রাষ্ট্রের নীতির ভিত্তিই বদলাতে চায় এনসিপি, কী বলছে তারা?

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২২ ২০:২৯:১৪
রাষ্ট্রের নীতির ভিত্তিই বদলাতে চায় এনসিপি, কী বলছে তারা?

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ১৯৭২ সালের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত রাষ্ট্রের চার মূলনীতি সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবি জানিয়েছে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী পদে মেয়াদসীমা নির্ধারণ বিষয়ে দলটি নমনীয় অবস্থান প্রদর্শন করেছে।

রোববার (২২ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে চলমান সংলাপে অংশ নিয়ে এসব প্রস্তাব উত্থাপন করে এনসিপি। সংলাপ শেষে দলটির প্রতিনিধিরা সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা জানান, প্রধানমন্ত্রী মেয়াদসীমা নির্ধারণে কমিশনে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। তার ভাষ্য, “সবার আলোচনায় একটা জায়গা এসেছে যে একজন ব্যক্তি যেন সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারেন। এনসিপির প্রস্তাব ছিল—এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুইবার শপথ নিতে পারবেন। তবে জাতীয় ঐকমত্যের স্বার্থে আমরা নমনীয়তা দেখাতে প্রস্তুত।”

তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিত করতে হলে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অন্যান্য দিকেও নজর দিতে হবে। যেমন আপার হাউজ, এনসিসি, পিআর পদ্ধতি ইত্যাদি। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার—এসব নিয়োগ হবে নির্বাচন কমিশনের মতো স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কোনো সংস্থার মাধ্যমে।”

রাষ্ট্রের মূলনীতি প্রসঙ্গে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, ’৭২ সালের চার মূলনীতি—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা—এই 'মুজিববাদী' নীতিগুলোকে আমরা সমর্থন করি না। এগুলো বাতিল করতে হবে। তবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে থাকা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারকে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আমরা উন্মুক্ত।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনো গোঁড়ামির পক্ষে নই। ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনায় বিশ্বাস করি। সেই চেতনার আলোকে সংবিধানের সংস্কার দরকার।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এনসিপির এই অবস্থান সংবিধান সংস্কার বিতর্কে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। বিশেষত রাষ্ট্রের চার মূলনীতির বিষয়ে সরাসরি ‘বাতিল’ শব্দ ব্যবহার করায় রাজনৈতিক পরিসরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে।

জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে গঠিত এই কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে এনসিপির এ অবস্থান ভবিষ্যৎ আলোচনায় বিশেষ তাৎপর্য বহন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ