সারজিস আলমের নারীর ক্ষমতায়ন প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক!

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৫ ১৭:৫১:০৩
সারজিস আলমের নারীর ক্ষমতায়ন প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক!

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ও প্রতিনিধিত্ব নিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা যদিও নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে চেষ্টা করছে, তবুও এটি যথেষ্ট নয় এবং প্রকৃত অর্থে নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পারছে না। এজন্য তিনি সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত নারীর সংখ্যা অন্তত ১০০ জন হওয়া প্রয়োজন বলে প্রস্তাব দেন। এতে সংসদের মোট আসন সংখ্যা ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৪০০ করার প্রস্তাবও তিনি দেন।

রোববার (১৫ জুন) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি পোস্টে সারজিস আলম বিস্তারিত লিখেছেন, সংসদে সংরক্ষিত নারীর আসনগুলো অধিকাংশ সময় রাজনৈতিক স্বজনপ্রীতি, সুবিধাবাদ ও প্রাইজ পোস্টিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে, যা নারীদের প্রকৃত ক্ষমতায়ন থেকে অনেক দূরে সরিয়ে রেখেছে। তিনি বলেন, “সংরক্ষিত আসনের একজন সংসদ সদস্য মাঠ থেকে সরাসরি নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মতো জনসাধারণের সাথে নিবিড়ভাবে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে না, তাদের কাছে দায়বদ্ধতা সীমাবদ্ধ থাকে এবং জনসম্পৃক্ত কর্মকাণ্ডেও সরাসরি অংশগ্রহণ সীমিত।”

সারজিস আলম আরও যুক্তি দিয়েছেন, প্রকৃত ক্ষমতায়ন অর্থ হলো নারীরা যেন নিজেরাই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সংসদে প্রবেশ করে এবং তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনমত ও জনসেবা অর্জন করে। তিনি বলেন, “সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হলে নারীরা নিজ স্বতন্ত্র রাজনৈতিক পরিচয় ও ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন, যা সংরক্ষিত আসনের মাধ্যমে সম্ভব নয়।”

এই প্রেক্ষাপটে তিনি সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্বের জন্য একটি নতুন মডেল প্রস্তাব করেন, যেখানে বর্তমানে ৩০০ আসনের সংসদকে ৪০০ আসনে উন্নীত করে অতিরিক্ত ১০০ আসন নারীদের জন্য বরাদ্দ রাখা হবে। এতে নারীরা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন এবং তাদের ক্ষমতায়ন ও রাজনৈতিক প্রভাব বাড়বে। তিনি মনে করেন, এই ব্যবস্থা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নকে যুগান্তকারী পরিবর্তনের পথ দেখাবে।

সারজিস আলমের এই প্রস্তাব বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নের দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংলাপের সূচনা করেছে। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল থেকে এই প্রস্তাবের ওপর ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে এবং এটি নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতে একটি বাস্তবসম্মত ও কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

এছাড়া, সারজিস আলমের মতানুযায়ী, নারীদের প্রকৃত রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন শুধু আসনের সংখ্যা বাড়ানো নয়, বরং তাদের স্বাধীন রাজনৈতিক ভূমিকা, নেতৃত্বের সুযোগ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাও সমান জরুরি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো নারীদের নিয়ে চিন্তাভাবনা ও কর্মসূচি আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে, যাতে নারীশক্তির যথাযথ মূল্যায়ন ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।

সারজিস আলমের এই উদ্যোগ নারীদের ক্ষমতায়ন ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রণয়ন করেছে, যা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে আরো সুশৃঙ্খল ও সমৃদ্ধ করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত