ইউরোপীয় ইউনিয়ন

ইউরোপের নিরাপত্তায় নেতৃত্ব দিতে চায় ডেনমার্ক

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০১ ১০:৩৩:১৮
ইউরোপের নিরাপত্তায় নেতৃত্ব দিতে চায় ডেনমার্ক

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঘূর্ণায়মান প্রেসিডেন্সি গ্রহণ করতে যাচ্ছে ডেনমার্ক, আর সেইসঙ্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা—নিরাপত্তা হবে শীর্ষ অগ্রাধিকার। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে ইউরোপজুড়ে নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়তে থাকায়, ডেনমার্ক চায় প্রতিরক্ষা খাতে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমগ্র মহাদেশের নিরাপত্তাকে নতুন ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা করতে।

ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী ম্যাটে ফ্রেডেরিকসেন রবিবার ‘পোলিটিকেন’ পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা আমাদের প্রেসিডেন্সি দিয়ে কিছু অর্জন করতে চাই। নিরাপত্তা আমাদের সুস্পষ্ট অগ্রাধিকার।” তিনি আরও বলেন, “নতুন একটি ন্যাটো লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই লক্ষ্য পূরণে ইউরোপকে পুনরায় সামরিকভাবে সুসজ্জিত করতে হবে। এরপর বেশিরভাগ বিষয়ই নীতিগতভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আওতায় পড়ে।”

সম্প্রতি ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ২০৩৫ সালের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩.৫ শতাংশ ব্যয় করতে হবে সামরিক খাতে এবং আরও ১.৫ শতাংশ ব্যয় করতে হবে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো ও অন্যান্য খাতে। তবে স্পেন এই লক্ষ্যমাত্রাকে "অযৌক্তিক" আখ্যায়িত করে নমনীয়তা চেয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে ডেনমার্ক তার ছয় মাসের ইউরোপীয় প্রেসিডেন্সির সময় ইউরোপের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য গৃহীত মার্চ মাসের প্রস্তাবগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন চায়। এতে রয়েছে সহজতর নীতিমালা, প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগের জন্য দেশগুলোকে ঋণ সহায়তা ইত্যাদি।

প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডেরিকসেন বলেন, “ইউরোপের নিরাপত্তা পরিস্থিতি বর্তমানে অস্থিতিশীল, আর এই অস্থিতিশীলতা আমাদের জন্য বিপজ্জনক। ইউরোপের ইতিহাস বলছে—দ্বন্দ্ব ছড়ায়। বর্তমান উত্তেজনা আরও উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।”

ডেনমার্ক ইতোমধ্যেই ইউক্রেনকে সহায়তাকারী বৃহৎ দাতা রাষ্ট্রগুলোর একটি। ২০১৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা ফ্রেডেরিকসেন তার দেশের সামরিক ব্যয় বাড়িয়ে জিডিপির তিন শতাংশেরও ওপরে নিয়ে গেছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের সময় গ্রিনল্যান্ড সংক্রান্ত হুমকির পর কপেনহেগেন তার দৃষ্টি আমেরিকা থেকে সরিয়ে ইউরোপীয় নিরাপত্তার দিকে আরও বেশি কেন্দ্রীভূত করেছে।

"একটি নিরাপদ ইউরোপ" নামক কর্মসূচির আওতায় ডেনমার্কের প্রেসিডেন্সি আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা নির্ধারণ করেছে—যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধ। এ ক্ষেত্রে ‘নতুন ও উদ্ভাবনী সমাধান’ নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি।

ডেনমার্ক মনে করে, "অনিয়মিত অভিবাসন ইউরোপীয় সংহতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।" তারা চাইছে আশ্রয়প্রার্থীদের প্রক্রিয়া ইউরোপের বাইরে স্থানান্তরিত করা এবং ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের কিছু রায় সীমিত করার উদ্যোগ নিতে।

সম্প্রতি ডেনমার্ক ইতালি ও আরও সাতটি দেশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইউরোপীয় মানবাধিকার সনদের নতুন ব্যাখ্যার দাবি তুলেছে, কারণ তাদের মতে বর্তমান আইন কখনও কখনও "ভুল লোকদের" সুরক্ষা দেয়।

-হাসানুজ্জামান, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ