বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ঢাকার অবস্থান যততম

বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় আবারও দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে ঢাকা। রোববার সকালে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) স্কোর ছিল ১৬৭, যা আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ‘অস্বাস্থ্যকর’ স্তরে পড়ে। এই স্কোর সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়, বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসকষ্ট বা হৃদরোগে আক্রান্তদের জন্য।
ঢাকার আগে তালিকায় রয়েছে আফ্রিকার দেশ চাদ (AQI ১৭৬)। ঢাকার পরেই রয়েছে পাকিস্তান (১৬৪), কঙ্গো (১৫৩) ও ভারত (১৩৮)। এসব দেশ ও শহরের বাতাসের মানও সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স মূলত বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্র কণিকা (PM2.5, PM10), কার্বন মনোক্সাইড, ওজোন, সালফার ডাইঅক্সাইড ও অন্যান্য দূষিত গ্যাসের মাত্রা পরিমাপ করে। এই সূচক দেখায় কোনো এলাকার বাতাস কতটা নির্মল কিংবা কতটা দূষিত এবং এর ফলে মানুষ কী ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে।
একিউআই স্কোর ১৫০ থেকে ২০০-এর মধ্যে থাকলে সেটি ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা ঢাকার বর্তমান অবস্থা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকার বায়ু দূষণের প্রধান কারণ হলো ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া, অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণকাজ, ধুলোবালি, ও পুরনো জ্বালানিচালিত যানবাহনের ধোঁয়া।
শহরের সর্বত্র এখন যেন ধোঁয়া ও ধুলোবালির এক অদৃশ্য চাদর। প্রতিদিনের চলাফেরায় সাধারণ মানুষ চোখে জ্বালা, নিঃশ্বাসে কষ্ট ও মাথাব্যথার মতো উপসর্গে ভুগছে। চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসজনিত সমস্যা এবং অ্যালার্জিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
পরিবেশবিদরা বলছেন, সমস্যা চিহ্নিত হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা এখনও দৃশ্যমান নয়। নির্মাণস্থলে ধুলা নিয়ন্ত্রণে নেই, ইটভাটাগুলো অনেকটাই অপ্রতিরোধ্য, পরিবেশবান্ধব যানবাহনের বিকল্প নেই, আর নগরীতে সবুজায়নের উদ্যোগ প্রায় স্থবির।
এ অবস্থায় বায়ু দূষণ রোধে জরুরি ভিত্তিতে জাতীয় পর্যায়ে সমন্বিত পরিবেশনীতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রয়োজন পরিবেশ আইন বাস্তবায়নে কঠোরতা, নির্মাণ ও শিল্প খাতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং নগরায়নে সবুজ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন।
-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক
ভারতে ধরা পড়ল হাদির খুনিদের সহায়তাকারীরা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামিদের ভারতে পালিয়ে যেতে সহায়তাকারী দুই ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে মেঘালয় পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার এস এন নজরুল ইসলাম আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত ভারতীয় নাগরিকদের নাম পুর্তি ও সামী। তারা মূল ঘাতক ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী আলমগীর শেখকে মেঘালয়ের তুরা নামক স্থানে আশ্রয় ও পরিবহণ সুবিধা দিয়েছিল বলে জানা গেছে।
পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে, হাদি হত্যাকাণ্ডটি ছিল একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। ঘটনার পর ঘাতক ফয়সাল ও আলমগীর ঢাকা থেকে সিএনজিতে করে আমিনবাজার যায়। সেখান থেকে একাধিক গাড়ি পরিবর্তন করে তারা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে। মানবপাচারকারী ফিলিপ স্নাল ও সঞ্জয় এই দুই খুনিকে সীমান্ত পার করে মেঘালয়ে নিয়ে যায়। ডিএমপির তথ্যমতে, ভারতীয় নাগরিক পুর্তি আসামিদের রিসিভ করে এবং সামী নামের এক ব্যক্তির গাড়িতে করে তারা অজ্ঞাত স্থানে গা ঢাকা দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শরিফ ওসমান হাদি হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৬ জন আসামি এবং ৪ জন সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন, যা মামলার ভিতকে আরও শক্ত করেছে। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা কুশীলবদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং একে স্পষ্টভাবে একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই মাস্টারমাইন্ডদের নাম প্রকাশ করা না হলেও খুব দ্রুত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
ডিএমপি জানিয়েছে, মামলার তদন্ত কার্যক্রম এখন একেবারে শেষ পর্যায়ে। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে আদালতে এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেওয়া হবে। এদিকে, ভারতীয় দুই নাগরিক গ্রেপ্তার হওয়ার ফলে মূল ঘাতকদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে বলে আশা করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের অন্যতম মুখ ওসমান হাদির এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারের দাবিতে সরব রয়েছে পুরো দেশ।
আজ থেকেই বিচার বিভাগে নতুন যুগ
বাংলাদেশের বিচার বিভাগের অভিভাবক হিসেবে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান। এই মহতী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে শপথের সাক্ষী হন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধানগণ এবং সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। গত ২৩ ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আজ শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়েই তাঁর এই নিয়োগ কার্যকর হলো।
বিদায়ী প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ গতকাল শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) তাঁর ৬৭ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ায় অবসরে যান। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হওয়া বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর জন্ম ১৯৬১ সালের ১৮ মে। তাঁর পিতা প্রয়াত এ এফ এম আবদুর রহমান চৌধুরীও সুপ্রিম কোর্টের একজন খ্যাতিমান বিচারক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি যুক্তরাজ্য থেকে আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ে উচ্চতর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
বিচারক জীবনের দীর্ঘ চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ তিনি শীর্ষতম পদে আসীন হলেন। ১৯৮৫ সালে জেলা জজ আদালতে আইন পেশা শুরু করার পর ১৯৮৭ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৩ সালে অতিরিক্ত বিচারক এবং ২০০৫ সালে হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেলেও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে তিনি দীর্ঘকাল আপিল বিভাগে পদোন্নতি বঞ্চিত ছিলেন। অবশেষে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর গত ১২ আগস্ট তাঁকে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ২০২৮ সালের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পাবেন। তাঁর নিয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা আরও সুসংহত হবে বলে আশা করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। শপথ গ্রহণ শেষে নতুন প্রধান বিচারপতিকে অভিনন্দন জানান বিভিন্ন স্তরের বিচারক ও আইনজীবীরা। আগামীতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাই তাঁর সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে।
কর্মকর্তাদের পকেটে বইয়ের টাকা: নতুন বছরেও খালি হাতেই ক্লাসে ছাত্ররা
নতুন শিক্ষাবর্ষের সূচনালগ্নে শিক্ষার্থীদের জন্য এক হতাশাজনক খবর নিয়ে আসছে ২০২৬ সাল। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চরম অব্যবস্থাপনা এবং একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কারণে মাধ্যমিক স্তরের সাড়ে ১১ কোটি পাঠ্যবই এখনো ছাপা হয়নি। ফলে আগামী ১ জানুয়ারি বছরের প্রথম দিনে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ১ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী খালি হাতেই স্কুলে যেতে বাধ্য হবে। অভিযোগ উঠেছে, এনসিটিবির সদস্য ড. রিয়াদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি অসাধু চক্র সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে এবং বড় অঙ্কের কমিশন বাণিজ্যের লক্ষ্যে বই ছাপার কাজে ধীরগতি সৃষ্টি করেছে।
এনসিটিবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৬ সালের জন্য নির্ধারিত ৩০ কোটি বইয়ের মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের ২১ কোটি ৪৩ লাখ বই ছাপার কথা থাকলেও বছর শেষে সাড়ে ১১ কোটি বই ছাপার কাজ বাকি। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা অষ্টম শ্রেণিতে, যেখানে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মাত্র ৪.৫ শতাংশ বই ছাপা হয়েছে। প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি স্তরের বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছালেও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের বই পেতে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও প্রভাবশালী নেতাদের ঘনিষ্ঠ ১৫টি প্রেস মালিককে কাজ দেওয়ার মাধ্যমে এই অচলাবস্থার সূত্রপাত ঘটে। পরবর্তীতে দরপত্র বাতিল ও পুনঃদরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়ায় সিন্ডিকেটভুক্ত দুটি প্রেসকে অবৈধ সুবিধা দিতে কাগজের মানেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে।
তদন্তে জানা গেছে, কাগজের মান নিয়ে ‘বাস্টিং ফ্যাক্টর’ এবং ‘ওবিএ’ মুক্ত হওয়ার যে কঠোর শর্ত শুরুতে ছিল, পছন্দের দুটি প্রেসকে সুবিধা দিতে হঠাৎ করেই তা শিথিল করা হয়। প্রেস মালিকদের দাবি, এনসিটিবির ভাণ্ডার কর্মকর্তা আসাফ-উদ-দৌলা এবং রিয়াদ চৌধুরীর বলয়ে থাকা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ৫টি পেপার মিলের সাথে অঘোষিত চুক্তি করে প্রায় ৪৫ কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য করা হয়েছে। নিম্নমানের কাগজে বই ছাপার মাধ্যমে এই বিশাল অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এই চক্রের বিরুদ্ধে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিযুক্তদের বদলির চেষ্টা করলেও সচিব দপ্তরের এক কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে তা বারবার থমকে যাচ্ছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে এনসিটিবির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মাহবুবুল হক পাটওয়ারী স্বীকার করেছেন যে, দরপত্র জটিলতায় ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির বই পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে। তবে জানুয়ারি মাসে সব শিক্ষার্থী বই পাবে না—এ কথা এখন স্পষ্ট। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শিক্ষার এই মৌসুমে বইয়ের এমন আকাল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটাবে। এনসিটিবির এই কাঠামোগত দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে নতুন বছরের বই উৎসব এখন কেবলই একটি ধূসর স্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
গণমাধ্যমে যারা আগুন দেয় তারা সরকারেরও প্রতিপক্ষ: তথ্য উপদেষ্টা
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আজ ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গত ১৮ ডিসেম্বরের ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, সংবাদপত্রের নীতির সাথে মতভেদ থাকলে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবাদ হতে পারে, এমনকি চাইলে নতুন পত্রিকাও খোলা যেতে পারে, কিন্তু কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যারা এই ভয় দেখানোর রাজনীতি করে, তারা মূলত সরকার ও গণমাধ্যম—উভয়েরই অভিন্ন প্রতিপক্ষ।
রিজওয়ানা হাসান জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, নিউ এজ এবং যমুনা টিভিসহ একাধিক সংবাদমাধ্যমের সাহসিকতাপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি স্বীকার করেন যে, হামলা ঠেকাতে প্রশাসনের যতটুকু 'প্রো-অ্যাকটিভ' বা অগ্রণী ভূমিকা পালনের প্রয়োজন ছিল, সেখানে কিছুটা ঘাটতি ছিল। তবে সরকার এই ক্ষতির গুরুত্ব বুঝতে পারছে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনতে বদ্ধপরিকর। এছাড়া তিনি আগামী দেড় মাসের মধ্যে সম্প্রচার কমিশন ও প্রেস কমিশন অধ্যাদেশ জারি করার মাধ্যমে সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ তোলেন যে, প্রশাসনের কোনো একটি অংশ রহস্যজনকভাবে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানট ভবনে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটতে দিয়েছে। ১৮ ডিসেম্বরের সেই রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনিও হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সম্পাদকরা এই ঘটনাকে বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসের একটি ‘কালো দিন’ হিসেবে উল্লেখ করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সম্মেলনের আলোচনায় গণমাধ্যমকর্মীরা জানান যে, স্বাধীন সাংবাদিকতা বিপন্ন হলে গণতন্ত্রও ঝুঁকির মুখে পড়বে। সারা হোসেন, কামাল আহমেদ এবং ইলিয়াস হোসেনের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ গণমাধ্যমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেন। সব শেষে তথ্য উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেন যে, তথ্য কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হচ্ছে যাতে তথ্য প্রবাহ আরও স্বচ্ছ হয়। গণমাধ্যম এবং সরকার একে অপরের হাত ধরে কাজ করলে যেকোনো অপশক্তিকে রুখে দেওয়া সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।
৬ মাসের পরিকল্পনা ও এক মিনিটের অপারেশন: হাদি হত্যার নতুন রহস্য
রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে গত ১২ ডিসেম্বর প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করা হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানতে পেরেছে, এই মিশনের মূল হোতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ গত জুলাই মাসেই সিঙ্গাপুরে গিয়ে পলাতক কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছিলেন। নিজেকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে তিনি সিঙ্গাপুরে প্রবেশ করেন এবং মালয়েশিয়া সীমান্তে গিয়ে কিলিং মিশনের চূড়ান্ত পরিকল্পনা ও অর্থের জোগান নিশ্চিত করেন। ২৬ জুলাই দেশে ফেরার পর থেকেই তিনি উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন।
তদন্তে আরও উঠে এসেছে যে, হত্যাকাণ্ডের আগে ফয়সাল তাঁর স্ত্রী সাহেদা পারভীনকে একটি ব্যাংক হিসাবে ৩০ লাখ টাকা জমা রাখার কথা জানান এবং ইঙ্গিত দেন যে ভবিষ্যতে তাঁকে দেশ ছাড়তে হতে পারে। এমনকি হত্যার আগের রাতে সাভারের মধুমতি মডেল টাউনে প্রেমিকা মারিয়া আক্তারের সঙ্গে সময় কাটানোর সময় ফয়সাল দাম্ভিকতার সঙ্গে বলেছিলেন, ‘আগামীকাল এমন কিছু হবে যা পুরো দেশ কাঁপিয়ে দেবে।’ যদিও মারিয়া দাবি করেছেন, তিনি বড় কোনো অপরাধের কথা জানতেন না। হত্যার পর ফয়সাল ও মোটরসাইকেল চালক আলমগীরকে হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পী।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন যে, ফয়সালের বিদেশ ভ্রমণ এবং সীমান্তের দালাল ফিলিপ স্নালের সম্পৃক্ততা নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে র্যাব ও ডিবি অভিযান চালিয়ে এই ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তদন্তকারীদের ধারণা, হাদিকে রাজনৈতিক ময়দান থেকে সরিয়ে দিতেই এই সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এবং তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে দাফন করা হয়।
অন্যদিকে, ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে ইনকিলাব মঞ্চ। গতকাল জুমার নামাজের পর আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শাহবাগ মোড়কে ‘শহীদ ওসমান হাদি চত্বর’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সংগঠনের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের সাফ জানিয়েছেন যে, প্রকৃত খুনি ও নেপথ্যের কুশীলবদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের রাজপথের আন্দোলন থামবে না। বর্তমানে এই মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে এবং জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
এনআইডি পেতে তারেক রহমানের হাতে সময় মাত্র ২৪ ঘণ্টা
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তাঁর কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যাবতীয় দাপ্তরিক কাজ আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সম্পন্ন করেছেন। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন যে তাঁদের ভোটার করার বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আগামীকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। বর্তমানে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় নতুন করে ভোটার করার ক্ষেত্রে কমিশনের বিশেষ অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ে, যা এই বৈঠকের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আজ দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তারেক রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত হন। সেখানে এনআইডি উইংয়ের ডিজি এ এস এম হুমায়ুন কবীরের উপস্থিতিতে তাঁরা নিজেদের আঙুলের ছাপ, চোখের মণির (আইরিশ) প্রতিচ্ছবি এবং অন্যান্য বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করেন। এনআইডি উইংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তথ্য সংগ্রহের পর ডেটাবেজে এনআইডি নম্বর জেনারেট হতে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। অর্থাৎ, আগামীকাল বিকেলের মধ্যেই তারেক রহমানের হাতে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ আরও জানান যে ভোটার তালিকা আইন ২০০৯-এর ১৫ ধারা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক যোগ্য নাগরিককে যেকোনো সময় ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষমতা রাখে। সেই আইনি কাঠামোর আওতায় গুলশান এলাকার ভোটার হিসেবে তারেক রহমান ও জাইমা রহমানের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাসে থাকায় তাঁরা ছবিসহ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ভোটার হওয়া একটি বাধ্যতামূলক শর্ত, যা পূরণের লক্ষ্যেই এই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর হওয়ায় তারেক রহমানের হাতে সময় অত্যন্ত কম। তবে নির্বাচন কমিশনের নমনীয় মনোভাব এবং দ্রুত কাজের গতির কারণে মনে করা হচ্ছে যে তিনি সময়মতোই তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। ইতিমধ্যে বগুড়া-৬ আসন থেকে তাঁর জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে। তারেক রহমান ও জাইমা রহমানের এই ভোটার হওয়ার মধ্য দিয়ে জিয়া পরিবারের উত্তরসূরিদের প্রত্যক্ষ নির্বাচনী রাজনীতিতে ফেরার পথ সুগম হলো, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন এক উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে।
ঢাকার আকাশ যেন কুয়াশার গোলকধাঁধা: দিক হারিয়ে ৩ দেশে নামল ৮ বিমান
রাজধানী ঢাকা আজ ভোরে এক অভূতপূর্ব ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিয়মিত ফ্লাইট অপারেশনে। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে রানওয়েতে দৃশ্যমানতা বা ভিজিবিলিটি অত্যন্ত কমে যাওয়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে ৮টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটকে ঢাকায় নামতে দেওয়া সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে ৪টি ফ্লাইটকে ভারতের কলকাতা বিমানবন্দরে, ৩টি ফ্লাইটকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে এবং ১টি ফ্লাইটকে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক বিমানবন্দরে ডাইভার্ট বা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্র জানায় যে কুয়াশার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে পাইলটদের জন্য রানওয়ে শনাক্ত করা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। ডাইভার্ট হওয়া ফ্লাইটের যাত্রীদের সাময়িক অসুবিধা দূর করতে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসগুলো খাবার ও প্রয়োজনীয় হোটেল সুবিধা নিশ্চিত করছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার সাথে সাথেই এই ফ্লাইটগুলো পুনরায় ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হবে বলে কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছে। মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার এই অবস্থান আকাশপথের পাশাপাশি নৌ ও সড়ক যোগাযোগকেও আজ ধীরগতির করে দিয়েছে।
একই দিনে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা যশোরে শীতের এক ভয়ংকর রূপ দেখা গেছে। আজ সকালে যশোরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এটি গত ১৪ বছরের মধ্যে যশোরে রেকর্ডকৃত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। হাড়কাঁপানো এই ঠান্ডা আর উত্তরের হিমেল বাতাসের কারণে চুয়াডাঙ্গা, পাবনা ও নীলফামারীসহ সাতটি জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের উত্তাপ পৌঁছাতে না পারায় দিনের বেলাতেও মানুষের শরীরে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, বঙ্গোপসাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্প ও উত্তরের শীতল বায়ুর সংমিশ্রণে এই ঘন কুয়াশা তৈরি হয়েছে। আগামী অন্তত পাঁচ দিন কুয়াশার এই প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে এবং জানুয়ারির শুরুতে শীতের প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যশোরে ১৪ বছর পর এমন তীব্র শীত পড়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ ও গবাদিপশু। শীতবস্ত্রের অভাবে ছিন্নমূল মানুষদের কষ্ট এখন চরমে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন থেকে বিমান ও নৌ চলাচলকারী সংস্থাগুলোকে ফগ লাইট ব্যবহার এবং বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে দেশ: আসছে আরও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ
পৌষের প্রথম পক্ষ শেষ হওয়ার আগেই শীতের তীব্রতায় জবুথবু হয়ে পড়েছে দেশ। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে খুলনার যশোরে চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলের জনজীবন লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে। কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে আসায় গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চাঁদপুরের হাইমচর সংলগ্ন মেঘনা নদীতে দুটি যাত্রীবাহী লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০ জন যাত্রী, যাদের কয়েকজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের সাতটি জেলার ওপর দিয়ে মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। জেলাগুলো হলো—যশোর, চুয়াডাঙ্গা, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নীলফামারী। আজ সকালে চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি এবং গোপালগঞ্জে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে রাজধানী ঢাকাতেও শীতের দাপট বেড়েছে; গতকাল শুক্রবার মৌসুমের সর্বনিম্ন ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি রেকর্ড করা হলেও আজ কুয়াশার কারণে ঠান্ডার অনুভূতি আরও তীব্র হয়েছে। ৯৫ শতাংশ বাতাসের আর্দ্রতা নিয়ে রাজধানীসহ সারা দেশে কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন যে উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের প্রভাবে শীতের এই দাপট আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। জানুয়ারির শুরু থেকে সারা দেশে এক বা একাধিক তীব্র শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল কয়েক ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে যানবাহন চলাচলের পরামর্শ দিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে হিমালয় থেকে আসা কনকনে বাতাসের কারণে ছিন্নমূল মানুষ ও শিশুদের কষ্ট চরমে পৌঁছেছে।
শীতের এই আকস্মিক প্রকোপে বিশেষ করে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ এবং নদী অববাহিকার বাসিন্দারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে গ্রামগুলোতে অনেকেই আগুনের কুণ্ডলী জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক করেছে যে আগামী ৫ দিন তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে এবং কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে সূর্যের আলোকে বাধাগ্রস্ত করবে। এই অবস্থায় নদী পথে চলাচলকারী নৌযানগুলোকে ফগ লাইট ব্যবহার এবং বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে তিন আসামি আদালতে সব সত্য ফাঁস করলেন
রাজধানীর পল্টনে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আটক হওয়া প্রধান আসামির স্ত্রী ও তাঁর সহযোগীরা আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ৯ দিনের দীর্ঘ রিমান্ড শেষে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে তাঁরা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। এই মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ এবং দাউদের বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা এই তিনজনের জবানবন্দি পৃথকভাবে রেকর্ড করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
জবানবন্দি রেকর্ড করার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনায়েদ এবং কামাল উদ্দীন। জবানবন্দি শেষে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার পল্টন থানার আদালত সাধারণ নিবন্ধন শাখার পুলিশের উপ-পরিদর্শক রোকনুজ্জামান বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর পল্টন বক্স কালভার্ট রোড দিয়ে যাওয়ার সময় মোটরবাইকে আসা দুষ্কৃতিকারীরা ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল এবং পরে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি পুলিশ জানিয়েছে যে জবানবন্দিতে আসামিরা হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও নেপথ্যের কারণ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছেন। ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবেরের করা হত্যাচেষ্টা মামলাটি ওসমান হাদির মৃত্যুর পর এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন যে জুমার নামাজের পর প্রচারণার কাজ শেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাওয়ার পথে তাঁকে অনুসরণ করে ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে রাহুল দাউদ এই হামলা চালায়। ঘটনার পরপরই আসামিরা পালিয়ে গেলেও সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
আসামিরা দফায় দফায় রিমান্ডে থাকলেও শেষ পর্যন্ত আদালতের কাছে হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছেন। বিশেষ করে রাহুল দাউদের বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমার জবানবন্দিতে এই ষড়যন্ত্রের আরও গভীর কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে জানা গেছে। পুলিশ এখন পলাতক থাকা প্রধান আসামি রাহুল দাউদ ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ইনকিলাব মঞ্চের এই তরুণ নেতার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল, আসামিদের এই স্বীকারোক্তির পর মামলার বিচারে তা বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
পাঠকের মতামত:
- ২০২৬ সালে স্কুলে ছুটি কমলো ১২ দিন, দেখে নিন তালিকা
- কোরআন ও সুন্নাহই হবে আইনের ভিত্তি: মির্জা ফখরুল
- টাঙ্গাইল-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত, জমা পড়ল মনোনয়ন
- কোন মিউচুয়াল ফান্ডে দীর্ঘমেয়াদি সুযোগ তৈরি হচ্ছে
- রেকর্ড ডেট শেষে চার ট্রেজারি বন্ডের লেনদেনের সময়সূচি প্রকাশ
- দুই ব্যাংকের সব শেয়ার বাতিল, কার্যকর রেজোলিউশন আদেশ
- ইউনিয়ন ব্যাংক নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ডিএসই ডেইলি টার্নওভার: আজকের বাজার চিত্র
- ২৮ ডিসেম্বরের শেয়ারবাজারের সাপ্তাহিক পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- ২৮ ডিসেম্বরের ডিএসইতে দরপতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ২৮ ডিসেম্বরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- তাসনিম জারার পর এবার তাজনূভা: এনসিপিতে বিদ্রোহের আগুন থামছেই না
- ভারতে ধরা পড়ল হাদির খুনিদের সহায়তাকারীরা
- বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় রেট
- কেন শীতেই কিডনির ওপর বাড়তি চাপ পড়ে এবং বাঁচার উপায় কী?
- বৃত্তি পরীক্ষা শুরু আজ: হলে প্রবেশের আগে মানতে হবে ৯ নির্দেশনা
- ই-রিটার্ন দাখিলে আর বাধা নেই: বড় সুখবর দিল রাজস্ব বোর্ড আজ
- দিল্লির তাবেদারি ও ফ্যাসিবাদের ঠাঁই বাংলাদেশে হবে না: ডাকসু ভিপি
- জামায়াত নির্ভরযোগ্য মিত্র নয়: এনসিপি নেত্রী সামান্তা
- আজ থেকেই বিচার বিভাগে নতুন যুগ
- শীতে ত্বক উজ্জ্বল ও কোমল রাখার ৫টি সহজ উপায়
- এক নজরে টিভিতে আজকের খেলা: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
- আজকের স্বর্ণের দাম: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
- জামায়াত সমঝোতা নিয়ে মুখ খুললেন এনসিপি সদস্যসচিব
- সিরিয়ার সার্বভৌমত্বে ইসরায়েলের বড় আঘাত
- আজ রোববার ঢাকার রাজপথে যেসব রাজনৈতিক কর্মসূচি
- আজ ২৮ ডিসেম্বরের নামাজের সময়সূচি
- ভোটের আগে রাজনীতিতে চলছে ভাঙাগড়ার নতুন খেলা
- হাড়কাঁপানো শীতে জবুথবু দেশ: সূর্যের দেখা মেলাই এখন ভার
- কর্মকর্তাদের পকেটে বইয়ের টাকা: নতুন বছরেও খালি হাতেই ক্লাসে ছাত্ররা
- অত্যন্ত জটিল ও সংকটময় মুহূর্তে খালেদা জিয়া
- ব্যক্তিগত দায় বনাম প্রাতিষ্ঠানিক দায়: দায়মুক্তির এক রাজনৈতিক সংস্কৃতি
- ৯ কোটির মুস্তাফিজকে নিয়ে বিপাকে শাহরুখের দল: উত্তপ্ত মধ্যপ্রদেশ
- স্ট্রেস থেকে উচ্চ রক্তচাপ: হার্ট অ্যাটাক রুখতে মেনে চলুন ৫ নিয়ম
- বিদেশের মাটিতে বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষা: ২০২৬ সালের জন্য সেরা স্কলারশিপ
- এনসিপি কি দুই ভাগ হচ্ছে: জামায়াত জোট ঠেকাতে ৩০ নেতার কঠোর বার্তা
- গোপালগঞ্জের নৌকার ১৭ মাঝি এখন ধানের শীষের সারথি
- ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা: আজই দেখে নিন রুটিন
- কেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন তাসনিম জারা: নিজেই জানালেন নেপথ্য কারণ
- চট্টগ্রামের ৩ আসনে বিএনপির চূড়ান্ত চমক
- গণমাধ্যমে যারা আগুন দেয় তারা সরকারেরও প্রতিপক্ষ: তথ্য উপদেষ্টা
- ৬ মাসের পরিকল্পনা ও এক মিনিটের অপারেশন: হাদি হত্যার নতুন রহস্য
- পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের জন্য বড় সুখবর
- এনআইডি পেতে তারেক রহমানের হাতে সময় মাত্র ২৪ ঘণ্টা
- গণঅধিকার পরিষদ ছেড়ে বিএনপিতে রাশেদ খাঁনের নাটকীয় যোগদান
- আবহাওয়া অফিসের স্বস্তির বার্তা: সন্ধ্যার পূর্বাভাসে মিলল নতুন সংকেত
- সংসদ নির্বাচনে লড়তে আর বাধা নেই তারেক রহমানের
- বিপিএলের মাঠেই ঢাকা ক্যাপিটালসের সহকারী কোচের মৃত্যু
- অজান্তেই পিত্তথলিতে পাথর জমাচ্ছে আপনার এই ৫টি ভুল অভ্যাস
- শীতে বাড়ছে মাইগ্রেনের তীব্র যন্ত্রণা: বাঁচার উপায় জানালেন চিকিৎসকরা
- আজ ঢাবির ভর্তি যুদ্ধ: আছে এমআইএসটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খবর
- আজকের স্বর্ণের দাম: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
- নারী-সঙ্গীর হাতে পুরুষের যৌনাঙ্গ ছিন্নকরণ: বাংলাদেশে অবহেলিত এক সহিংসতার সংকট
- আজ থেকে কার্যকর স্বর্ণের নতুন মূল্য
- আজ টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- স্বর্ণের বাজারে আগুন: আজ ইতিহাসের দামী সোনা কিনবেন ক্রেতারা
- বাবার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে নীরবে কেঁদেছেন তারেক রহমান
- পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের জন্য বড় সুখবর
- আজকের স্বর্ণের দাম: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
- আজ থেকে শুরু বিপিএলের দ্বাদশ আসর, জানুন পূর্ণাঙ্গ সময়সূচী
- বাংলা দখল করতে এলে দিল্লি কেড়ে নেব: মমতা
- জামায়াত-চরমোনাই দ্বিমুখী লড়াই: সংকটে ইসলামী জোট
- আজ ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকবে যেসব এলাকাই
- নির্বাচন ও রমজানের কবলে ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষা: নতুন তারিখ কবে?
- জামায়াত ও চরমোনাই পীরের দলের বড় টানাপোড়েন,অস্থির জোট








