প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়ে সংস্কৃতিমন্ত্রীর পদে পেতংতার্ন!

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৩ ১৭:৩০:০০
প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়ে সংস্কৃতিমন্ত্রীর পদে পেতংতার্ন!

থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে নাটকীয় মোড় নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের কয়েকদিনের মাথায়, নতুন মন্ত্রিসভায় সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে নিজের জায়গা ধরে রেখেছেন পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা প্রভাবশালী সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার কন্যা। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে ব্যাংককের গভর্নমেন্ট হাউসে অনুষ্ঠিত শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পেতংতার্নসহ ১৪ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৭ মিনিটে হাসিমুখে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান পেতংতার্ন। সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা জানানোর সময়ও তিনি ছিলেন স্বতঃস্ফূর্ত, যদিও মাত্র ১ জুলাই থাই ক্রিমিনাল কোর্ট তার প্রধানমন্ত্রিত্ব সাময়িকভাবে স্থগিত করে। তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ তদন্তাধীন অবস্থায় থাই সংবিধানের ১৭০ ধারার অধীনে তাকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

নতুন দায়িত্ব নেওয়ার আগে, পেতংতার্নসহ অন্যান্য মন্ত্রীরা প্রথাগতভাবে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা, সরকারি পরিচয়পত্র সংগ্রহ ও ইউনিফর্মে আনুষ্ঠানিক ছবি তোলার প্রক্রিয়ায় অংশ নেন। শপথগ্রহণের পরপরই নতুন মন্ত্রিসভা একটি জরুরি বৈঠকে বসে, যেখানে ফুমথাম উইচায়াচাইকে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় স্পষ্ট হয়ে ওঠে এই পরিবর্তন ক্ষমতাসীন জোটে ফাটলেরই প্রতিফলন।

মূলত থাইল্যান্ডের রক্ষণশীল ভুমজাথাই পার্টি জোট ত্যাগ করায় সরকার হঠাৎ করেই পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এতে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও গভীর হয়েছে। বাজেট পাস কিংবা বড় নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার এখন ছোট দলগুলোর দয়ার ওপর নির্ভর করছে।

রাজনৈতিক এ টালমাটাল অবস্থায় পেতংতার্নের জনপ্রিয়তাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। গত মাসে সাবেক কম্বোডিয়ান প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে সীমান্ত সংক্রান্ত একটি বিতর্কিত ফোনালাপ ফাঁস হয়, যা থাই রাজনীতিতে আলোড়ন তোলে। এই ফোনালাপকে কেন্দ্র করে তার স্বচ্ছতা, দেশীয় স্বার্থরক্ষায় সক্ষমতা ও পররাষ্ট্রনীতির প্রতি দায়িত্ববোধ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

এর আগে সেনা-সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনে পেতংতার্ন ছিলেন নেতৃত্বে, যা তাকে তরুণদের মাঝে জনপ্রিয় করে তোলে। কিন্তু বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে আগামী ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে আদালত থেকে।

এই প্রেক্ষাপটে তার সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনে কতটা স্বাধীনতা থাকবে কিংবা রাজনৈতিকভাবে তিনি কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবেন তা এখন সময়ই বলবে। তবে স্পষ্ট, থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে একদিকে ভাঙন, অন্যদিকে পুরনো অভিজাতদের টিকে থাকার লড়াই এখন আরও স্পষ্টতর।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক


খামেনিকে হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্র, দুই দেশের বিরুদ্ধে ইরানের গুরুতর অভিযোগ 

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ২০:৩২:৩৫
খামেনিকে হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্র, দুই দেশের বিরুদ্ধে ইরানের গুরুতর অভিযোগ 
ছবিঃ সংগৃহীত

ইরানের সবোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে টার্গেট করার চেষ্টা এবং ইসলামি প্রজাতন্ত্রকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ বিদেশি শত্রুরা এ ষড়যন্ত্র করছে বলে সরাসরি অভিযোগ করেছে ইরান। রোববার ২৩ নভেম্বর টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ইরানের বার্তা সংস্থা আইএএনএ জানিয়েছে ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় মন্ত্রী এসমাইল খাতিব এক সতর্কবার্তায় বলেছেন শত্রু কখনও হত্যাচেষ্টার মাধ্যমে আবার কখনো বৈরী হামলার মাধ্যমে সর্বোচ্চ নেতাকে টার্গেট করতে চায়। যদিও মন্ত্রী কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার কথা উল্লেখ করেননি তবে ইরানি কর্মকর্তারা প্রায়ই বিদেশি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন। তবে গত জুন মাসে ইসরায়েল ও ইরানের ১২ দিনের যুদ্ধের আগে খামেনির বিরুদ্ধে সরাসরি হামলার হুমকি নিয়ে এমন মন্তব্য বিরল ছিল।

এসমাইল খাতিব আরও বলেন যারা এই ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত বা সহায়তা করছে তারা জেনে বা না জেনে শত্রুর অনুপ্রবেশকারী এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। তিনি এই মন্তব্যের মাধ্যমে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দিকেই ইঙ্গিত করেন।

চলতি বছরের সংঘাতে ইসরায়েল ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা পরমাণু বিজ্ঞানী এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। পরে যুক্তরাষ্ট্রও গুরুত্বপূর্ণ ইরানি পরমাণু স্থাপনায় আঘাত হানে। ওই সময়ে এমন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল যে যুদ্ধ চলাকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনায় ভেটো দিয়েছিলেন। কারণ এতে ইসরায়েল ও ইরানের যুদ্ধ আরও তীব্র হতে পারত বলে আশঙ্কা ছিল। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জবাব এড়িয়ে যান তবে তিনি মন্তব্য করেন যে এমন পদক্ষেপ সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারে।


টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ায় আবারও কেঁপে উঠল এশিয়ার দুই দেশ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১৫:৫৮:০৬
টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ায় আবারও কেঁপে উঠল এশিয়ার দুই দেশ

ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় উত্তর মালুকু প্রদেশের হালমাহেরা অঞ্চলে ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এ ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। রোববার ২৩ নভেম্বর সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয় প্রশান্ত মহাসাগরের রিং অব ফায়ার বরাবর অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন অংশে প্রায়শই ভূমিকম্প হয় কারণ সেখানে একাধিক টেকটোনিক প্লেট মিলিত হয়েছে। এর ফলে ওই অঞ্চলে বারবার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এবং ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে।

অন্যদিকে একই দিনে মিয়ানমার উপকূলে ৫ দশমিক ৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। বাংলাদেশ সময় আজ সকাল ১০টা ৩৯ মিনিটে এই ভূকম্পন আঘাত হানে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা বা ইউএসজিএস জানিয়েছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের দাওয়েই শহর থেকে ২৬৭ কিলোমিটার পশ্চিম দক্ষিণপশ্চিমে আন্দামান সাগরে এবং এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।

ইউএসজিএস আরও জানিয়েছে মিয়ানমারের পাশাপাশি ভূমিকম্পের প্রভাব প্রতিবেশী থাইল্যান্ডেও অনুভূত হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ভূমিকম্পের কারণে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য এর আগে গত শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রাজধানীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। নরসিংদীর মাধবদীতে উৎপত্তি হওয়া এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৫। এতে ১০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে এবং আহত হয়েছেন বহু মানুষ। প্রতিবেশী দেশগুলোতে রোববারের এই নতুন কম্পন তাই জনমনে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।


শুক্রবার ও শনিবার মিলে ঘন ঘন ভূমিকম্প নিয়ে বিশেষজ্ঞদের বড় দুঃসংবাদ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১৪:৩৯:৫৭
শুক্রবার ও শনিবার মিলে ঘন ঘন ভূমিকম্প নিয়ে বিশেষজ্ঞদের বড় দুঃসংবাদ
ছবিঃ সংগৃহীত

শুক্রবার ও শনিবার মিলে ঘন ঘন ভূমিকম্পের ঘটনায় বিশেষজ্ঞদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। শুক্রবারের প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের রেশ না কাটতেই শনিবার ২২ নভেম্বর ৮ ঘণ্টার ব্যবধানে আরও তিনটি মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয় রাজধানী ও আশপাশের এলাকায়। ঘন ঘন ভূকম্পনের এ ঘটনাকে বিশেষজ্ঞরা মোটেও ভালো লক্ষণ নয় বলে সতর্ক করেছেন।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ৯১টি ভূমিকম্প হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাপী ভূমিকম্পের তথ্য নিয়ে কাজ করা জনপ্রিয় ওয়েবসাইট আর্থকোয়েকট্র্যাকার ডটকম। রবিবার ২৩ নভেম্বর ওয়েবসাইটটির দুপুরের আপডেটে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে আরও জানানো হয় যে গত সাত দিনে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৮৫২টি ভূমিকম্প হয়েছে যা বৈশ্বিক ভূ-প্রকৃতির অস্থিরতার ইঙ্গিত দেয়।

বাংলাদেশে শুক্রবার ৫ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর শনিবার প্রথম কম্পনটি হয় সকাল ১০টা ৩৮ মিনিট ১২ সেকেন্ডে যার মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৩। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ২৯ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে নরসিংদীর পলাশে। এরপর সন্ধ্যায় ঢাকার বাড্ডায় আরও দুবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির জানান সন্ধ্যায় রাজধানীতে পরপর দুটি ভূমিকম্প হয়েছে। এর মধ্যে সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৪ সেকেন্ডে রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়। ঠিক এর ১ সেকেন্ড পর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৫ সেকেন্ডে দ্বিতীয়বার ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে এটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। তিনি আরও জানান এর মধ্যে ৩ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল বাড্ডায় এবং ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীতে।

এর আগে শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা যা সারা দেশেই অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের সময় অনেকেই আতঙ্কে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন। শুক্রবারের ওই ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় শিশুসহ ১০ জন নিহত ও ছয় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে নরসিংদীতে। এছাড়া ঢাকায় চারজন ও নারায়ণগঞ্জে একজন মারা যান। ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে অনেকেই ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন এবং হুড়োহুড়িতে আহত হন। এছাড়া ঢাকার কিছু ভবন হেলে পড়ার এবং ফাটল দেখা দেওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।


যতবার গাজা যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভয়ংকর রেকর্ড

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১১:১০:৫৯
যতবার গাজা যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে ইসরায়েল, ভয়ংকর রেকর্ড
ছবি: আল জাজিরা

গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি কার্যত ভেঙে পড়েছে। ১০ অক্টোবর ২০২৫ থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েল অন্তত ৩৯৩ বার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলে নিশ্চিত করেছে গাজার গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিস। আকাশপথে বোমাবর্ষণ, আর্টিলারি হামলা, স্নাইপার গুলি ও স্থল অভিযান সব মিলিয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি কেবল কাগজে-কলমে বিদ্যমান থাকলেও বাস্তবে গাজা প্রায় প্রতিদিনই হামলার শিকার হয়েছে।

যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ১০ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে ইসরায়েলের আক্রমণে অন্তত ৩১২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৬০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে, যা মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

প্রতিদিনের লঙ্ঘন: হামলা, অভিযান এবং গুলি-যুদ্ধবিরতির কোনও বাস্তবতা নেই

গাজার সরকারি তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি চলছে বলে দাবি করা হলেও বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। পরিসংখ্যান বলছে-

  • সাধারণ নাগরিককে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে ১১৩ বার
  • “ইয়েলো লাইন” অতিক্রম করে স্থল অভিযান হয়েছে ১৭ বার
  • আকাশ ও স্থল থেকে বোমা–আর্টিলারি হামলা হয়েছে ১৭৪ বার
  • বাড়িঘর ও সম্পদ ধ্বংস হয়েছে ৮৫ বার
  • আটক করা হয়েছে কমপক্ষে ৩৫ জন ফিলিস্তিনিকে

এই অভিযানগুলো যুদ্ধবিরতির মূল ধারা-“সম্পূর্ণ শত্রুতা বন্ধ” এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। প্রতিদিনের হামলার বিবরণে দেখা যায়, গাজা যেন কখনোই যুদ্ধবিরতির ছায়া অনুভব করতে পারেনি।

৪২ দিনের মধ্যে ৩৫ দিন হামলার শিকার গাজা

আল জাজিরার বিশ্লেষণ অনুসারে, যুদ্ধবিরতির ৪২ দিনের মধ্যে ৩৫ দিনই ইসরায়েল গাজায় হামলা পরিচালনা করেছে। অর্থাৎ, মাত্র আট দিন কোনও মৃত্যুর খবর বা আঘাতের ঘটনা ঘটেনি।তবুও যুক্তরাষ্ট্র বলছে “ceasefire is still holding”, যা আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন একটি পক্ষ প্রতিদিন আক্রমণ চালায় আর অন্য পক্ষ বাস্তবে প্রতিরোধ করতে পারে না, তখন তাকে যুদ্ধবিরতি বলা যায় না। বরং তা একতরফা আগ্রাসনের রূপ নেয়।

  • ১৯ অক্টোবর ও ২৯ অক্টোবর: যুদ্ধবিরতির সবচেয়ে ভয়াবহ দুই দিন
  • ১৯ অক্টোবর “বিরোধী পক্ষ হামলা করেছে” অভিযোগের পর পাল্টা আগ্রাসন

ইসরায়েল দাবি করে, রাফাহ এলাকায় হামাস যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এই দাবি উঠে আসে দুই ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হওয়ার পর। তবে হামাস জানায়, রাফাহ অঞ্চলে তাদের কোনও যোদ্ধা উপস্থিত ছিল না এবং ঐ এলাকা সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণাধীন।

এ অভিযোগের পর ইসরায়েলের ব্যাপক পাল্টা হামলায় অন্তত ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়।

২৯ অক্টোবর-একদিনে ১০৯ জন নিহত

রাফাহতে স্বল্পস্থায়ী গোলাগুলির পর ইসরায়েল আবারও ব্যাপক হামলা চালায়। এতে অন্তত ১০৯ জন নিহত হয়, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু ছিল বলে জানায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সেদিনই সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেন-“The Israelis hit back, and they should hit back.”

এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে আরও ক্ষুব্ধ করেছে এবং যুদ্ধবিরতির নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

গণহত্যার দীর্ঘ ছায়া: দুই বছরে নিহত প্রায় ৭০ হাজার

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘমেয়াদি হিসাব অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে ২০ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছে-

  • ৬৯,৫৪৬ জন, এর মধ্যে ২০,১৭৯ শিশু
  • আহত হয়েছে ১,৭০,৮৩৩ জন

এই সংখ্যা দেখায় দুই বছরে গাজায় এমন ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে, যা আধুনিক ইতিহাসে নজিরবিহীন।

মানবিক সহায়তা এখনও রুদ্ধ: চুক্তির শর্ত বাস্তবে প্রয়োগ হয়নি

যুদ্ধবিরতির প্রধান শর্ত ছিল গাজায় ‘পূর্ণ’ মানবিক সহায়তা প্রবেশ করবে। কিন্তু বাস্তবে- WFP বলছে, প্রয়োজনীয় খাদ্যের মাত্র ৫০% গাজায় পৌঁছাচ্ছে স্থানীয় সংস্থাগুলোর মতে, সহায়তার মোট মাত্র ২৫% বাস্তবে পৌঁছেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত গাজায় প্রবেশ করেছে ৫,০৩৭টি ট্রাক, যা মৌলিক চাহিদার তুলনায় অনেক কম।

অন্যদিকে হোয়াইট হাউস দাবি করেছে ১৫,০০০ ট্রাক aid প্রবেশ করেছে ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক aid সংগঠনগুলো এই সংখ্যাকে “অবাস্তব” হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

ইসরায়েল খাদ্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে

ব্লকড খাদ্যসামগ্রী:

  • মাংস
  • দুগ্ধজাত পণ্য
  • সবজি

শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদান

অনুমতি পেয়েছে:

  • চকোলেট
  • স্ন্যাকস
  • ক্রিস্পস
  • সফট ড্রিংকস

এর ফলে অপুষ্টি, রোগ ও চিকিৎসার অভাবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছে।

২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা: গাজা ও মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

যুক্তরাষ্ট্রের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনায় উল্লেখ ছিল—

  • সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি
  • মানবিক aid পূর্ণ প্রবেশ
  • গাজায় বন্দিদের মুক্তি
  • ইসরায়েলের তিন ধাপে প্রত্যাহার
  • ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি

কিন্তু মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ইসরায়েল ও হামাস অনুপস্থিত ছিল। ফলে চুক্তির কার্যকারিতা শুরু থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, যখন প্রধান পক্ষগুলোই শান্তি প্রক্রিয়ায় নেই, তখন কোনও যুদ্ধবিরতি টেকসই হতে পারে না।

মানবিক, রাজনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত সংকট গাজার ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত

যুদ্ধবিরতির ধারাবাহিক লঙ্ঘন, সহায়তার বাধা, অবকাঠামো ধ্বংস, ঘরহারা মানুষ, বন্দি ও আহতদের দীর্ঘ তালিকা সবকিছু মিলিয়ে গাজা এখন ইতিহাসের সবচেয়ে গভীর মানবিক সংকটে।

বিশ্বজুড়ে চাপ থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত এবং শান্তি প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হওয়ায় গাজার সাধারণ মানুষের জীবনে নিরাপত্তা, খাদ্য, চিকিৎসা ও আশ্রয়—সব ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে।


ভারতের চিকেন নেকে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ সতর্কতার নির্দেশ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২২ ২১:৪৯:৫৮
ভারতের চিকেন নেকে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ সতর্কতার নির্দেশ
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণ ও বিভিন্ন কারণে কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চিকেন নেক বা শিলিগুড়ি করিডরের নিরাপত্তা জোরদার করতে তৎপর হয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এরই অংশ হিসেবে শনিবার শিলিগুড়ির সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো বা আইবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো এক উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠক। দেশের অত্যন্ত স্পর্শকাতর এই করিডরের নিরাপত্তা অবকাঠামো নতুন করে খতিয়ে দেখতেই এই বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রায় সব কটি প্রধান নিরাপত্তা ও সামরিক সংস্থার প্রতিনিধিরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স বা সিআইএসএফ বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বা বিএসএফ সীমান্ত সুরক্ষা বল বা এসএসবি এবং ইন্দো টিবেটিয়ান বর্ডার পুলিশ বা আইটিবিপি। এছাড়াও রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স বা আরপিএফ জেনারেল রিজার্ভ পুলিশ বা জিআরপি ভারতীয় স্থলসেনা বাহিনী ভারতীয় বায়ুসেনা আর্মি ইন্টেলিজেন্স কেন্দ্রীয় সড়ক দফতর এশিয়ান হাইওয়ে কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগসহ একাধিক কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নিরাপত্তা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা এই বৈঠকে অংশ নেন।

সূত্রের খবরে জানা গেছে বৈঠকে চিকেন নেক করিডরে নজরদারি আরও কঠোর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় দ্বিগুণ তৎপরতা চালানো এবং গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলোতে সমন্বিত নিরাপত্তাব্যবস্থা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উত্তর পূর্ব ভারতকে দেশটির মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করা সরু এই করিডরে যাতে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি না হয় মূলত সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতেই তৎপর হয়েছে বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থা। দিল্লির সাম্প্রতিক ঘটনা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই এই বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর লড়াইয়ে চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে সুদান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২২ ২১:০৩:০৬
সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর লড়াইয়ে চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে সুদান
ছবিঃ সংগৃহীত

সুদানের মধ্যাঞ্চলে এক মাসের মধ্যে অপুষ্টিজনিত কারণে ২৩ জন শিশু মারা গেছে। অঞ্চলটিতে দেশটির সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক গোষ্ঠী আরএসএফ এর মধ্যে ভয়াবহ লড়াই চলছে। দেশটির একটি মেডিকেল গ্রুপের বরাতে এএফপি জানিয়েছে কর্ডোফান অঞ্চলে ২৩ শিশুর মৃত্যু উত্তর পূর্ব আফ্রিকান দেশটির মানবিক পরিস্থিতির অবনতিকেই তুলে ধরে। সেখানে ৩০ মাসেরও বেশি সময় ধরে ভয়াবহ যুদ্ধের পর দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদান বিশৃঙ্খলায় ডুবে যায়। সামরিক বাহিনী এবং আধাসামরিক আরএসএফ এর মধ্যে ক্ষমতার লড়াই রাজধানী খার্তুম এবং দেশের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে এই বিধ্বংসী সংঘাতে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তবে সাহায্যকারী গোষ্ঠীগুলো বলছে এই সংখ্যাটি কম এবং প্রকৃত সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি হতে পারে। দুই বাহিনীর এই যুদ্ধে ১ কোটি ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে এবং রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে ও দেশের কিছু অংশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক ক্ষুধা বিশেষজ্ঞদের মতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্ডোফান এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুরে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে। অন্যান্য অঞ্চলে আরও ৩৬ লক্ষ মানুষ দুর্ভিক্ষের মাঝে রয়েছে। তীব্র অপুষ্টি এবং সরবরাহের ঘাটতির কারণে শিশুদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সংঘাতের ওপর নজরদারিকারী পেশাদারদের সংস্থা সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক জানিয়েছে ২০ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে অবরুদ্ধ কাদুগলি এবং ডিলিং শহরে শিশুদের মৃত্যুর খবর বেশি পাওয়া গেছে।

এই বছরের শুরুতে সেনাবাহিনী খার্তুম থেকে আরএসএফকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর কর্ডোফানের নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই তীব্রতর হয়। তখন থেকে আধাসামরিক বাহিনী কর্ডোফান এবং এল ফাশার শহরে ব্যাপক হামলা শুরু করে এবং গণহত্যা চালায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী আরএসএফ যোদ্ধারা শহরের হাসপাতালে তাণ্ডব চালায় এবং এক হাসপাতালেই ৪৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে। সাহায্যকর্মী এবং বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা বলছেন যোদ্ধারা ঘরে ঘরে গিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা এবং যৌন নির্যাতন চালায়।

স্কুল অফ পাবলিক হেলথের হিউম্যানিটেরিয়ান রিসার্চ ল্যাব গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে নতুন স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে আরএসএফ এল ফাশারের বিভিন্ন স্থানে মৃতদেহ লুকানোর জন্য অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।


কাগজে কলমে যুদ্ধবিরতি থাকলেও গাজার বাস্তব চিত্র দেখে শিউরে উঠছে বিশ্ব

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২২ ২০:৪০:৫৭
কাগজে কলমে যুদ্ধবিরতি থাকলেও গাজার বাস্তব চিত্র দেখে শিউরে উঠছে বিশ্ব
ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও সংঘাতের চিত্র খুব একটা বদলায়নি। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এই যুদ্ধবিরতির সময়সীমার মধ্যেই ইসরায়েলি আক্রমণে নিহতের সংখ্যা ৩১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এমনকি গত ৪৮ ঘণ্টাতেও অন্তত ৭ জনের লাশ বিভিন্ন হাসপাতালে আনা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

শনিবার ২২ নভেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায় গত দুই দিনে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। ফলে যুদ্ধবিরতি চলাকালীন মোট আহতের সংখ্যা ৭৮৮ জনে গিয়ে ঠেকেছে। মন্ত্রণালয় আরও শঙ্কার কথা জানিয়ে বলেছে অসংখ্য ভুক্তভোগী এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তার ওপর আটকা পড়ে আছেন। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে অ্যাম্বুলেন্স এবং সিভিল ডিফেন্স দল তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না যা মানবিক সংকটকে আরও তীব্র করে তুলেছে।

পরিসংখ্যান বলছে গাজা অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েলি গণহত্যার যুদ্ধে এখন পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা ৬৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একই সময়ে ১ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। হতাহতের এই দীর্ঘ মিছিল গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতির সাক্ষ্য দিচ্ছে।

চলতি বছরের শুরুতেও একটি যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে ইসরায়েল গত ২৭ মে থেকে গাজায় পৃথক সাহায্য বিতরণ উদ্যোগ শুরু করেছিল। এই পদক্ষেপের পর অঞ্চলটিতে দুর্ভিক্ষ প্রকট হয়ে ওঠে। ইসরায়েলি বাহিনী তখন খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও গুলি চালিয়েছিল। এর ফলে শত শত মানুষ নিহত হয় এবং সেই সঙ্গে দুর্ভিক্ষে শিশুসহ বহু মানুষের মৃত্যু ঘটে।

আইনি প্রেক্ষাপটে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসি গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তাঁর প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া উপত্যকাজুড়ে যুদ্ধের কারণে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলারও মুখোমুখি হয়েছে।


গাজায় সুড়ঙ্গ থেকে বের হতেই ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারালেন হামাসের যোদ্ধারা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২২ ০৯:৪৯:৪৮
গাজায় সুড়ঙ্গ থেকে বের হতেই ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারালেন হামাসের যোদ্ধারা
ছবিঃ সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালিয়ে হামাসের পাঁচ যোদ্ধাকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েল। গত শুক্রবার এই হামলা চালানো হয়। গত মাসে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও রাফায় হামাসের প্রায় ২০০ যোদ্ধা আটকা পড়েছেন এবং তাঁরা বর্তমানে সুড়ঙ্গের ভেতর অবস্থান নিয়ে আছেন। যে যোদ্ধাদের ইসরায়েল হত্যা করেছে তাঁরা সুড়ঙ্গ থেকে বের হয়ে এসেছিলেন বলে টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে জানানো হয়েছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বা আইডিএফের নাহাল ব্রিগেড এই হামলা পরিচালনা করে। তাদের দাবি হামাসের যোদ্ধারা সুড়ঙ্গ থেকে বের হয়ে ইসরায়েলি সেনাদের দিকে এগিয়ে আসছিল। দখলদার বাহিনী বলেছে তাঁরা এমনভাবে আসছিল যা ইসরায়েলি সেনাদের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে উঠেছিল আর এ কারণেই তাঁদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।

যুদ্ধবিরতির পরও রাফার প্রায় পুরো অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে দখলদার ইসরায়েল। এ কারণে যুদ্ধবিরতির পর হামাসের যোদ্ধারা সেখানে আটকে যান। তাঁদের জীবিত বের করে গাজার অভ্যন্তরে বা অন্য কোনো দেশে পাঠানোর বিষয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর আলোচনা চলছিল। কিন্তু এরই মধ্যে পাঁচজনকে হত্যা করল ইসরায়েলি বাহিনী।

এর আগে ইসরায়েল শর্ত দিয়েছিল হামাসের আটকে থাকা ২০০ যোদ্ধাকে তাদের কাছে প্রথমে আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং এরপর তাদের ছাড়া হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কয়েকজনকে ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়ার কথাও ছিল। কিন্তু দখলদারদের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে হামাস স্পষ্ট জানিয়েছিল যে তাদের যোদ্ধারা কোনোভাবেই আত্মসমর্পণ করবে না।


প্রকাশ্য বিরোধ ভুলে হোয়াইট হাউসে সম্পূর্ণ ভিন্ন আবহে দুই নেতার বৈঠক

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২২ ০৯:৩৪:১৭
প্রকাশ্য বিরোধ ভুলে হোয়াইট হাউসে সম্পূর্ণ ভিন্ন আবহে দুই নেতার বৈঠক
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প-মামদানির সরাসরি বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির মধ্যে গত কয়েক মাস ধরে মুখে মুখে চলা রাজনৈতিক বিরোধ ছিল স্পষ্ট। দুজনই একে অন্যকে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন এবং একে অপরের দিকে অভিযোগ ও অপমান ছুড়ে দিয়েছেন। অথচ স্থানীয় সময় শুক্রবার হোয়াইট হাউসে তাঁদের প্রথম সরাসরি বৈঠকটি হলো সম্পূর্ণ ভিন্ন এক আবহে যেখানে ছিল শুধুই হাসিমুখ প্রশংসা আর সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি।

ট্রাম্প ও মামদানি মূলত দুই ভিন্ন রাজনৈতিক দল ভিন্ন মতাদর্শ ও ভিন্ন প্রজন্মের প্রতিনিধি। রিপাবলিকান ট্রাম্প বিপুল সম্পদের মালিক অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট সোশ্যালিস্ট মামদানি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান এবং বয়সেও বেশ তরুণ। অভিবাসন নীতি থেকে অর্থনীতি বেশিরভাগ প্রশ্নেই দুজনের অবস্থান পুরোপুরি বিপরীত মেরুতে। তবু প্রথম বৈঠকে তাঁদের আচরণে ছিল অবিশ্বাস্য সৌহার্দ্যের ছাপ।

হোয়াইট হাউসের বৈঠকে একপর্যায়ে ৩৪ বছর বয়সী মামদানি ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্পের টেবিলের পাশে গিয়ে দাঁড়ালে ট্রাম্প তাঁর দিকে তাকিয়ে হাসেন এবং হাত চাপড়ে দেন। অথচ কিছুদিন আগেও এই ট্রাম্পই তাঁকে কমিউনিস্ট আখ্যা দিয়ে বিদ্রূপ করেছিলেন।

ব্যক্তিগত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন আমি যা ভেবেছিলাম তার চেয়েও অনেক বেশি বিষয়ে আমরা একমত হতে পেরেছি। তিনি আরও উল্লেখ করেন এক জায়গায় আমরা একমত আর তা হলো আমরা চাই আমাদের এই প্রিয় শহরটি খুব ভালো থাকুক।

দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় ফিরে ট্রাম্প এর আগে ওভাল অফিসে কয়েকজন বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছিলেন। তাই মামদানিকেও এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হতে পারে এমন আশঙ্কা ছিল অনেকের। কিন্তু শুক্রবারের বৈঠকে ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গেছে। বৈঠকের আগেই ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে তাঁর সঙ্গে মামদানির আলোচনা হবে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং শেষ পর্যন্ত সেটিই সত্যি হয়েছে।

বৈঠক শেষে দুজন কোনো নীতি ঘোষণা দেননি তবে তাঁদের কথাবার্তায় রাজনীতিকে আরও বন্ধুত্বপূর্ণ পথে নেওয়ার ইঙ্গিত মেলে। সাংবাদিকদের মামদানি বলেন আমাদের মধ্যে অনেক মতবিরোধপূর্ণ বিষয় আছে। কিন্তু আমাদের বৈঠকে সেসব বিষয়ে বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়নি। বরং নিউইয়র্কবাসীর সেবা করার যে সাধারণ লক্ষ্য আমাদের আছে তাকে কেন্দ্র করেই মূলত আলোচনা করেছি। এমন একটি বৈঠকের জন্য আমি প্রেসিডেন্টের সত্যিই খুব প্রশংসা করি। দলীয় বিভাজন সরিয়ে রাখতে পেরে সন্তুষ্ট ট্রাম্পও বলেন মামদানি যত ভালো কাজ করবেন তিনি ততই খুশি হবেন।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত