ইউক্রেন-রাশিয়া শান্তি আলোচনা: যুদ্ধবিরতি নয়, বন্দি বিনিময়ে অগ্রগতি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ০৩ ০৮:৩৫:২৩
ইউক্রেন-রাশিয়া শান্তি আলোচনা: যুদ্ধবিরতি নয়, বন্দি বিনিময়ে অগ্রগতি

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত ইউক্রেন ও রাশিয়ার দ্বিতীয় সরাসরি শান্তি আলোচনা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে। তবে আলোচনায় একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে—দুই দেশই যুদ্ধবন্দি বিনিময়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছে। সোমবার (২ জুন) অনুষ্ঠিত এই আলোচনা মাত্র এক ঘণ্টা স্থায়ী হয়, যেখানে কোনো চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, বন্দি বিনিময়ের প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে এবং তুরস্ক এই প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করবে। ‘বুখারেস্ট নাইন’ (বি-নাইন) সম্মেলনে জেলেনস্কি আরও বলেন, এই বিনিময় হতে যাচ্ছে একটি মানবিক পদক্ষেপ, যা যুদ্ধক্ষেত্রে শান্তির বার্তা নিয়ে আসতে পারে।

গত মে মাসে অনুষ্ঠিত প্রথম আলোচনার ভিত্তিতে দুই দেশ এক হাজার করে যুদ্ধবন্দি মুক্তি দিয়েছিল। এটি সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময় ঘটনা এবং তা সাময়িকভাবে হলেও একটি শান্তি উদ্যোগ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল।

জি-৭ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক মহল ইস্তাম্বুল আলোচনার দিকে গভীরভাবে নজর রাখছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেন, যদি রাশিয়া আলোচনাকে ‘অর্থহীন কথাবার্তা’তে পরিণত করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জি-৭ দেশগুলোকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।

তিনি আরও দাবি করেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার অর্থনীতি ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তেলের দাম হ্রাস, ট্যাংকার সীমাবদ্ধতা এবং বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের ফলে মস্কোর অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে।

ইস্তাম্বুল আলোচনায় ইউক্রেন একটি বিস্তারিত শান্তি প্রস্তাব তুলে ধরে। এতে রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো ধাপে ধাপে তুলে নেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে, তবে শর্তসাপেক্ষে—যুদ্ধবিরতির কার্যকারিতা নিরীক্ষণের জন্য একটি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাও থাকতে হবে, যাতে প্রয়োজনে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা যায়।

প্রস্তাবনায় আরও উল্লেখ করা হয়, যুদ্ধবন্দিদের সম্পূর্ণ বিনিময় করা হবে—দুই দেশ একে অপরের সব বন্দিকে মুক্তি দেবে। বিশেষভাবে ইউক্রেনীয়দের দাবি, রাশিয়ার হেফাজতে থাকা অপহৃত শিশুদের দ্রুত ফিরিয়ে আনা ও বেসামরিক বন্দিদের মুক্তির বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

যদিও আলোচনা থেকে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি, কিন্তু যুদ্ধবন্দি বিনিময়ে সম্মতি একটি বড় অগ্রগতি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এই বিনিময় সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে, ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত শান্তি আলোচনা এবং সমঝোতার পথ খুলে যেতে পারে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত