকতার সঙ্গে সমাধানের পথে এগোনো হয়, তাহলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন করে গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

পররাষ্ট্রনীতির বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলেন, বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যম ও বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রচলিত অ্যান্টি-ইন্ডিয়া ভাবনা মূলত তরুণ সমাজের মধ্যে বিদ্যমান দূরত্ব ও অসন্তোষ থেকে সৃষ্টি। এটি দূর করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। বিশেষ করে পানি বিষয়ে ন্যায্য সমঝোতা ঘটানো গেলে সম্পর্কের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে।

তিনি আরও বলেন, “ভারত কেন তিস্তা নদীর পানির ভাগাভাগি নিয়ে এগিয়ে আসেনি এবং কেন আলোচনায় আগ্রহ দেখায়নি তা একটি বড় প্রশ্ন। চীনের একটি প্রস্তাবও আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি, কিন্তু আমাদের নিজ উদ্যোগ দেখানো হয়নি।” এ অবস্থায় সম্পর্কের উন্নয়নে আন্তরিক পদক্ষেপ জরুরি।

অন্যদিকে অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং বাণিজ্যিক বাস্তবতা অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, দুই প্রতিবেশীর পুনর্মিলনের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে। আগামী বছর বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ে উত্তরণ করবে। তবে এ সঙ্গে কিছু পুরানো বাণিজ্য সুবিধা বন্ধ হওয়ার কারণে নতুন চ্যালেঞ্জ সামনে আসছে। এই সময় ভারতের সহযোগিতা বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

অর্থনীতিবিদ প্রবীর দে বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হওয়ার পর অর্থনীতির দ্রুত বিকাশের জন্য ‘থ্রাস্ট’ প্রয়োজন, যা ভারত ছাড়া সম্ভব নয়। তিনি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের উদাহরণ দিয়ে বলেন, এই বন্দর থেকে ৬৫ শতাংশ কার্গো ভারতের পোর্ট থেকে আসবে, যা অর্থনৈতিক সংযোগের প্রমাণ।

প্রবীর দে আরও বলেন, “অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ খাতে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা থাকলে সম্পর্কের শীতলতা কাটিয়ে উঠা সম্ভব।” দিল্লির অনেক বিশ্লেষকও আশাবাদী যে, দুই দেশের প্রয়োজন ও নির্ভরশীলতা একে অপরকে পুনরায় কাছাকাছি আনবে।

-শরিফুল


ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যে শুল্ক যুদ্ধে নতুন ধোঁয়াশা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১০ ০৮:৫০:৪৩
ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যে শুল্ক যুদ্ধে নতুন ধোঁয়াশা
ছবিঃ সংগৃহীত

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হয়েছে। নতুন এই শুল্ক নীতি নিয়ে ওয়াশিংটন ও দিল্লির মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। আমেরিকার পক্ষ থেকে শুল্ক কমানোর শর্ত হিসেবে ভারতের রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করার দাবি করা হয়েছে, কারণ ট্রাম্প মনে করেন এই তেল আমদানি মোদি সরকারের বিরুদ্ধে একটি বড় সমস্যা। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই শুল্ক আরোপকে অযৌক্তিক এবং আমেরিকার দ্বিমুখী নীতির প্রকাশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

একসময় মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে গড়ে ওঠা বন্ধুত্ব এবং তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে ধরা হত। হিউস্টনের ‘হাউডি মোদি’ এবং আহমেদাবাদের ‘নমস্তে ট্রাম্প’ অনুষ্ঠানগুলি ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বাণিজ্য শুল্ক আরোপের কারণে সেই সম্পর্ক এখন কঠোর বাস্তবতার মুখোমুখি। ভারতের একটি বড় ভুল ছিল ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যক্তিগত বন্ধুত্বকে অর্থনৈতিক স্বার্থের ওপর প্রাধান্য দেয়া। যদিও মোদি ট্রাম্পকে ‘মহান বন্ধু’ বলতেন, ট্রাম্প মূলত ব্যবসায়িক স্বার্থে বন্ধুত্বকে গুরুত্ব দেন, যা ভারতের বুঝতে সময় লেগেছে।

ভারতের রাশিয়ার ওপর তেল আমদানির নির্ভরতা ট্রাম্পের বিরক্তির কারণ। মোট তেলের প্রায় ৪০ শতাংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করে ভারত, যা ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটের প্রেক্ষাপটে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতা তৈরি করেছে। ট্রাম্প এই তেল আমদানিকে পুতিনের পক্ষে সমর্থন হিসেবে দেখেন এবং ভারতের ওপর বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলেছেন। ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপকে তিনি শুধু অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং ভারতের প্রতি সতর্কবার্তা হিসেবে দেখেন। তাছাড়া, ট্রাম্পের পাকিস্তানপন্থী অবস্থান ও জ্বালানি সহযোগিতা ভারতের জন্য কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করেছে।


গাজা দখল রুখতে ওআইসির জরুরি সভার ঘোষণা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ২০:৪২:২৯
গাজা দখল রুখতে ওআইসির জরুরি সভার ঘোষণা
ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর পতাকা। ফাইল ছবি

ইসরাইলের গাজা দখলের পরিকল্পনা প্রতিহত করতে জরুরি বৈঠক আহ্বানের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। শনিবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান এ তথ্য জানান।

মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদর আবদেলাত্তির সঙ্গে কায়রোতে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফিদান বলেন, ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে এই জরুরি বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইসরাইলের পরিকল্পনাকে সরাসরি নাকচ করে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাজা দখলের চেষ্টা ইসরাইলের সম্প্রসারণবাদী ও গণহত্যামূলক নীতির নতুন ধাপ। তিনি জানান, তুরস্ক ও মিশর এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে একসঙ্গে অবস্থান নেবে।

মানবিক সহায়তার প্রসঙ্গে ফিদান বলেন, তুরস্ক এ পর্যন্ত গাজার জন্য প্রায় ১ লাখ ২ হাজার টন সহায়তা পাঠিয়েছে। এই সহায়তা পৌঁছাতে সহযোগিতা করার জন্য তিনি মিশরকে ধন্যবাদ জানান।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরাইলের সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। অবরুদ্ধ এ এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি ক্ষুধা ও অনাহারে বহু মানুষের মৃত্যু ঘটেছে।

গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। একই সময়ে গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলাও চলছে।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে আঙ্কারার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে ফিদান বলেন, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিনিদেরই ভূমি, এবং তাদের উচ্ছেদের যেকোনো প্রচেষ্টা অবৈধ ও ব্যর্থ হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, তুরস্ক আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতির ভিত্তিতে ফিলিস্তিনের পাশে থাকবে।

/আশিক


মাত্র ১৯ দিন হাতে, অর্থনৈতিক আঘাত এড়ানোর উপায় খুঁজছে ভারত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ২০:২৫:৪১
মাত্র ১৯ দিন হাতে, অর্থনৈতিক আঘাত এড়ানোর উপায় খুঁজছে ভারত
ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া থেকে তেল কেনার জেরে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বসানোর ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (৬ আগস্ট) ঘোষিত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ২৭ আগস্ট থেকে। এর আগে তিন সপ্তাহ আগে ট্রাম্প ২৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। ফলে ভারতীয় পণ্যের ওপর মোট শুল্ক দাঁড়াবে ৫০ শতাংশ।

ভারত সরকার এ পদক্ষেপকে ‘অন্যায়’ ও ‘অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়েছে। রপ্তানিকারকদের মতে, এত উচ্চ হারে শুল্ক বৃদ্ধিতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। বেশির ভাগ রপ্তানিকারক জানান, তারা সর্বোচ্চ ১০-১৫ শতাংশ শুল্কবৃদ্ধি সহ্য করতে পারেন, কিন্তু ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি ‘পথে বসার’ সমান।

রপ্তানি ও অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাববিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের রপ্তানি খাতে এটাই সবচেয়ে বড় ধাক্কা। বর্তমানে ভারত বছরে প্রায় ৮৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে, যা দেশের মোট রপ্তানির ১৮ শতাংশ। এ থেকে ভারতের জিডিপির প্রায় ২.২ শতাংশ আয় হয়। আগে ২৫ শতাংশ শুল্কে জিডিপি ০.২ থেকে ০.৪ শতাংশ হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা ছিল, কিন্তু ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে।

যদিও ইলেকট্রনিকস ও ফার্মাসিউটিক্যালস আপাতত শুল্কমুক্ত থাকছে, তবে টেক্সটাইল ও গয়নার মতো শ্রমনিবিড় খাতগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তামিলনাডুর তিরুপুর ও গুজরাটের সুরাটের বহু কারখানায় কর্মসংস্থান হুমকিতে পড়তে পারে।

কৌশলগত পরিবর্তনের সম্ভাবনাকিছু পর্যবেক্ষক মনে করছেন, এই পরিস্থিতি ভারতের জন্য কৌশলগত অংশীদারিত্ব পুনর্বিবেচনার সুযোগ তৈরি করেছে। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের অজয় শ্রীবাস্তব মনে করেন, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন সম্মেলনে যোগদানকে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কিন্তু কিছু বিশ্লেষকের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ মোকাবিলায় ভারত হয়তো রাশিয়ার সঙ্গে তেল বাণিজ্যে ধীরে ধীরে সীমিতকরণে যাবে। যদিও মোদি-পুতিন টেলিফোন আলাপে দুই দেশের ‘বিশেষ সম্পর্ক’ বজায় রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হয়েছে এবং পুতিনের ভারত সফরের প্রস্তুতিও চলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি অনিশ্চিতশুল্কবৃদ্ধির মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা বন্ধ হয়নি। এ মাসের শেষ দিকে মার্কিন প্রতিনিধিদল দিল্লি সফর করবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে চুক্তি টিকিয়ে রাখতে হলে ভারতকে দক্ষ কূটনীতির পরিচয় দিতে হবে। কৃষি ও দুগ্ধখাত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকারের দাবিই মূল জটিলতা তৈরি করছে।

পাল্টা শুল্কের সম্ভাবনাকিছু রাজনৈতিক নেতা ও বিশ্লেষক যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের পরামর্শ দিচ্ছেন। শশী থারুরের মতে, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন দেশ হিসেবে ভারতেরও সমপরিমাণ শুল্ক বসানো উচিত। যদিও বার্কলেস রিসার্চ মনে করে, ভারতের এমন পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা কম, তবে একেবারে অসম্ভব নয়।

ভারতের রপ্তানিকারকরা এখন সরকারের কাছ থেকে জরুরি প্রণোদনা ও সহায়তার আশায় আছে। নোমুরা বলছে, এত দিন যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা এখন যথেষ্ট নয়।

সূত্র : বিবিসি বাংলা


গাজায় তীব্র খাদ্য সংকটের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ১২:৩৬:২৯
গাজায় তীব্র খাদ্য সংকটের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে
গাজায় অনাহার এবং অপুষ্টিতে মারা যাচ্ছে বহু মানুষ/ফাইল ছবি: এএফপি

গাজার দীর্ঘদিনের সংঘাতের মধ্যেই তীব্র অনাহারে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০১ জনে। সেখানে হাজার হাজার মানুষ অনাহার ও অপুষ্টিতে ভুগছে, বিশেষ করে নারীদের ও শিশুদের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের সীমান্তে আকস্মিক হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজার ওপর ব্যাপক পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। এই সংঘাতের ফলস্বরূপ, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৬১,৩৩০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৫২,৩৫৯ জন আহত হয়েছে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। গাজা সিটি নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রস্তুতি নিচ্ছে। মন্ত্রিসভা যুদ্ধ শেষ করার জন্য পাঁচটি নীতি গৃহীত করেছে, যার মধ্যে একটি হলো হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নয় এমন বিকল্প বেসামরিক সরকার গঠন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপ দেশটির ভেতরে বিরোধিতার মুখে পড়েছে। হামাসের হাতে আটক থাকা জিম্মিদের পরিবার এই পরিকল্পনার কারণে তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এছাড়া এই সিদ্ধান্তের ফলে গাজার বেসামরিক জনগণের প্রাণহানির আশঙ্কাও বেড়েছে।

দেশটির সামরিক নেতৃত্ব ও বিরোধী দলও সতর্ক করে দিয়েছে যে, গাজা সিটি দখল নিয়ে এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক ক্ষোভ বাড়াতে পারে এবং ইসরায়েলকে আরো বিচ্ছিন্ন করতে পারে।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে থাকা বেসামরিক জনগণের মানবিক সহায়তার সময় আইডিএফ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই পরিকল্পনা মন্ত্রিসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদিত হয়েছে।

/আশিক


আলাস্কায় পুতিন-ট্রাম্প সাক্ষাৎ: কূটনৈতিক ইতিহাসের নতুন অধ্যায়

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ০৯:৪৬:১২
আলাস্কায় পুতিন-ট্রাম্প সাক্ষাৎ: কূটনৈতিক ইতিহাসের নতুন অধ্যায়
ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আগামী ১৫ আগস্ট আলাস্কায় সাক্ষাৎ করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আলাস্কায় ‘গ্রেট স্টেট অফ আলাস্কা’ এলাকায় অনুষ্ঠিত হবে এই বহু প্রতীক্ষিত বৈঠক। বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।

ট্রাম্প আগে বলেছিলেন, পুতিনের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ খুব শিগগিরই হতে যাচ্ছে। তবে বৈঠকের সঠিক তারিখ ও স্থান প্রকাশ করেননি, কারণ তিনি চাইছেন না এই খবর আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যবর্তী শান্তিচুক্তির গুরুত্বকে কমিয়ে দেয়। ওই শান্তিচুক্তি শুক্রবার হোয়াইট হাউসে স্বাক্ষরিত হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও জানান, পুতিন যত দ্রুত সম্ভব এই বৈঠক করতে চান। তিনি বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন একটি শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে কিছু এলাকা বিনিময় করবে। বিষয়টি জটিল হলেও, উভয় পক্ষের মঙ্গলের জন্য ওই অঞ্চলগুলো অদলবদল হবে। এ ব্যাপারে আগামীকাল বা পরে আরও বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হবে।

ট্রাম্প বলেন, ইউরোপীয় নেতারাও চান পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। তিনি মনে করেন, উভয় নেতাই শান্তি চান। তবে জেলেনস্কিকে এখন প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে এবং কিছু স্বাক্ষর করতে হবে, যার জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করছেন।

গত বুধবার ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ মস্কো সফর করেন এবং পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। চলতি বছরে এটি তার রাশিয়া সফরের পঞ্চম বার। এর আগে তিনি গত ২৫ এপ্রিল পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। ওই সফরটি রাশিয়াকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার ১০ দিনের সময়সীমার মাত্র দুই দিন আগে অনুষ্ঠিত হয়।

রাশিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তা ইউরি উশাকভ বৈঠকটি ‘উপকারী ও গঠনমূলক’ বলে মন্তব্য করেছেন।

/আশিক


ইসরায়েলি দখল পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিল ইরাক

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ০৯:০১:৪৮
ইসরায়েলি দখল পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিল ইরাক
ছবি: সংগৃহীত

ইরাকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গাজা উপত্যকা পুরোপুরি দখল করার ইসরায়েলের পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দেশটি এই পদক্ষেপকে গাজার নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে ‘ক্ষুধার নীতি’, বাস্তুচ্যুত করা এবং গণহত্যার অংশ বলে অভিহিত করেছে। ইরাকের মতে, এসব কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধের শামিল এবং এর জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা উচিত।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) শাফাক নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বিবৃতিতে ইরাক ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার—বিশেষ করে জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আইনগত ও মানবিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে এসব লঙ্ঘন অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানিয়েছে দেশটি।

এদিকে টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা উপত্যকা দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। পাশাপাশি যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে থাকা বেসামরিক জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ইসরায়েল যে পাঁচটি শর্ত দেবে, মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্য তা সমর্থন করেছেন। শর্তগুলো হলো—

হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ

হামাসের হাতে থাকা ৫০ জিম্মিকে ফেরত আনা (যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত বলে ধারণা)

গাজা উপত্যকার নিরস্ত্রীকরণ

গাজায় ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ

হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নয়, বরং বিকল্প কোনো বেসামরিক সরকারের হাতে গাজার শাসন হস্তান্তর

/আশিক


মোদিকে গোপন পরামর্শ দেবেন নেতানিয়াহু

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৮ ২০:১০:২৫
মোদিকে গোপন পরামর্শ দেবেন নেতানিয়াহু
ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এর পেছনে মূলত দুটি কারণকে দায়ী করা হচ্ছে প্রথমত, পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিরসনে নয়াদিল্লির প্রত্যাশিত ভূমিকা না রাখা, এবং দ্বিতীয়ত, ওয়াশিংটনের সরাসরি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি অব্যাহত রাখা। যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিতে এটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থেরও অবমাননা, বিশেষ করে যখন মস্কোর ওপর চাপ সৃষ্টি করে আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে করার কৌশলকে তারা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ক্ষোভের প্রকাশ ঘটেছে বাণিজ্য ক্ষেত্রে গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছে। এর ফলে ভারতের ওপর মোট মার্কিন রপ্তানি শুল্কের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এটি ভারতের রপ্তানি খাত, বিশেষ করে টেক্সটাইল, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবার বাজারে বড় ধাক্কা দেবে। ভারতের জন্য যুক্তরাষ্ট্র শুধু একটি বৃহৎ বাজারই নয়, বরং বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস, ফলে এই শুল্ক বৃদ্ধি সরাসরি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় মধ্যস্থতার আগ্রহ দেখিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দুজনই আমার দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। অতীতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কূটনৈতিক সমঝোতার অভিজ্ঞতা থেকে আমি মোদিকে কিছু কার্যকর পরামর্শ দিতে পারি, তবে সেগুলো হবে সম্পূর্ণ নেপথ্যে ও গোপনীয়ভাবে।”

নেতানিয়াহু আরও উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে দৃঢ় ও বহুমাত্রিক প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি, কৃষি, মহাকাশ গবেষণা ও কৌশলগত সহযোগিতাসহ নানা ক্ষেত্রে এই অংশীদারিত্ব বিস্তৃত। তবে শুল্ক ইস্যুটি এখন দুই দেশের জাতীয় স্বার্থের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। তাঁর মতে, আলোচনার মাধ্যমে এমন একটি সমাধানে পৌঁছানো জরুরি, যা উভয় দেশের মর্যাদা ও অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করবে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই সমঝোতা শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের জন্য নয়, ইসরায়েলের জন্যও উপকারী হবে। কারণ দুই দেশই ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ কৌশলগত মিত্র, এবং ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা বিশেষত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তা, কৃষি উদ্ভাবন ও বাণিজ্যে এই সমঝোতার ফলে আরও শক্তিশালী হবে।

আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি অব্যাহত রাখা শুধু অর্থনৈতিক হিসাবের ফল নয়, বরং জ্বালানি নিরাপত্তা ও মূল্যসাশ্রয়ের কৌশল। তবে এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক অগ্রাধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অন্যদিকে, পাকিস্তান ইস্যুতে ভারতের সীমিত সক্রিয়তা ট্রাম্প প্রশাসনের চোখে কৌশলগত হতাশা তৈরি করেছে, যা বর্তমান উত্তেজনার অন্যতম পটভূমি।

-রাফসান


ট্রাম্প বলেন, “খুব হতাশ”

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৮ ১৫:৪২:১৫
ট্রাম্প বলেন, “খুব হতাশ”
ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের জন্য তিনি কোনো পূর্বশর্ত মানতে রাজি নন, এমনকি যদি পুতিন তার আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক না-ও করেন। এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প সরাসরি বলেন, “না, তার দরকার নেই, না” পুতিনকে আগে জেলেনস্কির সঙ্গে বসতে হবে কিনা এমন প্রশ্নে। তার এই মন্তব্য মার্কিন গণমাধ্যমে এর আগে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ঐ প্রতিবেদনগুলোতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোয়াইট হাউস কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছিল, পুতিন-জেলেনস্কি বৈঠকই ট্রাম্প-পুতিন শীর্ষ বৈঠকের পূর্বশর্ত।

ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “তারা আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চায়, আর আমি যা পারি করব যেন হত্যা বন্ধ হয়।” এর আগের দিন তিনি জানিয়েছিলেন, পুতিনের সঙ্গে তার সরাসরি বৈঠক “খুব শিগগিরই হতে পারে”। এই মন্তব্য আসে তার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মস্কো সফর ও পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর।

প্রসঙ্গত, জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ট্রাম্প প্রকাশ্যে দাবি করে আসছেন যে তিনি রাশিয়ার ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন থামানোর চেষ্টা করছেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময়ও তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় গেলে “২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধ থামিয়ে দেবেন”।

সম্প্রতি তিনি রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়িয়ে মস্কোকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন যে শুক্রবারের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে হবে, অন্যথায় আরও কঠোর অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক শাস্তির মুখে পড়তে হবে। যদিও স্টিভ উইটকফের আলোচনার পর এই সময়সীমা বহাল আছে কিনা সে বিষয়ে ট্রাম্প স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। পরিবর্তে তিনি মন্তব্য করেন, “এটা পুতিনের ওপর নির্ভর করছে। আমরা দেখব সে কী বলে।”

তার বক্তব্যে হতাশার সুরও শোনা গেছে। ট্রাম্প বলেন, “খুব হতাশ”- যা ইঙ্গিত দেয় যে চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এখনো পরিস্থিতি আশানুরূপ এগোয়নি।

পাঠকের মতামত: