প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়ে সংস্কৃতিমন্ত্রীর পদে পেতংতার্ন!

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৩ ১৭:৩০:০০
প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়ে সংস্কৃতিমন্ত্রীর পদে পেতংতার্ন!

থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে নাটকীয় মোড় নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের কয়েকদিনের মাথায়, নতুন মন্ত্রিসভায় সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে নিজের জায়গা ধরে রেখেছেন পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা প্রভাবশালী সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার কন্যা। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে ব্যাংককের গভর্নমেন্ট হাউসে অনুষ্ঠিত শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পেতংতার্নসহ ১৪ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৭ মিনিটে হাসিমুখে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান পেতংতার্ন। সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা জানানোর সময়ও তিনি ছিলেন স্বতঃস্ফূর্ত, যদিও মাত্র ১ জুলাই থাই ক্রিমিনাল কোর্ট তার প্রধানমন্ত্রিত্ব সাময়িকভাবে স্থগিত করে। তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ তদন্তাধীন অবস্থায় থাই সংবিধানের ১৭০ ধারার অধীনে তাকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

নতুন দায়িত্ব নেওয়ার আগে, পেতংতার্নসহ অন্যান্য মন্ত্রীরা প্রথাগতভাবে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা, সরকারি পরিচয়পত্র সংগ্রহ ও ইউনিফর্মে আনুষ্ঠানিক ছবি তোলার প্রক্রিয়ায় অংশ নেন। শপথগ্রহণের পরপরই নতুন মন্ত্রিসভা একটি জরুরি বৈঠকে বসে, যেখানে ফুমথাম উইচায়াচাইকে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় স্পষ্ট হয়ে ওঠে এই পরিবর্তন ক্ষমতাসীন জোটে ফাটলেরই প্রতিফলন।

মূলত থাইল্যান্ডের রক্ষণশীল ভুমজাথাই পার্টি জোট ত্যাগ করায় সরকার হঠাৎ করেই পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এতে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও গভীর হয়েছে। বাজেট পাস কিংবা বড় নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার এখন ছোট দলগুলোর দয়ার ওপর নির্ভর করছে।

রাজনৈতিক এ টালমাটাল অবস্থায় পেতংতার্নের জনপ্রিয়তাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। গত মাসে সাবেক কম্বোডিয়ান প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে সীমান্ত সংক্রান্ত একটি বিতর্কিত ফোনালাপ ফাঁস হয়, যা থাই রাজনীতিতে আলোড়ন তোলে। এই ফোনালাপকে কেন্দ্র করে তার স্বচ্ছতা, দেশীয় স্বার্থরক্ষায় সক্ষমতা ও পররাষ্ট্রনীতির প্রতি দায়িত্ববোধ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

এর আগে সেনা-সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনে পেতংতার্ন ছিলেন নেতৃত্বে, যা তাকে তরুণদের মাঝে জনপ্রিয় করে তোলে। কিন্তু বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে আগামী ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে আদালত থেকে।

এই প্রেক্ষাপটে তার সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনে কতটা স্বাধীনতা থাকবে কিংবা রাজনৈতিকভাবে তিনি কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবেন তা এখন সময়ই বলবে। তবে স্পষ্ট, থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে একদিকে ভাঙন, অন্যদিকে পুরনো অভিজাতদের টিকে থাকার লড়াই এখন আরও স্পষ্টতর।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ