ইতিহাসের সর্বোচ্চ ধান-চাল সংগ্রহ করল খাদ্য অধিদপ্তর

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৮ ১১:৩৬:১৪
ইতিহাসের সর্বোচ্চ ধান-চাল সংগ্রহ করল খাদ্য অধিদপ্তর
ছবিঃ সংগৃহীত

চলতি বছরের বোরো সংগ্রহ মৌসুমে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ধান ও চাল সংগ্রহ করেছে খাদ্য অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্যমতে, খাদ্য মন্ত্রণালয় ঘোষিত অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহ কর্মসূচি ১৫ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়, এবং নির্ধারিত লক্ষ্যকে ছাড়িয়ে এবার সর্বোচ্চ সংগ্রহ সম্ভব হয়েছে।

অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে মোট ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৯৪২ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১০৭.৬৯ শতাংশ। পাশাপাশি সেদ্ধ চাল সংগ্রহ হয়েছে ১৪ লাখ ৬ হাজার ৫৩৩ মেট্রিক টন, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ১০০.৪৬ শতাংশ। আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে ৫১ হাজার ৩০৭ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্য অতিক্রম করে দাঁড়িয়েছে ১০২.২১ শতাংশে। ফলে এ মৌসুমে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ধান-চাল সংগ্রহের রেকর্ড গড়েছে খাদ্য অধিদপ্তর।

প্রসঙ্গত, এ বছর সরকার অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহ কর্মসূচির জন্য তিনটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল—৩ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধান, ১৪ লাখ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল। কিন্তু কৃষকদের কাছ থেকে ধান-চাল ক্রয়ে সরকারের সক্রিয় উদ্যোগ, কার্যকর পরিকল্পনা এবং মাঠপর্যায়ের কঠোর তদারকির ফলে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে সংগ্রহ।

খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ধান-চাল সংগ্রহে এ সাফল্য দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করেছে। সরকারের অভ্যন্তরীণ মজুত ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষকরা ন্যায্যমূল্যে তাদের উৎপাদিত ধান বিক্রি করার সুযোগ পেয়েছেন, যা কৃষি খাতকে টেকসইভাবে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।

নীতিনির্ধারক মহল মনে করছে, সর্বোচ্চ ধান-চাল সংগ্রহের এ রেকর্ড দেশের খাদ্য নীতি বাস্তবায়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। পাশাপাশি কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ, বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং ভোক্তাদের জন্য সুলভ মূল্যে খাদ্য সরবরাহে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

-রফিক


আমরা রায়ে খুশি, তবে...হাসিনাদের দণ্ড নিয়ে যা বলল সাঈদের বাবা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৭:১২:৩৮
আমরা রায়ে খুশি, তবে...হাসিনাদের দণ্ড নিয়ে যা বলল সাঈদের বাবা
ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন। এই রায়ের পর, ওই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া আবু সাঈদের পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার পর শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমরা এ রায়ে খুশি হয়েছি। তবে রায় দ্রুত কার্যকর করা হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

এর আগে আজ দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধেই অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেন। এছাড়া, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার অপর আসামি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হওয়ায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রায়ের পর আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনও দ্রুত দণ্ড কার্যকরের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘শুধু রায় ঘোষণাই যথেষ্ট নয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত রায় কার্যকর করতে হবে।’

শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘ছেলেকে হারানোর শূন্যতা কখনো পূরণ হবে না। আর কোনো মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয় সে জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’


মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি হাসিনা-কামালের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৭:০৫:১৯
মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি হাসিনা-কামালের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
ছবিঃ সংগৃহীত

গত বছরের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নামে বাংলাদেশে থাকা সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছিল। অভিযোগগুলো হলো গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার ‘উসকানিমূলক বক্তব্য’ প্রদান; হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ দেওয়া; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ এবং সবশেষ আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার নির্দেশ দেওয়া।

মামলার শুরুতে শেখ হাসিনা ছিলেন একমাত্র আসামি। পরবর্তীতে চলতি বছরের ১৬ মার্চ সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও এই মামলায় আসামি করা হয়। সবশেষ, গত ১২ মে মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়।

ট্রাইব্যুনাল গত ১০ জুলাই এই মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধেই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন। ওই দিনই সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন 'অ্যাপ্রুভার' বা রাজসাক্ষী হওয়ার জন্য আবেদন করেন এবং পরে তিনি ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন।

ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান, যার মধ্য দিয়ে তার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলার তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তারা দুজনই ভারতে অবস্থান করছেন। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলার একমাত্র গ্রেপ্তারকৃত আসামি।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (প্রসিকিউটর) গাজী মোনাওয়ার জানিয়েছেন, পলাতক থাকার কারণে শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামাল সাজার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন না।

তিনি আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ট্রাইব্যুনাল আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে যে, রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হয়। তবে আপিলের এই সুযোগ নিতে হলে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে অবশ্যই আত্মসমর্পণ করতে হবে। অথবা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হলেও ওই আসামি আপিলের সুযোগ পেতে পারেন।


বিবাহবার্ষিকীর দিনেই মৃত্যুদণ্ডের রায় পেলেন শেখ হাসিনা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৬:৫৩:১৪
বিবাহবার্ষিকীর দিনেই মৃত্যুদণ্ডের রায় পেলেন শেখ হাসিনা
ছবিঃ সংগৃহীত

গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তার বিরুদ্ধে আনা মোট পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর একটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) এই রায় ঘোষণা করা হয়। দিনটি ঘটনাক্রমে শেখ হাসিনার বিবাহবার্ষিকীর দিন। ১৯৬৭ সালের এই দিনেই তিনি পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ আলী মিয়ার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় তাদের বিয়ে হয়। ড. ওয়াজেদ আলী ২০০৯ সালের ৯ মে মারা যান।

শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার অপর দুই আসামির বিরুদ্ধেও রায় ঘোষণা করা হয়েছে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার তৃতীয় আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন 'অ্যাপ্রুভার' বা রাজসাক্ষী হওয়ায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক রয়েছেন। বিভিন্ন সূত্রমতে, তারা দুজনই বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।

সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

রায় ঘোষণার সময় আদালত কক্ষ আইনজীবীতে পরিপূর্ণ ছিল। এছাড়া জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নিহত কয়েকজনের পরিবারের সদস্যরাও এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রায় পড়ার সময় ট্রাইব্যুনাল জানান, ঢাকার যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা, সাভার, আশুলিয়া, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে যেভাবে প্রাণঘাতী গুলি ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্যা করা হয়েছে, সেগুলোর ভিডিও এবং তথ্যপ্রমাণের বিবরণ রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

আন্দোলনের সময়কার মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা যেসকল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, সেগুলোর বিভিন্ন অংশও আদালতে পড়ে শোনানো হয়। বেলা সোয়া একটার দিকে গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে শেখ হাসিনার হওয়া টেলিফোন কথোপকথনগুলো আদালতে শোনানো হয়। এর কিছুক্ষণ আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে সে সময়ের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর একটি ফোনালাপও শোনানো হয়।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিনটি (১৭ নভেম্বর) ধার্য করেছিলেন।


পাশের দেশ অশান্তি পাকাচ্ছে, রায় পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার 

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৬:৪৬:৩৭
পাশের দেশ অশান্তি পাকাচ্ছে, রায় পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার 
ছবিঃ সংগৃহীত

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী অভিযোগ করেছেন যে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নষ্ট করার জন্য একটি প্রতিবেশী দেশ থেকে উসকানি দেওয়া হচ্ছে। সোমবার (১৭ নভেম্বর), শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার পর তিনি এই মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টা বলেন, "আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পাশের দেশ থেকে অশান্তির উসকানি দেওয়া হচ্ছে।" তবে, তিনি জোর দিয়ে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, "রায়কে কেন্দ্র করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির মতো কিছু আমরা দেখছি না। এখনো কোনো বড় ধরনের ঘটনা ঘটেনি, বিক্ষিপ্ত ছোটখাটো কিছু ঘটনা ঘটেছে।" একই সঙ্গে তিনি দুর্বৃত্তদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, "আত্মরক্ষার স্বার্থে গুলি করার বিধান আছে।"

সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, শেখ হাসিনাকে ফেরানোর জন্য প্রয়োজন হলে আবারও চিঠি দেওয়া হবে।

এর আগে আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় একটি রায় ঘোষণা করে। বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই রায় দেন।

রায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং আরেকটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার অপর আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালেরও ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

তবে, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী হয়ে সত্য উন্মোচনে সহায়তা করায় আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।


যে যে মামলায় ফাঁসির রায় হলো হাসিনা-কামালের

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৫:২০:২৬
যে যে মামলায় ফাঁসির রায় হলো হাসিনা-কামালের
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে, দুটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা এবং রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাকে এই সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়।

এছাড়াও, ট্রাইব্যুনাল আরেকটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন। এই মামলার অপর আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। মোট ৪৫৩ পৃষ্ঠার এই রায়টি ছয়টি অংশে বিভক্ত।

রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ মামলার তিন আসামি (সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ) সকলের বিরুদ্ধেই অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।

এই মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছিল। সেগুলো হলো:

১. উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান।

২. প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ প্রদান।

৩. রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা।

৪. রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আন্দোলনরত ছয়জনকে গুলি করে হত্যা।

৫. আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা।


হাসিনার পর আসাদুজ্জামান খান কামালেরও মৃত্যুদণ্ডের আদেশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৫:১৩:৪০
হাসিনার পর আসাদুজ্জামান খান কামালেরও মৃত্যুদণ্ডের আদেশ
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর আগে একই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হয়।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়। এই রায়টি মোট ৪৫৩ পৃষ্ঠার এবং ছয়টি অংশে বিভক্ত।

ট্রাইব্যুনালের প্রধান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার প্রথমে রায়ের অংশবিশেষ পড়া শুরু করেন। এরপর ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীও রায়ের বিভিন্ন অংশ পড়ে শোনান।

রায় ঘোষণার সময় ট্রাইব্যুনালে বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণের বিবরণ তুলে ধরা হয়। বিচারকাজ চলার সময় দাখিল করা অডিও এবং ভিডিওসহ অন্যান্য তথ্যপ্রমাণের বর্ণনা দেওয়া হয়। ঘটনার শিকার ব্যক্তি এবং সাক্ষীরা আদালতে কী বলেছেন, সেগুলোর বর্ণনাও রায়ে উল্লেখ করা হয়।

রায়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং পরবর্তীতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে হত্যার ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ধারণ করা বিভিন্ন ভিডিওতে শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্যপ্রমাণ হিসেবে যা পাওয়া গেছে, তার বিবরণ দেওয়া হয়। এ সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা, সাভার, আশুলিয়া, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কীভাবে প্রাণঘাতী গুলি ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্যা করা হয়েছিল, সেগুলোর ভিডিও এবং তথ্যপ্রমাণের বিবরণ আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

আন্দোলনের সময়কার মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্টের বিভিন্ন অংশও ট্রাইব্যুনালে পড়ে শোনানো হয়। এছাড়া, গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে শেখ হাসিনার টেলিফোনে হওয়া কথোপকথনগুলোও রায়ে উল্লেখ করা হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর এজলাস কক্ষ থেকে রায় ঘোষণার এই সম্পূর্ণ কার্যক্রম বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সরাসরি সম্প্রচার করেছে।


দোষ স্বীকারেও এড়াতে পারলেন না সাজা: সাবেক আইজিপির ৫ বছর কারাদণ্ড

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৫:০৬:৫৭
দোষ স্বীকারেও এড়াতে পারলেন না সাজা: সাবেক আইজিপির ৫ বছর কারাদণ্ড
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। একই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে, এ মামলায় কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে সকালে ট্রাইব্যুনালে আনা হয় এবং হাজতখানায় রাখা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিচারিক প্যানেল ছয়টি অংশে বিভক্ত ৪৫৩ পৃষ্ঠার এই রায়ের বিভিন্ন অংশ পড়া শুরু করেন।

এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনের মাধ্যমে। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনাল গত বছরের ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। শুরুতে এই মামলায় শেখ হাসিনা একমাত্র আসামি থাকলেও, চলতি বছরের ১৬ মার্চ সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আসামি করার আবেদন করে প্রসিকিউশন, যাতে ট্রাইব্যুনাল সম্মতি দেন।

গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়, যেখানে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নামও অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রসিকিউশন গত ১ জুন শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধেই ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে।

গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন। ওই একই দিনে, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন 'অ্যাপ্রুভার' বা রাজসাক্ষী হওয়ার জন্য আবেদন করেন। পরে তিনি নিজের দোষ স্বীকার করে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'লেথাল উইপন' বা মারণাস্ত্র ব্যবহারের সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার ওই নির্দেশনা তিনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মাধ্যমে পেয়েছিলেন।


পতন থেকে মৃত্যুদণ্ড: ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক রায়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৪:৫৪:৫৭
পতন থেকে মৃত্যুদণ্ড: ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক রায়
ছবিঃ সংগৃহীত

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। এটি বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কোনো সাবেক সরকারপ্রধানের বিরুদ্ধে দেওয়া প্রথম রায়।

ট্রাইব্যুনাল তার রায়ে বলেছেন, মামলার অপর দুই আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধেও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আদালত মনে করেন, শেখ হাসিনা "সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি" (ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দায়) থেকে এই অপরাধ করেছেন। রায়ে উল্লেখ করা হয়, তিনি ড্রোন, হেলিকপ্টার এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি সেই নির্দেশ পালন করেছেন।

রায় পড়া শুরু হলে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার জানান, পুরো রায়টি ছয়টি অধ্যায়ে মোট ৪৫৩ পৃষ্ঠায় সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি রায়ের প্রাথমিক অংশে ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার, আসামিদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ এবং রোম স্ট্যাটিউট অনুযায়ী 'সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি'র আইনি ভিত্তি আদালতে পড়ে শোনান।

এ সময় তিনি আন্দোলন দমনের জন্য প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার ও হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর 'নির্দেশ' সংক্রান্ত টেলিফোন কথোপকথনের প্রমাণ তুলে ধরেন। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল এবং সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে শেখ হাসিনার ফোনালাপের উল্লেখ করা হয়। একইসঙ্গে, হেলিকপ্টার থেকে 'ছত্রী সেনা নামানোর' বিষয়ে সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনের বিষয়টিও রায়ে তুলে ধরা হয়।

ট্রাইব্যুনাল কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রাথমিক প্রেক্ষাপট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং পরবর্তীতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে হত্যার ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। বিচারকাজ চলার সময় ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা বিভিন্ন অডিও, ভিডিও এবং অন্যান্য তথ্যপ্রমাণের বিবরণও বিচারক বর্ণনা করেন। ঘটনার শিকার ব্যক্তি ও সাক্ষীরা কী বলেছেন, তা রায়ে উল্লেখ করা হয়।

বিশেষ করে, ঢাকার যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা, সাভার, আশুলিয়া এবং রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রাণঘাতী গুলি ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্যার ভিডিও ও তথ্যপ্রমাণের বিবরণ তুলে ধরা হয়। রায়ের আগে, আন্দোলনের সময়কার মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোও ট্রাইব্যুনালে পড়ে শোনানো হয়।

আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে, গত ২৩ অক্টোবর এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের আইনি যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। তখন ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার তারিখ জানানোর জন্য ১৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার জন্য আজকের এই দিনটি (১৭ নভেম্বর) ধার্য করেছিলেন। আজকের এই রায় ঘোষণা বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সরাসরি সম্প্রচার করেছে এবং বিটিভির মাধ্যমে অন্যান্য প্রচারমাধ্যমও এটি সরাসরি সম্প্রচার করে।


শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে 'মানবতাবিরোধী অপরাধের' সত্যতা মিলেছে: ট্রাইব্যুনাল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৪:৪৭:২০
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে 'মানবতাবিরোধী অপরাধের' সত্যতা মিলেছে: ট্রাইব্যুনাল
হাসিনার মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের সত্যতা মিলেছে। ফাইল ছবি

জুলাই গণআন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। তারা ৬টি অধ্যায়ে বিভক্ত ৪৫৩ পৃষ্ঠার এই রায়টি আদালতে পড়ে শোনান।

এর আগে, গত ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজকের (১৭ নভেম্বর) দিনটি ধার্য করেছিলেন। এই মামলায় ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের বা প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম এবং ফারুক আহাম্মদসহ অন্যরা।

গত ২৩ অক্টোবর এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সমাপনী বক্তব্য উপস্থাপন করেছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি সেসময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানসহ হেভিওয়েট নেতাদের বিচারের মুখোমুখি হওয়ার উদাহরণ ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন। রাষ্ট্রপক্ষ শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ সাজার আবেদন করেছিল। এরপর আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন যুক্তি উপস্থাপন করেন, যার জবাবে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং পরে আবার স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী পাল্টা উত্তর দেন।

এই মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও আসামি ছিলেন। তবে, তিনি রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন। একারণে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্কের সময় শেখ হাসিনা ও কামালের জন্য সর্বোচ্চ সাজা চাইলেও, মামুনের বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেয়। মামুনের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ তার মক্কেলের খালাস (অ্যাকুইটাল) চেয়েছিলেন।

এই মামলায় মোট ৮৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জন তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। চলতি বছরের ৩ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছিল। প্রথম সাক্ষী হিসেবে খোকন চন্দ্র বর্মণ ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ঘটনার চিত্র ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন। গত ৮ অক্টোবর মামলার মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরার মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্ব শেষ হয়। এরপর ২৩ অক্টোবর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয়।

প্রসিকিউশন এই তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনে। এর মধ্যে রয়েছে উসকানি দেওয়া, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড, চানখারপুলে হত্যাকাণ্ড এবং আশুলিয়ায় লাশ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ। মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রটি ছিল মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণ চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত