গাজার অবরোধিত এলাকায় খাবারের জন্য বের হওয়া ৭৪৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৬ ১৬:০২:৪৮
গাজার অবরোধিত এলাকায় খাবারের জন্য বের হওয়া ৭৪৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা

চলমান সংঘাত ও অবরোধের মধ্যেই গাজায় মানবিক সংকট দিনদিন বাড়ছে। গত শনিবার (৫ জুলাই) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণের কেন্দ্রগুলোতে সহায়তা নিতে এসে অন্তত ৪ হাজার ৮৯১ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বিব্রত পার্থিব ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরাও গুলিবর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।

তথাকথিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে সহায়তা চাইতে গিয়ে, ইসরায়েলি বাহিনীসহ ঠিকাদারদের গুলির মুখে পড়েছে বহু মানুষ। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, অবরোধের তীব্রতায় ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাবারের জন্য হাহাকার করছেন। একাধিক পরিবার খাদ্য সংকটে বিপর্যস্ত, মায়েরা সন্তানদের জন্য নিজেরাই খাদ্য বঞ্চিত হচ্ছেন।

এ সপ্তাহের শুরুতে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস একটি প্রতিবেদনে মার্কিন ঠিকাদারদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, জিএইচএফ’র বিতরণ কেন্দ্রে সাহায্য নিতে আসা বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণ এবং স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ঠিকাদাররা জানিয়েছেন, ভারী অস্ত্রধারীরা নিজেদের ইচ্ছামতো কাজ করছে।

অন্যদিকে, জিএইচএফ তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ‘স্পষ্ট মিথ্যা’ উল্লেখ করে নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্ব আরোপ করেছে। মার্কিন প্রশাসনও জিএইচএফ’র পাশে দাঁড়িয়ে বলেছে, গাজায় খাদ্য ও ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার একমাত্র কর্তৃপক্ষ তারা।

তবে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন দ্রুত জিএইচএফ’র কার্যক্রম বন্ধের দাবি তুলেছে। তাদের মতে, এই সংস্থা গাজার জনবহুল ও সামরিকীকৃত এলাকায় দুই মিলিয়ন মানুষের জীবন আরও বিপন্ন করছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই সংস্থাকে ‘অমানবিক সামরিকীকরণের পরিকল্পনা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং বলেছে, এটি ইসরায়েলের গণহত্যার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে।

তবুও, অবরোধ ও হামলার সঙ্কটের মধ্যে অনেক ফিলিস্তিনি বলছেন, তাদের কাছে অন্য কোনো বিকল্প নেই, ঝুঁকি সত্ত্বেও জিএইচএফ’র কাছ থেকে সাহায্য নেওয়া ছাড়া বাঁচার পথ খুঁজে পাচ্ছেন না।

গাজায় আহত মাজিদ আবু লাবান বলেন, ‘আমার বাচ্চারা তিন দিন ধরে ক্ষুধার্ত ছিল। খাবারের জন্য ত্রাণ কেন্দ্রে যাওয়ার সময় ইসরায়েলি বাহিনী আমাদের লক্ষ্য করে কামানের গোলা নিক্ষেপ করে। সবাই শুধুই বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছিল।’

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ