সর্ব রোগের ঔষধ কালিজিরা’র আদ্যপ্রান্ত: ঐতিহ্য, বিজ্ঞান, ব্যবহার ও সতর্কতা

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০২ ২০:৪৩:১৭
সর্ব রোগের ঔষধ কালিজিরা’র আদ্যপ্রান্ত: ঐতিহ্য, বিজ্ঞান, ব্যবহার ও সতর্কতা

কালিজিরা বা কালোজিরা আমাদের খাদ্যসংস্কৃতি ও লোকঔষধি জ্ঞানের এক আবেগময় নাম। ইসলামী ঐতিহ্যে এটি বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত, যেখানে কালিজিরাকে মৃত্যু ব্যতীত বহুরোগেউপকারীবলা হয়েছে। আবার আধুনিক পুষ্টিবিজ্ঞান ও ফাইটো-কেমিস্ট্রি দেখায়, ছোট্ট এই কালো বীজে আছে তেল, ফেনল, ফ্ল্যাভোনয়েড, স্যাপোনিন ও একাধিক বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ, যা শরীরে নানা জৈবপ্রক্রিয়ায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। ফলে কালিজিরা আজ লোকপ্রথা, রান্নাঘর এবং ল্যাবরেটরিতিন ক্ষেত্রেই সমানভাবে আলোচিত।

উদ্ভিদবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কালিজিরা Nigella sativa, Ranunculaceae গোত্রের তেলবীজ জাত উদ্ভিদ। উদ্ভিদটি সাধারণত ২০ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। এর পাতা সূক্ষ্মভাবে বিভাজিত, ফুল সাধারণত সাদা বা লঘু নীল, কখনও পীতবর্ণও দেখা যায়। পুংকেশর অনেক, গর্ভকেশর তুলনামূলক লম্বা। কার্তিক থেকে অগ্রহায়ণে গাছে ফুল ফোটে এবং শীতকালে গোলাকার ফল পরিপক্ব হয়। প্রতিটি ফলের খোলসে ২০ থেকে ২৫টি ত্রিকোণাকার কালো বীজ থাকে। বীজে স্থির তেলের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হওয়ায় এটি রান্না, আচার, মসলা এবং ভেষজ তেল হিসেবে বহুল ব্যবহৃত। দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়া এর প্রাচীন নিবাস হিসেবে বিবেচিত, তবে আজ এটি পশ্চিম এশিয়া থেকে উত্তর আফ্রিকা এবং ইউরোপ-আমেরিকার বাজারেও পরিচিত একটি তেলবীজ।

পুষ্টিগুণে কালিজিরা সমৃদ্ধ। সাধারণভাবে প্রতি ১০০ গ্রামে এটি উল্লেখযোগ্য ক্যালরি, প্রোটিন, চর্বি ও কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে। তেলের মূল শক্তি আসে লিনোলিক ও অলিক অ্যাসিড থেকে, সঙ্গে থাকে স্বল্পমাত্রায় লিনোলেনিক, পামিটিক ও স্টেয়ারিক অ্যাসিড। খনিজ উপাদানে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও জিঙ্ক চোখে পড়ার মতো; ভিটামিনে থাকে এ, বি-গ্রুপের কিছু ভিটামিন, সি ও ই। পুষ্টিমান জাত, আবহাওয়া, মাটি, চাষপদ্ধতি, সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ওপর কিছুটা ওঠানামা করতে পারে, তাই যে কোনো সংখ্যা একটি যুক্তিসঙ্গত পরিসর হিসেবে বিবেচনা করাই ভালো।

কালিজিরার সবচেয়ে আলোচিত বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ হলো থাইমোকুইনোন। গবেষণায় এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহনাশী বৈশিষ্ট্যের সূত্র ধরে নানা জৈবপথে কাজ করতে দেখা যায়। বীজে থাকাপলিফেনল, ফ্ল্যাভোনয়েড, স্যাপোনিন ও স্টেরল শ্রেণির যৌগ সামগ্রিকভাবে ইমিউন ফাংশন, লিপিড প্রোফাইল এবং কোষীয় সুরক্ষায় সহায়তা করতে পারে। এই বায়োঅ্যাকটিভগুলোর একটি সুষম প্রভাবই কালিজিরাকে রান্নাঘরের মসলা থেকে ধীরে ধীরে চিকিৎসাবিজ্ঞানের সহায়ক অধ্যায়ে তুলে এনেছে।

স্বাস্থ্যপ্রভাবে কালিজিরার সবচেয়ে শক্ত সংকেত দেখা যায় গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণ ও কার্ডিও-মেটাবলিক সূচকে। বেশ কিছু মানব-গবেষণায় টাইপ ২ ডায়াবেটিস বা প্রিডায়াবেটিসে কালিজিরার গুঁড়া বা তেল রক্তে গ্লুকোজ ও HbA1c কিছুটা কমাতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। লিপিড প্রোফাইলে ট্রাইগ্লিসারাইড ও LDL কমতে এবং HDL সামান্য বাড়তে দেখা যায়, যদিও প্রভাব সাধারণত ছোট থেকে মাঝারি। একইভাবে রক্তচাপে নমনীয় পতন লক্ষ করা গেছে। তবে এসব ফল জীবনযাত্রা পরিবর্তন ও প্রেস্ক্রিপশন ওষুধের বিকল্প নয়, বরং সহায়ক বলেই দেখা উচিত।

শ্বাসতন্ত্র ও অ্যালার্জিতে কালিজিরা প্রাচ্য চিকিৎসা ও লোকপ্রথায় প্রচণ্ড জনপ্রিয়। সাম্প্রতিক কিছু ট্রায়ালে অ্যালার্জিক রাইনাইটিসে নাসিকালক্ষণ কিছুটা কমেছে এবং হাঁপানির ক্ষেত্রে উপসর্গ উপশমের ইঙ্গিত আছে। ঠান্ডা-কাশি-গলা ব্যথায় মধু বা উষ্ণ পানীয়ের সঙ্গে কালিজিরা বা এর তেল মেশানো আমাদের রান্নাঘর-ভিত্তিক ঘরোয়া রুটিনেই পড়ে। তবু মনে রাখতে হবে, অ্যাজমা বা তীব্র অ্যালার্জি একটি মেডিকেল কন্ডিশন। তাই কালিজিরা থাকুক সহকারী হিসেবে, ইনহেলার বা চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ থাকবে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে।

লিভার ও পরিপাকে কালিজিরা অনেকের প্রিয়। এতে থাকা তেল ও ফাইটো-কেমিক্যাল হজমক্রিয়া সক্রিয় রাখতে, গ্যাস-অম্বল কমাতে এবং মৃদু কোষ্ঠকাঠিন্যে স্বস্তি দিতে সহায়ক হতে পারে। ক্ষুদ্রান্তে পুষ্টি শোষণে সহায়তার কথা বলা হয় এবং কিছু প্রি-ক্লিনিক্যাল প্রমাণ আছে যে এটি লিভারকোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে কিছুটা সুরক্ষা দিতে পারে। তবে জন্ডিস, আলসার বা ফ্যাটি লিভারের মতো নির্দিষ্ট রোগে নিজে নিজে কালিজিরা দিয়ে চিকিৎসা শুরু না করে চিকিৎসকের মতামত নেওয়াই উত্তম।

ত্বক ও চুলে কালিজিরার তেল জনপ্রিয় একটি নাম। মাথার ত্বকে নিয়মিত হালকা ম্যাসাজ খুশকি ও স্ক্যাল্প ইরিটেশনেআরাম দিতে পারে, চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগাতে সহায়ক হয় এবং চুল পড়া কমাতে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ভালো সাড়া মেলে। ত্বকে মধু বা দইয়ের সঙ্গে কালিজিরা গুঁড়া বা তেলেরমৃদুপ্যাক ব্রণ, র‍্যাশ বা মৃদু প্রদাহে ব্যবহার হয়। সংবেদনশীল ত্বকে আগেছোটজায়গায়প্যাচটেস্টকরে নিলে অপ্রত্যাশিত রিঅ্যাকশনের ঝুঁকি কমে।

মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রে থাইমোকুইনোনকেঘিরেআলোচনাও কম নয়। ছোট আকারের কিছু গবেষণায় স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগে হালকা উন্নতির ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, যা সম্ভবত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মৃদু প্রদাহনাশী প্রভাবে আসে। বয়সজনিত নিউরোডিজেনারেশনে ল্যাব-ভিত্তিক গবেষণা আশাব্যঞ্জক হলেও বড় মানব-ট্রায়ালের অভাব এখনো রয়েছে। তাই এ ক্ষেত্রে কালিজিরা সতর্ক আশাবাদেই দেখা উচিত।

ব্যবহারপদ্ধতিতে সবচেয়ে নিরাপদ ও টেকসই হলো রান্নায় নিয়মিত, অল্পমাত্রায় সংযোজন। গরম ভাতে কালিজিরা ভর্তা, ডাল-সবজিতে ফোড়ন, আচার বা রুটির টপিংএসব ব্যবহার স্বাদের সঙ্গে স্বাস্থ্যগুণওদেয়অনেকেচা, কফি বা লেবুপানিতে অল্পকালিজিরা গুঁড়া, আরকে বা কয়েক ফোটা তেল মিশিয়ে থাকেন। সাপ্লিমেন্ট হিসেবেতেলবা ক্যাপসুল বাজারে পাওয়া যায়, তবে তৃতীয় পক্ষের মাননিয়ন্ত্রিত পণ্য নিলেই ভালো। ডোজের বিষয়ে সাধারণ শিক্ষণ হলো কম ডোজে শুরু করা, শরীরের সাড়া দেখে ধীরে ধীরে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছানো এবং কোনো প্রতিকূল লক্ষণ দেখা দিলে বন্ধ করা।

ডোজের ক্ষেত্রে গবেষণায় নানা মাত্রা দেখা যায়। রান্নায় মসলা হিসেবে দৈনিক ১ থেকে ৩ গ্রাম বীজ অনেকের জন্য সহনীয়। তেলের ক্ষেত্রে ৩০০ মিলিগ্রাম থেকে ১ গ্রাম পর্যন্ত দিনে এক বা দুইবার ব্যবহার হয়েছে। কেউ কেউ ৫ মিলিলিটার পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি প্রোটোকল ব্যবহার করেছেন। তবে এগুলো তথ্যগত নির্দেশিকা, ব্যক্তিগত চিকিৎসা-নির্দেশ নয়। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তপাত-ঝুঁকি, থাইরয়েড সমস্যা, কিডনি বা লিভারের ক্রনিক রোগ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরিকল্পনা মিলিয়ে নেবেন।

নিরাপত্তা ও সতর্কতায় কয়েকটি কথা জরুরি। গর্ভাবস্থায় মুখে সাপ্লিমেন্ট আকারে কালিজিরা না নেওয়াই ভালো। দুগ্ধদানকালে নিরাপত্তা-ডেটা সীমিত, কারও কারওত্বকে তেলের প্রতি অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। অ্যান্টিডায়াবেটিক, অ্যান্টিহাইপারটেনসিভ, অ্যান্টিকোয়াগুলান্ট বা প্লেটলেট-প্রভাবিত ওষুধ ব্যবহার করলে মিথস্ক্রিয়ার সম্ভাবনা মাথায় রাখুন। অপারেশনের আগে পরে নিজে নিজেসাপ্লিমেন্ট শুরু বা বন্ধ না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শিশুদের ক্ষেত্রে দুই বছরের নিচে মুখে তেল না দিয়ে কেবল বাহ্যিক প্রয়োগ বিবেচনা করুন এবং বড়দের ক্ষেত্রেও ত্বকে লাগানোর আগে ছোট এলাকায় পরীক্ষা করে নিন।

বাজার থেকে তেল বা বীজ কেনার সময় খাঁটি পণ্য নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। তৃতীয় পক্ষের গুণমান-পরীক্ষিত ব্র্যান্ড, ঠান্ডা চাপে নিষ্কাশিত তেল, গাঢ় কাঁচের বোতল, উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণতার স্পষ্ট লেবেলএসব বিষয় দেখুন। তেল আলো, তাপ ও বাতাসে বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ হারায়, তাই ঠান্ডা ও অন্ধকার জায়গায় ঢাকনা শক্ত করে রেখে দিন। উচ্চ তাপে দীর্ঘক্ষণ রান্নায় তেলের সূক্ষ্ম উপাদান নষ্ট হতে পারে, তাই রান্নার শেষে অল্প যোগ করা উত্তম।

লোকপ্রথার নানা দাবির মাঝে বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি ধরে রাখা দরকার। কালিজিরা বহু উপকারী বটে, তবে এটি সর্ব রোগের পূর্ণাঙ্গ ঔষধ নয়। ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, হাঁপানি বা চর্মরোগএসবের ক্লিনিক্যাল চিকিৎসা থাকবে অগ্রাধিকারভিত্তিক, কালিজিরা থাকবে সহায়ক স্তরে। সঠিক পণ্য, পরিমিত ডোজ, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, জীবনযাপনগত শৃঙ্খলা এবং প্রয়োজনমতো চিকিৎসকের গাইডেন্সএই সমন্বয়ই সর্বোত্তম ফল দেয়।

কালিজিরাআমাদের রান্নাঘরের সহজলভ্য একটি সুপার-মসলা, যার ঐতিহ্য ও বিজ্ঞানের সুন্দর মেলবন্ধন আছে। মসলা হিসেবে নিয়মিত ব্যবহার, মাঝেমধ্যে উষ্ণ পানীয় বা মধুর সঙ্গে অল্পমাত্রায়গ্রহণএবংত্বক বা চুলে সচেতন বাহ্যিক প্রয়োগএই তিন স্তরের স্মার্ট রুটিনেই আপনি কালিজিরার স্বাদ, সুগন্ধ এবং উপকারকে নিরাপদভাবে কাজে লাগাতে পারবেন।তবে একে “সর্ব রোগের ঔষধ” বলা অতিরঞ্জন; বরংবলাযায়, এটি একটি শক্তিশালী সহায়ক খাদ্য ও ভেষজ উপাদান।নিয়মিত রান্নায় কালিজিরা ব্যবহার, সুষম খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের সঙ্গে এর সঠিক প্রয়োগ করলে এটি সত্যিই হয়ে উঠতে পারে আমাদের জীবনের এক প্রাকৃতিক আশীর্বাদ।


ছেলেদের পোশাকে ২০২৫ সালের সেরা ১০ কালার কম্বো

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০২ ১৯:১২:২৭
ছেলেদের পোশাকে ২০২৫ সালের সেরা ১০ কালার কম্বো
ছবি: সংগৃহীত

ফ্যাশন ট্রেন্ড আসবে যাবে, কিন্তু যেটা সত্যিকারের ভালো লাগে—সেটা আবার ফিরে আসবেই। ২০২৫ সালের এই গরমে ঠিক এমনটাই হচ্ছে। পুরোনো, ক্ল্যাসিক কিছু কালার কম্বিনেশন আবার ছেলেদের ফ্যাশনে ফিরেছে—এবং এবার আরও বেশি স্টাইলিশভাবে। এই দুই রঙের কম্বোগুলো সহজ, স্মার্ট এবং খুব একটা কষ্ট না করেই যেকোনো আউটফিটকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে।

গরমে ছেলেদের জন্য সেরা ১০ কালার কম্বিনেশন

১. চারকোল ও রাস্ট (Charcoal & Rust): চারকোল হলো সফট ব্ল্যাকের মতো গাঢ় কিন্তু ভারী নয়। রাস্ট রঙটা উষ্ণ, মাটির মতো—নজর কাড়ে, তবে অতিরিক্ত উজ্জ্বল নয়।

যেভাবে পরবেন: রাস্ট রঙের টি-শার্টের সাথে চারকোল জ্যাকেট, বা চারকোল শর্টসের সাথে রাস্ট শার্ট। এই কম্বোটা গ্রীষ্মের জন্য যেমন মানায়, তেমনি শরৎকালেও দারুণ লাগে।

২. নেভি ও ক্যামেল (Navy & Camel): এই দুই রঙ একসঙ্গে এক কথায় ‘ক্ল্যাসিক’। নেভি দেয় একটা পরিষ্কার ও গম্ভীর লুক, আর ক্যামেল আনে উষ্ণতা ও পরিপক্বতা।

যেভাবে পরবেন: নেভি পোলো শার্টের সাথে ক্যামেল চিনো প্যান্ট, কিংবা ক্যামেল কোট নেভি শার্টের উপর। ক্যাজুয়াল থেকে সেমি-ফর্মাল—সব জায়গাতেই মানিয়ে যায়।

৩. অলিভ গ্রিন ও ব্ল্যাক (Olive Green & Black): যারা একটু এজি বা রুক্ষ লুক পছন্দ করেন, তাদের জন্য। অলিভ গ্রিন মানে ন্যাচারাল, আর ব্ল্যাক সবসময়েই স্মার্ট।

যেভাবে পরবেন: ব্ল্যাক হুডির ওপর অলিভ জ্যাকেট, অথবা ব্ল্যাক জিন্সের সঙ্গে অলিভ টি-শার্ট।

৪. গ্রে ও বারগান্ডি (Gray & Burgundy): গ্রে এমন একটা রঙ, যা প্রায় সব কিছুর সাথেই মানায়। আর বারগান্ডি যোগ করে ব্যক্তিত্ব ও স্টাইল।

যেভাবে পরবেন: গ্রে সোয়েটার বারগান্ডি প্যান্টের সঙ্গে। বা, বারগান্ডি হুডির সাথে গ্রে জগার্স—ক্যাজুয়াল এবং স্মার্ট, দুইভাবেই দারুণ।

৫. হোয়াইট ও বেইজ (White & Beige): যদি আপনি ক্লিন, ফ্রেশ লুক চান, তবে এই কম্বো সেরা।

যেভাবে পরবেন: হোয়াইট টি-শার্ট বেইজ চিনোর সঙ্গে, বা বেইজ হুডি হোয়াইট স্নিকারের সঙ্গে। এটা বসন্ত ও গ্রীষ্মের জন্য একদম পারফেক্ট।

৬. ব্রাউন ও লাইট ব্লু (Brown & Light Blue): এই কম্বোটা একটু রেট্রো ধাঁচের হলেও এখনো মডার্ন ফিল দেয়। ব্রাউন আনে উষ্ণতা, আর লাইট ব্লু রাখে কুল ও হালকা।

যেভাবে পরবেন: হালকা নীল শার্টের সাথে ব্রাউন প্যান্ট, বা হালকা ব্লু টি-শার্টের ওপর ব্রাউন জ্যাকেট।

৭. ডেনিম অন ডেনিম (Denim on Denim): আগে যাকে ‘কানাডিয়ান টাক্সেডো’ বলা হতো, এখন সেটা আবার ট্রেন্ডে।

যেভাবে পরবেন: ডেনিমের দুই শেড মিশিয়ে। যেমন হালকা রঙের ডেনিম শার্টের সাথে গাঢ় ইন্ডিগো জিন্স। একটা নিউট্রাল টি-শার্ট বা একটু বোল্ড স্নিকার্স দিলে লুকটা আরও জমবে।

৮. ব্ল্যাক ও ক্রিম (Black & Cream): ব্ল্যাক-হোয়াইট কম্বোর অতিরিক্ত কনট্রাস্ট এড়াতে হোয়াইটের বদলে ক্রিম ব্যবহার করলে পুরো লুকটাই সফট আর আধুনিক লাগে।

যেভাবে পরবেন: ব্ল্যাক সোয়েটারের সঙ্গে ক্রিম প্যান্ট বা ব্ল্যাক জিন্সের সঙ্গে ক্রিম হুডি।

৯. কোবাল্ট ব্লু ও হোয়াইট (Cobalt Blue & White): এই কম্বো দেখায় ক্লিন, কনফিডেন্ট আর খুবই ফ্রেশ। ২০২৫ সালের জন্য এটি একেবারে পারফেক্ট।

১০. প্যাস্টেল ইয়েলো ও লাইট ব্লু (Pastel Yellow & Light Blue): এই কম্বো সহজ, আর দারুণ চমকপ্রদ। প্যাস্টেল ইয়েলো টি-শার্টের সঙ্গে লাইট ব্লু জিন্স প্রায় সবার গায়েই মানায়।

স্টাইল টিপস

মনে রাখবেন, স্টাইল শুধু কাপড়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। নতুন হেয়ারকাট, ফ্রেশ দাড়ি ট্রিম—ছোট ছোট পরিবর্তনেও আত্মবিশ্বাস বাড়ে। আপনি যেমনই হোন, নিজের পছন্দটাই আপনার আসল স্টাইল।

সূত্র : ব্রাইট সাইড


পারফেক্ট পারফিউম বেছে নেবেন যেভাবে: জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০২ ১৭:৪০:৪২
পারফেক্ট পারফিউম বেছে নেবেন যেভাবে: জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
ছবি: সংগৃহীত

ভালো গন্ধ শুধু অন্যকে আকর্ষণ করে না, নিজের আত্মবিশ্বাসও বাড়ায়। তাই অনেকেই প্রতিদিন পারফিউম ব্যবহার করেন। কিন্তু বাজারে এত ব্র্যান্ড আর সুবাসের ভিড়ে নিজের জন্য একদম পারফেক্ট পারফিউমটি বেছে নেওয়া কঠিন। একজন অভিজ্ঞ পারফিউমার ক্যাটেরিনা কাতালানি আপনার ব্যক্তিত্ব ও পছন্দ অনুযায়ী সঠিক পারফিউম বেছে নেওয়ার সহজ ও কার্যকর পরামর্শ দিয়েছেন।

সঠিক পারফিউম বাছাইয়ের কৌশল

ক্যাটেরিনা বলেন, পারফিউম শুধু গন্ধই নয়, এটা আপনার মেজাজ, স্টাইল এবং আত্মপরিচয়ের একটি অংশ। এটি আমাদের প্রিয় স্মৃতি বা আবেগের সঙ্গেও জড়িয়ে থাকে। তাই পারফিউম নির্বাচনকে হালকা করে দেখা উচিত নয়।

১. ত্বকে ব্যবহার করে পরীক্ষা করুন

দোকানে গিয়ে বোতলের মুখ থেকে শুঁকে সিদ্ধান্ত নেওয়া ভুল পদ্ধতি। পারফিউম আসলে আপনার ত্বকের সঙ্গে মিশে কেমন ঘ্রাণ ছড়ায়, সেটা বোঝা জরুরি। কারণ একেকজনের ত্বকের সঙ্গে পারফিউমের রসায়ন ভিন্ন হয়।

পরামর্শ: হাতের কব্জিতে একটু স্প্রে করে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। তারপর ঘ্রাণটা কেমন লাগে, বুঝে সিদ্ধান্ত নিন।

২. ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখুন

পারফিউম একটি ‘স্টেটমেন্ট’। আপনি যদি শান্ত স্বভাবের হন, তবে হালকা, ফুলেল সুবাস আপনার জন্য মানানসই। আবার যদি আপনি প্রাণবন্ত ও সাহসী হন, তবে একটু গাঢ় বা মসলাদার ঘ্রাণ মানাবে ভালো।

৩. একাধিক ঘ্রাণ ব্যবহার করুন

ক্যাটেরিনা পরামর্শ দেন, একটি পারফিউমে আটকে না থেকে ভিন্ন ভিন্ন ঘ্রাণও ব্যবহার করা উচিত। কারণ একেক দিন একেক মুড, একেক পরিবেশ—একেক সুবাস আপনার আলাদা দিক ফুটিয়ে তুলতে পারে।

৪. চুলের জন্য আলাদা পারফিউম

চুলে পারফিউম ব্যবহারের ক্ষেত্রেও ঘ্রাণটা যাচাই করে নেওয়া উচিত। কারণ চুলে দেওয়া পারফিউমের ঘ্রাণও আপনার আশপাশের মানুষের কাছে পৌঁছায়।

পারফিউম কেনার আগে যা খেয়াল রাখবেন

স্থায়িত্ব: এসেনসিয়াল অয়েল বেশি থাকলে ঘ্রাণ দীর্ঘসময় ধরে থাকবে।

অ্যালকোহল: অ্যালকোহল বেশি থাকলে দাম কম হলেও সুবাস তাড়াতাড়ি উবে যায়।

উপাদান: উপাদানগুলো দেখে নিন—আপনার ত্বকে বা নাকে অ্যালার্জি হয় কি না বুঝে নিন।

ব্র্যান্ডেড পারফিউম: ব্র্যান্ডেড পারফিউম কেনার আগে টেস্টার ব্যবহার করে যাচাই করে নিন।

পারফিউম বেছে নেওয়া মানে শুধু ভালো ঘ্রাণ খোঁজা নয়, এটা নিজের একটি ছাপ রেখে যাওয়ার বিষয়। তাই সময় নিয়ে, নিজের পছন্দ ও ব্যক্তিত্ব বুঝে তবেই সিদ্ধান্ত নিন।

সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান


যে পদ্ধতিতে খাবার থাকবে মাসের পর মাস অক্ষত

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০২ ১৪:৫২:১৫
যে পদ্ধতিতে খাবার থাকবে মাসের পর মাস অক্ষত
ছবি: সংগৃহীত

ফ্রিজে রাখা গরম ও আর্দ্রতায় ভরা খাবার দ্রুত ফাঙ্গাসের শিকার হয়ে যায়। এই সমস্যা কীভাবে এড়ানো যায় এবং খাবার কীভাবে অক্ষত রাখা যায়, তা জানা জরুরি। আজকের দিনে অনেক গৃহিণী খাবারের সতেজতা বজায় রাখতে এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি রোধ করতে ঐতিহ্যবাহী সংরক্ষণ কৌশলকে নতুন করে গ্রহণ করছেন।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (ইউএনএফএও) একটি রিপোর্ট অনুসারে, প্রতি বছর ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ খাদ্য উৎপাদন নষ্ট হয় অপর্যাপ্ত সংরক্ষণের কারণে। এই সমস্যা সমাধানে ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে লাখ লাখ পরিবার এখন খাবারের অপচয় কমাচ্ছে।

খাবার সংরক্ষণে ঐতিহ্যবাহী ও আধুনিক কৌশল

১. শুকানোর কৌশল ও এয়ারটাইট জার

আমাদের পূর্বপুরুষরা ফল, সবজি ও মাছ-মাংস শুকিয়ে সংরক্ষণ করতেন, যা ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি রোধ করত। আজকালকার গৃহিণীরা সবজিগুলোকে কাপড়ে মুড়ে হাওয়ায় শুকান এবং এরপর সিল করা জারে রাখেন। এই পদ্ধতিতে পানির পরিমাণ কমিয়ে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ করা হয়। গ্রীষ্মকালে সবজি কেনার পর ধুয়ে শুকিয়ে এয়ারটাইট গ্লাসের জারে রাখুন, যা খাবারের সতেজতা বজায় রাখতে এবং পরিবেশবান্ধব সংরক্ষণে সহায়ক।

২. ফ্রিজারে শস্য ও ডাল

বর্ষাকালে শস্য ও ডালকে কীট ও ফাঙ্গাসের ডিম থেকে রক্ষা করতে সেগুলোকে কেনার পর প্রথমে দুদিন ফ্রিজারে রাখুন। এই ঐতিহ্যবাহী কৌশল কীট ও ছত্রাকের বীজ ধ্বংস করে।

৩. তাজা শাক-সবজির সংরক্ষণ

শাকসবজি ও সবুজ পাতা সংরক্ষণে কাপড়ের ব্যবহার একটি কার্যকরী রহস্য। ধনেপাতা কিংবা পুদিনাপাতাগুলোকে ভেজা কাপড়ে মুড়ে রাখুন। এটি অতিরিক্ত আর্দ্রতা শোষণ করে এবং ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি রোধ করে। এছাড়া সবজিগুলোকে প্লাস্টিকের প্যাকেটে রেখে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন এবং প্রতি সপ্তাহে ফ্রিজ পরিষ্কার করুন।

৪. মসলার বিশেষ যত্ন

বর্ষায় মসলা পাউডারগুলোকে ফাঙ্গাস ও কীটপতঙ্গ থেকে দূরে রাখতে সেগুলোর সঙ্গে নিমপাতা বা শুকনো লংকার টুকরো মিশিয়ে রাখুন। মসলা কেনার পর প্রথমে ফ্রিজারে দুদিন রেখে দিন, যাতে কোনো ডিম বা ছত্রাকের বীজ ধ্বংস হয়। এরপর এয়ারটাইট কনটেইনারে স্থানান্তর করুন। এই কৌশল মসলাগুলোকে মাসের পর মাস সতেজ রাখবে।

৫. কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানো

আধুনিক ফ্রিজের পাশাপাশি মাটির কলসি বা ধাতুর পাত্র ব্যবহার করেও খাবার সংরক্ষণ করা যায়। এটি কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানোর একটি পরিবেশবান্ধব উপায়। এই কৌশলগুলো শুধু খাবারের স্বাদ রক্ষা করে না, বরং পুষ্টিগুণও অটুট রাখে।


নতুন জুতোয় ফোসকা? যন্ত্রণা দূর করবে এই ৫ ঘরোয়া উপাদান

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০২ ১৪:৪৭:৪৫
নতুন জুতোয় ফোসকা? যন্ত্রণা দূর করবে এই ৫ ঘরোয়া উপাদান
ছবি: সংগৃহীত

অনেক সময় নতুন জুতা পায়ে দিলে ফোসকা পড়ে যায় এবং আঙুলে ব্যথা অনুভব হয়। এই সমস্যা কমবেশি প্রায় সবারই হয়ে থাকে। পায়ে ফোসকা পড়লে হাঁটা-চলা করাও কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। তবে কিছু সহজ ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করে এই ফোসকা এবং তার তীব্র যন্ত্রণা সহজেই কমানো সম্ভব।

আসুন জেনে নেওয়া যাক, কোন ৫টি ঘরোয়া উপাদান পায়ের ফোসকা ও তার যন্ত্রণাকে দূর করবে:

ফোসকা নিরাময়ের ৫টি ঘরোয়া উপায়

১. পেট্রোলিয়াম জেলি ও নারিকেল তেল: সাধারণত চামড়ার জুতাতেই ফোসকা বেশি পড়ে। নতুন জুতা পরার আগের রাতে এর ভেতরের শক্ত অংশগুলোতে পেট্রোলিয়াম জেলি অথবা নারিকেল তেল ঘষে রাখুন। এতে জুতা নরম হবে। বাইর থেকে ফিরে পা পরিষ্কার করে নিলে ফোসকা পড়ার আশঙ্কা কমবে। এছাড়া, ফোসকা পড়লে এর ওপর নারিকেল তেল বা মধু দিনে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলে দ্রুত সেরে যাবে।

২. অ্যালোভেরা জেল: অ্যালোভেরা ক্ষতস্থানের ফোলাভাব এবং জ্বালা কমাতে সাহায্য করে। ফোসকার জায়গায় অ্যালোভেরা জেল লাগাতে পারেন। জেল শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দিনে তিন বার ব্যবহারে স্বস্তি পাবেন।

৩. অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম: ফোসকার জায়গায় অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ও ব্যান্ডেজ লাগিয়ে নিতে পারেন। সুযোগ পেলেই জুতা খুলে রেখে পায়ে একটু বাতাস লাগাতে চেষ্টা করুন। ঘাম শুকিয়ে গেলে ফোসকার ঝুঁকি কমে এবং ক্ষত তাড়াতাড়ি সারে।

৪. গ্রিন টি: গ্রিন টি তে থাকা ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষত কমাতে সাহায্য করে। গরম পানিতে অল্প বেকিং সোডা মিশিয়ে একটি গ্রিন টি ব্যাগ ডুবিয়ে ঠান্ডা করে নিন। এরপর টি ব্যাগটি ফোসকার জায়গায় কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখুন। দিনে তিনবার করলে সুফল পাবেন।

৫. বরফের সেঁক: ফোসকার জ্বালা কমাতে বরফের সেঁক দিতে পারেন। একটি কাপড়ে বরফ বেঁধে নিয়ে ফোসকার ওপর আলতো করে চেপে রাখুন। ধীরে ধীরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন। টানা ১০-১৫ মিনিট বরফের সেঁক দিলে জ্বালা অনেকটা কমবে এবং ব্যথা থেকেও আরাম পাওয়া যাবে।


পেঁয়াজ কাটলে আর চোখে জল নয়! রইল যন্ত্রণা থেকে মুক্তির ৫ সহজ উপায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৭:২২:১৬
পেঁয়াজ কাটলে আর চোখে জল নয়! রইল যন্ত্রণা থেকে মুক্তির ৫ সহজ উপায়
ছবি: সংগৃহীত

দুর্গাপূজার অষ্টমীর নিরামিষ আহারের পরে নবমী আর দশমীতে পোলাও-মাংস-কালিয়া খাওয়ার চল রয়েছে। তবে আমিষ রান্নার সবচেয়ে বড় ঝক্কি হলো পেঁয়াজ কাটা, যা করতে গিয়ে চোখ দিয়ে জল না গড়ালে যেন রান্না শেষ হয় না। নবমীর সকালে তাই রইল পাঁচটি সহজ টিপস, যা পেঁয়াজ কাটার যন্ত্রণা থেকে চোখ দু'টিকে মুক্তি দেবে।

পেঁয়াজ কাটলে চোখ জ্বলে কেন?

পেঁয়াজ কাটার সময় চোখ জ্বালা করার প্রধান কারণ হলো এতে থাকা সালফার যৌগ (sulfur)। পেঁয়াজ কাটার সঙ্গে সঙ্গে এই যৌগটি বাতাসে মিশে যায় এবং বাতাসবাহিত হয়ে চোখের জলীয় অংশের সংস্পর্শে এলেই এক ধরনের অ্যাসিড তৈরি করে। এই অ্যাসিডই যাবতীয় জ্বালা, অস্বস্তি এবং চোখের জলের উৎস। চোখকে রক্ষা করতে হলে বাতাসে সালফার ছড়ানো বন্ধ করা প্রয়োজন, যা পুরোপুরি না হলেও কমানো সম্ভব।

পেঁয়াজ কাটার অস্বস্তি থেকে চোখ বাঁচানোর ৫ কৌশল

১. পেঁয়াজের গোড়া সরিয়ে ফেলুন: পেঁয়াজের সবচেয়ে বেশি সালফারের অংশটি থাকে গোড়ায়। অনেকেই পেঁয়াজ কেটে ওই অংশটি সামনেই ফেলে রাখেন। এর বদলে ওই অংশটি কাটার পরই সরিয়ে ফেললে বাতাসে সালফার ছড়াবে কম, চোখেও অস্বস্তি হবে না।

২. কাটার আগে ফ্রিজে রাখুন: পেঁয়াজ কাটার আগে তা ১০ মিনিট থেকে আধ ঘণ্টা পর্যন্ত ফ্রিজের ঠান্ডায় রেখে দিন। এতে পেঁয়াজ কাটার সময় তা থেকে সালফার নির্গত হওয়ার মাত্রা অনেক কমে।

৩. খোসা ছাড়িয়ে ঠান্ডা জলে: পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর পরে সেটি ঠান্ডা জলে ডুবিয়ে রাখুন ১০-১৫ মিনিট। এতেও সালফারের প্রভাব বেশ খানিকটা কমে যাবে।

৪. মুখে জল ভরে রাখা: গ্রামীণ এই টোটকাটি অনেকেই কার্যকরী বলে মানেন। পেঁয়াজ কাটার সময় মুখে জল ভরে রাখলে চোখে জলের জোগান বাড়ে। ফলে সালফারের কারণে অ্যাসিড তৈরি হলেও তা ক্রমাগত জলের প্রভাবে ধুয়ে যায় এবং জ্বালাভাব হতে দেয় না।

৫. পাখার সামনে কাটুন: পাখার সামনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ কাটলে পেঁয়াজের সালফার চোখ পর্যন্ত পৌঁছানোর আগেই অন্য দিকে সরে যায়। তাতেও চোখ স্বস্তি পাবে।

বোনাস টিপস: খুব ধারালো ছুরি ব্যবহার করলেও চোখের জ্বালা কমতে পারে। কারণ, ধারালো ছুরি ব্যবহার করলে পেঁয়াজের কম কোষ ভাঙে, ফলে খুব বেশি সালফার বেরিয়ে আসে না।


আজকের রাশিফল: ১ অক্টোবর দিনটি আপনার জন্য কেমন যাবে?

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৫:১৩:১৭
আজকের রাশিফল: ১ অক্টোবর দিনটি আপনার জন্য কেমন যাবে?
ছবি: সংগৃহীত

জীবনের প্রতিটি দিন নতুন কিছু সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। আজ ১ অক্টোবর, ২০২৫ দিনটি আপনার জন্য কেমন হতে পারে, কীভাবে সামলাবেন জীবন ও কাজের চ্যালেঞ্জগুলো, তা জানতে পড়ুন আজকের রাশিফল।

মেষ (২১ মার্চ-২০ এপ্রিল): আপনার পেশাগত প্রচেষ্টা আজ ফলপ্রসূ হবে এবং প্রয়োজনীয় কাজে গতি আসবে। কোনো ভালো কাজের অফার পেতে পারেন। তবে তীব্র আবেগ ক্ষমতার লড়াইকে সামনে আনতে পারে, বিশেষ করে ব্যক্তিগত লক্ষ্য সম্পর্কিত বিষয়ে।

বৃষ (২১ এপ্রিল-২০ মে): আজ আপনি আপনার কাজে অন্যদের প্রভাবিত করতে সক্ষম হবেন। বিদেশসংক্রান্ত কাজে ভালো ফল আশা করতে পারেন। আপনি নিজের জন্য আরও বেশি কিছু করার তাগিদ অনুভব করবেন এবং সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার অনুভূতি থাকবে।

মিথুন (২১ মে-২০ জুন): প্রত্যাশিত কাজে অগ্রগতি হবে। কাছের কারো সমস্যায় সহযোগিতা করতে হতে পারে। বিরূপ পরিস্থিতিও আপনি অনুকূলে নিয়ে আসতে পারবেন। কল্যাণমূলক কাজে আনন্দ পাবেন। দিনটি ইতিবাচক ও প্রাণবন্ত রাখুন।

কর্কট (২১ জুন-২০ জুলাই): আগের তুলনায় মানসিক চাপ কমবে। যৌথভাবে কিছু করার সুযোগ আসতে পারে। দাম্পত্য ক্ষেত্রে ভুল-বোঝাবুঝির অবসান হবে। ব্যবসায় মন্দা থাকলেও উন্নতির যোগ আছে। স্পর্শকাতর বিষয়ে ধৈর্য ধরুন।

সিংহ (২১ জুলাই-২১ আগস্ট): আজ নতুন কোনো কাজে হাত দেওয়া সহজতর হবে। কোনো কারণে পূর্বপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হতে পারে। প্রিয়জনের সঙ্গে আলোচনায় উত্তেজনা পরিহার করুন। স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিষয়ে অসতর্কতা এড়িয়ে চলুন।

কন্যা (২২ আগস্ট-২২ সেপ্টেম্বর): আজ অপ্রত্যাশিত কোনো কিছু পেতে পারেন। কাজকর্মে সাফল্য ও সুনাম বজায় থাকবে। প্রত্যাশা পূরণে বাধা দূর হবে। সাফল্যলাভের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুসারে অগ্রসর হতে হবে। বিনোদন ও রোমান্স শুভ।

তুলা (২৩ সেপ্টেম্বর-২২ অক্টোবর): পরিবারের মানুষের কাছে আপনার সততার পরিচয় দিতে পারবেন। কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অগ্রগতি হবে। কাজে উন্নতির যোগ ও সুনাম বৃদ্ধি পাবে। ভুল সংশোধনের সুযোগ পাবেন। নিজের শক্তির ওপর বিশ্বাস রাখুন।

বৃশ্চিক (২৩ অক্টোবর-২১ নভেম্বর): নতুন পরিকল্পনায় সাফল্যের ইঙ্গিত রয়েছে। কোনো যোগাযোগে ইতিবাচক ফল পেতে পারেন। ভাই-বোনের সহযোগিতা পাবেন। ব্যবসায় ভালো সুযোগ আসতে পারে। অতীতের কোনো কাজের সুফল এখন পেতে পারেন।

ধনু (২২ নভেম্বর-২০ ডিসেম্বর): কোনো প্রচেষ্টার ফল পেতে পারেন। আপনার আর্থিক অবস্থার উন্নতি হবে। পাওনা আদায়ে অগ্রগতি হতে পারে। আপনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে একটি নতুন উদ্যোগ চালু করতে পারেন। বুদ্ধি ও বিচক্ষণতার সঙ্গে কাজ করুন।

মকর (২১ ডিসেম্বর-১৯ জানুয়ারি): কোনো কাজের জন্য সম্মানিত হতে পারেন। সর্বত্র শুভ যোগাযোগ থাকবে। প্রিয়জনের সঙ্গে সময় ভালো কাটবে। মানসিকভাবে ভালো বোধ করবেন। সংকল্পের দৃঢ়তা অগ্রগতির পথ দেখাবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোবেন।

কুম্ভ (২০ জানুয়ারি-১৮ ফেব্রুয়ারি): আগের কোনো সমস্যার সমাধান পেতে পারেন। আপনার বাজেটের চেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করার সম্ভাবনা রয়েছে। অতীতের কোনো ঘটনা মনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিন।

মীন (১৯ ফেব্রুয়ারি-২০ মার্চ): কোনো শুভকাজে অংশগ্রহণ করতে পারেন। সবকিছু নতুন করে ভাবতে পারেন। শুভ পরিবর্তনকে আলিঙ্গন করুন এবং নতুন অভিজ্ঞতার জন্য উন্মুক্ত থাকুন। ক্লান্ত বোধ করলে বিশ্রামকে অগ্রাধিকার দিন।


চুল পাকা? নামীদামি কলপ নয়, নারকেল তেলে এই ১ চামচ দিলেই ম্যাজিক!

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৫:০৪:১০
চুল পাকা? নামীদামি কলপ নয়, নারকেল তেলে এই ১ চামচ দিলেই ম্যাজিক!
ছবি: সংগৃহীত

বৃষ্টি এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় মাথার ত্বকে ঘাম ও ময়লা লেগে থাকার কারণে চুল গোড়া থেকে দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে চুল পড়া বেড়ে যায়। যদি আপনি বিভিন্ন শ্যাম্পু বা পণ্যে ফল না পান, তবে কিছুদিন নারকেল তেল ও ফিটকিরির মিশ্রণ ব্যবহার করে দেখতে পারেন। চুল সুস্থ ও মজবুত রাখার জন্য নারকেল তেল ব্যবহার করা হলেও, যখন এতে ফিটকিরি যোগ করা হয়, তখন এর উপকারিতা দ্বিগুণ হয়।

ফিটকিরি ও নারকেল তেলের উপকারিতা

১. চুলের গোড়া মজবুত করে: নারকেল তেল চুলকে গোড়া থেকে পুষ্টি জোগায়। ফিটকিরি প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট এবং অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে, যার ফলে চুল পড়া উল্লেখযোগ্যভাবে কম হয়।

২. ছত্রাক ও খুশকি দূর করে: নারকেল তেলের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য এবং লরিক অ্যাসিড মাথার ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। ফিটকিরিতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বকের pH ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা খুশকি, চুলকানি, ফোঁড়া এবং ব্রণ দূর করে।

৩. চুলের বৃদ্ধি ও সতেজতা: নারকেল তেলে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। নারকেল তেলের সঙ্গে ফিটকিরি মিশিয়ে চুলে লাগালে চুল পাকা রোধ হয় এবং চুলের বৃদ্ধিও বজায় থাকে।

ব্যবহারের পদ্ধতি

একটি পাত্রে এক থেকে দুই টেবিল চামচ নারকেল তেল নিন। এতে এক চা চামচ ফিটকিরি গুঁড়ো যোগ করে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি কম আঁচে হালকা গরম করুন।

শ্যাম্পু করার আগে এই তেলটি আঙুল দিয়ে চুল এবং মাথার ত্বকে ভালো করে লাগান এবং ম্যাসাজ করুন। ভালোভাবে লাগানোর পর এক থেকে দুই ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর হালকা বা ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুবার এটি ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।


রসুনের গোপন শক্তি: এক কোয়া কি সত্যিই শরীরকে বদলে দিতে পারে?

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ২২:৫৪:৩৮
রসুনের গোপন শক্তি: এক কোয়া কি সত্যিই শরীরকে বদলে দিতে পারে?

রসুন আমাদের রান্নাঘরের খুব পরিচিত উপাদান, কিন্তু এর পুষ্টিগুণ, ঔষধিগুণ ও নিরাপদ ব্যবহারের নিয়মগুলো জানলে এটি একটি পরিকল্পিত সুপারফুডে পরিণত হতে পারে। প্রাচীন চিকিৎসায় রসুন ব্যবহৃত হয়েছে সংক্রমণ, হজম ও হৃদ্‌রোগে সহায়ক হিসেবে। আধুনিক গবেষণায়ও রসুনের সালফারসমৃদ্ধ বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ, বিশেষ করে অ্যালিসিন, ডায়ালাইল ডাইসালফাইড, এস অ্যালাইল সিস্টেইন ইত্যাদি স্বাস্থ্যতন্ত্রে বহুমাত্রিক প্রভাব ফেলে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। নিচে পুষ্টি থেকে ব্যবহার পদ্ধতি পর্যন্ত একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র দেওয়া হলো, যাতে তথ্যটি একই সঙ্গে ব্যবহারযোগ্য, সতর্কতাসহ এবং বাংলাদেশি খাদ্যাভ্যাসের সাথে মানানসই থাকে।

পুষ্টিগঠনের সারসংক্ষেপ

রসুনে থায়ামিন বা ভিটামিন বি১, রিবোফ্লাভিন বা বি২, নায়াসিন বা বি৩, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড বা বি৫, ভিটামিন বি৬, ফোলেট বা বি৯, সামান্য ভিটামিন সি, ম্যাঙ্গানিজ, কপার এবং ট্রেস মাত্রায় সেলেনিয়াম থাকে। সবচেয়ে বড় শক্তি আসে সালফার যৌগ থেকে, যা রসুন চূর্ণ বা চিবোলে অ্যালিনেজ এনজাইমের মাধ্যমে অ্যালিসিনে রূপ নেয়। অ্যালিসিনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং ভ্যাসোডাইলেটরি বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন জৈবিক প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখে।

বৈজ্ঞানিকভাবে উল্লেখযোগ্য সম্ভাব্য উপকার

রোগ প্রতিরোধক্ষমতা: অ্যালিসিন, ফ্ল্যাভোনয়েড ও সেলেনিয়াম ইমিউন সেলের কার্যকরিতা বাড়াতে সহায়ক বলে পর্যবেক্ষণ রয়েছে। সর্দি-কাশির সময়কাল এবং তীব্রতা কমাতে সহায়ক হতে পারে, যদিও ফলাফল সবার ক্ষেত্রে একরকম নাও হতে পারে।

হৃদ্‌স্বাস্থ্য: রসুনের সালফার যৌগ রক্তনালির প্রসারণে সহায়তা করে বলে ধারণা করা হয়, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অবদান রাখতে পারে। কিছু গবেষণায় এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল কমা এবং এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরল সামান্য বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে।

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রভাব: অ্যালিসিন বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ফাংগাস ও কিছু ভাইরাসের বিরুদ্ধে পরীক্ষাগারে কার্যকারিতা দেখিয়েছে। খাদ্যজনিত জীবাণু যেমন সালমোনেলা বা ই. কোলাইয়ের বিরুদ্ধে এটি প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে বলে প্রমাণ আছে, তবে রান্নাঘরের নিরাপত্তা চর্চাই প্রথম প্রতিরক্ষা।

রক্তে শর্করা ও ওজন নিয়ন্ত্রণ: প্রাথমিক গবেষণায় দেখা যায়, কাঁচা রসুন বা এক্সট্র্যাক্ট ইনসুলিন সিগন্যালিংয়ে সহায়ক হতে পারে। ডায়েট, ঘুম, ব্যায়াম ও ওষুধের সাথে রসুন যোগ হলে সামগ্রিক নিয়ন্ত্রণে অবদান রাখতে পারে।

অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ও ডিটক্স সাপোর্ট: রসুন গ্লুটাথিয়ন সংশ্লেষণ বাড়াতে এবং ফ্রি র‍্যাডিক্যাল কমাতে সহায়ক হতে পারে। ভারী ধাতু এক্সপোজারের কিছু প্রেক্ষাপটে সাপোর্টিভ প্রভাবের প্রমাণ আছে, তবে এটি কোনও একক চিকিৎসা নয়।

মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্র: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভ্যাসোডাইলেটরি প্রভাব স্মৃতিশক্তি ও মানসিক ক্লান্তি কমাতে সহায়ক হতে পারে বলে ছোট আকারের স্টাডিতে ইঙ্গিত আছে।

হরমোন ও প্রজনন স্বাস্থ্য: ইস্ট্রোজেন মড্যুলেশন, টেস্টোস্টেরন সাপোর্ট ও শুক্রাণুর মানোন্নয়ন সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ রয়েছে, তবে ব্যক্তিভেদে প্রতিক্রিয়া ভিন্ন হতে পারে।

কীভাবে খেলে উপকার বেশি

কাঁচা, চূর্ণ বা চিবিয়ে: রসুন কেটে বা চূর্ণ করে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিন। এ সময় অ্যালিনেজ সক্রিয় হয়ে অ্যালিসিন তৈরি হয়। এরপর কাঁচা অবস্থায় খেলে কার্যকারিতা তুলনামূলক বেশি থাকে।

রান্নায় সতর্কতা: উচ্চ তাপে দীর্ঘক্ষণ ভাজার ফলে অ্যালিসিন ভেঙে যায়। রান্নার শেষভাগে সামান্য সময়ের জন্য রসুন দিন, বা রান্নার পর কাঁচা কুচি ছড়িয়ে দিন।খালি পেটে গ্রহণ: যারা সহ্য করতে পারেন তাদের ক্ষেত্রে সকালে অল্প পরিমাণ কাঁচা রসুন উপকারী হতে পারে। ঝাঁঝ সহ্য না হলে মধু, দই বা ভর্তার সাথে মিশিয়ে নিন।

পরিমাণ নির্দেশনা: সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কের জন্য প্রতিদিন ১ থেকে ২ কোয়া কাঁচা রসুন অনেকের ক্ষেত্রে যথেষ্ট। সাপ্লিমেন্ট নিলে লেবেলড ডোজ মেনে চলুন। যাদের পাকস্থলীর সমস্যা আছে তাদের ধীরে ধীরে শুরু করা ভালো।

আচার ও গভীর তেলে ভাজা: জীবাণুনাশক প্রভাব কমে যেতে পারে। স্বাদ ও কিছু পুষ্টি থাকলেও থেরাপিউটিক উদ্দেশ্যে এটি সেরা রূপ নয়।

বাংলাদেশি খাদ্যাভ্যাসে স্মার্ট সংযোজন

  • ডাল তড়কা করা হলে চুলা নেভানোর ঠিক আগে চূর্ণ রসুন দিন।
  • মাছের ঝোল, ছোলা ভুনা, শাক-সবজির ভাজি বা ভর্তায় রান্নার শেষে কাঁচা কুচি ছড়িয়ে দিন
  • গার্লিক-দই ডিপ, গার্লিক-লেবু-শসা সালাদ বা মুড়ি মাখাতে কাঁচা রসুনের সামান্য কুচি যোগ করুন।
  • মুরগির ঝোলে রসুন প্রথমে হালকা ছেঁকে নিন, শেষে সামান্য কাঁচা কুচি দিয়ে গন্ধ ও পুষ্টি ধরে রাখুন।

যাদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন

গর্ভাবস্থা ও দুগ্ধদানকাল: কাঁচা রসুন অনেকের গ্যাসট্রিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া থেরাপিউটিক ডোজ নেবেন না।

পাকস্থলী বা অন্ত্রের সমস্যা: আলসার, অ্যাসিডিটি, বমি বা ডায়রিয়ার সময় কাঁচা রসুন বিরক্তি বাড়াতে পারে।

অ্যালার্জি: যাদের রসুনে অ্যালার্জি আছে তাদের জন্য পরিহার করাই নিরাপদ।

অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট বা রক্ত পাতলা করার ওষুধ: রসুন রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সার্জারির আগে রসুন সাপ্লিমেন্ট বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। থাইরয়েড ও কিডনি সমস্যা থাকলে বা একাধিক সাপ্লিমেন্ট চললে চিকিৎসকের সাথে মিলিয়ে নিন।

প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা ও বাস্তবতা

  • রসুন একা ক্যানসার সারায় না। এটি খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে, চিকিৎসার বিকল্প নয়।
  • রসুন ডিটক্সের সব কাজ করে না। পানীয় জল, ঘুম, ব্যায়াম ও সুষম খাদ্যের সাথে রসুন সহায়ক হতে পারে।
  • একসাথে অনেক রসুন খেলে উপকার বাড়ে না। অতিরিক্ত গ্রহণে বুকজ্বালা, পেটের অস্বস্তি ও মুখের দুর্গন্ধ বাড়ে।

একটি কার্যকর দিনপঞ্জি উদাহরণ

সকাল: আধা থেকে এক কোয়া কাঁচা রসুন চূর্ণ করে 10 থেকে 15 মিনিট রেখে দই বা মধুর সাথে খেয়ে নিন।

দুপুর বা রাত: ডাল, শাক বা ভর্তায় রান্না শেষের পর ১ কোয়া কাঁচা কুচি মিশিয়ে নিন।সপ্তাহে ১ থেকে ২ দিন বিরতি রাখুন যদি পাকস্থলীতে অস্বস্তি জন্মায়।

সংক্ষিপ্ত নিরাপত্তা বার্তা

রসুন একটি পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য উপাদান। এটি ওষুধ নয়। দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা, গর্ভাবস্থা, বড় ধরনের অপারেশন, অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট থেরাপি বা শক্তিশালী প্রেসক্রিপশনের সাথে রসুনের সাপ্লিমেন্ট যোগ করার আগে চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন। পরিমিত এবং ধারাবাহিক ব্যবহারই সর্বোত্তম।


দিনে তিনি কানাডায় সাধারণ মালি, রাতে আফ্রিকার এক গোত্রের রাজা!

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ১৯:৩৪:৩১
দিনে তিনি কানাডায় সাধারণ মালি, রাতে আফ্রিকার এক গোত্রের রাজা!
ছবি: সংগৃহীত

শুনতে সিনেমার গল্পের মতো মনে হলেও এটাই সত্যি। আফ্রিকার দেশ ঘানার 'আকান' নামক এক গোত্রের রাজা হলেন ষষ্ঠ সিফাস বানসা। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, তিনি দিনের বেলায় কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়াতে একজন সাধারণ মালি হিসেবে কাজ করেন।

প্রায় ৬০ বছর আগে তিনি পড়াশোনার জন্য জার্মানিতে যান এবং পরে কানাডায় স্থায়ী হন। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে, তার দাদা এবং বাবার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে তিনিই হন গোত্রের পরবর্তী রাজা। তবে নিজের দেশ ও মানুষকে তিনি ভোলেননি।

রাজা বানসা কানাডায় বাগান পরিচর্যার কাজ করে যা উপার্জন করেন, তার প্রায় পুরোটাই পাঠিয়ে দেন তার রাজ্যে। সেই টাকা দিয়ে তিনি স্কুল, ব্রিজ এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করেছেন। স্কাইপ (Skype) এবং ফোনের মাধ্যমে তিনি তার রাজ্যের মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখেন, বিচারকার্য চালান এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। তার এই দ্বৈত জীবন এবং নিজের মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও কর্তব্যের গল্প আজ বিশ্বজুড়ে ভাইরাল।

পাঠকের মতামত: