রাকসু নির্বাচন: ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে কালির দাগ

ক্যাম্পাস ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৬ ১১:৩৪:১১
রাকসু নির্বাচন: ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে কালির দাগ
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। তবে ভোট জালিয়াতি এড়ানোর জন্য ভোটারদের হাতে দেওয়া অমোচনীয় কালির দাগ ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) অন্তত দশটি কেন্দ্রে ঘুরে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

ঘষতেই অস্পষ্ট হয়ে গেল দাগ

সরেজমিনে দেখা যায়, শিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের নারী বিষয়ক সম্পাদক সাইয়েদা হাফসা ভোট প্রদান করে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে হাতে দেওয়া অমোচনীয় কালির দাগে ঘষা দেন। ঘষা দিতেই তার হাতের দাগ অস্পষ্ট হয়ে যায়। শুধু তার নয়, এমন পরিস্থিতি ডিনস কমপ্লেক্স কেন্দ্র, শহিদুল্লাহ কেন্দ্র, চতুর্থ বিজ্ঞান ভবন কেন্দ্রসহ প্রায় সব কেন্দ্রে দেখা গেছে।

ভোটারের উদ্বেগ: বিজয় ২৪ হল কেন্দ্রে ভোট দেওয়া মাসুম বিল্লাহ বলেন, “আমরা ভোট দিয়েছি। কিন্তু কেন্দ্র থেকে বের হয়েই দেখি হাতের কালির দাগ উঠে যাচ্ছে। জালিয়াতি এড়াতে বিষয়টির দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত।”

সাইয়েদা হাফসার মন্তব্য: সাইয়েদা হাফসা বলেন, “এটা তো মুছে যাওয়া উচিত হয়নি। আমরা দ্রুত বিষয়টির সমাধান চাই।”

রিটার্নিং কর্মকর্তার আশ্বাস

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক সেতাউর রহমান বলেন, “আমরা দেশের বাজারের সর্বোচ্চ দামের কালির কলম কিনেছি। এরপরও যদি উঠে যায়, তবুও সমস্যা হবে না।” তিনি জানান, ভোটকেন্দ্রে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা দেখে পরিচয় নিশ্চিত করে ভোট নেওয়া হচ্ছে। নেকাব ব্যবহার করা নারী শিক্ষার্থীদের জন্যও আলাদা চেকিংয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এবারের রাকসুতে ২৮ হাজার ৯০১ জন ভোটার ভোট দেবেন। নির্বাচনে ৮৬০ জন প্রার্থী এবং সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি ৫ পদে ৫৮ জন প্রার্থী লড়ছেন। সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া ভোট বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে।


৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন শুরু, উৎসবে মেতেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

ক্যাম্পাস ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৬ ০৯:৩৯:৫৫
৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন শুরু, উৎসবে মেতেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
রাকসু নির্বাচনে চলছে ভোটগ্রহণ। নারী ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। ছবিটি বৃহস্পতিবার মুনুজান হল থেকে তোলা। ছবি- শরিফুল ইসলাম তোতা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনকে ঘিরে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বুধবার সন্ধ্যা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস, যেখানে দল-মত ভুলে সবাই মেতেছে গান-বাজনা ও মেহেদি উৎসবে।

উৎসবমুখর ক্যাম্পাস

সরেজমিনে দেখা গেছে, বুধবার সকাল থেকে ক্যাম্পাস কিছুটা ফাঁকা থাকলেও বিকেল হতে হতে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এক উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। শিক্ষার্থীরা একদিকে গানবাজনায় মেতে ওঠেন, অন্যদিকে নারী শিক্ষার্থীরা মেতেছেন মেহেদি উৎসবে। দল-মত নির্বিশেষে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী কাব্য কুন্ডু বলেন, “ক্যাম্পাসে আছি প্রায় ৪ বছর। কিন্তু কখনো ক্যাম্পাসে এমন উৎসবমুখর পরিবেশ চোখে পড়েনি। রাকসুর কারণে সবাই দলমত ভুলে গিয়ে একসাথে আনন্দ করছে। এটাই সবচেয়ে ভালো লাগছে।”

স্বতন্ত্র নারীবিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী নিশা আক্তার বলেন, “শিক্ষার্থী ভাই বোনেরা কাল ভোট দিয়ে যোগ্য লোকদের নির্বাচিত করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।”

প্রার্থী ও প্যানেলের চিত্র

রাকসুর ২৩টি পদের বিপরীতে ২৪৭ জন এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫টি পদে ৫৮ জন প্রার্থী লড়াই করছেন। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ১৮ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে (জিএস) ১৩ জন এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ নির্বাচনে মোট ১১টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে আলোচিত ৮টি প্যানেল হলো:

ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’

ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’

ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্র ফেডারেশনের নেতৃত্বে গঠিত ‘রাকসু ফর র‌্যাডিক্যাল চেঞ্জ’

সাবেক সমন্বয়কদের নেতৃত্বে ‘আধিপত্যবাদবিরোধী ঐক্য’

বাম জোটের ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’

ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) ঘোষিত ‘অপরাজেয় ৭১, অপ্রতিরোধ্য ২৪’

সাবেক আরেক নারী সমন্বয়কের নেত্বতে ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন মনোনীত ‘সচেতন শিক্ষার্থী পরিষদ’।


৪৪ বছর পর চাকসু’তে নেতৃত্বে ফিরল ছাত্রশিবির

ক্যাম্পাস ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৬ ০৯:৩১:০৩
৪৪ বছর পর চাকসু’তে নেতৃত্বে ফিরল ছাত্রশিবির
ছবিঃ সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে দীর্ঘ ৪৪ বছর পর আবারও নেতৃত্বে ফিরেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ ভিপি (সহ-সভাপতি) ও জিএস (সাধারণ সম্পাদক) সহ মোট ২৪টি পদে বিজয়ী হয়েছে। প্রায় এক দশক ক্যাম্পাসে নিষ্ক্রিয় থাকার পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শিবির আবারও প্রকাশ্যে রাজনীতিতে ফিরে আসে এবং এই নির্বাচনে বিশাল জয় পেল।

নির্বাচনের ফলাফল

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টায় সপ্তম চাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন। তিনি জানান, নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা-পূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ভিপি (সহ-সভাপতি) পদে: ছাত্রশিবির সমর্থিত মো. ইব্রাহিম হোসেন (ইতিহাস বিভাগের এমফিল শিক্ষার্থী) ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট।

জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে: ৮ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন একই প্যানেলের সাঈদ বিন হাবিব (ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী)। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মো. শাফায়াত পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।

মোট পদ: চাকসুর এবারের নির্বাচনে মোট ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টি বিজয় তুলে নেয় শিবির সমর্থিত প্যানেল।

ছাত্রদলের একমাত্র জয়

ছাত্রদলের একমাত্র সাফল্য এসেছে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে। এজিএস পদে ছাত্রদলের আইয়ুবুর রহমান ৭ হাজার ১৪ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। এছাড়া সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জয়লাভ করেছেন তামান্না মাহবুব নামে এক ছাত্রী।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত মাত্র সাতবার চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিবিরের সর্বশেষ বিজয় ছিল ১৯৮১ সালে। এরপর ১৯৯০ সালের নির্বাচনের পর দীর্ঘ তিন দশক চাকসু নির্বাচন বন্ধ ছিল।


কোরআন অবমাননা: নর্থ সাউথ থেকে শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার

ক্যাম্পাস ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৫ ১৬:৩১:০৭
কোরআন অবমাননা: নর্থ সাউথ থেকে শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল

পবিত্র কোরআন অবমাননা করায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অপূর্ব পাল নামের এক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে মামলা করবে বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক সৈয়দ মানসুর হাশিমের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

ঘটনার বিবরণ ও প্রশাসনের পদক্ষেপ

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল শনিবার অপূর্ব পাল নামে একজন শিক্ষার্থীকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পবিত্র কোরআন অবমাননারত অবস্থায় প্রত্যক্ষদর্শীরা দেখতে পান। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা বিভাগ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বহিষ্কার ও মামলা: এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শৃঙ্খলা কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে মামলা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গ্রেপ্তার: ইতোমধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে।

শিক্ষার্থীর পরিচয়: অপূর্ব নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে এর আগে তিনি বিভাগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার ছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধৈর্যের প্রশংসা করে বলেছে, তারা সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও সহাবস্থানের পরিবেশ প্রশংসনীয়ভাবে রক্ষা করেছেন।


নীলক্ষেতে ডাকসুর ব্যালট ছাপানোর কথা স্বীকার করলেন উপাচার্য

ক্যাম্পাস ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৮ ১৭:৪৩:১৬
নীলক্ষেতে ডাকসুর ব্যালট ছাপানোর কথা স্বীকার করলেন উপাচার্য
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ব্যালট পেপার রাজধানীর নীলক্ষেতে ছাপানো হয়েছিল বলে স্বীকার করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। তবে তিনি দৃঢ়ভাবে দাবি করেছেন, ব্যালট ছাপানোর স্থান বা সংখ্যা নির্বাচনের ফলকে কোনোভাবেই প্রভাবিত করেনি।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

নীলক্ষেতে ছাপানোর কারণ

উপাচার্য জানান, একটি অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে ব্যালট পেপার ছাপানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে ভোটার ও প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় মূল ভেন্ডরের অনুমতিতে একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে একই টেন্ডারের আওতায় কাজের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এই সহযোগী প্রতিষ্ঠান নীলক্ষেতে ব্যালট ছাপালেও বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেনি। সংশ্লিষ্ট ভেন্ডর এটিকে ‘ব্যস্ততার কারণে ভুলে যাওয়ার’ কথা বলে স্বীকার করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দেওয়া ব্যাখ্যায় সহযোগী প্রতিষ্ঠান জানায়, নীলক্ষেতে ২২ রিম কাগজ ব্যবহার করে মোট ৮৮ হাজার ব্যালট ছাপা হয়। এর মধ্যে প্রিন্টিং, কাটিং ও ওএমআর প্রি-স্ক্যানসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে ৮৬ হাজার ২৪৩টি ব্যালট চূড়ান্তভাবে সিলগালা করে সরবরাহ করা হয়। অতিরিক্ত ব্যালট প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ধ্বংস করা হয়।

নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতার দাবি

উপাচার্য দাবি করেন, ব্যালট প্রস্তুতের পুরো প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তা বজায় রাখা হয়েছে এবং সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যালট ছাপা শেষ হওয়ার পর তা নির্দিষ্ট পরিমাপে কাটিং, সুরক্ষা কোড আরোপ, ওএমআর স্ক্যান, প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার সই ও সিলসহ কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তার সই যুক্ত না হলে, সেই ব্যালট ভোটগ্রহণের জন্য উপযুক্ত হয় না।

তিনি আরও জানান, নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। মোট ২ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৪টি ব্যালট প্রস্তুত করা হলেও, ভোট দিয়েছেন ২৯ হাজার ৮২১ জন এবং ব্যবহার হয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৬টি ব্যালট। অবশিষ্ট রয়েছে ৬০ হাজার ৩১৮টি।

নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে বিভিন্ন প্যানেল ব্যালট ছাপানোর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে উপাচার্য বলেন, কেউ যদি সুনির্দিষ্ট সময় বা ঘটনার ভিত্তিতে সিসিটিভি ফুটেজ বা ভোটারদের স্বাক্ষরিত তালিকা দেখতে চান, তাহলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে তা দেখার সুযোগ থাকবে।


ডাকসু নির্বাচন: প্রশাসনের গড়িমসির অভিযোগ আনলেন তিন ভিপি প্রার্থী

ক্যাম্পাস ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ২১:৪৯:১৭
ডাকসু নির্বাচন: প্রশাসনের গড়িমসির অভিযোগ আনলেন তিন ভিপি প্রার্থী
ছবি-সমকাল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে একাধিক ‘অসঙ্গতি’ থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন তা নিয়ে গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান, বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের এবং স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্যের উমামা ফাতেমাসহ একাধিক প্রার্থী।

মঙ্গলবার তারা উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীরা জানান, গত ৭ সেপ্টেম্বর গাউসুল আজম মার্কেটের একটি ছাপাখানায় ডাকসু নির্বাচনের ব্যালট পেপার অরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া হলেও প্রশাসন সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি।

এছাড়া নির্বাচনে যে ভোট টার্নআউট দেখানো হয়েছে, তা বাস্তবে মাঠপর্যায়ে দেখা যায়নি বলে দাবি করেন তারা। এ জন্য ভোটারদের স্বাক্ষর তালিকা প্রকাশের দাবি জানান প্রার্থীরা।

উমামা ফাতেমা বলেন, “ভোটারের তালিকা আগেও প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে স্বাক্ষর রয়েছে। কে কাকে ভোট দিয়েছেন, তা উল্লেখ নেই। সুতরাং এখানে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু প্রশাসন তালিকা প্রকাশে অনীহা দেখাচ্ছে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিশেষ করে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ঘোষিত ভোট টার্নআউট বাস্তবের সঙ্গে মেলে না।

সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল কাদের বলেন, “গাউসুল আজম মার্কেটে ব্যালট পেপার অরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া গেলেও প্রশাসন বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে। ভোট কাস্টিং তালিকা প্রকাশেও তারা গড়িমসি করছে, যা আমাদের সন্দেহ বাড়িয়ে দিচ্ছে।”

আবিদুল ইসলাম খান বলেন, “নির্বাচনের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা এসব কনসার্ন জানিয়েছি। কিন্তু প্রশাসনের উদাসীনতা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের জিএস প্রার্থী তানভীর বারী হামিম, স্বতন্ত্র প্যানেলের জিএস প্রার্থী আরাফাত চৌধুরী এবং ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থী শেখ তানভীর আল হাদী মায়েদ প্রমুখ।

উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ।


 চাকসু ও রাকসু নির্বাচনে নতুন সময়সূচি

ক্যাম্পাস ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ১৭:২২:০৬
 চাকসু ও রাকসু নির্বাচনে নতুন সময়সূচি
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের তারিখ পেছাল। এখন নির্বাচন ১২ অক্টোবরের পরিবর্তে ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

চাকসু নির্বাচনের নতুন তারিখ ও প্রার্থী সংখ্যা

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশন সচিব অধ্যাপক একেএম ফরিফুল হক সিদ্দিকী এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

উল্লেখ্য, চাকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ২৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ২২ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ২২ জন, খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক ১২ জন, সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক ১৫ জন, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক ১৮ জন, সহ-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক ১৬ জন, দপ্তর সম্পাদক ১৮ জন, সহ-দপ্তর সম্পাদক ১৪ জন প্রার্থিতা করবেন।

এছাড়া ছাত্রী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক (নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত) ১২ জন, সহ-ছাত্রী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক (নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত) ১১ জন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ১১ জন, গবেষণা ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ১৩ জন, সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ২০ জন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ১৭ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক ১৭ জন, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ১৬ জন, যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক ২০ জন সহ-যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক ১৪ জন, আইন ও মানবাধিকার ১১ জন, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক ২১ জন এবং নির্বাহী সদস্য ৫টি পদের বিপরীতে ৮৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

রাকসু নির্বাচনও পিছিয়েছে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে

এর আগে, রাকসু নির্বাচন পেছানোর ঘোষণা দেয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাকসু নির্বাচন আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাকসু নির্বাচন কমিশন ২০২৫-এর পূর্ণাঙ্গ সভায় আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিতব্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু, হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনপূর্ব উদ্ভূত পরিস্থিতির বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়। এ সভা লক্ষ্য করে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজমান পরিস্থিতি কোনো অবস্থাতেই রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুকূলে নয়।

এজন্য দুটি কারণ উল্লেখ করে রাবি প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলছে এবং নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়নি।


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন: শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা মুখোমুখি অবস্থানে

ক্যাম্পাস ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২২ ১৫:১২:৩২
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন: শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা মুখোমুখি অবস্থানে
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা ইস্যুতে চরম অচলাবস্থা বিরাজ করছে। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছেন। জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম লাঞ্ছনার ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকাল ক্লাস–পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে, অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতি ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। ফলে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতিতে কার্যত ফাঁকা হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

কর্মবিরতি ও ফাঁকা ক্যাম্পাস

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) প্রশাসন ভবনসহ বিভিন্ন দপ্তর ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলছে। বাস চললেও শিক্ষার্থী নেই। ফাঁকা দোকানপাটে কেউ বসে নেই। সকালে গেটগুলোয় দেখা গেছে বাড়িমুখী শিক্ষার্থীদের ভিড়।

বাংলা বিভাগের ছাত্রী জান্নাতুল মাওয়া বলেন, “আমরা এখানে পড়াশোনার জন্য এসেছি, কিন্তু ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ও সংঘাতের কারণে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি, শিক্ষক-কর্মকর্তারা লাগাতার কর্মবিরতিতে রয়েছেন। সামনে রাকসু নির্বাচন হবে কি না, সেটাও আমাদের কাছে অস্পষ্ট। আমরা চাই দ্রুত সব কিছু স্বাভাবিক হোক।”

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, “ক্যাম্পাসে অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের আন্দোলন ও শঙ্কাজনক পরিস্থিতির কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও বিভ্রান্ত। রাকসু নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে—নির্বাচন হবে কি, বা কবে হবে, তা বোঝা যাচ্ছে না।”

রাকসু নির্বাচন ও শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া

ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “পোষ্য কোটা বাতিল ও ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের দাবিতে আমরা অনড় আছি। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দেখছি। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি নির্বাচনে সহযোগিতা না করেন, তাহলে নির্বাচন খুবই কষ্টকর হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, ২০ তারিখের ঘটনায় সব প্যানেলের প্রচারে ভাটা পড়েছে এবং অনেক শিক্ষার্থী বাড়ি চলে গেছেন।

ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দীন আবীর বলেন, “আমরা পোষ্য কোটা বাতিলের পক্ষে। কিন্তু গুটিকয় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী বেশি তৎপর, তারা নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে। এই পরিস্থিতিতে ঝড়ঝাপটা বেড়ে গেছে। এই মুহূর্তে আসলে নির্বাচন সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে আমরা চাই, পূজার ছুটির পরেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।”

‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন, “এই পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। অনেক শিক্ষার্থী বাড়ি চলে গেছেন। আর পোষ্যকোটা নিয়ে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।”

রাকসুর ইতিহাসে প্রথম নারী ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, “বর্তমানে ক্যাম্পাসে স্থিতিশীল পরিস্থিতি নেই। প্রশাসন যদি স্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে তাহলে ২৫ তারিখেই রাকসু হোক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না করে রাকসু দিলে সেটার আমরা বৈধতা দেব না।”

ঘটনার সূত্রপাত

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রশাসন ভবন থেকে বের হলে শিক্ষার্থীরা তাকে আটকে দেন। পরে তার বাসভবনে তালা ঝোলানো হয়। এরপর জুবেরী ভবনে ঢুকতে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দিলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে হাতাহাতি হয়। উপ-উপাচার্যসহ কর্মকর্তাদের আটকে রেখে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। রাত ১টার দিকে উপাচার্য ড. সালেহ্ হাসান নকীব পোষ্যকোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন।


কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে উত্তাপ রাবি: পোষ্য কোটা নিয়ে জটিলতা

ক্যাম্পাস ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ২১:০৯:৫৭
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে উত্তাপ রাবি: পোষ্য কোটা নিয়ে জটিলতা
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা বহাল না রাখার সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে রাকসু নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম, পানি, বিদ্যুৎ ও পরিবহন সেবা এই শাটডাউনের আওতামুক্ত থাকবে।

‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা সুবিধা রয়েছে’

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাবি অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা সুবিধা রয়েছে। অথচ রাবিতে এই সুবিধা না থাকায় আমরা হতাশ। ফলে আন্দোলনের অংশ হিসেবে কমপ্লিট শাটডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তে যা জানা গেল

রোববার বিকেলে উপাচার্যের বাসভবনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভায় রাবিতে পোষ্য কোটা স্থগিত রাখার পূর্বের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়।

রাবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদ জানান, “সিন্ডিকেট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর গত জানুয়ারিতে ঘোষণা দেওয়া পোষ্য কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে। পাশাপাশি শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্তও হয়েছে।” সিন্ডিকেট শনিবার রাবির জুবেরী ভবনে এক উপ-উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ দায়ী কি না, তা নির্ধারণ করা হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাকসু নির্বাচন ও পোষ্য কোটা বিতর্ক

সিন্ডিকেটের পক্ষ থেকে রাকসু (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) নির্বাচনে সকলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রার বলেন, “রাকসু নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও, নির্বাচন কার্যক্রম যেন নির্বিঘ্নে চলে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”

রাবিতে আগে থেকেই কর্মরতদের সন্তানদের ভর্তির জন্য ৪ শতাংশ পোষ্য কোটা চালু ছিল। কিন্তু ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে এই কোটা বাতিল করা হয়। এরপর থেকে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এটিকে ‘প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা’ হিসেবে পুনরায় চালুর দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর দেওয়া এক চিঠিতে তারা জানান, দাবি মানা না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। যদিও প্রশাসন জরুরি একাডেমিক সভায় ১০ শর্তে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা চালুর ঘোষণা দেয়, কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তা বাস্তবায়ন হয়নি।


জাবি নিয়ে আমির হামজার বিতর্কিত মন্তব্য, প্রশাসনের কঠোর প্রতিবাদ

ক্যাম্পাস ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ২০:৫৬:০৫
জাবি নিয়ে আমির হামজার বিতর্কিত মন্তব্য, প্রশাসনের কঠোর প্রতিবাদ
ছবি: সংগৃহীত

আলোচিত ইসলামি বক্তা ও জামায়াতে ইসলামী নেতা মুফতি আমির হামজা দাবি করেছিলেন যে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন এবং আবাসিক হলে সকালে শিক্ষার্থীদের ‘মদ’ দিয়ে কুলি করতে দেখেছেন। এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তার এই দাবি ও বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে জাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

‘আমির হামজার কোনো বক্তব্যই সত্য নয়’

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “আমির হামজা তার বক্তব্যে দাবি করেছেন, তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন এবং আবাসিক হলে সকালে শিক্ষার্থীদের ‘মদ’ দিয়ে কুলি করতে দেখেছেন।”

আমির হামজা আরও বলেছিলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে পেটায়। জাবি প্রশাসন স্পষ্ট করে জানিয়েছে, “প্রকৃতপক্ষে তার কোনো বক্তব্যই সত্য নয়।”

মিথ্যাচারের প্রমাণ

জাবি প্রশাসন আরও জানিয়েছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১১ সালে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ চালু হয় এবং ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে এই বিভাগে প্রথম শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। সুতরাং, আমির হামজা জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হওয়ার যে তথ্য প্রকাশ করেছেন, তা সত্য নয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আবাসিক হলগুলোয় সকালে ‘মদ’ দিয়ে কুলি করার প্রত্যক্ষ করার বর্ণনাটিও তার মনগড়া ও অসত্য। প্রমাণসহ এমন নজির প্রশাসনের কাছে নেই। ছাত্ররা শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে পেটানোর তার বক্তব্যটিও সত্যের অপলাপ মাত্র।

‘বস্তুনিষ্ঠ হওয়ার আহ্বান’

জাবি প্রশাসন আমির হামজাকে বস্তুনিষ্ঠ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জাতীয় প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মনগড়া ও উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য শুধু অগ্রহণযোগ্যই নয়, অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমির হামজাকে এ ধরনের ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রদানে সতর্ক ও বস্তুনিষ্ঠ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।

পাঠকের মতামত: