স্বাস্থ্যকর রান্না: ৫টি কৌশলে খাবারে তেলের ব্যবহার কমাবেন যেভাবে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ২২:০৩:০৩
স্বাস্থ্যকর রান্না: ৫টি কৌশলে খাবারে তেলের ব্যবহার কমাবেন যেভাবে
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন। শারীরিক সক্ষমতা ধরে রাখতে ওজন নিয়ন্ত্রণ, কোলেস্টেরল ও সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে রান্নাঘরে পরিবর্তন আনা জরুরি—তেলের ব্যবহার কমিয়ে শাকসবজি ও দানাশস্যের পরিমাণ বাড়াতে হবে। কিন্তু অনেকেই তেল কম দিয়েও সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবার রান্না করার কৌশল জানেন না।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন উপায়ে এবং কীভাবে রান্নায় তেলের ব্যবহার কমাবেন:

তেল কমানোর ৫টি সহজ কৌশল

১. চামচ ব্যবহার করুন: তেলের জার থেকে কড়াইতে সরাসরি তেল ঢালা থেকে বিরত থাকুন। এতে তেল বেশি ব্যবহার হয়। এর বদলে একটি চামচ ব্যবহার করে মেপে মেপে তেল ব্যবহার করুন।

২. খাবার ভাপিয়ে নিন: সব সময় কষিয়েই রান্না করতে হবে, এমন কোনো নিয়ম নেই। শাকসবজি বা মাংস—তেল দিয়ে রান্না করার আগে তা ভাপিয়ে নিন। ভাপিয়ে নিলে ভাজার আগে তেল কম লাগে এবং খাবারের পুষ্টিগুণ ও স্বাদ অটুট থাকে।

৩. সঠিক পাত্র ব্যবহার: কম তেলে রান্না করতে হলে সঠিক পাত্র বেছে নেওয়া জরুরি। ননস্টিক প্যান ব্যবহার করলে কম তেলেই সুস্বাদু পদ রান্না করা যায়। কয়েক ফোঁটা তেলে ভাজাভুজি রান্না করতে আপনি এয়ার ফায়ারও বেছে নিতে পারেন।

৪. রান্নার আগে ম্যারিনেট: মাছ কিংবা মাংস রান্নার আগে ম্যারিনেট করে রাখুন। ম্যারিনেট করা খাবার দ্রুত রান্না হয়ে যায় এবং তেলও কম লাগে। ম্যারিনেশনের সময়ে এক চামচ তেল বা দই ব্যবহার করলে আর অতিরিক্ত তেলের দরকার পড়বে না।

৫. আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিয়ে রান্না: আঁচ কমিয়ে এবং ঢাকা দিয়ে রান্না করুন। আঁচ কমিয়ে রান্না করলে খাবারের পুষ্টিগুণ অটুট থাকে। আর ঢাকা দিয়ে রান্না করলে কম তেলেও সুস্বাদু খাবার তৈরি করা সম্ভব। উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নার চেয়ে এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো।


পুরুষের বন্ধ্যত্ব কেন হয়? যে ৫টি খাবার শুক্রাণুর পরিমাণ বাড়ায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ১১:৪৪:২৪
পুরুষের বন্ধ্যত্ব কেন হয়? যে ৫টি খাবার শুক্রাণুর পরিমাণ বাড়ায়
ছবি: সংগৃহীত

সন্তান ধারণে ব্যর্থতা কেবল নারীর কারণে ঘটে—এমন ভ্রান্ত ধারণা সমাজে প্রচলিত থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, বন্ধ্যত্ব নারী ও পুরুষ উভয়েরই হতে পারে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অনেক সময়ই পুরুষের বন্ধ্যত্ব কোনো দম্পতির সন্তান না হওয়ার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়।

ইনফার্টিলিটি কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের প্রধান পরামর্শক অধ্যাপক ডা. মোসাম্মাত রাশিদা বেগম জানান, পুরুষের বন্ধ্যত্ব প্রধানত শুক্রাণুজনিত সমস্যার কারণে হয়ে থাকে।

বন্ধ্যত্বের কারণ ও ঝুঁকিসমূহ

ডা. রাশিদা জানান, শুক্রাণু তৈরি না হওয়া, পরিমাণে কম তৈরি হওয়া, গতিশীলতার ত্রুটি বা আকৃতিগত সমস্যার কারণেই বন্ধ্যত্ব হয়। এছাড়া সহবাসে অক্ষমতার কারণে শুক্রাণু নারীর দেহে পৌঁছাতে না পারাও একটি কারণ।

যেসব কারণে শুক্রাণুর গুণগত মান কমে:

জীবনযাপন ও পরিবেশ: আধুনিক জীবনযাপন, দূষণ, অতিরিক্ত গরম পরিবেশে কাজ, ধূমপান-অ্যালকোহল গ্রহণ, ভিটামিন ও জিংকের ঘাটতি এবং কীটনাশকযুক্ত খাবার শুক্রাণুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

রোগ ও ওষুধ: ডায়াবেটিস, হরমোনের অসাম্যতা, হেপাটাইটিস চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টিহেপাটিক, গ্যাস্ট্রিকের জন্য অ্যান্টি আলসারেন্ট জাতীয় ওষুধ, হার্টজনিত ব্যথার জন্য সালফাসালাজিন, মেথোট্রেক্সেট, রেডিওথেরাপি বা কেমোথেরাপির মতো ক্যানসারের ওষুধ ভূমিকা রাখতে পারে।

শারীরিক সমস্যা: অণ্ডকোষে সংক্রমণ, আঘাত বা নালি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেও পর্যাপ্ত শুক্রাণু তৈরি হলেও বীর্যে মিশতে পারে না, যা বন্ধ্যত্বের কারণ।

শুক্রাণু বাড়াতে যে খাবারগুলো জরুরি

বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবনধারায় পরিবর্তনের মাধ্যমে পুরুষের প্রজনন সক্ষমতা অনেকাংশে বাড়ানো সম্ভব। নিচে তেমন কয়েকটি খাবার উল্লেখ করা হলো:

১. আনার: এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়াতে এবং শুক্রাণুর গুণগত মান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

২. ওয়ালনাট (আখরোট): ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ এই বাদাম শুক্রাণুর ক্ষিপ্রতা ও জীবনশক্তি বাড়ায়। প্রতিদিন ৭০ গ্রাম ওয়ালনাট খাওয়া যেতে পারে।

৩. ব্ল্যাক চকলেট: এতে রয়েছে এল-আরজিন অ্যামাইনো এসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শুক্রাণুর পরিমাণ বাড়ায় এবং ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে।

৪. টমেটো: লাইকোপেন নামক উপাদানযুক্ত এই সবজি শুক্রাণুর গুণগত মান বাড়াতে সহায়ক। রান্নার সময় জলপাই তেল ব্যবহার করলে শোষণ আরও ভালো হয়।

৫. কুমড়োর বীজ: এতে থাকা জিং, ফাইটোস্টেরল ও টেস্টোস্টেরন হরমোন শুক্রাণুর উৎপাদন বাড়ায়।

প্রজনন সক্ষমতা বাড়াতে অতিরিক্ত পরামর্শ

অতিরিক্ত ওজন: শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। অতিরিক্ত ফ্যাট টেস্টোস্টেরনকে ইস্ট্রোজেনে রূপান্তর করে, যা শুক্রাণু হ্রাস করে।

বর্জন: ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করুন।

সতর্কতা: কেমোথেরাপি বা গুরুতর চিকিৎসার আগে শুক্রাণু সংরক্ষণ করতে পারেন।

চিকিৎসা: প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে আইইউআই বা টেস্টটিউব বেবি পদ্ধতির সহায়তা নিন।

পুরুষের বন্ধ্যত্ব আজ আর অজানা বিষয় নয়। সচেতনতা, সঠিক চিকিৎসা ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের মাধ্যমে এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।


সকালে এই ৪টি অভ্যাস হার্টের ক্ষতি বাড়াতে পারে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৯ ১১:৩৮:২৫
সকালে এই ৪টি অভ্যাস হার্টের ক্ষতি বাড়াতে পারে
ছবি: সংগৃহীত

জীবনের প্রতিটি দিনই নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসে, আর দিনের ভালো শুরু শরীর ও মনের জন্য ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তবে হৃদরোগে আক্রান্ত বা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য সকাল ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সময়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে, এই সময়েই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানিয়েছেন, সকালে কর্টিসল (Cortisol) নামে এক ধরনের স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। এর ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় এবং রক্তের ঘনত্ব বেড়ে গিয়ে হার্টের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় কিছু সাধারণ অভ্যাস হার্টের ক্ষতি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

যে ৪টি অভ্যাস হার্টের জন্য ক্ষতিকর

১. খালি পেটে চা-কফি: ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে চা বা কফি পান করলে কর্টিসলের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এতে স্ট্রেস ও রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, যা হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

২. পানি না খাওয়া: ঘুমের সময়ে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে। ঘুম থেকে উঠে সঙ্গে সঙ্গে পানি না খেলে রক্ত ঘন হয়ে যায়, ফলে হৃদযন্ত্রকে রক্ত পাম্প করতে অনেক বেশি চাপ নিতে হয়।

৩. ঘুম ভাঙার পরপরই মোবাইল দেখা: সকালে মোবাইল স্ক্রিনে চোখ দিলে এবং নেতিবাচক খবর পড়লে মনের ওপর চাপ পড়ে। মানসিক চাপ সরাসরি হৃদপিণ্ডের ওপর প্রভাব ফেলে।

৪. হুটহাট কাজে ঝাঁপিয়ে পড়া: সকালে হঠাৎ ব্যস্ততা বা মানসিক চাপ শুরু করলে হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ বেড়ে যায়। এই অভ্যাস হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আরও বাড়ায়।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সকালে কিছু অভ্যাস মেনে চলা জরুরি:

১. হাইড্রেশন: ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পানি পান করুন। এটি শরীরকে হাইড্রেট করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

২. স্বাস্থ্যকর নাস্তা: প্রোটিনসমৃদ্ধ ও হালকা নাস্তা (যেমন: ডিম, ওটস, টক দই, ফল, বাদাম) হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

৩. হালকা ব্যায়াম: প্রতিদিন ১০–১৫ মিনিট হাঁটা, যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করলে রক্তসঞ্চালন ঠিক থাকে।

৪. শান্ত থাকুন: সকালে অতিরিক্ত তাড়াহুড়ো না করে কিছু সময় নিজেকে দিন এবং শান্তভাব বজায় রাখুন।

৫. সময়মতো ওষুধ: হৃদরোগীদের অবশ্যই নিয়মিত ও সময়মতো ওষুধ সেবন করতে হবে।

সূত্র : টিপস ২৪


২১ শতকের নীরব ঘাতক: কোলোরেক্টাল ক্যানসারে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে যে খাবার

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১৯:১৫:১৩
২১ শতকের নীরব ঘাতক: কোলোরেক্টাল ক্যানসারে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে যে খাবার
ছবি: সংগৃহীত

একসময় বার্ধক্যজনিত রোগ হিসেবে দেখা হলেও, এখন কোলোরেক্টাল ক্যানসার তরুণদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে। ইউরোপজুড়ে পরিচালিত এক গবেষণায় জানা গেছে, ২০–২৯ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে এই রোগের হার প্রতি বছর গড়ে ৭.৯ শতাংশ বেড়েছে। গবেষকরা এই বৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারকে (Ultra-Processed Food) দায়ী করছেন।

ক্যানসার বৃদ্ধির ভয়ংকর চিত্র

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে এই রোগের হার সবচেয়ে দ্রুত বাড়লেও, ৩০–৩৯ বছর বয়সিদের মধ্যে বৃদ্ধির হার ছিল ৪.৯ শতাংশ এবং ৪০–৪৯ বছর বয়সিদের মধ্যে ১.৬ শতাংশ।

বিশ্বজুড়ে এই রোগের বিস্তারও উদ্বেগজনক। ১৯৯০ সালে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের রোগী ছিল প্রায় ৯৪ হাজার ৭০০ জন, যা ২০১৯ সালে বেড়ে ২ লাখ ২৫ হাজার ৭৩৬ জনে দাঁড়িয়েছে। যদিও ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে এ রোগের হার কমছে, ৫০ বছরের নিচের মানুষের মধ্যে এর বিস্তার দ্রুত বাড়ছে।

অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারের ঝুঁকি

বিজ্ঞানীরা তরুণদের মধ্যে এ রোগের বৃদ্ধির জন্য জেনেটিক কারণকে খুব একটা দায়ী করছেন না। ২০২৫ সালে প্রকাশিত এক সমীক্ষাতেও স্পষ্ট হয়েছে যে, অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার এর অন্যতম প্রধান কারণ। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে প্যাকেটজাত স্ন্যাকস, রেডি মিলস, চিনিযুক্ত খাবার, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত মাংসসহ ফাস্টফুড।

ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় ৪৬ হাজারেরও বেশি পুরুষকে ২৪ থেকে ২৮ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, যারা সবচেয়ে বেশি অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার খেয়েছেন, তাদের কোলোরেক্টাল ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় ২৯ শতাংশ বেশি। অবাক করার বিষয় হলো—পুষ্টি ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার পরও একই ফল পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, অতিরিক্ত ওজন না থাকা সত্ত্বেও এই খাবারগুলো ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

ভবিষ্যৎ স্বীকৃতি ও প্রতিরোধ

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অ্যালকোহল ও তামাক যেমন বিশ্বব্যাপী ক্যানসারের কারণ হিসেবে স্বীকৃত হতে কয়েক দশক নিয়েছিল, তেমনি আগামী এক দশকের মধ্যেই তরুণদের কোলোরেক্টাল ক্যানসারের অন্যতম কারণ হিসেবে অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারের বিষয়টি স্বীকৃতি পাবে।

তবে আশার খবর হচ্ছে—২০২৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত দই খেলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন—অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিয়ে নিয়মিত দইসহ স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত। প্রচলিত কথা, খাবারই ওষুধ। আর এখন বিজ্ঞান বলছে—খাবারই প্রতিরোধ।


নখকুনির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি: ঘরোয়া চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৭ ১৯:২১:৩০
নখকুনির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি: ঘরোয়া চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায়
ছবি: সংগৃহীত

নখকুনি—শুনতে সাধারণ মনে হলেও যাদের হয়েছে, তারা জানেন এর যন্ত্রণা কতটা কষ্টকর। পায়ের নখ যখন চামড়ার ভেতরে ঢুকে যায়, তখনই তৈরি হয় এই সমস্যা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই নিজের মতো করে নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেন, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাতে সুফল মেলে না। তাই এমন সমস্যার মুখোমুখি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। তবে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি আছে, যা নিয়মিত মেনে চললে নখকুনির যন্ত্রণা অনেকটাই কমানো সম্ভব।

চিকিৎসকরা বলছেন, নখকুনির প্রধান কারণগুলো হলো:

জুতা: টাইট বা ফিটিং জুতা পরা।

নখ কাটা: ভুলভাবে নখ কাটা, কখনোই গোল করে না কেটে সোজাভাবে কাটা উচিত।

আঘাত: নখে ধাক্কা লাগা বা আঘাত পাওয়া।

হাইজিন: হাইজিন ঠিকভাবে অনুসরণ না করা এবং পায়ের ঘাম ও জীবাণু সংক্রমণ।

ঘরোয়া উপায়ে নখকুনি সারানোর পদ্ধতি

১. গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখা: প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখলে আশপাশের ত্বক নরম হয়, ব্যথা কমে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস পায়। চাইলে পানিতে অল্প লবণও মিশিয়ে নিতে পারেন।

২. অ্যাপল সিডার ভিনেগার: এক কাপ পানিতে ২ চা চামচ অ্যাপল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পা ১০–১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এটি ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস নষ্ট করে, ইনফেকশন কমিয়ে আনে।

৩. কটন বলের ব্যবহার: নখ ও চামড়ার মাঝে সামান্য কটন বল রেখে দিন। এতে নখ কিছুটা ওপরে ওঠে এবং ভেতরে ঢোকার প্রবণতা কমে যায়।

৪. অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম: পা ভালোভাবে শুকিয়ে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বা আইডিন লাগিয়ে নিন। এটি জীবাণু সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?

নখকুনির সমস্যা অবহেলা করলে তা মারাত্মক জটিলতায় রূপ নিতে পারে। যদি ইনফেকশন বেড়ে যায়, পা ফুলে যায়, পুঁজ জমে বা ৫-৬ দিনের মধ্যেও ব্যথা না কমে—তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।

সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস


ঘুম থেকে উঠেই শরীর ব্যথা? হতে পারে ৫টি গুরুতর কারণ

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৬ ১৭:৪১:০৭
ঘুম থেকে উঠেই শরীর ব্যথা? হতে পারে ৫টি গুরুতর কারণ
ফাইল ছবি

অনেকেই সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর পুরো শরীরে একধরনের আড়ষ্টতা অনুভব করেন। বিছানা ছেড়ে মেঝেতে পা ফেললে পায়ের তালুতে ব্যথা হয়। মনে হয় হাত, পাসহ পুরো দেহের ভাঁজে ভাঁজেই যেন ব্যথা লুকিয়ে আছে। অতিরিক্ত পরিশ্রম ছাড়াই যদি প্রায়ই এমনটা হয়, তাহলে তা একদমই শরীরের জন্য ভালো লক্ষণ নয়। ছোট ছোট সমস্যাকে গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে অনেক সময় বড় ধরনের অসুখ হয়ে থাকে। টেক্সাসের হেলথ কেয়ার অ্যাসোসিয়েটস এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর ব্যথার ৫টি প্রধান কারণ নিচে দেওয়া হলো:

১. ভুল ঘুমানোর অবস্থান

মানুষ ভেদে ঘুমের ধরন আলাদা হয়ে থাকে। ঘুমের অবস্থান খারাপ হলে শরীরে ব্যথা হতে পারে। পাশ ফিরে ঘুমানো অনেক ক্ষেত্রে ভালো হতে পারে, বিশেষ করে যাদের ঘুমের সময় শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয়, যেমন অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (Obstructive Sleep Apnea)। এই রোগে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হয় এবং ঘুম ভালো না হলে শরীর ব্যথা হতে পারে।

২. নিম্নমানের বিছানা

যেখানে ঘুমাবেন, সেটি ভালো ও আরামদায়ক হওয়া উচিত। বিছানা খারাপ হলে সেটিই হতে পারে শরীর ব্যথার কারণ। নিম্নমানের বিছানা পিঠের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে না। তাই নিজের ওজনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভালো মানের বিছানা ব্যবহার করা জরুরি।

৩. অতিরিক্ত ওজন

মাত্রাতিরিক্ত ওজন থাকলে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। অতিরিক্ত ওজন থাকলে ঘুমানোর সময় পিঠ ও ঘাড়ে ওজনের চাপ পড়ে। এ থেকে শরীর ব্যথা হয় এবং অনেক সময় শ্বাস-প্রশ্বাস নিতেও সমস্যা হয়। এ ক্ষেত্রে বেশি সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

৪. শ্বাসকষ্টের রোগ

শ্বাসকষ্ট রোগীদের ঘুমের সময়ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে ঘুমানোর সময় মানুষের শ্বাস নেওয়া কিছুটা কমে এবং শরীরে অক্সিজেনের অভাব হতে পারে। ফলে শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো কার্যক্ষমতা ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় না। এই কারণে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীর ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

৫. অন্যান্য উপসর্গ

ঘুম ভালো না হলে বা শ্বাসকষ্টের রোগ থাকলে ঘুমের সময় নাক ডাকা, দম বন্ধ হওয়া বা হাঁপানো, সকালে মাথাব্যথা, দিনের বেলায় তন্দ্রাভাব, ঘুম থেকে ওঠার পর মুখ শুকিয়ে যাওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রয়োজন, হতাশা অনুভব ও অমনোযোগী হওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।


ব্রণ চেপে ফাটানো: হতে পারে যে ভয়াবহ রোগ, সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৫ ১৭:৩০:৪৬
ব্রণ চেপে ফাটানো: হতে পারে যে ভয়াবহ রোগ, সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা
ছবি: সংগৃহীত

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হঠাৎ ব্রণ চোখে পড়লে অনেকেই অস্থির হয়ে পড়েন, “চেপে ফাটিয়ে ফেলি!” তবে এই অভ্যাস পরিণামে ভয়াবহ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুখের বিশেষ একটি অংশের ব্রণ ফাটালে সেটি সরাসরি মস্তিষ্কে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, এমনকি হতে পারে প্যারালাইসিসও।

আমেরিকান হলিস্টিক প্লাস্টিক সার্জন ড. অ্যান্থনি ইউন সতর্ক করে বলেছেন, “দুই ভ্রুর মাঝের ব্রণ কখনোই ফাটানো উচিত নয়। কারণ, এটি এমন এক জায়গা, যেখানে দেহের গুরুত্বপূর্ণ স্নায়ু ও রক্তনালির সংযোগ রয়েছে, যা সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত।”

ডেঞ্জার জোন’ বা মৃত্যুর ত্রিভুজ

বিশেষজ্ঞদের মতে, মুখের উপরের ঠোঁট থেকে নাক পর্যন্ত যে ত্রিভুজাকার অংশ, সেটিই হলো ‘ডেঞ্জার জোন’ বা ‘মৃত্যুর ত্রিভুজ’। এই অঞ্চলের শিরাগুলো ক্যাভারনাস সাইনাস নামের একটি রক্তনালির মাধ্যমে সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত থাকে। ফলে এই অংশে থাকা ব্রণ বা ফুসকুড়ি হাত দিয়ে চেপে ফাটালে সংক্রমণ দ্রুত মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর পরিণতিতে পক্ষাঘাত, খিঁচুনি বা এমনকি জীবনহানির ঝুঁকিও আছে।

একাধিক রোগীর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সময়মতো চিকিৎসা না পেলে সংক্রমণের প্রভাবে মস্তিষ্কের কিছু অংশ স্থায়ীভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গেছে।

বিপদ এড়ানোর উপায়

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, ব্রণ ফাটানোর পরিবর্তে ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে তা শুকিয়ে ফেলাই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।

১. গরম সেঁক: একটি পরিষ্কার তোয়ালে হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে ব্রণের ওপর ১০ মিনিট রাখুন। এতে ভেতরের পুঁজ সহজে বের হবে এবং ব্রণ নিজে থেকেই শুকিয়ে যাবে।

২. টি ট্রি অয়েল: ১ চা চামচ নারিকেল বা জলপাই তেলে ২ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে ব্রণের ওপর লাগান। এটি ব্রণের সংক্রমণ কমায়।

৩. মধু ও অ্যালোভেরা: খাঁটি মধু বা অ্যালোভেরা জেল সরাসরি ব্রণের ওপর ২০ মিনিট রাখলে প্রদাহ কমে এবং ত্বক দ্রুত সেরে ওঠে।

৪. চিকিৎসকের পরামর্শ: যদি ব্রণ বড় আকারের হয় বা বারবার ফিরে আসে, তাহলে অবশ্যই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

ড. অ্যান্থনি ইউন যোগ করেন, “মুখের ব্রণ ফাটানো মানে ঝুঁকি ডেকে আনা। বিশেষ করে দুই ভ্রুর মাঝে বা নাকের চারপাশে ব্রণ খোঁটানো একেবারেই নয়।”

সূত্র : এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, হেলথ লাইন


একটানা চিয়া সিড খাচ্ছেন?অতিরিক্ত খেলে যে ৪টি স্বাস্থ্যঝুঁকি ডেকে আনতে পারে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৫ ১৪:৫৩:২৭
একটানা চিয়া সিড খাচ্ছেন?অতিরিক্ত খেলে যে ৪টি স্বাস্থ্যঝুঁকি ডেকে আনতে পারে
ছবি: সংগৃহীত

ওজন কমানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের বীজ ভেজানো পানি খাওয়া অনেক দিন ধরেই ট্রেন্ডে রয়েছে, যার মধ্যে চিয়া সিড সবার ওপরে। বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন, চিয়া সিড ভেজানো পানি বা এই বীজ খেলে শুধু ওজনই কমে না, এটি শরীর-স্বাস্থ্যের আরও অনেক উপকার করে। কিন্তু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দের এক প্রতিবেদন সতর্ক করেছে যে, একটানা অনেক দিন ধরে চিয়া সিড খাওয়ার অভ্যাস আপনার শরীরে কিছু সমস্যা ডেকে আনতে পারে।

চলুন জেনে নিই অতিরিক্ত চিয়া সিড খাওয়ার কারণে কী কী সমস্যা হতে পারে:

১. পেটের সমস্যা ও বদহজম: একটানা অনেক দিন ধরে চিয়া সিড খেলে মারাত্মকভাবে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই অভ্যাসের ফলে বদহজম এবং গ্যাসের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে শরীর ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতায় ভুগতে পারে এবং হরমোনের ক্ষরণে অসামঞ্জস্য দেখা দিতে পারে।

২. অ্যালার্জির সমস্যা বৃদ্ধি: আপনি যদি এমনিতেই অ্যালার্জিপ্রবণ হয়ে থাকেন, তাহলে চিয়া সিড থেকে মারাত্মকভাবে অ্যালার্জির সমস্যা বাড়তে পারে। এছাড়া, চিয়া সিড খাওয়ার সময় অসাবধান হলে গলায় আটকে বিষম খাওয়ার ঝুঁকিও থাকে।

৩. রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার অসামঞ্জস্য: একটানা অনেক দিন চিয়া সিড খেলে রক্তচাপ (ব্লাড প্রেশার) স্বাভাবিকের থেকে অনেকটা কমে যেতে পারে। এছাড়া, নাগাড়ে চিয়া সিড খাওয়ার অভ্যাস রক্তে শর্করার (ব্লাড সুগার) মাত্রাতেও অসামঞ্জস্য তৈরি করতে পারে। তাই সতর্ক থাকা জরুরি।

৪. অন্ত্রের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য: অনেক দিন ধরে চিয়া সিড খেলে অন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা পেটে অস্বস্তি সৃষ্টি করবে। অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দেখা দিতে পারে, এমনকি তলপেটে ব্যথাও হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

উল্লিখিত সমস্যাগুলো শরীরে দেখা দিলে আপাতত কিছুদিন চিয়া সিড খাওয়ার অভ্যাস বন্ধ রাখুন। চিয়া সিডের প্রচুর ফাইবার থাকায় এটি অনেকক্ষণ পেট ভরে রাখে এবং খাইখাই ভাব কমায়। পুষ্টিগুণ থাকলেও, যেকোনো খাবারই পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।


ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এখন শিশু-কিশোরদেরও ঝুঁকি, নীরব ঘাতক থেকে বাঁচার উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ২১:২২:০৮
ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এখন শিশু-কিশোরদেরও ঝুঁকি, নীরব ঘাতক থেকে বাঁচার উপায়
ছবি: সংগৃহীত

একসময় যা কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের সমস্যা বলে মনে করা হতো, সেই ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বা মেটাবলিক ডিসফাংশন-অ্যাসোসিয়েটেড স্টিটোটিক লিভার ডিজিজ (MASLD)-এ এখন আক্রান্ত হচ্ছে অনেক শিশু-কিশোরও। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, ফাস্টফুড, চিনিযুক্ত পানীয় এবং শারীরিক অনক্রিয়াশীলতা এই রোগকে দ্রুত ছড়িয়ে দিচ্ছে। সময়মতো নিয়ন্ত্রণ না করলে এটি সিরোসিস বা লিভার ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে বলে চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন।

ফ্যাটি লিভার কী এবং কেন হয়?

ফ্যাটি লিভার ডিজিজ হলো লিভারে চর্বি জমে যাওয়া। এটি সাধারণত দুই ধরনের হয়: অ্যালকোহলিক এবং নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD)। অ্যালকোহল পান না করেও লিভারে চর্বি জমলে সেটিই নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ।

যেসব অভ্যাস বাড়ায় ঝুঁকি:

চিনি ও ফাস্টফুড: নিয়মিত চিনিযুক্ত পানীয়, সোডা, ক্যান্ডি, প্যাকেটজাত মিষ্টান্ন খেলে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি ৪০% পর্যন্ত বাড়ে।

প্রক্রিয়াজাত খাবার: পাউরুটি, ময়দার পাস্তা এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার বিপাকের ভারসাম্য নষ্ট করে।

স্থূলতা: অতিরিক্ত তেল ও প্রিজারভেটিভযুক্ত খাবার, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, অতিরিক্ত ওজন ও পেটের মেদ ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়িয়ে লিভারে প্রদাহ সৃষ্টি করে।

অ্যালকোহল ও ধূমপান: সামান্য অ্যালকোহল বা ধূমপানও লিভারের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত করে রোগকে জটিল করে তোলে।

নীরব ঘাতক থেকে বাঁচতে করণীয়

চিকিৎসকদের ভাষায়, ফ্যাটি লিভার ডিজিজ একটি নীরব ঘাতক। তাই উপসর্গ না থাকলেও সচেতন জীবনযাপনই একমাত্র প্রতিরোধ। সুস্থ থাকতে করণীয়:

ব্যায়াম: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন বা ব্যায়াম করুন।

খাদ্যাভ্যাস: চিনিযুক্ত পানীয় ও ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন।

পুষ্টি: পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খেতে অভ্যস্ত হোন।

পরিহার: ধূমপান ও অ্যালকোহল ত্যাগ করুন।

সচেতনতা: নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে লিভারের অবস্থা জেনে নিন।


সিঁড়ি ভাঙতে গেলেই বুক ধড়ফড়? কখন বুঝবেন এটি হৃদরোগের সংকেত?

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৪ ১৫:৩২:৪৯
সিঁড়ি ভাঙতে গেলেই বুক ধড়ফড়? কখন বুঝবেন এটি হৃদরোগের সংকেত?
ছবি: সংগৃহীত

অফিসের লিফট খারাপ বা মেট্রোর সিঁড়ি বন্ধ? দু-চার তলা উঠতেই বুক ধড়ফড় করা বা শ্বাসকষ্ট হওয়াকে অনেকেই ক্লান্তি বা শারীরিক সক্ষমতার অভাব মনে করে এড়িয়ে যান। তবে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এমন বুক ধড়ফড় সব সময় স্বাভাবিক নাও হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এটি গুরুতর হৃদরোগের সংকেত হতে পারে।

সিঁড়ি চড়া হলো এক ধরনের কার্ডিও ব্যায়াম। পায়ের মাংসপেশী বেশি কাজ করলে হৃদযন্ত্রকে দ্রুত রক্ত পাম্প করতে হয়, ফলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। এটি কম শারীরিক সক্ষমতার কারণে হতে পারে, যা সাধারণত স্বাভাবিক।

কখন সতর্ক হওয়া জরুরি?

যদি নিচের উপসর্গগুলো দেখা দেয়, তবে অবহেলা করা চলবে না, কারণ এগুলি বিপদের সংকেত হতে পারে:

১. বুকে ব্যথা বা চাপ: বুকে চিনচিনে অনুভূতি বা চাপ অনুভব করা করোনারি আর্টারি ডিজিজের ইঙ্গিত হতে পারে।

২. তীব্র শ্বাসকষ্ট: সামান্য পরিশ্রমেও শ্বাসকষ্ট হওয়া, যা বিশ্রামের পরেও কমছে না—এটি হৃদরোগ বা ফুসফুসের বড় সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

৩. মাথা ঘোরা বা চোখে অন্ধকার দেখা: মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত রক্ত না পৌঁছালে এমনটা ঘটতে পারে, যা অ্যারিদমিয়া বা অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের লক্ষণ।

৪. অনিয়মিত হৃদস্পন্দন: মাঝে মাঝে হৃদযন্ত্র লাফিয়ে ওঠা বা ছন্দ হারানোর মতো অনুভূতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

৫. বিশ্রামের পরও সমস্যা: সিঁড়ি ভাঙার পর ৫ থেকে ১০ মিনিট বিশ্রামের পরও যদি বুক ধড়ফড় বা শ্বাসকষ্ট না কমে, তবে এটি বিপদের সংকেত।

সম্ভাব্য কারণ ও করণীয়

বুক ধড়ফড় কেবল হৃদরোগের কারণেই হয় না। এর পেছনে রক্তাল্পতা, থাইরয়েড সমস্যা, মানসিক উদ্বেগ বা ফুসফুসের রোগও থাকতে পারে।

যদি সিঁড়ি ভাঙার সময় এই উপসর্গগুলো প্রায়শই দেখা দেয়, দেরি না করে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। চিকিৎসক প্রয়োজন অনুযায়ী ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম, ট্রেডমিল টেস্ট বা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে কারণ নির্ণয় করবেন।

শরীর সব সময় সংকেত পাঠায়। সাধারণ ক্লান্তি ভেবে বড় বিপদকে আমন্ত্রণ না জানাতে বিশেষজ্ঞরা সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: