আবেদন ছাড়াই প্লট বরাদ্দ: রাজউক প্লট দুর্নীতি মামলায় আদালতে চাঞ্চল্যকর সাক্ষ্য

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৩ ২১:২২:১৮
আবেদন ছাড়াই প্লট বরাদ্দ: রাজউক প্লট দুর্নীতি মামলায় আদালতে চাঞ্চল্যকর সাক্ষ্য
টিউলিপ সিদ্দিক। ফাইল ছবি

রাজউকের প্লট দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক-সহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা। দুদক কর্মকর্তাদের দাবি, টিউলিপ সিদ্দিক তার খালা শেখ হাসিনার ওপর প্রভাব খাটিয়ে শেখ রেহানা পরিবারকে আইন ভেঙে প্লট বরাদ্দ পাইয়ে দিয়েছেন।

বুধবার (১৩ আগস্ট) প্লট দুর্নীতির তিনটি আলাদা মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এ এই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সালাহউদ্দিন এবং সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া ও এস এম রাশেদুল হাসান আদালতে জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার বোন শেখ রেহানার পরিবারকে ৩০ কাঠা প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন, যা রাজউকের বিধি লঙ্ঘন।

আইন অনুযায়ী, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের কোথাও একবার রাজউকের প্লট বরাদ্দ পেলে দ্বিতীয়বার আবেদনের সুযোগ নেই। কিন্তু কোনো আবেদন ছাড়াই শেখ পরিবারের সদস্যরা এই প্লট পেয়েছেন। দুদকের আইনজীবী তরিকুল ইসলাম বলেন, "শেখ হাসিনা তার চেয়ারের ক্ষমতা অপব্যবহার করে রাজউকের বিধি লঙ্ঘন করেছেন।"

দুদকের আরেক আইনজীবী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, "আবেদন না করার পরেও শেখ রেহানা পরিবার পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ডিপ্লোম্যাটিক জোনের মতো খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ১০ কাঠার একটি প্লট পেয়েছে এবং সেটির দখলও বুঝে নিয়েছে।"

দুদক কর্মকর্তারা সাক্ষ্যে আরও বলেন, গণভবনের ছত্রছায়ায় এই দুর্নীতি হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ২৮ আগস্ট।


উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য প্রস্তুত নয় বাংলাদেশ: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৩ ১৭:৪৭:০৪
উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য প্রস্তুত নয় বাংলাদেশ: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যে পথে রয়েছে, তা গত সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতা। তিনি অভিযোগ করেন, গত সরকারের সময়ে প্রকাশিত জিডিপি, ব্যক্তিগত আয়, মাতৃস্বাস্থ্যসহ অন্যান্য সামাজিক সূচকগুলো বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। তার মতে, বাংলাদেশ এখনও উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।

বুধবার (১৩ আগস্ট) প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভার বিষয় ছিল, “বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণী উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ ও দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে সতর্ক পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন।”

ফরিদা আখতার বলেন, এলডিসি উত্তরণের ফলে শুল্ক এবং জিএসপি সুবিধার ওপর যে প্রভাব পড়বে, তা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন। তিনি সতর্ক করে বলেন, বিদেশ থেকে কম দামে গরুর মাংস আমদানি করলে দেশীয় খামারিদের, বিশেষ করে গ্রামের গরিব নারীদের, বড় ধরনের ক্ষতি হবে।

তিনি আরও বলেন, সরকার বিদেশ থেকে মাংস আমদানি কমানোর চেষ্টা করছে, কারণ এর মাধ্যমে জুনোটিক রোগ দেশে প্রবেশের ঝুঁকি থাকে। তিনি সামুদ্রিক শৈবাল (সি-উইড) এবং কুচিয়া (এক ধরনের বাইন মাছ) রপ্তানির বিশাল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে আমদানি কমাতে হবে এবং দেশীয় উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

এ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এবং থার্ড ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের জেনেভা ভিত্তিক লিগ্যাল অ্যাডভাইজার সানিয়া রেইড স্মিথসহ অন্যান্য বিশিষ্টজন।


ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায়: পাম তেলের মূল্যহ্রাসের পর বাজারে মনিটরিং জোরদার  

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৩ ১৬:৫৩:০৪
ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায়: পাম তেলের মূল্যহ্রাসের পর বাজারে মনিটরিং জোরদার
 
ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার কারণে দেশের বাজারে খোলা পাম তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৯ টাকা কমিয়ে ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই মূল্যহ্রাসকে কেন্দ্র করে অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন পাম তেলকে সয়াবিন তেল হিসেবে বিক্রি করে অতিরিক্ত মুনাফা করতে না পারে, সেজন্য বাজারে কঠোর নজরদারি করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিটিটিসির পক্ষ থেকে এই নির্দেশনা জারি করা হয়।

গত ৩ আগস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে ভোজ্যতেলের নতুন দাম সমন্বয় করা হয়। এতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১৮৯ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়। তবে খোলা পাম তেলের দাম লিটারে ১৯ টাকা কমিয়ে ১৫০ টাকা করা হয়।

বিটিটিসির বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত তিন মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে পাম তেলের দাম কমেছে এবং এর আমদানিও বেড়েছে। বর্তমানে খোলা সয়াবিন তেলের চেয়ে পাম তেলের দাম ১৯ টাকা কম হওয়ায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই সুযোগ নিতে পারে।

ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় এবং এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে স্থানীয় প্রশাসনকে বাজারে তদারকি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, অপরাধ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে।

/আশিক


নির্বাচনে যারা প্রার্থী হতে পারবেন না জানালেন উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৩ ১৬:৪৩:৪৫
নির্বাচনে যারা প্রার্থী হতে পারবেন না জানালেন উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ঋণখেলাপিরা প্রার্থী হতে পারবেন না বলে স্পষ্ট মত দিয়েছেন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ আয়োজিত ‘ইপি পেনশন’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ঋণখেলাপিদের সঠিকভাবে শনাক্ত করা এবং তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া। তবে বাস্তবায়নের পথে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে তিনি আদালতের স্টে অর্ডারের কথা উল্লেখ করেন। এই সুযোগ নিয়ে অনেকে প্রার্থী হন। উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, মহীউদ্দীন খান আলমগীর ঋণখেলাপি মামলা নিয়ে টানা পাঁচ বছর সময় কাটিয়েছিলেন।

আগামী নির্বাচনে কালো টাকা রোধে সরকার কোনো পদক্ষেপ নেবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কালো টাকা রোধের ক্ষেত্রে দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো উৎস, অপরটি হলো প্রক্রিয়া। উৎস নিয়ন্ত্রণে আনা তুলনামূলকভাবে এখন অনেকটাই সম্ভব হয়েছে। আগে দেখা যেত ব্যাংকের মালিক, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক, পত্রিকার মালিক, এমনকি বড় ফ্ল্যাট মালিক সবই একজন ব্যক্তি হতেন এবং তিনি অবাধে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতেন। কিন্তু এখন এ ধরনের পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে, একটি চেক অ্যান্ড ব্যালান্স ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির পারস্পরিক সম্পর্কের প্রসঙ্গ টেনে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন মূলত নির্ভর করে রাজনৈতিক সংস্কৃতির ওপর। যদি রাজনীতিবিদরা নিজেরাই উৎসাহ দেন যেমন টাকা-পয়সা দিয়ে নমিনেশন দেওয়া, ভোট কেনা—তাহলে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকেও কিছু করার সুযোগ থাকে না।

-রফিক


সিলেটের সাদাপাথরে পাথর লুট নিয়ে দুদকের কঠোর বার্তা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৩ ১৬:২৯:৫০
সিলেটের সাদাপাথরে পাথর লুট নিয়ে দুদকের কঠোর বার্তা
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলা নির্বিচার পাথর লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সিলেট কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রাফী মোহাম্মদ নাজমুস সাদাত। বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে নয় সদস্যের একটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এই ঘোষণা দেন।

রাফী মোহাম্মদ নাজমুস সাদাতের নেতৃত্বে দুদকের দলটি সাদাপাথর এলাকায় গিয়ে প্রথমে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো পর্যবেক্ষণ করে এবং স্থানীয়দের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। তারা পাথর উত্তোলনের স্থান, পরিবহনপথ ও সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো ঘুরে দেখে সম্ভাব্য দায়ীদের বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা নেয়। দলটি স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু কর্মকর্তার সঙ্গেও কথা বলে, যাতে তদন্ত রিপোর্টে ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ চিত্র উঠে আসে।

দায়ীদের চিহ্নিতকরণ ও তদন্ত রিপোর্ট কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রেরণপরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে দুদকের উপ-পরিচালক বলেন, “যাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগসাজশে এই নির্বিচার পাথর লুটপাট সংঘটিত হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করা হবে। এই তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট আমরা দুদকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠাব। এরপর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি আরও বলেন, “প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষা ও অবৈধ বাণিজ্য রোধে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখানে সেই দায়িত্ব পালনে মারাত্মক ঘাটতি ছিল বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। সাদাপাথর এলাকা থেকে কয়েকশ কোটি টাকার সম্পদ অবৈধভাবে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। এটি শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপরও বড় ধরনের হুমকি।”

অভিযান পরিচালনায় কেন এত দেরি হলো এই প্রশ্নের জবাবে দুদক কর্মকর্তা জানান, তারা মূলত প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেন। বিলম্বের অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি জনবল সংকটকে দায়ী করেন। “দুদকের কাজ অত্যন্ত বিস্তৃত। জনবল সীমিত হওয়ায় অনেক সময় তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান পরিচালনা সম্ভব হয় না,” বলেন তিনি।

সাদাপাথরের অবৈধ লুটপাট শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতিই ডেকে আনেনি, বরং স্থানীয়দের জীবন-জীবিকার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, বছরের পর বছর ধরে চলা এই লুটপাট রোধে প্রশাসনের যথাযথ উদ্যোগ ছিল না। স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর মতে, এভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস হলে পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে এবং কোম্পানিগঞ্জের ভূ-প্রকৃতি ও নদী তীরবর্তী বাস্তুতন্ত্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এখন এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, দুদকের তদন্তের মাধ্যমে মূল চক্র উন্মোচিত হবে এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ প্রাকৃতিক সম্পদ লুটপাটের সাহস না পায়।

-শরিফুল


নির্বাচনের আগে সরকার ছাড়বেন আসিফ মাহমুদ: রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৩ ১৪:০১:৫৬
নির্বাচনের আগে সরকার ছাড়বেন আসিফ মাহমুদ: রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ছবি: সংগৃহীত

স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ঠিকানা টিভির একটি টকশোতে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

আসিফ মাহমুদ বলেন, "২০১৮ সাল থেকে আমি রাজনীতিতে সক্রিয়। আমার বিশ্বাস, নির্বাচনের সময় যারা রাজনীতি করেন, তাদের সরকারে থাকা উচিত নয়। তাই তফসিল ঘোষণার আগেই আমি পদত্যাগ করব।"

তবে তিনি এখনো নিশ্চিত নন যে আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি-না, কিংবা জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দেবেন কি-না।

জুলাই আন্দোলনের একজন ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আসিফ মাহমুদ তার এক বছরের সরকারি কার্যক্রম, সেনাবাহিনীর ভূমিকা এবং জুলাই আন্দোলনের মিত্রদের মধ্যে বিভাজন নিয়ে কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে সোচ্চার থাকতেই তিনি সরকারে যোগ দেন, ক্ষমতার লোভে নয়।

তিনি আরও বলেন, কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ এখনো বাকি আছে, যেমন জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন। এসব কাজ শেষ না করলে একটি ঐতিহাসিক দায় থেকে যাবে বলে তিনি মনে করেন।

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে নিয়ে এক ভিডিও বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ জানান, এটি সরকার গঠনের আগের ঘটনা। একটি বৈঠকে সেনাপ্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান হিসেবে মেনে নিতে চাননি, কারণ আওয়ামী লীগ তার সমর্থক নয়। পরবর্তীতে মেনে নিলেও তিনি 'বুকে পাথর চাপা' শব্দটি ব্যবহার করেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে সেনাবাহিনী বা সরকারের সাথে তার ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই, তবে সেনাপ্রধানের দ্বিমত ছিল আওয়ামী লীগ-কেন্দ্রিক।

আসিফ মাহমুদ জানান, বর্তমান সরকারে একাধিক ক্ষমতার কেন্দ্র আছে। ড. ইউনূসের সরকার ছাড়াও আরও সরকার আছে। ৫ই আগস্টের পর থেকে সামরিক বাহিনী একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

তিনি আরও বলেন, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় নাগরিক পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। এর দায় তার ওপর পড়লেও, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না, কারণ বিএনপি ও কিছু সহযোগী দল এতে রাজি হচ্ছে না।

কুমিল্লার মুরাদনগরে তাঁর বাবা বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে চলমান নানা বিতর্কের জবাবে আসিফ মাহমুদ সেগুলোকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অপপ্রচার হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। তিনি আরও স্পষ্ট করেন যে তিনি মুরাদনগর থেকে নির্বাচনে লড়বেন না, বরং জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতি করতে চান এবং ঢাকা শহরই তার রাজনৈতিক গন্তব্য।


তরুণদের স্বপ্ন পূরণে দায়বদ্ধতার কথা স্মরণ ড. ইউনূসের

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৩ ১২:০১:২৮
তরুণদের স্বপ্ন পূরণে দায়বদ্ধতার কথা স্মরণ ড. ইউনূসের
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা করেছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে, যাতে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করা যায়। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং ক্ষমতার প্রকৃত মালিক—জনগণের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হবে সরকারের প্রধান লক্ষ্য।

বুধবার (১৩ আগস্ট) কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়া ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় (ইউকেএম) কর্তৃক প্রদত্ত সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণের পর দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইউকেএম বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে এক উৎসবমুখর অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও নেগেরি সেমবিলান দারুল খুসুস রাজ্যের সুলতান তুংকু মুহরিজ ইবনি আলমারহুম তুংকু মুনাওয়িরের কাছ থেকে তিনি এই ডিগ্রি গ্রহণ করেন। সামাজিক ব্যবসা প্রসারে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

ড. ইউনূস বলেন, এই সম্মাননা তাকে তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণে নিজের দায়িত্বের কথা আরও স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি উল্লেখ করেন, গত বছর বাংলাদেশের অসংখ্য তরুণ সাহসিকতার সঙ্গে ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল এবং শত শত শিক্ষার্থী ও যুবক একটি মর্যাদাপূর্ণ, স্বাধীন ও বৈষম্যহীন ভবিষ্যতের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে।

তিনি জানান, ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে তরুণদের নেতৃত্বে সংঘটিত অভ্যুত্থান জাতীয় পরিচয় ও ভবিষ্যতের আশা–আকাঙ্ক্ষায় নতুন অর্থ তৈরি করেছে। তার সরকারের লক্ষ্য এমন একটি বাংলাদেশ গড়া, যেখানে শাসনব্যবস্থা হবে ন্যায়ভিত্তিক, অর্থনীতি হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রত্যেক নাগরিক সমানভাবে সফল হওয়ার সুযোগ পাবে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠাকে অগ্রাধিকার দিয়ে তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য বিস্তৃত সংস্কার ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন জরুরি—যার মধ্যে রয়েছে উদ্যোক্তাদের সহায়তা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক–আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরাই আগামী দিনের নির্মাতা। তোমাদের সৃজনশীলতা ও দায়িত্ববোধ কেবল মালয়েশিয়া নয়, গোটা বিশ্বকে বদলে দিতে পারে। প্রকৃত সাফল্যের অর্থ শুধু নিজের জন্য অর্জন নয়, বরং অন্যদের সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। “আমরা যে শ্রেষ্ঠ উত্তরাধিকার রেখে যেতে পারি তা হলো এমন একটি বিশ্ব, যেখানে কাউকে পিছনে ফেলে রাখা হবে না।”

ড. ইউনূস শিক্ষার্থীদের বড় স্বপ্ন দেখার, সাহসীভাবে চিন্তা করার ও ব্যর্থতাকে সাফল্যের পথে ধাপ হিসেবে গ্রহণ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পৃথিবীকে বদলে দিতে প্রয়োজন প্রকৃত নেতা ও সমস্যা সমাধানকারী। প্রত্যেকের মধ্যেই অসাধারণ কিছু করার সামর্থ্য আছে—মানুষের সেবায় ব্যবসা গড়ে তোলা, জীবন বদলে দেওয়া ধারণা সৃষ্টি করা বা উন্নয়নের পথে একটি সম্প্রদায়কে এগিয়ে নেওয়া নীতি প্রণয়ন করা।

তিনি সতর্ক করেন, আজকের বিশ্বে সম্পদের অতিরিক্ত কেন্দ্রীকরণ বৈষম্য ও অবিচার বাড়াচ্ছে। এজন্য প্রয়োজন অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি, যেখানে সম্পদ ন্যায্যভাবে ভাগ হবে এবং প্রত্যেকে মর্যাদা ও উদ্দেশ্য নিয়ে বাঁচতে পারবে। নিজের কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি বলেন, মানুষ প্রতিভা বা স্বপ্নের অভাবে দরিদ্র নয়, বরং সুযোগের অভাবে দরিদ্র। প্রচলিত আর্থিক ব্যবস্থা ধনীদের সেবা করার জন্য তৈরি, তাই তিনি গ্রামীণ ব্যাংক ও ক্ষুদ্রঋণ উদ্যোগের মাধ্যমে দরিদ্রদের জন্য সুযোগ তৈরির বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন।

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, দুই দেশ পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং যৌথ উন্নয়ন লক্ষ্যের ভিত্তিতে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রেখেছে। মানবসম্পদ উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে মালয়েশিয়া সবসময় বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য সহযোগী ছিল।

তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ নতুন যুগে প্রবেশ করছে এবং সেমিকন্ডাক্টর শিল্প, হালাল অর্থনীতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও উদ্যোক্তা উন্নয়নসহ সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার সঙ্গে অংশীদারিত্ব বাড়াতে চায়।

সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদানের জন্য ইউকেএম কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে ড. ইউনূস দুই দেশের মধ্যে বন্ধন জোরদার এবং পারস্পরিক শিক্ষা ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী জাম্ব্রি আব্দ কাদির ও ইউকেএম ভাইস–চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সুফিয়ান জুসোহসহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

-রাফসান


ভারত–চীনের সরাসরি বিমান পরিষেবা পুনরায় চালুর পথে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৩ ১০:৪১:২৯
ভারত–চীনের সরাসরি বিমান পরিষেবা পুনরায় চালুর পথে
ছবি: সংগৃহীত

ভারত ও চীনের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনঃচালুর প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে এবং আগামী মাস থেকেই এই বহুল প্রত্যাশিত পরিষেবা চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ ভারতের প্রভাবশালী সরকারি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, ভারতের সিভিল এভিয়েশন বিভাগ ইতিমধ্যেই এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগোকে খুব স্বল্প নোটিশে রুটে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) সামিটের সময় বা তার কাছাকাছি সময়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।

এটি শুধু একটি পরিবহন সুবিধার পুনঃপ্রবর্তন নয়, বরং দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের শীতল কূটনৈতিক সম্পর্কের বরফ গলানোর সূক্ষ্ম ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। ২০২০ সালের মে মাসে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে কৈলাস–মানস সরোবর যাত্রা ও সরাসরি বিমান পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। তার এক মাস পর পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুই দেশের সম্পর্ক গভীর সংকটে পড়ে। এই ঘটনার পর থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দীর্ঘদিন অচলাবস্থায় ছিল।

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ভারত ও চীন নীতিগতভাবে বিমান যোগাযোগ পুনঃস্থাপনে সম্মত হয় এবং একই বছরের জুন মাসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তা দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ভ্রমণ ভিসা সহজীকরণ এবং কৈলাস–মানস সরোবর যাত্রা পুনরায় চালুর উদ্যোগ দুই দেশের সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণের আরেকটি দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

-রফিক


টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব বিতর্কে নতুন মোড়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৩ ০৯:০১:০২
টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব বিতর্কে নতুন মোড়
শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত

শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানিয়েছেন, টিউলিপ প্রাপ্তবয়স্ক বয়সে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছেন এবং ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন। এই তথ্য টিউলিপের দীর্ঘদিনের দাবি তিনি বাংলাদেশি নাগরিক নন এর সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ জানান, টিউলিপের একাধিক পাসপোর্ট, ভোটার আইডি এবং বাংলাদেশে নিবন্ধিত ঠিকানা পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, “এসব নথি আমরা আদালতে যথাসময়ে উপস্থাপন করব।” ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, বাংলাদেশে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি দপ্তর এই নথিগুলোর অনুলিপি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

অন্যদিকে, টিউলিপ সিদ্দিক এসব অভিযোগ ও নথির সত্যতা অস্বীকার করেছেন। তার আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্টিফেনসন হারউড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, টিউলিপের কখনো বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি ছিল না এবং শিশু বয়স থেকে তিনি কোনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট গ্রহণ করেননি। তারা নথিগুলোকে ‘জাল’ আখ্যা দিয়েছে। টিউলিপ এই বিচার প্রক্রিয়াকে “হয়রানি ও প্রহসন” বলে উল্লেখ করেছেন এবং দাবি করেছেন, মামলার বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, নাগরিকত্বের প্রশ্নটি সরাসরি এই মামলার বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত নাও করতে পারে, তবে আদালতে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর আগে এ ধরনের বিতর্ক আসা অভিযুক্তের সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। বর্তমানে টিউলিপ অনুপস্থিতিতেই ঢাকার একটি আদালতে তার বিচার চলছে।

দুদকের মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, টিউলিপ সিদ্দিক তার খালা শেখ হাসিনা, মা এবং দুই ভাইবোনের সঙ্গে মিলে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে বেআইনিভাবে সরকারি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, প্লট পাওয়ার যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বরাদ্দ আদায় করেছেন।

এই মামলার পটভূমিতে রয়েছে শেখ হাসিনার পতনের পর দুর্নীতির নতুন তদন্তের প্রক্রিয়া। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনামলে তার বিরুদ্ধে কর্তৃত্ববাদ, নির্বাচন কারসাজি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ছিল। ছাত্রনেতৃত্বাধীন দেশব্যাপী বিক্ষোভের মুখে তিনি গত বছরের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। তার বিদায়ের পর নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠজনদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু করে।

টিউলিপ সিদ্দিক এর আগে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সিটি মিনিস্টারের (ইকোনমিক সেক্রেটারি) দায়িত্বে ছিলেন, যেখানে তিনি আর্থিক খাতে দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্ব পালন করতেন। তবে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এ আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পদ থেকে তিনি সুবিধা নিয়েছেন এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পর রাজনৈতিক চাপে পদত্যাগ করেন।

টিউলিপের দাবি, তিনি কোনো ধরনের অনিয়ম করেননি এবং এই মামলার মাধ্যমে অধ্যাপক ইউনূসের সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করছে, যার শিকার তিনি। তবে দুদক বলছে, তার বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে এবং নোটিশ যথাযথভাবে প্রদান করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করেছে যে, টিউলিপ সিদ্দিকের একটি জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে, যদিও সেটি সরাসরি নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে না।

-রফিক


কৃষিঋণ নিয়ে সুখবর দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৩ ০৮:১২:০২
কৃষিঋণ নিয়ে সুখবর দিল বাংলাদেশ ব্যাংক
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন ও ফসলের বৈচিত্র্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ১০টি নতুন ফসলকে কৃষিঋণের আওতায় এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় খিরা, কচুর লতি, কাঁঠাল, বিটরুট, কালোজিরা, বস্তায় আদা, রসুন, হলুদ এবং খেজুরের গুড় চাষে ঋণসুবিধা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাজধানীতে নতুন অর্থবছরের নীতিমালা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। এ সময় কৃষি ঋণ বিভাগের পরিচালকসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, এসব নতুন ফসল চাষে ঋণ চালু হলে কৃষকের আয় বাড়বে, গ্রামীণ অর্থনীতিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং দেশীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানির নতুন সুযোগ তৈরি হবে। এর ফলে কিছু কৃষিপণ্যে আমদানি নির্ভরতা কমে যাবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে কৃষকদের সহায়তা বাড়ানো জরুরি। এজন্য তাদের ঋণপ্রাপ্তি সহজ করতে হবে, কারণ অনেক কৃষকের ব্যাংক ঋণে প্রবেশাধিকার নেই। প্রকৃত কৃষকের হাতে ঋণ পৌঁছানো নিশ্চিত করতে দালালচক্র নিয়ন্ত্রণে কঠোর নজরদারির নির্দেশ দেন তিনি।

২০২৫-২৬ অর্থবছরে কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের ৩৮ হাজার কোটি টাকার তুলনায় ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি। তবে গত অর্থবছরে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি ব্যাংকগুলো।

গভর্নরের মতে, কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা আরও উচ্চাভিলাষী হওয়া উচিত এবং বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করলে ঋণপ্রবাহ ও কৃষি খাতের প্রসার ছোট লক্ষ্য পূরণের তুলনায় বেশি কার্যকর হবে। তিনি ক্ষুদ্র কৃষি উদ্যোক্তাদের কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান এবং বড় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে না পড়তে ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনে মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ দেন।

-রফিক

পাঠকের মতামত: