আঙুল ফোটানোর শব্দ নিয়ে কয়েক দশকের ভুল ভাঙল আধুনিক গবেষণায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ১৯:০৮:৫৭
আঙুল ফোটানোর শব্দ নিয়ে কয়েক দশকের ভুল ভাঙল আধুনিক গবেষণায়
ছবি : সংগৃহীত

আঙুল ফোটানোর অভ্যাসে হাড় মোটা হয়ে যাওয়া বা ভবিষ্যতে আর্থ্রাইটিস হওয়ার যে ভয় আমাদের দেখানো হয়, তা আসলে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিহীন। বিজ্ঞানীরা গবেষণার মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে, আঙুল বা পায়ের পাতা ফোটানোর সময় যে শব্দ তৈরি হয়, তা হাড়ের ঘর্ষণ বা তরুণাস্থির কোনো ক্ষতি থেকে হয় না। ২০১৫ সালে এমআরআই ইমেজিং ব্যবহার করে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, হাড়ের সন্ধিস্থল টানা বা প্রসারিত করলে সেখানে চাপ হঠাৎ কমে যায়।

আমাদের হাড়ের জোড়ায় সিনোভিয়াল ফ্লুইড নামে এক ধরণের পিচ্ছিল তরল থাকে। হাড়ের ফাঁকা জায়গা হঠাৎ বেড়ে গেলে সেখানে গ্যাসের একটি শূন্যস্থান বা বুদবুদ তৈরি হয়, যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ‘ট্রাইবোনিউক্লিয়েশন’ বলা হয়। এই বুদবুদ তৈরি হওয়ার মুহূর্তেই সেই পরিচিত ‘ফটফট’ শব্দ শোনা যায়। গবেষকরা একে অনেকটা ভ্যাকুয়াম বা শূন্যস্থান তৈরির সঙ্গে তুলনা করেছেন।

আঙুল ফোটালে বাতের ব্যথা হয়—এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করতে বিজ্ঞানী ডোনাল্ড উঙ্গার এক অনন্য পরীক্ষা চালিয়েছেন। তিনি টানা ৫০ বছর তাঁর বাঁ হাতের আঙুল দিনে দুবার করে ফোটালেও ডান হাতের আঙুল কখনোই ফোটাননি। দীর্ঘ পাঁচ দশক পর তিনি প্রমাণ করেন যে, দুই হাতের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই এবং কোনো হাতেই আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। এই গবেষণার জন্য তিনি ২০০৯ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে আইজি নোবেল পুরস্কারও লাভ করেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অভ্যাস অনেকের কাছে বিরক্তিকর মনে হতে পারে, তবে এটি হাড়ের কোনো ক্ষতির ইঙ্গিত দেয় না।


শীতের সুপারফুড মূলার অজানা উপকারিতা

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ১৩:৪৬:৪৪
শীতের সুপারফুড মূলার অজানা উপকারিতা
ছবি: সংগৃহীত

শীত মৌসুম মানেই টাটকা শাকসবজি, আর এই তালিকায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সবজি হলো মূলা। ঝাঁঝালো স্বাদ ও পানিসমৃদ্ধ এই মূলজাতীয় সবজিটি শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ায় না, বরং মানবদেহে বহুমুখী স্বাস্থ্য উপকারও এনে দেয়। খাদ্যতালিকায় নিয়মিত মূলা যুক্ত করলে ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে হৃদ্‌স্বাস্থ্য, হজম ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতায় ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মূলা কেন এত উপকারী

মূলা (বৈজ্ঞানিক নাম Raphanus sativus) সরিষা পরিবারভুক্ত একটি সবজি। সাধারণত লালচে খোসা ও ভেতরে সাদা অংশবিশিষ্ট এই সবজিটি বাজারে বেশি দেখা যায়। এতে রয়েছে আঁশ, ভিটামিন, খনিজ ও শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা দেহকে ফ্রি র‍্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।

১. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক

গবেষণায় দেখা গেছে, মূলায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও উদ্ভিজ্জ সক্রিয় উপাদান রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে। এটি অন্ত্রে গ্লুকোজ শোষণের হার কমাতে সাহায্য করে এবং শক্তি বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস পেতে পারে।

২. লিভার সুস্থ রাখতে কার্যকর

প্রাণীভিত্তিক গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, মূলায় থাকা গ্লুকোসিনোলেট ও আইসোথায়োসায়ানেট নামের যৌগ লিভারের কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এছাড়া মূলার লাল রঙের জন্য দায়ী অ্যান্থোসায়ানিন এবং কোএনজাইম কিউ১০ লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক।

৩. ক্যানসার প্রতিরোধে সম্ভাবনাময় খাদ্য

মূলার ঝাঁঝালো স্বাদের পেছনে থাকা কিছু প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদান ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশেষ করে স্তন ও প্রোস্টেট ক্যানসারের ক্ষেত্রে মূলার বীজে থাকা সালফোরাফেন কোষের ক্ষতিকর বৃদ্ধি দমন করতে সক্ষম হতে পারে।

৪. ছত্রাক সংক্রমণ প্রতিরোধে ভূমিকা

ল্যাবরেটরি পর্যায়ের গবেষণায় মূলার নির্যাস Candida albicans নামক ছত্রাকের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। যদিও এটি মানবদেহে সরাসরি প্রয়োগযোগ্য কিনা, তা নিশ্চিত করতে আরও গবেষণা প্রয়োজন, তবু ফলাফল আশাব্যঞ্জক।

৫. হৃদ্‌স্বাস্থ্য ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

মূলার পাতায় থাকা কিছু নির্যাস রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। বিশেষ কিছু জাতের মূলায় থাকা ট্রিগোনেলিন নামের উদ্ভিজ্জ উপাদান রক্তনালির স্বাস্থ্য রক্ষায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

৬. হজমশক্তি ও অন্ত্রের সুস্থতায় উপকারী

প্রাচীনকাল থেকেই পেটের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরসনে মূলার ব্যবহার প্রচলিত। আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, মূলার পলিস্যাকারাইড উপাদান প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে, যা উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বাড়ায় এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে।

৭. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

মূলার নির্যাস শরীরের প্রতিরক্ষা কোষ যেমন টি-সেল, বি-সেল ও ইমিউনোগ্লোবুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে। ফলে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণসহ নানা রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়।

৮. ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক সমাধান

মূলায় থাকা পলিফেনল ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ও দূষণের প্রভাব থেকে রক্ষা করে। এসব উপাদান ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে, বার্ধক্যের লক্ষণ কমাতে এবং প্রদাহ প্রতিরোধে সহায়ক।

পুষ্টিগুণে ভরপুর মূলা

ইউএসডিএ অনুযায়ী, আধা কাপ কাঁচা কাটা মূলায় থাকে মাত্র ৯ ক্যালরি। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পানি, আঁশ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম। কম ক্যালরির হওয়ায় এটি ডায়েট অনুসরণকারীদের জন্যও উপযোগী।

কীভাবে খাবেন মূলা

মূলা কাঁচা সালাদে, রান্নায়, ভাজি, স্যুপ কিংবা আচার হিসেবেও খাওয়া যায়। অনেকেই মূলার শাক ফেলে দিলেও গবেষণায় দেখা গেছে, এর পাতা অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যে বিশেষ উপকারী।

সতর্কতা ও সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

  • সরিষা পরিবারভুক্ত সবজিতে যাদের অ্যালার্জি আছে, তাদের ক্ষেত্রে মূলা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে
  • অতিরিক্ত কাঁচা মূলা খেলে কিছু মানুষের থাইরয়েড কার্যক্রমে প্রভাব পড়তে পারে
  • গর্ভবতী নারীদের কাঁচা মূলা বা কাঁচা অঙ্কুর খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে

গাজর খেলেই সুস্থতা, জানুন ৫টি বৈজ্ঞানিক উপকারিতা

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ১৩:০১:১২
গাজর খেলেই সুস্থতা, জানুন ৫টি বৈজ্ঞানিক উপকারিতা
ছবি: সংগৃহীত

শীত এলেই বাজারে ভরপুর হয়ে ওঠে কচকচে, মিষ্টি ও রসালো গাজর। শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক-সব বয়সী মানুষের কাছেই এই সবজিটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। স্বাদে যেমন অতুলনীয়, তেমনি পুষ্টিগুণেও গাজর এক অনন্য সবজি। চোখের যত্নে গাজরের ভূমিকার কথা বহুদিন ধরেই পরিচিত হলেও, এর স্বাস্থ্যগুণ যে এখানেই শেষ নয়, তা অনেকেই জানেন না।

মূলজাতীয় সবজি হিসেবে গাজর শরীরের জন্য বহুমাত্রিক উপকার বয়ে আনে। এটি এমন একটি খাবার যা একই সঙ্গে স্বাদ ও সুস্বাস্থ্যের সমন্বয় ঘটায়। কাঁচা সালাদ, রান্না কিংবা হালকা স্ন্যাকস সব ক্ষেত্রেই গাজরের ব্যবহার সহজ ও কার্যকর। এর উচ্চ পুষ্টিমান ও সহজলভ্যতা একে শীতের অন্যতম সেরা সুপারফুডে পরিণত করেছে।

গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন, খাদ্যআঁশ, পটাশিয়াম, ভিটামিন কে–১ এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এসব উপাদান শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে বিপাকক্রিয়া ঠিক রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

গাজরের পুষ্টিগুণ: কী রয়েছে এই সবজিতে?

গাজর মূলত বিটা-ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ-এর একটি সমৃদ্ধ উৎস। শরীরে প্রবেশ করার পর বিটা-ক্যারোটিন ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা চোখ ও ত্বকের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। পাশাপাশি এতে রয়েছে ভিটামিন সি, লুটেইন, জিয়াজ্যানথিন, ভিটামিন কে, খাদ্যআঁশ এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান।

ওজন কমাতে আগ্রহীদের জন্য গাজর একটি আদর্শ খাবার। কম ক্যালোরিযুক্ত হলেও এতে পুষ্টির ঘাটতি নেই। জাতীয় পুষ্টি ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ১০০ গ্রাম লাল গাজরে রয়েছে প্রায় ৩৮ কিলোক্যালোরি শক্তি, ৬.৭ গ্রাম শর্করা, ১ গ্রাম প্রোটিন, ০.৫ গ্রাম চর্বি, ৫ গ্রাম খাদ্যআঁশ, ৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ৪৫১ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ এবং প্রায় ২৭০৬ মাইক্রোগ্রাম বিটা-ক্যারোটিন।

গাজরের ৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা

১. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

গাজরে থাকা উচ্চমাত্রার ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। ফলে অপ্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ কমে যায়। পাশাপাশি এটি হজম প্রক্রিয়া সহজ করে ও বিপাকক্রিয়া সক্রিয় রাখে, যা ওজন কমাতে সহায়ক।

২. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

গাজরের ভিটামিন সি শরীরের ক্ষত সারাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করতে ভূমিকা রাখে। ভিটামিন এ শ্লেষ্মা ঝিল্লি সুস্থ রাখে, যা ভাইরাস ও জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিরোধ দেয়।

৩. চোখের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ

ভিটামিন এ-এর ঘাটতি রাতকানা ও চোখ শুষ্ক হওয়ার মতো সমস্যার সৃষ্টি করে। গাজরে থাকা লুটেইন ও জিয়াজ্যানথিন চোখের রেটিনা ও লেন্সকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। American Journal of Ophthalmology-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে দুই বারের বেশি গাজর খাওয়া নারীদের গ্লুকোমার ঝুঁকি ৬৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে।

৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের কারণে গাজর রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়ায় না। এতে প্রাকৃতিক মিষ্টতা থাকলেও এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাদ্যাভ্যাস টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে।

৫. হাড় শক্ত রাখতে সাহায্য করে

যদিও গাজরে ক্যালসিয়াম বা ফসফরাসের মাত্রা খুব বেশি নয়, তবু এতে থাকা ভিটামিন কে ও অন্যান্য খনিজ উপাদান হাড়ের গঠন ও মেরামতে সহায়তা করে। নিয়মিত গাজর খাওয়া হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।

শীতকালে গাজর নিঃসন্দেহে অন্যতম সেরা সুপারফুড। শুধু পুষ্টিগুণের জন্য নয়, সহজলভ্যতা ও বহুমুখী ব্যবহারযোগ্যতার কারণেও এটি বিশেষ গুরুত্ব পায়। কাঁচা, সিদ্ধ, ভাজা কিংবা স্যুপ ও সালাদ—সবভাবেই গাজর খাদ্যতালিকায় যুক্ত করা যায়। কম ক্যালোরি ও প্রাকৃতিক মিষ্টতার কারণে এটি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস হিসেবেও দারুণ।

এই শীতে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় গাজর রাখলে শরীর পাবে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের শক্তিশালী সমন্বয়।


ডায়েট না কি চিকিৎসা: কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার গোপন টিপস

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ১২:৪০:২৬
ডায়েট না কি চিকিৎসা: কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার গোপন টিপস
ছবি : সংগৃহীত

সুস্বাস্থ্যের জন্য রক্তে কোলেস্টেরলের ভারসাম্য রক্ষা করা অপরিহার্য। আমরা অধিকাংশ সময় এলডিএল বা ‘খারাপ কোলেস্টেরল’ নিয়ে উদ্বেগে থাকি, যা ধমনিতে জমে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ‘হাইপোলিপিডেমিয়া’ বা রক্তে অস্বাভাবিক কম কোলেস্টেরলও শরীরের জন্য সমান ক্ষতিকর। সাধারণত রক্তে মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ২০০ মিলিগ্রামের নিচে থাকা ভালো, তবে তা যদি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কমে যায়, তবে শরীরের হরমোন উৎপাদন এবং ভিটামিন ডি তৈরির প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল (HDL) শরীরের হরমোন নিয়ন্ত্রণ এবং চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন (এ, ডি, ই এবং কে) শোষণে সহায়তা করে। পুরুষের ক্ষেত্রে এই এইচডিএল-এর মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ৪০ মিলিগ্রাম এবং নারীর ক্ষেত্রে ৫০ মিলিগ্রামের নিচে নেমে গেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে। এর ফলে কেবল শারীরিক দুর্বলতাই নয়, বরং দুশ্চিন্তা, গভীর অবসাদ এবং ‘হেমারেজিক স্ট্রোক’-এর মতো ভয়াবহ সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ক্ষেত্রে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে তা গর্ভস্থ শিশুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এতে সময়ের আগে সন্তান জন্মদান (Preterm birth) অথবা জন্মের সময় শিশুর ওজন অস্বাভাবিক কম হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহার বা ডায়েটের ক্ষেত্রে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, কোলেস্টেরল খুব বেশি বেড়ে গেলে যেমন ব্যবস্থা নিতে হয়, ঠিক তেমনই তা অস্বাভাবিক কমে গেলেও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও প্রয়োজনে চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরি।


 শীতে দীর্ঘমেয়াদী কাশি এড়াতে জাদুকরী ৪ টিপস

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৯ ১২:৩৪:০৩
 শীতে দীর্ঘমেয়াদী কাশি এড়াতে জাদুকরী ৪ টিপস
ছবি : সংগৃহীত

শীতের রুক্ষ আবহাওয়ায় আমরা বেশিরভাগ সময় ঘরের ভেতরে কাটাই, আর এখানেই লুকিয়ে থাকে অ্যালার্জির মূল কারণগুলো। চিকিৎসকদের মতে, শীতকালীন অ্যালার্জি এবং সাধারণ মৌসুমি অ্যালার্জির লক্ষণগুলো অনেকটা একই রকম হলেও শীতকালে ঘরের ভেতরের 'ইনডোর অ্যালার্জেন' যেমন—বাতাসের ধুলিকণা, ডাস্ট মাইট, পোষা প্রাণীর লোম এবং তেলাপোকার মল বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। দীর্ঘ সময় জানালা বন্ধ রাখায় এবং স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে জন্মানো ছত্রাক বা ফাঙ্গাস এই সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে।

অ্যালার্জি বনাম সর্দি

চেনার উপায় অনেকেই সর্দি ও অ্যালার্জির মধ্যে গুলিয়ে ফেলেন। মনে রাখতে হবে, সর্দি হয় ভাইরাসের কারণে যা সাধারণত এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায় এবং এতে শরীর ব্যথা বা জ্বর হতে পারে। অন্যদিকে, অ্যালার্জি মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এবং এতে সাধারণত চোখ চুলকানো ও পানি পড়ার মতো লক্ষণ থাকে, যা সর্দিতে দেখা যায় না। অ্যালার্জির তীব্রতা বাড়লে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া, ত্বকে র‍্যাশ এবং শ্বাস নেওয়ার সময় শোঁ শোঁ শব্দ হতে পারে।

প্রতিরোধ ও প্রতিকার

এই সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে ঘরোয়া পরিচ্ছন্নতায় বিশেষ নজর দিতে হবে। বিছানার চাদর ও বালিশের কভারে ডাস্ট-প্রুফ কভার ব্যবহার করা এবং নিয়মিত গরম পানিতে ধোয়া অত্যন্ত জরুরি। ঘরের আর্দ্রতা ৩০ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে রাখতে ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। চিকিৎসায় সাধারণত সিটিরিজিন বা ফেক্সোফেনাডিনের মতো অ্যান্টিহিস্টামিন কার্যকর হয়। এছাড়া নাসাল স্প্রে এবং নিয়মিত পরিষ্কার পানিতে নাক ধোয়া বা 'নেটি পট' ব্যবহার করলে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়। তবে উপসর্গ কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে বা দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।


শীতে ত্বক উজ্জ্বল করার জাদুকরী ৩ উপায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ২১:২৫:৫৬
শীতে ত্বক উজ্জ্বল করার জাদুকরী ৩ উপায়
ছবি : সংগৃহীত

শীতের আগমনে বাতাসে আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় ত্বকের প্রাকৃতিক তেল শুকিয়ে গিয়ে তা হয়ে ওঠে নিষ্প্রাণ ও রুক্ষ। এই সময়ে ত্বকের প্রাণবন্ত ভাব ধরে রাখতে বিশেষজ্ঞরা প্রাকৃতিক উপাদানের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ করে কাঁচা দুধ, মধু এবং আলুর রস—এই তিনটি উপাদান শীতের শুষ্ক ত্বকের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। রাসায়নিক উপাদানে ভরা ফেসওয়াশের বদলে এই ঘরোয়া ক্লিনজারগুলো ত্বকের গভীরে গিয়ে ময়লা পরিষ্কার করার পাশাপাশি আর্দ্রতাও বজায় রাখে।

কাঁচা দুধের জাদুকরী ক্লিনজিং কাঁচা দুধ একটি প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে অতুলনীয়। এতে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বকের মৃত কোষ সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। একটি তুলোর বলে কাঁচা দুধ ভিজিয়ে পুরো মুখে ম্যাসাজ করলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ত্বকের জমে থাকা ময়লা দূর হয়। হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলার পর ত্বক হয়ে ওঠে সতেজ ও কোমল।

মধু ও আলুর রসের চমক মধু প্রাকৃতিক হিউমেক্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করে, যা বাতাস থেকে আর্দ্রতা টেনে নিয়ে ত্বকে লক করে দেয়। অন্যদিকে, আলুর রস প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে পরিচিত, যা রোদে পোড়া দাগ ও ডার্ক সার্কেল দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর। মধুর সাথে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বকের কালচে ভাব কমে উজ্জ্বলতা বাড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে শীতের তীব্র ঠান্ডাতেও ত্বকের পিএইচ ব্যালান্স ঠিক থাকে এবং কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই ত্বক থাকে স্বাস্থ্যকর ও লাবণ্যময়।


শীতে ত্বক উজ্জ্বল ও কোমল রাখার ৫টি সহজ উপায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ০৯:৫৪:৫৮
শীতে ত্বক উজ্জ্বল ও কোমল রাখার ৫টি সহজ উপায়
ছবি : সংগৃহীত

শীতের আগমন মানেই বাতাসে আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ত্বকের স্বাভাবিক তেল হারিয়ে গিয়ে রুক্ষতা বেড়ে যাওয়া। এই সময়ে যথাযথ যত্ন না নিলে ত্বক অকালেই বুড়িয়ে যেতে পারে এবং দেখা দিতে পারে চুলকানি বা চামড়া ওঠার মতো সমস্যা। রূপবিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে ত্বকের যত্নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো এর আর্দ্রতা ধরে রাখা। গোসলের ঠিক পর পরই যখন ত্বক কিছুটা ভেজা থাকে, তখন ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার বা বডি বাটার ব্যবহার করলে তা দীর্ঘক্ষণ ত্বককে নরম রাখে।

অনেকেই শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে খুব গরম পানিতে দীর্ঘক্ষণ গোসল করেন, যা ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। অতিরিক্ত গরম পানি ত্বকের প্রাকৃতিক তেলের আবরণ নষ্ট করে দেয়। তাই হালকা কুসুম গরম পানিতে দ্রুত গোসল শেষ করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। পাশাপাশি, ত্বকের শুষ্কতা কমাতে ক্ষারযুক্ত সাবান পরিহার করে মাইল্ড বা ময়েশ্চারাইজিং ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত। কেবল বাইরে থেকে ক্রিম মাখলে হবে না, ভেতর থেকেও ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে হবে। তাই তৃষ্ণা কম লাগলেও দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা জরুরি।

ঘরোয়া উপায়ে রূপচর্চা করতে চাইলে মধু, কাঁচা দুধ এবং অলিভ অয়েলের মিশ্রণ সপ্তাহে দুই দিন মুখে ও শরীরে ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে ত্বকের কালচে ভাব দূর হয় এবং এক ধরণের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরে আসে। বাইরে বের হওয়ার সময় শীতের মৃদু রোদকে অবহেলা করা ঠিক হবে না। সূর্যের ইউভি রশ্মি শীতকালেও ত্বকের সমান ক্ষতি করে, তাই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। এছাড়া হাত-পায়ের সুরক্ষায় মোজা বা মাফলার ব্যবহার করলে সরাসরি ঠান্ডা বাতাস ত্বককে আক্রমণ করতে পারে না। সঠিক জীবনযাপন আর একটু যত্নই পারে এই শীতেও আপনার সৌন্দর্যকে অক্ষুণ্ণ রাখতে।


বিদেশের মাটিতে বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষা: ২০২৬ সালের জন্য সেরা স্কলারশিপ

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ২১:৪৩:৩১
বিদেশের মাটিতে বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষা: ২০২৬ সালের জন্য সেরা স্কলারশিপ
ছবি : সংগৃহীত

বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য বছরের শেষে এক বিশাল সুখবর নিয়ে এসেছে কুইন এলিজাবেথ কমনওয়েলথ স্কলারশিপ (QECS) কর্তৃপক্ষ। ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য এই স্কলারশিপের আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা কমনওয়েলথভুক্ত বিভিন্ন দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মাস্টার্স বা স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে পড়াশোনা করার সুযোগ পাবেন। মেধাবী শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের একাডেমিক পরিবেশের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই প্রতিবছর এই স্কলারশিপ প্রদান করা হয়।

এই স্কলারশিপের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো এর আর্থিক সুবিধা। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পুরো টিউশন ফি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বহন করবে। এর বাইরেও শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে মাসিক জীবনযাত্রা নির্বাহের ভাতা (Stipend), যা তাঁদের দৈনন্দিন খরচ মেটাতে সাহায্য করবে। দেশ থেকে যাতায়াতের জন্য রিটার্ন এয়ার টিকিট বা বিমান ভাড়াও থাকছে এই স্কলারশিপের অন্তর্ভুক্ত। বিশেষ করে যারা গবেষণাধর্মী বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে চান, তাঁদের জন্য অতিরিক্ত গবেষণা অনুদান প্রদানের ব্যবস্থাও রয়েছে।

আবেদনের যোগ্যতা ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা গেছে যে, আবেদনকারীকে অবশ্যই কমনওয়েলথভুক্ত কোনো দেশের নাগরিক হতে হবে। আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র ও তথ্য নিয়ে আগামী ১৪ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখের মধ্যে অনলাইনলিংকের মাধ্যমে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। ভিন্ন সংস্কৃতি ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজেকে মেলে ধরার এই সুযোগটি মিস করতে চান না অনেক শিক্ষার্থীই।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, কুইন এলিজাবেথ কমনওয়েলথ স্কলারশিপের মতো সম্পূর্ণ ফান্ডেড প্রোগ্রামে সুযোগ পাওয়া একজন শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ারের জন্য মাইলফলক হতে পারে। এটি কেবল একটি ডিগ্রি নয়, বরং আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক তৈরির এক অনন্য সুযোগ। আগ্রহী প্রার্থীদের দেরি না করে এখনই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: কুইন এলিজাবেথ কমনওয়েলথ স্কলারশিপ


শীতে বাড়ছে মাইগ্রেনের তীব্র যন্ত্রণা: বাঁচার উপায় জানালেন চিকিৎসকরা

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ১২:১১:৫২
শীতে বাড়ছে মাইগ্রেনের তীব্র যন্ত্রণা: বাঁচার উপায় জানালেন চিকিৎসকরা
ছবি : সংগৃহীত

যাঁরা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের কাছে শীতকাল যেন এক আতঙ্কের নাম। মাথার এক পাশ থেকে শুরু হওয়া তীব্র দপদপানি ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং আলো বা শব্দের প্রতি তীব্র অস্বস্তি—সব মিলিয়ে জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে বায়ুমণ্ডলের চাপ পরিবর্তন এবং ঠান্ডা বাতাসের কারণে মাথার ত্বক ও ঘাড়ের রক্তনালীগুলো সংকুচিত হয়ে যায়। এই সংকোচন ট্রাইজেমিনাল স্নায়ুপথে এক ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি করে, যা মাইগ্রেনের অসহ্য ব্যথার মূল কারণ হিসেবে কাজ করে।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শীতকালে ঘর ও বাইরের তাপমাত্রার বড় ব্যবধান শরীরের ভাস্কুলার সিস্টেমের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। গরম ঘর থেকে হঠাৎ কনকনে ঠান্ডা বাতাসে বের হলে রক্তনালীর দ্রুত সংকোচন-প্রসারণ ঘটে, যা তীব্র মাথাব্যথা শুরু করতে পারে। এছাড়া শীতকালে তৃষ্ণা কম পাওয়ার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়। পর্যাপ্ত পানির অভাবে মস্তিষ্কের টিস্যুগুলো সংকুচিত হয়ে পড়ে, যার ফলে মাইগ্রেনের ব্যথা আরও কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

এই কষ্টদায়ক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিকিৎসকরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন। প্রথমত, শীতের অলসতা কাটিয়ে প্রতিদিন শরীরকে হাইড্রেট রাখতে অন্তত ৭-৮ গ্লাস পানি পান নিশ্চিত করতে হবে। বাইরে বের হওয়ার সময় কান ও মাথা মাফলার বা টুপি দিয়ে ভালোভাবে ঢেকে রাখা জরুরি, যাতে সরাসরি ঠান্ডা বাতাস স্নায়ুতে আঘাত করতে না পারে। পাশাপাশি চা বা কফির মতো অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় এবং জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে সবুজ শাকসবজি ও মৌসুমি ফল খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে।

এছাড়া আধুনিক জীবনযাত্রায় দীর্ঘক্ষণ স্মার্টফোন বা ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা মাইগ্রেনকে আরও উসকে দেয়। চিকিৎসকদের মতে, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা গভীর ঘুম মাইগ্রেন প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্যথা না কমে এবং দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা চলতেই থাকে, তবে অবহেলা না করে দ্রুত স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। সঠিক জীবনযাপন ও সর্তকতাই পারে পৌষের এই তীব্র শীতে আপনাকে মাইগ্রেনমুক্ত রাখতে।


ফোনের স্ক্রিনে বন্দি শৈশব: ১০ হাজার শিশুর ওপর গবেষণায় ভয়ংকর তথ্য

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৬ ১১:৪০:১৫
ফোনের স্ক্রিনে বন্দি শৈশব: ১০ হাজার শিশুর ওপর গবেষণায় ভয়ংকর তথ্য
ছবি : সংগৃহীত

তথ্যপ্রযুক্তির এই স্বর্ণযুগে স্মার্টফোন এখন বিনোদন কিংবা যোগাযোগের মাধ্যম ছাড়িয়ে শিশুদের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত একটি বৃহৎ ও দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা অভিভাবকদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। ১০ হাজারেরও বেশি শিশুর ওপর চালানো এই বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে যে যেসব শিশু ১২ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই নিজের ব্যক্তিগত স্মার্টফোন হাতে পেয়েছে, তাদের মধ্যে অবসাদ, স্থূলতা এবং অনিদ্রার মতো সমস্যা অনেক বেশি প্রকট। গবেষকরা বলছেন যে শিশুর বয়স যত কম হবে, স্মার্টফোনের নীল আলোর নেতিবাচক প্রভাব তাদের মস্তিষ্কে তত গভীর ক্ষত তৈরি করবে।

গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে শৈশব ও কৈশোর হলো মানুষের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের সবচেয়ে সংবেদনশীল সময়। এই বয়সে শিশুদের পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং সামাজিক মেলামেশা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু ছোট বয়সে ফোন পাওয়ার ফলে শিশুরা দিনের বেশিরভাগ সময় স্ক্রিনের সামনে কাটিয়ে দিচ্ছে যার ফলে তাদের বাইরের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন শরীরের ওজন বেড়ে স্থূলতা তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে ঘুমের স্বাভাবিক ছন্দ বিঘ্নিত হওয়ায় শিশুরা খিটখিটে মেজাজের ও অস্থির প্রকৃতির হয়ে উঠছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন যে ১২ বছরের আগে ফোন ব্যবহারকারী শিশুদের মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা বা কনসেনট্রেশন পাওয়ার আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়। দীর্ঘক্ষণ ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে তাদের মেধা ও আচরণের বিকাশে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। বিপরীতে যেসব শিশু ১২ বছর বা তার পরবর্তী সময়ে প্রথম ফোন হাতে পেয়েছে, তারা তুলনামূলকভাবে মানসিকভাবে অনেক বেশি স্থিতিশীল এবং সামাজিক দক্ষতাসম্পন্ন বলে গবেষণায় দেখা গেছে। ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার শিশুদের কল্পনাশক্তির জগৎকেও ছোট করে ফেলছে যা তাদের সৃজনশীলতাকে নষ্ট করছে।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সমাজবিজ্ঞানীরা অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁরা বলছেন যে শিশুদের হাতে ফোনের বদলে বই কিংবা খেলার সরঞ্জাম তুলে দেওয়া উচিত। অন্তত ১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের ব্যক্তিগত স্মার্টফোন থেকে দূরে রাখা গেলে তাদের ভবিষ্যৎ মানসিক স্বাস্থ্য অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকবে। ডিজিটাল এই যুগে প্রযুক্তির ব্যবহার অস্বীকার করার উপায় নেই ঠিকই, তবে বয়সের পরিপক্বতা আসার আগেই স্মার্টফোনের অবাধ জগৎ শিশুর মানসিক ভারসাম্যের জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

পাঠকের মতামত:

ব্যক্তিগত দায় বনাম প্রাতিষ্ঠানিক দায়: দায়মুক্তির এক রাজনৈতিক সংস্কৃতি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের ঘটনা কাগজে পড়লে প্রথমে মনে হয় এটা যেন কোনো যুদ্ধের খবর। এক তরুণকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে হাত–পা প্রায়... বিস্তারিত