রাশিয়ার ওপর ইইউর নতুন নিষেধাজ্ঞা: জ্বালানি খাতে চাপ বাড়ছে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ১২:১৫:৫২
রাশিয়ার ওপর ইইউর নতুন নিষেধাজ্ঞা: জ্বালানি খাতে চাপ বাড়ছে
ছবিঃ সংগৃহীত

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা মূলত ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মস্কোর জ্বালানি আয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। বুধবার ডেনমার্ক, যা বর্তমানে ইইউর ঘূর্ণায়মান সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে, এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করে। এটি ২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের পর ইইউর গৃহীত ১৯তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ।

এই নতুন পদক্ষেপ এমন এক সময় এলো যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের শান্তি প্রচেষ্টা স্থবির হয়ে পড়েছে, আর ইউরোপ চায় রাশিয়ার ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে।

তবে নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজের অনুমোদন সহজ ছিল না। রাশিয়া-ঘনিষ্ঠ স্লোভাকিয়া প্রথমে এর বিরোধিতা করে, তাদের গাড়ি শিল্পকে ইইউর জলবায়ু আইন থেকে সুরক্ষা চেয়ে। শেষ পর্যন্ত স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো যথাযথ আশ্বাস পাওয়ার পর তার আপত্তি প্রত্যাহার করেন, ফলে বুধবার প্যাকেজটি অনুমোদিত হয়।

নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় ২৭ সদস্য দেশের এই জোট রাশিয়া থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) আমদানি নিষিদ্ধের সময়সীমা এক বছর এগিয়ে এনে ২০২৭ সালের শুরু থেকে কার্যকর করছে। পাশাপাশি, রাশিয়ার তেল রপ্তানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ব্যবহৃত তথাকথিত “শ্যাডো ফ্লিট”-এর ১০০টিরও বেশি পুরনো ট্যাঙ্কারকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

ইইউ শুধু জ্বালানি রাজস্বই নয়, বরং রাশিয়ার কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডকেও কঠোর নজরদারির আওতায় আনছে। নতুন বিধান অনুযায়ী, ইউরোপে নিযুক্ত রুশ কূটনীতিকদের অন্য কোনো দেশে ভ্রমণের আগে সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করতে হবে। ইউরোপীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মতে, এই ব্যবস্থা মূলত গুপ্তচরবৃত্তি কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।

ডেনমার্ক জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়া হবে বৃহস্পতিবার, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ব্রাসেলসে ইইউ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেওয়ার ঠিক আগে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি ইউরোপীয় ঐক্যের একটি দৃঢ় বার্তা—যা ইউক্রেনের প্রতি অব্যাহত সমর্থন ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত চাপ বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি বহন করে।

-হাসানুজ্জামান


বাণিজ্য যুদ্ধ থেকে বিশ্বশান্তি? ট্রাম্প-শি বৈঠকে নতুন কূটনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৪ ১০:৪৫:৩৫
বাণিজ্য যুদ্ধ থেকে বিশ্বশান্তি? ট্রাম্প-শি বৈঠকে নতুন কূটনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত
ডোনাল্ড ট্রাম্প (বামে) এবং শি জিনপিং (ডানে)

দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলন এবার বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে। ২০১৯ সালের পর এই প্রথম এক মঞ্চে বসবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিটের ঘোষণায় নিশ্চিত হওয়া এই বৈঠককে কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা দেখছেন এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে।

দীর্ঘদিনের বাণিজ্য যুদ্ধ, প্রযুক্তি নিষেধাজ্ঞা, রেয়ার আর্থ মিনারেলস রপ্তানি সংকটসব মিলিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক এখনো উত্তেজনাপূর্ণ। তাই এ বৈঠক কেবল আনুষ্ঠানিক আলোচনা নয়; বরং এটি হতে যাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতির দিকনির্দেশক এক মুহূর্ত।

২০১৮ সাল থেকেই শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ, যা গত কয়েক বছরে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল, পাল্টা জবাবে চীন প্রথমে ১২৫ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করে পরে তা কমিয়ে ১০ শতাংশে সীমাবদ্ধ করে।

তবে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক হুঁশিয়ারি নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, যদি চীন তাদের বিরল খনিজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেয়, তবে নভেম্বর থেকেই চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। এই পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে সরবরাহ শৃঙ্খলা ও মুদ্রা বাজারে বড় ধাক্কা দিতে পারে।

দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্পের এশিয়া সফর শুধু আনুষ্ঠানিক নয়, বরং চীনের প্রভাববলয় ভাঙার প্রচেষ্টা হিসেবেও দেখা হচ্ছে। মালয়েশিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া সফরের মাধ্যমে তিনি নতুন আঞ্চলিক জোট গড়ার চেষ্টা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২৬২৮ অক্টোবর মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য আসিয়ান সম্মেলনে অংশ নেবেন ট্রাম্প, যেখানে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে শান্তিচুক্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর কূটনৈতিক মধ্যস্থতাও আলোচনায় আছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ সফরের মূল লক্ষ্য হচ্ছে এশিয়া অঞ্চলে মার্কিন উপস্থিতি জোরদার করা এবং চীনের প্রভাবকে প্রতিহত করা।

এশিয়া সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হচ্ছে জাপান, যেখানে ট্রাম্পের বৈঠক হবে নবনিযুক্ত নারী প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির সঙ্গে। রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি বন্ধ ও প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়ানো নিয়ে আলোচনাই হবে মূল বিষয়।

এই বৈঠক শুধু দ্বিপাক্ষিক নয়, বরং ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা কাঠামোর ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারণ করতে পারে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ট্রাম্প চান জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে একত্র করে চীনের বিপরীতে একটি অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ফ্রন্টলাইন তৈরি করতে।

বিশ্ব অর্থনীতির জন্য এ বৈঠক হতে পারে এক মোড় পরিবর্তনের মুহূর্ত। হয়তো বাণিজ্য যুদ্ধের সমাপ্তির সূচনা হবে, নতুবা শুরু হবে নতুন কৌশলগত প্রতিযোগিতার অধ্যায়। ট্রাম্পের কঠোর নীতি ও শি জিনপিংয়ের কৌশলী কূটনীতিএই দুই মেরু শক্তির ভারসাম্যই নির্ধারণ করবে আগামী দশকের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা।

এপেক সম্মেলনের পার্শ্ব বৈঠক হয়তো বিশ্বকে জানিয়ে দেবে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক এখন সহযোগিতার দিকে যাবে নাকি সংঘাতের গভীরে নিমজ্জিত হবে।


ইসরায়েলকে ট্রাম্পের কড়া হুঁশিয়ারি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ২১:১২:৫৬
ইসরায়েলকে ট্রাম্পের কড়া হুঁশিয়ারি
ছবিঃ সংগৃহীত

ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েলকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর অধিগ্রহণ যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করবে না। এ ধরনের কাজ করলে ইসরায়েলকে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সব সমর্থন হারাবে তারা।

টাইম ম্যাগাজিনকে ট্রাম্পের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারের বরাতে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) এনবিসি নিউজ ও দ্য টাইমস অব ইসরায়েল এ-সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করেছে।

আরব বিশ্বকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি

ট্রাম্প বলেন, পশ্চিম তীর অধিগ্রহণ হবে না, কারণ তিনি আরব দেশগুলোকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন:

“আমি আরব দেশগুলোকে কথা দিয়েছি। আমাদের প্রতি আরবদের অনেক সমর্থন রয়েছে। ইসরায়েল পশ্চিম তীর অধিগ্রহণ করতে পারবে না কারণ আমি আরবদের কথা দিয়েছি।”

ইসরায়েলি সরকারের উগ্রপন্থি এমপি-মন্ত্রীরা পুরো পশ্চিম তীর অধিগ্রহণের জন্য চাপ দিচ্ছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো।

গাজা পরিদর্শন ও আগের হুঁশিয়ারি

সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি গাজা উপত্যকা পরিদর্শনের পরিকল্পনা করছেন। যদিও তিনি এ বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি।

পশ্চিম তীর নিয়ে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি এবারই প্রথম নয়। সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, তিনি অধিকৃত পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করতে দেবেন না। ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “আমি পশ্চিম তীর ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করতে দেব না, কোনোভাবেই না। এটা হবে না।” তিনি বলেন, “যথেষ্ট হয়েছে। এবার থামতে হবে।”


পুরুষ হলে মুখোমুখি হোন: পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে টিটিপি’র সরাসরি চ্যালেঞ্জ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ১৪:১২:১০
পুরুষ হলে মুখোমুখি হোন: পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে টিটিপি’র সরাসরি চ্যালেঞ্জ
ছবিঃ সংগৃহীত

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) তাদের প্রকাশিত এক ভিডিওতে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছে। ভিডিওতে থাকা টিটিপি নেতা, যাকে পাকিস্তানি সূত্রে কমান্ডার কাজিম বলে দাবি করা হয়েছে, তিনি বলেছেন, “আপনি পুরুষ হয়ে থাকলে আমাদের মুখোমুখি হোন।”

ভিডিওর বার্তা ও হামলার দৃশ্য

ভিডিওতে ৮ অক্টোবর খাইবার পাখতুনখাওয়ার কুররাম অঞ্চলে হওয়া এক হামলার কিছু দৃশ্য দেখানো হয়। টিটিপি ওই হামলায় ২২ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়েছে দাবি করেছে; যদিও সেনাবাহিনী নিহতের সংখ্যা ১১ জানিয়েছিল। ক্লিপে জব্দ করা গোলাবারুদ ও ধ্বংসস্তূপ দেখা যায়।

কমান্ডার কাজিম ভিডিওতে কটূক্তিমূলক বার্তা দিয়েছেন:

“যদি মায়ের দুধ পান করে বড় হয়ে থাকেন, সরাসরি আমাদের সঙ্গে লড়াই করুন।”

কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ

পুরস্কার ঘোষণা: পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নিয়ে কমান্ডার কাজিমকে ধরতে ১০ কোটি পাকিস্তানি রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছে।

তদন্ত: সামরিক ও নিরাপত্তা সূত্ররা বলছে, ঘটনাটির ফরেনসিক যাচাই চলছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি


“শান্তি আনতে পারবেন একমাত্র ট্রাম্প”—ওয়াশিংটনে ন্যাটো মহাসচিব রুটে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ১২:২৫:১৯
“শান্তি আনতে পারবেন একমাত্র ট্রাম্প”—ওয়াশিংটনে ন্যাটো মহাসচিব রুটে
ছবিঃ সংগৃহীত

ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে বুধবার ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগকে গুরুত্বহীন বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি আবারও জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব “শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বেই”।

রুটে ওয়াশিংটনে সফরকালে কংগ্রেস ভবনে মার্কিন সিনেট সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং পরে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। এটি এমন এক সময়ের সফর, যখন মাত্র কয়েকদিন আগেই ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যা নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানা জল্পনা ছড়ায়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রুটে বলেন, “গত সপ্তাহের বৈঠককে ব্যর্থ বলা ঠিক নয়; এটি ছিল একটি সফল আলোচনা।” তিনি জানান, সফরটি পূর্বনির্ধারিত ছিল এবং তিনি নিজেই ট্রাম্পকে বার্তা পাঠিয়ে ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

ন্যাটো মহাসচিব বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখি। আমি বিশ্বাস করি, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে এই সংঘাতের অবসান ঘটানোর একমাত্র সামর্থ্য তাঁরই আছে।”

রুটের ভাষায়, “এই প্রক্রিয়ায় ট্রাম্পের নেতৃত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁকে বিশ্বের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে সংলাপে যেতে হবে—পুতিনের সঙ্গেও, জেলেনস্কির সঙ্গেও।”

রিপাবলিকান সিনেটর থম টিলিস, যিনি রুটের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জানান, ইউক্রেনকে দীর্ঘ-পাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি এখনো আলোচনার টেবিলে আছে। টিলিস বলেন, “এই অস্ত্রের ক্ষমতা ও পরিসর অত্যন্ত বিস্তৃত। ইউক্রেনকে এগুলো দেওয়া হলে তা শুধু কৌশলগত নয়, বরং কূটনৈতিকভাবে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।”

গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়, তবে বৈঠক শেষে ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। এক জ্যেষ্ঠ ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা জানান, “আলোচনাগুলো সহজ ছিল না। শান্তি প্রক্রিয়া মনে হচ্ছে ক্রমেই দীর্ঘায়িত হচ্ছে, যেন আমরা এক বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছি।”

অন্যদিকে, ট্রাম্পের রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে বুদাপেস্টে বৈঠকের কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়েছে। ট্রাম্প বলেন, “অর্থহীন বৈঠকের কোনো প্রয়োজন নেই।” পরে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন যে, “নিকট ভবিষ্যতে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের কোনো পরিকল্পনা নেই।”

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প তাঁর ব্যক্তিগত কূটনৈতিক রসায়নের ওপর নির্ভর করে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান খুঁজছেন, কিন্তু পুতিনের অটল অবস্থানের কারণে তাঁর প্রচেষ্টা বারবার জটিল হয়ে উঠছে। অন্যদিকে, ন্যাটো মহাসচিব রুটের এই সফরকে অনেকে ইউরোপীয় সমর্থনের পুনর্ব্যক্তি হিসেবে দেখছেন—যেখানে পশ্চিমা জোট এখনো বিশ্বাস করে, শান্তির পথ বের করতে মার্কিন নেতৃত্বই মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।

-হাসানুজ্জামান


ল্যুভর মিউজিয়াম: মোনালিসা চুরি হয়েছিল যেভাবে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ১১:৪৩:৪৬
ল্যুভর মিউজিয়াম: মোনালিসা চুরি হয়েছিল যেভাবে
ছবিঃ সংগৃহীত

মাত্র সাত মিনিটের অল্প সময়েই প্যারিসের বিশ্ববিখ্যাত ল্যুভর জাদুঘর থেকে নেপোলিয়ন যুগের মূল্যবান রত্ন চুরির ঘটনা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই জাদুঘরের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এটি অনেকের কাছে হলিউডের কোনো সিনেমার গল্প মনে হলেও, আসল সত্য হলো—ল্যুভর জাদুঘরে চুরির ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে একে একে সাত বারের বেশি চুরি হয়েছে ফরাসি এই শিল্পের আঁতুড়ঘরে।

ল্যুভরের সেই ৭টি চুরির ঘটনা

১. ১৯১১ সালের বিখ্যাত ‘মোনালিসা’ চুরি: ২১ আগস্ট, ১৯১১। ইতালির ভিনসেনজো পেরুজিয়া নিজের পুরনো কর্মীর পোশাক পরে ল্যুভরে ঢোকেন। তিনি লিওনার্দো দা ভিঞ্চির ‘মোনালিসা’ পেইন্টিংটি খুলে নিয়ে বেরিয়ে যান। দুই বছর পর, ১৯১৩ সালে, পেরুজিয়া ছবিটি অন্য একটি জাদুঘরে বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েন। তার দাবি ছিল জন্মভূমি ইতালির প্রতি ভালোবাসা থেকে তিনি এই চুরি করেছিলেন। এই ‘দেশপ্রেমিক’ চুরিই শেষ পর্যন্ত মোনালিসাকে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত চিত্রে পরিণত করে। মজার বিষয়, এই মামলার তদন্তে তরুণ পাবলো পিকাসোকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।

২. নাৎসি দখলের সময় (১৯৪০): ১৯৪০ সালে জার্মান নাৎসি বাহিনীর দখলের সময়ও ল্যুভরের বিপুল শিল্পসংগ্রহ বিপন্ন হয়েছিল। জাদুঘরের পরিচালক জ্যাক জোজার্দ আগেই প্রায় ১ হাজার ৮০০ বাক্স মূল্যবান শিল্পকর্ম সরিয়ে নিয়ে যান। তবুও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চিত্রকর্ম—যেমন মুরিলোর ‘দ্য ইম্যাকুলেট কনসেপশন অফ লস ভেনেরেবলস’ নাৎসিদের হাতে পড়ে।

৩. গয়না উধাও (১৯৬৬): দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরেও ল্যুভরকে তাড়া করেছে চুরির অভিশাপ। ১৯৬৬ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের এক জাদুঘর থেকে ফিরিয়ে আনার পথে কিছু প্রাচীন গয়না উধাও হয়ে যায়। পরে সেগুলো নিউইয়র্কের এক মুদি দোকানের ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয়।

৪. দু’বার চুরি (১৯৭৬): ১৯৭৬ সালে, ল্যুভরে দু’বার চুরি ঘটে। জানুয়ারিতে চুরি হয় এক ফ্লেমিশ চিত্রকর্ম। এরপর ডিসেম্বরে মুখোশধারীরা নিয়ে যায় রাজা শার্ল দশমের অলংকারখচিত তলোয়ার—যা আজও নিখোঁজ।

৫. দিনের আলোয় খোয়া (১৯৯০): ১৯৯০ সালে, দিনের আলোয় রেনোয়ার-এর একটি চিত্রসহ প্রাচীন রোমান গয়না উধাও হয়। একই সঙ্গে আরও কয়েকটি চিত্রকর্মও খোয়া যায়।

৬. কেটে নেওয়া চিত্রকর্ম (১৯৯৮): ১৯৯৮ সালে, শিল্পী ক্যামিল কোরোর একটি চিত্রকর্ম ফ্রেম থেকে কেটে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে সেটিও আর উদ্ধার করা যায়নি।

৭. নেপোলিয়নের রত্ন চুরি (২০২৫): এবারের ঘটনা ঘটেছে রোববার সকালে, যখন জাদুঘর দর্শনার্থীতে পূর্ণ ছিল। মুখোশ পরা কয়েকজন ট্রাক থেকে মই লাগিয়ে ব্যালকনির জানালা ভেঙে প্রবেশ করে। তারা নেপোলিয়ন বোনাপার্টের দ্বিতীয় স্ত্রী মেরি লুইজের পান্নার নেকলেস ও কানের দুলসহ রাজকীয় গয়নার একটি সংগ্রহ চুরি করে। পুলিশ নেপোলিয়নের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনিকে উপহার দেওয়া একটি ভাঙা পান্না-হীরের মুকুট উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।


রাশিয়ার দুই শীর্ষ তেল কোম্পানির ওপর নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ১০:০১:৫১
রাশিয়ার দুই শীর্ষ তেল কোম্পানির ওপর নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
ছবিঃ সংগৃহীত

রাশিয়ার দুই শীর্ষ তেল কোম্পানি রসনেফট ও লুকঅয়েলের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (২৩ অক্টোবর) মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো ক্রেমলিনের প্রধান আয়ের উৎসকে টার্গেট করা। তিনি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করারও আহ্বান জানান।

ট্রাম্পের বৈঠক বাতিল ও যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি

বৈঠক বাতিল: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিল করেছেন। ট্রাম্প বিবৃতিতে বলেন, “বর্তমানে কোনো ইতিবাচক ফলাফল সম্ভব নয়। তবে পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি উভয়েই শান্তি চান। এখনই সময় এই যুদ্ধের অবসান ঘটানোর।”

যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি: রুশ ও ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের ৪৩ হাজারের বেশি সেনা নিহত ও প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার আহত হয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার প্রায় আড়াই লাখ নিহত এবং মোট এক মিলিয়নেরও বেশি হতাহত ও নিখোঁজ হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা ও উদ্দেশ্য

অর্থমন্ত্রী বেসেন্ট বলেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে শান্তি আলোচনায় গুরুত্ব না দেওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি পশ্চিমা মিত্রদের প্রতিও এই নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করার আহ্বান জানান।

সূত্র: শাফাক নিউজ


ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বের বিল পাশ, আন্তর্জাতিক আইনের প্রকাশ্য লঙ্ঘন

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ০৯:২০:২৯
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বের বিল পাশ, আন্তর্জাতিক আইনের প্রকাশ্য লঙ্ঘন
ছবিঃ সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করার একটি বিতর্কিত বিল ইসরায়েলের পার্লামেন্ট ‘নেসেটে’ প্রথম ধাপে অনুমোদিত হয়েছে। এটি কার্যত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড সংযুক্তিরই সমান এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রকাশ্য লঙ্ঘন বলে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

মঙ্গলবার ১২০ আসনের নেসেটে ২৫-২৪ ভোটে বিলটি প্রাথমিকভাবে পাস হয়। এটি আইন হিসেবে কার্যকর হতে আরও তিন ধাপের ভোটে অনুমোদন পেতে হবে।

মার্কিন অবস্থান ও নেতানিয়াহুর প্রতিক্রিয়া

এই ভোট এমন এক সময়ে হলো যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক মাস আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে ইসরায়েলকে পশ্চিম তীর সংযুক্তির অনুমতি দেওয়া হবে না। একই সময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও ইসরায়েল সফর করছেন।

নেতানিয়াহুর বিরোধিতা: প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার দল লিকুদ পার্টি বিলটির বিরোধিতা করেছে। তারা এই ভোটকে ‘বিরোধী দলের উসকানি’ বলে অভিহিত করেছে। লিকুদ পার্টি বলেছে, “আসল সার্বভৌমত্ব আইন দেখানোর ভান করে নয়, বরং বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমেই অর্জন করা যায়।”

ভোটের উদ্দেশ্য: নেসেটের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিলটির উদ্দেশ্য হলো ‘ইসরায়েল রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব জুদিয়া ও সামারিয়া অঞ্চলে (পশ্চিম তীর) প্রয়োগ’ করা। এটি এখন সংসদের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা কমিটিতে পাঠানো হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত করা হলে তা ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে কার্যত শেষ করে দেবে।

আরব বিশ্বের তীব্র নিন্দা

নেসেটের এই বিতর্কিত বিল পাশের ঘটনায় ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হামাস, কাতার, সৌদি আরব ও জর্ডান তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: ফিলিস্তিনি ভূমি সংযুক্তির প্রচেষ্টা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম এবং গাজা—এই অঞ্চলগুলো একক ভৌগোলিক ইউনিট, যার ওপর ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌম অধিকার নেই।

কাতার ও জর্ডান: কাতার একে ‘ফিলিস্তিনিদের ঐতিহাসিক অধিকারের প্রকাশ্য লঙ্ঘন’ এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি চ্যালেঞ্জ হিসেবে বর্ণনা করেছে। জর্ডান এটিকে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথে বাধা বলে অভিহিত করেছে।

বর্তমানে দখলকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৭ লাখের বেশি ইসরায়েলি অবৈধ বসতিতে বাস করছে, যা আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ বলে ঘোষিত।

সূত্র: আল জাজিরা


জাপান সাগরে উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২২ ১৮:৩৭:২৭
জাপান সাগরে উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ
ছবিঃ সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়া জাপান সাগরের দিকে বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ (জেসিএস)-এর বরাত দিয়ে ইয়োনহাপ সংবাদ সংস্থা এই খবর জানিয়েছে।

ইয়োনহাপের প্রতিবেদন অনুসারে, গত জুনের শুরুতে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং ক্ষমতা গ্রহণের পর এটিই উত্তর কোরিয়ার প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ।

এপেক সম্মেলনের আগে উত্তেজনা

শনাক্তকরণ: জেসিএস জানিয়েছে, তারা উত্তর কোরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় উত্তর হোয়াংহে প্রদেশের জুংঘোয়া থেকে উৎক্ষেপণগুলো সনাক্ত করেছে।

আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া: এক বিজ্ঞপ্তিতে জেসিএস বলেছে, "আমাদের সেনাবাহিনী অতিরিক্ত উৎক্ষেপণের (সম্ভাব্য) প্রস্তুতির জন্য নজরদারি বাড়িয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক তথ্য শেয়ার করার সময় দৃঢ় প্রস্তুতি বজায় রেখেছে।"

প্রেক্ষাপট: ৩১ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় আসন্ন এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (এপেক) শীর্ষ সম্মেলনের আগেও উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনুষ্ঠানের কয়েকদিন আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাবেন। ট্রাম্পের সফরের আগে উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপ আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়াল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।


নিজ সরকারের বিরুদ্ধেই ট্রাম্পের মামলা: মার্কিন রাজনীতিতে নজিরবিহীন ঘটনা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২২ ১১:৫৩:২৫
নিজ সরকারের বিরুদ্ধেই ট্রাম্পের মামলা: মার্কিন রাজনীতিতে নজিরবিহীন ঘটনা
ছবিঃ সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ (ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস) তার প্রতি অতীত তদন্তগুলোয় যে ক্ষতি করেছে, তার জন্য তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার তার রয়েছে। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমার প্রতি অনেক বড় ক্ষতি করা হয়েছে, এবং তারা (বিচার বিভাগ) সম্ভবত আমাকে অনেক অর্থ দিতে বাধ্য।”

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রিপাবলিকান এই নেতার আইনজীবীরা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পূর্ববর্তী ফেডারেল তদন্তগুলোর কারণে আনুমানিক ২৩ কোটি ডলার (২৩০ মিলিয়ন) ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। এই তদন্তগুলো পরিচালিত হয়েছিল ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার আগেই।

প্রতিবেদনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “এই ধরনের সিদ্ধান্ত আমার টেবিলেই আসে। কিন্তু নিজের সরকারের কাছে নিজেকেই অর্থ প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা বেশ অদ্ভুত ব্যাপার।” এরপরই হাস্যরস মিশিয়ে যোগ করেন, “তবুও যদি আমি দেশের কাছ থেকে কোনো অর্থ পাই, আমি তা ভালো কাজে ব্যয় করব—সম্ভবত দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দেব বা হোয়াইট হাউসের জন্য ব্যবহার করব।”

ট্রাম্পের বক্তব্য অনুযায়ী, বিচার বিভাগের ওই তদন্তগুলো ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তার ভাবমূর্তি নষ্টের পরিকল্পিত প্রচেষ্টা। তিনি আরও বলেন, “আমার বিরুদ্ধে পরিচালিত এই মিথ্যা তদন্তগুলো থেকে আমি যে ক্ষতির শিকার হয়েছি, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।”

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিক মিডিয়া প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, যাদের বিরুদ্ধে তিনি পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ তুলেছেন। কিছু ক্ষেত্রে তিনি আদালতে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণও পেয়েছেন। যদিও ক্ষতিপূরণ দাবির বিষয়ে নিশ্চিত প্রশ্নে তিনি বলেন, “এটা হতে পারে যে আমার আইনজীবীরা দাবি দাখিল করেছেন, কিন্তু সঠিক সংখ্যা আমি জানি না, আমি তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলিনি।”

তার আইনজীবী দলের এক মুখপাত্র এএফপি-কে বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনো ডেমোক্র্যাটদের নেতৃত্বাধীন মিথ্যা ‘উইচ হান্ট’-এর (জাদুবিদ্যা অনুসন্ধান বা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র) বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।”

উল্লেখযোগ্য যে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ এবং ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল উল্টে দেওয়ার প্রচেষ্টা নিয়ে ফেডারেল তদন্ত শুরু হয়েছিল। এ ছাড়া, গোপন নথি অপব্যবহার ও রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগেও তদন্ত চলে। তবে গত বছর পুনর্নির্বাচনের পর এই তদন্তগুলো বাতিল করে দেওয়া হয়।

নিউইয়র্ক টাইমস মন্তব্য করেছে, একজন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিজের সরকারের কাছ থেকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করার ঘটনা “আমেরিকার ইতিহাসে নজিরবিহীন।” পত্রিকাটি আরও বলেছে, এই পরিস্থিতি “গভীর নৈতিক ও প্রশাসনিক জটিলতা” তৈরি করতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই দাবি কেবল প্রশাসনিক অস্বস্তিই নয়, বরং মার্কিন শাসনব্যবস্থায় একটি অভূতপূর্ব সাংবিধানিক দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারে। কারণ, একজন প্রেসিডেন্ট যদি সরকারের বিরুদ্ধে নিজেই ক্ষতিপূরণ দাবি করেন, তবে তা সরকারের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে।

অন্যদিকে, ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী টড ব্লাঞ্চ বর্তমানে বিচার বিভাগের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, যা বিষয়টিকে আরও সংবেদনশীল করে তুলেছে। তবে বিভাগের মুখপাত্র চ্যাড গিলমারটিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “যেকোনো পরিস্থিতিতে বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা পেশাদার নৈতিক নির্দেশনার অধীনে কাজ করেন; ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা রাজনৈতিক পরিচয় তাদের দায়িত্ব পালনে কোনো প্রভাব ফেলে না।”

এদিকে, ট্রাম্প এখনো নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে ৩৪টি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, যা ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময় এক পর্নোতারকার কাছে অর্থ প্রদানের ঘটনায় ‘হাশ মানি’ মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত। এই আইনি ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে তার ক্ষতিপূরণ দাবির পদক্ষেপটি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

-আলমগীর হোসেন

পাঠকের মতামত: