আলোচনার টেবিলে ভিন্ন দাবি, নির্বাচনের পথে নতুন কোন সংকেত?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ২০:০১:৩৬
আলোচনার টেবিলে ভিন্ন দাবি, নির্বাচনের পথে নতুন কোন সংকেত?
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছেন অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ৭টি রাজনৈতিক দল ও একটি সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর আগে রোববার তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে অন্তর্বর্তী সরকার। বৈঠকগুলোতে শীর্ষ রাজনীতিকদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন সরকার প্রধান।

তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে। নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কেউ যদি নির্বাচনের বিকল্প নিয়ে ভাবে, সেটা হবে জাতির জন্য গভীর বিপজ্জনক। রোববার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির সঙ্গে পৃথক বৈঠকে এই বার্তা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় এ বৈঠক হয়।

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের যে সময় ঘোষণা করেছেন, নির্বাচন সেই সময়ের মধ্যেই হবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা নির্বাচন হবে। বৈঠকগুলোতে জাতীয় পার্টির বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, জাতীয় পার্টির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একেকটি দল একেক ধরনের মতামত দিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা সেটা শুনেছেন।

এসব বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তবে সব বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উপদেষ্টারা সবাই উপস্থিত ছিলেন না।

বিএনপি: নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই

সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রবেশ করে। এক ঘণ্টারও বেশি সময় বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল জানান, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেছেন। বিএনপি আশা রাখে, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচন হবে।

জাতীয় পার্টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান মির্জা ফখরুল। লন্ডনে একটি দলের প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ প্রমাণ করে সরকার একটি দলের ওপর দুর্বল—জামায়াতের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এটি একেবারেই অমূলক দাবি। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার বিষয়ে বিএনপি মতামত দিয়েছে এবং মনে করে এটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ ও উদ্বেগজনক। এটা ভালোভাবে তদন্ত হওয়া দরকার।

মির্জা ফখরুল বলেন, একটি শক্তি নির্বাচনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। তবে নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনের তারিখ হিসেবে যেটা ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সেই তারিখেই নির্বাচন হবে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।

জামায়াত: সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা

জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আযাদ। বিকাল সোয়া ৪টায় জামায়াতের প্রতিনিধি দলটি যমুনায় প্রবেশ করে। ১ ঘণ্টার বৈঠক শেষে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অবাধ নির্বাচন হবে বলেছেন। আমরা তার বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়েছি। কিন্তু কার্যকারিতার বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছি। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। লন্ডনে গিয়ে নির্বাচনের সময় ঘোষণার ঘটনায় নিরপেক্ষতার প্রশ্ন রয়েছে। তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণা সব দলের সঙ্গে আলোচনায় হয়নি। এতে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা হয়নি। নির্বাচনের সময় ঘোষণা মনে হচ্ছে চাপে পড়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট বলে আসছি, আমরা চার্টারের পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই এবং এই চার্টারের ভিত্তিতেই আগামী নির্বাচন হতে হবে। জামায়াত নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসাবে জাতীয় পার্টি কাজ করেছে। আওয়ামী লীগের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জাতীয় পার্টির বিষয়েও একই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছেন তারা। তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে আমরা বলেছি আগে একদল বাসস্ট্যান্ড দখলে নিত, এখন আরেকটি গ্রুপ নিয়েছে। যে সরকার এসব নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না সেই সরকার কীভাবে নির্বাচন করবে আমরা তা নিয়ে শঙ্কিত।

গণপরিষদ নির্বাচন ও জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধ চায় এনসিপি

বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রবেশ করে এনসিপির চার সদস্যের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে ছিলেন মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। ১ ঘণ্টার বৈঠক শেষে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য গণপরিষদ নির্বাচন দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

তিনি বলেন, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সংকট, একক ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব কিংবা কাঠামো দূর করা সম্ভব হবে। তারা আরও বলেন, জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। যেহেতু আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে, তাই জাতীয় পার্টির কার্যক্রমও স্থগিত করার বিষয়ে সরকার আরও বেশি কার্যকর হোক, সে বিষয়টি আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে আমলে নেওয়ার জন্য বলেছি।


আজ থেকে জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ০৯:১০:২৪
আজ থেকে জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু
ছবি : সংগৃহীত

জুলাই আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আজ রোববার ৭ ডিসেম্বর। শহীদদের ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড বা ডিএনএ নমুনা সংগ্রহে আজ থেকেই কাজ শুরু করবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি।

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার লুইস ফন্ডেব্রিডার এবং সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই স্পর্শকাতর কার্যক্রম শুরু হবে। এর আগে গত ২ ডিসেম্বর রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে অজ্ঞাত শহীদদের কবর পরিদর্শন করেছিলেন সিআইডির কর্মকর্তারা এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেন।

সিআইডির ফরেনসিক ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জুলাই আন্দোলনে নিহত অজ্ঞাত শহীদদের মরদেহ উদ্ধারে কবরস্থান এলাকায় বিশেষ তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। সেখানেই কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করার পর প্রক্রিয়াগত সব কাজ সম্পন্ন করা হবে। এই অস্থায়ী তাঁবুতেই ময়নাতদন্ত করা হবে এবং নমুনা সংগ্রহের পর মরদেহ আবার যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাফন করা হবে।

আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ৪ আগস্ট ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদনটি করেছিলেন মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম। আবেদনে উল্লেখ করা হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে জন্ম নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ জীবন দেন যাদের অনেকের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাই ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


নির্বাচন নিয়ে বাইরে পজিটিভ দেখালেও ভেতরে ভেতরে চলছে নেগেটিভ তৎপরতা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ০৮:৪৭:২৮
নির্বাচন নিয়ে বাইরে পজিটিভ দেখালেও ভেতরে ভেতরে চলছে নেগেটিভ তৎপরতা
ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচনের তফসিল নির্ধারণে আজ রোববার ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্ভবত আজকেই নির্বাচনের তফসিল চূড়ান্ত হবে এবং নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করাসহ সার্বিক বিষয় অবহিত করা ও সম্মতির জন্য ইসি আগামী ১০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। রাজনৈতিক দলগুলোও পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারপরও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সংশয় কাটছে না। গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সূত্র মনে করছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বাইরে সবাইকে পজিটিভ দেখালেও ভেতরে ভেতরে নেগেটিভ করার জন্য একটি মহল অত্যন্ত সক্রিয় রয়েছে।

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির এক ডেডলাইনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুটি নির্বাচন। এক জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং দুই রাষ্ট্র সংস্কার ইস্যু নিয়ে গণভোট। সরকারের তরফ থেকে বারবার নিশ্চিত করা হচ্ছে ফেব্রুয়ারিতেই দুই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এ ঘোষণা আসছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী প্রায় সব প্রতিনিধির কাছ থেকেই। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে নির্বাচনের বিষয়ে প্রবল আগ্রহ থাকলেও পরামর্শক অনেকের মধ্যে রয়েছে অনাগ্রহ। প্রথমবারের মতো ক্ষমতার স্বাদ পাওয়া সরকারে থাকা কেউ কেউ ঘুঁটি উল্টাতে চান বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁরা রাষ্ট্র সংস্কার ইস্যুকে সামনে রেখে ক্ষমতার মেয়াদ দীর্ঘায়িত করতে চান। আবার নিজেদের মুখোশের আড়ালে রেখে তারাই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে উঁচু গলায় কথা বলছেন। যত দিন যাবে এই গ্রুপ তত বেশি সক্রিয় হবে বলে জানা গেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কারে আনা হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ। ৩০টি রাজনৈতিক দল ও তাদের জোটের মতামত নিয়ে তৈরি হয়েছে এই সনদ। এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিতর্ক রয়েছে আবার কিছু বিষয়ে ঐকমত্যও তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো গণভোট। উত্তর সহজ প্রশ্ন কঠিন এমন আদলে তৈরি গণভোট কাঠামোয় রায় দিতে হবে জনগণকে। বিষয়টিকে সহজভাবে নিচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁদের বক্তব্য তৃণমূল পর্যায়ের জনসাধারণের কাছ থেকে কঠিন প্রশ্নে সহজ উত্তর পাওয়াটা বাস্তবসম্মত নয়। তাঁদের মতে সরকারের ভেতরে থাকা একটা অংশ মুখে নির্বাচনের ফেনা তুললেও ভেতরে রয়েছে অন্য তৎপরতা। নির্বাচন বানচাল বা নির্বাচন পেছানো তাদের লক্ষ্য এবং এজন্য ব্যবহার হতে পারে গণভোট ইস্যু। মাত্র দুই মাসের মধ্যে গণভোটে দেওয়া চার প্রশ্ন সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করা সম্ভব নয় এমন দাবি রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্টদেরও।

এ অবস্থায় রাজনীতির অন্যরকম মোড়ে অবস্থান করছে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুরুতর অসুস্থতা রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত। শিগগিরই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে লন্ডন নেওয়া হতে পারে। এ পরিস্থিতিকে মূল্যায়ন করে নতুন একটি দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন পেছানোর দাবি জানানো হয়েছে। আবার একই দিনে নির্বাচন পেছাতে আদালতের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় বিএনপি ৩৬টি আসনে তাদের মনোনয়ন ঘোষণা করেছে যা বিএনপির সমমনা দলগুলো ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। তাঁদের মতে আগামী কয়েক দিন দেশের রাজনীতি ও নির্বাচনের ভূত ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে বাংলাদেশে প্রতিটি নির্বাচনের আগে নানা ধরনের ঘোলাটে পরিস্থিতি হতে দেখা যায়। এর সঙ্গে জড়িত থাকে দেশি ও বিদেশি শক্তি। তাঁদের মতে বর্তমান সরকারের মধ্যে একাধিক পাসপোর্টধারী অনেক নাগরিক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো নির্বাচনটা হতে দিতে চান না। এজন্য সব ধরনের তৎপরতার সঙ্গে তারা জড়িত। সর্বশেষ ১৩ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই সংবিধান সংস্কার নিয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা যদি তাঁর সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারেন তাহলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


প্রস্তুতি থাকলেও তফসিল ঘোষণার তারিখ নিয়ে এখনো অন্ধকারে কমিশন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৬ ২০:৩৮:২৪
প্রস্তুতি থাকলেও তফসিল ঘোষণার তারিখ নিয়ে এখনো অন্ধকারে কমিশন
ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি পুরো মাত্রায় থাকলেও তফসিল কবে ঘোষণা হবে সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি নির্বাচন কমিশন বা ইসি। শনিবার ৬ ডিসেম্বর বিকেলে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক কর্মশালায় ইসি সচিব আখতার আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেই পরিকল্পনার আলোকে ডিসেম্বরের প্রথম দিকে তফসিল ঘোষণা করার প্রস্তুতি নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বা সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন এর আগে জানিয়েছিলেন যে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা হতে পারে। তবে শনিবার ইসি সচিব আখতার আহমেদ তফসিল ঘোষণার প্রসঙ্গে বলেন নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত তফসিল ঘোষণার দিন সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করতে পারেনি।

এবারের ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একই সময়ে গণভোটও অনুষ্ঠিত হবে যা নির্বাচনী ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আজ আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে জাতীয় বৈঠক করেছে কমিশন। এতে জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদও উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান সকাল সাড়ে ১১টা থেকে তাঁরা নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে আয়োজিত গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে ছিলেন।

তবে দিনক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও নির্বাচন আয়োজনে ইসি পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে বলে দাবি করেন সচিব। নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন আমি সবাইকে অনুরোধ করি সঠিক তথ্যটা দেন কারণ নিশ্চয়ই নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের জোর প্রস্তুতি চলছে।

ইউএনডিপি ও রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি বা আরএফইডি আয়োজিত এই কর্মশালায় সাংবাদিকদের নিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ ও নির্বাচন কর্মকর্তা আইন ১৯৯১ এর পরিচিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

এর আগে সকালে কর্মশালার পৃথক একটি অধিবেশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে যুক্ত হন নির্বাচন কমিশনার ইসি আব্দুল রহমানেল মাছউদ। তিনি সংবিধান ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন। এছাড়া নির্বাচনী অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট আইন যেমন সিআরপিসি সিপিসি ও অ্যাভিডেন্স অ্যাক্ট সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা এবং জাতীয় সংসদের নির্বাচনসংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তির বিষয়েও তিনি আলোকপাত করেন।


প্রবৃদ্ধির সুফল গরিবের ঘরে পৌঁছাচ্ছে না বরং ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৬ ১১:৫১:৫৪
প্রবৃদ্ধির সুফল গরিবের ঘরে পৌঁছাচ্ছে না বরং ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির গল্প যতটা শোনা যায় দারিদ্র্য হ্রাসের চিত্র ততটা আশাবাদী নয়। একসময় ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা দারিদ্র্যের হার এখন অনেক ধীরগতিতে নেমে আসছে এবং গত চার বছর ধরে উল্টো বাড়ছে দারিদ্র্যের হার। বলা হচ্ছে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও তার সুফল সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের ঘরে পৌঁছাচ্ছে খুব কম। বরং বৈষম্য আরও গভীর হচ্ছে এবং জীবিকা অনিশ্চয়তার বেড়াজালে আটকে যাচ্ছে লাখো পরিবার।

সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায় ২০১০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশের দারিদ্র্য হ্রাসের অগ্রগতি ছিল শক্তিশালী এবং সেই সময়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভোগব্যয়ও বাড়ছিল দ্রুত। কিন্তু ২০১৬ সালের পর প্রবৃদ্ধির কাঠামো বদলে যায়। উচ্চআয়ের পরিবারগুলো বেশি লাভবান হয় এবং নিম্নআয়ের পরিবারগুলোর আয় থমকে পড়ে। ফল হিসেবে ২০১৬ থেকে ২০২২ সময়ে দারিদ্র্য হ্রাসের হার স্পষ্টভাবে কমে গেছে। বর্তমানে দেশে ৩ কোটি মানুষের বেশি দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে। এ ছাড়া ৬ কোটি মানুষ অর্থাৎ জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ যেকোনো বড় বিপর্যয় অসুস্থতা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অর্থনৈতিক আঘাতে আবারও দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পরিসংখ্যান বলছে দেশের প্রতি ১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি দারিদ্র্য কমাচ্ছে মাত্র শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার গড় ১ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধির গতি থাকলেও তা আর দারিদ্র্য মোকাবিলার শক্তিশালী ইঞ্জিন হয়ে কাজ করছে না। রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট বা র‍্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যাপনা বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর মো. আবু ইউসুফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন দারিদ্র্য কমার গতি যা ছিল এখন আর তা নেই। তিনি সতর্ক করে বলেন প্রবৃদ্ধিকে কাগজে দ্রুত দেখানো সহজ কিন্তু তার সুফল দরিদ্র মানুষের আয়ব্যয়ের বাস্তবতায় পৌঁছানোই মূল। বৈষম্য বাড়লে দারিদ্র্য স্থায়ী হয় এবং উন্নয়ন ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। তিনি পরামর্শ দেন যে এখন নীতির লক্ষ্য হতে হবে আয় বাড়ানো কর্মসংস্থান বিস্তৃত করা এবং সামাজিক সুরক্ষায় সঠিক মানুষকে শনাক্ত করা।

প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে যে দারিদ্র্য বৃদ্ধির পেছনে বড় কারণ হলো যথেষ্ট কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়া এবং চাকরি হারানো। ২০২৩ ও ২৪ সালের মধ্যে ২০ লাখ কর্মসংস্থান কম হয়েছে এবং ২০২৫ সালে আরও ৮ লাখ কর্মসংস্থান কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ সময়ে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিসহ সরকারি সহায়তা বিস্তৃত হলেও সুবিধাভোগী শনাক্তকরণের দুর্বলতায় প্রকৃত দরিদ্র পরিবারগুলোর একটি বড় অংশ কাঙ্ক্ষিত সহায়তা পাচ্ছে না।

প্রতিবেদনের হিসাবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি বাংলাদেশের দারিদ্র্য ও আঞ্চলিক বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্য হুমকির মুখে ফেলতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন ২০৫০ সাল নাগাদ ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে এবং কৃষি খাতে জিডিপির প্রায় এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তা নিম্ন আয়ের পরিবারে সরাসরি চাপ সৃষ্টি করছে।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।


নূর হোসেন ও ডা. মিলনের আত্মত্যাগের পর যেভাবে এসেছিল ৯০ এর বিজয়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৬ ১১:৩৪:৩০
নূর হোসেন ও ডা. মিলনের আত্মত্যাগের পর যেভাবে এসেছিল ৯০ এর বিজয়
স্বৈরাচার পতন দিবস আজ

আজ ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৯০ সালের এই দিনে গণঅভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদ পদত্যাগ করে অস্থায়ী সরকারের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তর করেন। আর এর মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে দীর্ঘ ৯ বছরের স্বৈরশাসনের এবং আবারও গণতন্ত্রের পথে হাঁটা শুরু করে দেশ।

এইচ এম এরশাদ এর আগে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সামরিক আইন জারি করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে চলা তার শাসনের বিরুদ্ধে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন বামপন্থী দলের টানা আন্দোলন গড়ে ওঠে। এ আন্দোলনে ডা. শামসুল আলম খান মিলন ও নূর হোসেনসহ অসংখ্য মানুষ জীবন উৎসর্গ করেন।

১৯৯০ সালের ২১ নভেম্বর এরশাদবিরোধী আন্দোলন যখন তীব্র আকার ধারণ করে সে সময় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫ দল এবং বিএনপির নেতৃত্বে সাত দল ও ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাসদের নেতৃত্বে পাঁচটি বামপন্থী দল যৌথভাবে একটি রাজনৈতিক রূপরেখা ঘোষণা করে। যদিও জামায়াতে ইসলামী ওই তিন জোটের বাইরে ছিল তবুও তারা এরশাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়।

স্বৈরশাসকের পতন ঘটলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে তিন জোটের ঘোষিত সেই রূপরেখার পূর্ণ বাস্তবায়ন আর হয়নি। কার্যকর সংসদ ও আইনের শাসন এবং নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও টেকসই গণতন্ত্র এই বিষয়গুলো এখনো অনেকাংশে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন।

এই দিবসটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ভিন্ন ভিন্ন নামে পালন করে থাকে। বিএনপি দিনটিকে স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস নামে পালন করে থাকে। দিবসটি উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি বলেন গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ নয় বছর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে আপসহীন নেত্রী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি গড়ে তোলেন এক দুর্বার গণআন্দোলন। এরই ধারাবাহিকতায় ৯০ এর ৬ ডিসেম্বর এই দিনে ছাত্র জনতার মিলিত শক্তিতে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে মুক্ত হয়েছিল গণতন্ত্র।


ক্যাম্পের বন্দি জীবন থেকে মুক্তি পেতে সাগরে ভাসছে রোহিঙ্গাদের স্বপ্ন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৬ ০৮:৪১:০৬
ক্যাম্পের বন্দি জীবন থেকে মুক্তি পেতে সাগরে ভাসছে রোহিঙ্গাদের স্বপ্ন
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘায়িত হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প জীবন এবং সব বয়সী রোহিঙ্গারা ক্যাম্পের বন্দি ও অমানবিক জীবনে প্রত্যাবাসনের অনিশ্চয়তার চরম হতাশায় ভুগছে। নিজভূমে তো বটেই সেটি যদি সম্ভব না হয় তাহলে উন্নত দেশে পুনর্বাসনের আশায় যেতে চায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা। নিজভূমি থেকে পালিয়ে আসার পর নিরাপদ প্রত্যাবাসন এখনো অমীমাংসিত তাই নিরুপায় হয়ে এই বেঁচে থাকা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে। কবে তারা নিজভূমে ফিরে যেতে পারবে এ প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারছে না।

ক্যাম্পে নিজ ভাষায় পড়াশোনা অথবা জীবন জীবিকার নানা আয়োজন আছে তবুও সেটা বন্দি জীবনের মতোই। নিজভূমে ফেরা যখন অনিশ্চিত তখন অন্যের দানে চলা জীবন নিজভূমে না হোক তারা যেতে চায় পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে। এমন চাওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অনেকের মাঝেই দেখা যায়। বৈধ বা অবৈধ যে পথেই হোক তারা যেতে চান উন্নত বিশ্বের যে কোনো দেশে। এ কারণে মাঝে মধ্যে সাগরপথে তারা পাড়ি জমায় মালয়েশিয়া অথবা ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশ্যে। পাচারকারী সিন্ডিকেটের খপ্পড়ে পড়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় উত্তাল সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে জীবন হারাতে হচ্ছে অনেককে।

কানাডা ও নিউজিল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি উন্নত দেশে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৮৯৭ জন রোহিঙ্গা পুনর্বাসিত হয়েছে। তবে রাখাইনে নিরাপদ প্রত্যাবাসন শুরু হলে এদের অনেকেই ফিরতে চান নিজ বাসভূমি মিয়ানমারে। কানাডায় পুনর্বাসিত রোহিঙ্গা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন এখন যদি শান্তিপূর্ণভাবে আরাকানে চলে যেতে পারে তবে সবাই চলে যাবে এবং আমরাও চলে যাব আরাকানে। বছরে ১ ভাগও পুনর্বাসনের সুযোগ পায়নি এমন অনেকে এখনো ক্যাম্পে দিন কাটাচ্ছে।

কক্সবাজারের উখিয়ার ১৮ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ হারেজ প্রাণ বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট ৪ সন্তান নিয়ে আশ্রয় নেন বাংলাদেশে। ক্যাম্পে মানবেতর দিন কাটালেও মিয়ানমারে তিনি ছিলেন রাজার হালে। জমি জমা তো বটেই ছিল গোয়াল ভরা গরু মহিষ ও ছাগলও। হারেজ এখন ফিরতে চান হারিয়ে আসা সেই জীবনে এবং চান নিজ ভিটায় ফিরতে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন বাচ্চারা খেলবে এরকম একটা মাঠ নেই এবং ভালো একটা রাস্তা পর্যন্ত নেই কোথাও। ক্যাম্পের জীবন আমাদের একটুও ভালো লাগে না। নিজ দেশে আমাদের বড় বড় জায়গা ছিল ও ঘরবাড়ি ছিল আর ছোট একটা ঝুপড়ি ঘরে আমাদের থাকতে হচ্ছে এখানে। গ্রীষ্মকালে গরমের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে যাই আবার বর্ষাকালে ঘরের ভেতর পানি ঢুকে যায়। তিনি আরও বলেন আমরা আমাদের দেশে ফিরে যেতে চাই কারণ শরণার্থী হয়ে এই বাংলাদেশে আমরা আর থাকতে চাই না। এই দেশে অন্য কোথাও গিয়ে কাজ করে আয় করার সুযোগও আমাদের নেই এবং সরকারি সহায়তা নিয়ে আমাদের জীবন যাপন করতে হচ্ছে।

কক্সবাজারের উখিয়ার ২০ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক মেম্বার মোহাম্মদ জোহার বলেন আমাদের যদি শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের ভূমিতে পুনর্বাসন করে তবে আমরা চলে যাব। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় বলছে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে শরণার্থীরা তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসিত হয়েছে তবে সে সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান বলেন আমাদের ১২ মিলিয়ন বা ১২ লাখ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। তাদেরকে আগে তাদের নিজভূম আরাকানে ফেরত নিতে হবে এবং এটাই আমরা চেষ্টা করছি। তবে উন্নত জীবনের আশায় বৈধ বা অবৈধ পথে কিছু রোহিঙ্গা বিভিন্ন দেশে চলে গেছে। তিনি মন্তব্য করেন যে এটা করা হলে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনকে নিরুৎসাহিত করা হবে। আমরা চাই ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের নিজভূমে পুনর্বাসিত করা হোক। উল্লেখ্য প্রায় ১৪ লাখের মতো রোহিঙ্গা বসবাস করছে কক্সবাজারের ৩৩টি ক্যাম্পে এবং প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন অনিশ্চয়তায় মাঝে মাঝেই অবৈধ পথে পালানোর সময় সলিল সমাধি হয়ে খবরে শিরোনাম হন রোহিঙ্গারা।


মানবিক সংকটে স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকাই জাতিকে এগিয়ে নেয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৫ ১৪:৫৬:০০
মানবিক সংকটে স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকাই জাতিকে এগিয়ে নেয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নারায়ণগঞ্জে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি : কালবেলা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী অব. বলেছেন দেশের দুর্যোগ মোকাবিলা দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও মানবিক সংকটসমূহে স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকাই জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচলের ফায়ার সার্ভিস মাল্টিপারপাস ট্রেনিং গ্রাউন্ডে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তরুণ প্রজন্মকে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে আরও বেশি উৎসাহিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন তরুণদের এই মহান কাজে সম্পৃক্ত করতে হলে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। তিনি মনে করেন স্বেচ্ছাসেবকদের নিঃস্বার্থ শ্রম ও ত্যাগই বিপদের সময় মানুষের সবচেয়ে বড় ভরসা হয়ে ওঠে।

দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মাঠ পর্যায়ে তাদের কার্যক্রম প্রদর্শন করে এবং প্রশিক্ষণভিত্তিক চমৎকার মহড়া উপস্থাপন করে যা উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক অংশগ্রহণ করেন। আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবার মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানবিক কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।


সব সংস্কার সম্ভব নয় তাই নির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা দিয়েই বিদায় নিতে চায় সরকার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৫ ১৪:৩১:৫৯
সব সংস্কার সম্ভব নয় তাই নির্বাচিতদের হাতে ক্ষমতা দিয়েই বিদায় নিতে চায় সরকার
ছবি : সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে ভারত এখন পর্যন্ত ইতিবাচক সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর সকালে রংপুর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন আমরা তাকে চেয়েছি যেহেতু তিনি কনভিক্টেড এবং সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাকে শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ইতিবাচক কোনো সাড়া আমরা পাইনি। তিনি মন্তব্য করেন এটা নিয়ে অনুমান বা স্পেকুলেট না করাই ভালো বরং দেখা যাক কী হয়। তিনি আরও জানান এ ধরনের ঘটনায় ঝট করে এক দিনে বা সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না তাই আমরা অপেক্ষা করব এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষ থেকে কী প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় তা দেখব।

তারেক রহমানের দেশে আসার বিষয়ে তিনি বলেন তারেক সাহেব কখন আসবেন সে সম্পর্কে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই তবে উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন। খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রা প্রসঙ্গে তিনি জানান এয়ারক্রাফট নিয়ে একটু টেকনিক্যাল সমস্যা দেখা দেওয়ায় বেগম জিয়াকে আজ নেওয়া হচ্ছে না এবং সেক্ষেত্রে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে।

রংপুর সফরের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন আমার আসার উদ্দেশ্যের সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতির কোনো সম্পর্ক নেই বরং আমরা চেষ্টা করেছি বিশেষ করে উত্তরবঙ্গকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়। তিনি জানান চাইনিজ সহায়তায় নীলফামারী জেলায় ১ হাজার বেডের হাসপাতাল হবে। এমনভাবে প্ল্যান করা হয়েছে যে শুধু নীলফামারী না এমনও চিন্তা করা হচ্ছে যে ক্ষেত্রবিশেষে আশপাশের দেশগুলো বিশেষ করে ভারত ও ভুটান থেকেও যেন মানুষ চিকিৎসা নিতে আসতে পারে। এছাড়া ব্যবসা বাণিজ্য বাড়ানো এবং যুবকদের কর্মসংস্থান নিয়ে সবচেয়ে বেশি চেষ্টা চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ ও সংস্কার প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন অনেকে আশা করছিলেন যে আমরা সব রিফর্ম বা সংস্কার করে দিয়ে যাব কিন্তু সেটা আসলে সম্ভব নয়। আমরা শুরু করে দিয়ে যাব এবং বাকিটা নির্বাচিতরা জনগণের কাছে আসবে ও ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাবে। আমরা চেষ্টা করছি খুব সঠিকভাবে নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিতদের হাতে দেশের ভার দিয়ে দায়িত্ব থেকে অবসর নিতে।

আরাকান আর্মি কর্তৃক বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন এ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্ভব নয় কারণ তারা নন স্টেট বা রাষ্ট্রহীন শক্তি। মিয়ানমারের সঙ্গে যেমন আলোচনা করতে পারি তাদের সঙ্গে তেমন করতে পারি না। তবে যেহেতু আমাদের স্বার্থ আছে সেহেতু আমাদের বিষয়টি দেখতে হবে এবং এই ঘটনা যাতে কমে বা না ঘটে এর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

চার দিনের সফরে রংপুরে এসে শুক্রবার তিনি রংপুর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করছেন। শনিবার সকালে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং বিকেলে রংপুর ক্যাডেট কলেজ পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। পরদিন রবিবার দুপুরে তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন এবং বিকেলে সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।


জনবান্ধব পুলিশ গড়তে উপদেষ্টা পরিষদের বড় সিদ্ধান্ত

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৪ ২০:০৬:১৬
জনবান্ধব পুলিশ গড়তে উপদেষ্টা পরিষদের বড় সিদ্ধান্ত
ছবি : সংগৃহীত

পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই গুরুত্বপূর্ণ অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এদিন বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

রিজওয়ানা হাসান জানান পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি পুলিশ কমিশন গঠন করার অধ্যাদেশটি পাস করা হয়েছে। এই কমিশনের প্রধান থাকবেন বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক। সদস্যদের যোগ্যতার বিষয়ে তিনি জানান জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজ করেছেন এমন গ্রেড ওয়ানের নিচে নন এমন কোনো সরকারি কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক গ্রেড ওয়ানের নিচে নন এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমিশনের সদস্য হবেন। এছাড়া কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক যিনি কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে কাজ করেছেন এমন অন্তত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি এই কমিশনের সদস্য হিসেবে থাকবেন।

এই পুলিশ কমিশন গঠনের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন পুলিশকে জনবান্ধব ও জনমুখী করাই এর লক্ষ্য। এই কমিশন সরকারের সঙ্গে মিলে কাজ করবে এবং পুলিশ যেন প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারে সেই ব্যাপারে কী কী করণীয় সে বিষয়ে সরকারকে সুপারিশ প্রদান করবে। পুলিশ যাতে মানবাধিকার সংবেদনশীল হয় এবং পুলিশের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার বা কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার সেগুলো তারা চিহ্নিত করবে।

কমিশনের কার্যপরিধি সম্পর্কে তিনি আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের কথা উল্লেখ করেন। প্রথমত নাগরিকদের যে অভিযোগগুলো থাকবে পুলিশের ব্যাপারে সেগুলোর তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা। দ্বিতীয়ত পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে সেগুলোরও নিষ্পত্তি করা হবে। রিজওয়ানা হাসান বলেন এটাই হচ্ছে পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের মূল ফিচার। কমিশনের নির্ধারিত কাজের মধ্যে আরও রয়েছে পুলিশ কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনয়ন এবং শৃঙ্খলা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা। এছাড়া পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি তথ্য প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ ও কল্যাণমূলক ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে সরকারকে সুপারিশ দেওয়া এবং পুলিশ সংক্রান্ত আইন গবেষণা করাও এই কমিশনের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত