শীতে শিশু অসুস্থ হচ্ছে? কোন রোগ কীভাবে চিনবেন

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১১ ১০:৩৯:০৪
শীতে শিশু অসুস্থ হচ্ছে? কোন রোগ কীভাবে চিনবেন
ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে শীতের তীব্রতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকায় শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। চিকিৎসকদের মতে, শীতের শুরুতেই সাধারণ সর্দি–কাশি, অ্যালার্জি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, ব্রংকিওলাইটিস এবং মৌসুমি ফ্লুর মতো রোগ বেশি দেখা দেয়। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল থাকায় শিশু এবং প্রবীণরা এসব রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন। উপসর্গগুলো একাধিক রোগের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় অভিভাবকরা অনেক সময় বুঝে উঠতে পারেন না রোগটি ভাইরাসজনিত নাকি অ্যালার্জিজনিত। সঠিক ব্যবস্থাপনা না হলে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন জানিয়েছেন, শীতকালীন রোগগুলোর বেশিরভাগই ভাইরাসের সংক্রমণ, আর্দ্রতা কমে যাওয়া, শীতল ও শুষ্ক বাতাস এবং পরিবেশগত অ্যালার্জেনের প্রভাবে হয়। এসব রোগের লক্ষণ আলাদা হলেও সাধারণ মানুষের পক্ষে সেগুলো আলাদা করে বোঝা সবসময় সহজ হয় না।

সাধারণ ঠান্ডা: সবচেয়ে প্রচলিত সমস্যা

শীতকালে শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় সাধারণ ঠান্ডা। এই অবস্থায় নাক দিয়ে অনবরত পানি পড়া, হালকা জ্বর, ক্ষুধামন্দা এবং গলাব্যথা দেখা দেয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, নাক বন্ধ থাকলে স্যালাইন ড্রপ সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে বাল্বসাকার ব্যবহার করে নাক পরিষ্কার করতে হয়। জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল দেওয়া যেতে পারে। কুসুম গরম পানি, স্যুপ কিংবা মধু মিশ্রিত তরল খাবার সাময়িক উপশম দেয়।

কোল্ড অ্যালার্জি: শীতের হাওয়াই বাড়ায় সংবেদনশীলতা

অনেক শিশুই শীত পড়লেই বারবার ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়। এ অবস্থাকে চিকিৎসকেরা বলেন কোল্ড অ্যালার্জি বা শীতজনিত সংবেদনশীলতা। শুষ্ক আবহাওয়া, কম আর্দ্রতা এবং তীব্র ঠান্ডা বাতাস অ্যালার্জি শুরু হওয়ার প্রধান কারণ। ফলে হাঁচি, কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞরা জানান, মাস্ক ব্যবহার করলে ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শ কমে এবং উপসর্গও নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রয়োজনে সালবিউটামল ইনহেলার বা দীর্ঘমেয়াদে মন্টিলুকাস্ট ট্যাবলেট দেওয়া যেতে পারে।

অ্যালার্জিক রাইনাইটিস: মৌসুমি অ্যালার্জির বড় কারণ

অ্যালার্জিক রাইনাইটিস শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের মধ্যেই ব্যাপকভাবে দেখা যায় এবং রোগটি শীতের পাশাপাশি বসন্ত ও গ্রীষ্মেও হতে পারে। ফুল, গাছের পরাগ, ঘাস, ছত্রাকের স্পোর বা ধুলাবালির সংস্পর্শে এ রোগের উপসর্গ বাড়ে। এতে চোখে চুলকানি, ঘন হাঁচি, নাক বন্ধ, সারা শরীরে অবসাদ এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যালার্জিক রাইনাইটিসে আক্রান্ত প্রায় ৩০ শতাংশ শিশুই পরবর্তীতে হাঁপানিতে ভোগে।

হাঁপানি: শীতে আক্রান্তের সংখ্যা কয়েকগুণ বাড়ে

চিকিৎসকদের ভাষায় শিশুদের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসযন্ত্রের রোগ হলো হাঁপানি বা অ্যাজমা। শীতকালে ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস, ধুলাবালি, ধোঁয়া এবং অ্যালার্জেনের প্রভাবে রোগের উপসর্গ বেড়ে যায়। হাঁচি, শ্বাসকষ্ট, ঘনঘন কাশি এবং শ্বাস নেওয়ার সময় বাঁশির মতো সাইসাই শব্দ এ রোগের প্রধান বৈশিষ্ট্য। ধুলাবালি, সিগারেটের ধোঁয়া, তেলাপোকা কিংবা ঠান্ডা হাওয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখা এ রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রধান ভূমিকা রাখে।

ব্রংকিওলাইটিস: RSV ভাইরাসে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট

দুই মাস থেকে দুই বছরের শিশুদের মধ্যে ব্রংকিওলাইটিসের প্রকোপ শীতকালে বেড়ে যায়। বিশেষত তিন থেকে নয় মাস বয়সি শিশু সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। রেসপিরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাস (RSV) ছাড়াও রাইনো বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে শ্বাসনালির প্রান্তিক অংশে মিউকাস জমে গিয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। নাক দিয়ে পানি পড়া, কাশি, বুকের খাঁচা ডেবে যাওয়া, দ্রুত শ্বাস–প্রশ্বাস এবং দুধ খেতে না পারা এ রোগের লক্ষণ। গুরুতর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে जल्दी চিকিৎসা নিতে হবে।

চিকিৎসা: এন্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই

অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন বলেন, শীতকালীন এসব রোগের বেশিরভাগই ভাইরাসজনিত হওয়ায় এন্টিবায়োটিক মোটেই প্রয়োজন হয় না। বরং

• নাক–গলা পরিষ্কার রাখা

• জ্বরে প্যারাসিটামল

• নেবুলাইজার বা ব্রঙ্কোডাইলেটর প্রয়োগ

• পর্যাপ্ত তরল ও পুষ্টিকর খাদ্য

সবচেয়ে কার্যকর উপায়। শিশুদের অতিরিক্ত গরম কাপড় পরানোর পাশাপাশি বাতাস চলাচল করে এমন উষ্ণ ঘরে রাখা উচিত।

মৌসুমি ফ্লু: শীতেই বাড়ছে সংক্রমণ

ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ও বি ভাইরাসে মৌসুমি ফ্লু হয় এবং শীতকালে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হঠাৎ জ্বর, শুকনো কাশি, দেহব্যথা, দুর্বলতা, গলার ব্যথা এবং সর্দি এ রোগের প্রধান লক্ষণ। সাধারণত ১০–১৪ দিনের মধ্যে সেরে যায়। তবে গর্ভবতী নারী, কম বয়সি শিশু, বয়স্ক এবং ডায়াবেটিস–হৃদরোগ–ফুসফুস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জটিলতা বেশি দেখা দেয়।

ফ্লু প্রতিরোধে টিকা সবচেয়ে কার্যকর

বিশেষজ্ঞরা বলেন, বছরে একবার ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা নেওয়াই মৌসুমি ফ্লু প্রতিরোধের সবচেয়ে শক্তিশালী উপায়। দেশেও এখন নিরাপদ ও কার্যকর ভ্যাকসিন পাওয়া যায়।


শীতে চুল পড়া কমাতে ঘরোয়া ৫টি দারুন উপায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১১ ১০:৩৫:৪০
শীতে চুল পড়া কমাতে ঘরোয়া ৫টি দারুন উপায়
ছবি: সংগৃহীত

শীতের শুষ্ক আবহাওয়া অনেকের চুল পড়া বাড়িয়ে তোলে। মাথার ত্বক শুকিয়ে যাওয়া, খুশকি বৃদ্ধি, রক্তসঞ্চালন কমে যাওয়া ও পুষ্টির ঘাটতির কারণে চুল দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে নিয়মিত কিছু প্রাকৃতিক ট্রিটমেন্ট ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করলে শীতে চুল পড়া উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। নারকেল ও ক্যাস্টর অয়েল ম্যাসাজ থেকে অ্যালোভেরা জেল, আমলকী–লেবুর প্যাক, দই–বেসনের মাস্কসহ বাড়িতে তৈরি বেশ কিছু উপায় চুলকে ভেতর থেকে মজবুত করে এবং শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে।

চুলের যত্নে কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার

১. নারকেল বা ক্যাস্টর অয়েল ম্যাসাজ

হালকা গরম নারকেল বা ক্যাস্টর অয়েল স্ক্যাল্পে আলতোভাবে মালিশ করলে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। এতে চুলের গোড়া শক্ত হয় ও নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।

২. অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরা জেল শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় মাথার ত্বকে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা ধরে রাখে। পাশাপাশি খুশকি কমিয়ে স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

৩. আমলকী ও লেবুর মাস্ক

দুই চামচ আমলকী গুঁড়া ও লেবুর রস মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করুন। চুলে লাগিয়ে এক ঘণ্টা পরে ধুয়ে ফেললে চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং শীতজনিত চুল পড়া কমে যায়।

৪. দই–বেসন হেয়ার মাস্ক

দই, বেসন ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে বানানো মাস্ক চুলে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। শুষ্কতা দূর হয় এবং চুল হয় আরও কোমল ও উজ্জ্বল।

৫. পেঁয়াজের রস

অনেকের মতে, পেঁয়াজের রসে থাকা সালফার স্ক্যাল্পে রক্তসঞ্চালন বাড়ায় এবং চুল পড়া কমাতে সহায়ক। সপ্তাহে ১–২ দিন ব্যবহার করা যেতে পারে।

খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন পরিবর্তন

প্রোটিন ও ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার

চুলের মূল উপাদান প্রোটিন। তাই ডিম, মাছ, মাংস, ডাল, বাদাম, দুধ, পালং শাক, ব্রকলি এবং বিভিন্ন ফল–সবজি নিয়মিত খাবারে রাখলে চুলের শক্তি বাড়ে।

স্বাস্থ্যকর ফ্যাট

আখরোট, চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্সসিড এবং সামুদ্রিক মাছের ওমেগা–৩ চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগায়।

স্ট্রেস কমানো

ধ্যান, হালকা ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে, যা হরমোনগত কারণে হওয়া চুল পড়া হ্রাস করে।

গরম পানি ও অতিরিক্ত হিট স্টাইলিং এড়িয়ে চলুন

খুব গরম পানি চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে দেয়। তাই কুসুম গরম পানি সবচেয়ে ভালো। বারবার স্ট্রেটনার বা ব্লো ড্রায়ার ব্যবহারও কমাতে হবে।

অতিরিক্ত টিপস

• ঘুমানোর আগে বা চুল ধোয়ার পূর্বে চুল আলতোভাবে আঁচড়ে জটমুক্ত করুন।

• সালফেটবিহীন হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

• অতিরিক্ত চুল পড়লে চর্মবিশেষজ্ঞ বা ট্রাইকোলজিস্টের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে মিনোক্সিডিল বা অন্যান্য ক্লিনিক্যাল ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে।


শীতে খুশকি বাড়ছে? লেবুপাতা হতে পারে সহজ সমাধান

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১১ ০৯:৫১:১৪
শীতে খুশকি বাড়ছে? লেবুপাতা হতে পারে সহজ সমাধান
ছবি: সংগৃহীত

শীতের শুরুতেই অনেকেই মাথার ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা অনুভব করেন। বাড়তি চুলকানি, আঁচড়ালেই খুশকির ঝরঝর পতন, সঙ্গে চুল পড়ার প্রবণতা সব মিলিয়ে শীতকাল হয়ে ওঠে উদ্বেগের সময়। এ অবস্থায় প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে লেবুপাতা উল্লেখযোগ্য উপকার এনে দিতে পারে। এতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড, অ্যান্টি–অক্সিড্যান্ট এবং এসেনশিয়াল অয়েল মাথার ত্বকের খুশকি কমানোর পাশাপাশি চুলকে করে আরও সুস্থ ও প্রাণবন্ত।

লেবুপাত্র উপকারিতা

১. অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ

লেবুপাতে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান মাথার ত্বকে জমে থাকা ফাঙ্গাস কমাতে সাহায্য করে। যেহেতু খুশকির মূল কারণ প্রায়ই ফাঙ্গাল গ্রোথ, তাই নিয়মিত ব্যবহারে এটি খুশকি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

২. অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা

লেবুপাতা তেলতেলে স্ক্যাল্পের জন্য প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি অতিরিক্ত তেল শোষণ করে খুশকি বৃদ্ধির সহায়ক পরিবেশকে ব্যাহত করতে পারে।

৩. চুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনে

লেবুপাতে স্ক্যাল্প পরিষ্কার থাকে এবং চুলে ফিরে আসে স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য। চুলের গোড়া থেকে অগ্রভাগ পর্যন্ত ময়লা দূর হয়, ফলে চুল হয় নরম ও মসৃণ।

৪. স্ক্যাল্পের পিএইচ ভারসাম্য রক্ষা

স্ক্যাল্পের স্বাভাবিক পিএইচ নষ্ট হয়ে গেলে খুশকি দ্রুত বাড়তে থাকে। লেবুপাতা সেই ভারসাম্য পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে, যা চুল ও স্ক্যাল্পকে রাখে স্বাস্থ্যকর।

যেভাবে ব্যবহার করবেন

১. লেবুপাতা রিন্স

চুলে চমক আনার পাশাপাশি খুশকি কমাতে এই রিন্স সহজ ও কার্যকর।

উপকরণ: এক মুঠো লেবুপাতা, তিন কাপ পানি

প্রণালী: পানি ফুটে উঠলে তাতে লেবুপাতা দিন। পানি অর্ধেকে নেমে আসা পর্যন্ত জ্বাল দিন। ঠান্ডা হলে শ্যাম্পুর পর এই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। আবার বাড়তি পানি দিয়ে ধোয়ার প্রয়োজন নেই।

২. লেবুপাতা হেয়ার প্যাক

খুশকি ছাড়া চুল পড়া বা ত্বকের জ্বালাভাবেও এই প্যাক উপকারী।

উপকরণ: ৫–৬টি লেবুপাতা, ১–২ চামচ নারকেল তেল বা টক দই

প্রণালী: লেবুপাতা বেটে তেল বা দই মেশান। মাথার ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে ২০–৩০ মিনিট রেখে দিন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ায় লেবুপাতা চুল ও মাথার ত্বকের জন্য নিরাপদ হলেও কেউ চাইলে ব্যবহারের আগে অ্যালার্জি টেস্ট করে নিতে পারেন।


কেন রাত ৮টার পর খাবার খাওয়া হজমে সমস্যা তৈরি করে

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১০ ১৯:৪১:০৬
কেন রাত ৮টার পর খাবার খাওয়া হজমে সমস্যা তৈরি করে
ছবি: সংগৃহীত

রাত ৮টার পর খাবার গ্রহণ করলে শরীরের স্বাভাবিক হজমপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এবং বিভিন্ন পाचन–সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের বিপাকক্রিয়া স্বাভাবিকভাবেই ধীর হয়ে পড়ে, ফলে খাবার দ্রুত ভাঙতে পারে না। এর ফলে এসিডিটি, গ্যাস, বুকজ্বালা, অস্বস্তি এমনকি ওজন বৃদ্ধির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঘুমের সময় শরীর যখন বিশ্রামের প্রস্তুতি নেয়, তখন অপরিপাক খাবার পাকস্থলীতে থেকে যাওয়ায় অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা GERD হওয়ার প্রবণতাও বাড়ে।

কেন ঘটে এই সমস্যা?

বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়

রাতের দিকে শরীরের মেটাবলিক রেট কমে, তাই ভারী বা তেল–চর্বিযুক্ত খাবার হজম হতে বেশি সময় লাগে। এতে পেটে চাপ বাড়ে এবং হজমে অস্বস্তি দেখা দেয়।

অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ঝুঁকি বাড়ে

খাওয়ার পরপরই শুয়ে গেলে পাকস্থলীর অ্যাসিড সহজেই খাদ্যনালীতে উঠে আসে। এতে বুকজ্বালা, টক ঢেকুর এবং অ্যাসিডিটির মাত্রা বৃদ্ধি পায়।

পাকস্থলীতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে

দেরিতে খাওয়া খাবার দীর্ঘ সময় পেটে থেকে গ্যাস ও বদহজম সৃষ্টি করে। এতে পেট ফাঁপা কিংবা জ্বালাপোড়া অনুভূত হতে পারে।

ওজন বৃদ্ধি ও ঘুমের ব্যাঘাত

দেহ অপরিপাক খাবারকে সহজেই চর্বিতে রূপান্তরিত করে। একইসঙ্গে অস্বস্তির কারণে গভীর ঘুম ব্যাহত হয়, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে।

কী করলে উপকার মিলবে?

হালকা খাবার বেছে নিন

রাতে খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হলে ভাত, ভাজাপোড়া বা মশলাদার খাবার না খেয়ে সহজপাচ্য ও হালকা খাবার খান।

ঘুমানোর আগে অন্তত ২-৩ ঘণ্টার বিরতি

খাবার ও ঘুমের মধ্যে সময় রাখলে শরীর খাবার আংশিকভাবে হলেও হজম করতে পারে, ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের ঝুঁকি কমে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, রাতের খাবারের সময় এগিয়ে আনা এবং খাবারের ধরনের প্রতি সচেতন হওয়া হজমপ্রক্রিয়া সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


শীতে রোগ প্রতিরোধে ১০ সুপারফুড

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১০ ১১:২৭:৩৮
শীতে রোগ প্রতিরোধে ১০ সুপারফুড
ছবি: সংগৃহীত

শীতের মওসুমে সাধারণত সর্দি, কাশি, জ্বর, গলা খুসখুসে হওয়া, ফ্লু কিংবা অন্যান্য সংক্রামক রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। বিশেষত তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে শরীরের বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে পড়ে এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সহজেই দুর্বল হয়ে যায়। ফলে সামান্য আবহাওয়ার পরিবর্তনেই অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতের সময়ে খাদ্যতালিকায় নির্দিষ্ট কিছু পুষ্টিকর খাবার যুক্ত করলে শরীর স্বাভাবিকভাবেই সংক্রমণ প্রতিরোধে সক্ষমতা অর্জন করে। ভিটামিন সি, অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, প্রোবায়োটিকস এবং প্রদাহরোধী উপাদানসমৃদ্ধ খাবার এ সময়ে শরীরের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হিসেবে কাজ করে।

এই প্রেক্ষাপটেই পুষ্টিবিদরা শীতকালে ইমিউনিটি বাড়াতে বিশেষ গুরুত্ব দেন কয়েকটি ‘সুপারফুড’-এর ওপর, যেগুলো নিয়মিত খেলে শরীর স্বাভাবিকভাবেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে, ভাইরাস–ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ কমে এবং সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়।

১. কমলালেবু ও অন্যান্য সাইট্রাস ফল

সাইট্রাস জাতীয় ফল দীর্ঘদিন ধরেই শীতের রোগ মোকাবিলার সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎস। এসব ফলে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরে শ্বেত রক্তকণিকা তৈরির গতি বাড়ায় এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সকালে খালি পেটে কমলালেবু বা লেবুর পানি পান করলে শরীর দ্রুত অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট শোষণ করে এবং শক্তি বাড়ায়।

২. আদা

আদার অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য প্রদাহ কমায়, গলা ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করে এবং শ্বাসযন্ত্রে জমে থাকা শ্লেষ্মা দূর করে। শীতের সকালে আদা–চা শরীর গরম রাখার পাশাপাশি সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। আদায় থাকা জিঞ্জারল নামক উপাদান রোগ প্রতিরোধ কোষগুলোকে সক্রিয় রাখে।

৩. রসুন

প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে রসুনের সুনাম বহু পুরোনো। এতে অ্যালিসিন নামক রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে কার্যকর। নিয়মিত রসুন খেলে রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকে, শ্বাসযন্ত্র শক্তিশালী হয় এবং সর্দি–কাশির প্রকোপ কমে যায়।

৪. হলুদ

হলুদে থাকা কারকিউমিন শক্তিশালী অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা শীতকালে শরীরের রোগ প্রতিরোধ কোষগুলোকে সক্রিয় রাখে। ‘হলুদ–দুধ’ বা গরম পানিতে হলুদ মিশিয়ে খেলে শরীর গরম থাকে এবং ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

৫. পালং শাক ও অন্যান্য সবুজ শাকসবজি

পালং শাক, কলমি শাক, লাল শাকসহ সব ধরনের সবুজ শাকে ভিটামিন এ, সি, কে এবং আয়রন–ম্যাগনেসিয়াম সহ নানা খনিজ রয়েছে। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে, রক্তশূন্যতা দূর করে এবং শক্তি বাড়ায়। শীতকালে নিয়মিত সবুজ শাক খেলে শরীর সহজে ঠান্ডা–জ্বরের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকে।

৬. দই

দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিকস অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে, যা শরীরের সামগ্রিক ইমিউন সিস্টেমকে কার্যকর রাখে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ৭০%ই নির্ভর করে স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের ওপর। তাই শীতে প্রতিদিন দই খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

৭. বাদাম ও বীজ

কাঠবাদাম, কাজু, চিনাবাদাম, সূর্যমুখীর বীজ, কুমড়ার বীজ—এসব খাবারে থাকে ভিটামিন ই, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, জিঙ্ক ও ম্যাগনেশিয়াম। এগুলো কোষ মেরামত করে, শরীরে প্রদাহ কমায় এবং ভাইরাস প্রতিরোধে সহায়ক হয়।

৮. বেরি জাতীয় ফল

ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি এসব বেরিতে উচ্চমাত্রার অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি–র‌্যাডিক্যাল দূর করে। শীতকালে নিয়মিত বেরি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্রুত বাড়ে এবং ত্বকও সতেজ থাকে।

৯. মিষ্টি আলু

মিষ্টি আলুতে থাকা বিটা–ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা শ্লেষ্মা ঝিল্লিকে মজবুত করে এবং ফুসফুসকে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। এটি শীতের শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে।

১০. আনারস

আনারসে থাকা ব্রোমেলাইন এনজাইম শরীরের প্রদাহ কমায়, গলা ব্যথা ও সংক্রমণ নিরাময়ে ভূমিকা রাখে। শীতের সকালে আনারস খেলে শরীরের ইমিউন সাড়া আরও উন্নত হয়।


কোন সবজি অজান্তেই বাড়িয়ে দেয় ওজন? জানুন এখনই

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৯ ১৭:৪৩:৩৭
কোন সবজি অজান্তেই বাড়িয়ে দেয় ওজন? জানুন এখনই
ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় সবজি সাধারণত শীর্ষস্থানীয় হলেও সব সবজিই সমানভাবে ক্যালরি নিয়ন্ত্রিত নয়। বিশেষত যেসব সবজিতে শর্করা এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি, সেগুলো অল্প বেশি পরিমাণে খেলেই দেহে অতিরিক্ত ক্যালরি জমতে শুরু করে। ফলস্বরূপ, নিয়মিত খাওয়া হলেও অজান্তেই বাড়তে পারে ওজন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আলু, মিষ্টি আলু, কচু, গাজর, মুলা, মিষ্টি কুমড়া, মটরশুঁটি এবং ভুট্টার মতো শর্করা–সমৃদ্ধ সবজি দেহে দ্রুত শক্তি যোগ করলেও অতিরিক্ত গ্রহণ ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। শর্করার পাশাপাশি প্রস্তুত প্রণালীও ওজন বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে।

যে সবজিগুলো বেশি খেলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে

অনেক জনপ্রিয় সবজি থাকলেও সেগুলো উচ্চ কার্বোহাইড্রেটের কারণে ক্যালরি বৃদ্ধি করে।

আলু ও মিষ্টি আলু

এই দুই সবজিতেই স্টার্চ, শর্করা ও ক্যালরি বেশি, যা অতিরিক্ত গ্রহণে দেহে চর্বি জমার প্রবণতা বাড়ায়।

কচু (লতি, মুখি)

মাটির নিচে জন্মানো সবজিগুলোর মধ্যে কচুতে কার্বোহাইড্রেট ও স্টার্চের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। ফলে বেশি খেলে ওজন বাড়তে পারে।

গাজর ও মুলা

স্বাস্থ্যকর হলেও এগুলোও রুট ভেজিটেবল। অতিরিক্ত খেলে শর্করা দেহে জমা হয়, যা ক্যালরি ব্যালান্স নষ্ট করে।

মিষ্টি কুমড়া

মিষ্টি স্বাদের কারণে এই সবজিতে প্রাকৃতিক চিনি বেশি থাকে। যার ফলে এটি দ্রুত শক্তি দেয়, আবার ওজন বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে।

মটর ও ভুট্টা

উভয়ই পুষ্টিকর কিন্তু উচ্চ কার্বোহাইড্রেটের উৎস। নিয়মিত বেশি পরিমাণে খেলে ক্যালরি বেড়ে যায়।

কেন এসব সবজি ওজন বাড়াতে সহায়তা করে

প্রধান কারণ হলো উচ্চ শর্করা ও ক্যালরির উপস্থিতি। এসব সবজি দেহে দ্রুত গ্লুকোজ বাড়ায়, যা শক্তি ব্যবহার না হলে চর্বি আকারে জমতে থাকে।

প্রস্তুত প্রণালীতে লুকিয়ে থাকে বাড়তি ক্ষতি

সবজি হলেও ভাজা, মাখন দিয়ে রান্না করা, ভারী সস বা উচ্চ ফ্যাটযুক্ত ড্রেসিং ব্যবহার করলে ক্যালরি আরও বেশি বেড়ে যায়। ফলে ওজন বৃদ্ধির হার অনেক দ্রুত হয়ে ওঠে।

উচ্চ শর্করাযুক্ত এসব সবজি সম্পূর্ণ বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্যসম্মত রান্নাই মূল বিষয়। সুষম খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে মাপমতো খেলে এগুলো স্বাস্থ্যকরই থাকে।


শীতে যেসব উপাদান স্কিনকেয়ারে ব্যবহার করা বিপজ্জনক

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৯ ১৭:৩৪:১৫
শীতে যেসব উপাদান স্কিনকেয়ারে ব্যবহার করা বিপজ্জনক
ছবি: সংগৃহীত

শীতে ত্বক আরও শুষ্ক করে এমন স্কিনকেয়ার উপাদানগুলোর তালিকা, যা এড়ানো জরুরি

শীতের ঠান্ডা আবহাওয়া ত্বককে স্বাভাবিকভাবেই শুষ্ক, রুক্ষ ও সংবেদনশীল করে তোলে। এর সঙ্গে যদি স্কিনকেয়ারে ব্যবহৃত কিছু উপাদান ভুলভাবে যুক্ত হয়, তবে ত্বকের অবস্থার আরও অবনতি ঘটতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতকালে এমন কিছু কেমিক্যাল রয়েছে যা ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়, ত্বকের বাধা স্তর দুর্বল করে এবং জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে। তাই এই মৌসুমে স্কিনকেয়ারের পণ্য বেছে নিতে বাড়তি সচেতনতা অত্যন্ত প্রয়োজন।

শীতে যেসব উপাদান ত্বকের ক্ষতি বাড়ায়

অ্যালকোহলযুক্ত স্কিনকেয়ার (Isopropyl Alcohol)

অনেক টোনার বা ক্লিনজারে থাকা আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল ত্বকের প্রাকৃতিক লিপিড স্তরকে সরিয়ে ফেলে, ফলে ত্বক দ্রুত শুষ্ক ও টানটান হয়ে যায়। শীতকালে এই শুষ্কতা আরও বেশি অনুভূত হয়।

সোডিয়াম লরিল সালফেট (SLS)

ফেসওয়াশ ও সাবানে ব্যবহৃত SLS ত্বকের তেল শোষণ করতে পারে অতিরিক্ত মাত্রায়। এর ফলে ত্বক রুক্ষ হয়ে ফেটে যেতে পারে এবং সংবেদনশীল ত্বকে জ্বালাপোড়া বাড়তে পারে।

থ্যালেটযুক্ত সুগন্ধি

সুগন্ধিযুক্ত পণ্যে থাকা থ্যালেটস ত্বকে অ্যালার্জি, লালভাব এবং ইরিটেশন তৈরি করতে পারে। শীতকালের শুষ্ক ত্বক এ ধরনের সমস্যা আরও দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখায়।

খনিজ তেল ও প্যারাফিনসমৃদ্ধ পণ্য

মিনারেল অয়েল বা প্যারাফিন কিছু ত্বকে ছিদ্র বন্ধ করে দিতে পারে, যা ত্বকের আর্দ্রতা ভারসাম্যকে ব্যাহত করে। ফলে ত্বক পর্যাপ্ত শ্বাস নিতে পারে না এবং শুষ্কতা স্থায়ী হয়ে যায়।

ক্ষারধর্মী সাবান

অতিরিক্ত ক্ষারযুক্ত সাবান ত্বকের স্বাভাবিক pH নষ্ট করে, ত্বকের আর্দ্রতা কমায় ও প্রতিরক্ষা স্তর দুর্বল করে ফেলে। এর ফলে বিশেষত হাত–পায়ের ত্বক সহজেই ফেটে যেতে পারে।

AHA/BHA বা রেটিনল একসঙ্গে ব্যবহার

শীতের শুষ্ক অবস্থায় ত্বক সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। AHA/BHA জাতীয় অ্যাসিড বা রেটিনল একসঙ্গে ব্যবহার করলে ত্বকে লালভাব, পোড়া অনুভূতি ও অতিরিক্ত শুষ্কতা দেখা দিতে পারে। তাই এসব উপাদান আলাদা দিনে বা রাতে ব্যবহার করাই উচিত।

শীতে ত্বক রক্ষার সঠিক নিয়ম

ময়েশ্চারাইজার অপরিহার্য

গোসলের পর যখন ত্বক সামান্য ভেজা থাকে, তখন ময়েশ্চারাইজার লাগালে ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়ে। দিনে অন্তত দুইবার ব্যবহার করলে শুষ্কতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন

শীতের রোদ নরম মনে হলেও UVA ও UVB রশ্মি একইভাবে সক্রিয় থাকে। তাই সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ত্বক রোদে পোড়া, দাগ ও বলিরেখা থেকে সুরক্ষিত থাকে।

প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার

অলিভ অয়েল, নারকেল তেল বা বাদাম তেল শুষ্ক ত্বকে ভালো কাজ করে। এগুলো ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে।

অতিরিক্ত গরম পানি পরিহার

খুব গরম পানি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল দ্রুত সরিয়ে দেয়। তাই গোসলে হালকা গরম পানি ব্যবহার করাই উত্তম।


মাত্র ৭ মিনিটে ফিটনেস, ঘরে বসেই পুরো ওয়ার্কআউট

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৯ ১৭:০১:১৪
মাত্র ৭ মিনিটে ফিটনেস, ঘরে বসেই পুরো ওয়ার্কআউট
ছবি: সংগৃহীত

ব্যস্ত জীবনযাত্রায় দীর্ঘ সময় ধরে ব্যায়াম করার সুযোগ অনেকেরই থাকে না। তাই বিশেষজ্ঞদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাত্র সাত মিনিটে সম্পূর্ণ শরীরে কার্যকর এক বিশেষ ওয়ার্কআউট। এই ব্যায়ামটি মূলত উচ্চতীব্রতার HIIT বা High Intensity Interval Training পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে তৈরি, যেখানে মাত্র কয়েক মিনিটেই কার্ডিও, শক্তি ও সহনশীলতা একসঙ্গে বাড়ানো যায়।

মাত্র সাত মিনিটের এই রুটিনে রয়েছে ১২টি ধারাবাহিক ব্যায়াম। প্রতিটি ব্যায়াম ৩০ সেকেন্ড করে করতে হয় এবং এর মাঝে থাকে মাত্র ১০ সেকেন্ড বিশ্রাম। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, রুটিনটি করার জন্য জিমে যাওয়ার দরকার নেই। শরীরের ওজন, একটি চেয়ার এবং একটি দেয়ালই যথেষ্ট সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই স্বল্পসময়ের ব্যায়াম রক্তসঞ্চালন বাড়ায়, হৃদযন্ত্রকে সক্রিয় রাখে এবং শরীরের বিভিন্ন বড় পেশিকে একসঙ্গে কাজে লাগিয়ে দ্রুত ক্যালোরি পোড়ায়। ফলে চর্বি কমা এবং শক্তি বৃদ্ধি দুটি পরিবর্তনই খুব অল্প সময়ে অনুভব করা যায়।

১২টি ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে জাম্পিং জ্যাক, ওয়াল সিট, পুশ-আপ, অ্যাব ক্রাঞ্চেস, চেয়ারের ওপর ওঠা–নামা, স্কোয়াট, ট্রাইসেপস ডিপ, প্ল্যাঙ্ক, হাই-নিজ রান, লাঞ্জেস, রোটেশনসহ পুশ-আপ এবং দুই পাশের সাইড প্ল্যাঙ্ক। প্রতিটি ব্যায়ামই শরীরের আলাদা অংশে কাজ করে এবং দ্রুত হার্ট রেট বাড়ায়।

এই রুটিন অনুসরণ করতে চাইলে একটি সহজ কৌশল মনে রাখা জরুরি প্রতিটি ব্যায়ামে পূর্ণ উদ্যমে ৩০ সেকেন্ড কাজ এবং পরের ১০ সেকেন্ড পুরো বিশ্রাম। সপ্তাহে কয়েক দিন ৭ মিনিট সময় দিলেই এ রুটিন শরীরে দৃশ্যমান পরিবর্তন আনে বলে দাবি করেছেন অনেক ফিটনেস ট্রেইনার।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, ওয়ার্কআউটের আগে হালকা ওয়ার্ম–আপ এবং শেষে কুল–ডাউন করলে ফল আরও ভালো পাওয়া যায়। চাইলে ‘Johnson & Johnson 7 Minute Workout’ বা ‘7M Fit’–এর মতো অ্যাপ ব্যবহার করে সময়, ব্যায়ামের ধরন ও অগ্রগতি আরও সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।


প্রতিদিন যে খাবারগুলো আপনার মেটাবলিজমকে ধীর করে

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৯ ১৬:৫১:৩২
প্রতিদিন যে খাবারগুলো আপনার মেটাবলিজমকে ধীর করে
ছবি: সংগৃহীত

শরীরের মেটাবলিজম বা বিপাকক্রিয়া মানবস্বাস্থ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। এই মেটাবলিজম ঠিকমতো কাজ না করলে ওজন বৃদ্ধি, ক্লান্তি, হজম সমস্যা থেকে শুরু করে হরমোনজনিত অসামঞ্জস্য পর্যন্ত নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসের বহু উপাদানই অজান্তে মেটাবলিজমকে দুর্বল করে দিচ্ছে।

বিপাক ক্রিয়া ধীর হয়ে যাওয়ার মূল অপরাধী হিসেবে যেসব খাবারকে চিহ্নিত করা হচ্ছে, তার মধ্যে প্রথমেই রয়েছে রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট। সাদা রুটি, পাস্তা, সাদা চাল বা অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত শস্য খুব দ্রুত ভেঙে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এতে শরীর অতিরিক্ত ইনসুলিন নিঃসরণ করতে বাধ্য হয় এবং ক্যালোরি পোড়ার হার কমে যায়।

তদ্রূপ অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার যেমন কোমল পানীয়, কেক, বিস্কুট, মিষ্টি শরীরের মেটাবলিজমকে আরও ধীর করে দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, চিনি শরীরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই ইনসুলিন বাড়ায় এবং ফ্যাট স্টোরেজ বৃদ্ধি করে, যা বিপাক ক্রিয়াকে মন্থর করে দেয়।

এছাড়া প্রোটিন ও ফাইবার কম থাকা খাবারও বিপাকের জন্য ক্ষতিকর। কারণ প্রোটিন ও ফাইবার হজম করতে শরীরকে বেশি শক্তি ব্যয় করতে হয়। তাই কম প্রোটিনযুক্ত ডায়েট মেটাবলিজমকে উল্লেখযোগ্যভাবে ধীর করে দেয়। একইভাবে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা বা মিল বাদ দেওয়ার অভ্যাস শরীরকে সংকেত দেয় যে খাবার কম। ফলে সেভিং মোডে গিয়ে বিপাকক্রিয়া আরও ধীর হয়ে যায়।

স্বাস্থ্য গবেষণায় দেখা গেছে, পর্যাপ্ত পানি না খাওয়াও মেটাবলিজম কমার একটি বড় কারণ। পানি শরীরের রাসায়নিক প্রক্রিয়াকে সচল রাখে। পানিশূন্যতা হলে হজম ও ক্যালোরি পোড়ার হার কমে যায়। প্রক্রিয়াজাত খাবারে থাকা অতিরিক্ত লবণ, ট্রান্স ফ্যাট, চিনি ও রাসায়নিক সংযোজকও দীর্ঘমেয়াদে মেটাবলিক সমস্যার সৃষ্টি করে।

তবে ভালো খবর হলো নির্দিষ্ট কিছু খাবার এবং অভ্যাস মেটাবলিজম বাড়াতে কার্যকর। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান, মাছ–ডিম–ডাল–মাংসের মতো প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং আস্ত শস্য, শাকসবজি ও ফলমূল অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন। দারুচিনি ও কাঁচা মরিচের মতো প্রাকৃতিক মশলাও শরীরের তাপ উৎপাদন বাড়িয়ে ক্যালোরি দ্রুত পোড়াতে সাহায্য করে।

গবেষকরা আরও বলেন, দিনের শুরুতে নাস্তা বাদ না দেওয়া এবং দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা এড়িয়ে চলা বিপাক সক্রিয় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো অনুসরণ করলে মেটাবলিজমকে স্বাভাবিক ও সক্রিয় রাখা সম্ভব।


পিরিয়ডের সময়ে কোন ফল এড়িয়ে চলবেন

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৯ ১২:৪২:০৫
পিরিয়ডের সময়ে কোন ফল এড়িয়ে চলবেন
ছবি: সংগৃহীত

সাধারণভাবে ফলমূলকে স্বাস্থ্যরক্ষার অন্যতম সেরা খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে সব পরিস্থিতিতে সব ফল শরীরের জন্য সমান উপকারী নয়, বিশেষ করে ঋতুস্রাবকালীন সময় ও শীতের মৌসুমে ফল বাছাইয়ে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। নারীদের শরীরে মাসিক চলাকালে বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটে, যার প্রভাবে কিছু ফল উপকারের বদলে অস্বস্তি বাড়িয়ে দিতে পারে।

মাসিকের সময় বহু নারী তলপেটের টান, মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, বমিভাব, পেটফাঁপা কিংবা গ্যাসের মতো সমস্যায় ভোগেন। কিছু ফল এসব উপসর্গ কমাতে সহায়ক হলেও কিছু ফল হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে ব্যথা ও অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

কেন কিছু ফল মাসিকের সময় অস্বস্তি বাড়ায়

ঋতুচক্র চলার সময় নারীদের শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের মাত্রা ওঠানামা করে। হরমোনের এই পরিবর্তন হজমতন্ত্রকে সংবেদনশীল করে তোলে, শরীরের ভেতরে পানি জমার প্রবণতা বাড়ায় এবং ঠান্ডা সহনশীলতা কমিয়ে দেয়। এ সময় অত্যধিক ঠান্ডা, অতিরিক্ত অ্যাসিডিক বা ফার্মেন্টেড ধরনের ফল খেলে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে ব্যথা, ক্র্যাম্প ও অস্বস্তি তীব্র হতে পারে। তাই ফল বাছাইয়ে সচেতনতা জরুরি।

আনারস

আনারসে থাকা এনজাইম ব্রোমেলেন কিছু নারীর ক্ষেত্রে জরায়ুর পেশিতে দ্রুত সংকোচন তৈরি করতে পারে। এতে তলপেটের ক্র্যাম্প বাড়তে পারে এবং পিরিয়ডজনিত ব্যথা আরও গুরুতর হতে পারে। যাদের ক্র্যাম্প বেশি হয় তাদের জন্য এই সময়ে আনারস উপযুক্ত নাও হতে পারে।

পেঁপে

অধপাকা পেঁপে জরায়ুর কার্যক্রমকে উদ্দীপ্ত করতে পারে। বেশি পরিমাণে খেলে পেটফাঁপা, হজমে অসুবিধা কিংবা অতিরিক্ত অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। তাই এই সময়ে সীমিত পরিমাণে পেঁপে খাওয়া উত্তম।

আঙুর

শীতের সময় সহজলভ্য আঙুরে ফ্রুক্টোজের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি, যা অনেকের জন্য গ্যাস ও পেটফাঁপার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পিরিয়ডের সময় যেহেতু হজমতন্ত্র অতিসংবেদনশীল থাকে, আঙুর খেলে অস্বস্তি আরও বাড়তে পারে।

সাইট্রাস ফল

কমলা, মাল্টা, লেবুর মতো সাইট্রাস ফলে ভিটামিন সি-র পরিমাণ অনেক বেশি। কিন্তু অতিরিক্ত খেলে অম্লত্ব বেড়ে বুকজ্বালা, পেটব্যথা ও বমিভাবের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।

আপেল ও নাশপাতি

ফল দুটো নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অত্যন্ত উপকারী হলেও শীতকালে ফ্রিজ থেকে বের করে ঠান্ডা অবস্থায় খেলে হজমে সমস্যা, পেটফাঁপা ও অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। তাই মাসিকের সময়ে এগুলো খেতে হলে আগে কিছুক্ষণ ঘরের তাপমাত্রায় রেখে খাওয়াই শ্রেয়।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত