ইরান-ইসরাইল সংঘাত

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বের হতে চায় ইরান? 

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৬ ১৫:৪৬:২০
পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বের হতে চায় ইরান? 

ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি, যাকে সংক্ষেপে এনপিটি (Nuclear Non-Proliferation Treaty) বলা হয়, থেকে সরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। এ লক্ষ্যে দেশটির পার্লামেন্টে একটি বিল উত্থাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

সোমবার (১৬ জুন) ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাঈল বাকাই হামানে এ তথ্য জানিয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এই খবর প্রকাশ করেছে।

বাকাই আরও বলেন, ‘তেহরান সবসময় গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরির বিরোধিতা করে এসেছে এবং এ বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট।’ তবে বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের প্রেক্ষাপটে ইরান এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজছে।

এনপিটি চুক্তি কী?

১৯৬৮ সালে জাতিসংঘের উদ্যোগে স্বাক্ষরিত এনপিটি চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে সহায়তা এবং শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে সহযোগিতা নিশ্চিত করা। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৯১টি দেশ এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে, যার মধ্যে ইরানও অন্যতম।

চুক্তি অনুযায়ী, যেসব দেশ ইতোমধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী নয়, তারা ভবিষ্যতেও এ ধরনের অস্ত্র অর্জন করবে না বলে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়। সেইসঙ্গে অস্ত্রধারী দেশগুলো অস্ত্র কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। প্রতি পাঁচ বছর পরপর এই চুক্তির বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করতে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ইরানের অবস্থান এবং প্রেক্ষাপট

ইরান দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে, যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চিকিৎসা খাতে ব্যবহারের জন্য। তবে পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল, সন্দেহ করে যে ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

২০১৫ সালে ছয়টি প্রধান শক্তিধর দেশের (P5+1) সঙ্গে ইরান একটি পারমাণবিক চুক্তিতে (JCPOA) স্বাক্ষর করলেও ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। এরপর ইরান ধাপে ধাপে চুক্তির বিভিন্ন শর্ত লঙ্ঘন করে, যার মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমা অতিক্রম করাও রয়েছে।

বর্তমানে ইরানের ওপর কঠোর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে এনপিটি থেকে সরে যাওয়ার সম্ভাব্য পদক্ষেপকে অনেকেই আন্তর্জাতিক পারমাণবিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখছেন।

সম্ভাব্য প্রভাব

ইরান যদি আনুষ্ঠানিকভাবে এনপিটি চুক্তি থেকে সরে আসে, তাহলে এটি বিশ্বব্যাপী পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ উদ্যোগের প্রতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হবে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতার আশঙ্কাও বাড়তে পারে। একই সঙ্গে ইরানের ওপর নতুন করে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

এই পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হলে এটি হবে একটি নজিরবিহীন ঘটনা, কারণ বেশিরভাগ দেশই এখন পর্যন্ত এই চুক্তির আওতায় থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক পদক্ষেপ ইরানের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরেই এখন গুরুত্ব পাচ্ছে।

-আশিক, ডেস্ক রিপোর্টার।


ব্যাংককে বিশাল সিঙ্কহোলে তলিয়ে গেল ৩ গাড়ি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৪ ১৭:৩৮:০২
ব্যাংককে বিশাল সিঙ্কহোলে তলিয়ে গেল ৩ গাড়ি
ব্যাংককের সিঙ্কহোল দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন প্রকৌশলীরা। (২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫)। ছবি: ডারিও পিগনাতেলি/ব্লুমবার্গ/গেটি ইমেজেস)

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে হঠাৎ করেই সড়কের মাটি ধসে এক বিশাল সিঙ্কহোল বা গর্ত তৈরি হয়েছে। এতে তিনটি যানবাহন তলিয়ে গেছে। এই ঘটনার পর আশপাশের হাসপাতাল ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পিপল ডটকমের এক প্রতিবেদনে এই খবর জানানো হয়েছে।

রয়্যাল থাই পুলিশ (আরটিপি) জানিয়েছে, বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে স্থানীয় সময় প্রায় ৭টার দিকে রাজধানীর দুডসিত জেলার সামসেন রোডে এই সড়কধসের ঘটনা ঘটে। গর্তটির আকার প্রায় ৩০ বাই ৩০ মিটার এবং এর গভীরতা ৫০ মিটার।

পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ঘটনার পর দুটি বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং একটি স্টেশন কার গর্তে পড়ে যায়।” স্থানীয় সংবাদপত্র দ্য নেশন জানিয়েছে, সামসেন মেট্রোপলিটন পুলিশ স্টেশনেরও ক্ষতি হয়েছে। তাদের টো-ট্রাকসহ আরও দুটি গাড়ি গর্তে পড়ে গেছে।

ভাজিরা হাসপাতালের সামনে সিঙ্কহোলটি তৈরি হওয়ায় হাসপাতালটি খালি করে রোগীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আশপাশের বাসিন্দাদেরও নিরাপত্তার জন্য বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংককের গভর্নর চাদচার্ট সিট্টিপুন্ট গণমাধ্যমকে বলেছেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নিকটবর্তী আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো স্টেশনের নির্মাণকাজ থেকেই এই সিঙ্কহোল তৈরি হয়েছে।”

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ভিডিওতে দেখা গেছে, ব্যস্ত সড়কে হঠাৎ মাটি ধসে পড়তে শুরু করে। একাধিক গাড়ি দ্রুত পিছিয়ে গেলেও কয়েকটি যান গর্তে পড়ে যায়। দ্য নেশন জানিয়েছে, খারাপ আবহাওয়া ও বৃষ্টির কারণে গর্তটি আরও বড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।


অনলাইনে ভিডিও দেখে রকেট বানালেন চীনা তরুণ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৪ ১৬:৪৩:৩১
অনলাইনে ভিডিও দেখে রকেট বানালেন চীনা তরুণ
ছবি: সংগৃহীত

অনলাইনে ভিডিও দেখে মাত্র ১৮ বছর বয়সে নিজের রকেট তৈরি করে চীনের হান প্রদেশের তরুণ ঝ্যাং শিজিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন। শূকরের খামারের নাইট্রেট দিয়ে রকেটের জ্বালানি তৈরি থেকে শুরু করে থ্রি-ডি প্রিন্টার ব্যবহার করে যন্ত্রাংশ বানানো—সবকিছুই তিনি শিখেছেন ইন্টারনেট থেকে। এই প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ, তার তৈরি রকেট ৪০০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে।

১৪ বছর বয়সে টেলিভিশনে একটি রকেট উৎক্ষেপণ দেখে রকেট তৈরির প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন ঝ্যাং। তার পরিবার বা শিক্ষকদের কেউই এ বিষয়ে জানতেন না। শুধুমাত্র নিজের আগ্রহ ও ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে তিনি রকেট তৈরির বিভিন্ন কৌশল শেখেন। প্রথমে তিনি পরিবারের খামার থেকে নাইট্রেট, চিনি এবং পানি মিশিয়ে জ্বালানি তৈরির চেষ্টা করেন। পরে স্কুলের শেখা ফিলট্রেশন পদ্ধতি ব্যবহার করে আরও বিশুদ্ধ জ্বালানি তৈরি করতে সক্ষম হন।

সফলতার পথে নানা বাধা

রকেটের যন্ত্রাংশ তৈরির জন্য থ্রি-ডি মডেলিং এবং সফটওয়্যার ডিজাইনও শেখেন ঝ্যাং। নববর্ষের উপহার হিসেবে পাওয়া টাকা ও বন্ধুদের কাছ থেকে ধার নিয়ে একটি পুরোনো থ্রি-ডি প্রিন্টার কিনে নেন। শত শতবার ব্যর্থ চেষ্টার পর অবশেষে তিনি নিজের তৈরি রকেটটিকে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম হন। তার এই প্রচেষ্টায় তিনি চার ধরনের রকেট ইঞ্জিন এবং একটি দুই ধাপের রকেট তৈরি করেন।

ঝ্যাংয়ের এই অদম্য আগ্রহ দেখে তার স্কুল কর্তৃপক্ষও তাকে সমর্থন জানায়। স্কুল থেকে তাকে সাড়ে তিন হাজার ইউয়ান (প্রায় ৫০০ ডলার) দেওয়া হয় এবং সহপাঠীরাও তার গবেষণার কাজে সহায়তা করে। তার একজন শিক্ষক বলেন, “৩০ বছরের শিক্ষকতার জীবনে আমি বিজ্ঞানের প্রতি এমন প্রগাঢ় ভালোবাসা আর দেখিনি।”

নতুন অধ্যায় ও স্বপ্ন

সম্প্রতি ঝ্যাং আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা দিয়েছেন যে, তিনি শেনইয়াং অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটিতে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। এটি চীনের প্রথম সারির মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। ঝ্যাংয়ের চূড়ান্ত লক্ষ্য একদিন একটি সত্যিকারের রকেটের নকশা করা। তার বাবা বলেন, “ভিডিও গেমসের পরিবর্তে খেলনা ভেঙে তার যন্ত্রাংশ বের করার আগ্রহ দেখেই আমি বুঝেছিলাম, সে অন্য শিশুদের থেকে আলাদা।”


গাজামুখী ফ্লোটিলায় ড্রোন হামলার অভিযোগ, আতঙ্কে মানবাধিকারকর্মীরা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৪ ১১:০৭:৪৭
গাজামুখী ফ্লোটিলায় ড্রোন হামলার অভিযোগ, আতঙ্কে মানবাধিকারকর্মীরা
ছবিঃ সংগৃহীত

গাজামুখী আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা বহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ দাবি করেছে, তাদের একাধিক নৌযানকে ড্রোন হামলায় লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে সংগঠকরা জানান, গ্রিসের উপকূলের কাছে অবস্থানকালে তারা বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন এবং আকাশে একাধিক ড্রোন দেখতে পেয়েছেন।

এক বিবৃতিতে ফ্লোটিলা কর্তৃপক্ষ জানায়, “একাধিক ড্রোন আমাদের নৌযান লক্ষ্য করে অজ্ঞাত বস্তু নিক্ষেপ করেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি নৌকা থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।” তবে হতাহতের কোনো খবর তারা জানাতে পারেনি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আমরা এই মনস্তাত্ত্বিক হামলার প্রত্যক্ষ সাক্ষী, কিন্তু আমরা ভয় পাব না।”

ফ্লোটিলার সদস্য জার্মান মানবাধিকারকর্মী ইয়াসেমিন আকার ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিওতে জানান, অন্তত পাঁচটি নৌযান হামলার শিকার হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা শুধু মানবিক সহায়তা বহন করছি। আমাদের কাছে কোনো অস্ত্র নেই। আমরা কারও জন্য হুমকি নই। কিন্তু ইসরায়েল হাজার হাজার মানুষ হত্যা করছে এবং গোটা একটি জনগোষ্ঠীকে অনাহারে রাখছে।”

আকারের আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, ফ্লোটিলার সদস্যরা ১৫ থেকে ১৬টি ড্রোন শনাক্ত করেছেন। তাদের রেডিও সংযোগ জ্যাম করে দেওয়া হয় এবং উচ্চশব্দে সংগীত বাজানো হয়। ফ্লোটিলার অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম পেজে পোস্ট করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে রাত ১টা ৪৩ মিনিটে (স্থানীয় সময়) ‘স্পেক্টর’ নামের একটি নৌযানের কাছে বিস্ফোরণ ঘটতে। আরেক ভিডিওতে ব্রাজিলিয়ান কর্মী থিয়াগো অ্যাভিলা বলেন, চারটি নৌযানে ড্রোন থেকে বস্তু নিক্ষেপ করা হয়েছে, ঠিক তখনই আরেকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

বার্সেলোনা থেকে এ মাসের শুরুতে গাজা অভিমুখে যাত্রা শুরু করে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। ইসরায়েলের অবরোধ ভেঙে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোই এর মূল লক্ষ্য। বর্তমানে এ বহরে ৫১টি নৌযান রয়েছে, যার বেশিরভাগ গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের উপকূলে অবস্থান করছে।

এটি প্রথম হামলা নয়। টিউনিশিয়ার উপকূলে নোঙর করার সময়ও অন্তত দুটি ড্রোন হামলার শিকার হয়েছিল বহরের নৌযানগুলো।

এ ফ্লোটিলায় সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও শান্তিকর্মী অংশ নিয়েছেন। ইসরায়েল ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে, তারা এই নৌবহরকে গাজায় পৌঁছাতে দেবে না। এর আগে জুন ও জুলাই মাসে গাজাগামী এমন দুটি নৌবহরকে ইসরায়েল আটক করেছিল।

গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ মানবিক সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়ছে। গত মাসে জাতিসংঘ-সমর্থিত এক সংস্থা গাজার কিছু এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষের ঘোষণা দেয়। ১৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের তদন্তকারীরা গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে “গণহত্যা” বলে আখ্যায়িত করে। এই অভিযোগের পটভূমি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর শুরু হওয়া যুদ্ধ।

-সুত্রঃ এ এফ পি


ট্রাম্পের কারণে রাস্তায় আটকে গেলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৪ ১১:০২:১০
ট্রাম্পের কারণে রাস্তায় আটকে গেলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ
ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে এসে নিউইয়র্কে যানজটে আটকে গেলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। সোমবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মোটরকেড যাওয়ার কারণে নিউইয়র্কের এক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে রাস্তা পার হতে বাধা দিলে তিনি ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকেন।

ভিডিওতে দেখা গেছে, বিব্রত পুলিশ কর্মকর্তা ম্যাখোঁকে বলেন, “আমি দুঃখিত, মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আমি সত্যিই দুঃখিত। এখন সবকিছু বন্ধ রাখা হয়েছে। একটি মোটরকেড আসছে।”

তবে ম্যাখোঁ বিরক্ত না হয়ে বিষয়টি রসিকতার ছলে নেন। তিনি তখন ট্রাম্পকে ব্যক্তিগতভাবে ফোন দেন এবং মজা করে কথা বলেন। ফোনে তিনি বলেন, “ভাবুন তো—আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি, কারণ সবকিছু আপনার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”

ফরাসি প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র নিশ্চিত করেছে, ম্যাখোঁ হাঁটার সময় ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তাদের কথোপকথন ছিল আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ এবং এ সময় তারা কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন।


সাও পাওলো গভর্নর থেকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী? আলোচনায় তার্সিসিও

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৪ ১০:৫৪:৪১
সাও পাওলো গভর্নর থেকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী? আলোচনায় তার্সিসিও
ছবিঃ সংগৃহীত

ব্রাজিলের রাজনীতিতে এখন একটি প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে—দোষী সাব্যস্ত সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর পর ডানপন্থীদের নেতৃত্ব কে দেবেন? একদিকে বলসোনারো ২৭ বছরের সাজা বাতিলের জন্য আপিল নিয়ে ব্যস্ত, অন্যদিকে ২০২৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে ব্রাজিলের বৃহৎ রক্ষণশীল ভোটারগোষ্ঠী খুঁজছে নতুন মুখ। আর বারবার আলোচনায় উঠে আসছে এক নাম—সাও পাওলোর গভর্নর তার্সিসিও দে ফ্রেইতাস।

ফ্রেইতাস যদিও নিজেকে সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখাতে অনীহা প্রকাশ করেছেন, তবুও জনমত জরিপ বলছে তিনি বর্তমান বামপন্থী প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার বিপরীতে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন। ৪৬ মিলিয়ন জনসংখ্যার সাও পাওলো ব্রাজিলের অর্থনৈতিক ইঞ্জিন, যার জিডিপি বেলজিয়াম বা সুইডেনের সমান। সেই রাজ্যের দায়িত্বে আছেন ফ্রেইতাস—একজন প্রাক্তন সেনা প্রকৌশলী, যিনি ২০২২ সালের নির্বাচনের আগে কখনো কোনো পদে নির্বাচন করেননি।

রাজনীতিতে নতুন হলেও ফ্রেইতাসকে বলা হয় কঠোর শৃঙ্খলাপরায়ণ ও দক্ষ টেকনোক্র্যাট। বলসোনারোর মন্ত্রিসভায় অবকাঠামো মন্ত্রী হিসেবে কাজ করে তিনি জাতীয় পর্যায়ে পরিচিতি পান। তাঁর উপদেষ্টারা তাঁকে বর্ণনা করেন এক বাস্তববাদী নেতা হিসেবে—যিনি ‘দ্রুত সমাধানে বিশ্বাসী’। ফ্রেইতাসও সে পরিচয়ে আপত্তি করেন না। এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “যদি বাস্তববাদী মানে মানুষের সমস্যা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করা হয়, তবে আমি অবশ্যই তাই।”

৫০ বছর বয়সী ফ্রেইতাস জনসমক্ষে সহজপ্রাপ্য মনে হলেও মঞ্চে উঠে পরিণত নেতার মতো তীব্র বক্তৃতা দেন। পরিসংখ্যান ঝরঝর করে শোনাতে পারার দক্ষতা তাঁকে আলাদা করে তুলে। তিনি বলসোনারোর মতো অগ্নিমূর্তি নন, কিন্তু রাজনৈতিক মুহূর্তে সঠিক সুর ধরতে জানেন। সম্প্রতি বলসোনারোর রায়ের আগেই তিনি সুপ্রিম কোর্টকে “স্বৈরাচারী” আখ্যা দিয়ে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন।

ফ্রেইতাসের অবস্থান স্পষ্ট—তিনি সংসদের বিতর্কিত সাধারণ ক্ষমা প্রস্তাবের পক্ষে, যা শত শত অভ্যুত্থান-সম্পর্কিত মামলার দণ্ডপ্রাপ্তদের মুক্তি দেবে, এমনকি বলসোনারোকেও। তাঁর ভাষায়, “ক্ষমা দেশকে শান্ত করতে সাহায্য করবে, ব্রাজিলকে এগিয়ে যেতে হবে।”

রিও ডি জেনেইরোতে জন্ম নেওয়া ফ্রেইতাস অল্প বয়সেই সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ৩৩ বছর বয়সে ক্যাপ্টেন হিসেবে অবসর নিয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন। দিলমা রুসেফের বামপন্থী সরকারের অধীনে জাতীয় পরিবহন ও অবকাঠামো বিভাগের পরিচালক ছিলেন তিনি। দক্ষতা ও সুনামের কারণেই বলসোনারো তাঁকে ২০১৯ সালে অবকাঠামো মন্ত্রী করেন এবং পরবর্তীতে গভর্নর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সমর্থন দেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ফ্রেইতাস প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক মহলের কাছে এক কার্যকর নেতা—যিনি বলসোনারোর মতো অপ্রয়োজনীয় বিতর্কে জড়াবেন না। তবে বলসোনারোর কট্টর সমর্থক শ্রেণি এখনো অটুট। তাই ফ্রেইতাসকে তাদের আস্থা অর্জনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

এদিকে মানবাধিকার সংস্থাগুলো তাঁর প্রশাসনের পুলিশি নীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে সাও পাওলোতে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর হার বেড়েছে ৬১ শতাংশ—যখন জাতীয় গড় ৩ শতাংশ কমেছে। দুটি এনজিও জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে অভিযোগ জমা দিয়ে ফ্রেইতাসের বিরুদ্ধে পুলিশের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগকে নীরবে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তোলে। এ প্রসঙ্গে গভর্নরের সংক্ষিপ্ত মন্তব্য ছিল, “আমি পাত্তা দিচ্ছি না।”

তবুও সমর্থকদের কাছে ফ্রেইতাস কঠোর কিন্তু কার্যকর নেতৃত্বের প্রতীক। তাঁর অবস্থান অর্থনৈতিক দক্ষতা, আর্থিক শৃঙ্খলা ও শক্তিশালী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে। তিনি বলেন, “সামাজিক ন্যায়বিচার তখনই সম্ভব, যখন আর্থিক শৃঙ্খলা থাকে।”

সব মিলিয়ে, বলসোনারো আইনি লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় ফ্রেইতাসের দিকে তাকিয়ে আছে ব্রাজিলের রক্ষণশীল রাজনীতি। তিনি সত্যিই কি বলসোনারোর উত্তরসূরি হবেন, নাকি নতুন এক রাজনৈতিক পরিচয় তৈরি করবেন—সেটাই এখন ব্রাজিলীয় রাজনীতির বড় প্রশ্ন।

-আলমগীর হোসেন


সুপার টাইফুন রাগাসার আঘাতে তাইওয়ান লণ্ডভণ্ড

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৪ ১০:১৯:৫৩
সুপার টাইফুন রাগাসার আঘাতে তাইওয়ান লণ্ডভণ্ড
ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ চীন সাগরে উদ্ভূত সুপার টাইফুন রাগাসার আঘাতে তাইওয়ানে এ পর্যন্ত ১৪ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৪ জন এবং নিখোঁজ আছেন কমপক্ষে ১২৪ জন। এই সুপার টাইফুন এখন চীনের দক্ষিণ উপকূল এবং এশিয়ার অর্থনৈতিক কেন্দ্র হংকংয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলীয় হুয়ালিয়েন জেলায় রাগাসা আঘাত হানে। এএফপি ও রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা লি কুয়ান-তিন। তিনি বলেন, “আমাদের ফায়ার সার্ভিসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঝড়ের আঘাতে এ পর্যন্ত হুয়ালিয়েনে ১৪ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১৮ জন। এছাড়া এখনও কমপক্ষে ১২৪ জন নিখোঁজ আছেন। তাদের সন্ধানে উদ্ধারকারী বাহিনীর তৎপরতা চলছে।”

রয়টার্স জানিয়েছে, রাগাসার প্রভাবে তাইওয়ান এবং হংকংয়ের ওপর দিয়ে ব্যাপক মাত্রার ঝোড়ো বাতাস ও ভারী বর্ষণ বয়ে গেছে। তবে হুয়ালিয়েন ছাড়া তাইওয়ানের অন্য কোনো জেলা কিংবা হংকং থেকে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

সুপার টাইফুনের ধ্বংসযজ্ঞ

ফিলিপাইন, চীন এবং তাইওয়ানের বিজ্ঞানীরা রাগাসাকে ‘সুপার টাইফুন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সোমবার স্থানীয় সময় বিকাল ৩টার দিকে যখন এটি ফিলিপাইনের উপকূলে আঘাত হানে, তখন বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার। এটি ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলীয় কাগায়ান প্রদেশের বাতানিজ দ্বীপে আঘাত হেনেছিল, যা তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলের কাছাকাছি।

দমকল কর্মকর্তা ওয়াং সে-আন জানান, নিহত ও নিখোঁজরা সবাই হুয়ালিয়েনের গুয়াংফু এলাকার বাসিন্দা। সেখানে পানির প্রবল স্রোতে নদীর ওপর একটি বড় সড়ক সেতু ভেসে গেছে। ওই এলাকার পুরো গ্রামটি প্লাবিত হয়েছে এবং অনেকেই এখনো আটকা পড়ে আছেন।


সৌদি–পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি: দক্ষিণ এশিয়া ও উপসাগরের ভূরাজনীতিতে নতুন অক্ষ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৪ ০৯:১৩:৩৩
সৌদি–পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি: দক্ষিণ এশিয়া ও উপসাগরের ভূরাজনীতিতে নতুন অক্ষ

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ গত সপ্তাহে যখন রিয়াদে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে আলিঙ্গন করেন, সেটি ছিল কেবল কূটনৈতিক সৌজন্যের ছবি নয়—বরং এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের ঘোষণা। এর কিছুক্ষণ আগে স্বাক্ষরিত হয়েছে একটি “কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি”, যা মুসলিম বিশ্বের একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র পাকিস্তানকে উপসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী শক্তি সৌদি আরবের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বে যুক্ত করেছে।

চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করা হলেও এর অন্তর্নিহিত বার্তা বহুমাত্রিক। ইসলামাবাদের জন্য এটি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ভরসা, রিয়াদের জন্য এটি পারমাণবিক শক্তির এক প্রকার “বীমা”। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার আরেক পরাশক্তি ভারতকে এটি সরাসরি কৌশলগত চাপে ফেলেছে।

ভারতের বাড়তে থাকা অস্বস্তি

চুক্তির মূল ধারা অনুযায়ী, “দুই দেশের যেকোনো একটির ওপর আগ্রাসনকে উভয়ের ওপর আগ্রাসন হিসেবে গণ্য করা হবে।” অর্থাৎ পাকিস্তান যদি ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তবে সৌদি আরবকেও সেই সংঘাতের অংশ হতে হতে পারে।

ভারতীয় কৌশলবিদ ব্রহ্মা চেলানি মন্তব্য করেছেন, “এটি পাকিস্তানের শক্তির প্রতিফলন নয়, বরং সৌদি আরবের উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রকাশ। পাকিস্তান অর্থনৈতিক দেউলিয়ার দ্বারপ্রান্তে, অথচ রিয়াদ তার সামরিক ও পারমাণবিক ক্ষমতার ওপর ভরসা করছে। এর মাধ্যমে সৌদি একসঙ্গে জনশক্তি ও পারমাণবিক নিরাপত্তা অর্জন করছে।”

সাবেক পররাষ্ট্রসচিব কানওয়াল সিবাল আরও কড়া ভাষায় বলেছেন, “রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল ও অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর পাকিস্তানকে নিরাপত্তা সহযোগী বানানো সৌদিদের কৌশলগত ভুল। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তায় এর গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।”

দিল্লির সতর্ক প্রতিক্রিয়া

নয়াদিল্লি যদিও প্রকাশ্যে তীব্র প্রতিবাদ জানায়নি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা বিষয়টিকে “জাতীয় নিরাপত্তা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাবের দিক থেকে মূল্যায়ন করছে।” একই সঙ্গে তারা আশা করেছে, সৌদি আরব কৌশলগত অংশীদারিত্বে ভারতের সংবেদনশীলতাকে বিবেচনায় নেবে।

ভারতের সতর্ক অবস্থান মূলত সৌদির সঙ্গে তাদের গভীর অর্থনৈতিক সম্পর্ককে কেন্দ্র করে। ভারত সৌদির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং বিশাল তেল আমদানিকারক দেশ। তাই দিল্লি সরাসরি সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে চাইছে না।

কেন সৌদির এই পদক্ষেপ?

সৌদি আরবের এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে একাধিক কৌশলগত কারণ:

  • মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় ভরসা কমে যাওয়া: উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো মনে করছে, সংকটকালে যুক্তরাষ্ট্র আগের মতো প্রতিরক্ষা নিশ্চয়তা দিতে পারবে না বা দেবে না। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা এবং দোহায় ইসরায়েলি আঘাত রিয়াদের শঙ্কা বাড়িয়েছে।
  • ইরান ও ইসরায়েলকে প্রতিহত করার কৌশল: সৌদি নেতৃত্ব এখন স্পষ্টভাবে দুই দেশকেই হুমকি হিসেবে দেখছে। পাকিস্তানের পারমাণবিক ক্ষমতা এবং দীর্ঘ সামরিক অভিজ্ঞতা রিয়াদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুরক্ষা বলয় তৈরি করছে।
  • বহুমুখী নিরাপত্তা অংশীদারত্ব গড়ে তোলা: রিয়াদ এখন যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক নীতি থেকে বের হয়ে নতুন অক্ষ তৈরি করছে—যেখানে পাকিস্তানের ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
  • প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা: পাকিস্তানকে পাশে নিয়ে সৌদি আরব মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব আরও দৃঢ় করতে চাইছে।

পাকিস্তানের জন্য কী লাভ?

পাকিস্তানের অর্থনীতি এখনো গভীর সংকটে। দেউলিয়ার ঝুঁকি থেকে বাঁচতে দেশটি বারবার সৌদি অর্থনৈতিক সহায়তার ওপর নির্ভর করেছে। ফলে এই প্রতিরক্ষা চুক্তি ইসলামাবাদের জন্য কেবল সামরিক নয়, অর্থনৈতিক বীমাও বটে।

  • ঐতিহাসিকভাবে পাকিস্তান–সৌদি সম্পর্ক সামরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।
  • ১৯৬০-এর দশক থেকে সৌদি মাটিতে পাকিস্তানি সেনাদের মোতায়েন।
  • ১৯৭৯ সালে মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদ অবরোধ দমনে পাকিস্তানি কমান্ডোদের অংশগ্রহণ।
  • সৌদি বিমানবাহিনী গঠনে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের পরামর্শ।

২০১৭ সালে সৌদির নেতৃত্বাধীন আইএসবিরোধী জোটে অবসরপ্রাপ্ত পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের নিয়োগ।

এই দীর্ঘ ইতিহাস প্রমাণ করে, সৌদি আরব সবসময় পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতার ওপর ভরসা করেছে। নতুন চুক্তি সেই আস্থা আরও আনুষ্ঠানিকভাবে স্থায়ী করছে।

ভারতের ভূরাজনৈতিক দুশ্চিন্তা

যদিও বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ বলছেন, চুক্তিটি ভারতের জন্য তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা হুমকি নয়। দিল্লি এখনও সৌদির প্রধান অর্থনৈতিক অংশীদার। কিন্তু ভূরাজনীতির দিক থেকে এটি নতুন বাস্তবতা তৈরি করছে।

ওয়াশিংটনের হাডসন ইনস্টিটিউটের মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, “এই চুক্তি পাকিস্তানের পক্ষে আঞ্চলিক ভারসাম্য বদলে দিয়েছে। পাকিস্তান এখন একসঙ্গে চীন, তুরস্ক এবং সৌদি আরবের সমর্থন পাচ্ছে। ফলে ভারতকে কৌশলগতভাবে নতুন হিসাব কষতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, ভারত অবশ্য রাশিয়া, ইসরায়েল, ফ্রান্স ও উপসাগরের অন্য মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে এর ভারসাম্য তৈরি করতে পারে। কিন্তু কূটনৈতিক বার্তা হিসেবে এটি দিল্লির জন্য মোটেও ইতিবাচক নয়।

আঞ্চলিক মেরুকরণের নতুন অধ্যায়

বৈদেশিক নীতি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চুক্তি শুধু পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা বাড়াবে না, বরং আঞ্চলিক মেরুকরণকে নতুন রূপ দেবে। সৌদি আরবের আর্থিক শক্তি ও পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা একত্রিত হলে দক্ষিণ এশিয়া ও উপসাগর উভয় অঞ্চলেই ভারতের অবস্থান দুর্বল হতে পারে।

একই সঙ্গে এই পদক্ষেপ মুসলিম বিশ্বের ভেতরে এক ধরনের “ইসলামিক ন্যাটো” ধারণার পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। এতে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কৌশলগত করিডরজুড়ে ভারতের পশ্চিমমুখী কূটনৈতিক নীতিতে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে।

সৌদি–পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি কেবল দুটি দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয় নয়—এটি দক্ষিণ এশিয়া ও উপসাগরের ভূরাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। পাকিস্তানের জন্য এটি সামরিক ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা, সৌদির জন্য এটি বহুমুখী কৌশলগত বীমা। তবে ভারতের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা—অঞ্চলীয় শক্তির ভারসাম্য বদলাচ্ছে, এবং দিল্লিকে তার কূটনৈতিক ও কৌশলগত পদ্ধতি নতুন করে সাজাতে হবে।


গাজায় ‘গণহত্যা’ ঠেকাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্পেনের ‘বড় পদক্ষেপ’

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ২১:৩৪:৪১
গাজায় ‘গণহত্যা’ ঠেকাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্পেনের ‘বড় পদক্ষেপ’
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘গণহত্যা ঠেকাতে’ দখলদার ইসরায়েলের ওপর পূর্ণ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে স্পেন। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দেশটির সরকার এ নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দিয়ে ডিক্রি জারি করেছে।

নিষেধাজ্ঞার বিস্তারিত

স্প্যানিশ অর্থমন্ত্রী কার্লোস কুয়ার্পো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইসরায়েলে স্পেন কোনো সামরিক সরঞ্জাম, দ্বৈত-ব্যবহারের সামরিক পণ্য এবং প্রযুক্তি পাঠাবে না। এছাড়া স্পেনও এ ধরনের কোনো পণ্য বা প্রযুক্তি আমদানি করবে না।”

নিষেধাজ্ঞার আওতায় সামরিক কাজে ব্যবহৃত হতে পারে এমন বিমানের জ্বালানির অনুরোধও আটকে দিয়েছে স্পেন। সঙ্গে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিমতীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলো থেকে আসা পণ্য আমদানি এবং সেগুলোর বিজ্ঞাপনও স্পেনে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

স্প্যানিশ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, “ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পূর্ণ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র তৈরির ক্ষেত্রে স্পেনের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বড় পদক্ষেপ।”

আইনি ভিত্তি ও হতাহতের সংখ্যা

২০২৩ সালে গাজায় দখলদার ইসরায়েল বর্বরতা শুরুর পর স্পেন সরকার ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। যদিও বিভিন্ন ফাঁকফোকর থাকায় স্পেন থেকে ইসরায়েলে সামরিক কাজে ব্যবহৃত পণ্য গেছে। এতদিন যে নিষেধাজ্ঞাটি ছিল আজকের ডিক্রির মাধ্যমে সেটি ‘আইনি ভিত্তি’ পেয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় লাখের বেশি ফিলিস্তিনি। ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক মানুষ আটকে থাকায় প্রকৃত নিহতের সংখ্যা ধারণার চেয়ে বেশি বলে আশঙ্কা করা হয়।

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা ও পশ্চিমতীরে ইসরায়েল তাদের অবৈধ বসতি নির্মাণ অব্যহত রাখায় যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ ১০টির বেশি দেশ দুইদিনের মধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে।

সূত্র: এএফপি


গাজা যুদ্ধ ও ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ: জাতিসংঘের মঞ্চে ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ২১:২৩:০৫
গাজা যুদ্ধ ও ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ: জাতিসংঘের মঞ্চে ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্য
২৩ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ৮০তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিচ্ছেন। ছবি : রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হামাসের জন্য অনেক বড় পুরস্কার হবে।’ তিনি গাজায় জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে আটক জীবিত বা মৃত জিম্মিদের মুক্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

‘যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মি মুক্তি’র আহ্বান

ট্রাম্প গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘে এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘যারা শান্তির পক্ষে ছিলেন তাদের জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।’

তিনি বলেন, ‘যেন অব্যাহত সংঘাতকে উৎসাহিত করার জন্য, এই সংস্থার কিছু সদস্য একতরফাভাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে চাইছে। হামাস সন্ত্রাসীদের জন্য তাদের নৃশংসতার জন্য এই পুরস্কার অনেক বড় হবে।’

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি নিয়ে বিতর্ক

জাতিসংঘ সম্মেলনে অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা এখন নিউইয়র্কে। এর আগে জাতিসংঘে ভাষণে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ।

সম্প্রতি অনেক দেশই ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে ও দ্বিরাষ্ট্র সমাধান নিশ্চিত করতে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং আরো কয়েকটি দেশ স্বীকৃতি দেওয়ার পথে আছে।

পাঠকের মতামত: