২১ আগস্ট মামলায় খালাস! আজ বড় সিদ্ধান্তের মুখে তারেক-বাবর

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা হত্যা ও বিস্ফোরক মামলায় হাইকোর্টে খালাসপ্রাপ্ত আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি আজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য এ আপিল তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর আগে ১৭ জুলাই থেকে এই মামলার শুনানি শুরু হয় এবং আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ, যিনি আদালতে পেপারবুক থেকে প্রাসঙ্গিক অংশ পাঠ করেন। অন্যদিকে বিএনপিপন্থী আসামিদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ আরও কয়েকজন আইনজীবী।
এই মামলায় আপিল বিভাগের শুনানির জন্য প্রথমে ১৫ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়। এর আগেই, ২০২৪ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দেন। এর ফলে বিচারিক আদালতে দেওয়া যাবৎজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল হয়ে যায়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ‘লিভ টু আপিল’ করার অনুমতি চায় এবং তা গত ১ জুন মঞ্জুর হয়। এরপর ১৫ মে শুরু হওয়া শুনানি ২৮ মে পর্যন্ত চলে এবং আদালত আপিলের অনুমতি প্রদান করেন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের সারসংক্ষেপ দাখিলের নির্দেশ দেন।
গত বছরের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করে, যেখানে গ্রেনেড হামলা মামলার সকল আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। এরপর ১৯ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৭৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক দুটি লিভ টু আপিল দায়ের করে, যা ১৩ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে উপস্থাপন করা হয় এবং পরে তা নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত হন এবং আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী। এই ঘটনায় দায়ের করা হত্যা ও বিস্ফোরক মামলাগুলোর বিচারিক কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে চলমান রয়েছে।
/আশিক
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক ও বাবরের খালাসের রায় বহাল
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপি নেতা তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সকল আসামির খালাসের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদনটি খারিজ করে এই রায় দেন।
এর আগে গত ১ জুন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সকল আসামিকে খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। দীর্ঘদিন ধরে আপিলের শুনানি শেষে আজ চূড়ান্ত আদেশ দেন আদালত।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত এ মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ওই বছরের ২৭ নভেম্বর নিম্ন আদালতের রায়ের নথি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পাঠানো হয়।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে তারেক রহমান ও বাবরসহ সকল আসামিকে খালাস দেন। হাইকোর্ট সে সময় রায়ে মন্তব্য করেন যে, মামলাটির বিচার প্রক্রিয়া আইনসম্মত ছিল না এবং চার্জশিটও আইনত গ্রহণযোগ্য ছিল না।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের একটি সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। এই হামলায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাসহ দলের শতাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন, যাদের অনেকেই এখনো গ্রেনেডের স্প্লিন্টার নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
/আশিক
মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী সম্পত্তি ভাগাভাগির নিয়ম
বাংলাদেশসহ মুসলিম প্রধান সমাজে জমি কিংবা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ভাগাভাগির ক্ষেত্রে ধর্মীয় উত্তরাধিকার আইন বা ফরায়েজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই আইন মূলত কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনা অনুসারে প্রণীত, যেখানে প্রত্যেক ওয়ারিশের প্রাপ্য অংশ সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত থাকে।
পুত্র ও কন্যার অংশ
মৃত ব্যক্তির পুত্র ও কন্যা উভয়েই উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির অধিকারী হন। তবে ইসলামী উত্তরাধিকার ব্যবস্থায় সাধারণত পুত্র সন্তান কন্যার দ্বিগুণ অংশ প্রাপ্ত হন। এই নিয়মের মাধ্যমে পরিবারে আর্থিক দায়িত্ব ও কর্তব্য বণ্টনের বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়েছে।
দাদা-দাদী ও নানী-নানীর অংশ
যদি মৃত ব্যক্তির পিতা-মাতা জীবিত না থাকেন, তবে দাদা, দাদী কিংবা নানীও উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির অংশীদার হওয়ার সুযোগ পান। তবে এ ক্ষেত্রে তাদের প্রাপ্য অংশ নির্ভর করে অন্য ওয়ারিশদের উপস্থিতি ও প্রাপ্য অংশের ওপর।
মায়ের সম্পত্তির বণ্টন
মৃত মায়ের সম্পত্তি ভাগ করার ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। যদি মা জীবিত না থাকেন, তবে তাঁর সন্তানরা সমানভাবে উত্তরাধিকার হবেন। এখানে ছেলেমেয়ের অনুপাতে দ্বিগুণ-অর্ধেকের নীতি কার্যকর হয়। অর্থাৎ, ছেলে সন্তান কন্যার তুলনায় দ্বিগুণ অংশের দাবিদার হন।
ওয়ারিশ সনদের প্রয়োজনীয়তা
ব্যবহারিক বাস্তবতায় সম্পত্তি ভাগাভাগি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দেওয়ানি আদালতের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহ করা অত্যন্ত জরুরি। ওয়ারিশ সনদে নির্ধারিত হয় কে কে বৈধ উত্তরাধিকারী এবং কার কত অংশ পাওনা। এই সনদ ছাড়া সরকারি বা আইনি প্রক্রিয়ায় সম্পত্তি হস্তান্তর বা নামজারি কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না।
আইনি প্রক্রিয়া ও মামলা
যদি উত্তরাধিকার বণ্টন নিয়ে কোনো মতবিরোধ বা জটিলতা দেখা দেয়, তবে সংশ্লিষ্ট আদালতে "বণ্টন মামলা" বা ব্যাটওয়ারা মামলা দায়ের করতে হয়। আদালতের রায় অনুযায়ী সম্পত্তির অংশীদারদের মধ্যে যথাযথভাবে জমি বা সম্পত্তি ভাগ করা হয়।
প্রযোজ্য আইন
বাংলাদেশে মুসলিম উত্তরাধিকার আইন ১৯৬১ একটি প্রধান রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই আইনে উত্তরাধিকার বণ্টনের বিস্তারিত কাঠামো বর্ণিত আছে। তবে কোনো বিশেষ পরিস্থিতি বা জটিলতার ক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া সবসময়ই যুক্তিসঙ্গত।
শেখ হাসিনার মামলার বিচার শেষ পর্যায়, রায় শীঘ্রইে
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার বিচার এখন শেষ পর্যায়ে। মাত্র ৯ দিনে ২৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্যে ৬ জন শহীদ আন্দোলনকারীর বাবা-মা ও ভাইসহ আহত আন্দোলনকারী এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়েছেন। সাক্ষীরা সবাই এক কণ্ঠে বলেছেন—হাজারো মানুষ হত্যার জন্য শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের ফাঁসি হওয়া উচিত।
প্রসিকিউশন জানিয়েছে, মামলায় আরও অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন সাক্ষী আদালতে হাজির হবেন। অবশিষ্ট সাক্ষ্যগ্রহণে ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগতে পারে। এরপর উভয় পক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবে। প্রসিকিউশনের মতে, সবকিছু ঠিক থাকলে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক শেষ হওয়ার কথা। এরপর ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য দিন ঘোষণা করবে।
এই মামলায় মোট সাক্ষী রয়েছেন ৮১ জন, যাদের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা ও একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকও আছেন। আগামী ১ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ হবে। ট্রাইব্যুনালের জ্যেষ্ঠ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে ১৫ অক্টোবরের মধ্যেই সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষ হবে এবং এরপর আদালত রায়ের তারিখ ঘোষণা করবে।
তিনি আরও জানান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ইতোমধ্যেই দোষ স্বীকার করেছেন এবং রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রুভার) হিসেবে সাক্ষ্য দেবেন। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আইনজীবীরা চূড়ান্ত যুক্তি উপস্থাপন করবেন।
গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট ৫টি অভিযোগে বিচার শুরু করার আদেশ দেয়। অভিযোগগুলো হলো: ১,৪০০ আন্দোলনকারীকে হত্যার নির্দেশ, উসকানি ও প্ররোচনা, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ’।
এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন। চৌধুরী আল-মামুন মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।
চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ করছে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এছাড়া, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর একটি হলো আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনা, অন্যটি রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত।
ই-কমার্স খাতে শৃঙ্খলা আনতে কঠোর আইন: অনলাইনে মিথ্যা তথ্য দিলেই কারাদণ্ড
বাংলাদেশে দ্রুত প্রসারমান ই-কমার্স খাতকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে এবং ক্রেতাদের অধিকার সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুনভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে ‘ডিজিটাল বাণিজ্য কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ’, যেখানে অনলাইন বিক্রেতাদের প্রতারণা ও অনিয়ম ঠেকাতে কড়া শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, অনলাইনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পণ্য বিক্রি করলে সংশ্লিষ্ট বিক্রেতাকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং অনাদায়ে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। নির্ধারিত সময়ে পণ্য বা সেবা সরবরাহ না করলে মূল্যের কয়েক গুণ জরিমানা আরোপ করা হবে। নিষিদ্ধ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রেও বড় অঙ্কের জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২১–২২ সালে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণার কারণে হাজার হাজার গ্রাহক পণ্য না পেয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন। তখন টাকা ফেরতের দাবিতে মিছিল, সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ পর্যন্ত হয়েছিল। এসব ঘটনা বিবেচনায় নিয়েই নতুন আইন আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের মে মাসে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিসভায় এ খসড়ার অনুমোদন হয়েছিল। তবে সরকার পতনের পর আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। এখন অন্তর্বর্তী সরকার খসড়াটি নতুন করে সামনে এনেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত খসড়া অধ্যাদেশ ইতোমধ্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে তা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। এরপর যাবে ‘আইনের খসড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক মতামত প্রদান কমিটি’র বৈঠকে। যদিও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিষয়টি এখনো তার নজরে আসেনি, তবে তিনি খোঁজ নিচ্ছেন।
খসড়ায় বলা হয়েছে, যেকোনো ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইনে পণ্য ও সেবা কেনাবেচাকে ‘ডিজিটাল বাণিজ্য’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। নিবন্ধিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যারা নিজস্ব নামে ওয়েবসাইট, মার্কেটপ্লেস বা অন্য কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে অনলাইনে পণ্য বা সেবা বিক্রি বা প্রদর্শন করবে, তাদেরই ‘ডিজিটাল বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে গণ্য করা হবে। অনুমতি ছাড়া গিফট কার্ড, ওয়ালেট, ক্যাশ ভাউচার বা ডিজিটাল ভাউচার চালু করলে জরিমানা করা হবে। অনলাইন লটারির আয়োজন করলেও বড় অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে। প্রতিটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স ও ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিটি (ডিবিআইডি) নিবন্ধন নিতে হবে। প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করলে কর্তৃপক্ষ তাদের নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে।
অধ্যাদেশ পাস হলে গঠিত হবে ডিজিটাল বাণিজ্য কর্তৃপক্ষ, যা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে। এর প্রধান দায়িত্ব হবে ডিজিটাল বাণিজ্যের প্রসার ও শৃঙ্খলা রক্ষা, বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তি, প্রতারণা ও অপরাধ প্রতিরোধ, অনলাইন কার্যক্রম পরিদর্শন, ভুয়া বিজ্ঞাপন ও নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি ঠেকানো এবং ভোক্তা প্রতারণা রোধে তদারকি। এই কর্তৃপক্ষের কাঠামোতে থাকবেন একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বাণিজ্যমন্ত্রী বা বাণিজ্য উপদেষ্টা প্রধান করে গঠন করা হবে উপদেষ্টা পরিষদ।
অধ্যাদেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, অনলাইন ব্যাংকিং, আর্থিক সেবা, মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম, অনলাইন জুয়া, লটারি, যৌন উত্তেজক দ্রব্য বা অনলাইন এসকর্ট সেবা এ আইনের আওতার বাইরে থাকবে। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) তথ্যমতে, দেশে ই-কমার্স কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৯ সালে, তবে পূর্ণাঙ্গ যাত্রা শুরু হয় ২০০৯ সালে এবং ২০১৪ সালের পর থেকে খাতটির উল্লেখযোগ্য বিকাশ ঘটে। ২০১৮ সালে প্রণয়ন করা হয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা, যা ২০২০ সালে বিদেশি বিনিয়োগ উন্মুক্ত করে সংশোধন করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগের অধ্যাপক সুবর্ণ বড়ুয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, ই-কমার্স খাতে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা ও অনিয়ম চললেও কার্যকর কোনো কর্তৃপক্ষ না থাকায় সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই একটি শক্তিশালী আইন এবং কর্তৃপক্ষ গঠন এখন অত্যন্ত জরুরি, যা কার্যকর হলে অনলাইন কেনাবেচার নানা সমস্যা সমাধানে বাস্তব অগ্রগতি হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে খালাস পেলেন ইলিয়াস হোসেন
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। বুধবার (২৭ আগস্ট) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলম আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এই রায় ঘোষণা করেন।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পেশকার মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া জানান, মিতু হত্যা মামলায় মিথ্যা ও অসত্য তথ্য সরবরাহ ও প্রচারের অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর সাবেক প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের দায়ের করা মামলায় আদালত সাংবাদিক ইলিয়াসকে খালাস দিয়েছেন। সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায় থেকে তাকে এই খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের ৯ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জুলফিকার হায়াত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে সাবেক এসপি বাবুল আক্তার ও তার বাবা মো. আব্দুল ওয়াদুদ মিয়াকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
একইসঙ্গে, অপর দুই আসামি সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন ও বাবুলের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায়, ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারি বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত বাবুলের ভাই মো. হাবিবুর রহমানকে অব্যাহতি দেন এবং ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে মামলার বিচার শুরু করেন। এই মামলায় বিচার চলাকালে ১৩ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
/আশিক
ভূতের মুখে রাম নাম,তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান শেখ হাসিনাও: অ্যাটর্নি জেনারেল
বাংলাদেশের রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চান। তার মতে, এটি ‘ভূতের মুখে রাম নাম।’ বুধবার (২৭ আগস্ট) নিজ কার্যালয়ে একটি ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা) বাতিল ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এই আবেদনের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ শুনানির অনুমতি দিয়েছে।
দেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা আজকে আদালতে বলেছি, এখন আবার আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় ফিরতে চাই। আমরা মনে করি, দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরে আসবে। এর ফলে আর কোনো মায়ের বুক খালি হবে না, কোনো মা-বাবা তার সন্তান হারাবেন না। আর কখনো রক্ত দিয়ে ভোটের ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায় করতে হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আগের সরকার বলতো কখনো অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকতে পারে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার নিজেই ছিল অনির্বাচিত। আমরা তো তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার পক্ষে ছিলাম। এখন আবার ভূতের মুখে রাম নাম। আওয়ামী লীগ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চায়।”
/আশিক
তৌহিদ আফ্রিদির মামলা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন আইনজীবি
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্রদের জিম্মি করে তাদের নগ্ন ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির বিরুদ্ধে। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোমবার (২৫ আগস্ট) এ অভিযোগ তোলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নয়ন। শুনানি শেষে আদালত তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নয়ন আদালতে বলেন, বহুদিন ধরে পুলিশ তৌহিদ আফ্রিদিকে খুঁজছিল। অবশেষে সিআইডি গত রবিবার বরিশাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় আফ্রিদি ছাত্রদের জিম্মি করে নগ্ন ভিডিও তৈরি করতেন এবং সেগুলো সংরক্ষণ করে রাখতেন। সোমবার দুপুরে সিআইডি তাকে আদালতে হাজির করলে তদন্ত কর্মকর্তা খান মো. এরফান সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে ১৭ আগস্ট রাজধানীর গুলশান থেকে তৌহিদ আফ্রিদির বাবা, বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে আদালত তাকে এ মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান। এই মামলায় আফ্রিদি এজাহারভুক্ত ১১ নম্বর আসামি এবং তার বাবা নাসির উদ্দিন সাথী ২২ নম্বর আসামি হিসেবে তালিকাভুক্ত।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানাধীন পাকা রাস্তায় মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন মো. আসাদুল হক বাবু। ওইদিন দুপুর আড়াইটার দিকে আসামিদের ছোড়া গুলিতে বাবুর বুকে ও শরীরের ডান পাশে আঘাত লাগে। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে নিহত বাবুর বাবা জয়নাল আবেদীন ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ২৫ জনকে আসামি করা হয়। এই মামলার তদন্তে উঠে আসে বাবুর হত্যাকাণ্ডে রাজনৈতিক প্রভাব, সহিংসতা এবং পরিকল্পিত হামলার নানা দিক।
-শরিফুল
হাইকোর্টে নতুন বিচারক সারজিস আলমের শ্বশুর
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে সম্প্রতি ২৫ জনকে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে ৯৮ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে এসব নিয়োগ দিয়েছেন। নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারকদের কার্যকাল সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত হবে এবং তা শপথ গ্রহণের দিন থেকে কার্যকর হবে।
এই ২৫ জন নতুন বিচারকের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, ৯ জন আইনজীবী এবং ৭ জন আইন কর্মকর্তা। এতে বিচার বিভাগের নানা স্তর থেকে আসা অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান আদালতের কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন অ্যাডভোকেট মো. লুৎফর রহমান, যিনি পূর্বে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ব্যক্তিগত জীবনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের শ্বশুর।
এছাড়াও নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আনোয়ারুল ইসলাম (শাহীন), আইন ও বিচার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা, আইনজীবী রাজিউদ্দিন আহমেদ ও ফয়সাল হাসান আরিফ, যুগ্ম সচিব এস এম সাইফুল ইসলাম, আইনজীবী মো. আসিফ হাসান ও মো. জিয়াউল হক, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দিহিদার মাসুম কবীর, হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সচিব মুরাদ–এ–মাওলা সোহেল, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন, সলিসিটর (সিনিয়র জেলা জজ) মো. রাফিজুল ইসলাম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনজুর আলম, মো. রেজাউল করিম, ফাতেমা আনোয়ার, মাহমুদ হাসান, আবদুর রহমান, সৈয়দ হাসান যুবাইর, এ এফ এম সাইফুল করিম, উর্মি রহমান এবং এস এম ইফতেখার উদ্দিন মাহমুদ।
ক্যানসারে আক্রান্ত তৌহিদ আফ্রিদি: রিমান্ডের শুনানিতে চাঞ্চল্যকর দাবি আইনজীবীর
গণমাধ্যমের আলোচিত ব্যক্তিত্ব ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি লিভার ও ক্যানসারে আক্রান্ত বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী খায়রুল ইসলাম। সোমবার (২৫ আগস্ট) আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান তিনি।
এর আগে আদালতে খায়রুল ইসলাম জানান, মামলার ঘটনার সঙ্গে তার মক্কেলের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি বলেন, মামলার বাদী তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচার গুলিতে ভিকটিম নিহত হন। এতে আফ্রিদির কোনো ভূমিকা নেই। আইনজীবী আরও জানান, গত বছরের ১১ নভেম্বর মামলার বাদী একটি হলফনামা দিয়ে বলেন যে, তথ্যগত ভুলের কারণে আফ্রিদির নাম এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তাই এই মামলা থেকে আফ্রিদিকে খালাস দিলে বাদীর কোনো আপত্তি নেই। এ কারণে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার যৌক্তিকতা নেই।
শুনানিতে এই আইনজীবী জানান, আফ্রিদি কিডনি জটিলতায় ভুগছেন এবং তার চিকিৎসা চলমান। অতিরিক্ত হাঁটাচলার কারণে তার প্রস্রাবের সাথে রক্ত আসে। এছাড়াও তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। মানবিক দিক বিবেচনা করে তার জামিন মঞ্জুরের আবেদন জানান তিনি।
অন্যদিকে, বাদীর আইনজীবী ইব্রাহিম খলিল এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শামসুদ্দোহা সুমন ও জহিরুল হাসান মুকুল রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। তারা বলেন, আফ্রিদি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তারা তাকে ‘মিডিয়া সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এই আসামি লাইভে এসে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ও ছাত্রলীগকে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করতে উৎসাহিত করেন। তাকে রিমান্ডে নিলে জানা যাবে, কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, কে কী নির্দেশনা দিয়েছিল এবং কারা অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। এই আসামি ডিবি প্রধান হারুনের সঙ্গে একাধিক লাইভ করেছেন বলেও তারা উল্লেখ করেন। তারা আফ্রিদির সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছেন। শুনানিকালে আফ্রিদিকে কাঠগড়ার লোহার রেলিং ধরে মনোযোগ দিয়ে শুনানি শুনতে দেখা যায়।
এরপর আসামি পক্ষের আইনজীবী জানান, আফ্রিদি আন্দোলনের পক্ষেই ছিলেন। আন্দোলনের সময় ছাত্রদের পক্ষে তার একাধিক পোস্ট আছে। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আফ্রিদির বাবা নাসির উদ্দিন সাথীর ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, আসামির আলাদা কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তার বাবা একজন ব্যবসায়ী এবং তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের পদ-পদবিতে নেই। আফ্রিদির কিডনি জটিলতার কথা উল্লেখ করে তাকে আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন।
আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আফ্রিদির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানি শেষে এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে আফ্রিদিকে পেটে হাত দিয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায়। হাজতখানার সামনে তিনি জুতা ছাড়া খালি পায়ে ছিলেন, ভিড়ের মধ্যে তার জুতা হারিয়ে যায়। এর আগে গত ১৩ মে কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমও তার মামলার শুনানির সময় জুতা হারিয়েছিলেন। পরে তার জুতা এক পাগলির পায়ে দেখা গিয়েছিল।
গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে যাত্রাবাড়ী থানার পাকা রাস্তার ওপর মো. আসাদুল হক বাবু নামের একজন আন্দোলনকারী নিহত হন। তার বুকে ও ডান পাশে গুলি লাগে। এই ঘটনায় নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন গত বছরের ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ২৫ জনকে আসামি করা হয়, যার মধ্যে নাসির উদ্দিন ২২ নম্বর এবং তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
/আশিক
পাঠকের মতামত:
- ১০ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারের সার্বিক চিত্র ও বিশ্লেষণ
- ডিএসই ব্লক মার্কেট: বড় লেনদেনে যেসব কোম্পানি
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- জলবায়ু ইস্যুতে গণমাধ্যমের দায়িত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা: নিরাপত্তায় ১২০ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, একদিনে আক্রান্ত ৬২৫
- ভাঙ্গায় ১১ ঘণ্টা অবরোধ শেষে ফের নতুন ঘোষণা
- জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে আর জিডি করতে হবে না: ইসি
- ডাকসুতে জয়ীদের উদ্দেশ্যে জামায়াত আমিরের বার্তা
- কর ফাঁকি তদন্তে শেখ হাসিনার ব্যাংক লকার সিলগালা
- "ষড়যন্ত্র ভেদ করে ধানের শীষের জয় নিশ্চিত করতে হবে"
- ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫: কারা পেলেন সেরা সম্মাননা
- যুক্তরাষ্ট্রে আটক কোরীয় শ্রমিকদের দেশে ফেরাতে চার্টার্ড ফ্লাইট
- কাপ্তাই বাঁধে ১৬ গেট খোলা: কর্ণফুলীতে তীব্র পানি প্রবাহ
- জরায়ুর যত্নে সচেতনতা: নারীর সুস্থ জীবনের অপরিহার্য শর্ত
- মহেশখালী-মাতারবাড়ি: পর্যটন ও অর্থনীতির নতুন দিগন্ত
- ডোপ টেস্ট কী, কেন করা হয়, কেন এত এখন জরুরি
- একীভূতকরণ প্রসঙ্গে এক্সিম ব্যাংকের ব্যাখ্যা
- বিজয়ের পর শিবিরের তিনটি কাজের নির্দেশ
- ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমকে নিয়ে জুলকারনাইন সায়েরের বার্তা
- স্বাস্থ্য জটিলতায় স্ত্রীকে নিয়ে বিদেশে বিএনপি মহাসচিব
- মাত্র ২৪ ঘণ্টায় নতুন প্রধানমন্ত্রী
- আসন পুনর্বিন্যাসে উত্তাল ফরিদপুরের ভাঙ্গা
- ইসরায়েলের হামলা, কাতারের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
- ঢাবি ডাকসু: ভিপি–জিএস–এজিএস পদে শিবিরের দাপট
- ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
- নিরাপদ কাতারেও হামলা! দোহায় ইসরাইলি হামলায় তোলপাড় আরব বিশ্ব
- ইইউ সংলাপ: ঢাকার অগ্রাধিকার বাণিজ্য, ইউরোপের নজর অনিয়মিত অভিবাসনে
- খুনের পরিসংখ্যানে বৃদ্ধি: দেরিতে দায়ের হওয়া মামলার প্রতিফলন
- নেপালে অস্থিরতা: বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দূতাবাসের
- বিক্ষোভে রক্তক্ষয়, নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
- ৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে, নির্বাচন স্বচ্ছ দাবি ঢাবি ভিসির
- টিএসসি কেন্দ্রে তিন ঘণ্টায় ৩৫% ভোট
- অল্প সময়েই ছয় দফা বৃদ্ধি: স্বর্ণের বাজারে আগুন
- আবারও যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ইরান: সেনাপ্রধান হাতামির হুঁশিয়ারি
- থাকসিন শিনাওত্রার কারাদণ্ড: রাজনৈতিক বংশপরিচয়ের পতনের আভাস
- বার্মিংহামে বলিউডের ‘ওজিজি’ রানী: কারিনা কাপুর খানের সিলভার শাড়ি
- ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস: পোশাক নয়, স্টাইলের প্রদর্শনী
- বলিউডে বহিরাগতদের প্রতি ক্ষোভ, ‘নেপো বেবি’দের পক্ষ নিলেন তনিশা মুখার্জি
- মেক্সিকোতে ভয়াবহ ট্রেন-বাস সংঘর্ষে ১০ নিহত, আহত ৪১
- ডাকসু নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য
- বিদায় নিশ্চিত, সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে সম্মান রক্ষার লড়াইয়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩
- উয়েফার নিয়ম মানতে প্রস্তুত হ্যারি কেইন ও দল
- পরিচালকের শেয়ার কেনা সম্পন্ন
- যে ভোট রাতেই করা যায়, সেটা দিনে টেনে রাখা কেন?- ফারুকী
- মহাবিশ্বে নতুন দৈত্য কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান
- বার্নি স্যান্ডার্সের সঙ্গে জোহরান মামদানি, নিউইয়র্ক মেয়র নির্বাচনে প্রগতিশীল ঢেউ
- গাজা অভিমুখী শান্তিপূর্ণ মিশনে হামলা
- ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- গোয়ালন্দে কবর অবমাননার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের তীব্র নিন্দা
- “তারেক রহমানের নেতৃত্বেই ঐক্য সম্ভব”
- ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ
- সৌদি রাজতন্ত্রের অজানা অধ্যায়: ক্ষমতার জন্য বাবা ও ভাইদের ছাড় দিলেন না মোহাম্মদ বিন সালমান
- প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
- চাকরির প্রলোভনে কোটি টাকা হাতিয়ে ৩ প্রতারক গ্রেপ্তার
- নেপালে অস্থিরতা: বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দূতাবাসের
- ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ড. ইউনূসকে সরাতে কঠোর আন্দোলন হতে পারে: জাহেদ উর রহমান
- জ্বর, মাথাব্যথা, আর্থ্রাইটিস—ভিন্ন ভিন্ন সমস্যায় ভিন্ন ডোজ প্যারাসিটামল
- শেয়ারদর বৃদ্ধি নিয়ে ডিএসইকে যে ব্যাখ্যা দিল বিডিকম অনলাইন
- শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার প্রশ্ন: আওয়ামী লীগের সামনে এক অমীমাংসিত সংকট