পঁচিশ বছর পর উল্টে গেল রায়: ১৫ হাজার কোটি টাকার রাজসম্পত্তি মামলায় বিপাকে সাইফ আলী খান ও তার পরিবার

বিনোদন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৬ ১০:৫৭:৩৬
পঁচিশ বছর পর উল্টে গেল রায়: ১৫ হাজার কোটি টাকার রাজসম্পত্তি মামলায় বিপাকে সাইফ আলী খান ও তার পরিবার

বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খান ও তার পরিবার একটি বড় আইনি বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছেন। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট তাদের ১৫ হাজার কোটি রুপি মূল্যের পূর্বপুরুষদের সম্পত্তির উত্তরাধিকার দাবিকে ঘিরে ২৫ বছর আগে দেওয়া এক রায় বাতিল করে দিয়েছে। এ আদেশে decades পুরনো বিতর্কিত সম্পত্তি মামলায় নতুন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিতর্কিত এই সম্পত্তিটি ঐতিহাসিক ভোপাল রাজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যা প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক ও পতৌদি নবাব মনসুর আলী খান পতৌদির মৃত্যুর পর তার স্ত্রী শর্মিলা ঠাকুর ও সন্তান সাইফ আলী খান, সোহা আলী খান ও সাবা আলী খানের নামে উত্তরাধিকারসূত্রে গিয়েছে।

হাইকোর্ট বাতিল করল ২০০০ সালের রায়

২০০০ সালে ভোপালের একটি জেলা আদালত সাইফ আলী খানের পরিবারকে ওই রাজসম্পত্তির বৈধ উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণা করেছিল। সেই রায়ে উল্লেখ করা হয়েছিল, সাইফের দাদি সাজিদা সুলতান—যিনি ভোপালের শেষ শাসক নবাব হামিদুল্লাহ খানের কন্যা ছিলেন—তারাই সম্পত্তির একমাত্র উত্তরাধিকারী। তবে এবার সেই রায় বাতিল করে দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় দ্বিবেদী।

বিচারপতির মন্তব্য অনুযায়ী, “জেলা আদালত যেই রায়ের উপর নির্ভর করে মামলাটি খারিজ করেছিল, সেটি ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা বাতিল হয়ে গেছে। ফলে ওই রায় আর কার্যকর নয় এবং নতুন করে বিচার হওয়া প্রয়োজন।”

আবার শুরু হবে বিচার প্রক্রিয়া

হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, নিচের আদালতকে সম্পূর্ণ নতুন করে মামলাটি বিচার করতে হবে এবং সকল পক্ষকে নতুন করে প্রমাণ ও যুক্তি উপস্থাপনের সুযোগ দিতে হবে। বিচার ideally এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার কথাও বলা হয়েছে।

মামলার পেছনের ইতিহাস

এই সম্পত্তি বিতর্কের সূচনা হয় নবাব হামিদুল্লাহ খানের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নিয়ে। তার তিন কন্যা ছিলেন—আবিদা, সাজিদা ও রাবিয়া। সাজিদা সুলতান ১৯৬২ সালে ভারতের সরকার কর্তৃক একক উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণা পান, কারণ তার বড় বোন আবিদা পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন। এর ফলেই সাজিদার ছেলে মনসুর আলী খান পতৌদি এবং পরে তার সন্তানরা এই সম্পত্তির দাবিদার হন।

তবে নবাবের অন্যান্য উত্তরসূরি—যেমন বেগম সুরাইয়া রশীদ ও নবাব মেহের তাজ সাজিদা সুলতান—এই উত্তরাধিকার চ্যালেঞ্জ করে বলেন, সম্পত্তি বণ্টন মুসলিম পার্সোনাল ল’ অনুযায়ী হয়নি এবং বাকি উত্তরাধিকারীদের বঞ্চিত করা হয়েছে।

ভোপালের সংযুক্তি ও রাজ আইনের ভূমিকা

১৯৪৯ সালে যখন ভোপাল রাজ্য ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়, তখন নবাব তার ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকার রেখে দেন। সেই সময় ‘ভোপাল সাকসেশন টু দ্য থ্রোন অ্যাক্ট, ১৯৪৭’ অনুযায়ী উত্তরাধিকার নির্ধারিত হতো। কিন্তু বর্তমানে সেই আইন এবং ব্যক্তিগত আইন একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ব্যাখ্যায় পৌঁছেছে, যা মামলাকে জটিল করে তুলেছে।

এই রায়ের ফলে সাইফ আলী খান পরিবারকে এখন পুনরায় আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হচ্ছে, যা বলিউডি গ্ল্যামারের বাইরেও একটি রাজপরিবারের বাস্তবতার নির্মম দিক তুলে ধরছে।

-শারমিন সুলতানা, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ