চুল পড়া বন্ধ, নতুন চুল গজাবে ৮ সহজ পদ্ধতিতে

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২২ ১৯:৩৪:৪৭
চুল পড়া বন্ধ, নতুন চুল গজাবে ৮ সহজ পদ্ধতিতে

আজকের জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস এবং পরিবেশগত চাপের কারণে চুল পড়া ও পাতলা হয়ে যাওয়ার সমস্যা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। তবে এই সমস্যার সমাধান একদিনে হয় না প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট ও বিজ্ঞানভিত্তিক যত্ন, ধৈর্য এবং অভ্যাসগত পরিবর্তন। নিচে চুল ঘন, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও সুস্থ রাখার জন্য বিস্তারিতভাবে ৮টি কার্যকরী পরামর্শ তুলে ধরা হলো:

১. সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

চুল মূলত তৈরি হয় প্রোটিন থেকে, তাই দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত প্রোটিন থাকা অত্যন্ত জরুরি। ডিম, মুরগি, মাছ, দুধ ও ডাল চুলের ফলিকল শক্তিশালী করে। পাশাপাশি পালংশাক, বাদাম, বেরি জাতীয় ফল, গাজর, কুমড়ো ও জলপাই তেলের মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার এবং বায়োটিন, জিঙ্ক, আয়রন ও ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের ভেতর থেকে পুষ্টি জোগায়। প্রতিদিন অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করাও আবশ্যক, কারণ হাইড্রেশন ছাড়া চুল নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে।

২. নিয়মিত স্ক্যাল্প ম্যাসাজ

প্রতিদিন কমপক্ষে ৫–১০ মিনিট স্ক্যাল্পে আঙুল দিয়ে হালকা ম্যাসাজ করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, চুলের গোড়া সক্রিয় হয় এবং পুষ্টির শোষণ বাড়ে। নারকেল তেল, ক্যাস্টর অয়েল বা রোজমেরি এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করলে ফলাফল আরও ভালো হয়। এ ছাড়া স্ক্যাল্পের মৃত কোষ দূর হয় এবং ফলিকল খুলে যায়।

৩. চুলে হিট ও রাসায়নিক ব্যবহার কমান

হেয়ার ড্রায়ার, স্ট্রেটনার, কার্লার বা অন্যান্য হিট স্টাইলিং উপকরণ চুলের প্রাকৃতিক গঠন নষ্ট করে দেয়। হিট প্রয়োগ করলে অবশ্যই হিট প্রোটেকশন স্প্রে ব্যবহার করুন। একইভাবে, সালফেটযুক্ত শ্যাম্পু, অতিরিক্ত রঙ, ব্লিচ বা পার্ম ব্যবহারে চুল শুকিয়ে যায় ও দুর্বল হয়। তাই সালফেট ও প্যারাবেন ফ্রি শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ও প্রোটিন মাস্ক বেছে নেওয়া উত্তম।

৪. সঠিক হেয়ার সাপ্লিমেন্টের ব্যবহার

যদি খাদ্য থেকেই পর্যাপ্ত পুষ্টি না পাওয়া যায়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে চুলের জন্য উপযুক্ত সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে। বায়োটিন, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি১২, আয়রন, জিঙ্ক এবং ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ হেয়ার সাপ্লিমেন্ট চুলের গোড়ায় কাজ করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

৫. নিয়মিত চুল ছাঁটা ও পরিষ্কার রাখা

প্রতি দেড় থেকে দুই মাস পর চুলের ডগা ছাঁটলে স্প্লিট এন্ড বা ডগা ফাটার সমস্যা কমে যায় এবং চুল ভাঙা বন্ধ হয়। সেই সঙ্গে শ্যাম্পু করার সময় অতিরিক্ত চুল টানা বা ঘষাঘষি এড়িয়ে চলুন। হালকা হাতে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন এবং সবসময় পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে চুল আলতো করে মুছুন।

৬. স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ ও ঘুমের গুরুত্ব

মানসিক চাপ সরাসরি হরমোনের ভারসাম্যে প্রভাব ফেলে, যা চুল পড়ার অন্যতম কারণ। দৈনিক ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম, ধ্যান, মেডিটেশন ও হালকা শরীরচর্চা স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। রাতে ঘুমানোর আগে ক্যাফেইনযুক্ত হেয়ার সিরাম বা এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করলে চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা হয়।

৭. প্রয়োজনে চিকিৎসা সহায়তা

অতিরিক্ত চুল পড়লে ২–৫% মিনোক্সিডিল ব্যবহারের পরামর্শ দেন অনেক বিশেষজ্ঞ। এটি চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে। সেই সঙ্গে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট বা পিআরপি (PRP) থেরাপিও চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে করা যেতে পারে।

. ঘুমের সময় চুলের যত্ন

ঘুমানোর সময় চুলের যত্ন নিতেও ভুললে চলবে না। সাটিন বা সিল্কের বালিশের কভার ব্যবহার করুন, কারণ তুলার কভার চুলের ঘর্ষণ বাড়ায়, ফলে চুল ভেঙে যায়। ভেজা চুলে ঘুমানো থেকে বিরত থাকুন এবং চুল ঢিলাভাবে বাঁধুন যাতে রক্তসঞ্চালনে বাধা না পড়ে।

চুলের যত্নে ‘চটজলদি’ সমাধান বলে কিছু নেই। স্বাস্থ্যকর খাদ্য, সঠিক জীবনযাপন এবং নিয়মিত যত্নই পারে চুলকে ঘন, মজবুত ও প্রাণবন্ত করে তুলতে। তাই চুলের প্রতি যত্নবান হোন, ধৈর্য রাখুন, নিয়ম মেনে চলুন ফল মিলবেই।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত