বিশেষ প্রতিবেদন

নিষেধাজ্ঞার ছাই থেকে ফিনিক্সের উত্থান: ইরানের সামরিক বিপ্লব

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৬ ১৭:৪৬:১৭
নিষেধাজ্ঞার ছাই থেকে ফিনিক্সের উত্থান: ইরানের সামরিক বিপ্লব

একটি দৃশ্য কল্পনা করুন। তেলআবিব কিংবা রিয়াদের কোনো এক ডিফেন্স কমান্ড সেন্টারে বসে আছেন অভিজ্ঞ এক জেনারেল। হঠাৎ বেজে ওঠে সাইরেন। রাডারে ধরা পড়ে শত শত মিসাইল ধেয়ে আসছে—তাদের মধ্যে অনেকেই শব্দের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি গতিতে ছুটছে। এগুলো নির্দিষ্ট পথে চলা সাধারণ ব্যালিস্টিক মিসাইল নয়; এরা বায়ুমণ্ডলের মধ্যে গতিপথ পাল্টাতে সক্ষম। মাত্র ৭–১২ মিনিটের মধ্যে এগুলো নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারবে। এসব মিসাইলকে বিশ্বের উন্নত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমগুলোও ঠিকমতো শনাক্ত করতে পারছে না। এটি সায়েন্স ফিকশন নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের নতুন বাস্তবতা। আর এই বাস্তবতার কেন্দ্রে রয়েছে যে দেশটি, সেটি হচ্ছে ইরান—একটি নিষেধাজ্ঞাবিধ্বস্ত, অথচ অভূতপূর্বভাবে সামরিকভাবে স্বনির্ভর দেশ।

শুরুটা বিপ্লব আর শত্রুতার গল্প

ইরানের এই সামরিক উত্থানকে বোঝার জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের সময়ে। মার্কিনপন্থী শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভীর পতনের মধ্য দিয়ে ইরানে ক্ষমতায় আসে আয়াতুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্বাধীন ইসলামি সরকার। বিপ্লবের ফলে ইরান তার এক সময়কার ঘনিষ্ঠ মিত্র আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন করে। তেহরানে মার্কিন দূতাবাস জিম্মি সংকটের পরপরই আমেরিকা ইরানের উপর প্রথম দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং সব ধরনের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়। বন্ধ হয় যন্ত্রাংশ, প্রযুক্তি এবং অস্ত্র সরবরাহ।

ইরাক যুদ্ধ: অস্তিত্ব সংকট আর আত্মরক্ষার চেতনার জন্ম

ইরানের অস্তিত্বের পরীক্ষা শুরু হয় ১৯৮০ সালে, যখন সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বাধীন ইরাক ইরানে হামলা চালায়। আট বছরব্যাপী এই ভয়ংকর যুদ্ধের সময় ইরান ছিল কার্যত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন। বিপরীতে, ইরাক সোভিয়েত ইউনিয়ন, ফ্রান্স এবং পশ্চিমা শক্তিগুলোর কাছ থেকে উন্নত অস্ত্র, যুদ্ধবিমান ও স্কাড মিসাইল পায়। ‘ওয়ার অব দ্য সিটিস’ নামে পরিচিত এই পর্বে ইরাক ইরানের জনবসতিপূর্ণ শহরগুলোতে নির্বিচারে মিসাইল নিক্ষেপ করে। ইরান এই মুহূর্তে ছিল প্রায় নিরস্ত্র; এয়ারফোর্স ছিল অকেজো, যন্ত্রাংশের অভাবে মরিচা ধরা, আর প্রতিরোধক্ষমতা ছিল শূন্যের কোঠায়। এই অভিজ্ঞতা ইরানকে দুটো শিক্ষা দেয়: আন্তর্জাতিক আইন দিয়ে আত্মরক্ষা হয় না, আর জাতীয় নিরাপত্তা অর্জনের জন্য স্বনির্ভরতা অপরিহার্য।

মিসাইল স্বপ্ন: শূন্য থেকে শুরু, সাহসিকতার রূপান্তর

যুদ্ধের মাঝেই ইরান শুরু করে নিজেদের মিসাইল তৈরির পরিকল্পনা। উত্তর কোরিয়া ও লিবিয়া থেকে কিছু স্কাড বি মিসাইল সংগ্রহ করে তারা এগুলোর উপর রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং শুরু করে। এই প্রক্রিয়ার নেতৃত্বে ছিলেন কমান্ডার হাসান তেহরানী মোকাদ্দাম, যিনি আজ ইরানের মিসাইল প্রোগ্রামের জনক হিসেবে পরিচিত। প্রযুক্তি, উপকরণ, জ্ঞান—সব কিছুর অভাব থাকা সত্ত্বেও একদল তরুণ ইরানি ইঞ্জিনিয়ার এই অসম্ভবকে সম্ভব করার কাজে নেমে পড়ে। উত্তর কোরিয়াও তাদের সহায়তা করে। তেলের বিনিময়ে প্রযুক্তি বিনিময় হয়। এইভাবে জন্ম নেয় ‘শাহাব’ সিরিজের মিসাইল। শাহাব–১ এর পর আসে শাহাব–৩, যার পাল্লা ছিল প্রায় ১৩০০ কিলোমিটার—এটি ইসরায়েল ও মার্কিন ঘাঁটিকে প্রথমবারের মতো ইরানের মিসাইল রেঞ্জে নিয়ে আসে।

নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল ও গোপন প্রযুক্তি সংগ্রহের মেধাবী কৌশল

২০০০-এর দশকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ মিলে ইরানের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তেল রপ্তানি প্রায় বন্ধ করে দেওয়া হয়, আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়া হয় (SWIFT), প্রযুক্তিগত পণ্য আমদানিতে কঠিন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এমনকি ডুয়েল ইউজ পণ্য, যেমন উন্নত কার্বন ফাইবার বা উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসরের আমদানিও নিষিদ্ধ হয়। কিন্তু ইরান এর মোকাবেলায় গড়ে তোলে গোপন শেল কোম্পানি নেটওয়ার্ক। চীন, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইউরোপে স্থাপিত এই কোম্পানিগুলো জটিল ট্রান্সফার চেইনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি দেশে পাঠাতে সক্ষম হয়।

শিক্ষা ও গবেষণায় বিপ্লব: প্রযুক্তিতে মেধার পুনর্জন্ম

বাইরে থেকে প্রযুক্তি আনা কঠিন হলেও, জ্ঞান অর্জন বন্ধ করা যায় না—এই উপলব্ধি থেকেই ইরান জাতীয়ভাবে উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগ করে। দেশের সেরা শিক্ষার্থীদের বিদেশে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, ইলেকট্রনিক্স ও রোবোটিকস পড়তে পাঠানো হয়। দেশে শরীফ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি ও মালেক আশতার ইউনিভার্সিটিকে পরিণত করা হয় গবেষণার হাব-এ। এর ফলে গড়ে ওঠে একদল স্থানীয় গবেষক ও প্রকৌশলী, যারা শুধু রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এ সীমাবদ্ধ না থেকে মৌলিক উদ্ভাবনে মনোযোগ দেয়।

আইআরজিসি: সামরিক বাহিনীর গায়ে অর্থনীতির হাড়জোড়া

ইরানের ইসলামিক রেভলুশনারি গার্ড কর্পস (IRGC) শুধুমাত্র সামরিক বাহিনী নয়, বরং এটি ইরানের সবচেয়ে প্রভাবশালী অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম। খাতাম আল-আন্বিয়া নির্মাণ কোম্পানি, টেলিকম খাত, বন্দর, তেল ও গ্যাস খাতের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তাদের হাত। এই অর্থনৈতিক শক্তি সরাসরি সামরিক গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নে ব্যবহৃত হয়। ফলে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটিয়ে তারা নিজেদের অর্থায়নে বড় বড় সামরিক প্রকল্প চালিয়ে যেতে পারে।

অপ্রতিসম যুদ্ধনীতি: দুর্বল থেকে শক্তির বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল

ইরান জানে তারা কখনোই যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের মতো আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, স্টেলথ বোমারু বিমান বা শক্তিশালী বিমানবাহী রণতরী গড়তে পারবে না। তাই তারা বেছে নেয় অপ্রতিসম যুদ্ধনীতি (Asymmetric Warfare)। ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ মিসাইল তাদের বোমারু বিমানের বিকল্প, সস্তা ড্রোন তাদের আকাশ প্রতিরক্ষার প্রতিদ্বন্দ্বী, হিজবুল্লাহ, হুতি ও অন্যান্য শিয়া মিলিশিয়ারা তাদের ভূরাজনৈতিক প্রক্সি, এবং হরমুজ প্রণালীর স্পিড বোট যুদ্ধজাহাজ ধ্বংসে ব্যবহৃত হয়।

টেকনোলজির বিপ্লব: সলিড ফুয়েল থেকে হাইপারসোনিক যুগে প্রবেশ

ইরান তাদের মিসাইলগুলোতে আগে লিকুইড ফুয়েল ব্যবহার করতো, যা সময়সাপেক্ষ ও ঝুঁকিপূর্ণ। পরবর্তীতে তারা সলিড ফুয়েল প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জন করে। সেজিল, ফাতাহ-এর মতো মিসাইল সলিড ফুয়েলভিত্তিক, যা প্রস্তুত অবস্থায় ভূগর্ভে সংরক্ষণ করা যায় এবং দ্রুত উৎক্ষেপণ করা সম্ভব। মিসাইলগুলোতে যুক্ত করা হয়েছে আধুনিক টার্মিনাল গাইডেন্স ও ম্যানুভারেবল রিএন্ট্রি ভেহিকেল, যার ফলে মিসাইল লক্ষ্যবস্তুতে শেষ মুহূর্তে দিক পাল্টাতে সক্ষম।

ফাতাহ যুগ: হাইপারসোনিক কৌশলের উত্থান

২০২৩ সালে ইরান বিশ্বের চমকে দিয়ে ফাতাহ নামক হাইপারসোনিক মিসাইল উন্মোচন করে, যার গতি শব্দের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি। এরপর আসে ফাতাহ-২—একটি হাইপারসোনিক গ্লাইড ভেহিকেল। এই প্রযুক্তি এতটাই উন্নত যে বর্তমানে শুধুমাত্র আমেরিকা, রাশিয়া ও চীনের হাতেই এটি রয়েছে। ফাতাহ-২ যেন ইরানের প্রতিরোধশক্তির এক প্রতীক, যা বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকেও অকার্যকর করে দিতে পারে।

ড্রোন বিপ্লব: কম খরচে বেশি কার্যকারিতা

শাহেদ–১৩৬ ড্রোনের মাধ্যমে ইরান প্রমাণ করেছে যে যুদ্ধের জন্য শুধুমাত্র ব্যয়বহুল প্রযুক্তির প্রয়োজন নেই। মাত্র ২০,০০০ ডলারে তৈরি হওয়া এই কামিকাজে ড্রোনগুলো রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধেও ব্যবহার করেছে। ঝাঁকে ঝাঁকে আক্রমণের মাধ্যমে এই ড্রোনগুলো কোটি ডলারের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে অকার্যকর করে তুলছে।

নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য সফল, নাকি বিপরীত?

ইরানের সামরিক উত্থান আমাদের সামনে এক বড় প্যারাডক্স হাজির করে। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ছিল তাদের প্রযুক্তিগত ও সামরিক অগ্রগতিকে রুদ্ধ করার জন্য, কিন্তু বাস্তবে এই নিষেধাজ্ঞাই ইরানকে আত্মনির্ভর, উদ্ভাবনী এবং আগের চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক এক সামরিক শক্তিতে পরিণত করেছে। আজ ইরান কেবল একটি দেশ নয়, বরং একটি কৌশলগত বাস্তবতা—একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি, যারা বলছে: “আমরা পিছিয়ে নেই, আমরা প্রস্তুত।”


ইউক্রেন যুদ্ধবিরতিতে পুতিনের পুতিনের মনোভাব জানালেন ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৫ ১৩:৪৮:২১
ইউক্রেন যুদ্ধবিরতিতে পুতিনের পুতিনের মনোভাব জানালেন ট্রাম্প
ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তার বিশ্বাস রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে প্রস্তুত। শুক্রবার আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকের আগের দিন তিনি এ কথা বলেন। তবে ট্রাম্প মনে করেন, একটি স্থায়ী শান্তি চুক্তি নিশ্চিত করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে আরেক দফা বৈঠকের প্রয়োজন হবে। খবর আল জাজিরার।

বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজ রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, পুতিনের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই ভালো এবং সেই সম্পর্কের ভিত্তিতেই তিনি মনে করেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ বন্ধে আগ্রহী। তার ভাষায়, “আমি বিশ্বাস করি প্রেসিডেন্ট পুতিন শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চান। আমি না হয়ে যদি অন্য কেউ থাকতেন, হয়তো পুতিন এ বিষয়ে কথা বলতেন না।”

তবে তিনি এও স্পষ্ট করে দেন যে, শুক্রবারের বৈঠক থেকে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি আসার সম্ভাবনা কম। বরং তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন একটি সম্ভাব্য দ্বিতীয় বৈঠকে, যেখানে পুতিন, জেলেনস্কি, তিনি নিজে এবং সম্ভব হলে কিছু ইউরোপীয় নেতা অংশ নিতে পারেন। ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি শুক্রবারের বৈঠকটি ভালো হবে, কিন্তু দ্বিতীয় বৈঠকটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে। সেখানে প্রেসিডেন্ট পুতিন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি, আমি, আর হয়তো কিছু ইউরোপীয় নেতা থাকবেন নাও থাকতে পারেন। আমি এখনো নিশ্চিত নই।”

এই বৈঠককে তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলছে যে, এটি ছয় বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ট্রাম্প ও পুতিনের মুখোমুখি আলোচনা। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের অ্যাঙ্কোরেজে অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠক আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে উচ্চমাত্রার আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। ট্রাম্পের অন্যতম বড় লক্ষ্য হলো ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টেনে নিজের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি পূরণ করা।

এর আগে পুতিন তার শীর্ষ মন্ত্রী ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে আলাস্কার আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নেন। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সংঘটিত সবচেয়ে বড় সশস্ত্র সংঘাত ইউক্রেন যুদ্ধ সমাপ্তির সম্ভাব্য পথ উন্মুক্ত করতে পারে।

-রাফসান


পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল আর নয়: পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি মোদির

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৫ ১০:৩০:৫০
পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল আর নয়: পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি মোদির
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানী নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লা প্রাঙ্গণ থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে জানানো হয়েছে, এই ভাষণে তিনি সরাসরি পাকিস্তানকে উদ্দেশ করে কঠোর সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন, বিশেষত পারমাণবিক অস্ত্রকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের ‘ব্ল্যাকমেল’ আর বরদাস্ত করা হবে না বলে স্পষ্ট জানান।

প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, বহু বছর ধরে ভারতের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি ব্যবহার করে এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। কিন্তু ভারত এখন সেই কৌশলকে চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি শত্রুরা এমন আচরণ অব্যাহত রাখে, তবে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী তাদের নিজের শর্ত অনুযায়ী, নিজের সময় বেছে, নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে জবাব দেবে। “আমরা উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত”—এ কথার মাধ্যমে তিনি দৃঢ়তার বার্তা দেন।

মোদির এই মন্তব্যের প্রেক্ষাপট হিসেবে রয়েছে সম্প্রতি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের বিতর্কিত বক্তব্য। যুক্তরাষ্ট্র সফরে মুনির বলেছিলেন, যদি ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে পাকিস্তান অস্তিত্বের সংকটে পড়ে, তবে তারা “অর্ধেক বিশ্বকে সঙ্গে নিয়ে ধ্বংস হবে”। মোদির কড়া প্রতিক্রিয়া মূলত এই ঘোষণারই জবাব হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুরের’ সাফল্যের জন্য ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করেন। তিনি জানান, এই অভিযানে ভারত পাকিস্তানের ভূখণ্ডের গভীরে প্রবেশ করে শত্রুপক্ষকে এমন একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে যা কল্পনার অতীত। “আমাদের সাহসী সেনাদের বীরত্বকে আমি স্যালুট জানাই। অপারেশন সিঁদুরে আমাদের সেনারা শত্রুদের এমনভাবে জবাব দিয়েছেন যা তারা কখনো কল্পনাও করতে পারেনি”—বলেন মোদি।

তিনি মনে করিয়ে দেন, গত ২২ এপ্রিল সীমান্ত পেরিয়ে আসা সন্ত্রাসীরা নিরীহ সাধারণ মানুষকে ধর্ম জিজ্ঞাসা করে টার্গেট করে হত্যা করেছিল। এ ঘটনা গোটা ভারতজুড়ে ক্ষোভের সঞ্চার করে। তার পরপরই সরকার সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়, যাতে তারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক জবাব দিতে পারে।

মোদি আরও দাবি করেন, পাকিস্তানে এই অভিযানের ধ্বংসযজ্ঞ এতই ব্যাপক ছিল যে প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে, যা ভারতের সামরিক সক্ষমতার স্পষ্ট প্রমাণ।

শুধু সামরিক সতর্কবার্তাই নয়, পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সিন্ধু নদের পানি বণ্টন চুক্তি নিয়েও কড়া অবস্থান নেন মোদি। তিনি বলেন, “ভারত সিদ্ধান্ত নিয়েছে রক্ত এবং পানি একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।” এই মন্তব্য পাকিস্তানের প্রতি একটি কৌশলগত জলনীতি হুঁশিয়ারি হিসেবেই দেখা হচ্ছে, যা দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ গতিপথে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

-শরিফুল


কেউ বাঁচবে না: গাজা নিয়ে নেতানিয়াহুর চরম হুঁশিয়ারি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ২২:০০:২৭
কেউ বাঁচবে না: গাজা নিয়ে নেতানিয়াহুর চরম হুঁশিয়ারি
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি গাজা উপত্যকায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো ধ্বংসাত্মক হামলার হুমকি দিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজম্যাক্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মিত্রবাহিনী জার্মানির ড্রেসডেনে যেমন বোমা বর্ষণ করেছিল, ইসরায়েল চাইলে গাজায় তেমন হামলা চালাতে পারে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হয়, কেন ইসরায়েল এখনো হামাস ও গাজা উপত্যকাকে সম্পূর্ণভাবে ‘মানচিত্র থেকে মুছে’ ফেলছে না। এর উত্তরে তিনি বিতর্কিত মন্তব্য করেন।

নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা চাইলে ড্রেসডেনের মতো বোমা ফেলতে পারি। চাইলে গাজায় এমন দুর্ভিক্ষ ঘটাতে পারি, যাতে কেউ বেঁচে না থাকে। কিন্তু এখনো আমরা তা করিনি।”

তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা ছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা ও একাধিক ত্রুটির ফল। বর্তমানে ইসরায়েল আটটি ভিন্ন পক্ষের সঙ্গে লড়ছে, যার মধ্যে সাতটি হলো ইরান ও তাদের মিত্রগোষ্ঠী এবং অষ্টমটি ‘সত্যের জন্য যুদ্ধ’।

গাজায় দুর্ভিক্ষ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু দাবি করেন, এসব তথ্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি জিম্মিরাই একমাত্র যারা ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ভিক্ষের শিকার হয়েছেন। তার মতে, হামাস যোদ্ধারা যখন সুস্বাদু খাবার খাচ্ছে, তখন দুর্বল স্বাস্থ্যের জিম্মিদের অবস্থা দেখেই তা স্পষ্ট বোঝা যায়। তবে ইসরায়েল কখনোই ‘অনাহারের নীতি’ গ্রহণ করেনি বলেও তিনি দাবি করেন। বরং বেসামরিক নাগরিকদের থেকে হামাস যোদ্ধাদের আলাদা করার একটি কৌশলগত নীতি অনুসরণ করছে ইসরায়েল।

সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর


নেতানিয়াহুকে ‘গ্রেফতারের’ ঘোষণা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ১৬:০২:৫৬
নেতানিয়াহুকে ‘গ্রেফতারের’ ঘোষণা
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় ইসরাইলের চলমান সামরিক অভিযান ও গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিশ্বের অন্যতম সুখী ও মানবাধিকারসম্মত নীতি অনুসরণকারী দেশ নরওয়ে। দেশটির সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নরওয়েতে প্রবেশ করলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে। নরওয়ের এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক আইন ও জবাবদিহির প্রশ্নে একটি শক্ত অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়।

মিডল ইস্ট মনিটরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার নরওয়ের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেয়াস ক্রাভিচ নিশ্চিত করেছেন যে, তার দেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) কর্তৃক জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার প্রতি সম্পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি বলেন, নেতানিয়াহু যদি নরওয়ের মাটিতে অবতরণ করেন, তাহলে আইসিসির পরোয়ানা কার্যকর করে তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হবে।

ক্রাভিচের ভাষ্য অনুযায়ী, আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে নরওয়ের এ ধরনের পরোয়ানা বাস্তবায়নের স্পষ্ট আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই পদক্ষেপ কেবল আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি নরওয়ের অঙ্গীকারকেই নয়, বরং যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের জবাবদিহির আওতায় আনার প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থনকেও প্রতিফলিত করে।

২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর আইসিসি যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এই পরোয়ানায় ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং হামাসের তিন শীর্ষ নেতাকেও অভিযুক্ত করা হয়।

নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ এইডে এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন, গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধের ক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আইসিসি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এবং এর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বৈশ্বিক ন্যায়বিচারের স্বার্থে অপরিহার্য।

এর আগে, ২০২৪ সালের মে মাসে আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান নেতানিয়াহু, গ্যালান্ট এবং হামাসের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছিলেন। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২১ নভেম্বর এই পরোয়ানা জারি করা হয়, যা এখন নরওয়ের মতো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জন্য বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক।

-রাফসান


পারমাণবিক শক্তির পর এবার পাকিস্তানের ‘রকেট ফোর্স’-শত্রুর জন্য কঠিন বার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ১২:৪২:২৯
পারমাণবিক শক্তির পর এবার পাকিস্তানের ‘রকেট ফোর্স’-শত্রুর জন্য কঠিন বার্তা
ছবিঃ সংগৃহীত

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় নতুন মাত্রা যোগ করার লক্ষ্যে ‘রকেট ফোর্স কমান্ড’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছেন। ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) তিনি এই ঘোষণা দেন। আধুনিক প্রযুক্তি-সজ্জিত এই বিশেষায়িত বাহিনীকে এমনভাবে গড়ে তোলা হবে, যা যেকোনো শত্রুর বিরুদ্ধে ‘সব দিক থেকে’ কার্যকর আঘাত হানতে সক্ষম হবে বলে জানান তিনি।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে শাহবাজ শরিফ বলেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ভিত্তি হলো ঐক্য, ঈমান ও শৃঙ্খলা—যে মূল্যবোধ জাতিকে একত্রিত করেছে, আজও সেই চেতনা পাকিস্তানের মূল শক্তি। রাজনৈতিক দল ও সব সংশ্লিষ্ট পক্ষকে ‘চার্টার অব স্ট্যাবিলিটি’-তে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, এটি কেবল অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য নয় বরং জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য অপরিহার্য। তাঁর ভাষায়, “পাকিস্তানের প্রশ্নে আমরা একতাবদ্ধ থাকবো, যদিও অন্যান্য বিষয়ে মতপার্থক্য থাকতেই পারে।”

জাতিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, পাকিস্তানের জন্ম কেবল মুক্তির সংগ্রামের ফল নয়, বরং দ্বি-জাতি তত্ত্বের বিজয়ের প্রতীক। এ সময় তিনি পাকিস্তানের জনক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, কবি ও দার্শনিক আল্লামা ইকবাল এবং পাকিস্তান আন্দোলনের অন্যান্য নেতাদের অবদান স্মরণ করেন।

শাহবাজ শরিফ উল্লেখ করেন, ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করে দেন অল্প কয়েকজন দূরদর্শী নেতা। স্বাধীনতা দিবসকে তিনি ‘মারকা-এ-হক’ হিসেবে আখ্যায়িত করে দাবি করেন, ভারত মিথ্যা অভিযোগে পাকিস্তানের ওপর আক্রমণ করেছিল, কিন্তু চার দিনের মধ্যেই তাদের ‘অহংকার ভেঙে পড়ে’। সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরসহ সব সাহসী সামরিক কমান্ডারের প্রশংসা করে তিনি বলেন, তাদের প্রতিরক্ষা কৌশল প্রজন্মের পর প্রজন্ম পাকিস্তানের ইতিহাসে গৌরবের অংশ হয়ে থাকবে। অসিম মুনিরকে তিনি ‘জাতির মহান সন্তান’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০২৫ সালের ১০ মে পাকিস্তান এক নতুন যুগে প্রবেশ করেছে—এখন দেশ যেকোনো শত্রুর বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিক্রিয়া প্রদানে সক্ষম। তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান বিশ্বের সপ্তম পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র এবং একমাত্র ইসলামী দেশ হিসেবে এ সক্ষমতা অর্জন করেছে। ১৯৯৮ সালের ২৮ মে পরিচালিত পারমাণবিক পরীক্ষার সময় আন্তর্জাতিক চাপ প্রত্যাখ্যান করায় তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দৃঢ় নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। শাহবাজ শরিফের মতে, পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি আক্রমণাত্মক নয়, বরং এটি দেশের প্রতিরক্ষার অন্যতম স্তম্ভ।

চীন, সৌদি আরব, তুরস্ক, আজারবাইজান ও ইরানের অব্যাহত সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টারও প্রশংসা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ট্রাম্প কাশ্মীর সংকট সমাধানে সহায়তা করে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।

কাশ্মীরের পরিস্থিতি তুলে ধরে শাহবাজ শরিফ বলেন, উপত্যকা এখনো নিরীহ মানুষের রক্তে রঞ্জিত। ৯০ হাজার মানুষের প্রাণহানির ভয়াবহ পরিসংখ্যান উল্লেখ করে তিনি জানান, এদের মধ্যে সেনা সদস্য ও সাধারণ মানুষ উভয়ই রয়েছে। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েও তিনি সহিংসতা ও বাধা সৃষ্টির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে ফিলিস্তিনি ও কাশ্মীরিদের ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের অক্লান্ত সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ‘ব্যাটল ফর ট্রুথ’ শীর্ষক একটি ডিজিটাল স্মৃতিসৌধ উদ্বোধন করেন। পাঁচটি প্রতীকী খোপে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, সাইবার প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ প্রতিরক্ষার প্রতীক তুলে ধরা হয়, যা পাকিস্তানের আধুনিক প্রতিরক্ষা কাঠামোর বহুমুখী দিককে চিত্রিত করে।

ইসলামাবাদের জিন্নাহ স্পোর্টস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, বিদেশি রাষ্ট্রদূত, আজারবাইজান ও তুরস্কের সামরিক প্রতিনিধি, আসিফা ভুট্টো জারদারি, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফসহ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন।

-রফিক


পুতিনকে ‘গুরুতর পরিণতির’ হুঁশিয়ারি দিলেন ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ১১:৩২:০৬
পুতিনকে ‘গুরুতর পরিণতির’ হুঁশিয়ারি দিলেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাজি না হলে তাকে ‘অত্যন্ত গুরুতর পরিণতি’ ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বার্তাসংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায়।

আলাস্কায় বৈঠক ও ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনাট্রাম্প জানান, পুতিনের সঙ্গে তার এই বৈঠকটি আলাস্কার জনবহুল শহর অ্যাঙ্কোরেজে অনুষ্ঠিত হবে। এটি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুতিনের সঙ্গে তার প্রথম সরাসরি বৈঠক হতে যাচ্ছে। ট্রাম্প মনে করেন, এই বৈঠকের মাধ্যমে পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি-কে নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পথ খুলে যেতে পারে।

বৈঠকের বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, “প্রথম বৈঠকে আমি বুঝে নেব আমরা কোথায় আছি। যদি প্রথম বৈঠক ভালো হয়, তাহলে খুব দ্রুতই দ্বিতীয় বৈঠক হবে।” তবে তিনি এও স্পষ্ট করেন, যদি তিনি মনে করেন বৈঠকটি উপযুক্ত নয় বা প্রয়োজনীয় উত্তর না পান, তাহলে দ্বিতীয় বৈঠক হবে না।

জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকট্রাম্প জানান, পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও অন্যান্য ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন, যা ‘খুব ভালো’ এবং ‘খুবই আন্তরিক’ ছিল।


গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা: একদিনেই নিহত শতাধিক

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ০৯:৩৯:৫৭
গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা: একদিনেই নিহত শতাধিক
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনেই অন্তত ১০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শুধু গাজা সিটিরই ৬১ জন। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) এ খবর দিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

চিকিৎসা সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার ভোর থেকে গাজায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটেছে। অবরুদ্ধ উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে হামলা আরও তীব্র হয়েছে।

গাজা সিটির উত্তরে ত্রাণ নিতে জড়ো হওয়া মানুষের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলায় বুধবার অন্তত ১২ জন নিহত হন। এছাড়া দক্ষিণ গাজার রাফাহতে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত ১৬ জন নিহত হন। সব মিলিয়ে খাদ্যের সন্ধানে থাকা অন্তত ৩৭ জন সেদিন নিহত হন।

এদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আছে তিন শিশুও। এ নিয়ে গাজায় দুর্ভিক্ষে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩৫ জনে, যার মধ্যে ১০৬ জনই শিশু।

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৫ মাসের বেশি সময় টানা অভিযানের পর সাময়িকভাবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গত ১৮ মার্চ থেকে আবারও অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।

গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। একই সঙ্গে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলারও মুখোমুখি রয়েছে।


ফিলিস্তিন, মিশর ও জর্ডানের অংশ নিয়ে ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ চান নেতানিয়াহু

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৪ ০৯:০৪:২২
ফিলিস্তিন, মিশর ও জর্ডানের অংশ নিয়ে ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ চান নেতানিয়াহু
মিশর-জর্ডান নিয়ে ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ চান নেতানিয়াহু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সমগ্র ফিলিস্তিন, মিশর ও জর্ডানের একাংশ নিয়ে এক ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ (বৃহত্তর ইসরায়েল) প্রতিষ্ঠার ভিশনের কথা জানিয়েছেন। তিনি নিজেকে এ ধরনের একটি 'ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক মিশনে' নিয়োজিত বলেও মন্তব্য করেছেন। মঙ্গলবার ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েল-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

নেতানিয়াহু আই-২৪ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তার 'বৃহত্তর ইসরায়েল' দর্শনের মধ্যে বর্তমান ইসরায়েল, ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য নির্ধারিত এলাকা এবং জর্ডান ও মিশরের কিছু অংশও অন্তর্ভুক্ত। সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী শ্যারন গাল, যিনি একজন ডানপন্থী নেসেট সদস্য ছিলেন, তিনি নেতানিয়াহুকে বৃহত্তর ইসরায়েলের মানচিত্রখচিত একটি তাবিজ উপহার দেন।

'বৃহত্তর ইসরায়েল' দর্শনের প্রতি তার কোনো সংযোগ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, তিনি 'অনেক বেশি' সংযোগ অনুভব করেন। তিনি আরও বলেন, তিনি 'প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এক মিশনে আছেন—বহু প্রজন্ম ধরে ইহুদিরা এখানে আসার স্বপ্ন দেখেছে এবং আমাদের পরেও অনেক প্রজন্ম আসবে একই স্বপ্ন নিয়ে।' তিনি স্পষ্ট করে বলেন, 'ঐতিহাসিকভাবে এবং আধ্যাত্মিকভাবে আমার মধ্যে কোনো মিশন বা চেতনা কাজ করে কি না, তার উত্তর হলো হ্যাঁ।'

‘গ্রেটার ইসরায়েল’ শব্দটি মূলত ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর ইসরায়েল এবং দেশটির দখল করা এলাকাগুলোকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। গত বছর ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বাজায়েল স্মোরিচও 'বৃহৎ ইসরায়েল' নিয়ে মন্তব্য করে বলেছিলেন, তারা সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক পর্যন্ত ইসরায়েলের পরিধি বাড়াবেন।

বর্তমানে দখলদার ইসরায়েল ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা এবং দক্ষিণ লেবানন ও সিরিয়ায় বর্বরতা চালাচ্ছে।

সূত্র:দ্য টাইমস অব ইসরায়েল


ধূমপান ছাড়তে বড়দের চুষনি, চীনে ভাইরাল এই পণ্যের চাহিদা আকাশচুম্বী

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৩ ২১:৪৮:২৭
ধূমপান ছাড়তে বড়দের চুষনি, চীনে ভাইরাল এই পণ্যের চাহিদা আকাশচুম্বী
চীনে বড়দের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ‍উঠেছে চুষনি/ এআই দিয়ে তৈরি ছবি

চীনে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বিশেষভাবে তৈরি চুষনি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিক্রেতাদের দাবি, এই চুষনি মানসিক চাপ কমাতে, ভালো ঘুমাতে এবং ধূমপান ছাড়তে সাহায্য করে। তবে চিকিৎসকরা এর স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য কভাভের তথ্য অনুযায়ী, শিশুদের চুষনির চেয়ে আকারে বড় এই চুষনিগুলো অনলাইন স্টোরে মাসে দুই হাজারেরও বেশি বিক্রি হচ্ছে। এর দাম ১০ থেকে ৫০০ ইউয়ানের (১.৪ থেকে ৭০ মার্কিন ডলার) মধ্যে।

এই চুষনি ব্যবহারকারীদের অনেকেই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তাদের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, এটি নরম ও আরামদায়ক, যা মানসিক স্বস্তি ও অস্থিরতা কমায়। আরেকজনের মতে, এটি তাকে ধূমপান ছাড়তে সাহায্য করেছে। আরেকজন ব্যবহারকারী বলেন, কাজের চাপের সময় এটি ব্যবহার করলে শৈশবের নিরাপদ অনুভূতিতে ফিরে যাওয়া যায়।

বিক্রেতাদের দাবির বিপরীতে চীনা দন্ত বিশেষজ্ঞ তাং চাওমিন সতর্ক করে বলেন, এই চুষনি দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে চোয়াল পুরোপুরি খোলার ক্ষমতা সীমিত হতে পারে এবং চিবানোর সময় ব্যথা হতে পারে। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন তিন ঘণ্টার বেশি ব্যবহার করলে এক বছরের মধ্যেই দাঁতের অবস্থান বদলে যেতে পারে। মনোবিজ্ঞানী ঝাং মো মনে করেন, যারা এই পণ্য ব্যবহার করছেন, তাদের আবেগীয় চাহিদা পূরণ হচ্ছে না এবং নিজেকে শিশু ভাবাটা কোনো সমাধান নয়।

এদিকে, এই পণ্য নিয়ে চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। একটি প্ল্যাটফর্মে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও দেখা হয়েছে প্রায় ৬ কোটি বার।

সূত্র: দ্য সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

পাঠকের মতামত:

১৪ আগস্ট সেরা দশ লেনদেনকারী শেয়ার

১৪ আগস্ট সেরা দশ লেনদেনকারী শেয়ার

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেছে ওরিয়ন ইনফিউশন... বিস্তারিত