আখাউড়ায় পছন্দের ঠিকাদারকে বিনা টেন্ডারে কাজ দেওয়ার অভিযোগ

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২৯ ০৯:৩৪:১০
আখাউড়ায় পছন্দের ঠিকাদারকে বিনা টেন্ডারে কাজ দেওয়ার অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে টেন্ডার বা কোটেশন প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে ১০ লাখ টাকার ‘সৌন্দর্যবর্ধন’ প্রকল্প গোপনে পছন্দের ঠিকাদারকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কেল্লা শহীদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে আখাউড়া পৌর শহরের নারায়ণপুর বাইপাস এলাকায়। এতে “আই লাভ আখাউড়া” লেখা স্থাপনসহ বিভিন্ন সরকারি অফিস ও দর্শনীয় স্থানের নাম উল্লেখপূর্বক দিক নির্দেশনা স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। কাজটি এখন চলমান এবং কয়েকটি পিলারের ফাউন্ডেশনের ঢালাই ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

স্থানীয় ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি কিংবা পৌরসভা ভবনের নোটিশ বোর্ডে কোটেশন আহ্বান ছাড়াই এই প্রকল্পের কাজ প্রদান করা হয়েছে, যা সরকারী ক্রয় নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। অভিজ্ঞ ঠিকাদার মোহাম্মদ আলী ভূইয়া, যিনি ৪০ বছর ধরে ঠিকাদারি করছেন, বলেন,

“আমি কখনো এই কাজের কোনো টেন্ডার বা কোটেশন দেখিনি। নোটিশ বোর্ডে কোনো তথ্য নেই। এটা পুরোপুরি অস্বচ্ছভাবে করা হয়েছে।”

আরেক ঠিকাদার রাসেল মিয়া জানান,

“কীভাবে ‘কেল্লা শহীদ এন্টারপ্রাইজ’ কাজ পেল, কেউ জানে না। তারা বিতর্কিত ঠিকাদার, তবুও পৌরসভা তাদের হাতে কাজ তুলে দিয়েছে।”

আখাউড়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. তানভীর হোসেন বলেন,

“আমরা আরপিও (Request for Proposal) মাধ্যমে কাজটি দিয়েছি। সামনে বর্ষা, তাই দ্রুত কাজ শুরু করেছি। আরপিও হলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি লাগে না।”

তবে, প্রকল্পে নিযুক্ত ঠিকাদার ইয়াছিন মোল্লা জানিয়েছেন,

“আমাকে অফিসিয়ালি কোনো কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। তবে, আমি রড, সিমেন্ট, বালু সরবরাহ করছি।”

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক জি.এম. রাশেদুল ইসলাম জানান,

“আমি নতুন এসেছি। কাজটি নিয়ে বিতর্ক দেখা দেওয়ায় আমরা ঠিকাদার পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভবিষ্যতে বিতর্কিত কোনো ঠিকাদারকে এমন কাজ করতে দেওয়া হবে না।”

এই ঘটনা স্থানীয় সরকার পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাবকে সামনে এনেছে। সরকারি অর্থে বাস্তবায়নকৃত প্রকল্পে টেন্ডার বা কোটেশন প্রক্রিয়া না মানা উপজাতীয় সরকার (Procurement) নীতিমালার পরিপন্থী, যা ভবিষ্যতে আইনগত ও প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি করতে পারে। স্থানীয় ঠিকাদার, নাগরিক সমাজ ও এলাকাবাসী দাবি তুলেছেন যে, প্রকল্পে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত এবং যারা দায়িত্বে থেকে অনিয়ম করেছেন, তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত। তারা আরো বলেন, এই ধরনের অনিয়ম বন্ধ না হলে আখাউড়া পৌরসভার উন্নয়ন কার্যক্রমে জনগণের আস্থা নষ্ট হবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ