উপজেলা পর্যায়ে আদালত সম্প্রসারণে রাজনৈতিক ঐকমত্য

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৭ ১৬:১০:২২
উপজেলা পর্যায়ে আদালত সম্প্রসারণে রাজনৈতিক ঐকমত্য

বিচারপ্রার্থীদের জন্য বিচারসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালত সম্প্রসারণের বিষয়ে নীতিগত ঐকমত্যে পৌঁছেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলো। তবে, জেলা সদরের নিকটবর্তী উপজেলাগুলোতে পৃথক আদালত স্থাপন অনাবশ্যক মনে করছে অধিকাংশ দল।

সোমবার (৭ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। আলোচনায় কমিশনের পক্ষ থেকে উপজেলা পর্যায়ে আদালত সম্প্রসারণের যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়।

কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়, উপজেলা সদরের ভৌগোলিক দূরত্ব, জনসংখ্যার ঘনত্ব, মামলার চাপ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ভিত্তিতে স্থায়ী আদালতের প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করা হবে। বর্তমানে পরিচালিত চৌকি আদালতগুলোর কার্যকারিতা পুনর্মূল্যায়ন করে প্রয়োজন অনুযায়ী সেগুলো স্থায়ী আদালতে রূপান্তরের কথাও উঠে আসে।

বিএনপি ও জামায়াতের ভিন্নমতবিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ বলেন, “জেলা সদরের সন্নিকটবর্তী উপজেলায় আদালত স্থাপন অনাবশ্যক। কোন উপজেলায় আদালতের প্রয়োজন, তা নির্ধারণে পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা প্রয়োজন।”

অন্যদিকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, “উপজেলায় আদালত হলে দুর্নীতি বাড়বে—এটি ভ্রান্ত ধারণা। বরং বিচারসেবা সহজলভ্য করতে জনগণের কাছে পৌঁছানো জরুরি।”

আইনগত কাঠামো সংস্কারে জোরকমিশনের প্রস্তাবে সিনিয়র সহকারী জজ ও প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটদের পদায়ন, দেওয়ানি মামলায় আর্থিক এখতিয়ার বৃদ্ধি এবং উপজেলা পর্যায়ে আইনগত সহায়তা সম্প্রসারণের সুপারিশ রাখা হয়। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন সংসদীয় আসনের ভিত্তিতে দ্রুত আদালত স্থাপনের আহ্বান জানান।

জরুরি অবস্থার বিধান সংশোধনের প্রস্তাবআলোচনার দ্বিতীয় পর্যায়ে জরুরি অবস্থার বিষয়ে সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ (ক, খ, গ) সংশোধনের প্রস্তাব উঠে আসে। কমিশনের মতে, “বর্তমান বিধান নাগরিক অধিকারকে সংকুচিত করে এবং আদালতের স্বাধীনতা রুদ্ধ করে।”

প্রস্তাবনায় বলা হয়—

জরুরি অবস্থার মেয়াদ ৬০ দিনের বেশি হবে না।

জরুরি অবস্থায় সংবিধান-স্বীকৃত নাগরিক অধিকার স্থগিত করা যাবে না।

কোনো নাগরিকের আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার অধিকার বাতিলযোগ্য নয়।

পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের সুপারিশদলগুলোর পক্ষ থেকে আদালত সম্প্রসারণে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ এবং বাস্তবভিত্তিক রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানানো হয়। বিরতির পর এসব পরামর্শ নিয়েই আলোচনার পরবর্তী ধাপ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ