Banner

১৫ মাস পর মুখ খুললেন হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে হঠাৎ ভিন্ন সুর

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১২:৩৯:৪৯
১৫ মাস পর মুখ খুললেন হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে হঠাৎ ভিন্ন সুর
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সিএনএন-নিউজ এইটিনকে সাক্ষাৎকার দেন শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার প্রায় ১৫ মাস পর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, গত বছরের জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থান এবং তার সরকারের পতনের পেছনে আমেরিকা বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তির সরাসরি ভূমিকা ছিল বলে তিনি এখন আর মনে করেন না। এই মন্তব্যটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর আগে শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রীরা এবং দলীয় নেতারা এই ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকেই দায়ী করে আসছিলেন।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সিএনএন-নিউজ এইটিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের 'ভালো ও স্থিতিশীল সম্পর্ক' রয়েছে। তাই 'ওয়াশিংটন বা অন্য কোনো বিদেশি শক্তি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে সরাসরি জড়িত' এমন ধারণা তিনি বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করেন না।

তবে সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন, যেটিকে অনেকেই ভুলবশত গণতান্ত্রিক যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করেছেন। হাসিনা আরও যোগ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন সঙ্গেও তার ভালো সম্পর্ক ছিল।

গত বছরের জুলাই মাসে, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রথমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু করেছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ও সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলার পর সেই আন্দোলন সহিংস হয়ে ওঠে। রাস্তায় রক্তপাতের ঘটনা ঘটে এবং জনরোষ তীব্র আকার ধারণ করে। একটা পর্যায়ে সরকার পতনের দাবি উঠলে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করতে বাধ্য হন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) একটি প্রতিবেদন অনুসারে, জুলাই-আগস্টের ওই গণ-অভ্যুত্থানে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন। এদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর সামরিক অস্ত্র ও শটগানের গুলিতে মারা যান। ওই সময় শেখ হাসিনার ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন তদন্ত প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। বিবিসির একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিংয়ের ভিত্তিতে দাবি করা হয়, তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন।

এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা চলছে। একই মামলায় তার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আরও তিনজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড দাবি করা হয়েছে। আগামী ১৭ নভেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে, বিবিসিকে দেওয়া ভিন্ন একটি সাক্ষাৎকারে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি এই মামলাকে 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' এবং 'ক্যাঙ্গারু কোর্টের সাজানো প্রহসন' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি দাবি করেন, আন্দোলন দমনের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলেও তিনি কখনো নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেননি। শেখ হাসিনা বলেছেন, তার বিরুদ্ধে যেকোনো দোষ প্রমাণ করতে হলে তা অবশ্যই রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে করতে হবে।

সূত্র: সিএনএন-নিউজ এইটিন ও বিবিসি


প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে এক বিশাল হৃদয়: খালেদা জিয়ার মানবিক দর্শনের আড়ালে যা ছিল 

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ১৯:০৩:০৮
প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে এক বিশাল হৃদয়: খালেদা জিয়ার মানবিক দর্শনের আড়ালে যা ছিল 
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিত্ব ছিল হিমালয়সম দৃঢ় অথচ মমতায় পূর্ণ। ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট জলপাইগুড়িতে জন্ম নেওয়া এই নেত্রী তাঁর শৈশব কাটিয়েছেন দিনাজপুরে। তাঁর পারিবারিক আবহ ছিল আধুনিক ও উদার, যেখানে মা তৈয়বা মজুমদারের কাছ থেকে তিনি শিখেছিলেন মিতব্যয়িতা ও শৃঙ্খলার পাঠ। সেই সাধারণ জীবনবোধই পরবর্তীকালে তাঁকে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রেও জাঁকজমকহীন ও বাস্তবমুখী করে তুলেছিল।

১৯৬০ সালে তৎকালীন সামরিক কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর খালেদা জিয়ার জীবনে নতুন মোড় আসে। ১৯৭১ সালের উত্তাল দিনগুলোতে তিনি কেবল একজন সেনাপতির স্ত্রী ছিলেন না, বরং এক অকুতোভয় নারীর পরিচয় দিয়েছিলেন। অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অস্ত্র রক্ষার ক্ষেত্রে তাঁর সেই কালজয়ী নির্দেশ—“মেজর জিয়ার হুকুম ছাড়া একটা সুঁইও বাইরে যাবে না”—মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। তাঁর সেই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত না হলে হয়তো শহীদ জিয়ার পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়ত।

১৯৮১ সালে স্বামী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর এক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হন তিনি। দুই সন্তান তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোকে নিয়ে যখন তিনি শোকে মুহ্যমান, তখনই দলের প্রয়োজনে হাল ধরেন বিএনপির। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথের ‘আপোষহীন নেত্রী’ হিসেবে আবির্ভূত হন তিনি। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে আন্দোলন পরিচালনা করে তিনি প্রমাণ করেছিলেন যে জনপ্রিয়তাই তাঁর একমাত্র শক্তি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাস গড়েন এবং রক্ষণশীল সমাজে নারীর অগ্রযাত্রার এক বড় অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়ান।

বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন ছিল ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি হার মানেননি কোনো জেল-জুলুম বা ষড়যন্ত্রের কাছে। বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়া, মিথ্যা মামলায় কারাবরণ কিংবা প্রবাসে সন্তানের অকাল মৃত্যু—সব শোককে তিনি পাথরচাপা দিয়েছিলেন দেশ ও মানুষের স্বার্থে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের ভাষায়, “বাংলাদেশের আত্মমর্যাদার সিনোনিম হচ্ছেন খালেদা জিয়া।” তিনি কখনো প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন না, বরং সবাইকে নিয়ে দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। আজ তাঁর প্রয়াণে বাংলাদেশ কেবল একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হারায়নি, বরং হারিয়েছে এক আলোকবর্তিকাকে, যাঁর তুলনা তিনি নিজেই।


দল থেকে ছিটকে গেলেন রুমিন ফারহানা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ১৮:৫৬:২০
দল থেকে ছিটকে গেলেন রুমিন ফারহানা
ছবি : সংগৃহীত

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনী মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ার ঘোষণা দেওয়ায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে তাঁকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

ঘটনার মূলে রয়েছে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্ব। বিএনপি এবার এই আসনটি তাদের দীর্ঘদিনের শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই লক্ষ্যে জমিয়তের সহ-সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবকে জোটের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তবে এই আসন থেকে বিএনপির শক্তিশালী মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন সাবেক সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। জোটের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পেরে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দেন।

রুমিন ফারহানা এর আগে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন যে, তিনি দল থেকে সম্মানজনকভাবে পদত্যাগ করেই নির্বাচনের মাঠে নামবেন। তবে পদত্যাগ করার আগেই দল তাঁর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনের আগে দলের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিএনপি এই কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এর ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের নির্বাচনী সমীকরণ এখন এক ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে রুমিন ফারহানার অনুসারীরা এই বহিষ্কারের পর কী ভূমিকা পালন করবেন, তা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।


সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন হবে যেখানে

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ১২:৫৭:১২
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন হবে যেখানে
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের রাজনীতির এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আপসহীন নেতৃত্ব ও দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে পরিচিত এই নেত্রী মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর আনুমানিক ৬টায় ইন্তেকাল করেন।(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)

তার মৃত্যুতে দেশজুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বস্তরের মানুষের মাঝে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যতম প্রভাবশালী এই নেত্রীর প্রস্থানকে একটি যুগের সমাপ্তি হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর জাতীয় সংসদ ভবনসংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রাজধানীর জিয়া উদ্যানে, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশে দাফন করা হবে।

মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ সভা শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি জানান, জাতির এই গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের শেষকৃত্য রাষ্ট্রীয় প্রটোকল অনুসরণ করেই সম্পন্ন করা হবে।

বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তিনি ছিলেন দেশের রাজনীতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং বহুদলীয় রাজনীতির বিকাশে তার ভূমিকা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্থায়ীভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

তার মৃত্যুতে বিএনপি ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন এবং সাধারণ মানুষ গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

-রাফসান


গণতন্ত্রে তাঁর অবদান অপরিসীম: খালেদা জিয়ার প্রয়াণে শেখ হাসিনার বিশেষ বার্তা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ১১:৫৯:১৫
গণতন্ত্রে তাঁর অবদান অপরিসীম: খালেদা জিয়ার প্রয়াণে শেখ হাসিনার বিশেষ বার্তা
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তাঁর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক শোক বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে এ দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার অবদান অপরিসীম। রাজনৈতিক বৈরিতা থাকলেও দেশের ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে শেখ হাসিনার এই বার্তা রাজনৈতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ঢাকা ও ভারতের কূটনৈতিক সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে যে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর এটিই শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আসা প্রথম কোনো বড় ধরণের আনুষ্ঠানিক শোক বার্তা। তিনি তাঁর বার্তায় উল্লেখ করেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে এবং বিশেষ করে বিএনপি নেতৃত্বের ক্ষেত্রে এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। শেখ হাসিনা মরহুমার আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

শোক বার্তায় শেখ হাসিনা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, “আমি তাঁর ছেলে তারেক রহমান ও পরিবারের অন্যান্য শোকাহত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আশা করছি মহান আল্লাহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের এবং বিএনপির সবাইকে এই শোক কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবেন।” ৭৯ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার, কিডনি ও হৃদরোগসহ নানাবিধ জটিলতায় ভুগছিলেন। চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টার পর মঙ্গলবার ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের এই ক্রান্তিলগ্নে শেখ হাসিনার এই শোক বার্তাটি একটি ইতিবাচক রাজনৈতিক শিষ্টাচারের উদাহরণ হয়ে থাকবে। ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে খ্যাতি পাওয়া বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ ৪১ বছর বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং রাজপথের লড়াইয়ে কখনো হার মানেননি। তাঁর এই মহাপ্রয়াণে কেবল একটি দল নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক কাঠামোর এক শক্তিশালী স্তম্ভের পতন ঘটল বলে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করছেন।


জাতি আজ মায়ের ছায়া থেকে বঞ্চিত হলো: রিজভী

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ১১:৫০:৪৩
জাতি আজ মায়ের ছায়া থেকে বঞ্চিত হলো: রিজভী
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক ও হাহাকার প্রকাশ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “যেকোনো সংকট বা শোকে মানুষের মাথার ওপর যেমন মায়ের একটা ছায়া থাকে, জাতি আজ সেই ছায়া থেকে বঞ্চিত হলো। আমরা আমাদের সেই পরম আশ্রয় ও অভিভাবককে হারালাম।”

রিজভী তাঁর বক্তব্যে বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ ও সংগ্রামী জীবনের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “দেশনেত্রী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু যখন আমরা বাইরে রাজপথে কাজ করতাম, আমাদের মনে হতো মা তো আছেন। তিনি আমাদের সব সংকট দেখছেন। সেই প্রেরণা থেকেই আমরা লড়াই করার শক্তি পেতাম। যার নেতৃত্বের ছায়ায় আমাদের রাজনৈতিক জীবন গড়ে উঠেছে, তাঁর এভাবে চলে যাওয়া এক অপূরণীয় ক্ষতি। এই শোক ও সংকট কাটিয়ে ওঠা আমাদের এবং জাতির জন্য অত্যন্ত কঠিন হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর অসীম ধৈর্য ও ত্যাগের কথা উল্লেখ করে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি পদে পদে চরম নিপীড়ন সহ্য করেছেন। চোখের সামনে সন্তানের লাশ দেখার মতো কঠিন শোকও তিনি সয়েছেন শুধুমাত্র দেশ, মানুষ ও গণতন্ত্রের কথা ভেবে। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি জনগণের অধিকারের পক্ষে অটল ছিলেন। তাঁর এই অকুতোভয় ও আপোষহীন মানসিকতা বিশ্ববাসীর কাছে তাঁকে এক ‘মজলুম নেত্রী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

রুহুল কবির রিজভী সারা বিশ্বের নেতাকর্মী ও দেশবাসীকে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, আজ কেবল বিএনপি নয়, বরং সারা বিশ্ব এই মহীয়সী নেত্রীর জন্য শোক পালন করছে। এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁর এই আবেগঘন বক্তব্য উপস্থিত নেতাকর্মীদের মাঝে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।


জাতি এই ক্ষতি পূরণ করতে পারবে না: মির্জা ফখরুল

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ০৯:৪৪:৪৫
জাতি এই ক্ষতি পূরণ করতে পারবে না: মির্জা ফখরুল
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে বিশাল শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা কোনোদিন পূরণ হবার নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের ব্রিফিং রুমে শোকাতুর কণ্ঠে তিনি এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, “এই দুঃসংবাদ নিয়ে আপনাদের সামনে দাঁড়াতে হবে, তা আমরা কখনও ভাবিনি। আমরা বার বার আশা করছিলাম যে, দেশনেত্রী আবারও আগের মতো সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। কিন্তু আজ ভোর ৬টায় আমাদের গণতন্ত্রের মা আমাদের চিরতরে ছেড়ে চলে গেছেন।”

মহাসচিব আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া তাঁর গোটা জীবন বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে কেবল একটি দল নয়, বরং গোটা জাতি এক অভিভাবককে হারিয়েছে। এ সময় মির্জা ফখরুল জানান যে, দেশনেত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস তাঁকে তাৎক্ষণিক ফোন করেছেন। প্রধান উপদেষ্টা সমবেদনা জানিয়ে জানিয়েছেন যে, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সরকারের পক্ষ থেকে একটি জরুরি ক্যাবিনেট মিটিং বা মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

ব্রিফিংয়ের সময় এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত এবং দলের পক্ষ থেকে গৃহীত জানাজা ও দাফন সম্পর্কিত বিস্তারিত কর্মসূচি পরবর্তী সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশবাসীকে জানানো হবে। এ সময় হাসপাতালের চারদিকের পরিবেশ অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে এবং শত শত নেতাকর্মীর আহাজারিতে এক শোকাতুর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।


লাজুক গৃহবধূ থেকে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী: খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক মহাকাব্য

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ০৯:১২:১৭
লাজুক গৃহবধূ থেকে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী: খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক মহাকাব্য
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে প্রবেশ ছিল এক আকস্মিক ও অভাবনীয় ঘটনা। ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি ছিলেন পুরোপুরি একজন গৃহবধূ। দুই সন্তান তারেক ও কোকোকে নিয়ে সেনানিবাসে নিভৃত জীবন কাটানো এই নেত্রীর রাজনীতি নিয়ে কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল না। তবে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিএনপি যখন ভয়াবহ নেতৃত্বহীনতা ও বিভক্তির সংকটে পড়ে, তখন দলের অস্তিত্ব রক্ষায় অনেকটা বাধ্য হয়েই রাজপথে নামতে হয় তাঁকে।

১৯৮২ সালের ২ জানুয়ারি বিএনপির সাধারণ সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে পা রাখেন খালেদা জিয়া। তৎকালীন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিকদের মতে, তিনি ছিলেন অত্যন্ত লাজুক ও সংসারমুখী। স্বামীর হত্যাকাণ্ডের পর তিনি রাজনীতিকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলেও নেতাকর্মীদের ক্রমাগত অনুরোধ এবং দলের ঐক্য ধরে রাখতে ১৯৮৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। সেই থেকে টানা ৪১ বছর তিনি দলটির শীর্ষ পদে আসীন ছিলেন। বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের অসুস্থতা ও এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তিনিই হয়ে ওঠেন বিএনপির প্রধান চালিকাশক্তি।

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায় ছিল নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন। এরশাদ শাসনের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার আপস না করে ৯ বছরের নিরলস সংগ্রামের মাধ্যমে তিনি নিজেকে 'আপসহীন নেত্রী' হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। নির্বাচনের ইতিহাসে তাঁর রয়েছে এক বিরল রেকর্ড—পাঁচটি সংসদ নির্বাচনে ২৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে একটিতেও হারেননি তিনি। মঙ্গলবার সকালে তাঁর মহাপ্রয়াণে সমাপ্তি ঘটল বাংলাদেশের রাজনীতির এক সুবিশাল ও বর্ণাঢ্য অধ্যায়ের।


খালেদা জিয়াকে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন: জামায়াত আমির

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ০৮:৫৭:২১
খালেদা জিয়াকে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন: জামায়াত আমির
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক আবেগঘন পোস্টে তিনি মরহুমার রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁকে ‘জান্নাতের মেহমান’ হিসেবে কবুল করার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা জানান।

বেগম খালেদা জিয়া মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পরপরই জামায়াত আমির তাঁর ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, “ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ওপরে রহম করুন, ক্ষমা করুন এবং তাঁর প্রিয় জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন।”

ডা. শফিকুর রহমান তাঁর পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, “তাঁর আপনজন, প্রিয়জন ও সহকর্মীদেরকে মহান আল্লাহ সবরে জামিল দান করুন। আমিন।” উল্লেখ্য, গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নেত্রীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটময় ছিল। অবশেষে সকল চেষ্টার অবসান ঘটিয়ে চিরবিদায় নিলেন এই মহীয়সী নেত্রী।


চিরবিদায় নিলেন ‘আপসহীন নেত্রী’ বেগম খালেদা জিয়া

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ০৮:৪৭:৪১
চিরবিদায় নিলেন ‘আপসহীন নেত্রী’ বেগম খালেদা জিয়া

বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ আজ সকালে সাংবাদিকদের জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁকে ফোন করে জানিয়েছেন, ‘আম্মা আর নেই।’

দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও কিডনি জটিলতাসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন এই বর্ষীয়ান নেত্রী। গত ২৩ নভেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তিনি সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার ভোরে তাঁর শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটে এবং তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর সময় তাঁর পাশে জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমানসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বিশাল শূন্যতা তৈরি হয়েছে। ১৯৮১ সালে স্বামী জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর দলের হাল ধরেছিলেন তিনি। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তাঁর ‘আপসহীন’ ভূমিকা তাঁকে গণমানুষের নেত্রীতে পরিণত করে। ১৯৯১ সালে তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। প্রিয় নেত্রীর প্রয়াণে রাজধানীর রাজপথ থেকে শুরু করে সুদূর গ্রামে সাধারণ মানুষের মাঝে শোকের আবহ বিরাজ করছে।

পাঠকের মতামত:

ব্যক্তিগত দায় বনাম প্রাতিষ্ঠানিক দায়: দায়মুক্তির এক রাজনৈতিক সংস্কৃতি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের ঘটনা কাগজে পড়লে প্রথমে মনে হয় এটা যেন কোনো যুদ্ধের খবর। এক তরুণকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে হাত–পা প্রায়... বিস্তারিত