মেরুল বাড্ডা থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ব্র্যাক শিক্ষার্থীর 

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০১ ১২:০৯:৩৯
মেরুল বাড্ডা থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ব্র্যাক শিক্ষার্থীর 

রাজধানীর মেরুল বাড্ডার একটি আবাসিক ভবন থেকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র আসাদুজ্জামান ধ্রুব (২৫) ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে তার গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় তাকে পাওয়া গেলে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরিবারের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

নিহত আসাদুজ্জামান ধ্রুব বরিশালের কাউনিয়া উপজেলার বাসিন্দা এবং শামসুজ্জামান বাবুলের ছেলে। ধ্রুব শিক্ষাজীবনের জন্য রাজধানীর মেরুল বাড্ডার একটি ভবনের তৃতীয় তলায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার পরিবার জানায়, সোমবার বিকালে তিনি কয়েকবার ফোন করার চেষ্টা করলেও ধ্রুব ফোন ধরেননি। এরপর তার মা ও চাচা বিভিন্নবার চেষ্টা করেও তাকে যোগাযোগ করতে পারেননি, যা দেখে তারা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। রাতে ধ্রুবের বাসায় গিয়ে দরজা বন্ধ দেখে বাড়িওয়ালাকে খবর দেন, পরে তারা বাড্ডা থানায় যোগাযোগ করেন।

পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দরজা ভেঙে ধ্রুবকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। বাড্ডা থানার এসআই রাশেদুল ইসলাম জানান, “ধ্রুবের গলায় গামছা পেঁচানো ছিল এবং তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।” তিনি আরও বলেন, “এ বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”

ধ্রুবের পরিবার জানিয়েছে যে, তার চাচা ও ভাবি বরিশালে বসবাস করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে শোক ও হতবাক হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থী হিসেবে ধ্রুবের আগ্রহ, কাজ এবং সামাজিকতা সম্পর্কে ইতিবাচক মন্তব্য এসেছে। তার মৃত্যু এলাকায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গভীর শোক ও দুঃখের সৃষ্টি করেছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ও প্রয়াত শিক্ষার্থীর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই ঘটনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

এদিকে, বিভিন্ন পর্যায়ে পুলিশের তদন্ত চলছে এবং আশপাশের এলাকায় ক্যামেরা ফুটেজসহ অন্যান্য প্রমাণ সংগ্রহ করে আসাদুজ্জামানের মৃত্যুর পেছনের কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। প্রশাসন চেষ্টা করছে, যেন কোনো সন্দেহজনক বা অব্যাহতি বিষয় উঠে আসে এবং প্রকৃত ঘটনা সামনে আসে। পরিবারের পক্ষ থেকে তারা এই মৃত্যুতে হয়ত কোনও নির্যাতন, চাপ বা মানসিক সংকটের বিষয় আছে কিনা সে সম্পর্কে স্পষ্টতা চাওয়া হচ্ছে।

নিহতের বন্ধু ও সহপাঠীরা বলছেন, ধ্রুব একজন মেধাবী এবং পরিশ্রমী ছাত্র ছিলেন, যার আকস্মিক মৃত্যুকে তারা মেনে নিতে পারছে না। সামাজিক ও শৈক্ষিক পরিবেশে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ছিল স্পষ্ট, যা এখন পরিবারের জন্য গভীর ক্ষতির বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সহপাঠীরা মানসিক সহায়তা প্রদান এবং শোকাহত পরিবারকে সহায়তার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

এই ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দ্রুত এবং সঠিক তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন এবং আশংকা করা হচ্ছে যে, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানা যাবে। এক্ষেত্রে পারিবারিক, শিক্ষাজীবন ও সামাজিক জীবনের নানা দিকও বিবেচনায় নেওয়া হবে।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ