মঙ্গল গ্রহ নিয়ে গবেষণায় নতুন চমকপ্রদ তথ্য!

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৭ ১০:৩৭:১২
মঙ্গল গ্রহ নিয়ে গবেষণায় নতুন চমকপ্রদ তথ্য!

মঙ্গল গ্রহ নিয়ে মানবজাতির কৌতূহল প্রাচীন হলেও, বিজ্ঞানসম্মত অনুসন্ধানের গতি গত কয়েক দশকে বহুগুণে বেড়েছে। নানা মহাকাশ অভিযানের মাধ্যমে মানুষ জানতে পেরেছে পৃথিবীর মতোই এই গ্রহের পৃষ্ঠে ছিল নদী, হ্রদ, এমনকি বিস্তৃত পানি প্রবাহের সম্ভাবনাও। কিন্তু তারপর হঠাৎ কী ঘটল? কেন শুকিয়ে গেল মঙ্গলের জলাধার, থেমে গেল সম্ভাব্য প্রাণের ইতিহাস? এসব প্রশ্নের খোঁজে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার রোভারগুলো।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায়, যার নেতৃত্ব দিয়েছেন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিজ্ঞানী ও নাসার কিউরিয়োসিটি দলের সদস্য এডউইন কাইট, নতুন করে আলোচনায় এসেছে মঙ্গলের অতীতে ‘স্বল্পমেয়াদি বাসযোগ্য সময়’ থাকার তত্ত্ব। এই গবেষণার ফলাফল চলতি মাসে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী Nature-এ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় মূল ভূমিকা রেখেছে নাসার ‘কিউরিয়োসিটি’ রোভার, যা মঙ্গলের গেইল ক্র্যাটারে অবতরণ করে বহু বছর ধরে পাথর, মাটি এবং জলবায়ুসংক্রান্ত উপাত্ত পাঠিয়ে আসছে।

মঙ্গলে ‘কার্বনেট শিলা’র সন্ধান: কী এর তাৎপর্য?

গবেষণায় পাওয়া গেছে, মঙ্গলের পৃষ্ঠে বিস্তৃতভাবে রয়েছে কার্বনেট জাতীয় শিলা। পৃথিবীতে এসব খনিজ যেমন চুনাপাথর, তা বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে ভূস্তরে ধরে রাখে। অর্থাৎ, এরা আবহাওয়ার পরিবর্তনের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং দীর্ঘমেয়াদে গ্রহের উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

কাইটের মতে, “পৃথিবীতে বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইড কার্বনেট শিলায় আটকে যাওয়ার পর অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে আবার ফিরে আসে বায়ুমণ্ডলে এই চক্রটাই পৃথিবীতে দীর্ঘকাল ধরে জলবায়ু ও প্রাণের জন্য অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখতে সাহায্য করেছে। কিন্তু মঙ্গলে এমন কোন কার্যকর পুনর্ব্যবহার হয়নি।”

এ কারণেই বিজ্ঞানীদের ধারণা, মঙ্গলে অল্প সময়ের জন্য হয়তো পানি প্রবাহ ছিল এবং সেই সময়টুকুতে সৃষ্টি হয়েছিল কিছুটা প্রাণবান্ধব পরিস্থিতি। কিন্তু চক্রটি ব্যাহত হওয়ায়, ধীরে ধীরে মঙ্গল পরিণত হয় শুষ্ক, ঠান্ডা ও অনুর্বর এক মরুভূমিতে।

পুরনো নদী ও হ্রদের চিহ্ন, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী বাসযোগ্যতা নেই

রোভারগুলোর পাঠানো ছবি ও স্যাটেলাইট ডেটায় মঙ্গলের ভূপ্রকৃতিতে স্পষ্ট নদীখাত, হ্রদের খাত এবং ভূমিক্ষয় দেখা যায়। ফলে অনেক আগে মঙ্গলে জল প্রবাহ ছিল, এই দাবিকে সমর্থন করছে ভূতাত্ত্বিক প্রমাণ। ২০২১ সালে নাসার পার্সিভারেন্স রোভারও জেজেরো ক্র্যাটারে এমন একটি ‘শুকিয়ে যাওয়া হ্রদের’ কিনারায় কার্বনেট খনিজের প্রমাণ পেয়েছিল।

তবে কাইট ও তাঁর দল বলছেন, এসব জলপ্রবাহ ছিল “ব্যতিক্রম” স্বল্পমেয়াদি, সীমিত পরিসরে এবং হয়তো নির্দিষ্ট ভূখণ্ডেই সীমাবদ্ধ। সেটি বৃহৎ মাত্রার কোনো বাসযোগ্য যুগ নয়।

কেন মঙ্গল এখন বাসযোগ্য নয়?

পৃথিবীর ভূবিজ্ঞানে যেমন বলা হয় কার্বন সঞ্চালন ও পুনঃবিকিরণ হলো এক সুস্থ জলবায়ুর পূর্বশর্ত, তেমনি মঙ্গলের কার্বনচক্রে ছিল ভারসাম্যের ঘাটতি। কারণ, মঙ্গলে ভূ-আভ্যন্তর থেকে কার্বন পুনরায় মুক্ত করে দেওয়ার মতো সক্রিয় অগ্ন্যুৎপাত বা প্লেট টেকটনিকস ছিল না। ফলে একবার যদি কার্বন আটকে যায়, সেটি আর ফিরে আসে না। এই দীর্ঘমেয়াদি শীতলতার ফলেই বায়ুমণ্ডল দুর্বল হয়ে পড়ে, পানি বাষ্পীভূত হয় বা হিমায়িত হয়, এবং মঙ্গল হয় ক্রমশ অনুপযোগী।

কাইটের ভাষায়, “যদি আমাদের ধারণা ঠিক হয়, তবে মঙ্গলগ্রহ কয়েক কোটি বছর আগে একটি ছোট সময়ের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ পায় তবে তা খুব দ্রুত বিলুপ্ত হয় এবং অন্তত ১০ কোটি বছর ধরে সে এক শীতল মরুভূমিতেই রূপ নেয়।”

গভীর ভূস্তরে এখনও জল?

গবেষণা থেকে এই ধারণাও উঠে এসেছে যে, মঙ্গলের ভূপৃষ্ঠের নিচে হয়তো এখনও বরফ বা তরল অবস্থায় পানি থাকতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত এমন কোনো নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ভূগর্ভস্থ পানির উপস্থিতি পাওয়া গেলে, প্রাণের সম্ভাবনা নিয়ে জোরালো জবাব পাওয়া যেতে পারে।

সামনে কী করণীয়?

বিজ্ঞানীরা এখন চেষ্টা করছেন মঙ্গলের পৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীতে সরাসরি পাথরের নমুনা পাঠানোর, যার মাধ্যমে এই শিলায় বন্দি কার্বনের রূপ বিশ্লেষণ করে আরও সুনির্দিষ্ট উপসংহারে পৌঁছানো যাবে। বর্তমানে নাসা ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ESA) যৌথভাবে এই ‘স্যাম্পল রিটার্ন মিশন’ পরিকল্পনা করছে।

এই গবেষণা একটি বিষয় স্পষ্ট করেছে: মঙ্গল একসময় আংশিকভাবে বাসযোগ্য হতে পারত, কিন্তু সেই সম্ভাবনা ছিল হঠাৎ উদয় হওয়া, সংক্ষিপ্ত এবং অসম্পূর্ণ। তবুও, কার্বনেট শিলার মতো খনিজ ও ভূতাত্ত্বিক তথ্য মানবজাতিকে গ্রহটির জলবায়ু ও সম্ভাব্য প্রাণের ইতিহাসের একটি জটিল কিন্তু উত্তেজনাপূর্ণ চিত্র উপস্থাপন করছে।


স্মার্টফোন বাজারে Google-এর নতুন সংযোজন: Pixel-10

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২০ ১৯:৩৬:২৩
স্মার্টফোন বাজারে Google-এর নতুন সংযোজন: Pixel-10
পিক্সেল-১০ স্মার্টফোন। ছবি: গুগল

Google Pixel-এর নতুন সংস্করণ উন্মোচন হচ্ছে আজ বুধবার (২০ আগস্ট)। গুগলের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে গত কয়েকদিন ধরেই নতুন সংস্করণ উন্মোচনের প্রচার চলছে। প্রাথমিকভাবে বাজারে আসবে Pixel-10, এবং পরে এই সিরিজের আরও কয়েকটি ধরন বা ভ্যারিয়েন্ট বাজারে আসবে।

Google জানিয়েছে, নিউ ইয়র্কে স্থানীয় সময় বুধবার ‘মেড বাই গুগল’ ইভেন্টে এই ফোন গ্রাহকদের সামনে তুলে ধরা হবে। ভারতের বাজারে এটি পাওয়া যাবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে। তবে বাংলাদেশে Pixel ফোনের অনুমোদিত কোনো বিক্রয়কেন্দ্র নেই।

প্রযুক্তির তথ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট দ্য ভার্জ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছর Pixel-10-এর আরও তিনটি ধরন বাজারে আসতে পারে: Pixel-10 Pro, Pixel-10 Pro XL এবং Pixel-10 Pro Fold।

সব মডেলই গুগলের নতুন Tensor G-5 চিপসেট দ্বারা পরিচালিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই চিপের সঙ্গে একটি কাস্টম ইমেজ সিগন্যাল প্রসেসর (আইএসপি) যুক্ত থাকতে পারে, যা ছবি ও ভিডিওর মান আরও উন্নত করবে।

Hinduistan Times জানিয়েছে, ভারতের বাজারে Pixel-10-এর দাম ৭৫ হাজার থেকে ৮০ হাজার রুপির মধ্যে থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে ১২৮ জিবি স্টোরেজের দাম ৭৯৯ এবং ২৫৬ জিবির দাম ৮৯৯ মার্কিন ডলার হতে পারে।

/আশিক


ব্যাটারির আয়ু বাঁচাতে এই বিষয়গুলো জানা জরুরি

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৯ ২১:২৯:০৮
ব্যাটারির আয়ু বাঁচাতে এই বিষয়গুলো জানা জরুরি
ছবি: সংগৃহীত

স্মার্টফোন এখন সবার হাতেই। ফোনে কথা বলা, কাজ করা, ছবি তোলা থেকে শুরু করে গান শোনা- সবই নির্ভর করে ব্যাটারির ওপর। আর সেই ব্যাটারি সচল রাখতে চার্জারের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু ব্যস্ত জীবনে অনেক সময় আমরা ফোনের সঙ্গে পাওয়া চার্জারটি ব্যবহার না করে অন্য চার্জার দিয়ে ফোন চার্জ করি। অনেক সময় কেউ বাইরে গেলে চার্জার নিতে ভুলে যান, তখন অন্যের চার্জার খুঁজে নেন তারা। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন, এতে সুবিধার চেয়ে ক্ষতিই বেশি হচ্ছে না তো?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিটি কোম্পানি তাদের স্মার্টফোনের ব্যাটারির ক্ষমতা ও চার্জিং সিস্টেম অনুযায়ী আলাদা চার্জার বানায়। আর এখন বেশিরভাগ ফোনেই টাইপ-সি (Type-C) চার্জার ব্যবহার হচ্ছে এবং অনেক চার্জারই ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে। তবে এর মানে এই নয় যে, যে কোনো চার্জার দিয়েই ফোন নিরাপদে চার্জ করা যাবে।

ধরুন আপনার ফোন ২০ ওয়াট চার্জিং সাপোর্ট করে। কিন্তু আপনি যদি ৬৫ ওয়াট বা ১২০ ওয়াটের চার্জার ব্যবহার করেন, ফোন সেটিকে ২০ ওয়াটেই সীমাবদ্ধ রাখবে। কিন্তু বারবার অসামঞ্জস্যপূর্ণ চার্জার ব্যবহারের ফলে ব্যাটারির আয়ু দ্রুত কমে যায়। আবার অন্য চার্জার দিয়ে ফোন চার্জ করলে দেখা যায়, ফোন ধীরে ধীরে চার্জ হচ্ছে। এর কারণ হলো, চার্জারটির পাওয়ার আউটপুট আপনার ফোনের সঙ্গে মেলে না।

শুধু তাই নয়, অনেকেই আসল চার্জার নষ্ট হয়ে গেলে সস্তা ও অচেনা ব্র্যান্ডের চার্জার কিনে নেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলো আরও বেশি বিপজ্জনক। এগুলো শুধু ব্যাটারিই নয়, পুরো ফোনকেই নষ্ট করে দিতে পারে। এমনকি অতিরিক্ত গরম হয়ে বিস্ফোরণের ঝুঁকিও তৈরি হয়।

তাই খুব প্রয়োজন না হলে অন্য চার্জার দিয়ে ফোন চার্জ করা একেবারেই উচিত নয়। আর যদি চার্জার কিনতেই হয়, অবশ্যই কোম্পানির আসল চার্জার ব্যবহার করাই সবচেয়ে নিরাপদ।

সূত্র : টিভি নাইন বাংলা


স্মার্টফোনে চার্জিং বিপ্লব: ১০ মিনিটেই ফুল চার্জ হচ্ছে ব্যাটারি

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ১১:০৩:১৭
স্মার্টফোনে চার্জিং বিপ্লব: ১০ মিনিটেই ফুল চার্জ হচ্ছে ব্যাটারি
ছবি: সংগৃহীত

স্মার্টফোনের ব্যাটারি চার্জিং প্রযুক্তিতে এক নতুন বিপ্লব এসেছে, যা এখন মাত্র ১০ মিনিটে সম্পূর্ণ ব্যাটারি চার্জ করতে সক্ষম। এই উদ্ভাবন ব্যবহারকারীদের জন্য এক নতুন সুবিধা নিয়ে এসেছে, যেখানে ফোনের ব্যাটারি ফুরিয়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমে গেছে।

প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে এখন অনেক স্মার্টফোনই ১০ মিনিটে ৫০% পর্যন্ত চার্জ করতে পারে। এর মধ্যেই iQOO 10 Pro তার ২০০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং দিয়ে ১০ মিনিটে সম্পূর্ণ চার্জের সুবিধা নিয়ে এসেছে। আরও এক ধাপ এগিয়ে Realme এমন একটি ৩২০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তি তৈরি করেছে, যা মাত্র ৪.৫ মিনিটে ফোন সম্পূর্ণ চার্জ করতে পারে। এই প্রযুক্তিতে 'AirGap' ভোল্টেজ ট্রান্সফর্মারের মতো উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকায় ওভারহিটিং-এর ঝুঁকিও কম। এছাড়া Nyobolt নামের একটি কোম্পানি ৬ থেকে ১০ মিনিটে চার্জ করার মতো 'আলট্রা ব্যাটারি' প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।

এই দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তির কারণে ব্যবহারকারীরা খুব অল্প সময়ে তাদের ফোন চার্জ করে নিতে পারছেন, যা দৈনন্দিন জীবনে কর্মব্যস্ততার মাঝে খুবই সহায়ক।

তবে দ্রুত চার্জিং-এর সময় ফোনের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা ব্যাটারির আয়ু কমাতে পারে। তাই চার্জ দেওয়ার সময় ফোনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং কভার খুলে রাখা ভালো।


ভোটের মাঠে এআই দিয়ে অপপ্রচার, ইসি কি পারবে তা ঠেকাতে?

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৩ ১৯:৪৭:২৪
ভোটের মাঠে এআই দিয়ে অপপ্রচার, ইসি কি পারবে তা ঠেকাতে?
প্রতীকী ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বানানো।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ (আরপিও)-এর সংশোধনী চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই সংশোধনীতে ইসির হারানো ক্ষমতা ফিরছে বলে দাবি করা হচ্ছে। পুরো আসনের ফল বাতিলের ক্ষমতা পুনর্বহালসহ নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে ‘না ভোট’ এর বিধান। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হলো, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান যুক্ত করা। তবে, এই বিধান কীভাবে প্রয়োগ করবে ইসি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আরপিও হলো নির্বাচন পরিচালনার মূল আইন, যা কমিশনকে নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষার ক্ষমতা দেয়। গত বছর অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় এআই সংক্রান্ত কোনো বিধান ছিল না। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী দুই বছরে প্রায় তিনশ কোটি মানুষ ভোট দেবে এবং এই সময়ে ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য একটি গুরুতর বৈশ্বিক ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

ইসির নতুন বিধান ও চ্যালেঞ্জ

গত রোববার নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, এআই ব্যবহার করে অপপ্রচার, মিথ্যাচার বা অপবাদ ছড়ালে প্রার্থী, রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান বা গণমাধ্যম—সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। তবে এর প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

ইসি সানাউল্লাহ বলেন, এআইয়ের অপব্যবহার ঠেকানোর জন্য একটি কমিটি গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। তিনি জানান, প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো ব্যান্ডউইথ না কমিয়ে বা কোনো ধরনের সেবার বিঘ্ন না ঘটিয়ে নির্বাচন আয়োজন করা। একান্ত বাধ্য না হলে কোনো প্ল্যাটফর্মকে সীমিত করার ইচ্ছা কমিশনের নেই।

বিশ্লেষকদের মতামত

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য এবং ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি বলেন, ইসির নিজস্ব কোনো সাইবার সিকিউরিটি সেল নেই। অপতথ্য রোধে ফ্যাক্ট চেকিং ও মনিটরিং সেলের দরকার হতে পারে। তিনি মনে করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ালে তা ঠেকানোর দায়িত্ব ইসির।

বিশ্বজুড়ে এআই-নির্ভর অপপ্রচার

প্রতিবেদনে বিশ্বজুড়ে এআই-নির্ভর প্রচারণার বেশ কিছু উদাহরণ তুলে ধরা হয়:

স্লোভাকিয়া: ২০২৩ সালের নির্বাচনের আগে এআই-দিয়ে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও ভাইরাল হয়।

যুক্তরাষ্ট্র: জো বাইডেনের কণ্ঠের মতো একটি এআই-সৃষ্ট অডিওতে ভোটারদের ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

পাকিস্তান: কারাবন্দি ইমরান খান তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও ব্যবহার করেন।

বেলারুশ: একজন প্রার্থীর নামে প্রচার চালানো হয়, পরে জানা যায় ওই প্রার্থী আসলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি চ্যাটবট।

এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্রেনান সেন্টার ফর জাস্টিস-এর পরামর্শ হলো, নীতি-নির্ধারকদের অবশ্যই এই নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে একই সঙ্গে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায়ও গুরুত্ব দিতে হবে।


ঘণ্টায় প্রায় ১০০ উল্কা পড়ার মহাজাগতিক দৃশ্য বাংলাদেশ থেকে দেখার সুযোগ

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১০ ১৮:২৭:১৫
ঘণ্টায় প্রায় ১০০ উল্কা পড়ার মহাজাগতিক দৃশ্য বাংলাদেশ থেকে দেখার সুযোগ
ছবি: সংগৃহীত

প্রতি বছর আকাশপ্রেমীদের জন্য অপেক্ষিত এক মহাজাগতিক প্রদর্শনী ‘পার্সাইড’ উল্কাবৃষ্টি এবারও আগামীর ১২ ও ১৩ আগস্ট রাতে আকাশজুড়ে উজ্জ্বল উল্কাপাতের দৃশ্য উপহার দিতে যাচ্ছে। যদিও পূর্ণিমার কাছাকাছি চাঁদের আলো কিছুটা ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে, তবু উজ্জ্বল উল্কাগুলো স্পষ্টভাবেই আকাশে দেখা যাবে।

পার্সাইড উল্কাবৃষ্টি হলো বছরের অন্যতম উজ্জ্বল এবং জনপ্রিয় উল্কাবৃষ্টি, যার সময় প্রতি ঘণ্টায় ৫০ থেকে ১০০টি উল্কাপাত ঘটে। এসব উল্কাকে ‘মিটিওর’ বলা হয়, যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে জ্বলে ওঠে এবং আকাশে আগুনের রেখার মতো ছড়িয়ে পড়ে। বড় ও উজ্জ্বল উল্কাগুলোকে ‘ফায়ারবল’ নামে অভিহিত করা হয়, যা এক অনন্য রোমাঞ্চকর দৃশ্য তৈরি করে।

গত বছর উল্কাবৃষ্টির সময় চাঁদের আলো না থাকায় উল্কাগুলো অনেক বেশি স্পষ্ট ছিল। তবে এবারের পার্সাইড উল্কাবৃষ্টিতে চাঁদের আলো থাকায় কিছুটা ম্লান লাগতে পারে। তারপরও পার্সাইডের উল্কাগুলো এতটাই উজ্জ্বল যে তারা চাঁদের আলোয়ও সহজেই দৃশ্যমান হবে।

এই উল্কাবৃষ্টি শুরু হয়েছে ১৭ জুলাই থেকে এবং চলবে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত। সর্বোচ্চ উল্কাপাত দেখা যাবে ১২ ও ১৩ আগস্ট রাতের মধ্যে, কারণ তখন পৃথিবী কমেট ১০৯পি/সুইফট-টাটলের ফেলে দেওয়া বরফ ও ধুলোর স্তরের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করবে। এই ধূমকেতু ১৩৩ বছর পরপর সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে; সর্বশেষ ১৯৯২ সালে পৃথিবীর কাছে এসেছিল।

পার্সাইড নামকরণ করা হয়েছে কারণ উল্কাগুলো আকাশের পার্সিয়াস নক্ষত্রমণ্ডল থেকে আসার মতো মনে হয়। ভালোভাবে উল্কাবৃষ্টি উপভোগ করতে হলে শহরের আলো থেকে দূরে, খোলা আকাশের নিচে থাকা প্রয়োজন। বিশেষ করে রাত ১০টা থেকে ভোররাত পর্যন্ত সময়টি উপযোগী, যখন চাঁদ কিছুটা নিচে নামে এবং উজ্জ্বল উল্কাগুলো পরিষ্কার দেখা যায়। চোখ অন্ধকারে অভ্যস্ত করতে কমপক্ষে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করলে উল্কাগুলো আরও স্পষ্ট দেখা যাবে।

আকাশে উল্কাদের ঝলকানি দেখা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা যা স্মৃতিতে চিরস্থায়ী হয়ে থাকে। যারা এখনো দেখেননি, তাদের জন্য এবারের পার্সাইড উল্কাবৃষ্টি এক বিশেষ রাত হতে চলেছে।

/আশিক


চীনে প্রথমবার হিউম্যানয়েড রোবট পিএইচডিতে ভর্তি

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ০৯:২৪:১৪
চীনে প্রথমবার হিউম্যানয়েড রোবট পিএইচডিতে ভর্তি
হিউম্যানয়েড রোবট সুয়ে বা-০১। ফাইল ছবি: সিএমজি

চীন প্রযুক্তি ক্ষেত্রে আবারো নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রথমবারের মতো দেশটির একটি হিউম্যানয়েড রোবট ‘সুয়ে বা-০১’ ভর্তি হয়েছে নাট্যকলা, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিষয়ে পিএইচডি প্রোগ্রামে। এই খবর জানিয়েছে চীনা সংবাদমাধ্যম সিএমজি।

চার বছর মেয়াদী এই ডক্টরাল প্রোগ্রামে রোবটটিকে দেওয়া হবে নাট্যশিল্প, রোবোটিক সিস্টেম, অভিনয়ের অঙ্গভঙ্গি, মানবিক আবেগ ও কগনিটিভ মডেলিংসহ নানা বিষয় সম্পর্কে মৌলিক ও সাংগঠনিক শিক্ষা। ক্লাসরুমে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি রোবটটি নাটকের বিভিন্ন তত্ত্ব শেখার পাশাপাশি গবেষণায়ও যুক্ত থাকবে। পরে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও পারফর্মিং আর্টস সংযুক্ত গবেষণাগারে কাজ করবে।

সুয়ে বা-০১ রোবটটিকে সাংহাই থিয়েটার একাডেমিতে নাট্যকলা বিষয়ে পিএইচডি প্রোগ্রামের শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি করা হয়েছে। এর আনুষ্ঠানিক ভর্তি সম্পন্ন হয় ২০২৫ সালের ওয়ার্ল্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কনফারেন্সে, যা সাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

রোবটটির নির্মাতা লি লিংতু ও তার দল। লি লিংতু সাংহাই ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অধ্যাপক এবং ‘ড্রয়েডঅ্যাপ’ নামের কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। রোবটটির নকশা করেছেন সাংহাই থিয়েটার একাডেমির অধ্যাপক ইয়াং ছিংছিং। রোবটটিকে ‘দেহযুক্ত বুদ্ধিমান কৃত্রিম সত্তা’ হিসেবে পরিচিত করা হয়।

ডেভেলপার লি লিংতু বলেন, তাদের লক্ষ্য এমন একটি পারফর্মার তৈরি করা, যা মানুষের আবেগ বুঝতে পারবে এবং দর্শকদের কাছে আবেগপূর্ণ শিল্প উপস্থাপন করতে সক্ষম হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, মানব অভিনেতারা একাধিক শো-এর পর ক্লান্ত হয়ে পড়েন, কিন্তু এই রোবট ক্লান্ত হবে না এবং দীর্ঘমেয়াদি সঙ্গী হিসেবে কাজ করবে।

রোবটটির উন্নয়ন কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। ওই সময়ে দুটি প্রতিষ্ঠান আর্টস ও রোবোটিক্স প্রযুক্তি নিয়ে যৌথ কৌশলগত সহযোগিতায় একটি মানবসম্পদ উন্নয়ন কর্মসূচি চালু করে।

/আশিক


ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তে সংকটে নাসার জলবায়ু পর্যবেক্ষণ মিশন

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৭ ১১:৫৮:৩৪
ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তে সংকটে নাসার জলবায়ু পর্যবেক্ষণ মিশন
ছবিঃ সংগৃহীত

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বৈজ্ঞানিক লড়াইয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাক্কা লাগতে চলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ নাসা মিশনের জন্য অর্থ বরাদ্দ বন্ধের প্রস্তাব করেছে। এই দুই মিশন—অরবিটিং কার্বন অবজারভেটরি (OCO-2) স্যাটেলাইট এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে স্থাপিত একটি উন্নত যন্ত্র—পৃথিবীর কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ ও শোষণের নিখুঁত মানচিত্র তৈরি এবং উদ্ভিদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে কৃষি ও পরিবেশ গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

নাসা এক বিবৃতিতে জানায়, এই মিশন দুটি তাদের “প্রাথমিক সময়সীমা পার করেছে” এবং সেগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত “রাষ্ট্রপতির বাজেট ও নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ”। তবে এই মিশনগুলো এখনো বিশ্বের সবচেয়ে সংবেদনশীল এবং নিখুঁত পর্যবেক্ষণক্ষমতা সম্পন্ন প্রযুক্তি বহন করছে, যা বিকল্পহীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এক ‘জাতীয় সম্পদ’ হিসেবে বিবেচিত—এমনটাই জানিয়েছেন এই মিশনের প্রধান রূপকার, নাসার প্রাক্তন বিজ্ঞানী ডেভিড ক্রিস্প।

এই মিশনগুলোর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা যেমন আবিষ্কার করেছেন যে অ্যামাজন বন এখন নিঃসরণকারী বনভূমিতে পরিণত হয়েছে, তেমনি তারা দেখতে পেয়েছেন যে কানাডা ও রাশিয়ার বরফময় অঞ্চলগুলো এবং পারমাফ্রোস্ট গলে যাওয়া এলাকা বেশি কার্বন শোষণ করছে। শুধু তাই নয়, এই প্রযুক্তির সাহায্যে উদ্ভিদের আলোকসংশ্লেষণের “জীবন্ত আলো” শনাক্ত করা যায়, যা খরা, খাদ্য সংকট এবং সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ বা সামাজিক অস্থিরতা আগাম অনুমান করতে সাহায্য করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত ‘দূরদর্শিতাবিহীন’। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের জলবায়ু বিজ্ঞানী জোনাথন ওভারপেক বলেন, "এই স্যাটেলাইটগুলোর পর্যবেক্ষণ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বহু অঞ্চলের জন্য।"

কংগ্রেসের দিকে তাকিয়ে আশার আলো

বর্তমানে এই মিশনগুলো সেপ্টেম্বর ৩০ পর্যন্ত তহবিল পাবে। প্রেসিডেন্টের প্রস্তাব অনুযায়ী হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এর বাজেট বিল এই মিশন বাতিলের পক্ষে হলেও, সিনেট ভার্সন এখনো মিশনগুলো টিকিয়ে রাখার পক্ষে। কংগ্রেস বর্তমানে বিরতিতে থাকায় নতুন বাজেটের অনুমোদন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যদি বাজেট অনুমোদিত না হয়, তবে কংগ্রেস একটি অস্থায়ী ফান্ড রেজোলিউশনের মাধ্যমে বিদ্যমান অর্থায়ন অব্যাহত রাখতে পারে। তবে কিছু আইনপ্রণেতা আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্প প্রশাসন হয়তো সেই তহবিলও আটকে রাখতে পারে।

ডেমোক্র্যাট নেতারা সম্প্রতি এনাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক শন ডাফিকে সতর্ক করে বলেছেন, কংগ্রেস অনুমোদিত অর্থ আটকে রাখা বা মিশন বন্ধ করা বেআইনি হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত জলবায়ু বিজ্ঞানকে দমিয়ে দেওয়ার একটি বড় পদক্ষেপ। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানী মাইকেল মান বলেন, “এই নীতির মূল কথা যেন এমন—যদি আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের পরিমাপ বন্ধ করি, তবে সেটা আমেরিকানদের চিন্তা থেকে মুছে যাবে।”

বিকল্প পরিকল্পনা: আন্তর্জাতিক সহায়তার খোঁজে

ডেভিড ক্রিস্প ও তাঁর সহকর্মীরা এখন আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই যন্ত্র ও স্যাটেলাইট চালু রাখার সম্ভাবনা খুঁজছেন। নাসা ২৯ আগস্ট পর্যন্ত বাইরের সংস্থাগুলোর কাছ থেকে প্রস্তাব গ্রহণ করছে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের যন্ত্রটি বিদেশি অংশীদারদের হাতে তুলে দেওয়ার সুযোগ থাকলেও, OCO-2 উপগ্রহটিকে হয়ত ভূপতিত করে ধ্বংস করা হবে। ক্রিস্প বলেন, “আমরা ধনকুবেরদের, ফাউন্ডেশনগুলোর কাছে যাচ্ছি। কিন্তু এটি এমন এক প্রযুক্তি যা বেসরকারি ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেওয়া বাস্তবসম্মত বা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।”

এই সিদ্ধান্ত জলবায়ু গবেষণা ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে এক অন্ধকার অধ্যায় রচনা করতে পারে—এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

-আকরাম হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক


অ্যাপল ও গুগলের বিরুদ্ধে শিশু সুরক্ষায় গাফিলতির অভিযোগ

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৬ ১১:৩১:১৪
অ্যাপল ও গুগলের বিরুদ্ধে শিশু সুরক্ষায় গাফিলতির অভিযোগ
ছবিঃ সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার ই-সেফটি কমিশন সম্প্রতি এক বিস্ফোরক প্রতিবেদনে অ্যাপল, গুগলসহ একাধিক প্রযুক্তি জায়ান্টকে শিশু যৌন নির্যাতনবিষয়ক কনটেন্ট সংক্রান্ত অভিযোগ উপেক্ষার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। কমিশনের ভাষায়, এই প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ অপরাধের বিষয়ে যেন "চোখ বুঁজে" রয়েছে।

কমিশনের প্রধান জুলি ইনম্যান গ্রান্ট বলেন, “এই সংস্থাগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিলে তারা শিশুদের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে না। বরং তাদের সেবায় সংঘটিত অপরাধগুলোকে তারা যেন ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে যাচ্ছে।”

প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যাপল এবং গুগলের মালিকানাধীন ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট ইউটিউব, শিশু যৌন নির্যাতনের অভিযোগ সম্পর্কে কতগুলো রিপোর্ট পেয়েছে, কিংবা সেই রিপোর্টে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে—তা স্পষ্টভাবে জানায়নি। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, প্রতিষ্ঠানগুলো এই অপরাধ প্রতিরোধে প্রযুক্তিগত টুল ব্যবহারে কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।

ইনম্যান গ্রান্ট বলেন, তিন বছর আগে এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে অনুরোধ করার পরও প্রতিষ্ঠানগুলো “তেমন কোনো অগ্রগতি” দেখায়নি। তার ভাষায়, “ভোক্তাবান্ধব অন্য কোনো খাতে যদি এমন জঘন্য অপরাধ সংঘটনের সুযোগ রাখা হতো, তবে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হতো।”

প্রতিবেদনটি আরও জানায়, অ্যাপল, গুগল, মাইক্রোসফট এবং স্কাইপের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো শিশুনির্যাতনের কনটেন্ট শনাক্ত করতে সক্রিয়ভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক বা অন্য প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম ব্যবহার করছে না।

উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুযায়ী প্রতি ছয় মাস অন্তর প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের প্ল্যাটফর্মে শিশু যৌন নির্যাতনবিষয়ক কনটেন্ট এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-নির্মিত ছবি চিহ্নিত ও দমন বিষয়ে রিপোর্ট দিতে হয়।

এই প্রেক্ষাপটে ইনম্যান গ্রান্ট আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি জায়ান্টদের কাছ থেকে “গঠনমূলক অগ্রগতি” দেখা যাবে।

এদিকে, অস্ট্রেলিয়া সরকার গত বছর ঘোষণা করেছে, ২০২৫ সালের মধ্যে ১৬ বছরের নিচের ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করা হবে। ইউটিউব শুরুতে এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকলেও, সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছে যে জনপ্রিয় ভিডিও প্ল্যাটফর্মটিকেও নিষেধাজ্ঞার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

আইন অমান্যকারী সংস্থাগুলোর জন্য রাখা হয়েছে ৪৯.৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার (প্রায় ৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) পর্যন্ত জরিমানার বিধান। তবে এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়, কীভাবে এই নতুন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর ও পর্যবেক্ষণ করা হবে।

-আকরাম হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক


বিশ্বজুড়ে গুগলে সবচেয়ে বেশি যেসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৪ ১৭:৩৯:০৪
বিশ্বজুড়ে গুগলে সবচেয়ে বেশি যেসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়
ছবি: সংগৃহীত

গুগল এখন শুধু একটি সার্চ ইঞ্জিন নয়—এটি বিশ্বের মানুষের দৈনন্দিন কৌতূহল, প্রয়োজন ও চিন্তার আয়নাও বটে। দিনে লাখ লাখবার মানুষ নানা প্রশ্নে গুগলের শরণাপন্ন হয়। সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, গুগলে কোন প্রশ্নগুলো সবচেয়ে বেশি খোঁজা হয়েছে এবং এসব অনুসন্ধান মানুষের তথ্য চাহিদা ও আগ্রহের দিকটি পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছে।

গত ছয় মাসের গুগল অনুসন্ধান পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিশ্বের মানুষ সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটি গুগলে খুঁজেছে তা হলো—“আমার আইপি কী?”এই একটি প্রশ্ন গড়ে প্রতি মাসে ৩৩ লাখ ৫০ হাজার বার সার্চ করা হয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা অনেক সময় নেটওয়ার্ক সংক্রান্ত কাজ করতে গিয়ে নিজেদের আইপি অ্যাড্রেস জানতে চান। ফলে প্রশ্নটি বিশ্বব্যাপী ট্রেন্ডিং অবস্থায় রয়েছে।

তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে—“কয়টা বাজে?”প্রতি মাসে এটি গড়ে ১৮ লাখ ৩০ হাজার বার সার্চ করা হয়েছে। স্মার্টফোন বা ঘড়ি ব্যবহার করেও সময় জানা গেলেও মানুষ এই প্রশ্ন গুগলে করে থাকে, বিশেষ করে ভয়েস সার্চের মাধ্যমে।

তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে—“ভোটার হিসেবে নাম নিবন্ধন কীভাবে করব?”এটি সার্চ হয়েছে প্রায় ১২ লাখ ২০ হাজার বার। এতে বোঝা যায়, নির্বাচন ও নাগরিক অধিকার সংক্রান্ত আগ্রহ বিশ্বজুড়েই রয়েছে।

গুগলে আরও জনপ্রিয় কিছু প্রশ্নের তালিকা হলো:

“কীভাবে টাই বাঁধব?” – ৬ লক্ষ ৭৩ হাজার বার

“তুমি কী এটা চালাতে পারবে?” – ৫ লক্ষ ৫০ হাজার বার

“এটা কোন গান?” – ৫ লক্ষ ৫০ হাজার বার

“কীভাবে ওজন কমাব?” – ৫ লক্ষ ৫০ হাজার বার

“একটি কাপে কত আউন্স থাকে?” – ৪ লক্ষ ৫০ হাজার বার

“মা দিবস কখন?” – বছরে প্রায় ৪ লক্ষ ৫০ হাজার বার

এসব প্রশ্নের মধ্যে কিছু দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত, আবার কিছু প্রশ্ন নিছক কৌতূহলের ফল। কেউ রান্না করতে গিয়ে মাপ জানতে চাচ্ছেন, কেউ বা উৎসব নিয়ে জানছেন, আবার কেউ নিজের ওজন কমানোর উপায় খুঁজছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রযুক্তির ব্যবহার যত বাড়ছে, মানুষ ততই গুগলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছে। যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দ্রুত পেতে গুগলই যেন হয়ে উঠেছে প্রথম ভরসা। সার্চ ট্রেন্ডগুলোর মধ্য দিয়ে মানুষের তথ্য খোঁজার অভ্যাস, প্রাত্যহিক চাহিদা ও আগ্রহের প্রবণতা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

/আশিক

পাঠকের মতামত: