কর্মী থেকে বস : কিভাবে ১০৮ রেস্তোরাঁর মালিক হলেন মোহাম্মদ শামীম?

সত্য নিউজ:
মোহাম্মদ শামীম—একজন সাধারণ কর্মী থেকে আজ অস্ট্রেলিয়ার ফাস্টফুড জগতের এক উজ্জ্বল নাম। যাঁর মালিকানায় এখন ১০৮টি সাবওয়ে রেস্তোরাঁ, যেখানে কাজ করেন দুই হাজারের বেশি কর্মী। ঢাকার ছেলে শামীম এখন অস্ট্রেলিয়ায় রীতিমতো সফল উদ্যোক্তা।
মেলবোর্ন থেকে ব্রিসবেন যাওয়ার পথে সিডনিতে যাত্রাবিরতিতে ক্যাম্পবেল টাউনের একটি ক্যাফেতে ১৫ মে সকালে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। সাদামাটা পোশাক, মুখভরা আত্মবিশ্বাস আর সহজ-সরল কথাবার্তায় মুগ্ধ হওয়ার মতো একজন মানুষ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষে ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান শামীম। ডেকিন ইউনিভার্সিটিতে অ্যাকাউন্টিং ও ফাইন্যান্সে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি সাবওয়ের একটি আউটলেটে কাজ শুরু করেন।
গ্রাহকের অর্ডার নেওয়া থেকে মেঝে পরিষ্কার—সবকিছুই করতেন তিনি। সেখান থেকেই মালিকের আস্থা অর্জন করে এগিয়ে যান ম্যানেজারের পদে, এরপর এরিয়া ম্যানেজার।
২০০৯ সালে ডেকিনে সহপাঠী চীনা নাগরিক ইয়ানান ঝাওয়ের সঙ্গে প্রেম, ২০১০ সালে বিয়ে। সংসার আর কাজের টানাপোড়েনে শামীম কখনো পিছিয়ে পড়েননি। ২০১১ সালে ৩ লাখ ডলারের একটি আউটলেট কেনার প্রস্তাব পান। ব্যাংক ঋণ, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সহায়তায় চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করেন।
কাজের চাপ, ঋণের বোঝা, সংসারের ব্যয়—সবকিছু একসঙ্গে সামলে শামীম আর তাঁর স্ত্রী একাধিক কাজে নিজেদের জড়িয়ে রাখেন। অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল আসে দ্রুত। আট মাসের মধ্যে দ্বিতীয় আউটলেট কেনেন। এরপর আর থেমে থাকেননি।
কোভিড-১৯ মহামারির সময় যখন ব্যবসা থমকে গিয়েছিল, তখনও সাহস হারাননি। ট্রাক চালানোর লাইসেন্স নিয়ে নিজেই রওনা দেন সংস্কারের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়া আউটলেটে। তাঁর এই সংকল্প ও উদ্যোম আজ তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে সাফল্যের শিখরে।
২০২৪ সালে একবারেই ৪২টি আউটলেট কেনার মধ্য দিয়ে তাঁর মালিকানাধীন আউটলেটের সংখ্যা দাঁড়ায় ১০৮-এ। এই বিশাল নেটওয়ার্কে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ কাজ করছেন, যার মধ্যে বাংলাদেশিরাও আছেন।
২০২৩ সালে তিনি পান ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি অব দ্য ইয়ার’ সম্মাননা। তাঁর বার্ষিক টার্নওভার এখন ১৫০ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার, অর্থাৎ প্রায় ১২০০ কোটি টাকা।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের সন্তান শামীম এখনো দেশের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। বছরে পাঁচ-ছয়বার দেশে আসেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে রেস্তোরাঁর কাঁচামাল ও প্যাকেজিং সামগ্রী আমদানির পরিকল্পনা করছেন, যাতে তাঁর প্রায় তিন কোটি ডলারের বার্ষিক খরচ দেশে থেকে মেটানো যায়।
বিনিয়োগ সম্ভাবনা যাচাই করতে সম্প্রতি চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ঘুরেছেন। দেশপ্রেম আর পেশাদারিত্বের এক অপূর্ব মিশেল মোহাম্মদ শামীমের গল্প।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- শেয়ারবাজারে এল বড় সুখবর!
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতার বাড়িতে সেনা অভিযান:উদ্ধার ইয়াবা ও ধারালো অস্ত্র!
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!
- তারেক রহমানের দেশেফেরার সম্ভাব্য সময় জানালেনমির্জা ফখরুল
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!
- ডিএসইতে সাধারণ বীমা খাতের প্রান্তিক বিশ্লেষণ:মুনাফা বৃদ্ধির শীর্ষে কারা?
- নির্বাচিত নারী, অলঙ্কার নয়: গণতন্ত্রে নারীর শক্তির সন্ধান