‘শুধু স্মরণ নয়, শপথের মাস হোক জুলাই’- প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০১ ১৩:৪৪:২০
‘শুধু স্মরণ নয়, শপথের মাস হোক জুলাই’- প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও অংশগ্রহণকারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী যে কর্মসূচি ঘোষণা করছি, সেটা কেবল একটি প্রতীকী আয়োজন নয়, বরং এটি একটি নতুন শপথের সূচনা।”

মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, গত বছরের অভ্যুত্থান ছিল একটি যুগান্তকারী ক্ষণ, যখন দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও অধিকারের পক্ষে রাস্তায় নেমেছিল। “আমরা চাই, সেই ঐক্য এই জুলাইয়ে আরও সুসংহত হোক,” বলেন ইউনূস।

তিনি বলেন, “এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কে আরও সচেতন করা, রাজনীতির প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা প্রকাশ এবং শহীদদের রক্তের ত্যাগকে স্মরণে রাখা।”

তিনি দৃঢ়কণ্ঠে উল্লেখ করেন, “আমাদের সামনে যাত্রাপথ সহজ নয়, তবে সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যখন জনগণ জেগে ওঠে, কোনো দমন-পীড়ন তা থামাতে পারে না। এই জুলাই হোক গণজাগরণ ও জাতীয় ঐক্যের মাস।”

প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্ট করে বলেন, “জুলাই আন্দোলনের অন্তর্নিহিত মর্মবাণী ছিল ফ্যাসিবাদ দূর করে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সেই লক্ষ্য পূরণে আমাদের সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা কাজ করছি যাতে কোনো স্বৈরাচার ভবিষ্যতে মাথাচাড়া দিতে না পারে।”

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, “১৬ বছর পর একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা আবারও স্বাধীনতার শ্বাস নিয়েছিলাম। কিন্তু সেই বিদ্রোহ কেবল রাজনৈতিক নয় তা ছিল রাষ্ট্র কাঠামো পুনর্গঠনের স্বপ্নেরও সূচনা।”

ড. ইউনূস আরও বলেন, “আমরা চাই এই মাসটি প্রতি বছর স্মরণ করি যাতে ভবিষ্যতে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আবারও ১৬ বছর অপেক্ষা না করতে হয়। যদি কোথাও স্বৈরতন্ত্রের লক্ষণ দেখা দেয়, আমরা যেন তাৎক্ষণিকভাবে তা প্রতিরোধ করতে পারি।”

ছাত্রদের ত্যাগের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “ছাত্রসমাজ আন্দোলনের মূলে ছিল। তাদের সাহস ও প্রতিজ্ঞা ছাড়া এই অভ্যুত্থান সফল হতো না। তারা আমাদের মুক্তির স্বাদ দিয়েছে।”

ড. ইউনূস তার বক্তব্যে স্পষ্ট করেন, “জুলাই গণতান্ত্রিক চেতনার এক অমোঘ ডাক যার মূল উদ্দেশ্য ছিল ফ্যাসিবাদ বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া। আজ, সেই অঙ্গীকার আবারও নতুন করে দৃঢ় হোক।”

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ