ঠাকুরগাঁওয়ে দলিল লেখক সমিতির বিরুদ্ধে কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

সত্য নিউজ: ঠাকুরগাঁও সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল লেখক সমিতির বিরুদ্ধে বছরে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি এবং সাধারণ জনগণকে হয়রানির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। জমি রেজিস্ট্রির সময় সমিতির পক্ষ থেকে জোরপূর্বক নির্ধারিত হারে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এমনকি বাংলাদেশের নিবন্ধন অধিদপ্তর থেকে লিখিতভাবে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এই চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি।
ভুক্তভোগীরা জানান, দলিল রেজিস্ট্রির সময় সমিতির সদস্যরা তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। কেউ কেউ জানিয়েছেন, একটি দলিলের জন্য ২,০০০ থেকে শুরু করে ৮,০০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়েছে। টাকা না দিলে দলিলের ফাইল ছাড়েন না দলিল লেখকরা। সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়াও অফিস খরচ ও সমিতির চাঁদার নামে এসব অর্থ নেওয়া হয়, যা সাধারণ জনগণের জন্য বিশাল ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ সরকার স্থানীয় একটি রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থেকে দীর্ঘদিন ধরে সমিতির চেয়ার আঁকড়ে ধরে রেখেছেন এবং বেপরোয়াভাবে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন। সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তারাও তার প্রভাবের বাইরে যেতে পারছেন না, ফলে পুরো অফিস কার্যক্রমই একপ্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে সভাপতি ওয়াদুদ সরকার কোনো মন্তব্য না করে ব্যস্ততা দেখিয়ে এড়িয়ে যান। তবে সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক দাবি করেন, সমিতির নামে কোনো চাঁদাবাজি হয় না, বরং তারা সেবার বিনিময়ে পারিশ্রমিক হিসেবে অর্থ গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, “এই অর্থ সমিতির ফান্ডে জমা হয় এবং সদস্যদের বিভিন্ন প্রয়োজনে সাহায্য করা হয়।”
সাব-রেজিস্ট্রার রেজাউল করিম বলেন, “কোনোভাবেই জিম্মি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা যাবে না। আমরা বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছি এবং অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, কেউ যদি লিখিতভাবে অভিযোগ করে, তবে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শহিদুল আলম ঝিনুক এক লিখিত চিঠিতে দেশের সব সাব-রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রারদের স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, কোনো সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যেন দলিল লেখক সমিতির ব্যানারে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় না হয়। এছাড়া আইন অনুযায়ী, দলিল লেখার নির্ধারিত ফি তালিকাভুক্ত করে অফিস প্রাঙ্গণে প্রকাশ করারও নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু ঠাকুরগাঁওয়ে এই নিয়ম মানা তো দূরের কথা, পুরো অফিস চক্রটি একটি অবৈধ অর্থনৈতিক দখলের চিত্র তুলে ধরছে।
সাধারণ জনগণের দাবি, এই জিম্মিদশা থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হোক এবং যারা এ ধরনের চাঁদাবাজিতে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। সরকারি অফিসে এমন দুর্নীতির ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- শেয়ারবাজারে এল বড় সুখবর!
- স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতার বাড়িতে সেনা অভিযান:উদ্ধার ইয়াবা ও ধারালো অস্ত্র!
- তিন মাসেই যে ১০ বেসরকারি ব্যাংকে ৩২ হাজার কোটি টাকার আমানত বৃদ্ধি!
- তারেক রহমানের দেশেফেরার সম্ভাব্য সময় জানালেনমির্জা ফখরুল
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- সাক্ষাৎ চাইলেন শেখ হাসিনার ভাগ্নি, মুখ ফিরিয়ে নিলেন ড. ইউনূস
- ডিএসইতে সাধারণ বীমা খাতের প্রান্তিক বিশ্লেষণ:মুনাফা বৃদ্ধির শীর্ষে কারা?
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!