পৃথিবীর বাইরেও কি প্রাণ আছে? কুরআন, হাদিস ও বিজ্ঞান কী বলছে?

মানব মনকে বহু শতাব্দী ধরে আলোড়িত করা একটি প্রশ্ন – আমাদের এই পৃথিবী কি মহাবিশ্বে প্রাণের একমাত্র ঠিকানা? নাকি বিশাল এই ব্রহ্মাণ্ডে আরও কোথাও জীবনের স্পন্দন রয়েছে? প্রায় দেড় হাজার বছর আগে পবিত্র কোরআনে এমন কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছিল, যা সেই সময়ে সাধারণ মানুষ বা এমনকি কোরআনের ব্যাখ্যাকারকদেরও বুঝতে বেগ পেতে হয়েছে। অথচ আধুনিক বিজ্ঞান আজ সেসব ধারণাকেই নতুন করে বিশ্লেষণ করছে।
বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে মহাবিশ্ব ও প্রাণের অনুসন্ধান:
বিজ্ঞানীরা মহাকাশে ১০০ বিলিয়নেরও বেশি গ্যালাক্সি এবং অসংখ্য এক্সোপ্লানেটের (Exoplanet) সন্ধান পেয়েছেন। এসব এক্সোপ্লানেটের অনেকগুলোই পৃথিবীর মতো বাসযোগ্য হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু গ্রহে পানির উপস্থিতি নিয়েও তারা আশাবাদী। ইউএপি (UAP) বা ইউএফও (UFO) - এর মতো অশনাক্ত উড়ন্ত বস্তুর উপস্থিতি মহাকাশ বিজ্ঞানীদের ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে গবেষণা করতে বাধ্য করেছে। মাল্টিভার্স থিওরি অনুযায়ী, আমাদের মহাবিশ্বের বাইরেও অসংখ্য মহাবিশ্ব থাকতে পারে, যেখানে পৃথিবীর মতো আরও অনেক বাসযোগ্য গ্রহ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বিজ্ঞানীরা কেপলার ৬৯সি, কেপলার ৪৫২বি, কেপলার ৬২এফ-সহ আরও অনেক এক্সোপ্লানেটের নাম উল্লেখ করেছেন, যেখানে জীবন বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, পৃথিবী থেকে ১৪২ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মঙ্গল গ্রহেও প্রাচীন জলাধারের প্রমাণ এবং কিছু অণুজীবীয় জীবনের সম্ভাবনার আলামত পাওয়া গেছে।
কোরআন ও হাদিসের আলোকে ভিনগ্রহে প্রাণের ধারণা:
পবিত্র কোরআন ও হাদিসেও পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব সম্পর্কে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে:
সাত আসমান ও অনুরূপ পৃথিবী (সূরা তালাক, আয়াত ১২): এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা "সাত আসমান এবং এগুলোর অনুরূপ পৃথিবী" সৃষ্টির কথা বলেছেন। প্রাচীন অনেক তাফসীরকারক এই 'সাত পৃথিবী' বলতে পৃথিবীর সাতটি স্তর বা মহাদেশকে বুঝিয়েছেন। তবে বিস্ময়করভাবে, পূর্বসূরি তাফসীরকারকদের কেউ কেউ এটি পৃথিবীর মতো আরও অনেক পৃথিবীর অস্তিত্ব হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁদের মতে, এখানে 'সাত' সংখ্যাটি সুনির্দিষ্ট নয়, বরং বহুত্ব জ্ঞাপক, অর্থাৎ বহু বাসযোগ্য গ্রহের দিকে ইঙ্গিত করে।
প্রাণী ছড়িয়ে দেওয়ার কথা (সূরা আশ-শূরা, আয়াত ২৯): এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং এতদুভয়ের মধ্যে যেসব জীবজন্তু (দাব্বাহ) ছড়িয়ে দিয়েছেন, সেগুলির কথা উল্লেখ করেছেন। 'দাব্বাহ' বলতে শরীরী, চতুষ্পদ বা দ্বিপদী চলন্ত জীবকে বোঝানো হয়েছে। মহাকাশে এসব প্রাণী ছড়িয়ে দেওয়ার অর্থ হলো, আকাশমন্ডলীতে অবস্থিত বিভিন্ন গ্রহে আল্লাহ তাআলা এসব প্রাণী সৃষ্টি করেছেন। এটি ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের ব্যাপারে একটি সুস্পষ্ট আয়াত।
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসের ব্যাখ্যা: বিশিষ্ট সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) সূরা তালাকের ১২ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন যে, সাতটি পৃথিবী আছে এবং "প্রতিটিতে তোমাদের মত নবী আছেন, তাদেরও নূহ আছেন যেমন তোমাদের ছিল, তাদেরও ঈসা ও ইব্রাহিম আছেন"। যদিও অনেকে এই হাদিসটিকে দুর্বল মনে করেন, কিন্তু কোরআনের আয়াতের অর্থের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়ায় বেশিরভাগ মুহাদ্দিসগণ এটি গ্রহণ করেছেন। এই ব্যাখ্যা নূহ, ইব্রাহিম ও ঈসা (আ.)-এর উল্লেখকে রূপকভাবে তুলে ধরে, যার অর্থ হলো ভিনগ্রহের বাসিন্দাদেরও আদিপিতা, বংশ পরম্পরা এবং বিশিষ্টজন থাকবেন, যেমনটা পৃথিবীতে আছে।
আধুনিক বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের ফলে এই প্রাচীন ব্যাখ্যাগুলো এখন অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে উঠেছে। পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের সরাসরি প্রমাণ এখনও না পাওয়া গেলেও, বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, সেদিন হয়তো খুব বেশি দূরে নয়, যেদিন ভিনগ্রহে প্রাণের স্পন্দনের খবর নিয়ে তারা বিশ্ববাসীর সামনে হাজির হবেন। এই অনুসন্ধান প্রাচীন জ্ঞান এবং আধুনিক বিজ্ঞানের এক চমৎকার সেতুবন্ধন তৈরি করেছে।
চীনের প্রথম সম্রাটের সমাধি: রহস্য ঘেরা যে কবর খুলতে আজও ভয়ে কাঁপে বিজ্ঞানীরা!

মোঃ আশিকুজ্জামান
২,০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চীনের প্রথম সম্রাট ছিন শি হুয়াং-এর সমাধি আজও এক অমীমাংসিত রহস্যের আড়ালে ঢাকা। বিশাল এক মাটির ঢিবির নিচে, বিখ্যাত টেরাকোটা আর্মির ঠিক পাশেই লুকিয়ে আছে এই সুবিশাল ভূগর্ভস্থ সাম্রাজ্য। প্রচলিত আছে, এর ভেতরে এমন সব ভয়ঙ্কর রহস্য লুকিয়ে আছে, যা মানবজাতির জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। এমনকি আধুনিক বিজ্ঞানের এই যুগে এসেও বিজ্ঞানীরা এর দরজা খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। ঠিক কী কারণে এই প্রাচীন সমাধির অন্ধকার এত ভয়ংকর, তা নিয়েই এই বিশেষ প্রতিবেদন।
এক অদম্য সম্রাট এবং তার অমরত্বের ভয়:
খ্রিষ্টপূর্ব ২৫৯ সালে জন্ম নেওয়া ইয়েং ঝেং, যিনি পরে ছিন শি হুয়াং নামে পরিচিত হন, মাত্র ১৩ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন। প্রায় ১০ বছরের সামরিক অভিযানে তিনি চীনের ছয়টি প্রতিদ্বন্দ্বী রাজ্যকে পরাজিত করে খ্রিষ্টপূর্ব ২২৬ সালে সমগ্র চীনকে এক পতাকার নিচে নিয়ে আসেন। তিনিই ছিলেন চীনের প্রথম সম্রাট, যিনি একক লিপি, একক মুদ্রা এবং একক পরিমাপের প্রবর্তন করেন। তার সময়েই চীনের মহাপ্রাচীরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
কিন্তু এই পরাক্রমশালী সম্রাটের ভেতরে লুকিয়েছিল মৃত্যুর এক গভীর ভয়। অমরত্বের নেশায় তিনি ঋষি, চিকিৎসক এবং রসায়নবিদদের দূরদূরান্তে পাঠাতেন অমৃতের সন্ধানে। এমনকি চিরজীবী হওয়ার আশায় পারদের মতো বিষাক্ত পদার্থও তিনি পান করতেন। মৃত্যুকে পরাজিত করতে না পেরে, তিনি মৃত্যুর পরেও যেন রাজত্ব করতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে শুরু করেন এক বিশাল ভূগর্ভস্থ সাম্রাজ্য নির্মাণের পরিকল্পনা।
ভূগর্ভস্থ সাম্রাজ্যের নির্মাণ ও তার প্রতিরক্ষা:
সম্রাট ছিন শি হুয়াং শুধু একটি সাধারণ কবর চাননি, তিনি চেয়েছিলেন মৃত্যুর পরেও তার নিজস্ব একটি সাম্রাজ্য থাকবে। প্রায় ৭ লাখ শ্রমিক, সৈন্য, কারিগর এবং বন্দীদের নিয়ে প্রায় ৪০ বছর ধরে চলেছিল এই বিশাল নির্মাণযজ্ঞ। লি পর্বতের কাছে এই সমাধির স্থান বেছে নেওয়া হয়েছিল শুভ প্রতীক এবং মূল্যবান ধাতু পাওয়ার আশায়।
রাজধানী শিয়াং ইয়াং শহরের আদলে তৈরি এই ভূগর্ভস্থ শহরে ছিল প্রাসাদ, শহরের দেওয়াল, টাওয়ার, কোর্টইয়ার্ড, বাগান, প্রশাসনিক ভবন এবং রাজকীয় ঘোড়ার আস্তাবল। মনে করা হতো, সম্রাট মৃত্যুর পরেও এখান থেকেই শাসনকার্য চালাবেন। মূল সমাধির পূর্ব দিকে স্থাপন করা হয়েছিল তার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কারণ পূর্ব দিকেই ছিল তার পরাজিত ছয়টি শত্রু রাজ্য।
টেরাকোটা আর্মি: মাটির সৈনিকদের বিস্ময়কর বাহিনী:
১৯৭৪ সালে চীনের শিয়ান শহরের কাছে কিছু কৃষক কুয়ো খুঁড়তে গিয়ে ঘটনাক্রমে মাটির নিচে কিছু ভাঙা মূর্তি খুঁজে পান। এরপর শুরু হওয়া খনন কাজে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসে হাজার হাজার মাটির তৈরি সৈনিক, যারা আজ 'টেরাকোটা আর্মি' নামে পরিচিত। এখনো পর্যন্ত ৮,০০০-এর বেশি যোদ্ধা আবিষ্কৃত হয়েছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, কোনো দুটি সৈনিকের চেহারা একরকম নয়; প্রতিটি মূর্তির মুখের অভিব্যক্তি, গোঁফ, চুল এবং পোশাক আলাদা। ইতিহাসবিদরা মনে করেন, এগুলো আসল সৈন্যদের আদলেই তৈরি করা হয়েছিল। শুধু সৈনিক নয়, ব্রোঞ্জের রথ, ঘোড়া, জেনারেল, অশ্বারোহী, ধনুকধারী, নর্তক, অ্যাক্রোব্যাট, সঙ্গীতশিল্পী, রাজকীয় কর্মচারীদের প্রতিরূপও এখানে পাওয়া গেছে, যেন সম্রাট মৃত্যুর পরেও তার রাজকীয় জীবন উপভোগ করতে পারেন।
কেন মূল সমাধি আজও খোলা হয়নি?
টেরাকোটা আর্মি আবিষ্কৃত হলেও, মূল পিরামিড আকৃতির সমাধি কক্ষটি আজও অক্ষত রয়েছে। বিজ্ঞানীরা, প্রত্নতত্ত্ববিদরা বা সরকার কেউই সেই মূল সমাধি খুলতে সাহস করেননি। এর প্রধান দুটি কারণ হলো:
১. পারদের ভয়াবহ উপস্থিতি: বিখ্যাত চীনা ঐতিহাসিক সিমা কিয়ান, যিনি সম্রাটের মৃত্যুর ১০০ বছর পর জন্মেছিলেন, তার লেখায় উল্লেখ করেছেন যে সমাধির ভেতরে নদী ও সমুদ্রের মতো তরল পারদ দিয়ে পূর্ণ ছিল। ২০০৯ সালের দিকে বিজ্ঞানীরা সমাধির চারপাশের মাটির রাসায়নিক পরীক্ষা করে স্বাভাবিকের চেয়ে শত গুণ বেশি পারদের উপস্থিতি খুঁজে পান, যা মারাত্মক বিষাক্ত। যদি এই পারদের বাষ্প আজও ভেতরে আটকে থাকে, তবে সমাধি খুললেই তা ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে। সামান্য পরিমাণ পারদবাষ্পও প্রাণঘাতী হতে পারে।
২. প্রাচীন ফাঁদের ভয়: সিমা কিয়ানের লেখায় আরও উল্লেখ আছে, সমাধিটি ভয়াবহ সব ফাঁদ দিয়ে সুরক্ষিত, যেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তীর ছোঁড়ার ব্যবস্থা রয়েছে, যা অনুপ্রবেশকারীর জন্য নিশ্চিত মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ২০০০ বছর পরেও এই ফাঁদগুলো সক্রিয় থাকতে পারে এবং ভুল করে যদি কেউ তা সক্রিয় করে ফেলে, তবে তার মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত।
ভবিষ্যতের ভাবনা:
বর্তমানে বিজ্ঞানীরা রাডার স্ক্যান, রোবট প্রোবের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাইরে থেকেই সমাধির ভেতরের মানচিত্র তৈরি করছেন। এটি শুধুমাত্র ধনসম্পদের বিষয় নয়, এখানে লুকিয়ে আছে চীনের ইতিহাস, বিশ্বাস এবং সম্রাটের অমরত্বের স্বপ্ন। অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন, হয়তো ভবিষ্যতে প্রযুক্তি আরও উন্নত হলে একদিন এটি খোলা সম্ভব হবে। আবার অনেকে মনে করেন, ভেতরের জিনিসগুলো অত্যন্ত নাজুক (যেমন, টেরাকোটা আর্মির গায়ের রঙ বাতাসের সংস্পর্শে আসতেই ধূসর হয়ে গিয়েছিল)। তাই এটিকে অক্ষত রাখাই হয়তো বুদ্ধিমানের কাজ।
এই বিস্ময়কর সমাধি মানবজাতির জন্য এক বিরাট রহস্য হয়েই রয়ে গেছে, যা হয়তো আরও বহু বছর ধরে আমাদের কৌতুহল জাগিয়ে রাখবে।
রহস্যময় পাণ্ডুলিপি কোডেক্স জাইগাস: কেন এটি ‘শয়তানের বাইবেল’ নামে পরিচিত?
১৬৪৮ সালের জুলাই মাসে, ত্রিশ বছরের যুদ্ধের প্রায় শেষ দিকে সুইডিশ সৈন্যরা প্রাগ শহর দখল করে নেয় এবং শহরের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদগুলো বাজেয়াপ্ত করে। সেগুলোর মধ্যে ছিল কোডেক্স জাইগাস (Codex Gigas)—ইউরোপীয় মধ্যযুগের বৃহত্তম জীবিত আলোকিত পাণ্ডুলিপি। প্রায় ৩ ফুট উঁচু, দেড় ফুটেরও বেশি চওড়া এবং প্রায় ৯ ইঞ্চি পুরু এই পাণ্ডুলিপির ওজন ছিল প্রায় ১৬৫ পাউন্ড। এর অসাধারণ কারুকার্যের জন্য এটি একটি ব্যতিক্রমী সৃষ্টি।
তবে শুধুমাত্র এর বিশাল আকারের জন্যই এর এত খ্যাতি নয়। বইটির ভেতরে একটি একক পৃষ্ঠাজুড়ে রয়েছে শয়তান (সাতান)-এর একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিকৃতি। এই বৈশিষ্ট্যটি শত শত বছর ধরে পাণ্ডুলিপিটিকে আকর্ষণ ও ভয়ের উৎস করে তুলেছে এবং এটি ‘শয়তানের বাইবেল’ (Devil’s Bible) নামে পরিচিতি লাভ করেছে।
এক খণ্ডে বাঁধা এক লাইব্রেরি
লাতিন ভাষায় ‘দৈত্যাকার বই’ অর্থবহনকারী কোডেক্স জাইগাস বর্তমানে সুইডেনের জাতীয় গ্রন্থাগারে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে সংরক্ষিত আছে। পণ্ডিতরা বিশ্বাস করেন, এটি ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে, অর্থাৎ ১২০৪ থেকে ১২৩০ সালের মধ্যে বোহেমিয়া রাজ্যে (যা এখন চেক প্রজাতন্ত্র) তৈরি করা হয়েছিল।
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিউ হটন জানান, পাণ্ডুলিপির প্রথম পৃষ্ঠায় লেখা একটি নোট থেকে জানা যায়, বেটম্যান আর্কাইভের (Bettmann Archive) বেনেক্টাইন মঠ ছিল এর প্রাচীনতম পরিচিত মালিক। ১৮৫৩ সালে এই পাণ্ডুলিপিটি বন্ধক হিসেবে অন্য একটি মঠে দেওয়া হয়েছিল।
এর ৩০০টিরও বেশি জীবিত পাতা প্রায় ১৬০টি বাছুর বা গাধার চামড়া দিয়ে তৈরি, যা মসৃণ ঝিল্লিতে প্রস্তুত করা হয়েছিল। হস্তলিপিবিদ মাইকেল গুল্লিক-এর গবেষণা অনুযায়ী, অভিন্ন হাতের লেখা এবং পোকামাকড়ের বাসা গুঁড়ো করে তৈরি এক ধরনের কালির ব্যবহার প্রমাণ করে এটি একক লেখকের কাজ। সুইডেনের জাতীয় গ্রন্থাগারের অনুমান, এই পাণ্ডুলিপিটি শেষ করতে কমপক্ষে ২০ বছর, এমনকি ৩০ বছরও লাগতে পারত।
পাণ্ডুলিপিটি নিজেই একটি পোর্টেবল লাইব্রেরির মতো। এটিতে বাইবেলের পাঠ্যের সঙ্গে ঐতিহাসিক, চিকিৎসা এবং রেফারেন্সমূলক বিভিন্ন উপাদান যুক্ত করা হয়েছে। এতে প্রথম শতাব্দীর ইতিহাসবিদ ফ্লাভিয়াস জোসেফাস-এর লেখা ‘অ্যান্টিকুইটিজ অফ দ্য জিউস’, সিডোর অফ সেভিলের মধ্যযুগীয় বিশ্বকোষ ‘ইটিমোলজিয়া’ (Etymologiae), কনস্টানটাইন দ্য আফ্রিকানের চিকিৎসা গ্রন্থ, ক্যালেন্ডার, ভূত তাড়ানোর ফর্মুলা এবং বোহেমিয়ার ইতিহাস সম্পর্কিত ‘ক্রোনিকা বোয়েমোরাম’ (Chronica Boemorum)-এর মতো নানা কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
শয়তান: বিশদ বিবরণের মধ্যে রহস্য
শয়তানের প্রতিকৃতিটি কোডেক্স জাইগাস-এর প্রায় মাঝামাঝি অংশে, স্বর্গের শহরটির সমান বড় একটি ছবির উল্টো দিকে দেখা যায়। এই শিংওয়ালা মূর্তিটি পাণ্ডুলিপির উজ্জ্বল চিত্রাঙ্কনের তুলনায় অনুজ্জ্বল রঙে আঁকা এবং এটি প্রায় পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে বিস্তৃত। কিছু পণ্ডিত বিশ্বাস করেন, পরিত্রাণ এবং অভিশাপের মধ্যে পছন্দের কথা মনে করিয়ে দিতে এই চিত্রটি ইচ্ছাকৃতভাবে এখানে রাখা হয়েছিল।
পাণ্ডুলিপিটিকে ঘিরে একটি কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। বলা হয়, প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করার অপরাধে জীবন্ত প্রাচীর দিয়ে গেঁথে ফেলার শাস্তি পাওয়া এক সন্ন্যাসী, এক রাতের মধ্যে মঠের গৌরব বাড়াতে পারে এমন একটি বই তৈরি করার প্রতিজ্ঞা করে ক্ষমা চেয়েছিলেন। সময়মতো কাজ শেষ করতে না পারায় তিনি শয়তানের সাহায্য চান এবং কৃতজ্ঞতা স্বরূপ শয়তানের প্রতিকৃতি এঁকে দেন।
যুদ্ধ ও আগুনের মধ্য দিয়ে যাত্রা
১৫৯৪ সালে রোমান সম্রাট রুডলফ দ্বিতীয় পাণ্ডুলিপিটি তার সংগ্রহে যুক্ত করেন। সুইডিশ সৈন্যরা প্রাগ দখলের সময় এটি বাজেয়াপ্ত করে স্টকহোমে নিয়ে যায়। ১৬৯৭ সালে স্টকহোমের রাজকীয় দুর্গে আগুন লাগলে, এটিকে বাঁচাতে একজন উদ্ধারকারী জানালা দিয়ে পাণ্ডুলিপিটি বাইরে ছুঁড়ে মারেন। এতে পাণ্ডুলিপিটি আগুনে বাঁচলেও এর বাঁধাই ছিঁড়ে যায় এবং কিছু পৃষ্ঠা নষ্ট হয়। ১৮৭৮ সালে এটিকে স্টকহোমের নবনির্মিত জাতীয় গ্রন্থাগারে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে এটি আজও সংরক্ষিত আছে। ২০০৭ সালে কোডেক্স জাইগাস ৩৫৯ বছর পর প্রথমবার প্রাগে ফিরে এসেছিল, যা দেখার জন্য রেকর্ড সংখ্যক ভিড় জমেছিল।
কোডেক্স জাইগাস বিশ্বাস, ভয় এবং লোককাহিনীর একটি সেতু হিসেবে টিকে আছে। এটি মধ্যযুগীয় উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও কারুকার্যের এক অসাধারণ উদাহরণ।
ভূতের সঙ্গে যোগাযোগ: ভিক্টোরিয়ান যুগে ব্যবহৃত ৪টি রহস্যময় সরঞ্জাম
ভিক্টোরিয়ান যুগে আধ্যাত্মবাদ (Spiritualism) একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ধর্মীয় আন্দোলন ছিল। এর মূল ধারণা ছিল—মানুষের মৃত্যুর পরেও তার আত্মা জীবিত থাকে এবং ‘মিডিয়াম’ বা মাধ্যম হিসেবে কাজ করা ব্যক্তিরা সেই আত্মার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। যদিও লক্ষ্য ছিল মৃতদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা, আজকের দিনে প্রচলিত প্যারানরমাল বা অতিপ্রাকৃত অনুসন্ধানের কৌশলগুলো ভিক্টোরিয়ান যুগের মানুষরা হয়তো চিনতেই পারতেন না।
ইতিহাসবিদ এবং ‘When We Spoke to the Dead’ বইয়ের লেখক ইলিস কার্টার বলেন, “ভূতের সন্ধানের অর্থ তখন কোনো ভুতুড়ে বাড়িতে গিয়ে কী আছে, তা দেখা ছিল না।” তিনি বলেন, মূলত একটি টেবিলের চারপাশে বসে, মিডিয়ামের হাত ধরে ‘সেয়ান্স’ (Séance) বা আত্মার আহ্বান করা হতো।
দ্রুত প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সেই সময়ে—যখন টেলিফোন বা টেলিগ্রাফের মাধ্যমে দূরের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করাও অলৌকিক বলে মনে হতো—ভিক্টোরিয়ানরা মৃতদের কাছে পৌঁছানোর জন্য নতুন প্রযুক্তি ও পদ্ধতির প্রতিও আগ্রহী ছিলেন। এর মধ্যে ছিল স্পিরিট বোর্ড, ট্রাম্পেট, টেবিল এবং ম্যানিফেস্টেশন ক্যাবিনেটের মতো নানা সরঞ্জাম।
১. টেবিল (Table Tipping)
ভিক্টোরিয়ান যুগের আধ্যাত্মবাদের প্রথম দিকে, মৃতদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য টেবিলই ছিল সবচেয়ে সাধারণ সরঞ্জাম। মিডিয়াম এবং সেয়ান্সের অংশগ্রহণকারীরা একটি ছোট বা মাঝারি আকারের টেবিলের চারপাশে বসতেন এবং এর উপর হাত রাখতেন। এরপর টেবিলটি নড়তে শুরু করলে বুঝতে পারা যেত যে আত্মা উপস্থিত হয়েছে। এই অনুশীলনটি টেবিল টিপিং বা টেবিল টার্নিং নামে পরিচিত ছিল।
ইলিস কার্টার বলেন, টেবিল নড়াচড়ার মাধ্যমে আত্মা নিজেদের উপস্থিতি জানান দিত। ১৮৫০-এর দশকে এই পদ্ধতির জনপ্রিয়তা আকাশ ছুঁয়েছিল। যদিও ১৮৫৩ সালে বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে উপসংহারে এসেছিলেন যে টেবিলের চারপাশে বসা লোকেরাই আসলে অবচেতনভাবে এটিকে নাড়াতেন। তবে এই বিতর্ক সত্ত্বেও, টেবিল টিপিং ২০ শতকের শুরু পর্যন্ত আত্মা ডাকার প্রধান পদ্ধতি ছিল।
২. স্পিরিট বোর্ড (Spirit Boards)
প্রাথমিকভাবে, মৃতদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হলে শব্দ করে তাদের উপস্থিতি জানানোর জন্য বলা হতো—যেমন টেবিলে একবার শব্দ করলে ‘হ্যাঁ’ বা দুবার শব্দ করলে ‘না’। কার্টার বলেন, এই পদ্ধতিটি ছিল খুবই সময়সাপেক্ষ এবং ক্লান্তিকর।
এরপর আসে স্পিরিট বোর্ড বা ‘উইচ বোর্ড’। এটি দেখতে বোর্ড গেমের মতো হলেও এতে বর্ণমালার ২৬টি অক্ষর, ০ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা এবং ‘হ্যাঁ’, ‘না’ ও ‘বিদায়’ শব্দগুলো লেখা থাকত। এতে একটি প্ল্যানচেট বা হৃদপিণ্ডের আকারের কাঠের টুকরা থাকত, যা স্পর্শ করে অংশগ্রহণকারীরা আত্মাকে দিয়ে বার্তা লেখাতেন। সবচেয়ে বিখ্যাত স্পিরিট বোর্ডের নাম হলো উইজা বোর্ড, যা ১৮৯১ সালে প্যাটেন্ট করা হয়।
৩. স্পিরিট ট্রাম্পেট (Spirit Trumpets)
১৯ শতকের শেষের দিকে স্পিরিট ট্রাম্পেট বা সেয়ান্স ট্রাম্পেট নামের সরু টিনের, অ্যালুমিনিয়ামের বা কার্ডবোর্ডের শঙ্কুগুলো ‘সেয়ান্স রুমের সবচেয়ে জনপ্রিয় সরঞ্জাম’ হয়ে ওঠে। ‘The Victorian Book of the Dead’ বইয়ের লেখক ক্রিস উডইয়ার্ড বলেন, এই ট্রাম্পেটগুলো টেবিলের মাঝখানে রাখা হতো এবং বিশ্বাস করা হতো যে এটি আত্মার জগত থেকে আসা ফিসফিস, কুকুরের ডাক বা বাতাসের মতো শব্দগুলিকে বড় করে তুলবে। অনেক সময় মিডিয়ামরা এই ট্রাম্পেট মুখে ধরতেন, যাতে আত্মা সরাসরি এর মাধ্যমে কথা বলতে পারে। এর ফলে স্পিরিট বোর্ডের চেয়ে দ্রুত এবং বিস্তারিত বার্তা পাওয়া যেত।
৪. ম্যানিফেস্টেশন ক্যাবিনেট (Manifestation Cabinets)
আত্মার আহ্বানের সময় মিডিয়ামরা সাধারণত সবার সামনে থাকলেও, কিছু মিডিয়াম একটি আসবাবপত্র ব্যবহার করতেন, যা ম্যানিফেস্টেশন ক্যাবিনেট বা স্পিরিট ক্যাবিনেট নামে পরিচিত। এটি প্রায়শই ভারী মখমলের পর্দা দিয়ে আবৃত একটি কাঠের আলমারির মতো হতো। এর উদ্দেশ্য ছিল ‘আধ্যাত্মিক শক্তিকে আকর্ষণ ও সংরক্ষণ করা’।
১৮৫০ এর দশকে উইলিয়াম এবং ইরা ডেভেনপোর্ট নামের দুই ভাই এর ব্যবহার জনপ্রিয় করে তোলেন। মিডিয়াম হাতে-পায়ে বাঁধা অবস্থায় ক্যাবিনেটের ভেতরে বসতেন, যাতে প্রমাণ হয় যে বাইরে যা আসছে তা আত্মার জগৎ থেকে আসছে। এরপর পর্দা ভেদ করে ভাসমান মুখ বা পুরো শরীরের প্রতিচ্ছবি (অ্যাপারিশন) বেরিয়ে আসত।
বিস্কুটের টিন দিয়ে তৈরি টিভি, প্রথম যে মানুষটিকে দেখা গিয়েছিল পর্দায়
আজ থেকে এক শতাব্দী আগে, ১৯২৫ সালের ২ অক্টোবর, স্কটিশ উদ্ভাবক জন লগি বেয়ার্ড (John Logie Baird) সফলভাবে মানুষের মুখের একটি শনাক্তযোগ্য চলমান ছবি প্রেরণ করতে সক্ষম হন। বেয়ার্ডের প্রথম সেই পরীক্ষার মূল তারকা ছিলেন উইলিয়াম টেইন্টন নামের এক তরুণ অফিস সহকারী। ঘটনাটির চল্লিশ বছর পর উইলিয়াম টেইন্টন বিবিসি’কে সেই নাটকীয় মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছিলেন।
একাকী উদ্ভাবক ও ব্যর্থতার শুরু
১৮৫০ এর দশক থেকেই বিজ্ঞানীরা টেলিভিশন আবিষ্কারের চেষ্টা করে আসছিলেন। কিন্তু এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেন একজন ব্যতিক্রমী ব্যক্তি—যিনি সাইকেলের বাতি, ভাঙাচোরা কাঠ ও বিস্কুটের টিনের মতো বাতিল জিনিস ব্যবহার করে তার যন্ত্রপাতি তৈরি করেছিলেন। যাজকের পুত্র বেয়ার্ড প্রায় সারা জীবনই অসুস্থতায় ভুগেছেন এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধে চিকিৎসাগত কারণে অনুপযুক্ত ঘোষিত হন।
এর আগে বেয়ার্ড কৃত্রিম হীরা তৈরির ব্যর্থ চেষ্টা করেছিলেন, যার ফলে একবার গ্লাসগোর বিদ্যুৎ সংযোগের একটি অংশ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এছাড়া, তার তৈরি ঘরোয়া পাইলস নিরাময়ের এক ভয়াবহ ওষুধ এতটাই বিপজ্জনক ছিল যে ভবিষ্যৎ টেলিভিশন উপস্থাপকরা হয়তো বলতেন, “বাড়িতে এটি চেষ্টা করবেন না!”
ভাঙাচোরা সরঞ্জাম ও ঐতিহাসিক সাফল্য
বিভিন্ন ব্যর্থতার পরও বেয়ার্ড বাণিজ্যিক সাফল্য পেয়েছিলেন। মোজা ও সাবানের ব্যবসা থেকে পাওয়া পুঁজি দিয়ে তিনি ১৯২৩ সালে ইংল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলে হেস্টিংসে একটি সাধারণ জায়গা ভাড়া নেন। সেখানে একটি পুরানো চায়ের বাক্সকে ইঞ্জিন দিয়ে লাগিয়ে, ভাঙাচোরা সরঞ্জাম দিয়ে তিনি তার টেলিভিশন পরীক্ষা শুরু করেন। বেয়ার্ডের এই সিস্টেমে একটি বড় ডিস্ক দ্রুত গতিতে ঘুরত, যা ফটোডিটেক্টর ও তীব্র আলো ব্যবহার করে ছবিকে লাইন বাই লাইন স্ক্যান করত। এরপর এই সংকেতগুলো প্রেরণ করে চলমান ছবি তৈরি করা হতো।
হেস্টিংসে একবার বৈদ্যুতিক শক খেয়ে বেয়ার্ড লন্ডনের সোহোর ২২ ফ্রিথ স্ট্রিটে তার নতুন ল্যাবরেটরি স্থাপন করেন। তার যান্ত্রিক ডিভাইসটি এতটাই তীব্র তাপ নির্গত করত যে মানুষের পক্ষে সেখানে দীর্ঘক্ষণ থাকা কঠিন ছিল। ফলে তিনি প্রাথমিকভাবে ‘স্টুকি বিল’ নামে একটি পুতুলকে ব্যবহার করতেন।
প্রথম টেলিভিশন তারকার আগমন
১৯২৫ সালের ২ অক্টোবর ৩৭ বছর বয়সী বেয়ার্ড তার পরীক্ষার জন্য উইলিয়াম টেইন্টনকে বেছে নেন, যিনি তার ল্যাবরেটরির নিচেই অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। উইলিয়াম টেইন্টন বিবিসিকে জানিয়েছিলেন:
“মি. বেয়ার্ড দৌড়ে এলেন, উত্তেজনায় টইটম্বুর। প্রায় টেনে নিয়ে গেলেন আমাকে তার ছোট ল্যাবরেটরিতে। তিনি এতটাই উত্তেজিত ছিলেন যে তার মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছিল না। তিনি প্রায় আমাকে টেনে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন যত দ্রুত সম্ভব দোতলায়।”
যন্ত্রপাতির বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখে টেইন্টন প্রথমে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বেয়ার্ড তাকে ট্রান্সমিটারের সামনে বসিয়ে দেন। টেইন্টন অনুভব করেন আলোর তীব্র তাপ, তবে বেয়ার্ড তাকে আশ্বাস দেন যে চিন্তার কিছু নেই। বেয়ার্ড রিসিভিং প্রান্তে চলে যান। টেইন্টন তাপে থাকতে না পেরে সরে গেলে বেয়ার্ড দৌড়ে এসে চিৎকার করে বলেন: “আমি আপনাকে দেখেছি, উইলিয়াম, আমি আপনাকে দেখেছি। আমি অবশেষে টেলিভিশন পেয়েছি, প্রথম সত্যিকারের টেলিভিশন ছবি!”
টেইন্টন এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটিকে সেই সময়ে খুব বেশি গুরুত্ব দেননি। তিনি বেয়ার্ডকে বলেছিলেন, “মি. বেয়ার্ড, আমি এটিকে খুব একটা ভালো মনে করছি না। এটি খুবই স্থূল।” জবাবে বেয়ার্ড বলেছিলেন, “এটি কেবল শুরু। আপনি দেখবেন এটি দেশজুড়ে, এমনকি সারা বিশ্বে সব বাড়িতে পৌঁছে যাবে।”
বেয়ার্ডের এই আবিষ্কারের পাঁচ বছর পর, ১৯৩১ সালে, টেইন্টন টেলিভিশনে ফিরে এসেছিলেন সেই নাটকীয় মুহূর্তের স্মৃতিচারণ করতে। যদিও বেয়ার্ডের যান্ত্রিক পদ্ধতি পরবর্তীতে উন্নত প্রযুক্তির কাছে পিছিয়ে পড়ে, তবুও তিনিই টেলিভিশনের পথপ্রদর্শক।
সূত্র: বিবিসি
কম পুঁজিতে শুরু করা সম্ভব লাভজনক ৪টি ব্যবসা
এক সময় ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল শুধু শহর। কিন্তু এখন গ্রামের পরিবেশ দ্রুত বদলেছে। এখানেও শহরের মতো বিভিন্ন জিনিস বিক্রি ও কেনা সম্ভব। গ্রামের কম প্রতিযোগিতা এবং সস্তা জায়গা ও কাঁচামাল ব্যবহারের সুবিধা কাজে লাগিয়ে কম খরচে শুরু করা যেতে পারে বেশ কিছু লাভজনক ব্যবসা।
চলুন জেনে নিই এমন চারটি ব্যবসার আইডিয়া, যা গ্রামে শুরু করে ভালো আয় করা সম্ভব:
১. মুদি দোকান
মুদি দোকান গ্রামের জন্য একটি সহজ ও লাভজনক ব্যবসা। এখানে চা, চিনি, মশলা এবং নুডলসের মতো প্রতিদিনের ব্যবহার্য জিনিস বিক্রি করা যায়। আজকাল অনেক কোম্পানি তাদের পণ্যের ফ্র্যাঞ্চাইজি দেয়। তাই একটি পরিচিত ব্র্যান্ডের ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
২. অনলাইন সার্ভিস সেন্টার
কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে গ্রামে একটি কমন সার্ভিস সেন্টার চালু করা যেতে পারে। এখানে গ্রাহকরা বিভিন্ন সরকারি আবেদন, বিল পরিশোধ, পেনশন বা ব্যাংকিং সেবার মতো কাজগুলো করতে পারবেন। কম্পিউটারে সামান্য জ্ঞান থাকলেই যে কেউ সহজেই এই সেন্টার চালাতে পারে।
৩. পশুপালন ও দুগ্ধ উৎপাদন
পশুপালন গ্রামের মানুষের আয়ের একটি প্রধান উৎস। ৫০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করে দুধ উৎপাদন ও তা বিক্রি করে ভালো আয় করা সম্ভব। স্থানীয় মিষ্টির দোকান বা দুধ সংগ্রহকারীদের কাছেও দুধ বিক্রি করা যায়।
৪. শাক-সবজি ও ফল সরবরাহ
গ্রামে সবজি চাষ সব পরিবারে হয় না। তাই শহর বা গ্রামের বাজার থেকে শাক-সবজি ও ফল সংগ্রহ করে গ্রামে বিক্রি করা লাভজনক হতে পারে। শুধু সাধারণ বিক্রি নয়, বিয়ে বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সরবরাহ করেও আয় বাড়ানো সম্ভব। মাত্র ২০,০০০ টাকার প্রাথমিক বিনিয়োগেই এই ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে।
গ্রামে ব্যবসা শুরু করলে কম খরচে ভালো আয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি। সঠিক পরিকল্পনা ও স্থানীয় চাহিদা বুঝে ব্যবসা শুরু করলে দ্রুত লাভ করা সম্ভব।
বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর পাখি: সাউদার্ন ক্যাসোয়ারির রহস্যময়তা ও আতঙ্ক
প্রাণিজগতের সবচেয়ে বিপজ্জনক পাখির তালিকায় বারবার উঠে আসে সাউদার্ন ক্যাসোয়ারির (Southern Cassowary) নাম। এই বৃহদাকৃতি উড়তে অক্ষম পাখিটি কেবলমাত্র অস্ট্রেলিয়া ও নিউগিনির গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্যে বসবাস করলেও, তার বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও মারাত্মক ক্ষমতার জন্য বিশ্বজুড়ে “ভয়ংকর পাখি” হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে।
ছুরির মতো ধারালো নখর
ক্যাসোয়ারির প্রতিটি পায়ের ভেতরের আঙুলে প্রায় ১০ সেন্টিমিটার লম্বা নখর থাকে, যা দেখতে অনেকটা ছুরির মতো। আত্মরক্ষার প্রয়োজনে এই নখর এক আঘাতেই প্রতিপক্ষকে গুরুতর জখম করতে সক্ষম। গবেষকরা উল্লেখ করেন, এর নখরের আঘাত এতটাই শক্তিশালী হতে পারে যে তা মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সরাসরি ক্ষতি সাধন করতে পারে।
লাজুক অথচ হঠাৎ আক্রমণাত্মক
প্রকৃতিগতভাবে ক্যাসোয়ারি সাধারণত মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকে এবং বনের নিভৃত পরিবেশে থাকতে পছন্দ করে। কিন্তু যখন এটি বিপদে পড়ে বা বিরক্ত হয়, তখন আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে এটি চরম আক্রমণাত্মক রূপ ধারণ করে, যা মানুষের জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।
অসাধারণ আঘাতের ক্ষমতা
এর শরীরের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ হলো পা। প্রয়োজনে ক্যাসোয়ারি লাফিয়ে উঠে ভয়ংকর নখর দিয়ে প্রতিপক্ষকে আঘাত করে। এই আঘাতে শুধু বাহ্যিক ক্ষত নয়, বরং ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গেও মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এমনকি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ আঘাত প্রায়শই মারণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।
দ্রুতগামী দৌড়বিদ
প্রকৃতির আরেকটি ভয়ংকর দিক হলো এর দৌড়ানোর ক্ষমতা। প্রায় ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার বেগে দৌড়াতে সক্ষম ক্যাসোয়ারি ঘন জঙ্গল চিরে মুহূর্তেই দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। ফলে এর কাছ থেকে পালিয়ে বাঁচা সহজ নয়।
জীবন্ত ডাইনোসরের প্রতিচ্ছবি
চেহারার দিক থেকেও এই পাখি অনন্য। মাথার ওপর হেলমেটের মতো শিরস্ত্রাণ বা ক্যাস্ক (casque) এবং নীলাভ মুখমণ্ডল একে প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীর মতো করে তুলেছে। গবেষকরা প্রায়শই ক্যাসোয়ারিকে “জীবন্ত ডাইনোসর” বলে আখ্যায়িত করেন, যা মানুষের মনে ভয় ও বিস্ময় একসঙ্গে জাগায়।
বিরল হলেও মারাত্মক আক্রমণ
মানুষের ওপর ক্যাসোয়ারির আক্রমণের ঘটনা বিরল। তবে যখন এমন আক্রমণ ঘটে, তখন তা প্রায়শই গুরুতর পরিণতি বয়ে আনে। ইতিহাসে নথিভুক্ত একটি ঘটনা ঘটেছিল ১৯২৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায়, যখন এক কিশোর ক্যাসোয়ারির আঘাতে প্রাণ হারান। সর্বশেষ আলোচিত ঘটনা ঘটে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়, যেখানে এক ব্যক্তি তার পালিত ক্যাসোয়ারির আক্রমণে নিহত হন।
প্রকৃতির এই অদ্ভুত পাখিটি মানুষের প্রতি ইচ্ছাকৃতভাবে হুমকি সৃষ্টি করে না। তবে পরিবেশগত চাপ বা বিরক্তির ফলে এর আক্রমণাত্মক প্রবণতা প্রাণঘাতী হতে পারে। গবেষকরা বলছেন, ক্যাসোয়ারিকে বোঝা এবং তার আবাসস্থলকে সম্মান জানানোই মানুষের জন্য নিরাপদ পথ। একদিকে এর সৌন্দর্য ও প্রাচীন বৈশিষ্ট্য আমাদের বিস্মিত করে, অন্যদিকে এর ভয়ংকর ক্ষমতা মনে করিয়ে দেয় যে প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণীর প্রতি সতর্কতা অপরিহার্য।
ডোপ টেস্ট কী, কেন করা হয়, কেন এত এখন জরুরি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের জন্য এবার বাধ্যতামূলকভাবে ডোপ টেস্ট চালু করা হয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগ আসলে দেশের শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে মাদকমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়াতেও ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার ঘোষণা আসে। শুধু তাই নয়, পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রহণ, সরকারি চাকরিতে প্রবেশ এবং বিভিন্ন সরকারি কার্যক্রমে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেও ধীরে ধীরে ডোপ টেস্টের প্রক্রিয়া চালু হয়েছে।
ডোপ টেস্ট আসলে কী
ডোপ টেস্ট হলো এক ধরনের চিকিৎসা পরীক্ষা, যার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয় কোনো ব্যক্তি মাদকদ্রব্য সেবন করেছেন কি না। নিয়মিত মাদকসেবীদের শরীরে নেশাজাতীয় উপাদানের চিহ্ন থেকে যায়, যা রক্ত, মূত্র, লালা বা চুলের মাধ্যমে শনাক্ত করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, লালা পরীক্ষায় সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ আগের মাদক সেবনের প্রমাণ পাওয়া যায়, রক্ত পরীক্ষায় তা ধরা পড়ে দুই মাস পর্যন্ত, আর চুল পরীক্ষার মাধ্যমে এক বছর পর্যন্ত মাদকের উপস্থিতি শনাক্ত করা সম্ভব।
কেন করা হয় ডোপ টেস্ট
বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান মাদকাসক্তির বিস্তার সমাজের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিশোর থেকে প্রবীণ, প্রায় সব বয়সের মানুষ মাদকের ফাঁদে জড়িয়ে পড়ছেন, যা অনেককে অকালমৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ডোপ টেস্টের গুরুত্ব বহুমাত্রিক:
- মাদকসেবীকে শনাক্তকরণ
- সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ
- ক্রীড়াক্ষেত্রে নিষিদ্ধ ওষুধ শনাক্ত
- আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে শৃঙ্খলা বজায় রাখা
- আইনি জটিলতা এড়ানো
- সন্দেহজনক দুর্ঘটনা বা আচরণের পর তদন্তে সহায়তা
- মাদকাসক্তদের চিকিৎসা প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ
সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, স্থানীয় সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিতে প্রবেশের সময় প্রার্থীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সঙ্গে ডোপ টেস্ট রিপোর্ট প্রায়ই জমা দিতে হয়। চাকরিরত কোনো কর্মীর আচরণ সন্দেহজনক মনে হলেও ডোপ টেস্ট করানো হতে পারে। একইভাবে, ড্রাইভিং লাইসেন্স গ্রহণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কিংবা বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য আবেদন করতেও ডোপ টেস্ট রিপোর্ট প্রয়োজন হতে পারে। অস্ত্রের লাইসেন্স গ্রহণের ক্ষেত্রেও এটি বাধ্যতামূলক।
কোন কোন মাদক ধরা পড়ে ডোপ টেস্টে
বাংলাদেশ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের খসড়া অনুযায়ী, ডোপ টেস্টে বিভিন্ন মাদক শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে: ডায়াজেপাম, লোরাজেপাম, অক্সাজেপাম, টেমাজেপাম, কোডিন, মরফিন, হেরোইন, কোকেন, গাঁজা, ভাং, চরস, অ্যালকোহল, ফেনসিডিল, ইয়াবা ও এলএসডি।
ডোপ টেস্টের পদ্ধতি
- মূত্র পরীক্ষা (ইউরিন টেস্ট)
- লালা বা থুতু পরীক্ষা
- রক্ত পরীক্ষা
- চুল পরীক্ষা
- শ্বাস পরীক্ষা – সড়কে সন্দেহজনক চালকদের ক্ষেত্রে ট্রাফিক সার্জেন্টরা অ্যালকোহল ডিটেক্টরের সাহায্যে মাদক গ্রহণ শনাক্ত করেন।
মাদক শরীরে কতদিন থাকে
১. গাঁজা: প্রথমবার সেবনে ৩–৭ দিন; নিয়মিত সেবনে ৩০–৬০ দিন পর্যন্ত।২. ইয়াবা: একবার সেবনে ১–৩ দিন; নিয়মিত সেবনে ৭–১০ দিন পর্যন্ত।৩. হেরোইন বা আফিমজাতীয় মাদক: সাধারণত ১–৩ দিন; নিয়মিত ব্যবহারে ৭ দিন।৪. কোকেন: প্রথমবার ২–৪ দিন; নিয়মিত সেবনে ১–২ সপ্তাহ।৫. এক্সট্যাসি: সাধারণত ১–৩ দিন; নিয়মিত সেবনে ৭ দিন।৬. ঘুমের ওষুধ: ২–৭ দিন; নিয়মিত সেবনে ২–৬ সপ্তাহ।৭. ঘ্রাণযোগ্য মাদক: ১২ ঘণ্টা–২ দিন; নিয়মিত সেবনে ৩–৫ দিন।৮. এলএসডি: সাধারণত ১ দিন; কিছু ক্ষেত্রে ২–৩ দিন।৯. অ্যালকোহল: ৬–১২ ঘণ্টা; কিছু ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত।১০. মেথাডোন: ২–৭ দিন; নিয়মিত সেবনে ২–৩ সপ্তাহ পর্যন্ত।
কোথায় করা যায় ডোপ টেস্ট, খরচ কত
দেশের প্রায় সব সরকারি হাসপাতালে ডোপ টেস্ট করানো সম্ভব। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্ধারিত সর্বোচ্চ ফি ৯০০ টাকা। নন-স্পেসিফিক পরীক্ষার জন্য প্রতিটির ফি ১৫০ টাকা, আর অ্যালকোহল পরীক্ষার ফি ৩০০ টাকা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার, নিটোর, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন জেলায় মিনি-ল্যাব বসানো হয়েছে।
পরীক্ষার নিয়ম ও প্রক্রিয়া
ডোপ টেস্টের জন্য প্রথমে পরীক্ষার্থীর নাম, বয়স, ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যসহ একটি ফরম পূরণ করতে হয়। এরপর রক্ত, মূত্র, লালা বা চুলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বিসিএস ক্যাডারভুক্ত একজন ডাক্তার পরীক্ষাটি পরিচালনা করেন। নমুনায় মাদকের উপস্থিতি থাকলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে, আর না থাকলে নেগেটিভ রিপোর্ট দেওয়া হয়।
-রফিক
মহাবিশ্বে নতুন দৈত্য কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান
বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরেই ধারণা করে আসছেন যে মহাবিশ্বে কৃষ্ণগহ্বরগুলোর পারস্পরিক সংঘর্ষ ঘটে এবং এর ফলে সৃষ্টি হয় নতুন ও বৃহত্তর কৃষ্ণগহ্বর। তবে এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা এমন এক কৃষ্ণগহ্বর সংঘর্ষ শনাক্ত করেছেন, যা এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড়। গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ বা মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্তকারী যন্ত্র LIGO-Virgo-KAGRA নেটওয়ার্ক এই অসাধারণ তথ্য সংগ্রহ করে। এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল ২০২৩ সালের নভেম্বরে, আর সেই ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় ২০২৫ সালের জুলাইয়ে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন জেনারেল রিলেটিভিটি অ্যান্ড গ্রাভিটেশন-এ।
কৃষ্ণগহ্বর: মহাবিশ্বের অদৃশ্য দৈত্য
কৃষ্ণগহ্বর হলো এমন এক মহাজাগতিক বস্তু, যেখানে অস্বাভাবিকভাবে ঘন ভর অতি ক্ষুদ্র জায়গায় কেন্দ্রীভূত থাকে। এর ফলে সৃষ্টি হয় এত প্রবল মহাকর্ষীয় টান যে কিছুই, এমনকি আলোও, সেখান থেকে বের হতে পারে না। ফলে কৃষ্ণগহ্বর সম্পূর্ণ অদৃশ্য এবং এর ভেতরে কী রয়েছে তা এখনো অজানা।
বিজ্ঞানীদের মতে, কৃষ্ণগহ্বর তৈরি হয় যখন কোনো বিশাল নক্ষত্র জীবনের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যায় এবং জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার কারণে নিজের ভরের টানে ভেঙে পড়ে। তবে এবার যে সংঘর্ষ শনাক্ত করা হয়েছে, তা প্রমাণ করে কৃষ্ণগহ্বর শুধু নক্ষত্রের মৃত্যু থেকেই তৈরি হয় না, বরং একাধিক কৃষ্ণগহ্বরের ধারাবাহিক সংঘর্ষ থেকেও তৈরি হতে পারে।
কীভাবে ধরা পড়ল এই মহাজাগতিক ঘটনা?
২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর, গ্রিনউইচ মান সময় দুপুর ১টার কিছু আগে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ও লুইজিয়ানায় অবস্থিত দুটি ডিটেক্টর একসাথে একটি হঠাৎ উদ্ভূত মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করে। মাত্র ০.১ সেকেন্ড স্থায়ী সেই তরঙ্গটির নাম দেওয়া হয়েছে GW231123।
এই তরঙ্গ শনাক্ত করে লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল-ওয়েভ অবজারভেটরি (LIGO), যা যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (Caltech) এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (MIT)-এর বিজ্ঞানীরা এটি নকশা ও নির্মাণ করেছিলেন। LIGO আসলে দুটি বিশাল লেজার ইন্টারফেরোমিটার, যা মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করতে অ্যান্টেনার মতো কাজ করে।
এছাড়া ইউরোপীয় গ্র্যাভিটেশনাল অবজারভেটরি পরিচালিত Virgo এবং জাপানের KAGRA ডিটেক্টরও এই নেটওয়ার্কে যুক্ত আছে।
সংঘর্ষে কী ঘটেছিল?
এই সংঘর্ষে অংশ নেয় দুটি কৃষ্ণগহ্বর, যাদের ভর ছিল যথাক্রমে সূর্যের ভরের প্রায় ১০০ এবং ১৪০ গুণ। সংঘর্ষ শেষে গঠিত হয় একটি নতুন কৃষ্ণগহ্বর, যার ভর সূর্যের ভরের ২৬৫ গুণেরও বেশি।
এটি মহাবিশ্বে এ পর্যন্ত পর্যবেক্ষিত কৃষ্ণগহ্বর সংঘর্ষগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়। এর আগে ২০১৯ সালের ২১ মে পর্যবেক্ষণ করা GW190521 ছিল সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ, যেখানে সূর্যের ভরের প্রায় ১৪০ গুণ ভরবিশিষ্ট কৃষ্ণগহ্বর তৈরি হয়েছিল। সেটি শনাক্ত হয়েছিল পৃথিবী থেকে প্রায় ১৭ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে।
আবিষ্কারের তাৎপর্য
কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং LIGO বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার সদস্য মার্ক হ্যানাম বলেন, “এই আবিষ্কার প্রমাণ করে যে কৃষ্ণগহ্বর ধারাবাহিকভাবে একের পর এক সংঘর্ষে অংশ নিয়ে আরও বৃহৎ আকার ধারণ করতে পারে। এত বড় কৃষ্ণগহ্বর সরাসরি তারকার মৃত্যু থেকে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।”
অর্থাৎ বিজ্ঞানীদের ধারণা, এ ধরনের বিশাল কৃষ্ণগহ্বর পূর্ববর্তী একাধিক সংঘর্ষের ফলেই তৈরি হয়েছে। এই আবিষ্কার কৃষ্ণগহ্বরের বিবর্তন প্রক্রিয়া সম্পর্কে নতুন জানালা খুলে দিয়েছে।
পৃথিবীর জন্য কোনো প্রভাব আছে কি?
বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন যে এই সংঘর্ষের পৃথিবী বা আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির ওপর কোনো প্রভাব নেই। ঘটনাটি পৃথিবী থেকে কয়েক মিলিয়ন থেকে ১০ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে সংঘটিত হয়েছিল। যেহেতু আলোকবর্ষ হলো আলো এক বছরে যত দূরত্ব অতিক্রম করে, তাই এই ঘটনাটি আসলে কোটি কোটি বছর আগে ঘটেছিল।
হ্যানাম বলেন, এই দূরত্বকে প্রায় ৩ গিগাপারসেক হিসেবেও প্রকাশ করা যায়। এক পারসেক প্রায় ৩১ ট্রিলিয়ন কিলোমিটারের সমান। ফলে এই দূরত্ব কল্পনার সীমার বাইরে, যার কোনো দৈনন্দিন তুলনা নেই।
আজ রাতে যখন দৃশ্যমান হবে ‘সুপার ব্লাড মুন’ চন্দ্রগ্রহণ
আজ রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে দেখা যাবে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। রাত থেকেই শুরু হয়ে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোর পর্যন্ত স্থায়ী হবে এই জ্যোতির্বিদ্যাগত বিরল দৃশ্য। পুরো গ্রহণ চলবে প্রায় ৭ ঘণ্টা ২৭ মিনিট।
বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী গ্রহণের ধাপগুলো নিম্নরূপ:
পেনুম্ব্রাল গ্রহণ শুরু: রাত ৯টা ২৮ মিনিট ২৫ সেকেন্ড
আংশিক গ্রহণ শুরু: রাত ১০টা ২৭ মিনিট ০৯ সেকেন্ড
পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ শুরু: রাত ১১টা ৩০ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড
সর্বোচ্চ গ্রহণ: রাত ১২টা ১১ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড
পূর্ণগ্রাস গ্রহণ শেষ: রাত ১২টা ৫২ মিনিট ৫১ সেকেন্ড
আংশিক গ্রহণ শেষ: রাত ১টা ৫৬ মিনিট ৩১ সেকেন্ড
পেনুম্ব্রাল গ্রহণ শেষ: রাত ২টা ৫৫ মিনিট ৮ সেকেন্ড
অতএব, আজ রাত আকাশ পরিষ্কার থাকলে বাড়ির ছাদ থেকেই সরাসরি এই পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ উপভোগ করা যাবে।
জ্যোতির্বিদরা জানান, যখন সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ একই সরলরেখায় অবস্থান করে এবং পৃথিবী মাঝখানে এসে সূর্যের আলো চাঁদে পৌঁছাতে বাধা দেয়, তখনই ঘটে চন্দ্রগ্রহণ। এ সময় পৃথিবীর ছায়ায় ঢেকে গিয়ে চাঁদ আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে দৃশ্যমানতা হারায়। এ কারণেই কয়েক ঘণ্টার জন্য পৃথিবীর যে কোনো দর্শকের কাছে চাঁদ আংশিক বা সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয়ে যায়।
এবারের পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণকে বলা হচ্ছে ‘সুপার ব্লাড মুন’। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাধারণ সময়ের চাঁদের তুলনায় এটি প্রায় ৭ শতাংশ বড় এবং ১৫ শতাংশ বেশি উজ্জ্বল দেখাবে। লালচে আভা ধারণ করায় একে ‘ব্লাড মুন’ নামেও অভিহিত করা হয়েছে।
-রাফসান
পাঠকের মতামত:
- পৃথিবীর বাইরেও কি প্রাণ আছে? কুরআন, হাদিস ও বিজ্ঞান কী বলছে?
- চীনের প্রথম সম্রাটের সমাধি: রহস্য ঘেরা যে কবর খুলতে আজও ভয়ে কাঁপে বিজ্ঞানীরা!
- বিলিয়নিয়ার ক্লাবে শাহরুখ খান, পেছনে ফেললেন টেলর সুইফটকে
- ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করতে বললেন আদালত, না হলে ব্যবস্থা
- শিশুর অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমে মস্তিষ্কের ক্ষতি: নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্য
- অ্যালুমিনিয়াম ও ননস্টিক পাত্রে রান্না, শরীরের জন্য নীরব বিষ?
- পেঁয়াজ কাটলে আর চোখে জল নয়! রইল যন্ত্রণা থেকে মুক্তির ৫ সহজ উপায়
- ২০ নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ দেবে সোলার সুপার-প্যানেল
- চার দিনের অচলাবস্থা শেষে স্বাভাবিক হচ্ছে খাগড়াছড়ি
- শনি গ্রহের চাঁদ এনসেলাডাসে প্রাণের উপাদান খুঁজে পেল নাসা
- স্মার্টফোন থেকে ডিলিট হওয়া ছবি ফিরে পাওয়ার ৩টি সহজ উপায়
- ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৫ ঘণ্টা তীব্র যানজট, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
- তাসনিম জারাকে নিয়ে অনলাইন হয়রানির নেপথ্যে কারা?
- আজকের রাশিফল: ১ অক্টোবর দিনটি আপনার জন্য কেমন যাবে?
- চুল পাকা? নামীদামি কলপ নয়, নারকেল তেলে এই ১ চামচ দিলেই ম্যাজিক!
- আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা শিগগিরই প্রত্যাহার হচ্ছে না: আইন উপদেষ্টা
- আজ দেশের ১০ জেলার ওপর দিয়ে ঝড়-বৃষ্টির আভাস, নদীবন্দরে সতর্কতা
- নিষেধাজ্ঞার আলোচনার মাঝে সাকিব পেলেন বিরাট সুখবর
- ‘ঐতিহাসিক মাইলফলক’: আধুনিক প্রযুক্তিতে এবার প্রবাসীরাও ভোট দিতে পারবেন
- বিসিবি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ক্ষুব্ধ তামিম, নেপথ্যে কি?
- রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান কেবল মিয়ানমারেই সম্ভব: জাতিসংঘে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি
- বার্লিন সম্মেলন ১৮৮৪–৮৫: আফ্রিকা বিভাজনের রাজনীতি, অর্থনীতি ও উত্তরাধিকার
- রসুনের গোপন শক্তি: এক কোয়া কি সত্যিই শরীরকে বদলে দিতে পারে?
- আগামীকালের সেহরি, ইফতার ও নামাজের সময়সূচী
- সাবধান! শিশুদের মধ্যে টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ৮টি লক্ষণ
- বাঁচা-মরার লড়াই সামনে, কোচের ভাগ্য নির্ধারণী ম্যাচে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
- ড. ইউনূসের নেতৃত্বে রোহিঙ্গা সম্মেলন: মূল এজেন্ডা স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন
- গাজার উপকূলে ত্রাণবাহী নৌবহর: ২০০ নটিক্যাল মাইলের ভেতরে প্রবেশ করল
- ফাঁদ নাকি মুক্তি? ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে ফিলিস্তিন কি মুক্তি পাবে?
- ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি: সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ মৃত্যু
- জিন চিকিৎসা’র নামে প্রতারণা: জয়পুরহাটে রমরমা ব্যবসা
- যে সাগরে কেউ ডুবে না, কেন সেখানে লুকিয়ে আছে এক অভিশপ্ত ইতিহাস?
- দিনে তিনি কানাডায় সাধারণ মালি, রাতে আফ্রিকার এক গোত্রের রাজা!
- দুই দল পেল নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন, অংশ নিতে পারবে আগামী নির্বাচনে
- রহস্যময় পাণ্ডুলিপি কোডেক্স জাইগাস: কেন এটি ‘শয়তানের বাইবেল’ নামে পরিচিত?
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে রপ্ত করুন এই একটি অভ্যাস
- ফাইনালে খেলতে না পারাটা ছিল ভীষণ কষ্টের: চোট নিয়ে লিখলেন লিটন দাস
- বিদেশ থেকে চলছে ভোট প্রক্রিয়া ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র: শফিকুল আলম
- ক্রিকেট বিশ্বে সৌদির আলোড়ন: আইএল টি-টোয়েন্টির সঙ্গে কৌশলগত জোট
- ড. ইউনূস চাইলে আওয়ামী লীগের প্রধান হতে পারেন: রাশেদ খান
- মুখের যে জায়গার ব্রণ ভুলেও ফাটাবেন না
- বর্ষায় কাপড় শুকানোর ৫টি জরুরি কৌশল, দূর হবে স্যাঁতসেঁতে গন্ধ
- পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে দেশের মানুষ: সালাহউদ্দিন আহমদ
- পাকিস্তানে ভয়াবহ বোমা হামলা, অভিযোগ ভারতের দিকে
- গাজা শান্তি পরিকল্পনা: ট্রাম্পের ২১-দফা প্রস্তাবে ভারত ও ইসরায়েল
- আপনার ব্যক্তিত্ব কেমন? বলে দেবে হাতের আঙুলের দৈর্ঘ্য
- যে কোনো সময় সচল হতে পারে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম: ড. ইউনূস
- ভূতের সঙ্গে যোগাযোগ: ভিক্টোরিয়ান যুগে ব্যবহৃত ৪টি রহস্যময় সরঞ্জাম
- বিস্কুটের টিন দিয়ে তৈরি টিভি, প্রথম যে মানুষটিকে দেখা গিয়েছিল পর্দায়
- রক্তনালী পরিষ্কার করবে যে ৫ খাবার
- ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- বার্লিন সম্মেলন ১৮৮৪–৮৫: আফ্রিকা বিভাজনের রাজনীতি, অর্থনীতি ও উত্তরাধিকার
- বৃষ্টির দিনে ইন্টারনেটের গতি কমে যায় কেন? সমাধান জেনে নিন
- ‘আমাকে আলাদা করে তুলে ধরার চেষ্টা হয়নি’: ডা. তাসনিম জারা
- খাগড়াছড়ি-গুইমারায় সহিংসতা: সেনাবাহিনীর বিস্তারিত বিবৃতি প্রকাশ
- রসুনের গোপন শক্তি: এক কোয়া কি সত্যিই শরীরকে বদলে দিতে পারে?
- ডিএসইতে রবিবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ফার্মগেটে ঝটিকা মিছিলের প্রস্তুতিকালে আটক অর্ধশত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- বিয়ে করতে গিয়ে বিপত্তি: ‘প্রথম স্ত্রীর’ হাতে আটক ছাত্রলীগ নেতা
- ডিএসইতে মঙ্গলবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে রবিবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- বলিউডের শক্তিশালী কণ্ঠস্বর: নারী অধিকার ও পরিবেশ রক্ষায় সোচ্চার তারকারা
- বাংলাদেশের সামনে ১৬৯ রানের লক্ষ্য দিল ভারত