ভাটারায় গ্যাস বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজন দগ্ধ

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০২ ২২:০৪:১২
ভাটারায় গ্যাস বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজন দগ্ধ

রাজধানীর ভাটারা থানাধীন নূরের চালা এলাকায় গ্যাস লিকেজ থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ একই পরিবারের চারজন গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন। বুধবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিস্ফোরণের পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়।

দগ্ধরা হলেন গৃহকর্তা হালিম শেখ (৫০), তার স্ত্রী শিউলি বেগম (৪৫), তাদের একমাত্র ছেলে হানিফ শেখ (২৮) এবং হালিম শেখের বোন রহিমা খাতুন (৫০)। সবাই বর্তমানে হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে চিকিৎসাধীন এবং তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, রান্নাঘরের চুলা বা গ্যাস লাইনে গ্যাস লিকেজ থেকে ঘরে গ্যাস জমে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, রাতে ঘুমের আগে চুলা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ না করায় এ লিকেজ হয়। এরপর ঘরের বাতি বা ফ্যান চালু করার মুহূর্তে বৈদ্যুতিক স্পার্ক থেকে বিস্ফোরণ ঘটে।

বিস্ফোরণের শব্দ এতটাই প্রচণ্ড ছিল যে আশপাশের কয়েকটি ভবনের জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে এবং এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবেশীরা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে এবং দগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থশংকর পাল জানান, দগ্ধদের শরীরের বড় অংশ—প্রায় ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গেছে। তাদের জীবন রক্ষা করতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তারা জানিয়েছেন, পুরো ভবনটির গ্যাস সংযোগ, চুলা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু হয়েছে।

এই ঘটনায় নগরবাসীর মাঝে গ্যাস লিকেজ নিয়ে আবারও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্যাস ব্যবহারে অসাবধানতা এবং অব্যবস্থাপনার ফলে বারবার এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে, যা নগরজীবনের জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সচেতনতার পাশাপাশি অবিলম্বে গ্যাস সরবরাহ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার আধুনিকায়নের তাগিদও উঠে এসেছে।

ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, এই ঘটনার বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে এবং তদন্তে দোষী কোনো ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এখন পর্যন্ত দগ্ধদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে আরও ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা সতর্ক পর্যবেক্ষণের কথা বলা হয়েছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ