শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগ নিয়ে বাধ্যবাধকতা শিথিলের দাবি শিল্পপতিদের

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৩ ০৮:৩৯:০৩
শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগ নিয়ে বাধ্যবাধকতা শিথিলের দাবি শিল্পপতিদের

শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সরকারি বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতের শীর্ষ সংগঠনগুলো। এ উদ্দেশ্যে ১০ দফা প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দপ্তরে।

শিল্পপতিরা বলছেন, তাদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে আধুনিক ও জ্বালানি-সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতির ব্যবহারে উৎপাদনশীলতা বাড়বে। এতে রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়ক হবে। একই চিঠির অনুলিপি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকেও পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির অনুমতি ছাড়া নিজস্ব কারখানা চত্বরে গ্যাসচালিত স্থাপনা পুনর্বিন্যাস করার স্বাধীনতা চায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের মতে, একবার অনুমোদিত গ্যাস লোড ও চাপের মাত্রা অপরিবর্তিত রাখার শর্তে অভ্যন্তরীণ যন্ত্রপাতির বিন্যাসে তিতাসের অনুমতির প্রয়োজন নেই।

পোশাক ও টেক্সটাইল কারখানাগুলো বিপুল অর্থ ব্যয়ে নির্মাণ, যন্ত্রপাতি আমদানি ও জনবল নিয়োগ করে থাকে। কিন্তু বর্তমানে গ্যাস সরবরাহ সংকটের কারণে তারা পূর্ণ উৎপাদন সক্ষমতার মাত্র ৬০ শতাংশ ব্যবহার করতে পারছে, ফলে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

শিল্পমালিকরা আরও জানান, গ্যাস সংযোগ দ্রুত চালু রাখতে তারা নিজেদের খরচে বিতরণ ও অভ্যন্তরীণ লাইন স্থাপন করেছে। ব্যাংকঋণ নিয়েও এইসব কাজ সম্পন্ন করতে হয়েছে।

চিঠিতে স্বাক্ষর করেন—বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বিটিটিএলএমইএর চেয়ারম্যান হোসেন মাহমুদ, বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) এবং ঢাকা চেম্বার সভাপতি তাসকিন আহমেদ।

শিল্পমালিকদের ১০ দফা মূল প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ:

১. আরএমএস রুম থেকে অভ্যন্তরীণ যন্ত্রপাতি পর্যন্ত সব পরিবর্তন গ্রাহক নিজে করতে পারবে—তিতাসের অনুমতি ছাড়াই।২. ১০ মেগাওয়াটের বেশি ক্যাপটিভ রানে গ্যাস ব্যবহার করতে চাইলে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির ছাড়পত্রের শর্ত বাতিল করতে হবে।৩. একই মালিকানার এক কারখানা থেকে অন্য কারখানায় অব্যবহৃত লোড স্থানান্তর অনুমতি ছাড়াই করতে হবে।৪. অন্য জায়গায় থাকা একই মালিকানাধীন কারখানায়ও লোড স্থানান্তর অনুমোদন সহজ করতে হবে।৫. অনলাইন আবেদন চালু ও স্বয়ংক্রিয় যাচাইয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে।৬. ক্যাপটিভ ও শিল্প লোডের পুনর্বিন্যাসে আঞ্চলিক অফিসকেই অনুমতির ক্ষমতা দিতে হবে।৭. ইভিসি মিটার স্থাপন বা পরিবর্তনে অনলাইন ফর্ম ও ডকুমেন্ট চেকলিস্ট চালু করতে হবে।৮. অনুমোদিত ব্র্যান্ডের মিটারের তালিকা দিয়ে সময় বাঁচাতে হবে এবং স্টক রাখার নির্দেশনা দিতে হবে।৯. মিটার পরিবর্তনে নির্দিষ্ট সময়সীমা (৩-৫ কর্মদিবস) বেঁধে দিতে হবে।১০. লো প্রেসার রেগুলেটরের অনুমোদন স্থানীয় অফিস থেকেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে দিতে হবে।

এ বিষয়ে এখনো সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে শিল্পপতিরা আশা করছেন, দ্রুত কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে।

সত্য প্রতিবেদন/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ